What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review গ্রামে ঘোরে মহিলা ভূত, পৌঁছে দেয় গভীর বার্তা (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
3ayd8FG.jpg


ভূতের গপ্পের সঙ্গে বাঙালির নাড়ির যোগ। তা সে শরদিন্দুর লেখাই হোক বা সত্যজিৎ রায়। লীলা মজুমদার থেকে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। নামগুলো পর পর করলাম, কারণ 'স্ত্রী' ছবিটি দেখতে দেখতে মাঝে মাঝেই বাঙালির মনে পড়বে ছোটবেলার এ সব গল্পগাছা। শিউরে উঠতে পারেন। আবার হেসে উঠতেও পারেন। প্রেমে পড়েও যেতে পারেন। এমনই ককটেল এ ছবি। এক কথায়, প্রাক-পুজো দিলখুশ উপহার।

কি এমন? যা দেখে এত কথা? নিপাট ভূতের গল্প নয় এ ছবি। হরর-কমেডি গোত্র। রাজকুমার রাও নামটা সে চমকের একটা অংশ। বাকি চমক তো ছবি জুড়ে। যে মধ্যপ্রদেশের চান্দেরি গ্রামে এ গল্পের পটভূমি, তা অদ্ভূত ভাবে মানিয়ে যায় গল্পের সঙ্গে। প্রায়ই কাগজে আমরা এ সব গ্রামে নারীহত্যার কথা পাই। পাই নারীর অবমাননার নানা ঘটনা। এ ছবির গভীরে আছে তারই বীজ। কিন্তু কখনওই প্রোপাগান্ডা হয়ে ওঠে না তা বলে। মজা-ঠাট্টা আর ভয়ের মিশেলে অন্য রাস্তা নেয়।

রাজকুমার অভিনীত ভিকি চান্দেরি গ্রামের বাসিন্দা। কথিত আছে, এ গ্রামেই ঘুরে বেড়ায় এক মহিলা ভূত। পুরুষের থেকে সম্মান না পাওয়া সেই ভূত চায় ভালবাসা। তবে এ ভূত পড়াশোনা জানা। কিন্তু পুরুষের উপর যখন আক্রমণ চালায় সে, তা হয়ে ওঠে বিপজ্জনক। পিছন থেকে হঠাৎ আক্রমণ তার। সঙ্গে সঙ্গে ধরাশায়ী পুরুষ।

vsX8uoI.jpg


তার ভয়ে শিউরে ওঠে প্রতিটি গ্রামবাসী। বাড়ির বাইরে লিখে রাখে, আজ নয়, কাল আসতে। এই গ্রামেই কাপড়জামা সেলাই করে দিন চলে ভিকি নামের যুবকের। বাবার দর্জির দোকানে কাজ করে সে। তো, বাবা তাকে এক দিন আলাদা করে ঘরে ডাকে। প্রেমের ব্যপারে সতর্ক করতে জানায়, বেশি ভেসে না যেতে। বয়সটা তো ভাল না। নিজের জীবনের গল্পও বলে। জানায়, নারী-পুরুষ সম্পর্ক পবিত্র। অপেক্ষা করতে।

কিন্তু ন্যাড়া তো বেলতলায় যাবেই। যথারীতি প্রেমে পড়ে সে। শ্রদ্ধা কপূর অভিনীত নামহীন মেয়েটি তাকে সন্ধায় মন্দিরে আসতে বলে। চিঠি দেয়। বলে পুজোর জন্য পোশাক বানিয়ে দিতে। আলাদা দেখাও করে। কিন্তু কোথাও নাম, ফোন নম্বর দেয় না। বন্ধুরা তাকে সতর্ক করে। বলে, হাওয়া ভাল না। কিন্তু প্রেমের ঘোরে ভিকির চোখ ঝাপসা। সে শুধু বলে, আমি ডুবতে রাজি আছি।

dQoohxi.jpg


ছবির একটি দৃশ্যে শ্রদ্ধা কপূর।— ইউটিউবের সৌজন্যে।

শ্রদ্ধা অভিনীত মেয়েটিই কি ভূত? না অন্য কেউ? নেপথ্যে গোটা গ্রামকে নাকানিচোবানি খাওয়াচ্ছে? জানতে হলে দেখতে হবে গোটা ছবি। সাসপেন্স বলা যাবে না। ভূতের সঙ্গে প্রেম করছে কি না, এমন দ্বন্দ্ব প্রায়ই ভাবায় ভিকিকে। ছবি জুড়ে তার দ্বন্দ্বের অভিনয় অসামান্য ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। শ্রদ্ধার অভিনয়ও কিছু কম যায় না। তবে এ ছবির আলো, ক্যামেরা আর সম্পাদনা সত্যি ভাল লাগে। কি যে সুন্দর দেখতে লাগে গ্রামটিকে। এমন লোকেশনে এমন ভূতের মজার গল্প ফাঁদার জন্যই এ ছবি আবার দেখা যায়। তবে, এমন স্মার্ট ছবির আবহ নিয়ে কি আর একটু ভাবা যেত না! খুবই ক্লিশে লাগে মিউজিক।

রাজকুমারের হাসি আর ভয় নিয়ে জাগলিং অভিনয়কে অন্য মাত্রা দেয়। শ্রদ্ধা কপূর অনেক বেশি দুষ্টু-মিষ্টি, কিন্তু একই সঙ্গে ভয় দেখাতেও যথেষ্ট সাবলীল। প্রতিটি চরিত্রের এই আনপ্রেডিক্টেবিলিটি ছবিকে আলাদা মাত্রা দেয়।

2mapTCI.jpg


ভাল লাগে ভিকির বাবার ভূমিকায় অতুল শ্রীবাস্তবের অভিনয়। অতুল শ্রীবাস্তবকে যত বার দেখা যায় স্ক্রিনে, তত বার এনার্জি এসে যায় ছবির। অমর কৌশিকের পরিচালনায় এ ছবি একই সঙ্গে শক দেয় এবং হাসায়। এত নিপুণ ভাবে হাসি আর ভয় বোনা যে ৮ থেকে ৮০, হলের ভেতর সবাই হেসে ওঠে। প্রতিটি বাড়ির বাইরে 'ও স্ত্রী কাল আনা' লেখা থাকার ব্যপারটা খুব মজার। তার উপর যে ভাবে মূত্রত্যাগ করেন রাজকুমার ছবির শুরুতে, তা দেখে তো হল থেকে বেরিয়েও হেসে চলেছি!

এমন একটা সচেতনতা নিয়ে এ ছবি যা আজকের ভারত। যেখানে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য আর নারীর অবমাননা বার বার প্রশ্নের মুখে। আমরা রূপকথায় এমনই গভীর কথা সহজ মজায় শুনে থাকি। এ ছবিও কোথাও জ্যাঠামো করতে চায় না। বার বার হাসায়। আর প্রতি হাসির ভাঁজে ভাসতে থাকে মেয়েদের আবহমান জীবনের কান্না, 'দাদা আমি বাঁচতে চাই!'
 

Users who are viewing this thread

Back
Top