What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other মিঠুন-শ্রীদেবী: যে প্রেমকাহিনী বলিউডের ছবিকেও হার মানায় (1 Viewer)

যা-ই হোক, মিঠুন-শ্রীদেবী জুটির পরবর্তী ছবি 'ওয়াতান কি রাখোওয়ালে' মুক্তি পায় ১৯৮৭ সালে। ততদিনে তাদের সম্পর্কের মাঝে বাধার দেয়াল হিসেবে আবির্ভাব ঘটে গেছে বনি কাপুরের। ১৯৮৪ সালেই 'মিস্টার ইন্ডিয়া' ছবিতে অভিনয়ের সময় প্রযোজক বনির সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে শ্রীদেবীর। অসামান্যা সুন্দরী শ্রীদেবীর প্রেমে পাগল হয়ে যান বনি। উল্লেখ্য, বনিও তখন বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন মোনা কাপুরের সাথে। তবে শ্রীদেবী তখন বনিকে খুব একটা পাত্তা দেননি, যেহেতু তিনি তখন মগ্ন মিঠুনের প্রেমে।

তাৎক্ষণিকভাবে শ্রীদেবীর মন না পেলেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন বনি। নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ব্যানার থেকে অনিল কাপুর-শ্রীদেবী জুটিকে নিয়ে উপর্যুপরি ছবি বানান তিনি। এছাড়া শ্রীদেবীর মাকেও হাত করার চেষ্টা করেন তিনি বিশাল অঙ্কের দেনা শোধের মাধ্যমে।

শ্রীদেবীর প্রতি বনির এই দুর্বলতা নজর এড়ায়নি মিঠুনেরও। ফলে চিড় ধরে যায় মিঠুন-বনির বন্ধুত্বে। এছাড়া শ্রীদেবীর ব্যাপারেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন মিঠুন। অবস্থা এক পর্যায়ে এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে, মিঠুনের মন থেকে সন্দেহ দূর করতে বনিকে রাখী পরাতে বাধ্য হন শ্রীদেবী।

তবে অচিরেই ধৈর্যচ্যুতি হয় 'বলিউড ডিভা' শ্রীদেবীরও। দিনের পর দিন মিঠুনের জীবনের 'অন্য নারী' হয়ে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন তিনি। কেননা ভেতরে ভেতরে তার সাথে যে সম্পর্কই থাক, প্রকাশ্যে যে মিঠুন যোগিতার স্বামী, তার সন্তানদের বাবা। এ বিষয়টি মেনে নেয়া সহজ ছিল না শ্রীদেবীর জন্য। তাই তিনি আল্টিমেটাম দেন মিঠুনকে: "যেকোনো একজনকে বেছে নিতে হবে; হয় আমাকে, নয় যোগিতাকে।"

যোগিতা কিন্তু শ্রীদেবীর সাথে মিঠুনের সম্পর্কের ব্যাপারে কিছুটা জানতেন। তারপরও শুরুতে তিনি খুব একটা শক্ত অবস্থানে যাননি। এমনকি এ-ও তিনি বলেছিলেন, "ও (মিঠুন) দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করলেও আমি তা মেনে নেব।" মিঠুনের প্রেমে ঠিক এতটাই অন্ধ ছিলেন তিনি। হয়তো সে কারণেই মিঠুন এত সহজে শ্রীদেবীর সাথে পরকীয়া চালিয়ে যেতে পারছিলেন।

বিস্ময়কর ব্যাপার, এতক্ষণ কাহিনীতে ব্যাকফুটে থাকা যোগিতার কারণেই শেষ পর্যন্ত গোটা কাহিনীর মোড় ঘুরে যায়। আগে তিনি যা-ই বলে থাকুন না কেন, যখন মিঠুন-শ্রীদেবীর বিয়ের গুঞ্জন বাতাসে ভাসতে থাকে, তখন আকস্মিকভাবে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বসেন তিনি। আর ঠিক তখনই, অনেক দেরি করে হলেও, মতি ফেরে মিঠুনের। তার মনে পড়ে যায়, যোগিতার গুরুত্ব তার জীবনে ঠিক কতটা। তিনি আরো উপলব্ধি করেন, যোগিতাকে ত্যাগ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, কেননা তিনি ইতোমধ্যেই তার দুই সন্তানের মা।

ফলে স্বাভাবিকভাবেই, যোগিতার প্রতি যত্নশীল হতে গিয়ে শ্রীদেবীর থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন মিঠুন। এরই মাঝে মিঠুন-যোগিতা দম্পতির তৃতীয় সন্তানেরও আগমন ঘটলে শ্রীদেবী বুঝে যান, এ দম্পতির বিচ্ছেদের আশা করা বৃথা। তখন তিনি নিজেই মিঠুনের থেকে গুটিয়ে নেন নিজেকে। ফলে বাস্তবজীবনে তো বটেই, এমনকি 'ওয়াক্ত কি আওয়াজ' (১৯৮৮) ও 'গুরু' (১৯৮৯) ছবির পর ভেঙে যায় মিঠুন-শ্রীদেবীর পর্দার জুটিও। 'গুরু' ছবির শেষ দৃশ্যেই জীবনে শেষবারের মতো দেখা হয় দুজনের।

