What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

pinuram রচনাসমগ্র (1 Viewer)

পর্ব বারো – গোধূলি লগ্ন (#6-87)

কিছু পরে মহুয়ার ঠোঁট ছেড়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে, ফর্সা চেহারা লাল হয়ে গেছে উত্তেজনায়। আশেপাশের মৃদু আলো ম্লান করে ওর চেহারা হতে এক অদ্ভুত আলোক ছটা বিচ্ছুরিত হয়। দানার গলা জড়িয়ে চোখ বুজে ঘনঘন শ্বাস নিতে নিতে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। মহুয়া ওর গলা জড়িয়ে নিজেকে ওর ছাতির সাথে মিশিয়ে আসন্ন রতি ক্রীড়ার অপেক্ষায় উত্তেজিত হতে শুরু করে দেয়।

দানা ওকে পাঁজাকোলা করে তুলে শোয়ার ঘরের পাশের ঘরে ঢুকে পড়ে। যদিও এই ঘরে কেউ শোয় না, তাও ঘরে একটা বিশাল সাদা ধবধবে নরম বিছানা আর সুন্দর করে সাজানো। এটাই ওদের ভালোবাসার ঘর, মিলনের ঘর। ইচ্ছে করেই এই ঘরে ছোট ছোট মৃদু লাল আলো লাগিয়েছে ওরা। এক দেয়ালে বেশ বড় আয়না, ঠিক যেমন বিলাস বহুল হোটেলের কামরায় থাকে। ওই বিশাল আয়নায় মাঝে মাঝেই নিজেদের কামকেলির ছবি দেখে মেতে ওঠে, যদিও মহুয়ার খুব লজ্জা করে নিজের উলঙ্গ সঙ্গমরত প্রতিচ্ছবি দেখতে কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকে না দেখে থাকতে পারে না।

শোয়ার ঘরের বিছানায় যেহেতু রুহি ঘুমিয়ে থাকে তাই ওই ঘরে কখনো ওরা কামক্রীড়াতে মেতে ওঠে না। পাছে রুহি যদি জেগে যায় ওদের তীব্র কামার্ত শীৎকার শুনে, সেই লজ্জায়।

ধবধবে নরম বিছানায় বসিয়ে দিতেই মহুয়া দুষ্টুমি করে বিছানার ওপরে পা গুটিয়ে বসে পড়ে। দানা ওকে হাত বাড়িয়ে ডাক দিতেই মহুয়া বিছানা ছেড়ে ওর সামনে এসে দাঁড়ায়। মুক ঠোঁটে এক প্রশ্ন, কি চায় দানা? দানা চোখের ইশারায় বলে, শুধু একটু ভালবাসতে। মৃদু মাথা নাড়ায় মহুয়া, দুষ্টু ছেলে কোথাকার। কিছু কিছু কথা এমন হয় যেটা চোখেই ভালো বলা যায়, ঠোঁটে আনলে সেই মিষ্টতা উপভোগ করা যায় না। এই সেই ভাষা।

মহুয়াকে আয়নার দিকে মুখ করে নিজের দিকে পেছন করে দাঁড় করিয়ে দেয় দানা। পেছন থেকে প্রেমিকাকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে কাঁধের ওপরে মাথা নিসে আসে। লুঙ্গির তলায়, জাঙ্গিয়ার ভেতরে দানার ভিমকায় পুরুষাঙ্গ ফুঁসতে শুরু করে। মহুয়ার কোমল নিটোল পাছার খাঁজে সেই উত্তপ্ত লিঙ্গ আটকা পড়ে মহুয়াকে চরম কামোত্তেজিত করে তোলে। মহুয়া ওর বলিষ্ঠ হাতের ওপরে হাত রেখে, ওর আলিঙ্গনপাশ আরো প্রগাড় করে তোলে। মহুয়ার কমনীয় কোমল দেহ পল্লব দানার বলিষ্ঠ বাহু মাঝে দলা পাকিয়ে যায়। মহুয়ার ফর্সা গর্দানে ঠোঁট নামিয়ে আনে দানা। উন্মুক্ত গর্দানে ঠোঁট ঘষে কানের লতি পর্যন্ত ভিজে ঠোঁট ঘষে দেয়। ডান কানের মুক্তোর দুলের সাথে কানের লতি মুখের মধ্যে পুরে চুষে দিতেই মহুয়ার শরীর কাঠ হয়ে যায়। মহুয়ার শরীরে কামনার আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলে ওঠে, বারেবারে শিহরিত হয়ে যায় কমনীয় দেহ পল্লব। এহেন প্রেমের তীব্র পরশে মহুয়ার বুকের মধ্যে রক্তের হিল্লোল দেখা দেয়। কামাবেগে চোখ বুজে আসে, ঠোঁট জোড়া অল্প ফাঁক হয়ে উষ্ণ শ্বাস বয়ে চলে। দানার হাতের ওপরে হাত শক্ত করে চেপে ভীষণ জোরে কেঁপে ওঠে মহুয়া, যেন হটাত ওর জ্বর এসেছে।

