What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পর্দার পেছনের কিংবদন্তী ‘সেলিম খান’ (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
o8A006L.jpg


মাত্রই শাশুড়ির মৃত্যু পরবর্তী কার্যক্রম থেকে ফিরলেন সেলিম খান ! মিডিয়া থেকে খুব ফোন আসতে লাগলো, 'জাভেদ আখতার বলছেন আপনারা নাকি আলাদা হয়ে গেছেন!সত্য নাকি!'। মন খারাপ হল সেলিম খান এর। কাল জাভেদ বলেছিল আলাদা হতে চায়, এত জলদি এভাবে মিডিয়াকে জানানোর কি দরকার ছিল! খুব কম মানুষই জানে, যে সিনেমা দিয়ে 'সেলিম-জাভেদ' নাম সুপারহিট হয়েছিল সেই 'জঞ্জীর' সিনেমাটি সেলিম খান এর একার লেখা ছিল। তবুও তিনি জাভেদ আখতার এর নাম দিয়েছিলেন তার পাশাপাশি। সেই জাভেদ এখন গীতিকার হতে চায়।কিন্তু গানের ব্যাপারে কোন আইডিয়া নেই সেলিম খান এর। যার কারনে আলাদা হয়ে যেতে হল বলিউডের সবচেয়ে হিট লেখক জুটি 'সেলিম-জাভেদ' কে।

বাবা-মা মারা যান ছোটবেলাতেই। খুব ভাল ক্রিকেট খেলতেন। ক্রিকেটার হবারই ইচ্ছা ছিল।তবে উনি নিজেকে খুব ভালভাবে বুঝতেন। রিয়েলাইজ করতে পারতেন নিজের ক্ষমতা। যখন 'আজিজ দৌড়ানির' (পরে ইনি জাতীয় দলে খেলেছিলেন) খেলা দেখলেন তার এলাকায় তখন সেলিম খান বুঝলেন নিজের ক্যালিবার কম, বেশিদূর পৌছতে পারবেন না ক্রিকেটে। ২৩ বছর বয়সে বোম্বে আসলেন অভিনেতা হতে। কয়েকটা সিনেমা করার পরে উপলব্ধি করলেন তিনি ক্যারেক্টার খুব ভাল বুঝতে পারেন কিন্তু সেটা পর্দায় ঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন না তবে এটা বুঝেন কিভাবে পারফেক্টলি উপস্থাপন করা দরকার। অবশেষে মাথায় এল তিনি আসলে লেখক হবার জন্যই পারফেক্ট।

তখনকার দিনে হিন্দি রাইটারদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। রাইটারদের নাম দেয়া হত না সিনেমার স্ক্রিন, ব্যানার, পোস্টারে। পারিশ্রমিক এর জন্য ঘুরানো হত তাদের। সেলিম খান এই অবস্থা চেইঞ্জ করার প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলেন। কারণ উনি মনে করেন স্ক্রিপ্টই একটা সিনেমার মূল সুপারস্টার। যার এসিস্টান্ট হিসেবে ছিলেন তাকে বলেও ফেলেছিলেন 'স্যার আমি একদিন স্টার দের থেকেও বেশি পারিশ্রমিক নিব'। যাকে বলেছিল তিনি খুব হেসেছিলেনে।

একের পর এক হিট সিনেমা দেবার পরেও তাদের ভাল পারিশ্রমিক তো দূরের ব্যাপার পোস্টারেও তাদের নাম আসতো না। একদিন তো রেগে গিয়ে একজন পেইন্টার ভাড়া করে শহরের সব 'জঞ্জীর' এর পোস্টারে নিজেদের নাম লিখিয়ে দিলেন। তবে এই অবস্থা তারাই চেইঞ্জ করেছেন। 'দোস্তানা' সিনেমায় পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন স্টারদের চেয়ে বেশি। 'সেলিম-জাভেদ' নামটা তখনকার সময়ে সুপারস্টারদের মতই উচ্চারিত হত।

অমিতাভ বচ্চন এর ক্যারিয়ার গড়ে দেয়ায় খুব বড় অবদান এই সেলিম খান এর। একের পর এক ফ্লপ দিয়ে যাচ্ছিলেন বচ্চন। ধর্মেন্দ্র'র জন্য লেখা 'জঞ্জীর' সিনেমা ঘষামাজা করে অমিতাভ এর জন্য লিখলেন। প্রডিউসারকেও কনভিন্স করালেন অমিতাভকে নিতে যারা প্রথমে রাজি হচ্ছিল না। বড় নায়িকাও রাজি না এই সিনেমা করতে। জয়াকে যখন স্ক্রিপ্ট শোনালেন জয়া বল্লেন 'এই সিনেমায় তো আমার করার কিছু নেই'। সেলিম খান তাকে রিকোয়েস্ট করে বল্লেন 'আমিও জানি এখানে আপনার কিছু করার নেই,তবুও প্লিজ এই সিনেমাটা আপনি অমিতাভ এর জন্য করুন, এটা তাকে স্টার বানিয়ে দিবে'।

