ইদানিং খুব মুটিয়ে যাচ্ছি,ওজন মেশিনে দাড়ালে রিডিং দেখার সাহস হয় না।সামনে কাজিনের বিয়ে,লুকের একটা ব্যাপার আছে না!ভয় ধরল মনে,খাওয়া-দাওয়া যেভাবে চলছে এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিন পর নিজেকেই চেনা যাবে না।নিজেকে বোঝালাম,নো মোর ডিলে,ডায়েট স্টার্ট করতেই হবে।
এক ক্লোজ ফ্রেন্ডকে ফোন লাগাই,ও দেশের বাইরে থাকে।রিসেন্টলি সে নাকি ২০ কেজি কমিয়ে ফেলেছে,ওর কাছ থেকেই শিখতে হবে ডায়েট কত প্রকার ও কি কি!
ফোনের উপর যা বলল তাতে বেশ হালকা হলাম,কি এক কিটো না ডিটো ডায়েট আছে যাতে ভরপুর প্রোটিন খাওয়া যায়।
বান্ধবী বলল,শোন,সকালে ঘি দিয়ে তিনটা ডিম ভেজে খাবি।
আমি তো খুশিতে গদগদ,কতদিন ঘি দিয়ে ডিম ভাজা খাই না। আনন্দ লুকিয়ে কিছুটা অবাক হবার ভান করে বলি,সত্যি বলছিস!যাহ,এটা হতেই পারে না।
বান্ধবী আরো জোর দিয়ে বলে,ঘি-মাখন, ডিম, চিকেন যত খুশি খা,কিটো ডায়েটের এটাই রুল।
আমি তখন জোরে দুইটা লাফ দিলাম,শব্দ শুনে পাশের রুম থেকে জামাই বলল,এই ভূমিকম্প হয় নাকি!খাট হঠাৎ কাঁপতেছে ক্যান!
যাই হোক অনেক উৎসাহের সাথে ডায়েট শুরু করলাম,সকালে ঘি দিয়ে ডিম ভাজা খাই,মাখন খাই,কাজের ফাঁকে টিফিন বের করে দুটো অমলেট খাই।কলিগদের দেখি মুচকি মুচকি হাসে,কিন্তু ঐসব পাত্তা দেয় কে!ওদের দোষ দিয়ে বা কি লাভ,ওরা কি ডায়েটের এতসব জানে নাকি।যেদিন শুকিয়ে ক্যাটরিনা কাইফ হব অইদিন সবাই বুঝবে...হুম।
দুপুরে মুরগী কয় পিস খাব সেটা ভাবি,বান্ধবী বলেছিল প্রোটিন যত খুশি তত,বাট নো কার্বোহাইড্রেট।একবারে ভাত না খেয়ে পারা যায় নাকি,বাঙালি বলে কথা।প্রোটিনের সাথে একটু ভাত ও নিয়ে নেই চুপি চুপি...
দিন যায় আর ওয়েট লসের অপেক্ষায় থাকি।মাখন আর ঘি খেয়ে রুচি বেড়ে গেছে কয়েকগুন...খেয়ে খেয়ে ওয়েট কমানো মন্দ না ব্যাপারটা।
কিছুদিন পর টের পাই নিজেকে আরো ভারী লাগছে,এতে চিন্তিত না হয়ে বরং খুশি হই।বান্ধবী বলেছিল,ডায়েটিং এর শুরুতে এমন হতে পারে,সো নো চিন্তা ডু ফুর্তি।
জামাই বলল,পাগলামি বন্ধ কর,আরো মোটা হচ্ছো কিন্তু।আমি হেসে বললাম,হিংসে হয়,আমার মত হতে চাও!
ডায়েটের এক মাস প্রায় হতে চলল,কোন শুকানোর লক্ষণ নাই,বরং হাটতে-চলতে,সিড়ি বেয়ে উঠতে কষ্ট হয় আজকাল।সেদিন এক পরিচিত আপুকে সালাম দিতেই বলল,সরি,আপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না।আমি একটু কষ্ট পেয়ে বললাম,আমাকে চিনতে পারছেন না আপু!সে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,ও তুমি!তোমার এই অবস্হা কেন?