“আহহহহহ... জিত...” বলে মিষ্টি মিহি এক আওয়াজ অনেকদুর থেকে দানার কানে ভেসে আসে।

বড় আয়নায় ওদের প্রতিচ্ছবি দেখে বেশি কামোত্তেজিত হয়ে হেসে ফেলে। কষ্টি পাথরে খোদা এক গ্রিক মূর্তির বলিষ্ঠ বাহুপাশে বদ্ধ এক লাল পোশাক পরিহিত এক ভীষণ সুন্দরী লাস্যময়ী অপ্সরা। চোখের সামনে ওই ছবি দেখে দানা আর মহুয়া দুই জনে কামোত্তেজনায় টানটান হয়ে যায়।

দানা, ফিসফিস করে মহুয়ার কানেকানে বলে, “দেখ সোনা, ওরা আমাদের দেখে কেমন হাসছে।”

হাতের ওপরে হাত রেখে, ওর কর্কশ গালে গাল ঘষে, মহুয়া এক দুষ্টু হেসে বলে, “লুঙ্গি পরা এক রাক্ষস, এক অবলা সুন্দরীকে ছিঁড়ে খাচ্ছে।”

দানা ওর নরম গালে আরো জোরে গাল ঘষে বলে, “আর অবলা সুন্দরী যে রাক্ষসের মাথা রোজদিন খায়, তার বেলায়?”

মহুয়া প্রেমঘন কণ্ঠে বলে, “ইসসস কি যে বলো না তুমি, যাও শয়তান। একটু ভালো ভাবে তেল ঝাল মশলা দিয়ে মাথা খাবো ভাবলাম আর ঠিক তখনি আমাকে ছেড়ে ওই নয়নার গাড়ি চালাতে পালিয়ে গেলে।”

মহুয়ার গাউনের ফ্ল্যাপের ভেতর দিয়ে তুলতুলে পেটের ওপরে হাত নিয়ে যায়। উষ্ণ মসৃণ ত্বকের ওপরে তপ্ত হাতের ছোঁয়া পেয়ে মহুয়া কেঁপে ওঠে। নরম পেটের মাঝের গভীর নাভি দেশের মধ্যে আঙ্গুল ছুঁইয়ে দিতেই, মহুয়া ওর হাত চেপে ধরে। লাস্যময়ী সুন্দরী প্রেমিকা, কামনার চরম পরশে কঁকিয়ে ওঠে, “উম্মম্মম জিত!”

দানা ওর নাভির চারপাশে আঙ্গুল বুলিয়ে উত্যক্ত করে বলে, “আজকেই কত মশলা দিয়ে মাথা খেলে তুমি।”

সেই কথা মহুয়ার কানে পৌঁছায় না, ওর চিন্তা শক্তি লোপ পেতে চলেছে। পেটের ওপরে দানার তপ্ত হাতের ছোঁয়া ওকে কামোন্মাদ করে তোলে। রক্ত মাখা গোলাপি ঠোঁট গোল করে খুলে বলে, “জিত একি করছো, তুমি, সোনা তোমার ছোঁয়ায় পাগল হয়ে যাচ্ছি গো।”

রেশমি চুলে নাক ডুবিয়ে মহুয়ার শরীরের কামনার আঘ্রানে বুক ভরিয়ে নেয় দানা। চুল মাথার ওপরে চুড় করে বাঁধা ছিলো, নাক ঘষার ফলে ঢেউ খেলে লম্বা রেশমি চুল ঝর্নার মতন ঢল দিয়ে নেমে আসে ওর মরালী গর্দানে। গাউনের ফ্ল্যাপ একটু খুলে যাওয়ার ফলে, পরনের রক্ত লাল ছোট ব্রা বেরিয়ে পড়ে। রক্ত লাল ক্ষুদ্র বক্ষ বন্ধনি মাঝ কোমল নিটোল স্তন যুগল চেপে বাঁধা। বক্ষ বিভাজন দেখে দানার লিঙ্গে রক্ত প্রবাহ ভীষণ বেগে বইতে শুরু করে দেয়। মহুয়ার কোমল পাছার খাঁজে কঠিন উত্থিত লিঙ্গ চেপে ধরে দানা। পুরুষাঙ্গের উত্তাপ মহুয়ার পোশাক ভেদ করে নরম মসৃণ পাছার ত্বকে কামাগ্নির ফোস্কা পড়িয়ে দেয়। দানার কঠিন পুরুষাঙ্গের আকার অবয়ব অনুভব করার জন্য, মহুয়া পেছন দিকে পাছা ঠেলে নিজের কোমল অঙ্গ মাঝে ভিমকায় চেপে ধরে।

দানা কেঁপে ওঠে সেই সাথে মহুয়া মিহি ডাক ছাড়ে, “আহহহহ জিত সব কিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে সোনা।”

দানার ধমনী মাঝে কামনার তরল আগুন, কানেকানে বলে, “তুমি এতো মিষ্টি তোমাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না সোনা।”

