What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মশা মারতে বিমান কিনেছিলেন বাংলার যে রাজনীতিবিদ ! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
zfPqMuq.jpg


মশা, ছয় পা বিশিষ্ট এই ছোট্ট প্রাণীটি বেশ কয়েকদিন ধরে মানুষের মনে এক আতংকের নাম রূপে পরিগনিত হচ্ছে। জন্মলগ্ন থেকেই ঢাকা পরিচিত ছিলো মশার শহর হিসেবে। মোঘলরা তাদের রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদ স্থানান্তর করার পিছনে অন্যতম একটি কারণ ছিল এই মশা। মশার মাধ্যমে সৃষ্ট রোগ দ্বারা মানুষ মারা যাওয়ার ইতিহাস কোনো নতুন কিছু না মানুষের কাছে। তবে অনেকে না জানলেও পূর্ব পাকিস্তানের ইতিহাস ঘাটলে একজনের নাম খুঁজে পাওয়া যাবে যে কিনা সত্যি সত্যি মশা মারতে এক প্রকার কামান দাগিয়েছিলেন। তাঁর নাম হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী !

হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী এবং একটি মশা নিধন অভিযান

হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী ১৯০৬ সালে ফেনী জেলার গুথুমা গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। চট্টগ্রাম মিউনিসিপাল স্কুল থেকে ১৯২২ সালে ম্যাট্রিক এবং চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ১৯২৪ সালে ইন্টার পাশ করেন তিনি। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯২৮ সালে বিএ পাশ করেন।

jb297UZ.jpg


Habibullah Bahar Chowdhury | Photo source : Wikimedia

কর্মজীবনে তিনি একজন সফল রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিক ছিলেন। তিনি ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম স্বাস্থ্যমন্ত্রী। হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী স্বাস্থ্যমন্ত্রী হবার পরেই তার অন্যতম প্রধান অভিযান ছিলো মশা নিধন অভিযান ! মন্ত্রী হবার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০ হাজার সংখ্যক 'মশার ওষুধ ছিটানোর যন্ত্র' এনেছিলেন। রাস্তার পাশে গভীর ড্রেন খনন করিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থা আধুনিক করার প্রক্রিয়া তিনিই প্রথম চালু করেন। ঢাকা শহরের সকল খাল ডোবা পরিষ্কার করা হয় তার নির্দেশে। ইস্পাহানির সাহায্যে মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য তিনি দুইটি বিমান পর্যন্ত কিনেছিলেন। ত‍াঁর এই মশা নিধনের প্রক্রিয়াটি প্রায় দুবছর যাবৎ চলত থাকে। ঢাকার বুকে মশার প্রকোপ তখন তিনি সম্পূর্ণরূপে নির্মুল করতে পেরেছিলেন। তা‍ঁর গৃহীত কার্যক্রম এতটাই ফলদায়ক ছিলো যে, সেগুলো সম্পন্ন হওয়ার দশ বছর পরেও মানুষ মশারী না টানিয়ে ঘুমাতে পারত ! ১৯৪৯-১৯৫০ সালের দিকে রোম, কায়রো ও জেনেভায় অবস্থিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের অন্যতম প্রধান সদস্য ছিলেন। জেনেভা সম্মেলনে তিনি সভাপতিত্ব করেন।

সাহিত্যমনষ্ক এই রাজনীতিবিদ ১৯৪৫-৪৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনের অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ১৯৫৩ সালে তিনি মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে, "পাকিস্তান", "মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ", "ওমর ফারুক", "আমির আলী"।

আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামেরও সাথে তা‍ঁর বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর "সিন্ধু হিন্দোল" কাব্যগ্রন্থটি হাবিবুল্লাহ ও তাঁর বোন শামসুন্নাহারকে উৎসর্গ করেছিলেন।

১৯৬৬ সালের ১৫ই এপ্রিল হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ এবং দূরদর্শিতা ছিলো অনন্য। বাংলাদেশে চলমান এই ডেঙ্গ‍ু দুর্যোগের সময়ে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, চাইলে তাঁর দেখানো পথ ধরে মশা নিধন কার্যক্রম পুনরায় বাস্তবায়ন করার মাধ্যমেই আমরা ঢাকা শহরকে মশার প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে পারি৷ সরকার এবং জনগণ, সবাই সমানভাবে একযোগে কাজ করলেই এই ২০১৯ সালে এটি খুব সহজেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব !
 

Users who are viewing this thread

Back
Top