-\-\ছাতাটা ঠিক করে ধরেন।
-\-\ধরেছি তো।
-\-\কই ধরেছেন।
-\-\-এই তো ধরেছি।
-\-\ধরেছেন তাহলে আমি ভিজে যাচ্ছি কেনো?
-\-\আসলে ছোট ছাতার মধ্যে দুজনে আছি তো তাই।
-\-\-আপনাকে কে থাকতে বলেছে।আপনি ভিজলে ভিজেন কিন্তু আমি না ওকে।
-\-\-না আসলে ভিজলে তো আমার আবার শরীর খারাপ করবে তো।
-\-\করে করুক।তবুও যেনো আমি না ভিজি।
.
>>মনডা চাইতেছে এই বৃষ্টির মধ্যে মাথায় তুলে আছাড় মারি।আপনারা কী ভাবছেন আমার অফিসের বস,আরে না,না,অফিসের বস না।ইনি আমার বাসার বস মানে আমার বউ।বউ বলতে কেমন জানি লাগছে,যেভাবে সারাদিন দৌড়ের উপরে রাখে তাতে মাঝে মাঝে আমার, সন্দেহ হয় আমিই মনে হয় উনার বউ। তবে নীতি রাগলে ওকে বেশ মায়াবতী লাগে।
.
><উনি উনি কেন বলছি আমার বউয়ের নাম নীতি,আর আমি মাহিন প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করি।নীতির যখন প্রচন্ড রাগ হয় তখন আমাকে আপনি করে বলে।আজকে আমার অন্যায় অফিস থেকে লেট করেছি,যার ফলসরূপ নীতি বাজার করতে এসেছে।আমি তবুও তাড়াহুড়ো করে চলে এসেছি বাসায় ঢোকার আগেই দেখি নীতি বেরিয়ে যাচ্ছে,আমি তখন পিছু পিছু ছাতা নিয়ে হাটা ধরলাম,যার কারনে বাজারের মধ্যে এমন ঝাড়ি শুনছি।
.
-\-\কী ব্যাপার ছাতা টা ঠিক করে না ধরে এদিন ওদিক কী দেখছো? (নীতি)
-\-\কই কিছু নাতো। (আমি)
-\-\কিছু না,বুঝিনা মনে করছো আমি।
-\-\কি করলাম আবার।
-\-\মেয়েদের দিকে কেন তাকাচ্ছো।
-\-\কী বলো,পাশে এমন সুন্দরী বউ থাকলে কেউ আশে পাশে তাকায়।
-\-\একদম ঢং করবা না।
-\-\ঢং না, সত্যি বলছি।
-\-\চলো বাসায় তোমার হচ্ছে।
.
বাসায় আসার পর...
.
-\-\একদম ঘরে ঢুকবে না বলে দিলাম।
-\-\কোথায় যাবো তাহলে।।
-\-\রাস্তায় সুন্দরী মেয়েদের কাছে যাও।
-\-\-হা,হা,হা,,,কি যে বলো,বিয়ে করে ফেলছি না,না হলে,,,,,?
-\-\না হলে কী?
-\-\-তোমার বলার আগেই যেতাম।
-\-\কী,,,মা,ওমা,শোনো তোমার ছেলের কী বলে?
-\-\-ঐ আবার মা কে ডাকছো কেন?
-\-\থাকবো না তোমার সাথে আমি।
-\-\আরে আমি তো ফ্যাজলামি করে বলেছি।
-\-\কী হয়েছে বউ মা। (আমার মা)
-\-\দেখুননা মা,আপনার ছেলে নাকি আমি না থাকলে অন্য মেয়েদের সাথে থাকতো।
-\-\কিরে মাহিন তোর কী আর কোন কাজ নেই,শুধু বউমা কে বিরক্ত করিস।
-\-\আমি কিছু করিনি, তোমার বউমা শুধু আমার সাথে ঝগড়া করে।
-\-\কী আমি ঝগড়া করি।থাকবো না আর তোমার সাথে।
.
>>কথাটা বলেই বউ রাগ করে দরজা আটকিয়ে দিলো।মা ও কিছুক্ষন কথা শুনালো আমাকে।এখন দেখছি পৃথীবির বড় অসহায় আমি,যে যেমন পারছে কথা শুনিয়ে যাচ্ছে।
.