পেটের ওপর থেকে দানার হাত সরিয়ে মহুয়া ওর দিকে ঘুরে দাঁড়ায়, গলা জড়িয়ে মিষ্টি করে বলে, “এইবারে আর যেতে দেব না সোনা। আঁচলের সাথে সবসময়ে বেঁধে রাখবো।” ওর বুকের ওপরে নরম আঙ্গুলের পরশ বুলিয়ে আদর করে দেয়।

দানা ওর কোমরে হাত রেখে পুরুষাঙ্গ মহুয়ার ঊরুসন্ধির কাছে চেপে বলে, “এইবারে আর তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না পাপড়ি।”

নরম তলপেটের ওপরে কঠিন পুরুষাঙ্গের ছোঁয়া পেয়ে মহুয়া উত্তেজিত হয়ে যায়। কাঁধ থেকে আলতো করে গাউন সরিয়ে মাথা নামিয়ে আনে ওর উন্নত বক্ষের ওপরে। উন্মুক্ত গভীর বক্ষ বিভাজনে শিক্ত উষ্ণ ঠোঁট ছুঁইয়ে চুম্বনে চুম্বনে প্রেমিকাকে কামনার ঢেউয়ে দোলা লাগিয়ে মাতোয়ারা করে তোলে। মহুয়া ওর চুলের মুঠি ধরে নিজের বক্ষ বিভাজনে দানার মাথা চেপে ধরে। ধীরে ধীরে মহুয়ার শ্বাসের গতি বেড়ে যায়, স্তনের ওঠানামা ওপরে বড় বড় ঢেউয়ের মতন হয়ে যায়। কোমর ছাড়িয়ে দানার দুই হাত মহুয়ার নরম পাছা আঁকড়ে ধরে ফেলে। একটু ঝুঁকে ঠিক স্তনের নিচে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় দানা। মহুয়ার শরীর পেছন দিকে বেঁকে যায়, দানার মাথা চেপে নিচের দিকে একটু একটু করে ঠেলে দেয়। দানা, ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। গাউনের বেল্ট তখন বাঁধা ছিলো বলে কাপড় গায়ে থাকে নাহলে নিজের লাস্যময়ী আলোকছটা বিচ্ছুরিত করে দিতো মহুয়া। চোখের সামনে রক্ত লাল ক্ষুদ্র ত্রিকোণ কাপড়ে ঢাকা ঊরুসন্ধি দেখে দানা উন্মাদ হয়ে যায়। কিন্তু দানার নজর মহুয়ার সুগভীর নাভি দেশের ওপরে। ভিজে গরম জিব বের করে নাভির চারপাশে বুলিয়ে ওকে কাঁপিয়ে দেয়। তীব্র কামনার প্রবল ঝঞ্ঝায় মহুয়ার দেহ কাঠামো ঝাঁকিয়ে ওঠে। মাথার চুল আঁকড়ে ধরে নিজের পেটের ওপরে দানার মাথা প্রানপনে চেপে ধরে। দুই কঠিন থাবার মাঝে মহুয়ার কোমল ভারী পাছা আঁকড়ে ধরে নাভির ওপরে ঠোঁট চেপে ধরে দানা।

মহুয়া চোখ বুজে কামোন্মাদ সিন্ধু ঘোটকীর মতন ডাক ছাড়ে, “আহহহহহ জিত কি করছো সোনা।”

পেলব পুরুষ্টু ঊরু জোড়া গলতে শুরু করে দেয়, নাভির ওপরে দানার শিক্ত জিব ওর শরীরের শিক্ত আগুন আরও বেশি করে ঝরিয়ে দেয়। দানার নাকে মহুয়ার যোনি নির্যাসের তীব্র মাদক ঘ্রাণ ভেসে আসে। সেই আঘ্রানে দানা উন্মাদ হয়ে যায়। জানু মাঝে ভিজে যাওয়াতে আর দুই ঊরু গলে যাওয়ার ফলে মহুয়ার শরীর কেঁপে ওঠে। মহুয়া কোনরকমে ভারী চোখের পাতা নিয়ে প্রেমাসিক্ত নয়নে প্রেমিকের তীব্র কামনা ভরা ক্রিয়াকলাপ দেখে। দানার তর সয়না, মনে হয় এখুনি মহুয়াকে নগ্ন করে ওকে নিয়ে কামঘন খেলায় মেতে ওঠে। কিন্তু এতদিন পরে ফিরে পাওয়া ভালোবাসা এক নিমেষের মধ্যে শেষ করতে চায় না কেউই।

মহুয়া ওর চুলের মুঠি ধরে চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে, “পায়ের কাছেই সারা রাত বসে থাকবে নাকি সোনা?”

দানার কানে সেই মিহি মিষ্টি আওয়াজ অনেকদুর থেকে ভেসে আসে। পেটের ওপর থেকে মাথা তুলে মহুয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, “রানী কি আজ্ঞা করেন এই দাস কে?”

