What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আহমদ ইয়াসিন : হুইলচেয়ারে বস‍া ফিলিস্থিনি স্বাধীনতার মহানায়ক (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
mjsR5UG.jpg


আসকালান শহর থেকে বিশ কিলোমিটার দূরে ১৯৩৬ সালের জানুয়ারি মাসে জন্মগ্রহণ করেন শেখ আহমদ ইয়াসিন ! জন্মের মাত্র তিন বছরের মাথায় বাবাকে হারান। ইয়াসিনরা ছিলো সাত ভাই-বোন।

ইসরাইল তখন ফিলিস্তিন দখল করা শুরু করেছে। ফিলিস্তিনের অনেক অঞ্চল দখল করে নিজেদের বলে ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলিরা। ১৯৪৮ সালে যখন ইয়াসিনের বয়স মাত্র দশবছর তখন ইসরাইলি বাহিনী তাদের গ্রাম দখল করে নেয়। হত্যা করা হয় অসংখ্য নারী-পুরুষ। কোনোরকম পালিয়ে ইয়াসিন শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন। শিবিরে অর্ধাহারে-অনাহারে প্রচন্ডকষ্টে দিন কাটতে থাকে তার। আর এতেই ইসরাইলের প্রতি বাড়তে থাকে ঘৃণা !

ইয়াসিনের বয়স যখন ১২ বছর, তখন মারাত্মক দূর্ঘটনায় পরেন তিনি। শিবিরের বাইরে বন্ধু আব্দুল্লাহর সাথে কুস্তি খেলতে গিয়ে মেরুদণ্ডে আঘাত পান। এই আঘাত থেকে আর উঠে দা‍ঁড়াতে পারেননি আহমদ ইয়াসিন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তাকে হুইলচেয়ারেই জীবন কাটাতে হয়।

তবে শারীরিক এই অক্ষমতা শেখ আহমদ ইয়াসিনকে আটকে রাখতে পারেনি। উচ্চশিক্ষার জন্য কায়রো আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। শরীরের অবস্থা আরো খারাপের দিকে গেলে গাজায় ফেরত আসেন। ঘরে বসেই পড়ে ফেলেন দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি আর ধর্মের নানাস বিষয়। আধুনিক নানা বিষয়ে পণ্ডিত হয়ে ওঠেন তিনি।

১৯৭৮ সালে ৪৯ বছর বয়সে শেখ আহমেদ ইয়াসিন ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের জন্য আল মুজাম্মা আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যার কর্মকাণ্ড পুরো ফিলিস্থিনে ছড়িয়ে দেন। ব্যাপক তরুণ এই সংগঠনে অংশগ্রহণ করে। তারা ফ্রি চিকিৎসা সেবা, স্কুল ও মসজিদ নির্মাণ করেন এবং সারা ফিলিস্থিন জুড়ে লাইব্রেরি নির্মাণ করেন।

শেখ আহমেদ ইয়াসিন ফিলিস্থিনের স্বাধীনতার জন্য শুধু এখানেই থেমে থাকেননি। ১৯৮৭ সালে "হামাস" গঠন করেন। যার কর্মীরা ইসরাইলের উপর প্রথম সশস্ত্র হামলা শুরু করেন। এসময় শেখ আহমেদ ইয়াসিন বলেন –

"ফিলিস্তিনের সমস্যা আমাদের, এবং আমাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে। অস্ত্র ধরে প্রতিরোধে নামতে হবে। আমাদেরকে আরবের কোনো দেশ বা আন্তর্জাতিক কেউ সাহায্য করতে আসবেনা।"

আহমেদ ইয়াসিন ফিলিস্থিনিদের বুঝাতে সক্ষম হলেন, তাদের স্বাধীনতা তাদেরই ছিনিয়ে আনতে হবে। এজন্য সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে। হামাসের নেতৃত্বে তিনি ডাক দিলেন প্রথম ইন্তিফাদাহ এর। ইন্তিফাদাহ মানে গণ-অভ্যুত্থান।

আর এতেই ব্য‍াপক সাড়া পেলেন তিনি। ইসরাইলি বন্দুকের সামনে পাথর নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে ফিলিস্থিনি জনতা। নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ সবাই। বাদ যায়নি শিশুরাও !

ফিলিস্থিনি স্বাধীনতা আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন ১৯৮৩ সালে প্রথম গ্রেফতার করা হয় আহমদ ইয়াসিনকে। ইসরাইলি সৈন্য হত্যার অভিযোগে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। পরে দুই বছর কারাভোগের পর বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে তিনি মুক্তি লাভ করেন।

১৯৮৯ সালে আহমদ ইয়াসিনকে আবারো গ্রেফতার করা হয়। এবার তাকে অমানবিক অত্যাচার করা হয়। অত্যাচারে আহমদ ইয়াসিনের ডান চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ইয়াসিনের সাহায্যের জন্য তার দুই ছেলেকে কারাগারে নেয়া হলেও ইজরাইলি সৈন্যরা তার সামনেই তার ছেলেদের উপর অত্যাচার করে। এবার তাকে ৪০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। টানা ৮ বছর জেল খাটার পরে ১৯৯৭ সালে জর্দানের বাদশাহ হুসাইনের সহযোগিতায় মুক্তি পান আহমদ ইয়াসিন।

২২ মার্চ ২০০৪ মঙ্গলবার, বাসা থেকে একশো মিটার দূরে হুইলচেয়ারে করে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় শেখ আহমদ ইয়াসিনের উপর। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ছড়িয়ে পড়ে ইয়াসিনের শরীরের অংশ। শহিদ হন ইয়াসিন।

তবে শায়খ শেখ আহমদ ইয়াসিনকে হত্যা করেও ফিলিস্থিনিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে থামিয়ে রাখা যায়নি। মৃত্যুর আগে তিনি বলেছিলেন –

"আমরা যে পথ বেছে নিয়েছি; হয় বিজয়, নাহয় মৃত্যুর মাধ্যমে এর শেষ হবে" !

তার এই কথাকে মূলমন্ত্র হিসাবে ধারণ করে আজও অবিরত চলছে ফিলিস্থিনি স্বাধীনতা আন্দোলন …
 

Users who are viewing this thread

Back
Top