ভেবেছিলাম মাস দেড়েক ডায়েটের পর ওজন মেশিনে দাড়াব,কিন্তু সবার ছানাবড়া চক্ষু আর সেই সুযোগ দিল কই!
মেশিন যা রিডিং দিল তাতে আমার মাথায় হাত!ঐ মুহুর্তে বিদেশ গিয়ে বান্ধবীরে চাপড়াইতে মন চাইল,কি ডায়েট দিল আমারে।সহজ সরল পাইয়া ভুংভাং কইল আর আমিও বোকার মত তাই করলাম!
তখনি ফোন দিলাম বান্ধবীরে,ওদের দেশে তখন গভীর রাত।আমার মেজাজ পুরাই চরমে,ওরে বার বার ফোন দিয়ে ঘুম থেকে উঠায়ে বলি,তুই কি আমার শত্রু?এইটা ক্যান করলি আমার সাথে?
বান্ধবী তো পুরাই থ।বলে বসল,তুই কোন গোলমাল পাকাইছিস।তারপর সে আমার সারাদিনের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে ডিটেইলস জানতে চাইল।আমি ও বললাম।চা এর ব্যাপারে জানতে চাইলে বলি দৈনিক পাঁচ কাপ।
বান্ধবী এবার বলল,দুধ চা না রং চা?
আমি- দুধ চা।
বান্ধবী- চিনি খাস নাকি চায়ে?
আমি(আমতা আমতা করে)- তা তো খাই একটু।চিনি ছাড়া কি আর ভাল লাগে।
চোর ধরা শেষ করে বান্ধবী ঘুমাতে গেল।আমার চোখের পানি কোথায় রাখি,মনের দুঃখে দেয়ালে দুইটা লাথি মারলাম।অমনি পাশের রুম থেকে জামাই এর চিৎকার,ভূমিকম্প শুরু হল নাকি!টেবিলের উপর চায়ের কাপ নড়ছে ক্যান?
(সমাপ্ত)
এক ক্লোজ ফ্রেন্ডকে ফোন লাগাই,ও দেশের বাইরে থাকে।রিসেন্টলি সে নাকি ২০ কেজি কমিয়ে ফেলেছে,ওর কাছ থেকেই শিখতে হবে ডায়েট কত প্রকার ও কি কি!
ফোনের উপর যা বলল তাতে বেশ হালকা হলাম,কি এক কিটো না ডিটো ডায়েট আছে যাতে ভরপুর প্রোটিন খাওয়া যায়।
বান্ধবী বলল,শোন,সকালে ঘি দিয়ে তিনটা ডিম ভেজে খাবি।
আমি তো খুশিতে গদগদ,কতদিন ঘি দিয়ে ডিম ভাজা খাই না। আনন্দ লুকিয়ে কিছুটা অবাক হবার ভান করে বলি,সত্যি বলছিস!যাহ,এটা হতেই পারে না।
বান্ধবী আরো জোর দিয়ে বলে,ঘি-মাখন, ডিম, চিকেন যত খুশি খা,কিটো ডায়েটের এটাই রুল।
আমি তখন জোরে দুইটা লাফ দিলাম,শব্দ শুনে পাশের রুম থেকে জামাই বলল,এই ভূমিকম্প হয় নাকি!খাট হঠাৎ কাঁপতেছে ক্যান!
