অনুপমাঃ “কিসের মার প্যাঁচ?”
দেবায়নঃ “গত বার কাকু গেছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। আমি অবশ্য অনেক আগে থেকেই একজন প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর লাগিয়েছিলাম ওই তিন হোটেলের মালিকের পেছনে। কিন্তু কাকু যখন গেছলেন ততদিনে ওর সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়নি।”
অনুপমা অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, “প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর, সেটা কেন? কি জানতে চাস তুই ওদের ব্যাপারে?”
দেবায়ন হেসে জানায়, “কে কখন কোথায় থাকে, কার সাথে শোয়, কার সাথে খায়, কোথায় যায় সব নাড়ি নক্ষত্রের খবর জানা দরকার।”
অনুপমাঃ “কেন?”
দেবায়নঃ “এই সব বড় হোটেলের মালিকেরা কখনো ধোয়া তুলসি পাতা হয়না। ওদের ফাঁক খুঁজে আড় পেতে কোপ না মারলে ওরা মচকাবে না। আর যদি না মচকায় তাহলে আমার কাজ হাসিল হবে না।” একটু দোনামনা করে তারপরে বলে, “অনেক সময়ে নারীর শরীর কাজে আসে না, সেইখানে মাথা খাটাতে হয়, আঙুল বেঁকাতে হয় আর ওদের কোণঠাসা করতে হয়।”
অনুপমাঃ “মানে?”
দেবায়ন হেসে জবাব দেয়, “মুম্বাই পৌঁছালেই সব জানতে পারবি।”
দুপুরের পরেই ওরা দুইজনে মুম্বাই পৌঁছে যায়। মুম্বাইয়ের এক নামকরা পাঁচতারা হোটেলে ওদের সুইট ভাড়া করা ছিল। রুমের মধ্যে ঢুকেই অনুপমাকে দুই হাতে জড়িয়ে মিশিয়ে নেয় নিজের সাথে। কোলকাতায় থাকলে, বাড়িতে অথবা অনুপমার বাড়িতে ঠিক একা পাওয়া যায় না। সেই বিরহ বেদনা দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে নিঙড়ে নিতে চায়। দুইজনে একসাথে স্নান সেরে, ধবধবে নরম বিছানায় গা ভাসিয়ে দেয়। প্রেমের রসে পরস্পরকে ভিজিয়ে দেয়।
দুপুরের খাওয়া সেরে সারাদিন দুইজনে গাড়িতে চড়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। মুম্বাইয়ের সব থেকে আকর্ষণীয়, জুহু বিচে বিকেলে এসে বসে। সূর্য বেশ কিছু আগেই পশ্চিমে ঢলে গেছে, পৌনে আটটা বাজে তাও আকাশে কমলা রঙের মাখামাখি। পেছনে সারি সারি নিওন বাতির মেলা, সারি সারি গাড়ি ধেয়ে চলেছে নিজেদের গন্তব্য স্থলে। গ্রীষ্মের গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সমুদ্রতটে প্রচুর লোকের ভিড়। জুহু বিচ যেন একটা মেলা। শিয়ালদা স্টেসানের চেয়ে মনে হয় তিন গুন লোক জড়ো হয়েছে বিচে। ওদের গাড়ি বিচের কিছু দুরেই দাঁড়ানো।
দেবায়নের ডান হাত নিজের দুই হাতে আঁকড়ে ধরে শরীরের সাথে শরীর মিশিয়ে হাঁটে। দুইজনে খালি পায়ে অনেকক্ষণ নোনা জলে ভেজা বালির ওপর দিয়ে পা ভিজিয়ে হাঁটে। এক যুগ পরে দুইজনের মনে হয় যেন পরস্পরকে আবার ফিরে পেয়েছে। আঙ্গুলের সাথে আঙুল পেঁচিয়ে যায়, অনুপমার বুক ভরে যায় শান্তিতে। দেবায়ন হাত ছাড়িয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। চোখের তারা পরস্পরের মণির ওপরে নিবদ্ধ হয়ে যায়। হটাত করে দুইজনের মনে হয় যেন চারপাশের কোলাহল কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। এই কমলা রঙের বিস্তীর্ণ আকাশের নিচে, এই নির্জন সমুদ্র সৈকতে ওরা দুই নরনারী ছাড়া আর কেউ নেই। অনুপমার হাত উঠে আসে দেবায়নের বুকের কাছে। দুই হাতে অনুপমার কোমর ধরে নিজের দিকে টেনে নেয়। ঠোঁট নামিয়ে আনে ওই লাল গোলাপের পাপড়ির মতন নরম দুই কোয়ার ওপরে। ভালোবাসার চুম্বনে ঠোঁট মিলিয়ে হারিয়ে যায় দুইজনে। অল্পক্ষণ না অনেকক্ষণ, সময়ের চক্র যেন দুইজনের চারদিকে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। চোখ বুজে আসে আবেগে, সেই চুম্বনে কোন রুদ্রতা নেই, নেই কামনার লেলিহান অগ্নি শিখা, আছে শুধু হারিয়ে যাওয়ার ভালোবাসা।
ঠোঁট ছেড়ে দেবায়নের চোখের দিকে তাকিয়ে মিহি সুরে প্রশ্ন করে, “আমার পাশে সবসময়ে এই রকম ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবি তুই?”
