দুই সিনিয়রআপুর ভালোবাসা
লেখক_ শ্রাবণ
পর্ব_২
—তোর মিস্টেক এবারের মতো মাফ করলাম।নেক্সট টাইম ওর সামনে আসবি না।(রুনা)
—আচ্ছা তাই হবে। এখন তাহলে আমি আসি।বলে ওখান থেকে কেটে পড়লাম।
ক্লাসরুমের সামনে এসে দেখি ম্যাডাম ক্লাস নিচ্ছে।আমি ম্যাডামকে বললাম,"ম্যাডাম আসতে পারি?"
ম্যাডাম আমার দিকে চোখ তুলে তাকালো।এরপর বলল,"প্রতিদিনই তোমার লেট হয় কেন?"(ম্যাডাম)
—আসলে ম্যাডাম রাস্তায় জ্যাম ছিল।এজন্য লেট হয়েছে।(আমি)
—আর সব স্টুডেন্ট তো ঠিক সময়ে আসছে।ওদের তো জ্যামে পড়তে হলো না।জ্যাম মনে হয় খালি তুমি পড়ো।(ম্যাডাম)
লেডি গ্যাংএর জ্যামে পড়ছিলাম। এসব কথা বললে ইজ্জত থাকবে না।(মনে মনে আমি )
—এই ছেলে আস্তে আস্তে কি বলছো?(ম্যাডাম)
—কিছু না ম্যাডাম।(আমি)
—ভেতরে আসো।আর চুপচাপ ফাঁকা ছিটে বসে লেকচার শোনো।(ম্যাডাম)
আমি আর কোনো কথা না বলে রফিকের পাশে বসলাম।
–দোস্ত আমাদের ম্যাডাম কিন্তু সেই দেখতে। (রফিক)
—বলদ ম্যাডাম কমে তোর চেয়ে পাঁচ-ছয় বছরের বড়।ম্যাডাম কে দেখে তোর লাভ নাই।এরচেয়ে ক্লাসের কোনো মেয়ের উপর লাইন মার।এতে মেয়েটা পটতেও পারে।(আমি)
—যা শালা।আমি বললাম কি আর তুই বললি কি?(রফিক)
—ঠিকই বলছি।আচ্ছা চুপ থাক আর ম্যাডামের লেকচার শোন।(আমি)
ক্লাস শেষে বের হয়ে আসলাম।আজকে রাজীব আর আসাদ আসে নাই।এজন্য দুজন ই ঘুরতে লাগলাম।
—দোস্ত দেখ মেয়েটা কত্ত কিউট তাইনা?(রফিক)
—কোন মেয়েটা?(আমি)
রফিক আঙ্গুল দিয়ে আখিকে দেখিয়ে দিলো।শালা আর মেয়ে পেলো না।এটা একেবারে বদ মেজাজের মেয়ে।যদি আখি জানতে পারে তাহলে আমাকে আর রফিককে আস্ত রাখবে না।তাই রফিককে বললাম,"শালা হাত নামা আর ওই মেয়েকে ভুলে যা।"(আমি)
—ক্যান?(রফিক)
—আরে এই মাইয়া হেব্বি রাগি।(আমি)
—তুই কেম্নে জানলি?(রফিক)
আমি ওকে গতকাল আর আজকের ঘটনা খুলে বললাম।রফিক শুনে বলল,"থাক ভাই আমার লাইন মারার শখ মিটে গেছে।"(রফিক)
—এখন তাইলে এখান থেকে চল।(আমি)
দুজনে হাঁটতে লাগলাম।তখন পেছন থেকে কোন মাইয়া বলল,"ওই ক্ষ্যাত এদিকে আয়।"
আমি আর রফিক পিছনে তাকিয়ে দেখি আখি আর কয়েকটা মেয়ে আমাদের কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
—ওই তোরা দুজন এদিকে আয়।(আখি)
—আমরা কেন আসবো?(আমি)
—আসতে বলছি আসবি।আর যদি না আসিস তাহলে বুঝতে পারছিস কি হবে?(আখি)
আরে এতো ভয় পাচ্ছিস কেন?চল দেখি কি বলে।(রফিক)
বলে রফিক আমার হাত ধরে আখির সামনে নিয়ে গেল।
আমার দিকে আঙুল তুলেছিলি কেন?(আখি)
আমি রফিকের দিকে তাকালাম। বেচারা ভয় পেয়ে গেছে।এজন্য কোনো কথা বলছে না।এখন যদি কিছু না বলি তাহলে নিশ্চিত মার খেতে হবে।এজন্য বললাম,"আসলে ম্যাডাম ও আপনার দিকে আঙ্গুল তোলে নি।" (আমি)
—তাহলে কার দিকে আঙ্গুল তুলছে?(আখি)
এখন কি বলবো?হ্যাঁ পেয়েছি।আমি আখির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটা সুন্দরী মেয়েকে দেখিয়ে বললাম আসলে আমার বন্ধু উনার দিকে আঙ্গুল তুলে বলল মেয়েটা অনেক কিউট।(আমি)
আখি তখন বলল,"ওই তোরা পড়িস ফার্স্ট ইয়ারে।আর আমরা থার্ড ইয়ারে।আমার বান্ধবী কিউট হলে তোদের লাভ কি?"