মহুয়া মিষ্টি করে আদেশ দেয়, “উঠে দাঁড়াও আগে, হে দাস।” বলেই ফিক ফিক করে হেসে ফেলে।

দুই নরম ভারী পাছার ওপরে আলতো চাঁটি মেরে চোখ টিপে মহুয়াকে জিজ্ঞেস করে, “কেমন লাগলো গো?”

কামঘন নরম সুরে দানাকে বলে, “পাগল ছেলে তুমি, এতো পাগল আগে করোনি কেন?”

দানা উঠে দাঁড়িয়ে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। কানের লতিতে চুমু খেয়ে ফিসফিস করে বলে, “আগে মহুয়ার সাথে প্রেম করতাম, আজকে নিজের পাপড়ির সাথে প্রেম করছি তাই।”

মহুয়া নাক কুঁচকে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, “উফফফ পারি না, কোথায় থাকে এই বুলি।”

কাঁধের থেকে গাউন সরে যায়, ওদের দেহের মাঝে আটকে পড়ে মহুয়ার ঊর্ধ্বাঙ্গ উন্মুক্ত করে দেয়। কোমরের কাছে আটকে থাকা মসলিনের পোশাক ওদের মাঝে চাপা পড়ে কেঁদে ওঠে, কেন ওকে আর কষ্ট দেওয়া, এইবারে একটু ওকে ছেড়ে দিলেই হয়।

মহুয়ার ফর্সা পিঠের ওপরে জিবের ডগা দিয়ে ছোট ছোট দাগ কাটতে শুরু করে দানা। বেলটের ওপরে হাত দিতেই মহুয়া বুঝে যায় এইবারে এই মসলিন পোশাক মুক্তির স্বাদ পাবে। মহুয়ার শরীর টানটান হয়ে যায়, পাছার খাঁজে আটকে থাকা দানার কঠিন উত্তপ্ত লিঙ্গ ওকে অনেকক্ষণ ধরে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করে দিচ্ছে। পেছনের দিকে পাছা টেনে ওই জ্বালা আরো তীব্র ভাবে উপভোগ করে। এইবারে দানার পুরুষাঙ্গকে একটু শিক্ষা না দিলেই নয়, অনেক অনেক উত্যক্ত করেছে। পেছনে হাত দিয়ে লুঙ্গির খুঁট খুলে দিতেই লুঙ্গি পায়ের কাছে এসে স্থান নেয়। জাঙ্গিয়ার ওপর দিয়েই দানার কঠিন লিঙ্গ হাতের মধ্যে ধরে ফেলে। উফফফ কি তপ্ত লিঙ্গ, মহুয়ার হাতের তালু পুড়িয়ে দিল একেবারে।

চকিতে লিঙ্গের ওপরে কুসুম কোমল আঙ্গুলের পরশে দানার কেঁপে ওঠে। “আহহহহ পাপড়ি” বলতে বলতে ব্রার ওপর দিয়েই দুই নরম স্তন জোড়া হাতের মুঠির মধ্যে ধরে ফেলে। স্তনের ওপরে কঠিন আঙ্গুলের পেষণে মহুয়া কেঁপে ওঠে। দানার লিঙ্গ, মহুয়ার হাতের চাপের ফলে ফুঁসতে শুরু করে দেয়। একহাতে প্রেমিকের পুরুষাঙ্গ, অন্য হাত নিজের স্তনের ওপরে নিয়ে দানার হাত নিজের স্তনের ওপরে চেপে ধরে। সুন্দরী মিষ্টি মহুয়া, কামোন্মাদ সিন্ধু ঘোটকী হয়ে যায়। দানার কঠিন থাবা মুচড়ে পিষে ধরে মহুয়ার নরম স্তন জোড়া। ব্রার ওপর দিয়েই স্তনের বোঁটা ডলে দেয়, আর চটকে চেপে ধরে নিটোল স্তন। চাপাচাপির ফলে মহুয়ার কোমর থেকে বেল্ট খুলে যায়, মসলিন লাল পোশাক মুক্তি পেয়ে স্ফটিকের মেঝের ওপরে শুয়ে ওদের কামকেলি দেখে। দুইজনের পরনে শুধু মাত্র অন্তর্বাস ছাড়া আর কিছু নেই। লাস্যময়ী সুন্দরী মহুয়ার ফর্সা ত্বকের ওপরে রক্ত লাল ক্ষুদ্র অন্তর্বাস ভীষণ সুন্দর দেখায়। নগ্ন ত্বকে অনেক আগেই কামনার তীব্র আগুন ধরেছিল, এতক্ষণ প্রেমের খেলা খেলে দুইজনের শরীরে কামনার ঘামের ছোট ছোট বিন্দু দেখা দেয়। মহুয়া চোখ বুজে দানার হাত নিজের শরীরের চারপাশে বেড়ের মতন করে ধরে, দানার শরীরের উত্তাপ গায়ে মাখিয়ে নেয়।

কিছুক্ষণ না অনেকক্ষণ ওইভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো জানে না। বেশ কিছু পরে মহুয়া চোখ খুলে দানাকে বলে, “এই সোনা, আমি একটু মেয়েকে দেখে আসছি তুমি পালিয়ে যেও না।”

