What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other ভাই ফোঁটা- অজানা গল্পো (1 Viewer)

BRICK

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Dec 12, 2019
Threads
355
Messages
10,073
Credits
81,757
T-Shirt
Glasses sunglasses
Calculator
Watermelon
Pistol
Pistol
ভাই ফোঁটা।আর ভাই বোনের ভালোবাসার সম্পর্ক বলতে বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি ও সত্যজিত রায়ের ট্রিলজির অন্যতম 'পথের পাঁচালী'-র নিশ্চিন্দিপুরের অপু ও দুর্গার কথা মনে পরে ।কিন্তু আজ আমি শোনাবো এক অন্য অপু দূর্গার সত্যিকারের গল্প।তবে নিশ্চিন্দি পুর না।খোদ কোলকাতার। ভবানীপুরে। ছেলেটির বাবা ছিলেন সিনেমার প্রোজেক্টর অপারেটর। জ্যাঠামশাইয়ের ছিল শখের যাত্রাথিয়েটারের দল। বছর পাঁচ যখন বয়স, তখন ছেলেটিকে দিলেন স্কুলে ভর্তি করে। পড়াশুনার ব্যাপারে বাবা ভীষণ কড়া। কিন্তু, এই বয়সে পড়তে কী আর ভালো লাগে! অদূর-ক্লাবে জ্যাঠামশাইদের মহলা চলছে। মন পড়ে আছে সেখানে। সে কী আর পড়ায় বসতে চায়! ইচ্ছে করছে ছুট্টে এক্ষুনি সেখানে চলে যেতে। কিন্তু, খুকিদি হচ্ছে কড়া পাহারাদার। তাকে বাবাই এ-কাজে বহাল করেছেন। তার চোখ এড়িয়ে যায় সাধ্য কার! পাহারাদার হিসেবে যদিও সে বেশ চৌকস; তবু, বজ্র আঁটুনির ফাঁক একটা থেকেই যায়, সেটাই নিয়ম। সেই ফাঁকেই পড়ার টেবিল থেকে ছেলেটি মহলাঘরে উঁকি মারার সুযোগ জুটিয়ে ফেললেন। বড়দের চোখ এড়িয়ে, লুকিয়ে। সে দেখা তো দেখা নয়, যেন গেলা। কিন্তু,শেষ পর্যন্ত সেই ছেলেটি সবার চোখ এড়াতে পারলেও, পারলেন না খুকিদির চোখ এড়াতে। যাওয়ার সময় একদিন ধরা পড়ে গেলেন। চেপে ধরে দিদি জিজ্ঞেস করল, 'এই, লুকিয়ে কোথায় যাস রে?' ছেলেটি জানাল, 'সে এক মজার জায়গায়। বলা যাবে না।' দিদি বলল, 'ইস, বলা যাবে না! ভারি তো! আমি সব জানি। জ্যাঠামশাইয়ের মহলায় যাস, না?' ছেলেটি বুঝল, ধরা পড়ে গেছেন। এবার বাবার মার ঠেকায় কে! সেই মারের কথা ভেবেই তাঁর কান্না পেয়ে যায়। কাঁদো কাঁদো হয়ে বললেন, 'দিদি রে, বাবাকে কিন্তু বলিস না!' দিদি হ্যাঁ-না কিছুই বলল না, শুধু বলল, 'দেখে দেখে কী শিখেছিস দেখা তো!' দিদিকে হাতে রাখতে অভিনয় করে দেখাল ছেলেটি। অভিনয় বলতে, একজায়গায় দাঁড়িয়ে ডায়লগ ঝাড়া মুখস্থ বলে গেলেন, যেমন জেঠুরা বলেন; আর তাই দেখে দিদির সে কী কুটোপাটি হাসি! নাটক-পালায় কেউ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলে নাকি, ঘুরে ঘুরে বলে তো! কি অপমান! ছেলেটির খুব রাগ হল। কিন্তু, সে রাগ তো আর দেখানো যায় না, দিদি যদি চটে গিয়ে বাবাকে বলে দেয়!এর ঠিক কদিন পর সেই দিদির জ্বর হয়েছে। দিদির কাছে যাওয়া মানা। তবুও, ছেলেটি গেল। লুকিয়ে। মনে সেদিনের অপমানের অভিমান। তবুও, গেলেন। দিদির অসুখ। ভাইকে কাছে পেয়ে শুকনো ঠোঁটে ফুটে উঠল এক চিলতে খুশি। বলল, 'আমি বাবাকে কিচ্ছু বলব না রে, কাউকে বলব না। তোর অভিনয় খুব ভালো হয়েছিল। আমি যখন সেরে উঠব, তখন আবার অভিনয় করে দেখাস, কেমন?' ছেলেটির সব রাগ সব অভিমান যেন নিমেষে গলে জল হয়ে গেল। ভারি আহ্লাদ হল। সেই আহ্লাদে মাথা নাড়ল। অভিনয়টা তাহলে ভালোই হয়েছিল! বাকি রইল শুধু হাঁটাচলা শেখা। দিদি ভালো হতে হতে সেটাও শিখে নেওয়া যাবে। তারপর দিদিকে একেবারে তাক লাগিয়ে দিতো হবে! কিন্তু...কিন্তু, তার আর অবসর হল না। দিদি চলে গেল ভগবানের কাছে। পরিজনের স্তোক পেরিয়ে দিনের পর দিন কেটে গেল। দিদি ফিরল না।সেকালের ছেলেবেলা তো অন্যরকম ছিল। সেকালে ছোটরা জানত ভাইবোন হওয়া মানে,ঠাকুর এসে তাদের দিয়ে গেছেন। আর কেউ মারা যাওয়া মানে,--ঠাকুর তাকে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। সে গেছে স্বর্গে, নারায়ণের বাগানে ফুল তুলতে। ইচ্ছে হলেই আবার ফিরে আসবে। ছেলেটিও তাই জানতেন। শুরু হল অপেক্ষার পালা। কিন্তু, অপেক্ষাই সার হল। খুকিদি আর ফিরে এলো না। কেন এলো না? কে জানে! তাহলে, যে যায়, সে কী আর ফেরে না? পৃথিবীর বয়স হল,বয়স হল ছেলেটিরও।তারপর?...অভিনয়ের প্রতি ঝোঁকটা বেড়েই চলল ক্রমে। মনের গহিনে চলল রুপালি পর্দায় অভিনয় করার সোনালি স্বপ্ন বোনা। লালিত স্বপ্ন দেখা দিল বাস্তব হয়ে।তিনি হলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। সেদিন তিনি বুঝলেন, যে যায় সে আর ফেরে না। শুধু থেকে যায় স্মৃতিতে, থেকে যায় সত্তায়...যেমন তিনি নিজেও আজো আছেন সকল বাঙালীর হৃদ মাঝারে ।আজো তিনি আপামর বাঙালীর ম্যাটিনি আইডল।

(তথ্য সংগ্রহ : উত্তম কুমারের 'আমার আমি')
 

Users who are viewing this thread

Back
Top