What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভাইকিং দের নিয়ে কিছু অবাক করা তথ্য – যার অধিকাংশই আপনার অজানা (1 Viewer)

SoundTrack

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
530
Messages
13,426
Credits
283,450
Recipe pizza
Loudspeaker
কমবেশি লুটপাট করা যেহেতু মনুষ্য স্বভাবেরই অন্তর্গত তাই কেউ যদি ভাইকিং হওয়ার কল্পনা করে খুব একটা লজ্জাজনক ব্যপার হবে না। আর কিছু না হোক একটা রোমাঞ্চকর জীবনের স্বপ্ন কেউ দেখতেই পারে! বি.বি.সির এক তথ্য অনুযায়ী, ভাইকিংস দের সম্পর্কিত অধিকাংশ তথ্যই পরোক্ষভাবে সংগৃহীত হওয়ায় তা অনেক সময় বাহুল্য বা বানানো হয়ে থাকে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে ভাইকিং কোন দেশের অধিবাসী? তাহলে চলুন জেনে নেই ভাইকিং দের নিয়ে কিছু তথ্য আছে যা একেবারেই নিশ্চিতভাবে জানা যায়-

'উচ্চবর্গ ব্যক্তির মৃতদেহের উপহার হিসেবে ক্রীতদাসদের বলি দেয়া :

ন্যাশনাল জিওগ্রাফীর এক তথ্য অনুযায়ী, ভাইকিং দের সমগ্র অর্থনীতি গড়ে ওঠেছিলো কৃতদাস বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ।এমনকি তারা তাদের মনিবদের মৃত্যুতে ক্রীতদাসদের উৎসর্গ করতো। ২০১৪ সালের অসলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত 'জার্নাল অভ্ আর্কিওলজিক্যাল সায়েন্স' অনুসারে লৌহযুগের অর্থাৎ ৫৫০ থেকে ১০৩০ খ্রিস্টাব্দের একটি সমাধিস্থল পাওয়া গেছে যেখানে তিনটি একক, দুটি যৌথ ও একটি ত্রৈধ সমাধিসহ মোট ১০ জনের সমাধি পাওয়া গেছে। এছাড়াও চারটি মস্তকহীন কঙ্কাল পাওয়া যায়। ভাইকিংদের শবের সাথে মস্তকবিহীন দাসদের লাশ পাওয়া মৃত মনিবদের উপহার কিংবা মৃত আত্মার ভোজন হিসেবে ক্রীতদাসদের শিরশ্ছেদের ঘটনাটিরই নিশ্চয়তা দেয়।

নপুংসকদের জন্য আশ্রমে হামলা:

দাসপ্রথার শুরু না করলেও ভাইকিংরা একে নতুন একটি স্তরে নিয়ে গেছে। ইতিহাসবিদ জন হ্যায়উড এর মতে ডাবলিন এবং লিমেরিকসহ আয়ারল্যান্ডের অন্যান্য বড় শহরগুলো ভাইকিং দের দাসপ্রথার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। ভাইকিং জাতি শত শত বছর ধরে সেখানে থেকে তীরবর্তী আয়ারল্যান্ড, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায় লুটতরাজ করতো। তারা সন্ন্যাসীদের আশ্রমগুলোতেই বেশিরভাগ আক্রমণ করতো, ধন-সম্পদ কিংবা খ্রিস্টধর্মকে ঘৃণা করার জন্য নয় বরং শিক্ষিত লোকদের অপহরণ করতে যাদেরকে পরবর্তীতে নপুংসক করে বিক্রি করার মাধ্যমে লাভবান হওয়া যেতো। সেসময় মধ্যপ্রাচ্য এবং অন্যান্য অঞ্চলে মহিলাদের দ্বাররক্ষক, শিক্ষক, হারেমঘর রক্ষক এবং দাস হিসেবে নপুংসকদের চাহিদা ছিলো সবচেয়ে বেশি। এভাবেই ভূমধ্যসাগরীয় দাসপ্রথার ভিত গড়ে ওঠে।

BKOT_001.jpg


টিথ-ফাইলিং ছিলো সামাজিক মর্যাদার প্রতীক:

