What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পৃথিবীর যে পাঁচটি অঞ্চলে এখনও জংলি উপজাতির বসবাস (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
zGCclf2.jpg


বিজ্ঞানের কল্যাণে মানব সভ্যতা এগিয়ে চলেছে তুফান গতিতে। প্রযুক্তির ব্যবহারে বদলাচ্ছে মানুষের জীবন যাত্রা, কঠিন সব কাজ করা যাচ্ছে অনায়াসেই। বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানুষ পৌঁছে গেছে চাঁদে, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে বসবাসের কথাও উঠেছে। কিন্তু, আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে- পৃথিবীর অনেক স্থানে এখনও এমন কিছু জংলী জাতি বসবাস করছে যারা বিজ্ঞানকে স্বাগতম জানায়নি, এখনও পড়ে আছে সভ্যতার আঁতুড়ঘরে। তারা জানে না বাইরের পৃথিবীর অগ্রযাত্রা সম্পর্কে। আর আমরাও জানি না তাদের জীবনযাত্রা কেমন! চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক পৃথিবীর কিছু বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী সম্পর্কে, যাদের এখনও বাইরের পৃথিবীর সাথে কোন যোগাযোগ নেই।

৫টি ভয়ংকর জংলি উপজাতি

১. সেন্টিনেলিজ, ভারত মহাসাগর

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে এই জনগোষ্ঠীর বসবাস। সেন্টিনেলিজ নামটা আসলে গবেষকদের দেয়া, কারণ খুব সম্ভবত এরাই পৃথিবীর একমাত্র জনগোষ্ঠী যাদের সাথে আধুনিক পৃথিবীর কোনো যোগাযোগ নেই। ফলে তারা তাদের কী নামে ডাকে সেটা জানা যায়নি। দ্বীপের নামানুসারে তাদের সেন্টিনেলিজ ডাকা হয়।

aEmIxiM.jpg


ভারতীয় আদমশুমারি সংস্থা বিভিন্ন সময় দ্বীপের মোট জনসংখ্যা বের করার চেষ্টা করেছে কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা কখনোই জানা সম্ভব হয়নি। ২০০৪ সালের ভয়ংকর সুনামির কী প্রভাব পড়েছিল সেন্টিনেলিজদের উপর সেটা দেখার জন্য ভারতীয় নৌবাহিনী হেলিকপ্টার দিয়ে জরিপ করার চেষ্টা করেছিল। এ সময় তারা খাবার এবং সাহায্য দ্রব্যাদি তীরে ফেলে উপর থেকে। কিন্তু হেলিকপ্টার দ্বীপের উপরে যাবার কিছুক্ষণ পরেই জঙ্গল থেকে সেন্টিনেলিজরা হেলিকপ্টার বরাবর তীর মেরে আক্রমণ করলে হেলিকপ্টার সরে আসে।

সেন্টিনেলিজদের মধ্যে কৃষি ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। এরা মূলত বন্য পশু শিকার, মাছ ধরে খাবার সংগ্রহ করে থাকে। এদের ঘরবাড়িগুলোর কোনো দেয়াল নেই, শুধু মাথার উপর ছাউনির মতো থাকে। আশেপাশে কুড়িয়ে পাওয়া ধাতব সামগ্রী দিয়ে অল্প কিছু জিনিস বানাতে পারলেও ধাতু দিয়ে বেশি কিছু বানাতে পারে না। তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এরা আগুন জ্বালাতে পারে না, অন্তত বিশেষজ্ঞদের এটাই ধারণা।

বর্তমানে এই দ্বীপের সাথে যোগাযোগের এবং যাবার সকল প্রকার চেষ্টা আইনত দণ্ডনীয়। তবে সরকার এবং বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা সেন্টিনেলিজদের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যম খুঁজে পেতে এখনো উৎসাহী।

২. সুর্মা উপজাতি, ইথিওপিয়া

পশ্চিম ইথিওপিয়ায় বাস করা সুর্মা জনগোষ্ঠীর মানুষদের চেনা যায় তাদের অদ্ভুত সব শারীরিক বৈশিষ্ট্যের জন্য। এসব বৈশিষ্ট্য তাদের জন্মগত নয়, বরং কৃত্রিমভাবে তারা শরীরের বিভিন্ন অংশ বিকৃত করে। সেই সাথে রয়েছে শরীরে বিভিন্ন রকমের রঙ দিয়ে আঁকা কারুকার্য। বিচ্ছিন্ন এবং দুর্গম পাহাড়ে বাস করতেই বেশি পছন্দ করে এরা। আশপাশের গোত্রের সাথে লড়াইটাও অনেকটা ঐতিহ্যগত এদের জন্য। তবে অন্যান্য বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর সাথে পার্থক্য হলো এরা আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে। সুদানের গৃহযুদ্ধের সুবাদে এই বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীর হাতেও উঠে এসেছে একে-৪৭ এর মতো আধুনিক মারণাস্ত্র।