সুন্দরকে কি সুন্দর বলা যাবে না নাকি?(আমি)
—যাবে তো।(আখি)
—তাহলে আপনার সমস্যা কোথায়?(আমি)
—আমার বান্ধবী কি আমার চেয়ে বেশি সুন্দরী? (আখি)
—অবশ্যই বেশি সুন্দরী। (আসলে আখি অনেক সুন্দরী।কিন্তু ওকে রাগানোর জন্য বললাম)
–আমার কথা শুনে দেখি সত্যি সত্যি রেগে গেছে।একজন মেয়ের সামনে ওকে বাদ দিয়ে আরেকজনের প্রসংশা করলে এমনিতেই রেগে যায়।কথা দেখি সত্যি।
–এখানে বেশিক্ষণ থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে।তাই বললাম ম্যাডাম আমার কিছু কাজ আছে।এখন আমাকে যেতে হবে।চল রফিক আমরা যাই।বলে রফিকের হাত ধরে নিয়ে তারাতাড়ি চলে এলাম।
–তোরে দেখে মনে হয় না মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারিস।এখন দেখছি তুই আমার গুরু।(রফিক)
—আরে এসব বলিছিস কেন?আমার এসব বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নাই।কিন্তু চুপ থাকলে শিওর দুজনের গাল লাল হয়ে যেত।এজন্য কথাগুলো বলছি।(আমি)
—আচ্ছা এখন কি করবি?(রফিক)
—বাসায় যাবো।(আমি)
—আমিও যাবো।
এরপর রিকসা করে বাসায় চলে আসলাম।
রুমে আসতেই আব্বুর সাথে দেখা।
তা আব্বাজান কেমন ক্লাস হচ্ছে? (আব্বু)
—জ্বি আব্বু ভালো।(আমি)
—কোনো ফাঁকিবাজি হচ্ছে নাতো?(আব্বু)
—না।(আমি)
—তোর প্রিন্সিপাল স্যার আমার ছোটকালের বন্ধু। ওর কাছ থেকে তোর নামে কোনো অভিযোগ এলে কিন্তু কপালে দুঃখ আছে।পড়াশোনা বাদ দিয়ে আমার অফিসে বসতে হবে।(আব্বু)
—আব্বু এটা কেমন বিচার? (আমি)
—এর আগে কলেজে কতবার মারামারি করছিস মনে আছে?নাকি ওসব ভুলে গেছিস?এখন তোর জন্য আমার বন্ধুর সামনে ছোট যেন না হতে হয়।(আব্বু)
—জ্বি আব্বু আর কোনো মারামারি করবো না।আমি এখন রুমে যাবো কি?(আমি)
—আচ্ছা যা।(আব্বু)
কোনো দুঃখে যে এই ভার্সিটি তে ভর্তি হলাম?এই খবর আগে জানলে কখনওই ভর্তি হতাম না।ভাবছিলাম আখি আর রুনাকে একটু টাইট দিবো।কিন্তু এখন দেখছি তাও হলো না।যদি ওদের কিছু বলি তাহলে সেটা যাবে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে।আর প্রিন্সিপাল স্যারের কাছ থেকে বাবার কাছে।এটা কেমন বিপদ? (আমি)
বিকেলে বাইক নিয়ে ঘুরতে বের হলাম।তখন কে যেন ফোন করলো।বাইক থামিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখি ছোটবোন কল করছে।
—হ্যালো আরিয়া বল।(আমি)
—ভাইয়া আমার একটু শপিংয়ে যেতে হবে।(আরিয়া)
—আব্বু কে বল।(আমি)
—আব্বু তোমার সাথে যেতে বলেছে।(আরিয়া)