যাই হোক অনেক উৎসাহের সাথে ডায়েট শুরু করলাম,সকালে ঘি দিয়ে ডিম ভাজা খাই,মাখন খাই,কাজের ফাঁকে টিফিন বের করে দুটো অমলেট খাই।কলিগদের দেখি মুচকি মুচকি হাসে,কিন্তু ঐসব পাত্তা দেয় কে!ওদের দোষ দিয়ে বা কি লাভ,ওরা কি ডায়েটের এতসব জানে নাকি।যেদিন শুকিয়ে ক্যাটরিনা কাইফ হব অইদিন সবাই বুঝবে...হুম।
দুপুরে মুরগী কয় পিস খাব সেটা ভাবি,বান্ধবী বলেছিল প্রোটিন যত খুশি তত,বাট নো কার্বোহাইড্রেট।একবারে ভাত না খেয়ে পারা যায় নাকি,বাঙালি বলে কথা।প্রোটিনের সাথে একটু ভাত ও নিয়ে নেই চুপি চুপি...
দিন যায় আর ওয়েট লসের অপেক্ষায় থাকি।মাখন আর ঘি খেয়ে রুচি বেড়ে গেছে কয়েকগুন...খেয়ে খেয়ে ওয়েট কমানো মন্দ না ব্যাপারটা।
কিছুদিন পর টের পাই নিজেকে আরো ভারী লাগছে,এতে চিন্তিত না হয়ে বরং খুশি হই।বান্ধবী বলেছিল,ডায়েটিং এর শুরুতে এমন হতে পারে,সো নো চিন্তা ডু ফুর্তি।
জামাই বলল,পাগলামি বন্ধ কর,আরো মোটা হচ্ছো কিন্তু।আমি হেসে বললাম,হিংসে হয়,আমার মত হতে চাও!
ডায়েটের এক মাস প্রায় হতে চলল,কোন শুকানোর লক্ষণ নাই,বরং হাটতে-চলতে,সিড়ি বেয়ে উঠতে কষ্ট হয় আজকাল।সেদিন এক পরিচিত আপুকে সালাম দিতেই বলল,সরি,আপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না।আমি একটু কষ্ট পেয়ে বললাম,আমাকে চিনতে পারছেন না আপু!সে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,ও তুমি!তোমার এই অবস্হা কেন?
ভেবেছিলাম মাস দেড়েক ডায়েটের পর ওজন মেশিনে দাড়াব,কিন্তু সবার ছানাবড়া চক্ষু আর সেই সুযোগ দিল কই!
মেশিন যা রিডিং দিল তাতে আমার মাথায় হাত!ঐ মুহুর্তে বিদেশ গিয়ে বান্ধবীরে চাপড়াইতে মন চাইল,কি ডায়েট দিল আমারে।সহজ সরল পাইয়া ভুংভাং কইল আর আমিও বোকার মত তাই করলাম!
তখনি ফোন দিলাম বান্ধবীরে,ওদের দেশে তখন গভীর রাত।আমার মেজাজ পুরাই চরমে,ওরে বার বার ফোন দিয়ে ঘুম থেকে উঠায়ে বলি,তুই কি আমার শত্রু?এইটা ক্যান করলি আমার সাথে?
বান্ধবী তো পুরাই থ।বলে বসল,তুই কোন গোলমাল পাকাইছিস।তারপর সে আমার সারাদিনের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে ডিটেইলস জানতে চাইল।আমি ও বললাম।চা এর ব্যাপারে জানতে চাইলে বলি দৈনিক পাঁচ কাপ।
বান্ধবী এবার বলল,দুধ চা না রং চা?
আমি- দুধ চা।
বান্ধবী- চিনি খাস নাকি চায়ে?
আমি(আমতা আমতা করে)- তা তো খাই একটু।চিনি ছাড়া কি আর ভাল লাগে।
চোর ধরা শেষ করে বান্ধবী ঘুমাতে গেল।আমার চোখের পানি কোথায় রাখি,মনের দুঃখে দেয়ালে দুইটা লাথি মারলাম।অমনি পাশের রুম থেকে জামাই এর চিৎকার,ভূমিকম্প শুরু হল নাকি!টেবিলের উপর চায়ের কাপ নড়ছে ক্যান?
(সমাপ্ত)