২০০৬ সালে ভাইকিং দের ৫৫৭টি কঙ্কাল পাওয়া যায় যার মধ্যে ২৪ টির দাঁতে আনুভূমিক রেখার মাধ্যমে ফাইল করা ছিলো। কেউই নিশ্চিত নয় কেন নির্দিষ্ট কয়েকজনই এই ভয়ংকর কাজ করতে গিয়েছিলো। তবে ধারণা করা হয় নেটিভ আফ্রিকার আদিবাসীদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তারা এ কাজ করেছে কারণ উভয়ের ফাইল করার ধরণ প্রায় একই রকম। তবে ভাইকিংদের এই কাজের ধরণ এতো সূক্ষ্ণ যে এর দক্ষতা অর্জনে তাদের যথেষ্ট পেশাদার হতে হয়েছে এবং এজন্যই এটি একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে।

সেইন্ট ব্রাইসের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড:

২০১০ সালে ব্রিটিশ নৃতত্ত্ববিদরা ওয়েমাউথের পাশে মাটি খনন করে একটি গণকবর পায় যেখানে বিকৃত অবস্থায় ৫৫টি ভাইকিং এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যেহেতু তাদের পোশাক পরিচ্ছেদ থাকার কোন আভাস পাওয়া যায়নি, নৃতত্ত্ববিদরা মনে করে তাদের জোর করে নগ্ন করে সামনে থেকে বিদ্ধ করে খুন করা হয় এবং এ কারণেই প্রত্যেকের মুখমণ্ডল এবং ডান কানে তীব্র আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

এটা সম্ভবত সেইন্ট ব্রাইসের ম্যাসাকার বা নির্বিচার হত্যাকান্ডেরই রূপ যেটা ইংল্যান্ডের রাজা এথেলর্যাড দ্য আনরেডির আদেশে ১০০২ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর সংঘটিত হয়। ভাইকিংদের লুটতরাজ, অত্যাচার এতো বেড়ে যাওয়ার কারণেই তিনি এ পদক্ষেপ নেন। এ হত্যাকাণ্ডে কতজন মারা যায় তা অস্পষ্ট, তবে ড্যানমার্কের রাজা ফর্কবিয়ার্ডের বোন ও তার সন্তান এতে মারা যায়। ১০১৩ সালে ইংল্যান্ডকে ভাইকিং রাজার কাছে এর জবাব দিতে হয়।

ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে মানুষ হত্যা:

ঈশ্বরের সাথে ভালো সম্পর্ক নিশ্চিত করতে ভাইকিং রা প্রত্যেক ৯ বছরে ৯৯ জন মানুষ, ৯৯টি ঘোড়া, কুকুর, বাজপাখি উৎসর্গ করতো। যে মানুষদের তারা উৎসর্গ করতো তা অবশ্যই তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে করা হতো।

BKOT_002.jpg


ভাইকিং দের চেহারা ও শারীরিক গঠন:

ভাইকিংদের কাজ যেমন অপহরণ, লুটপাট ঠিক তেমনি এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তাদের বাহ্যিক শারীরিক গঠনও। বিভিন্ন আখ্যানে তাদের কপাল বরাবর চুল, ঘন আই-ব্রো, ঝোপের ন্যায় শ্মশ্রু এবং প্রসারিত কাঁধের বর্ণনা রয়েছে যা দশ শতকের ক্রিমিনাল প্রোফাইলের সাথে পুরোপুরি মানানসই।

ভাইকিং দের রণোন্মাদনা:

অতিপ্রাকৃত রাগ এবং ক্রোধের প্রতীক ভাইকিংরা। এই প্রচণ্ড ক্রোধই তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে ধাবিত করে। যার ফলে অনেক সময় তারা যুদ্ধপরবর্তী ট্রমা বা পীড়নের শিকার হতো এবং হতাশায় ভুগতো। এরপরও যুদ্ধের উন্মত্ততা তাদের উন্মাদনার মতো ছিলো যা তাদের জীবনকে রোমাঞ্চনীয় জীবনে পরিণত করেছিলো।

মৃতের নখ-কর্তন প্রথা:

ভাইকিং দের অন্তুষ্ট্যিক্রিয়া রীতির একটি হলো সদ্য মৃতের হাত ও পায়ের নখ কেটে দেয়া। পৃথিবীর সমাপ্তি যেনো না হয় কিংবা হলেও যেনো বিলম্বে হয় সে লক্ষ্যেই তারা এরকম পদক্ষেপ নেয়।। মৃতের নখ দিয়ে তৈরি নাগফার নামে একটি জাহাজ দানবদের যুদ্ধে নিয়ে যেতো। যতবেশি মানুষকে অকর্তিত নখসহ কবর দেয়া হয়, জাহাজটি ততই বড় হতে থাকে। যেহেতু বড় জাহাজ বেশি দানবের ভ্রমণের সমার্থক এবং কেউই বেশি দানব কিংবা পায়ের নখ দিয়ে বড় জাহাজ গড়ে উঠুক তা চায় না তাই মৃতের নখ কেটে দেয়া তাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি রীতি হয়ে ওঠে।