আরে এই তো বউ আবার দরজা খুলছে।কী ব্যাপার বউ বাপের বাড়ী না গিয়ে রান্না ঘরে ঢুকলো কেনো।ও হ্যা আমি তো গরম ভাতের সাথে ইলিশ মাছ ভাজা খেতে চেয়েছি।তাই হইতো বাপের বাড়ী যাওয়া বন্ধ করছে।যাক কত ভালবাসে আমাকে।
.
-\-\কী ব্যাপার শুয়ে থাকলে যে,আমি রান্না করছি রান্না ঘরে তো আসলে না।
[আসলে নীতি যেদিন ইলিশ মাছ ভাজি করে সেদিন আমি রান্না ঘরে যাবোই,আর নীতি কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরি,কিন্তু আজ.. ]
-\-\এমনিতেই।হাহাহাছি,,,
-\-\তোমার কী জ্বর আসতেছে?
-\-\নাহ,এমনিতেই হাছি হচ্ছে।
-\-\চুপ একদম চুপ,এই তো জ্বর আসতেছে।
[কপালে হাত দিয়ে]
-\-\জানি না।
-\-\তোমাকে তখন কে বলেছে শুধু আমার মাথার উপরে ছাতা ধরতে।
-\-\তুমিই তো,,,?
-\-\থামো, আমি বলেছি বলে করবে।
>>কথাটা বলেই নীতি বাচ্চাদের মত কান্না শুরু করে দিলো।
-\-\আরে পাগলী কাঁদছো কেনো?
-\-\সব কিছু আমার জন্য হয়ে হয়েছে,বেশী রাগ দেখাতে গেছি।
-\-\আরে কিছু হয়নি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আর তোমাকে কিন্তু সেইরকম মায়াবী লাগছে দেখতে,আরেকটু কাঁদো তো। আরে আরে কোথায় যাচ্ছো।
.
কিছুক্ষন পরেই নীতি এসেই ঔষধ খাওয়াই দিলো,আর মাথায় অনেক করে তেল দিয়ে দিয়ে গেলো।তেলগুলো তো মাথার দুই পাশ দিয়ে বেয়ে পড়ছে,তেল কী সরকারি দামে পাইছে নাকি কে জানে।
যায় বউকে একটু আদর করে আসি শরীর টা একটু ভাল লাগছে-\-\
.
-\-\এই ছাড়ো আমাকে?শরীর খারাপ তো তোমার (নীতি)
-\-\শরীর ঠিক আছে এখন।কেনো ছাড়বো?আর তাছাড়া তুমি আমার বিয়ে করা বউ। (আমি)
-\-\ঘরে বউ থাকতে অন্য মেয়েদের দিকে নজর দাও কেনো?
-\-\কি যে বলো না তুমি।আমি কী পাশের বাড়ীর হাসিব ভাইয়ের মত করে তাকায় নাকি?
-\-\-মানে?
-\-\হাসিব ভাই তো খারাপ নজরে তাকায়।।
-\-\ও তাহলে তুমি কী নজরে তাকাও?
-\-\-ভদ্র ভাবে তাকায়।
-\-\- শিকার করলে তাহলে,তোমার সাথে আর থাকবোই না। (রেগে)
-\-\-এই রে সত্যি কথাগুলো পেট থেকে বেরিয়ে গেলো কিভাবে বুঝলাম না।
-\-\-আমাকে ছাড়ো বলছি,আমার শরীরে হাত দিবে না তুমি। (প্রচন্ড রেগে)
-\-\-তুমি আমার বিয়ে করা বউ,হাত দেয়ার অধিকার আমার আছে।
-\-\-নেই অধিকার।তুমি এখান থেকে না গেলে আমি কিন্তু ব্যাগ গুছিয়ে চলে যাবো।
>>কী আর করা অবশেষে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম।ভাবলাম একটু রোমান্স করব,রোমান্স তো হলোই না বরং আবার ঝগড়া হলো। নিজের উপরেই এখন রাগ হচ্ছে,সত্যি কথা গুলোও মাঝে মাঝে চেপে রাখতে হয় না হলে ঝগড়া বাধবে।
.
রান্না করা শেষে-\-\-
.
-\-\এই নিন খেয়ে আমাকে উদ্ধার করেন।
[কথাটা বলেই বউ মানে নীতি রুমে চলে গেলো,এখন রাত নয়টা,গরম ভাতের সাথে ইলিশ মাছ খেতে মজায় অন্যরকম,কিন্তু বউ পাশে না থাকলে সবকিছুই নিরামিষ মনে হয়]
-\-\শুয়ে পড়লে যে, খাবে না?