রুহি মাঝ রাতে একবার ওঠে, তখন মহুয়া ওকে থপথপ করে আবার ঘুম পাড়িয়ে দেয়। যেদিন দানা থাকে সেদিন ওটা দানার কাজ। মাকে কাছে না পেলে কেঁদে উঠবে। দানা হেসে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, এখন সময় আছে মেয়েকে দেখে এসো। এরপরে কোন ভঙ্গিমায় থাকবো তার ঠিক নেই আর যদি মাঝখানে মেয়ে কেঁদে ওঠে তাহলে এঃ যাঃ মাটি।”

মহুয়া মেঝে থেকে গাউন উঠিয়ে ওর গালে চাঁটি মেরে বলে, “ইসসস... কি সব কথাবার্তা শয়তানের।”

দানা মাথা চুলকে হেসে বলে, “যাঃ বাবা সত্যি কথা বললাম তাও আবার মার্জিত ভাষায় বললাম তাও আমাকে মার খেতে হবে? ধুস ...”

গাউন গায়ে জড়িয়ে মহুয়া মেয়েকে দেখতে চলে যায়। দানা বিছানায় পা ছড়িয়ে বসে একটা সিগারেট জ্বালায়। চারপাশে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে ভাবে স্বপ্ন নয়তো এটা। এতো বিশাল একটা শয়ন কক্ষে দানা শুয়ে, কাছেই এক ভীষণ সুন্দরী প্রেমিকা, আবার একটা মিষ্টি কচি শিশু। সিগারেট টেনে বেশ কয়েকটা ধোঁয়ার রিং ছেড়ে মনে মনে হেসে ফেলে। না এটা সত্যি হতেই পারে না, কালী পাড়ার এঁদো বস্তির একটা সামান্য ট্যাক্সি চালক কখনো এক অট্টালিকায় বসবাস করতে পারে না। পরী কথার মতন ওর কপালে সুন্দরী রাজকন্যে নেই। হাতের ওপরে একবার সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়, সত্যি না মিথ্যে।
 
পর্ব বারো – গোধূলি লগ্ন (#7-88)

মহুয়া আঁতকে ওঠে, “এই জিত কি করছো ওটা? ইসসসস” দৌড়ে এসে ওর হাতখানি হাতের মধ্যে নিয়ে নেয়, “এটা কি পাগলামি হলো জিত?”

সত্যি তাহলে, হাতের লোম পুড়ে গেছে সেই সাথে একটুখানি ত্বক পুড়ে গেছে, সেদিকে অবশ্য খেয়াল নেই দানার। ওর সামনে এক জল পরী বসে ওর হাত হাতের মধ্যে নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে।

দানা মাথা নাড়িয়ে মৃদু হাসে, “না মানে স্বপ্ন দেখছি না সত্যি সেটা একবার দেখছিলাম।”

ওর কোলে চড়ে বসে দানার মুখ আঁজলা করে ধরে মহুয়া। চোখের ওপরে চোখ রেখে বলে, “স্বপ্ন হলে, চিরকাল আমার কোলে ঘুমিয়ে থেকো। চোখ খুলতে হবে না তাহলেই হবে।”

দানা, মহুয়াকে জড়িয়ে ধরে বিছানার ওপরে শুয়ে পড়ে। ধবধবে নরম বিছানার ওপরে এক লাস্যময়ী পরী শুয়ে। দানার মাথা মহুয়ার মুখের ওপরে ঝুঁকে যায়। ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে গভীর আলিঙ্গন করে একে ওপরকে চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে তোলে। মহুয়ার ঠোঁট গাল কপাল বন্ধ চোখের পাতা কিছুই দানার ঠোঁটের ছোঁয়া থেকে বাদ পড়ে না। দানার হাত নেমে যায় নরম পেটের ওপরে। নাভির চারপাশে একটু ঘুরে আরও নিচের দিকে নেমে যায়। দানার দুষ্টু আঙ্গুল মহুয়ার তলপেট ছাড়াতেই তলপেট ঢুকে যায়। মহুয়ার বুঝতে বাকি থাকেনা যে এইবারে ওর কোমল যোনি দানার কঠিন আঙ্গুলের পরশে ঝলসে যাবে। মহুয়ার যোনি গহ্বর অনেক আগেই ভিজে গেছে, যোনির ওপরে ত্রিকোণ কাপড় অনেক আগেই ভিজে ওর যোনি বেদির সাথে লেপটে গেছে। দানার হাত প্যান্টির কোমর বন্ধনির কাছে আসতেই যোনি যেন আবার ঘেমে যায়। তলপেট কেঁপে ওঠে মহুয়ার।

