What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other গল্পটা অঞ্জু ঘোষের (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
malQRGG.jpg


অঞ্জু ঘোষ। দেশের চলচ্চিত্রে অবধারিত একটি নাম। এ নামটি একাই একটি অধ্যায় হয়ে আছে নিজের গুণে। সুনির্দিষ্ট একটা ইতিহাস নিজেই তৈরি করেছেন যোগ্যতার ভিত্তিতে। তাঁকে বাদ দিয়ে মেইনস্ট্রিম বাণিজ্যিক ছবির ইতিহাস লেখা কোনোভাবেই সম্ভব না।

ফরিদপুর জেলার ভাঙা থানায় অঞ্জু ঘোষের জন্ম। মূলনাম অঞ্জলী ঘোষ। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে পরিবারের সাথে চট্টগ্রামে আসেন অঞ্জু। চট্টগ্রামেই শৈশব-কৈশোর কাটে তাঁর। সেখানকার কৃষ্ণকুমারী গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হলে সেখানেই নাচের গোড়াপত্তন শুরু হয়। ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ভোলানাথ অপেরায় যোগ দিলে নাচ পরিবেশন শুরু হয় পেশাদারভাবে এবং সে এলাকায় রাতারাতি তাঁর জনপ্রিয়তা তৈরি হয়।

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ছবিতে ক্ল্যাসিক্যাল নাচের কথা বললে যে কয়েকজন অভিনেত্রীর নাম আসবে অঞ্জু ঘোষ তাঁদের একজন। তাঁর একটা দর্শকই ছিল নাচ দেখার জন্য যেত সিনেমাহলে। 'বেদের মেয়ে জোসনা, নরম গরম, সওদাগর, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা' তুমুল জনপ্রিয় এ ছবিগুলো নাচের জন্যই বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল অঞ্জুর দিক থেকে।

hIlgRf9.jpg


অপেরা মঞ্চে প্রফেশনাল শিল্পী অঞ্জু ঘোষ-কে চোখে পড়ে পরিচালক এফ কবীর চৌধুরীর যিনি একসময় ফোক-ফ্যান্টাসি ছবির হিট মেশিন ছিলেন। এফ কবীর চৌধুরী অঞ্জু ঘোষকে নিয়ে আসেন চলচ্চিত্রে ১৯৮২ সালে 'সওদাগর' ছবিতে। প্রথম ছবিতেই অঞ্জু ঘোষ দর্শকের মনে জায়গা করে নেন। তাঁর ভাষ্যমতে এ ছবির পর তিনি একসাথে ১৬টি ছবির অফার পান। তাঁর দেয়া তথ্যমতে তিনি প্রায় ৩৫০টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন এবং প্রায় ৬টি ভাষায় তাঁর ছবি আছে। ৯৬ এর পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ছবিতে কাজ শুরু করেন। এর আগে 'বেদের মেয়ে জোসনা' ছবিতে দুইদেশেই কাজ করেছেন।

উল্লেখযোগ্য ছবি : সওদাগর, বেদের মেয়ে জোসনা, আবেহায়াত, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, যন্ত্রণা, রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা, আশীর্বাদ, আশা নিরাশা, নরম গরম, সোনার সংসার, ধন দৌলত, বেরহম, আসমান জমিন, পর্বত, রাজ সিংহাসন, সোনাই বন্ধু, সতী নাগকন্যা, সতী নারীর পতি, জালিম, প্রহরী, মর্জিনা, চন্দনা ডাকু, বন্যা, রাজদণ্ড, ছলনা, বড় ভালো লোক ছিল, তিন বাহাদুর, গায়ে হলুদ, মানিক রতন, আয়না বিবির পালা, এই নিয়ে সংসার, প্রেম সোহাগী, নিষ্পত্তি, দুর্নাম, কসম, পাষাণ, প্রেমের সমাধি, খুনী আসামী, জনি ওস্তাদ, দায়ী কে, মহান বন্ধু, আজকের বাদশা, শিকার, অহিংসা, দুখিনী বধূ শয়তান জাদুকর, আইন আদালত, অচিন দেশের রাজকুমার, গাড়িয়াল ভাই, দুই রংবাজ, মহাযুদ্ধ, রাজার মেয়ে বেদেনী, গরিবের প্রেম, জেলের মেয়ে রোশনী, মোহনমালা, বিচ্ছেদ, বেদেনীর প্রেম, আদেশ, মুক্তার মালা, আমিই ওস্তাদ, কোবরা, লাওয়ারিশ, অর্জন, শত্রু ঘায়েল, নকল শাহজাদা, খেলার সাথী, অতিক্রম, বসন্ত মালতী, শাহী খানদান, প্রতিবাদ, কর্তব্য, দায়িত্ব, মর্যাদা, পালাবদল, শর্ত, গ্যাং লিডার, নেশা, সততা, রঙিলা, আওলাদ, গরম মশলা, বাহাদুর নওজোয়ান, প্রেমের মরা জলে ডোবে না, দশ গেরামের মোড়ল, ছলনা, রঙিন প্রাণসজনী।