-\-\আমার খিদে নেই।
-\-\চলো না,তুমি ছাড়া কিছু ভাল্লাগে বলো।
-\-\একদম ঢং করবে না।বাইরে তো তোমার অনেকেই আছে।
-\-\সেই একই কথা বার বার।
-\-\যা সত্যি তাই তো বলছি।
-\-\সরি, আর করব না,এবার খেতে চলো।
-\-\বললাম তো খিদে নেই।তুমি আর মা খেয়ে নাও।
-\-\তুমি না খেলে আমিও খাবো না।মায়ের খাবার রুমে দিয়ে এসেছি আমি।
-\-\আমি খাবো না,তুমি খেয়ে নাও।
>>কী আর করা আমিও বউয়ের পাশে শুয়ে পড়লাম।এই ছাড়া কোন উপায় নেই।এবার যদি বউয়ের রাগ ভাঙে।
-\-\কী ব্যাপার না খেয়ে আবার তুমি শুয়ে পড়লে কেনো?
-\-\আমারও খেতে ইচ্ছা করছে না।
-\-\ঢং তো ভালই শিখেছো।
-\-\বউয়ের সাথে ঢং করব নাতো কার সাথে করব।
-\-\হয়েছে হয়েছে এবার খেতে চলুন।
.
>আমি আর নীতি মানে বউ একই প্লেটে খাবার খাচ্ছি,আমি নীতি কে খাওয়াই দিচ্ছি,আর নীতি অভিমানী কান্না করছে।বড্ড বেশী ভালবাসে আমাকে, তাই হয়তো এতো রাগ অভীমান করে আমার সাথে।আমাকে হারাতে চাই না পাগলী টা সেটা আমি জানি।কিন্তু ওকে রাগাতে আমার ভীষন ভাল্লাগে,নীতি রাগলে ওকে ভীষন মায়াবী লাগে,সেটা ও নিজেও জানে না।
.
>>সারাদিন বৃষ্টি শেষে এখন জোস্না রাত উঠেছে,নীতি আর আমি চাঁদ দেখছি ছাদে বসে,,কিন্তু-\-\-
-\-\-এই শোনো না? (আদুরে গলায় বলল নীতি)
-\-\-হ্যা শুনছি তো। (আমি)
-\-\-এই হাতটা সরাও না।
-\-\কেনো?
-\-\তোমার বুকে মাথা রাখবো। (আদুরে গলায়)
-\-\-বুকটা তো অন্য কারো জন্য।
-\-\-কার জন্য? (কাঁদো কাঁদো গলায়)
-\-\ঐ চাঁদটার জন্য,দেখছো চাঁদ টা কত সুন্দর।
-\-\ও,,আমি বুঝি অসুন্দর।
-\-\সেটা তো বলিনি,তবে চাঁদ টা বেশী সুন্দর।
-\-\থাকো তুমি তোমার চাঁদ কে নিয়ে,আমি গেলাম।(রাগী ভঙ্গি তে)
-\-\কোথায় যাও,বুকে মাথা না রেখেই চলে যাবে।আমার বউয়ের কাছে চাঁদটাও যে হার মানবে,সেটা কী আমার বউ জানে।
>>কথা শেষ না হতেই নীতি আমার বুকে মাথা রাখল। নীতি কে আমি পরম আদরে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে রেখেছি।কিছুক্ষনের মধ্যে নীতি ঘুমিয়ে পড়ল।এখন কেমন জানি চাঁদ টা কে ভীষন রকমের অসুন্দর লাগছে।কিন্তু চাঁদের আলো নীতির মুখে পড়ার কারনে নীতি কে বড্ড মায়াবী লাগছে,যেটা চাঁদের জোস্নাকেও হার মানায়।এত্ত মায়াবী আর এত্ত পবিত্র লাগছে নীতি কে পৃথীবির সকল সুন্দর কে হার মানায়।
.
পরম আদরে মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে আমার বুকে,শক্ত করে জড়িয়ে আছে,হয়তো ঘুমের ভেতরেও আমাকে হারাতে চাই না।আমিও হারাতে চাই না আমার বউ কে।নীতি জানতেও পারবেও না কখনো এতো সুন্দর একটা রাত সে আমাকে উপহার দিয়েছে।যার সাক্ষী আমি, ঐ আকাশের চাঁদ, তাঁরা গুলি।
সমাপ্ত
-\-\ধরেছি তো।
-\-\কই ধরেছেন।
-\-\-এই তো ধরেছি।
-\-\ধরেছেন তাহলে আমি ভিজে যাচ্ছি কেনো?