শোলের জয় ক্যারেক্টার ও বচ্চন কে মাথায় রেখেই লেখা ছিল। কিন্তু স্টার পাওয়ার না থাকায় তাকে নিতে চাচ্ছিল না রমেশ সিপ্পি। জঞ্জির তখন কমপ্লিট থাকলেও রিলিজ হচ্ছিল না ডিস্ট্রিবিউটার এর অভাবে। জঞ্জির এর একটা প্রিন্ট নিয়ে সেলিম খান নিজ দ্বায়িত্তে হল ভাড়া করে সিনেমাটা দেখান রমেশ সিপ্পি এবং জিপি সিপ্পিকে। তারপরে তারা কনভিন্সড হন অমিতাভকে কাস্ট করায়।

'দিওয়ার' সিনেমায় ফাইনাল ছিল রাজেশ খান্না। এডভান্স ও দিয়েছিল তাকে প্রডিউসার।সেলিম খান প্রডিউসার 'গুলশান রয়'কে খুব রিকোয়েস্ট করে অমিতাভ কে নিতে বলেন,দরকার হলে রাজেশ খান্নাকে নিয়ে অন্য একটা স্টোরি লিখে দিবেন এই শর্ত ও দেন। এমনকি 'প্রকাশ মেহরা' এবং 'মনমোহন দেশাই' যাদের সাথে অমিতাভ দিয়েছেনে অনেক হিট সিনেমা তাদের কাছেও অমিতাভ বচ্চনকে প্রথম নিয়ে গেছিলেন এই সেলিম খান।

শোলে সিনেমার জন্য ভিলেইন পাওয়া যাচ্ছেনা। যখনি কেউ শুনে সিনেমায় ধর্মেন্দ্র,অমিতাভ,সঞ্জীব কুমারদের মত স্টার আছে তখনি নিজের স্ক্রিনটাইমের ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে স্ক্রিপ্ট না পড়েই না করে দেন সেলিম-জাভেদকে। একদিন হঠাত সেলিম সাহেব এর মনে পড়ে বেশ কয়েক বছর আগে জাভেদ আখতার আমজাদ নামের একজনার বেশ প্রশংসা করেছিলেন তার মঞ্চনাটক দেখে এসে। সেলিম খান ডেকে পাঠালেন আমজাদ খানকে। আমজাদ খান এবং সেলিম খান এর ছোট বেলায় শোনা এক ডাকুর গল্প দিয়ে সৃষ্টি করলেন বলিউডের অন্যতম সেরা ভিলেইন ক্যারেক্টার 'গব্বর' কে। জাভেদ আখতার এখনো এটা মনে করে অবাক হন কিভাবে সেলিম খান তার বছর খানেক আগের কথা মনে রেখে আমজাদ খানকে কাস্টিং করলেন।

সেলিম-জাভেদ আলাদা হবার আগে বলিউডকে দিয়েছেন প্রচুর কালজয়ী এবং সুপারহিট সিনেমা। তাদের আলাদা হওয়াতে বলিউড এর বড় রকমের ক্ষতি হয়েছিলই বলা যায়। তবুও নিজেরা অনেক ম্যাচুরিটির সাথেই এই সেপারেশন হ্যান্ডেল করেছেন।কেউ কখনো কারো নামে বদনাম করেননি। নিজেদের ঝামেলায় ছেলেমেয়েদের জড়াননি। ফারহান আখতার এর প্রথম সিনেমার পর তাকে বাসায় ডেকে এনে নিজের একটা ফিল্মফেয়ার ফারহান এর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন সেলিম খান। বয়স এখন ৮০+ ! ছেলে, মেয়ে, নাতিদের নিয়ে বেশ সুখেই আছেন। এখনো তার ছেলেরা তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে ভয় পায়। এখনো ঘরের প্রতিটা কাজ এর ডিসিশন তাকেই নিতে হয়। এখনো শাসন করেন ছেলে মেয়েদের আবার নিজেই তাদেরকে ডেকে নিয়ে ড্রিংক্স করেন একসাথে।

সাংবাদিকরা প্রায়িই প্রশ্ন করেন আপনি এত সুপারহিট সিনেমা লিখেছেন নিজের ছেলের জন্য এখন লিখছেন না কেন ! তিনি হেসে মজার ছলে জবাব দেন, 'সিনেমা হিট হলে সবাই বলবে সালমান এর জন্য হিট হয়েছে, ফ্লপ হলে সবাই বলবে আমার লেখা ভাল হয়নি তাই ফ্লপ। আমার ভাল ক্রেডিট তো কেউ দিবেনা, তাই লেখিনা' !
 

Users who are viewing this thread

Back
Top