হটাত মহুয়া দানাকে ঠেলে চিত করে শুইয়ে দেয়। এই অতর্কিত হামলায় দানা ধন্দে পড়ে যায়। এতদিন মহুয়ার এহেন কামোত্তেজিত রূপ কোনোদিন দেখেনি। দানার লোমশ ছাতির ওপরে নিজের বুক নিয়ে ওর চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকে। চোখের ইশারায় দানা প্রশ্ন করে কি করতে চলেছে মহুয়া। কাঁধের থেকে ব্রা স্ট্রাপ খুলে নামিয়ে দেয়, দানা পাগল। মহুয়ার স্তনের বোঁটার ওপরে আটকে একটু ঝুলে থাকে ব্রা। এটা কি নতুন খেলা মহুয়া খেলতে চলেছে। দানা উত্তেজনার সাথে সাথে উৎসুক হয়ে মহুয়াকে দেখে।

দানার ঠোঁটের ওপরে আঙ্গুল চেপে দুষ্টু মিষ্টি হেসে বলে, “এতদিন দানার সাথে প্রেম করেছিলাম আজকে বুকের রক্ত, জিতের সাথে প্রেম করছি। চুপচাপ শুয়ে থাকো জিত, একটু আমাকে আনন্দ নিতে দাও।”

ওই কণ্ঠ স্বর আর ওই চেহারা দেখে দানা পাগল হয়ে ওঠে, দুই হাত নিশপিশ করে ওঠে এখুনি মহুয়াকে বিছানায় ফেলে ভালোবাসার চরম খেলায় নামতে, কিন্তু প্রেমিকার এই তীব্র কামঘন ছোঁয়া উপভোগ করতে চায়। এইভাবে ওকে নিয়ে আগে কোনোদিন মহুয়া মেতে ওঠেনি। বরাবর দানাকেই অগ্রসর হতে হতো মহুয়ার কমনীয় দেহ পল্লব নিয়ে খেলা করার জন্য।

দানা চুপচাপ শুয়ে থাকে আর মহুয়া ওর ছাতির ওপরে ঝুঁকে পড়ে। লোমশ ছাতির ওপরে নরম আঙ্গুল বুলিয়ে আদর করে দেয়, সেই সাথে মাথা নামিয়ে রেশমি চুলের ঢল ঝরিয়ে দেয় দানার ছাতির ওপরে। রেশমি চুলের পরশে দানা পাগল হয়ে যায়। কিছুপরে ছাতির ওপরে ভিজে নরম ঠোঁটের ছোঁয়া পায় দানা। মহুয়া, অভিজ্ঞ এক কামনার অপ্সরার মতন দানার ছাতির ওপরে, ওর বুকের বোঁটার ওপরে ছোট ছোট অসংখ্য চুমু খেতে শুরু করে। দানার বুকের ফুটে ওঠা বৃন্ত দাঁতের মাঝে নিয়ে আলতো করে কেটে দেয়। দানার শরীর কাঠ হয়ে যায় এহেন চরম কামনা শিক্ত কীর্তি কলাপের ফলে। ওর শ্বাসে আগুন বয়ে চলে, “আহহ আহহ,” ছাড়া আর কিছু বলার অথবা করার শক্তি থাকে না, বলিষ্ঠ পেশি বহুল দানার। এতদিন ভাবতো ওর ভীষণ কাম শক্তি অন্য নারীকে পরাজিত করে সুখের সন্ধান দেয়, কিন্তু মহুয়া যে শুধু মাত্র ঠোঁটের পরশে ওকে অবশ করিয়ে দেবে সেটা কোনোদিন ভাবেনি। মহুয়া একবার একটা বৃন্ত দাঁতের মাঝে নিয়ে কাটে সেই সাথে অন্য বৃন্ত দুই আঙ্গুলের মাঝে নিয়ে টিপে ধরে। এহেন তীব্র কামনার সুখের পরশে দানা ঘেমে ওঠে, দানার শরীর গলে যায়। দানা, মহুয়ার মাথা নিজের বুকের ওপরে চেপে ধরে ওর নরম ঠোঁটের চুম্বন আরো তীব্র করে তোলে। দানার লোমশ ছাতির মধ্যে নাক ডুবিয়ে পুরুষালী আঘ্রান বুকে টেনে মহুয়া কামোন্মাদ হয়ে ওঠে। মহুয়ার ঠোঁট, ছাতির ওপরে অজস্র ছোট ছোট চুমুর দাগ ফেলে পেশি বহুল পেটের ওপরে নেমে যায়। নামতে নামতে লালার দাগ ফেলে যায়। নড়াচড়া করার শক্তি হারিয়ে ফেলে দানা। মহুয়ার চোখের পাতা ভারী, কিন্তু ওর শরীরের নিচে দানার দেহের উত্তাপ ওকে ঝলসে দেয়।

দানা থাকতে না পেরে মহুয়ার চুলে আঙ্গুল ডুবিয়ে আদর করে বলে, “সোনা একি পাগল করছো তুমি।”

মহুয়া ওর দিকে মাথা উঠিয়ে কামঘন কণ্ঠে বলে, “তুমি আমাকে যেরকম পাগল করো আমি ঠিক সেটাই তোমার ওপরে প্রয়োগ করে দেখতে চাই।”