—আমি এখন ঘুরতে যাচ্ছি। এখন শপিংয়ে যেতে পারবো না।(আমি)—তাহলে আমি আবার আব্বু কে কল করে বলে দিচ্ছি। (আরিয়া)
—এমন করিস কেন?তুই একা যা।(আমি)
—শপিংমলে অনেক বাজে ছেলেরা থাকে।ওরা মেয়েদের কে টিজ করে।তুমি কি চাও ওরা আমাকে টিজ করুক?(আরিয়া)
আরিয়া তো ঠিক কথা বলছে।ঘোরার সময় অনেক পাওয়া যাবে।আগে ওকে শপিং করিয়ে নিয়ে আসি।তাই আরিয়াকে বললাম,"তুই রেডি হয়ে নে।আমি আসছি।"
বাইক নিয়ে বাসায় চলে এলাম।আরিয়া ড্রইং রুমে বসে আছে।
আরিয়াকে বললাম,এখন চল।
—ভাইয়া আমি বাইকে যাবো না।(আরিয়া)
—তাহলে কিভাবে যাবি?(আমি)
—কার নিয়ে যাবো।(আরিয়া)
—আব্বু তো আমাকে কার চালাতে নিষেধ করছে।(আমি)
—আমি আব্বু কে বলে রাখছি কিছু বলবে না।(আরিয়া)
—আচ্ছা তাহলে চল।
আরিয়াকে নিয়ে শপিংমলে চলে এলাম।এরপর গাড়ি পার্কিং করে আরিয়ার সাথে শপিং করতে লাগলাম।
দের ঘন্টার ভেতর ওর শপিং শেষ হয়ে গেল।
শপিংমল থেকে বের হওয়ার সময় রুনার সাথে দেখা হয়ে গেল।আমাকে দেখে রুনা বলল,"কি রে বলদের দেখছি গার্লফ্রেন্ড ও আছে।তা কেম্নে পটালি এই মাইয়াকে?"
এমন কথা শুনে আরিয়া রেগে গেল।কোনো কথা না বলেই ঠাস করে রুনার গালে থাপ্পড় মেরে দিলো।
—ওই তোর এতো বড় সাহস আমাকে মারছিস।আজকে তোর কপালে অনেক দুঃখ আছে।(রুনা)
—তোর মতো মেয়েকে এরচেয়ে ভালোভাবে বোঝানো যাবে না।আর তোর যা ইচ্ছে কর।দেখি তোর কত ক্ষমতা।(আরিয়া)
—একটু দেরী কর।দেখ তোর কি করি।(রুনা)
তুই কি করবি হ্যাঁ বলেই আরিয়া রুনাকে আরেকটা থাপ্পড় মেরে দিলো।
আরিয়ার কান্ড দেখে হাসাবো না কাঁদবো বুঝতেছি না।এখন ওকে না থামালে আরও বড় ঝামেলা হয়ে যাবে।তাই আরিয়াকে বললাম,আরিয়া থাম।আর আমার সাথে বাসায় চল।"
—ভাইয়া আরেকটু দেরী করো।এই বদমাইস মাইয়াকে আরও কয়েকটা থাপ্পড় দিয়ে নেই।বলেই আবার মারতে যেতে লাগল।আমি আরিয়াকে হাত ধরে থামালাম।
এরপর রুনাকে বললাম,"কিছু মনে করবেন না।আমার ছোটবোন একটু এমনি।আমাকে কেউ কিছু বললে সহ্য করতে পারে না।আর মন খারাপ করবেন না।এসব ভুলে যান কেমন।আমরা চলি তাহলে।" বলে আরিয়াকে নিয়ে ওখান থেকে চলে আসতে লাগলাম।
পেছন থেকে রুনা বলতে লাগল এর প্রতিশোধ আমি নিবোই।তা না হলে আমার নাম রুনা না।
·
·
·
চলবে……
লেখক_ শ্রাবণ
পর্ব_২
—তোর মিস্টেক এবারের মতো মাফ করলাম।নেক্সট টাইম ওর সামনে আসবি না।(রুনা)
—আচ্ছা তাই হবে। এখন তাহলে আমি আসি।বলে ওখান থেকে কেটে পড়লাম।
ক্লাসরুমের সামনে এসে দেখি ম্যাডাম ক্লাস নিচ্ছে।আমি ম্যাডামকে বললাম,"ম্যাডাম আসতে পারি?"