PyZlrlQ.jpg


কৃষিকাজ করেই মূলত সুর্মারা জীবন ধারণ করে থাকে। টোবাকো, কফি, বিভিন্ন জাতের কপি চাষ করে থাকে। বিভিন্ন গোত্রের সাথে বিনিময় করে প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করে সুর্মারা। সিংহের চামড়া, জিরাফের লেজ, হাতির দাঁতের বিনিময়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে আমহারা এবং শানগালাদের কাছ থেকে।

সুর্মা মেয়েরা বয়োঃসন্ধিতে পৌঁছলে তাদের নিচের পাটির সব দাঁত ফেলে দিয়ে নিচের ঠোঁট ছিদ্র করা হয়। এরপর সেখানে একটি প্লেট বসিয়ে দেয়া হয়। তাদের সংস্কৃতিতে যার প্লেট যত বড়, সে তত সুন্দর! প্লেটের উপর অনেক কারুকার্যও করা থাকে। তবে বর্তমানে অনেক সুর্মা মেয়েরা এই ঐতিহ্য আর পালন করে না।

৩. ম্যাস্কো-পিরো উপজাতি, আমাজন

বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর কথা হবে আর আমাজন আসবে না তা কি আর হয়। খুব সম্ভবত আমাজনেই রয়েছে সবচেয়ে বেশি বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী যাদের অনেকের কথা আমরা এখনো জানিই না। সেরকমই প্রায় অজানা এক গোষ্ঠী হচ্ছে ম্যাস্কো-পিরো। ১৮৯৪ সালে কমান্ডার কার্লোস মাস্কো-পিরোদের বিশাল একটা অংশকে হত্যা করে। এরপর ম্যাস্কো-পিরোরা আমাজনের একেবারে ভেতরে চলে যায় এবং দীর্ঘদিন তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

n2ilhdz.jpg


ম্যাস্কো-পিরোরা সহজে বাইরের মানুষদের আক্রমণ করে না, তবে কয়েকবার সাধারণ মানুষ হত্যার অভিযোগও রয়েছে। এমনকি একটি গ্রাম আক্রমণ করে খাবার এবং বিভিন্ন সামগ্রী লুন্ঠনের অভিযোগ পর্যন্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে। তবে সব মিলিয়ে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করে তারা। আধুনিক মানুষের সংস্পর্শে এলেও নিজেদের তারা এখনো সেই আগের মতোই রেখেছে। অন্যান্য বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর মতো তীর-ধনুক এবং বর্শা তাদের প্রধান অস্ত্র, পোশাক আশাকের বালাইও নেই বললেই চলে।

ব্রাজিল এবং পেরু ম্যাস্কো-পিরোদের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে প্রধান বাধা হচ্ছে ভাষা। ম্যাস্কো-পিরোদের ভাষা পুরোপুরি জানে এমন কেউ নেই। ইয়েনে গোত্রের লোকেরা কিছুটা বুঝলেও পুরোটা বুঝে না। ফলে ভাষা সমস্যার কারণে এখনো ভালভাবে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি।

৪. করোওয়াই, ইন্দোনেশিয়া

ইন্দোনেশিয়ার কারোওয়াই উপদ্বীপে বাস করে এক উপজাতি। তাদেরকে করোওয়াই জাতি বলে চেনে সবাই। ১৯০০ সালের দিকে বিভিন্ন খ্রিস্টান মিশনারী দল করোওয়াইদের মাঝে গিয়ে থাকা শুরু করে এবং আধুনিক সভ্যতার সাথে পরিচয় ঘটানোর চেষ্টা করে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা সফল হয়নি। ১৯৮০ সালের পর থেকে অনেক করোওয়াই তাদের জঙ্গল ছেড়ে আশেপাশের গ্রামে বাস করা শুরু করে। মূলত শিকার এবং হর্টিকালচারের মাধ্যমে এরা জীবিকা নির্বাহ করে। এখনো তীর-ধনুক দিয়ে শিকার করে, পাথরের তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করে এবং পোশাক পরে না বললেই চলে! গাছের উপরে ঘর বানানো করোওয়াইদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এদের ঘরগুলো গাছের বেশ উপরে বানানো হয়, এর ফলে তারা অন্যান্য গোত্রের সাথে যুদ্ধে অনেক সুবিধা পায়। উপরে বানানোর কারণে কেউ সহজে আগুন ধরিয়ে ক্ষতিও করতে পারে না। ঘন জঙ্গলে থাকার পরেও আলো-বাতাসের সমস্যা হয় না।