শিশুহত্যা:

নামসম্বন্ধীয় বিশ্বাসকে ঘিরে ভাইকিং দের অধিকাংশ শিশুহত্যা হতো। একটি শিশুকে নির্দিষ্ট নাম দিয়ে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করার রীতি চালু হয়েছে ভাইকিং দের থেকেই। তাদের এই প্রথাটির নাম 'অসা ভ্যাটনি'। বাবা-মা শিশুদের পর্যবেক্ষণ করার পর কেবল যখন সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা পালনযোগ্য তখনই এই অনুষ্ঠান করা হয়। যাদের তারা পালন করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় না তাদের মারার জন্য অনাবৃত অবস্থায় বাইরে ফেলে রাখা হয়। বেশিরভাগক্ষেত্রে মেয়েরাই এমন দুর্ভাগ্যের শিকার হতো। যে কারণে ভাইকিংদের ছেলে এবং মেয়ের অনুপাত ৪:১ থেকে ৯:১ এর মত হতো সবসময়। সবচেয়ে অদ্ভূত ব্যপার হলো অসা ভ্যাটনির আগে শিশুহত্যাকে কখনো খুন বলে বিবেচনা করা হতো না। কেবলমাত্র নামকরণ এবং গ্রহণের পর হত্যা করলে তা ধর্তব্য বিষয় ছিলো।

BKOT_003.jpg


ভাইকিং দের ঘর এবং পরিবেশ দূষণ:

ভাইকিংদের ঘরগুলো অনেক বড় যার পেছনের দিকে উঠান থাকতো যেখানে মাংস পুড়িয়ে খাওয়া হতো। ঘরগুলোর চাল খড়ের তৈরি এবং দেয়ালগুলো আনাড়ি হাতের রং এ সজ্জিত। শীতের ১৫ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রত্যেক ঘরের মাঝখানে আগুন জ্বালিয়ে রাখা হতো উষ্ণতার জন্য। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এই ঘরগুলো নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এবং কার্বন মনোক্সাইড সৃষ্টিতে সাহায্য করতো বলে মতামত দিয়েছে। যদিও তাদের ঘরের ছাদে ধোয়া বের হয়ে যাওয়ার জন্য একটি ফাঁকা স্থান থাকতো কিন্তু তা পর্যাপ্ত ছিলো না এবং ছাদের আকৃতিও এমন ছিলো যে ঘরেই বেশিরভাগ ধোয়া আটকে যেতো। এ কারণেই ভাইকিং মহিলা এবং শিশুরা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগতো।

ক্রিমি সংক্রমণ:

২০১৫ সালে কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এক টন জীবাণুর ডিম পায় যা থেকে তারা সিদ্ধান্তে আসে যে ভাইকিং দের মধ্যে ক্রিমির সংক্রমণ হয়েছিলো যার প্রভাব এতোই গুরুতর ছিলো যে ভাইকিংদের জেনেটিক্সে পরিবর্তন চলে এসেছিলো যেনো এসব সংক্রমণের প্রভাবের সাথে তারা যুদ্ধ করে টিকে থাকতে পারে। প্রত্নতত্ত্বের মতে,ভাইকিংদের মধ্যে অণুর অস্বাভাবিক একটি সংস্করণ পাওয়া যায় যার নাম আলফা-১-এনটিট্রিপসিন বা A1AT।শতবছর আগে এ অণুটিই তাদের শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলো। এ অণুটির জেনেটিক ফ্যাক্টর এখনের একমাত্র শ্বাসকষ্টজনিত রোগ এমফি'সীম এবং COPD এর সাথে মিলে। এ অস্বাভাবিক জীনগুলো এখন পরিবাহী জীবাণু না পেতে পেতে শরীরের অন্যান্য অংশে ক্ষতি করা শুরু করেছে।

এমনসব অদ্ভূত প্রথা, সংস্কৃতির জন্যই হয়তো ভাইকিংদের এখনও স্মরণ করা হয়,গবেষণা করা হয় আরো উদ্দীপনার সাথে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top