দেবায়ন ওর মুখ আঁজলা করে ধরে নিয়ে বলে, “কেন থাকবো না, নিশ্চয় থাকবো।”
অনুপমা ওর হাতের ওপরে হাত রেখে, ওর তালুর উষ্ণতা গালে মাখিয়ে বলে, “তুই এই যে ঘুরে বেড়াস, মাঝে মাঝে ভয় হয়। এতো কিছু পেয়ে যাওয়ার পরে হটাত যদি...” কথাটা শেষ করতে পারে না অনুপমা, বুক দুরুদুরু করে কেঁপে ওঠে ওর, চোখের কোনে জল চিকচিক করে ওঠে।
দেবায়ন বুঝতে পারে ওর অব্যক্ত ক্রন্দনের কারন। অনুপমার মাথা বুকের কাছে চেপে ধরে বলে, “আরে পাগলি তুই ভাবলি কি করে যে আমি তোকে ছেড়ে যেতে পারি। তুই আছিস বলেই আমি আছি। এই যে দেবায়ন তোর সামনে দাঁড়িয়ে এটা তোর জন্য দাঁড়িয়ে। তোকে যদি না পেতাম তাহলে আমি এতক্ষণে কোলকাতার কোন এক এঁদো কোম্পানিতে কেরানীর চাকরি করতাম। এই যে আজকে আমার মা আমাকে এতো ভালোবাসে, তোর জন্য ভালোবাসে, নাহলে দিন দিন আমাদের মাঝে ব্যাবধান বেড়ে যেতো আর একদিন হয়তো দুইজনে দুইদিকে হারিয়ে যেতাম।”
এই এক কথা অনুপমার পক্ষেও প্রযোজ্য। ওর আলিঙ্গনে বদ্ধ যে ছেলেটা তার জন্য নিজের বাবা মাকে কুড়ি বছর পরে ফিরে পেয়েছে। ওর বাড়িটা এক প্রকার সরাইখানার মতন ছিল, কেউ কারুর খোঁজ খবর বিশেষ রাখতো না, সবাই যেন নিজের মধ্যে মত্ত। কোন এক জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় দেবায়ন যেন সব কিছু ঠিক করে দিয়েছে। কুড়ি দিন হয়ে গেছে, জলপাইগুড়ির কথা কিছুই জানানো হয়নি, না মনিদিপা সূর্যের কথা, না নিবেদিতা ধৃতিমানের কথা না রূপকের সাথে সেই রাতের কথা। এই কয়দিনে বহুবার চেষ্টা করেছিল দেবায়নকে খুলে বলার, কিন্তু যেই বলতে যায় ওমনি ওর গলা শুকিয়ে আসে, জিব জড়িয়ে আসে। দেবায়ন অনায়াসে যেখানে যা করেছে ঠিক তারপরের দিন ওর কাছে এসে বলেছে। এমন কি মায়ের সাথে সেক্স করার পরেও ওকে এসে বলেছে। সেই কথা জেনে বুক ফেটে গেছিল কিন্তু ভালোবাসায় চিড় ধরেনি। আজ রাতে ওকে মনের কথা খুলে বলতেই হবে না হলে মরমে মরে যাবে অনুপমা।
দেবায়ন ওকে বলে, “চলো এবারে রুমে যাই। কিছু কাজ বাকি আছে।”
হোটেলে ঢুকেই রিসেপ্সানিস্ট জানায় যে এক মহিলা ওদের জন্য কফিশপে অপেক্ষা করছে। মহিলার কথা শুনেই অনুপমার মনে প্রশ্ন জাগে, হটাত করে মহিলার সাথে দেখা? কেন? দেবায়নের মুখের দিকে তাকাতেই, দেবায়ন মিচকি হেসে ওকে চুপ থাকতে বলে। জানিয়ে দেয় যে অচিরে সব পরিস্কার হয়ে যাবে।