পশ্চিমবঙ্গ – বেদের মেয়ে জোসনা, রাজার মেয়ে পারুল, এই ঘর এই সংসার, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, দিদি আমার মা, আদরের বোন, গরিবের সম্মান, স্ত্রীর মর্যাদা, কাঞ্চনমালা।

অঞ্জু ঘোষ বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও দাপটের সাথে কাজ করেন। সেখানে তখনকার বিগস্টার চিরঞ্জিত, তাপস পাল, প্রসেনজিত-দের সাথে কাজ করেন। প্রসেনজিত, ঋতুপর্ণা, ইন্দ্রানী হালদার-রা তাঁর ছোটভাইবোনদের চরিত্র করত। এতটা ভালো অবস্থান ছিল অঞ্জুর।

KA3gY1b.jpg


অঞ্জুর স্ট্রং জুটি ছিল তিনটি : ইলিয়াস কাঞ্চন-অঞ্জু ঘোষ, ওয়াসিম-অঞ্জু ঘোষ ও জাভেদ-অঞ্জু ঘোষ

ইলিয়াস কাঞ্চন-অঞ্জু ঘোষের জুটি তো ইতিহাস করেছে দেশের সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল ছবি 'বেদের মেয়ে জোসনা'-র মাধ্যমে। সেসময় ২০ কোটি টাকা ব্যবসা করে ছবিটি যার জনপ্রিয়তায় পশ্চিমবঙ্গেও নির্মিত হয় তাঁকেই চিরঞ্জিতের বিপরীতে নায়িকা করে এবং সেখানেও রেকর্ড তৈরি করে। এরপর কাঞ্চনের সাথে অনেক ছবি করেছেন অঞ্জু। ওয়াসিমের সাথে প্রথম সুপারহিট জুটি ছিল অলিভিয়ার কিন্তু অঞ্জু আসার পর সে জুটিতে ভাটা পড়ে তৈরি হয় নতুন জুটি ওয়াসিম-অঞ্জু জুটির দাপট। এ দুটি থেকে জাভেদ-অঞ্জু জুটি কিছুটা পিছিয়ে কিন্তু প্রভাব ছিল।