এই কাহিনীতে দোষ-ত্রুটি কার কতটুকু আছে সে বিচারে যদি আমরা না-ও যাই, নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাব যোগিতার লাভটাই হয়েছিল সবচেয়ে বেশি। কারণ প্রকাশ্যে মিঠুন কখনোই তার পরকীয়ার কথা স্বীকার করেননি, বরং যোগিতার প্রতি নিজের প্রেমের কথাই জনসম্মুখে বলে বেড়িয়েছেন। তাই ব্যক্তিজীবনে আঘাত পেলেও, সমাজের চোখে ছোট হতে হয়নি যোগিতাকে।

কিন্তু শ্রীদেবী বা মোনার ভাগ্য এতটা ভালো ছিল না। মিঠুন তার সাথে সম্পর্কের কথা স্বীকার না করায়, শতভাগ সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি মিঠুন-শ্রীদেবীর ভালোবাসা বা বিয়েটা। অপরদিকে আরো বড় দুর্ভাগা মোনা। কারণ তার স্বামী তথা বনিকে একদা রাখী পরিয়ে দিয়েছিলেন যে শ্রীদেবী, তিনিই মিঠুনের সাথে বিচ্ছেদের পর প্রেম শুরু করে দেন বনির সাথে। ফলে ঘনীভূত হয় বনি-মোনার সংসারের অশান্তি, এবং পরিণামস্বরূপ ১৯৯৬ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাদের।

মজার ব্যাপার হলো, ১৯৯৬ সালেই বনির সাথে শ্রীদেবীর বৈবাহিক সম্পর্ক আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায় বটে, তবে তার আগেও চলে প্রচুর নাটক। এর আগ পর্যন্ত শ্রীদেবী বরাবরই সংবাদমাধ্যমে বনির সাথে তার সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে আসছিলেন, এবং এ ধরনের সকল সম্ভাবনাকেই 'গুজব' বলে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু যখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন, কেবল তখনই তার মনে পড়ে যায় যে, তিনি তো মাস কয়েক আগে বিয়ে করেছেন বনিকে!

বলাই বাহুল্য, এতক্ষণ যে বহুমুখী প্রেমাখ্যান পাঠ করলেন, তা বলিউডের যেকোনো রোমান্টিক ছবিকেই হার মানাবে। এবার আসা যাক এই কাহিনীর সমাপ্তিতে।

২০১২ সালে প্রথম পৃথিবী ছেড়ে চলে যান এই কাহিনীর সবচেয়ে দুর্ভাগা ব্যক্তি, মোনা কাপুর। দুই সন্তানের জননী ছিলেন তিনি। আর ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় শ্রীদেবীর। অবশ্য তার আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ২২ বছর তিনি সংসার করেছেন বনির সাথে। দুইটি সন্তানও হয়েছিল তাদের। এদিকে মিঠুনও সুখে-শান্তিতে সংসার করে চলেছেন যোগিতার সাথে। তাদের রয়েছে মোট চার সন্তান।

শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর অবশ্য তার সাথে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মিঠুন। বলেছিলেন:

"আমরা হাসি-মজার মধ্যে দিয়েই কাজ করতে গিয়ে সম্পর্কে জড়িয়ে গেলাম। সেই সম্পর্কের সূত্রে আমি আর শ্রী ক্রমশ জড়িয়ে গেছিলাম একটা ভালোলাগার বন্ধনে। সেই সম্পর্কে হয়তো ছিল শান্তির প্রত্যাশা। চাহিদার প্রতিশ্রুতি।"

তিনি দিয়েছিলেন সম্পর্কটি ভেঙে যাওয়ার পেছনের ব্যাখ্যাও:

"দায়বদ্ধতা। জানি না, সত্যি জানি না। তবে এটুকু জানি, সেই 'দায়' কখনও আমি মেটাতে পেরেছি, কখনও হয়তো পারিনি। আর এই পারা, না-পারার মাঝেই আমার আর শ্রী-র সম্পর্কে তৈরি হল একটা দূরত্ব। বাকিটুকু কেবলই মন খারাপের স্মৃতি। আমি ওকে চিরকাল মনে রাখবো। শ্রী-ও আমাকে মনে রেখেছে, সে আমি জানি।"
মিঠুন শ্রীদেবীর প্রেমকাহিনী যেন কোন সিনেমার স্ক্রিপ্ট
 

Users who are viewing this thread

Back
Top