-\-\আসলে ছোট ছাতার মধ্যে দুজনে আছি তো তাই।
-\-\-আপনাকে কে থাকতে বলেছে।আপনি ভিজলে ভিজেন কিন্তু আমি না ওকে।
-\-\-না আসলে ভিজলে তো আমার আবার শরীর খারাপ করবে তো।
-\-\করে করুক।তবুও যেনো আমি না ভিজি।
.
>>মনডা চাইতেছে এই বৃষ্টির মধ্যে মাথায় তুলে আছাড় মারি।আপনারা কী ভাবছেন আমার অফিসের বস,আরে না,না,অফিসের বস না।ইনি আমার বাসার বস মানে আমার বউ।বউ বলতে কেমন জানি লাগছে,যেভাবে সারাদিন দৌড়ের উপরে রাখে তাতে মাঝে মাঝে আমার, সন্দেহ হয় আমিই মনে হয় উনার বউ। তবে নীতি রাগলে ওকে বেশ মায়াবতী লাগে।
.
><উনি উনি কেন বলছি আমার বউয়ের নাম নীতি,আর আমি মাহিন প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করি।নীতির যখন প্রচন্ড রাগ হয় তখন আমাকে আপনি করে বলে।আজকে আমার অন্যায় অফিস থেকে লেট করেছি,যার ফলসরূপ নীতি বাজার করতে এসেছে।আমি তবুও তাড়াহুড়ো করে চলে এসেছি বাসায় ঢোকার আগেই দেখি নীতি বেরিয়ে যাচ্ছে,আমি তখন পিছু পিছু ছাতা নিয়ে হাটা ধরলাম,যার কারনে বাজারের মধ্যে এমন ঝাড়ি শুনছি।
.
-\-\কী ব্যাপার ছাতা টা ঠিক করে না ধরে এদিন ওদিক কী দেখছো? (নীতি)
-\-\কই কিছু নাতো। (আমি)
-\-\কিছু না,বুঝিনা মনে করছো আমি।
-\-\কি করলাম আবার।
-\-\মেয়েদের দিকে কেন তাকাচ্ছো।
-\-\কী বলো,পাশে এমন সুন্দরী বউ থাকলে কেউ আশে পাশে তাকায়।
-\-\একদম ঢং করবা না।
-\-\ঢং না, সত্যি বলছি।
-\-\চলো বাসায় তোমার হচ্ছে।
.
বাসায় আসার পর...
.
-\-\একদম ঘরে ঢুকবে না বলে দিলাম।
-\-\কোথায় যাবো তাহলে।।
-\-\রাস্তায় সুন্দরী মেয়েদের কাছে যাও।
-\-\-হা,হা,হা,,,কি যে বলো,বিয়ে করে ফেলছি না,না হলে,,,,,?
-\-\না হলে কী?
-\-\-তোমার বলার আগেই যেতাম।
-\-\কী,,,মা,ওমা,শোনো তোমার ছেলের কী বলে?
-\-\-ঐ আবার মা কে ডাকছো কেন?
-\-\থাকবো না তোমার সাথে আমি।
-\-\আরে আমি তো ফ্যাজলামি করে বলেছি।
-\-\কী হয়েছে বউ মা। (আমার মা)
-\-\দেখুননা মা,আপনার ছেলে নাকি আমি না থাকলে অন্য মেয়েদের সাথে থাকতো।
-\-\কিরে মাহিন তোর কী আর কোন কাজ নেই,শুধু বউমা কে বিরক্ত করিস।
-\-\আমি কিছু করিনি, তোমার বউমা শুধু আমার সাথে ঝগড়া করে।
-\-\কী আমি ঝগড়া করি।থাকবো না আর তোমার সাথে।
.
>>কথাটা বলেই বউ রাগ করে দরজা আটকিয়ে দিলো।মা ও কিছুক্ষন কথা শুনালো আমাকে।এখন দেখছি পৃথীবির বড় অসহায় আমি,যে যেমন পারছে কথা শুনিয়ে যাচ্ছে।
.