কফিশপে ঢুকে এদিক ওদিক দেখতেই একটা পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের সুন্দরী মেয়ে ওদের দেখে হাত নাড়ায়। মেয়েটির পরনে গাড় নীল রঙের হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট, ছোটো হাতার গোলাপি টপ। টপের সামনের দিক বেশ উঁচু হয়ে ওদের দিকে উঁচিয়ে, মনে হলো যেন দুই ভারী স্তন এখুনি পরিধান ফাটিয়ে বেরিয়ে পড়বে। দুই পায়ে হাল্কা কালো রঙের ফিনফিনে স্টকিংস। মেয়েটির ত্বক উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের হলেও দেহের গঠন বেশ নধর আর লাস্যময়ী। প্রকৃতি দেবতা বেশ ভালো ভাবেই সাজিয়ে গুছিয়ে পাঠিয়েছে মেয়েটাকে ওদের সামনে। ঠিক যেই অঙ্গে যতটুকু প্রয়োজন তার থেকে কিছুটা অধিক দিয়েই পাঠিয়েছে যাতে শরীর নিয়ে ভালোই খেলতে পারে। মেয়েটা অনুপমার মতন অত লম্বা না হলেও ভালো উচ্চতা।
মেয়েটার ঠোঁটের হাসি দেখেই অনুপমার মাথা গরম হয়ে যায়। ও না আসলে কি দেবায়ন এর সাথে রাত কাটাতো? দেবায়ন এখন কি চায়? এই মেয়েটাকে সাথে নিয়ে ত্রিকোণ যৌনখেলায় মেতে উঠতে চায় নাকি? ও ভেবে এসেছিল, দেবায়নের সাথে নিভৃতে একাকী প্রেম করবে আর বুকের মাঝে জমে থাকা কথাগুলো উজাড় করবে।
ওরা কাছে আসতেই, অনুপমার দিকে হাত বাড়িয়ে মেয়েটা নিজের পরিচয় দেয়, “আমি মিস কস্তুরী রঙ্গনাথন, প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর। গ্ল্যাড টু মিট ইউ মিসেস অনুপমা বসাক। কালকেই বসাক স্যার বলছিলেন যে মিসেস সাথে আসছেন।”
দেবায়নঃ “গত বার কাকু গেছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। আমি অবশ্য অনেক আগে থেকেই একজন প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর লাগিয়েছিলাম ওই তিন হোটেলের মালিকের পেছনে। কিন্তু কাকু যখন গেছলেন ততদিনে ওর সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়নি।”
অনুপমা অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, “প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর, সেটা কেন? কি জানতে চাস তুই ওদের ব্যাপারে?”
দেবায়ন হেসে জানায়, “কে কখন কোথায় থাকে, কার সাথে শোয়, কার সাথে খায়, কোথায় যায় সব নাড়ি নক্ষত্রের খবর জানা দরকার।”
অনুপমাঃ “কেন?”
দেবায়নঃ “এই সব বড় হোটেলের মালিকেরা কখনো ধোয়া তুলসি পাতা হয়না। ওদের ফাঁক খুঁজে আড় পেতে কোপ না মারলে ওরা মচকাবে না। আর যদি না মচকায় তাহলে আমার কাজ হাসিল হবে না।” একটু দোনামনা করে তারপরে বলে, “অনেক সময়ে নারীর শরীর কাজে আসে না, সেইখানে মাথা খাটাতে হয়, আঙুল বেঁকাতে হয় আর ওদের কোণঠাসা করতে হয়।”
অনুপমাঃ “মানে?”