ম্যাডাম আমার দিকে চোখ তুলে তাকালো।এরপর বলল,"প্রতিদিনই তোমার লেট হয় কেন?"(ম্যাডাম)
—আসলে ম্যাডাম রাস্তায় জ্যাম ছিল।এজন্য লেট হয়েছে।(আমি)
—আর সব স্টুডেন্ট তো ঠিক সময়ে আসছে।ওদের তো জ্যামে পড়তে হলো না।জ্যাম মনে হয় খালি তুমি পড়ো।(ম্যাডাম)
লেডি গ্যাংএর জ্যামে পড়ছিলাম। এসব কথা বললে ইজ্জত থাকবে না।(মনে মনে আমি )
—এই ছেলে আস্তে আস্তে কি বলছো?(ম্যাডাম)
—কিছু না ম্যাডাম।(আমি)
—ভেতরে আসো।আর চুপচাপ ফাঁকা ছিটে বসে লেকচার শোনো।(ম্যাডাম)
আমি আর কোনো কথা না বলে রফিকের পাশে বসলাম।
–দোস্ত আমাদের ম্যাডাম কিন্তু সেই দেখতে। (রফিক)
—বলদ ম্যাডাম কমে তোর চেয়ে পাঁচ-ছয় বছরের বড়।ম্যাডাম কে দেখে তোর লাভ নাই।এরচেয়ে ক্লাসের কোনো মেয়ের উপর লাইন মার।এতে মেয়েটা পটতেও পারে।(আমি)
—যা শালা।আমি বললাম কি আর তুই বললি কি?(রফিক)
—ঠিকই বলছি।আচ্ছা চুপ থাক আর ম্যাডামের লেকচার শোন।(আমি)
ক্লাস শেষে বের হয়ে আসলাম।আজকে রাজীব আর আসাদ আসে নাই।এজন্য দুজন ই ঘুরতে লাগলাম।
—দোস্ত দেখ মেয়েটা কত্ত কিউট তাইনা?(রফিক)
—কোন মেয়েটা?(আমি)
রফিক আঙ্গুল দিয়ে আখিকে দেখিয়ে দিলো।শালা আর মেয়ে পেলো না।এটা একেবারে বদ মেজাজের মেয়ে।যদি আখি জানতে পারে তাহলে আমাকে আর রফিককে আস্ত রাখবে না।তাই রফিককে বললাম,"শালা হাত নামা আর ওই মেয়েকে ভুলে যা।"(আমি)
—ক্যান?(রফিক)
—আরে এই মাইয়া হেব্বি রাগি।(আমি)
—তুই কেম্নে জানলি?(রফিক)
আমি ওকে গতকাল আর আজকের ঘটনা খুলে বললাম।রফিক শুনে বলল,"থাক ভাই আমার লাইন মারার শখ মিটে গেছে।"(রফিক)
—এখন তাইলে এখান থেকে চল।(আমি)
দুজনে হাঁটতে লাগলাম।তখন পেছন থেকে কোন মাইয়া বলল,"ওই ক্ষ্যাত এদিকে আয়।"
আমি আর রফিক পিছনে তাকিয়ে দেখি আখি আর কয়েকটা মেয়ে আমাদের কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
—ওই তোরা দুজন এদিকে আয়।(আখি)
—আমরা কেন আসবো?(আমি)
—আসতে বলছি আসবি।আর যদি না আসিস তাহলে বুঝতে পারছিস কি হবে?(আখি)
আরে এতো ভয় পাচ্ছিস কেন?চল দেখি কি বলে।(রফিক)
বলে রফিক আমার হাত ধরে আখির সামনে নিয়ে গেল।
আমার দিকে আঙুল তুলেছিলি কেন?(আখি)
আমি রফিকের দিকে তাকালাম। বেচারা ভয় পেয়ে গেছে।এজন্য কোনো কথা বলছে না।এখন যদি কিছু না বলি তাহলে নিশ্চিত মার খেতে হবে।এজন্য বললাম,"আসলে ম্যাডাম ও আপনার দিকে আঙ্গুল তোলে নি।" (আমি)
—তাহলে কার দিকে আঙ্গুল তুলছে?(আখি)
এখন কি বলবো?হ্যাঁ পেয়েছি।আমি আখির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটা সুন্দরী মেয়েকে দেখিয়ে বললাম আসলে আমার বন্ধু উনার দিকে আঙ্গুল তুলে বলল মেয়েটা অনেক কিউট।(আমি)
আখি তখন বলল,"ওই তোরা পড়িস ফার্স্ট ইয়ারে।আর আমরা থার্ড ইয়ারে।আমার বান্ধবী কিউট হলে তোদের লাভ কি?"