আরে এই তো বউ আবার দরজা খুলছে।কী ব্যাপার বউ বাপের বাড়ী না গিয়ে রান্না ঘরে ঢুকলো কেনো।ও হ্যা আমি তো গরম ভাতের সাথে ইলিশ মাছ ভাজা খেতে চেয়েছি।তাই হইতো বাপের বাড়ী যাওয়া বন্ধ করছে।যাক কত ভালবাসে আমাকে।
.
-\-\কী ব্যাপার শুয়ে থাকলে যে,আমি রান্না করছি রান্না ঘরে তো আসলে না।
[আসলে নীতি যেদিন ইলিশ মাছ ভাজি করে সেদিন আমি রান্না ঘরে যাবোই,আর নীতি কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরি,কিন্তু আজ.. ]
-\-\এমনিতেই।হাহাহাছি,,,
-\-\তোমার কী জ্বর আসতেছে?
-\-\নাহ,এমনিতেই হাছি হচ্ছে।
-\-\চুপ একদম চুপ,এই তো জ্বর আসতেছে।
[কপালে হাত দিয়ে]
-\-\জানি না।
-\-\তোমাকে তখন কে বলেছে শুধু আমার মাথার উপরে ছাতা ধরতে।
-\-\তুমিই তো,,,?
-\-\থামো, আমি বলেছি বলে করবে।
>>কথাটা বলেই নীতি বাচ্চাদের মত কান্না শুরু করে দিলো।
-\-\আরে পাগলী কাঁদছো কেনো?
-\-\সব কিছু আমার জন্য হয়ে হয়েছে,বেশী রাগ দেখাতে গেছি।
-\-\আরে কিছু হয়নি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আর তোমাকে কিন্তু সেইরকম মায়াবী লাগছে দেখতে,আরেকটু কাঁদো তো। আরে আরে কোথায় যাচ্ছো।
.
কিছুক্ষন পরেই নীতি এসেই ঔষধ খাওয়াই দিলো,আর মাথায় অনেক করে তেল দিয়ে দিয়ে গেলো।তেলগুলো তো মাথার দুই পাশ দিয়ে বেয়ে পড়ছে,তেল কী সরকারি দামে পাইছে নাকি কে জানে।
যায় বউকে একটু আদর করে আসি শরীর টা একটু ভাল লাগছে-\-\
.
-\-\এই ছাড়ো আমাকে?শরীর খারাপ তো তোমার (নীতি)
-\-\শরীর ঠিক আছে এখন।কেনো ছাড়বো?আর তাছাড়া তুমি আমার বিয়ে করা বউ। (আমি)
-\-\ঘরে বউ থাকতে অন্য মেয়েদের দিকে নজর দাও কেনো?
-\-\কি যে বলো না তুমি।আমি কী পাশের বাড়ীর হাসিব ভাইয়ের মত করে তাকায় নাকি?
-\-\-মানে?
-\-\হাসিব ভাই তো খারাপ নজরে তাকায়।।
-\-\ও তাহলে তুমি কী নজরে তাকাও?
-\-\-ভদ্র ভাবে তাকায়।
-\-\- শিকার করলে তাহলে,তোমার সাথে আর থাকবোই না। (রেগে)
-\-\-এই রে সত্যি কথাগুলো পেট থেকে বেরিয়ে গেলো কিভাবে বুঝলাম না।
-\-\-আমাকে ছাড়ো বলছি,আমার শরীরে হাত দিবে না তুমি। (প্রচন্ড রেগে)
-\-\-তুমি আমার বিয়ে করা বউ,হাত দেয়ার অধিকার আমার আছে।
-\-\-নেই অধিকার।তুমি এখান থেকে না গেলে আমি কিন্তু ব্যাগ গুছিয়ে চলে যাবো।
>>কী আর করা অবশেষে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম।ভাবলাম একটু রোমান্স করব,রোমান্স তো হলোই না বরং আবার ঝগড়া হলো। নিজের উপরেই এখন রাগ হচ্ছে,সত্যি কথা গুলোও মাঝে মাঝে চেপে রাখতে হয় না হলে ঝগড়া বাধবে।
.
রান্না করা শেষে-\-\-
.
-\-\এই নিন খেয়ে আমাকে উদ্ধার করেন।
[কথাটা বলেই বউ মানে নীতি রুমে চলে গেলো,এখন রাত নয়টা,গরম ভাতের সাথে ইলিশ মাছ খেতে মজায় অন্যরকম,কিন্তু বউ পাশে না থাকলে সবকিছুই নিরামিষ মনে হয়]
-\-\শুয়ে পড়লে যে, খাবে না?