হাতের মুঠি শক্ত করে নিথর হয়ে পড়ে থাকা ছাড়া দানার আর কিছু করনীয় থাকে না। ওর লোমশ জানুর ওপরে হাত রেখে দুই জানু মেলে ধরে। কাম শিক্ত ঝাপসা চোখে মহুয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে কি করছে। দানার দুই মেলে ধরা জানুর মাঝে হাঁটু গেড়ে বসে, ওর নিম্নাঙ্গের ওপরে ঝুঁকে পড়ে মহুয়া। তলপেট ঊরুসন্ধি সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিজের রেশমি চুলের আবরনে ঢেকে দেয়। ওর নাকে ভেসে আসে, তীব্র পুরুষালী ঘ্রাণ, কিছুটা ঘন কালো কেশের জঙ্গলের, কিছুটা পুরুষের দেহের কাম নির্যাসের। চোখ বুজে সেই গন্ধ নাকে টেনে নেয় মহুয়া, বুক মাথা শরীর সব ঝনঝন করে ওঠে। জাঙ্গিয়াটা টেনে নিচের দিকে নামাতেই, চোখের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায় দানার ভিমকায় কঠিন লিঙ্গ। লিঙ্গের আকার অবয়ব দেখে মহুয়ার বুকের রক্ত পাগলের মতন এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায়। নরম তুলতুলে বুকের খাঁজে লিঙ্গ আলতো চেপে, সেই গরম পরশ গায়ে মাখিয়ে নিতে তৎপর হয়ে ওঠে কামিনী। সম্মোহিতের মতন প্রেমিকের শরীর নিয়ে খেলায় মেতেছে। ব্রা খুলে বক্ষ বিভাজন মাঝে দানার কঠিন উত্তপ্ত লিঙ্গ চেপে ধরে, সাথে মুক্তোর মালার দানা লিঙ্গের চারপাশে জড়িয়ে যায়। এতো গরম, এতো কঠিন ওর দেহের মধ্যে ঢুকে ঝড় তুলে দেবে। এটা ভেবেই শরীর মাথা সব কিছু গুলিয়ে যায়। মনের আনন্দে নরম বুকের ওপরে দানার উত্তপ্ত লিঙ্গের ছ্যাকা উপভোগ করে।

উদ্ধত লিঙ্গের চারপাশে এক নরম তুলতুলে আগুনে ত্বকের পরশে দানার শরীর কামোত্তেজনায় বেঁকে যায়। দুই পাশ দিয়ে নিজের কোমল নিটোল স্তন জোড়া একত্রিত করে তার মাঝে দানার লিঙ্গকে আটকে ধরে ফেলে মহুয়া। ধীরে ধীরে নিটোল স্তন জোড়া আগুপিছু নাড়িয়ে দানার লিঙ্গ নিজের স্তনের মাঝে ঘষতে শুরু করে। দানার শরীর কেঁপে ওঠে, শরীর বেঁকে যায়। নরম নিটোল স্তনের মাঝে লিঙ্গ আটকা পড়ে ছটফট করতে শুরু করে দেয়। লিঙ্গের ওপরে মুক্তোর দানা এঁটে বসে শরীরে কামাগ্নি আরো হুহু করে জ্বালিয়ে দেয়। লিঙ্গের ডগা চামড়া ছাড়িয়ে মাথা বের করে স্তনের ওপরে ছুঁয়ে যায়। মহুয়ার স্তন মাঝে উত্তপ্ত লিঙ্গের শিক্ত ডগা স্পর্শ করতেই, দুইজনের শরীর থরথর করে কেঁপে ওঠে। লাল শিক্ত ডগা ওর ত্বকের ঘষে যায়। “আহহহ আহহহ” অস্ফুট এক শীৎকার ঠিকরে বেরিয়ে আসে মহুয়ার মুখ থেকে। একটুখানি কাম নির্যাস লিঙ্গের মাথা চুঁইয়ে বেরিয়ে আসে। চরম কামসুখে দানার মাথা ঝনঝন করে। ভীষণ কামুকী নারীর মতন, লিঙ্গের কাম নির্যাস নিজের নরম স্তনের মাখিয়ে নেয় মহুয়া। দানা কাঁপতে কাঁপতে চরম কামোত্তেজনার শিখরে পৌঁছে যায়। দানার শ্বাসের গতি বেড়ে যায়, শরীর কাঠ হয়ে আসে। এতদিনে কারুর মুখ মেহন করে অথবা যোনি মন্থন করে এমন সুখ পেয়েছিল ওর মনে পড়ে না। কিন্তু নিজের প্রেমিকা ওকে শুধু মাত্র স্তন দিয়েই সেই সুখের চুড়ায় পৌঁছে দেবে সেটা ভাবেনি।

দানা হাত বাড়িয়ে মহুয়ার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে কোনরকমে প্রশ্ন করে, “প্লিস থামো সোনা, আমি মরে যাবো। উফফফ কি মনে হচ্ছে, আহহহ না পাপড়ি করো করো, আরও চেপে ধরো সোনা... এই পাপড়ি পারছি না... একটু হলেই আমি শেষ হয়ে ফেটে যাবো সোনা... প্লিস থামো।”