সুন্দরকে কি সুন্দর বলা যাবে না নাকি?(আমি)
—যাবে তো।(আখি)
—তাহলে আপনার সমস্যা কোথায়?(আমি)
—আমার বান্ধবী কি আমার চেয়ে বেশি সুন্দরী? (আখি)
—অবশ্যই বেশি সুন্দরী। (আসলে আখি অনেক সুন্দরী।কিন্তু ওকে রাগানোর জন্য বললাম)
–আমার কথা শুনে দেখি সত্যি সত্যি রেগে গেছে।একজন মেয়ের সামনে ওকে বাদ দিয়ে আরেকজনের প্রসংশা করলে এমনিতেই রেগে যায়।কথা দেখি সত্যি।
–এখানে বেশিক্ষণ থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে।তাই বললাম ম্যাডাম আমার কিছু কাজ আছে।এখন আমাকে যেতে হবে।চল রফিক আমরা যাই।বলে রফিকের হাত ধরে নিয়ে তারাতাড়ি চলে এলাম।
–তোরে দেখে মনে হয় না মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারিস।এখন দেখছি তুই আমার গুরু।(রফিক)
—আরে এসব বলিছিস কেন?আমার এসব বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নাই।কিন্তু চুপ থাকলে শিওর দুজনের গাল লাল হয়ে যেত।এজন্য কথাগুলো বলছি।(আমি)
—আচ্ছা এখন কি করবি?(রফিক)
—বাসায় যাবো।(আমি)
—আমিও যাবো।
এরপর রিকসা করে বাসায় চলে আসলাম।
রুমে আসতেই আব্বুর সাথে দেখা।
তা আব্বাজান কেমন ক্লাস হচ্ছে? (আব্বু)
—জ্বি আব্বু ভালো।(আমি)
—কোনো ফাঁকিবাজি হচ্ছে নাতো?(আব্বু)
—না।(আমি)
—তোর প্রিন্সিপাল স্যার আমার ছোটকালের বন্ধু। ওর কাছ থেকে তোর নামে কোনো অভিযোগ এলে কিন্তু কপালে দুঃখ আছে।পড়াশোনা বাদ দিয়ে আমার অফিসে বসতে হবে।(আব্বু)
—আব্বু এটা কেমন বিচার? (আমি)
—এর আগে কলেজে কতবার মারামারি করছিস মনে আছে?নাকি ওসব ভুলে গেছিস?এখন তোর জন্য আমার বন্ধুর সামনে ছোট যেন না হতে হয়।(আব্বু)
—জ্বি আব্বু আর কোনো মারামারি করবো না।আমি এখন রুমে যাবো কি?(আমি)
—আচ্ছা যা।(আব্বু)
কোনো দুঃখে যে এই ভার্সিটি তে ভর্তি হলাম?এই খবর আগে জানলে কখনওই ভর্তি হতাম না।ভাবছিলাম আখি আর রুনাকে একটু টাইট দিবো।কিন্তু এখন দেখছি তাও হলো না।যদি ওদের কিছু বলি তাহলে সেটা যাবে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে।আর প্রিন্সিপাল স্যারের কাছ থেকে বাবার কাছে।এটা কেমন বিপদ? (আমি)
বিকেলে বাইক নিয়ে ঘুরতে বের হলাম।তখন কে যেন ফোন করলো।বাইক থামিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখি ছোটবোন কল করছে।
—হ্যালো আরিয়া বল।(আমি)
