পবিত্র রমজান মাস আসন্ন। রমজান মাসে একজন মানুষকে ভোররাত থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হয়। ভৌগোলিক অবস্থান ও মৌসুম ভেদে এ সময়কাল ১৪ ঘণ্টা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। রোজা রাখতে গিয়ে ডায়াবেটিস রোগীর যেসব সমস্যা হতে পারে এবং তা থেকে সতর্ক থাকার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যাক।
ডায়াবেটিস রোগীর ঝুঁকিসমূহ
রোজায় অন্যদের তুলনায় ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু বাড়তি ঝুঁকি আছে। এগুলো হলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া, গ্লুকোজের পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া, ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস, পানিশূন্যতা ও থ্রম্বোএম্বোলিজম বা রক্ত জমাটবাঁধা।
ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা
- রমজানের তিন মাস আগে থেকে ডায়াবেটিস রোগীর রোজা রাখার প্রস্তুতি শুরু করা উচিত। রমজানে ঘন ঘন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা
দেখতে হবে। - প্রতিদিনের খাদ্যের পুষ্টিমান অন্য সময়ের মতোই রাখার চেষ্টা করতে হবে। স্বাভাবিক দৈহিক ওজন ধরে রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে। ইফতারিতে সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। প্রচুর পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। সাহ্রি শেষ সময়ে খেতে হবে এবং প্রচুর পানি পান বাঞ্ছনীয়।
- শারীরিক শ্রম বা ব্যায়ামসহ স্বাভাবিক শারীরিক কর্মকাণ্ড চালানো যেতে পারে। তবে খুব বেশি কঠোর শ্রম বা ব্যায়াম না করাই ভালো।
কঠোর শ্রম বিকেলে করা যাবে না।
ওষুধের সমন্বয়
- যাঁরা দিনে একবার ডায়াবেটিসের ওষুধ (যেসব ওষুধ ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়ায়) খান, তাঁরা ইফতারের শুরুতে সেটি খাবেন। তবে ডোজ একটু কমিয়ে নিতে হতে পারে।
- যেসব রোগী ইনসুলিন নেন, তাঁদের রমজানের আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এর মাত্রা ঠিক করে নেওয়া জরুরি।
- সাধারণত রোজার সময় দীর্ঘমেয়াদি ইনসুলিন নেওয়াটা ভালো। যাঁরা রোজার আগে সকালের ও রাতের খাবারের আগে দুবার ইনসুলিন নিতেন, তাঁরা সকালের ডোজটির সমপরিমাণ ইফতারের সময় নেবেন। আর রাতের ডোজটির অর্ধেক সাহ্রির আগে নেবেন।
- রোজার সময় নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না। এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।
- মনে রাখতে হবে যে রোজার সময়ে ওষুধ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা পুরোটাই পাল্টে যাবে। ফলে রমজান মাস শেষে আবার স্বাভাবিক সময়ের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ফিরে যেতে হবে।
[FA]pen[/FA] লেখক: ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়