C56Ooh2.jpg


ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম পাপুয়া রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বে বাস করা করোওয়াইদের ১৯৭৪ সালের আগে বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না! পাপুয়া নিউ গিনির সীমান্তের কাছে জঙ্গলে এদের বাস। তাদের বিশ্বাস ছিল তারা তাদের এলাকা ছেড়ে বের হলে সবাই মারা যাবে। গবেষকদের ধারণা করোওয়াইরা বর্তমানে তাদের মানুষখেকো স্বভাব থেকে বেরিয়ে এসেছে। তবে করোওয়াইদের অনেকেই দাবি করে তারা কিছু ধর্মীয় বিধানের জন্য এখনো মানুষখেকো রয়ে গিয়েছে। অনেক গোত্র বিদেশী এবং বাইরের লোকদের আক্রমণ না করলেও অনেকেই ধারণা করে যে জঙ্গলের ভেতরে আরো গোত্র থাকতে পারে যারা এখনো বাইরের লোকদের সাক্ষাৎ পায়নি।

৫. জারোয়া, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ

এটি একটি ক্ষুদ্র জাতি। বাস করে জঙ্গলে। এদের সমাজব্যবস্থা ও জীবনযাত্রা আদিম ধরনের। তার মানে এ জাতি জংলি। এরা উলঙ্গ বা আধা উলঙ্গ অবস্থায় থাকে। জারোয়ারা কথা বলে জারোয়া ভাষায়। এ ভাষার কোনো হরফ নেই। জারোয়াদের প্রধান খাদ্য জঙ্গলের জীবজন্তু, ফলমূল আর সাগরের মাছ। তীর-ধনুক দিয়ে এরা শূকর প্রভৃতি শিকার করে। এদের খাদ্য তালিকায় মধুও আছে। মধু সংগ্রহে এরা দক্ষ। জারোয়াদের গায়ের রঙ কালো। সম্ভবত এরা আফ্রিকার নিগ্রোদের বংশধর।

বঙ্গোপসাগরের বুকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এ দ্বীপপুঞ্জে রয়েছে ৫৭২টি দ্বীপ। দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন অংশের জঙ্গলে বাস করে কয়েকটি আদিবাসী সম্প্রদায়। এদেরই একটি জারোয়া। এরা একধরনের যাযাবর। তার মানে এরা ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন জঙ্গলে, খাদ্য সংগ্রহ ও জীবনযাত্রার প্রয়োজনে। জারোয়াদের বসবাস আন্দামানে দক্ষিণ-পূর্বের দ্বীপে। জারোয়া এলাকায় বাইরের মানুষের অনুপ্রবেশ এরা পছন্দ করে না। কেউ ঢুকে পড়লে বিষমাখা তীর ছুড়ে হত্যা করতেও পিছপা হয় না।

cGLWqtb.jpg


গত শতকের (২০ শতক) সত্তরের দশকে জারোয়া এলাকার বুক চিরে ভারত সরকার সড়ক নির্মাণ করে। এতে ভারতের মূল ভূখণ্ড বা বাইরের দুনিয়ার মানুষের এখানে আসার সুযোগ হয়। ফলে জারোয়া জনগোষ্ঠীর নিজস্ব জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটে এবং বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে এদের অবস্থা কাহিল করে। বর্তমানে জারোয়াদের সুরক্ষায় এদের এলাকায় পর্যটক ও বাইরের মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তার মানে জারোয়াদের আবাসভূমিকে সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

এই ছিলো ৫টি জংলি উপজাতি নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। দ্বিতীয় পর্বে আমরা আরও ৫টি জংলি উপজাতি সম্পর্কে অজানা তথ্য নিয়ে হাজির হয়ে যাবো।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top