—ভাইয়া আমার একটু শপিংয়ে যেতে হবে।(আরিয়া)
—আব্বু কে বল।(আমি)
—আব্বু তোমার সাথে যেতে বলেছে।(আরিয়া)
—আমি এখন ঘুরতে যাচ্ছি। এখন শপিংয়ে যেতে পারবো না।(আমি)—তাহলে আমি আবার আব্বু কে কল করে বলে দিচ্ছি। (আরিয়া)
—এমন করিস কেন?তুই একা যা।(আমি)
—শপিংমলে অনেক বাজে ছেলেরা থাকে।ওরা মেয়েদের কে টিজ করে।তুমি কি চাও ওরা আমাকে টিজ করুক?(আরিয়া)
আরিয়া তো ঠিক কথা বলছে।ঘোরার সময় অনেক পাওয়া যাবে।আগে ওকে শপিং করিয়ে নিয়ে আসি।তাই আরিয়াকে বললাম,"তুই রেডি হয়ে নে।আমি আসছি।"
বাইক নিয়ে বাসায় চলে এলাম।আরিয়া ড্রইং রুমে বসে আছে।
আরিয়াকে বললাম,এখন চল।
—ভাইয়া আমি বাইকে যাবো না।(আরিয়া)
—তাহলে কিভাবে যাবি?(আমি)
—কার নিয়ে যাবো।(আরিয়া)
—আব্বু তো আমাকে কার চালাতে নিষেধ করছে।(আমি)
—আমি আব্বু কে বলে রাখছি কিছু বলবে না।(আরিয়া)
—আচ্ছা তাহলে চল।
আরিয়াকে নিয়ে শপিংমলে চলে এলাম।এরপর গাড়ি পার্কিং করে আরিয়ার সাথে শপিং করতে লাগলাম।
দের ঘন্টার ভেতর ওর শপিং শেষ হয়ে গেল।
শপিংমল থেকে বের হওয়ার সময় রুনার সাথে দেখা হয়ে গেল।আমাকে দেখে রুনা বলল,"কি রে বলদের দেখছি গার্লফ্রেন্ড ও আছে।তা কেম্নে পটালি এই মাইয়াকে?"
এমন কথা শুনে আরিয়া রেগে গেল।কোনো কথা না বলেই ঠাস করে রুনার গালে থাপ্পড় মেরে দিলো।
—ওই তোর এতো বড় সাহস আমাকে মারছিস।আজকে তোর কপালে অনেক দুঃখ আছে।(রুনা)
—তোর মতো মেয়েকে এরচেয়ে ভালোভাবে বোঝানো যাবে না।আর তোর যা ইচ্ছে কর।দেখি তোর কত ক্ষমতা।(আরিয়া)
—একটু দেরী কর।দেখ তোর কি করি।(রুনা)
তুই কি করবি হ্যাঁ বলেই আরিয়া রুনাকে আরেকটা থাপ্পড় মেরে দিলো।
আরিয়ার কান্ড দেখে হাসাবো না কাঁদবো বুঝতেছি না।এখন ওকে না থামালে আরও বড় ঝামেলা হয়ে যাবে।তাই আরিয়াকে বললাম,আরিয়া থাম।আর আমার সাথে বাসায় চল।"
—ভাইয়া আরেকটু দেরী করো।এই বদমাইস মাইয়াকে আরও কয়েকটা থাপ্পড় দিয়ে নেই।বলেই আবার মারতে যেতে লাগল।আমি আরিয়াকে হাত ধরে থামালাম।
এরপর রুনাকে বললাম,"কিছু মনে করবেন না।আমার ছোটবোন একটু এমনি।আমাকে কেউ কিছু বললে সহ্য করতে পারে না।আর মন খারাপ করবেন না।এসব ভুলে যান কেমন।আমরা চলি তাহলে।" বলে আরিয়াকে নিয়ে ওখান থেকে চলে আসতে লাগলাম।
পেছন থেকে রুনা বলতে লাগল এর প্রতিশোধ আমি নিবোই।তা না হলে আমার নাম রুনা না।
·
·
·
চলবে……