-\-\আমার খিদে নেই।
-\-\চলো না,তুমি ছাড়া কিছু ভাল্লাগে বলো।
-\-\একদম ঢং করবে না।বাইরে তো তোমার অনেকেই আছে।
-\-\সেই একই কথা বার বার।
-\-\যা সত্যি তাই তো বলছি।
-\-\সরি, আর করব না,এবার খেতে চলো।
-\-\বললাম তো খিদে নেই।তুমি আর মা খেয়ে নাও।
-\-\তুমি না খেলে আমিও খাবো না।মায়ের খাবার রুমে দিয়ে এসেছি আমি।
-\-\আমি খাবো না,তুমি খেয়ে নাও।
>>কী আর করা আমিও বউয়ের পাশে শুয়ে পড়লাম।এই ছাড়া কোন উপায় নেই।এবার যদি বউয়ের রাগ ভাঙে।
-\-\কী ব্যাপার না খেয়ে আবার তুমি শুয়ে পড়লে কেনো?
-\-\আমারও খেতে ইচ্ছা করছে না।
-\-\ঢং তো ভালই শিখেছো।
-\-\বউয়ের সাথে ঢং করব নাতো কার সাথে করব।
-\-\হয়েছে হয়েছে এবার খেতে চলুন।
.
>আমি আর নীতি মানে বউ একই প্লেটে খাবার খাচ্ছি,আমি নীতি কে খাওয়াই দিচ্ছি,আর নীতি অভিমানী কান্না করছে।বড্ড বেশী ভালবাসে আমাকে, তাই হয়তো এতো রাগ অভীমান করে আমার সাথে।আমাকে হারাতে চাই না পাগলী টা সেটা আমি জানি।কিন্তু ওকে রাগাতে আমার ভীষন ভাল্লাগে,নীতি রাগলে ওকে ভীষন মায়াবী লাগে,সেটা ও নিজেও জানে না।
.
>>সারাদিন বৃষ্টি শেষে এখন জোস্না রাত উঠেছে,নীতি আর আমি চাঁদ দেখছি ছাদে বসে,,কিন্তু-\-\-
-\-\-এই শোনো না? (আদুরে গলায় বলল নীতি)
-\-\-হ্যা শুনছি তো। (আমি)
-\-\-এই হাতটা সরাও না।
-\-\কেনো?
-\-\তোমার বুকে মাথা রাখবো। (আদুরে গলায়)
-\-\-বুকটা তো অন্য কারো জন্য।
-\-\-কার জন্য? (কাঁদো কাঁদো গলায়)
-\-\ঐ চাঁদটার জন্য,দেখছো চাঁদ টা কত সুন্দর।
-\-\ও,,আমি বুঝি অসুন্দর।
-\-\সেটা তো বলিনি,তবে চাঁদ টা বেশী সুন্দর।
-\-\থাকো তুমি তোমার চাঁদ কে নিয়ে,আমি গেলাম।(রাগী ভঙ্গি তে)
-\-\কোথায় যাও,বুকে মাথা না রেখেই চলে যাবে।আমার বউয়ের কাছে চাঁদটাও যে হার মানবে,সেটা কী আমার বউ জানে।
>>কথা শেষ না হতেই নীতি আমার বুকে মাথা রাখল। নীতি কে আমি পরম আদরে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে রেখেছি।কিছুক্ষনের মধ্যে নীতি ঘুমিয়ে পড়ল।এখন কেমন জানি চাঁদ টা কে ভীষন রকমের অসুন্দর লাগছে।কিন্তু চাঁদের আলো নীতির মুখে পড়ার কারনে নীতি কে বড্ড মায়াবী লাগছে,যেটা চাঁদের জোস্নাকেও হার মানায়।এত্ত মায়াবী আর এত্ত পবিত্র লাগছে নীতি কে পৃথীবির সকল সুন্দর কে হার মানায়।
.
পরম আদরে মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে আমার বুকে,শক্ত করে জড়িয়ে আছে,হয়তো ঘুমের ভেতরেও আমাকে হারাতে চাই না।আমিও হারাতে চাই না আমার বউ কে।নীতি জানতেও পারবেও না কখনো এতো সুন্দর একটা রাত সে আমাকে উপহার দিয়েছে।যার সাক্ষী আমি, ঐ আকাশের চাঁদ, তাঁরা গুলি।
সমাপ্ত