দেবায়ন হেসে জবাব দেয়, “মুম্বাই পৌঁছালেই সব জানতে পারবি।”
দুপুরের পরেই ওরা দুইজনে মুম্বাই পৌঁছে যায়। মুম্বাইয়ের এক নামকরা পাঁচতারা হোটেলে ওদের সুইট ভাড়া করা ছিল। রুমের মধ্যে ঢুকেই অনুপমাকে দুই হাতে জড়িয়ে মিশিয়ে নেয় নিজের সাথে। কোলকাতায় থাকলে, বাড়িতে অথবা অনুপমার বাড়িতে ঠিক একা পাওয়া যায় না। সেই বিরহ বেদনা দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে নিঙড়ে নিতে চায়। দুইজনে একসাথে স্নান সেরে, ধবধবে নরম বিছানায় গা ভাসিয়ে দেয়। প্রেমের রসে পরস্পরকে ভিজিয়ে দেয়।
দুপুরের খাওয়া সেরে সারাদিন দুইজনে গাড়িতে চড়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। মুম্বাইয়ের সব থেকে আকর্ষণীয়, জুহু বিচে বিকেলে এসে বসে। সূর্য বেশ কিছু আগেই পশ্চিমে ঢলে গেছে, পৌনে আটটা বাজে তাও আকাশে কমলা রঙের মাখামাখি। পেছনে সারি সারি নিওন বাতির মেলা, সারি সারি গাড়ি ধেয়ে চলেছে নিজেদের গন্তব্য স্থলে। গ্রীষ্মের গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সমুদ্রতটে প্রচুর লোকের ভিড়। জুহু বিচ যেন একটা মেলা। শিয়ালদা স্টেসানের চেয়ে মনে হয় তিন গুন লোক জড়ো হয়েছে বিচে। ওদের গাড়ি বিচের কিছু দুরেই দাঁড়ানো।
দেবায়নের ডান হাত নিজের দুই হাতে আঁকড়ে ধরে শরীরের সাথে শরীর মিশিয়ে হাঁটে। দুইজনে খালি পায়ে অনেকক্ষণ নোনা জলে ভেজা বালির ওপর দিয়ে পা ভিজিয়ে হাঁটে। এক যুগ পরে দুইজনের মনে হয় যেন পরস্পরকে আবার ফিরে পেয়েছে। আঙ্গুলের সাথে আঙুল পেঁচিয়ে যায়, অনুপমার বুক ভরে যায় শান্তিতে। দেবায়ন হাত ছাড়িয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। চোখের তারা পরস্পরের মণির ওপরে নিবদ্ধ হয়ে যায়। হটাত করে দুইজনের মনে হয় যেন চারপাশের কোলাহল কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। এই কমলা রঙের বিস্তীর্ণ আকাশের নিচে, এই নির্জন সমুদ্র সৈকতে ওরা দুই নরনারী ছাড়া আর কেউ নেই। অনুপমার হাত উঠে আসে দেবায়নের বুকের কাছে। দুই হাতে অনুপমার কোমর ধরে নিজের দিকে টেনে নেয়। ঠোঁট নামিয়ে আনে ওই লাল গোলাপের পাপড়ির মতন নরম দুই কোয়ার ওপরে। ভালোবাসার চুম্বনে ঠোঁট মিলিয়ে হারিয়ে যায় দুইজনে। অল্পক্ষণ না অনেকক্ষণ, সময়ের চক্র যেন দুইজনের চারদিকে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। চোখ বুজে আসে আবেগে, সেই চুম্বনে কোন রুদ্রতা নেই, নেই কামনার লেলিহান অগ্নি শিখা, আছে শুধু হারিয়ে যাওয়ার ভালোবাসা।
ঠোঁট ছেড়ে দেবায়নের চোখের দিকে তাকিয়ে মিহি সুরে প্রশ্ন করে, “আমার পাশে সবসময়ে এই রকম ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবি তুই?”
দেবায়ন ওর মুখ আঁজলা করে ধরে নিয়ে বলে, “কেন থাকবো না, নিশ্চয় থাকবো।”
অনুপমা ওর হাতের ওপরে হাত রেখে, ওর তালুর উষ্ণতা গালে মাখিয়ে বলে, “তুই এই যে ঘুরে বেড়াস, মাঝে মাঝে ভয় হয়। এতো কিছু পেয়ে যাওয়ার পরে হটাত যদি...” কথাটা শেষ করতে পারে না অনুপমা, বুক দুরুদুরু করে কেঁপে ওঠে ওর, চোখের কোনে জল চিকচিক করে ওঠে।
