What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected ভালবাসার ছোঁয়া (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
মেয়েটা অঝোর ধারায় কেঁদে চলেছে। মেয়েটার কান্না শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। মন চাইছে কষে একটা চড় মারি। কিন্তু বাসররাতে যদি বউকে চড় মারি তাহলে সেটা কেমন হবে?
তাই নিজেকে মোটামুটিভাবে নিয়ন্ত্রন করে মেয়েটার উদ্দেশ্যে বলে উঠলাম,
" দেখো কান্না থামাও, কান্নাকাটি আমার একদমই পছন্দ না।"
কথাটায় কাজ হলো। মেয়েটা হঠাৎ করেই কান্না থামিয়ে দিল। বুঝতে পারলাম মেয়েটা ভয় পেয়েছে আমার কথা শুনে।
বিছানায় গিয়ে বসলাম ওর পাশে। ওর নামটা ঠিক মনে পড়ছে না। নিজের স্ত্রীর নাম মনে করতে পারছি না ভেবেই নিজেকে আহাম্মক মনে হতে লাগলো।
" এই মেয়ে তোমার নামটা যেন কি? "
আমার কথাশুনে মেয়েটা তার ভয় পাওয়া হরিণীর মত চোখদুটো তুলে আমার দিকে তাকালো। ওর এই ভয় পাওয়া চাহনি দেখে আমি ওর প্রেমে পড়ে গেলাম। কি সুন্দর ওর চোখদুটো।
ওর ঠোঁটদুটো কাঁপছে। কিছু হয়তো বলতে চাইছে কিন্তু বলতে পারছে না।
" কি ব্যাপার? নাম বলতে এত সময় লাগে নাকি? নাকি নিজের নাম নিজেই ভূলে গেছো? "
এবারো সে আমার দিকে তাকালো, এখনো সেই ভয়ার্ত দৃষ্টি।
" আমার নাম নুসরাত জাহান ফারিয়া। "
অনেকটা অভিমানি কন্ঠেই নিজের নামটা বললো ফারিয়া। বাহ খুব সুন্দর নাম। আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম। সারাদিন অনেক ধকল গেছে। আমাকে শুতে দেখে ফারিয়া একটু নড়েচড়ে বসলো। আমি আস্তে করে ওর কোমল হাতটা ধরলাম। ও একটু কেঁপে উঠলো।
" ফারিয়া তাড়াতাড়ি পোশাক পাল্টে ঘুমিয়ে পড়ো।"
একথা বলেই আমি চোখ বন্ধ করলাম। ঘুমে চোখের পাতি ভারী হয়ে আসছে।
ফারিয়ারর মন থেকে এখনো হয়তো ভয় কাটেনি। অপরিচিত একজন পুরুষের সাথে তাকে এক বিছানায় ঘুমাতে হবে। এই ভয়েই হয়তো মেয়েটা কান্না করছে। আবার এমনও হতে পারে বাবা মার কথা মনে করে কাঁদছে।
যাই হোক আমি নিজে থেকে ফারিয়ার কাছে যাবোনা। যদি ফারিয়া আমার কাছে নিজ ইচ্ছায় আসে তবেই আমি ফারিয়ার কাছে যাব।
কারন ফারিয়াকে নিয়েই সারাজীবন কাটাতে হবে। আমি চাইনা ফারিয়ার মনে আমার সম্পর্কে কোন বিরুপ ধারনা থাকুক। ওর স্পর্ষে ভালবাসার ছোঁয়া পেতে চাই আমি।
..
বিয়েটা করেছি বাবা মার ইচ্ছেতেই। ইচ্ছা ছিল আরো কিছুদিন পর বিয়ে করার। কিন্তু বাবা আর মার অত্যাচারে তিষ্ঠাতে না পেরেই বিয়েটা করতে হলো।
ফারিয়া বোধহয় অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়তো। আমি সঠিক জানিনা। আসলে বিয়ের আগে মাত্র একবারই ফারিয়ার সাথে দেখা হয়েছিল। তাও যেদিন আমার বাবা মা ফারিয়াকে দেখতে গিয়েছিল সেদিন একনজর দেখেছিলাম।
তারপর দেখতে দেখতে বিয়েটা হয়েই গেল। স্বাধীন থেকে হয়ে গেলাম পরাধীন।
..
জানালা দিয়ে সকালের সূর্যের আলো মুখের উপর পড়তেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘুম ভাঙ্গতেই বুঝতে পারলাম ফারিয়া আমার শরীরের উপর পা তুলে ঘুমিয়ে আছে। আমি আস্তে করে ওর পা সরিয়ে দিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়লাম।
ফারিয়া এখনো অঘোরে ঘুমাচ্ছে। আমি হাত মুখ ধুয়ে এসে ফারিয়ার মাথায় আস্তে করে হাত বুলিয়ে দিয়ে জাগাতে লাগলাম।
" ফারিয়া উঠো, সকাল হয়ে গেছে।"
দুইতিনবার ডাকার পর ফারিয়া চোখ মেলে তাকালো। আমাকে দেখেই সে ধড়মড় করে উঠে বসলো। তারপর ব্যস্ততার সাথে গায়ের কাপড় ঠিক করতে লাগলো। ওর এই কান্ড দেখে মনে মনে একচোট হাসলাম। পাগলী মেয়ে একটা।
" তাড়াতাড়ি উঠে গোসল করে নাও। আজ তোমার উপর দিয়ে অনেক ধকল যাবে।"
একথা বলেই আমি ঘর থেকে বের হলাম। আমাদের পরিবারের সবাই একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠে। আর যেহেতু গতকাল সবার উপর দিয়েই ধকল গেছে সেহেতু আজ ঘুম থেকে আরো দেরি করেই উঠবে।
আমি রাস্তায় বের হলাম। রোদ উঠলেও এখনো হালকা কুয়াশা রয়েছে। একটা শীত শীত আমেজ রয়েছে। এই মিষ্টি শীতে হাঁটতে ভালই লাগবে।
..
কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটির পর বাসায় এলাম। ঘরে ঢুকে দেখি আমার চাচা আর চাচি এসেছেন। তারা বিয়ের দিন কোন কারন বশত আসতে পারেননি। তবে আজ এসেছেন।
আমি তাদের সাথে কুশল বিনিময় করে নিজের ঘরে চলে এলাম।
ফারিয়া তখন আয়নার সামনে বসে সাজুগুজুতে ব্যস্ত। আয়নায় আমার প্রতিবিম্ব পড়তেই সে ঘুরে তাকালো।
" আপনি কোথায় গিয়েছিলেন সকালে? "
ফারিয়ার কন্ঠে কৌফিয়তের সুর। ওর কথাটা শুনে ভালই লাগলো।
" এইতো একটু বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেলাম।"
" আপনার বন্ধুরা এত সকালে ঘুম থেকে উঠে? "
" হুম উঠে। তুমি এখন সাজতে বসলে যে? "
" দেখেন নাই চাচা চাচি আসছে? "
" ও তাইতো। আচ্ছা সাজো।"
আবারো বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। মাথাটা হঠাৎ করেই ঝীমঝীম করতে শুরু করেছে।
" এইযে শুনছেন? "
" হুম শুনছি, বলো কি বলবে? "
" আমাকে একটু শাড়িটা পরতে সাহায্য করবেন? "
এই কথা শুনে শোয়া থেকে উঠে বসলাম। ভ্রু কুঁচকে তাকালাম ফারিয়ার দিকে।
" এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? "
" তুমি শাড়ি পরতে পারো না? "
" পারি, কিন্তু কুচি দিতে গেলেই সব গোলমাল হয়ে যায়।"
" হায় হায় মেয়ে হয়েও শাড়ি পরতে জানোনা? "
এইকথা শুনে ফারিয়া করুন দৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে।
" আমি কি শাড়ি পরেছি নাকি কখনো? সবসময় তো সেলোয়ার কামিজ পরেছি। থাক লাগবেনা আপনার সাহায্য। আমি একাই পারি।"
একটা মুখ ভেংচি কেটে শাড়ি পরায় মন দিল ফারিয়া। প্রতিবারই কুচি দিতে গিয়েই শাড়ি আউলে ফেলছে। বেশকয়েকবার এমন হওয়ার পর আবারো করুণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
" এভাবে বসে না থেকে একটু দিননা শাড়িটা পরিয়ে।"
এবার আর ওর আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পারলাম না। আমি নিজেও জানিনা শাড়ি কিভাবে পরাতে হয়। তারপরও মোটামুটি ভালভাবেই শাড়িটা পরিয়ে দিলাম।
শাড়ি পরা শেষে ফারিয়া শেষবারের মত আয়নায় নিজেকে দেখে নিয়ে চলে চাচা চাচির সামনে যাওয়ার জন্য উদ্ধত্ত হলো।
" ফারিয়া একটু দাঁড়াও তো।"
আমার কথা শুনে ফারিয়া দাঁড়িয়ে গেল। আমি ফারিয়ার সামনে গিয়ে বললাম,
" একটা জিনিস দিতে কিন্তু ভূলে গেছো।"
একথা শুনে ফারিয়া আবার আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
অনেকক্ষন পর আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
" কই সবইতো ঠিক আছে।"
" নাহ ঠিক নেই। কপালে একটা টিপ দিলে তোমাকে আরো সুন্দর লাগবে। দাঁড়াও আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।"
অতঃপর একটা কালো টিপ পরিয়ে দিলাম ফারিয়ার কপালে।
ফারিয়া দেখি লজ্জায় লাল হয়ে আছে। আমি আস্তে করে ওর চিবুক স্পর্ষ করে বললাম,
" ওরে আমার লজ্জা কুমারী, লজ্জা তাড়িয়ে যাও চাচা চাচির সামনে। উনারা অনেক্ষন হলো বসে আছে।"
ফারিয়া আবার যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। এবার কি মনে করে যেন থেমে গিয়ে আমার কাছে এলো।
" কিছু বলবে? "
অকস্মিক ভাবেই ফারিয়া আমার গালে আলতো করে একটা চুমু একে দিয়ে ঝড়ের বেগে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

কিছুসময় চোখ বন্ধ করে রাখলাম। আমার কাঙ্খিত জিনিস পেয়ে গেছি। ওর স্পর্ষে আমি ভালবাসা টের পাচ্ছি।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top