অঞ্জু ঘোষের বিশেষত্ব ছিল ফোক-ফ্যান্টাসি ও পোশাকি ছবিতে এবং নাচের ক্লাসিক পরিবেশনায়। এ জায়গাটিতে তিনি অনবদ্য ছিলেন। অভিনয় তো অসাধারণ ছিলই। লেডি অ্যাকশনে 'নরম গরম, প্রহরী, ফুলন, মর্জিনা' ছবিগুলোতেও ছিলেন এছাড়া ফ্যামিলি ড্রামাতেও তাকে দেখা গেছে।
অঞ্জুর সেরা ৫টি ছবির কথা বলা হলে নাম আসবে 'বেদের মেয়ে জোসনা, সওদাগর, রঙিন নরম গরম, রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা' ছবিগুলোর কথা। 'বেদের মেয়ে জোসনা'-তে প্রথমে তাঁর অভিনয় করার কোনো ইচ্ছা ছিল না এমন ছবি চলবে না মনে করেছিলেন। কিন্তু পরে রাজি হন। প্রথম দুদিন ছবির দর্শক তেমন ছিল না তারপর থেকে ভিড় বাড়তে থাকে এবং একসময় ষাটেরও অধিক সপ্তাহ সারাদেশে চলতে থাকে এবং ইতিহাস সৃষ্টি করে। মিউজিক্যাল দিক থেকে 'সওদাগর, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা' গুরুত্বপূর্ণ। নারীবাদী বাণিজ্যিক ছবিতে 'নরম গরম'-এ অঞ্জুই প্রধান চরিত্র। 'রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা'-তে মোহনলাল বা বুলবুল আহমেদের বোনের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছে অঞ্জু। ব্রিটিশবিরোধী হবার কারণে তাঁর ফাঁসি হয় এবং বুলবুল আহমেদ 'দিদিভাই' ডাকতে ডাকতে ছুটে যায় দৃশ্যটি মর্মান্তিক ছিল।

009a0vs.jpg


অঞ্জু ঘোষ 'সওদাগর' ছবিতে 'ওরে ও বাঁশিওয়ালা' গানটি নিজের কণ্ঠে গেয়েছেন কুমার বিশ্বজিতের সাথে। এছাড়া ১৯৯০ সালে 'মালিক ছাড়া চিঠি' নামে তাঁর একক অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছিল।

তাঁর ছবি থেকে নির্বাচিত জনপ্রিয় গান :
এই বৃষ্টিভেজা রাতে চলে যেও না – নরম গরম
বেদের মেয়ে জোসনা আমায় – বেদের মেয়ে জোসনা
চাঁদের সাথে আমি দেবো না – আশীর্বাদ
ওরে ও বাঁশিওয়ালা – সওদাগর
মনটা যদি খোলা যেত – চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা
আমি তোমারই প্রেমভিখারী – চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা
বনমালী তুমি – চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা
লীলাবালি – চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা
আকাশকে প্রশ্ন করো – শর্ত
শিশুকাল ছিল ভালো – রঙিন প্রাণসজনী
আমার কাঙ্খের কলসী – রঙিন প্রাণসজনী
প্রেমসাগরে ঝাঁপ দিও না – রঙিন প্রাণসজনী
কি জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা – রঙিন প্রাণসজনী
পাহাড়িয়া সাপের খেলা – বেদের মেয়ে জোসনা
আশায় আশায় দিন কেটে যায় – ছলনা
ফুলে ফুলে মালা গেঁথে – মরণ পণ
ওরে মনচোরা – সওদাগর
ও রঙিলা মনে যে লাগে এত রং – রঙিলা
তুমি কেমন গাড়িয়াল – গাড়িয়াল ভাই
ডামডিকা ডাম ডাম ঢাকা – ক্ষুধা
চুপি চুপি তোমার কাছে আসব গো – মহান বন্ধু
নয়ন জুড়ে আছে স্বপ্ন – পদ্মাবতী

uG9lkSt.jpg


ভারতে তিনি কিছু পুরস্কার পেলেও বাংলাদেশে জাতীয় পুরস্কার পাননি। পরিচালক এফ কবীর চৌধুরী-র সাথে তাঁর বিয়ে ও ডিভোর্স হয়েছিল।
তিনি বর্তমানে ভারতের কলকাতার সল্টলেকের বাসায় থাকেন। ভারতীয় রাজনৈতিক দল বিজেপিতে যোগ দেয়া এবং নাগরিকত্ব নিয়ে মাঝখানে তাঁকে নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। তিনি সর্বশেষ ২০১৮ সালে এফডিসিতে এসেছিলেন শিল্পী সমিতির আমন্ত্রণ। সেখানে তাঁর নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে তাঁকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

অঞ্জু ঘোষ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে একটা একক অধ্যায়। তাঁর পরিশ্রম ও মেধার যোগফল ছিল তাঁর ক্যারিয়ার। তিনি ভালো থাকুন।

S5iM5jE.jpg
 

Users who are viewing this thread

Back
Top