দেবায়ন বুঝতে পারে ওর অব্যক্ত ক্রন্দনের কারন। অনুপমার মাথা বুকের কাছে চেপে ধরে বলে, “আরে পাগলি তুই ভাবলি কি করে যে আমি তোকে ছেড়ে যেতে পারি। তুই আছিস বলেই আমি আছি। এই যে দেবায়ন তোর সামনে দাঁড়িয়ে এটা তোর জন্য দাঁড়িয়ে। তোকে যদি না পেতাম তাহলে আমি এতক্ষণে কোলকাতার কোন এক এঁদো কোম্পানিতে কেরানীর চাকরি করতাম। এই যে আজকে আমার মা আমাকে এতো ভালোবাসে, তোর জন্য ভালোবাসে, নাহলে দিন দিন আমাদের মাঝে ব্যাবধান বেড়ে যেতো আর একদিন হয়তো দুইজনে দুইদিকে হারিয়ে যেতাম।”
এই এক কথা অনুপমার পক্ষেও প্রযোজ্য। ওর আলিঙ্গনে বদ্ধ যে ছেলেটা তার জন্য নিজের বাবা মাকে কুড়ি বছর পরে ফিরে পেয়েছে। ওর বাড়িটা এক প্রকার সরাইখানার মতন ছিল, কেউ কারুর খোঁজ খবর বিশেষ রাখতো না, সবাই যেন নিজের মধ্যে মত্ত। কোন এক জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় দেবায়ন যেন সব কিছু ঠিক করে দিয়েছে। কুড়ি দিন হয়ে গেছে, জলপাইগুড়ির কথা কিছুই জানানো হয়নি, না মনিদিপা সূর্যের কথা, না নিবেদিতা ধৃতিমানের কথা না রূপকের সাথে সেই রাতের কথা। এই কয়দিনে বহুবার চেষ্টা করেছিল দেবায়নকে খুলে বলার, কিন্তু যেই বলতে যায় ওমনি ওর গলা শুকিয়ে আসে, জিব জড়িয়ে আসে। দেবায়ন অনায়াসে যেখানে যা করেছে ঠিক তারপরের দিন ওর কাছে এসে বলেছে। এমন কি মায়ের সাথে সেক্স করার পরেও ওকে এসে বলেছে। সেই কথা জেনে বুক ফেটে গেছিল কিন্তু ভালোবাসায় চিড় ধরেনি। আজ রাতে ওকে মনের কথা খুলে বলতেই হবে না হলে মরমে মরে যাবে অনুপমা।
দেবায়ন ওকে বলে, “চলো এবারে রুমে যাই। কিছু কাজ বাকি আছে।”
হোটেলে ঢুকেই রিসেপ্সানিস্ট জানায় যে এক মহিলা ওদের জন্য কফিশপে অপেক্ষা করছে। মহিলার কথা শুনেই অনুপমার মনে প্রশ্ন জাগে, হটাত করে মহিলার সাথে দেখা? কেন? দেবায়নের মুখের দিকে তাকাতেই, দেবায়ন মিচকি হেসে ওকে চুপ থাকতে বলে। জানিয়ে দেয় যে অচিরে সব পরিস্কার হয়ে যাবে।
কফিশপে ঢুকে এদিক ওদিক দেখতেই একটা পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের সুন্দরী মেয়ে ওদের দেখে হাত নাড়ায়। মেয়েটির পরনে গাড় নীল রঙের হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট, ছোটো হাতার গোলাপি টপ। টপের সামনের দিক বেশ উঁচু হয়ে ওদের দিকে উঁচিয়ে, মনে হলো যেন দুই ভারী স্তন এখুনি পরিধান ফাটিয়ে বেরিয়ে পড়বে। দুই পায়ে হাল্কা কালো রঙের ফিনফিনে স্টকিংস। মেয়েটির ত্বক উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের হলেও দেহের গঠন বেশ নধর আর লাস্যময়ী। প্রকৃতি দেবতা বেশ ভালো ভাবেই সাজিয়ে গুছিয়ে পাঠিয়েছে মেয়েটাকে ওদের সামনে। ঠিক যেই অঙ্গে যতটুকু প্রয়োজন তার থেকে কিছুটা অধিক দিয়েই পাঠিয়েছে যাতে শরীর নিয়ে ভালোই খেলতে পারে। মেয়েটা অনুপমার মতন অত লম্বা না হলেও ভালো উচ্চতা।
মেয়েটার ঠোঁটের হাসি দেখেই অনুপমার মাথা গরম হয়ে যায়। ও না আসলে কি দেবায়ন এর সাথে রাত কাটাতো? দেবায়ন এখন কি চায়? এই মেয়েটাকে সাথে নিয়ে ত্রিকোণ যৌনখেলায় মেতে উঠতে চায় নাকি? ও ভেবে এসেছিল, দেবায়নের সাথে নিভৃতে একাকী প্রেম করবে আর বুকের মাঝে জমে থাকা কথাগুলো উজাড় করবে।
ওরা কাছে আসতেই, অনুপমার দিকে হাত বাড়িয়ে মেয়েটা নিজের পরিচয় দেয়, “আমি মিস কস্তুরী রঙ্গনাথন, প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর। গ্ল্যাড টু মিট ইউ মিসেস অনুপমা বসাক। কালকেই বসাক স্যার বলছিলেন যে মিসেস সাথে আসছেন।”