ঠোঁটে একটা দুষ্টু মিষ্টি হাসি নিয়ে মহুয়া ওকে বলে, “এবারে বুঝলে সোনা, তুমি যখন আমার সাথে এই সব করো তখন আমার কেমন লাগে।”

চরম কামক্রীড়ার সময়ে এতদিন শুধু মহুয়া প্রলাপ বকতো, এইবারে দানা সেই প্রলাপ বকতে শুরু করে দেয়।

দানার শ্বাস ফুলে ওঠে ছটফট করতে করতে কোনরকমে ওকে বলে, “উফফফ সোনা, তুমি মাইরি কি যে বলি, জানি না। আমি নেই, ভাসছি...।”

মহুয়া, নিজের কমনীয় কোমল শরীর টেনে, দানার সারা অঙ্গে সাপের মতন এঁকেবেঁকে নিজের অঙ্গ ঘষে দেহের ওপরে উঠে আসে। মহুয়ার কোমল স্তন জোড়া আর জ্বলন্ত স্তনের বোঁটা দানার লোমশ ছাতির ওপরে দাগ কেটে দেয়। নরম স্তন দানার প্রশস্ত ছাতির ওপরে পিষে ধরে। লোমের ছোঁয়ায় মহুয়ার স্তন জোড়ার ত্বকে আগুনে ফোস্কা পড়ে যায়। দানার মুখের ওপরে রেশমি চুলের আবরন ঢেকে ওর মাথার দুইপাশে কনুইয়ে ভর দিয়ে দানার আধা বোজা চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। মহুয়ার উষ্ণ কামশিক্ত ঘর্মাক্ত ত্বকের সাথে দানার ত্বক লেপটে যায়। নিজের দুই পেলব পুরুষ্টু ঊরু জোড়া মেলে ধরে, দানার দুই পায়ের দুই পাশে দিয়ে ওর পা জোড়া চেপে ধরে। ঊরুসন্ধির সাথে ঊরুসন্ধি মিশে যায়। মহুয়ার ভেজা প্যান্টি ঢাকা যোনির ওপরে দানার গরম লিঙ্গ ধাক্কা মারে। দানার মুখের ওপরে উষ্ণ শ্বাসের ঢেউ বইয়ে নিজের ঊরুসন্ধি চেপে দানার প্রখর অগ্নিবৎ লিঙ্গের সুখের পরশ নিজের যোনির মুখে উপভোগ করে মহুয়া। সারা শরীর বারেবারে সেই চরম পরশে কেঁপে ওঠে। দানা মহুয়াকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে। বাঁকা পিঠে আলতো নখের আঁচর কাটতে কাটতে হাত নিচে নামিয়ে আনে। দুই বড় কঠিন থাবার মধ্যে কোমল পাছা জোড়া চেপে ধরে। আঙ্গুল গেড়ে বসিয়ে দেয় মহুয়ার কোমল পাছার মাংসে।

কামার্ত মহুয়া কঁকিয়ে ওঠে কঠিন আঙ্গুলের ছোঁয়ায়, “আহহহহ জিত পারছি না আর সোনা... পিষে দাও আমাকে সোনা...”

মাথা ঝাঁকিয়ে দানার মুখের ওপরে রেশমি চুলের পর্দা বুলিয়ে দেয়। উপরের দিকে কোমর ঠেলে শিক্ত মহুয়ার যোনিচেরায় কামোন্মাদ দানা লিঙ্গ চেপে ধরে। ভিজে প্যান্টি সুদ্ধু লিঙ্গের ডগা যোনির মুখে ঢুকে যায়।

কাপড় সুদ্ধু লিঙ্গের ডগা যোনির মুখে অনুভব করতে পেরে মহুয়া কঁকিয়ে ওঠে, “মরে যাচ্ছি জিত... উফফ সোনা কি যে ভালো লাগছে না তোমার এই ছোঁয়ায় বলতে পারছি না গো...”

দানা ওর পাছা জোড়া পিষতে পিষতে কোনোরকমে বলে, “ওইভাবে হটাত আমাকে চুমু খেতে গেলে কেন গো?”

মহুয়া কামঘন কণ্ঠে কাঁপতে কাঁপতে বলে, “তুমি যে আমার সাথে ওইসব করো তখন? আমিও একটু চেষ্টা করলাম, দেখতে চাইলাম তোমার কেমন লাগে তাই। কেমন লেগেছে জিত, তোমার ওই উলঙ্গ সঙ্গম রত ছবির চেয়ে ভালো না খারাপ গো?”

দানা ওর পিঠে পাছায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলে, “তোমার ছোঁয়া কোনোদিন খারাপ লাগতে পারে আমার, সোনা? আমিতো পাগল হয়ে যাচ্ছি পাপড়ি। তোমার আগেই আমি ফেটে যাবো।”

মহুয়া ওর নাকের ওপরে নাক ঘষে মিহি কামঘন কণ্ঠে বলে, “তোমার কাছ থেকে শেখা এই সব সোনা। দানার সাথে করতে একটু বাধা পেতাম আজকে জিতের সাথে করে মন ভরে গেছে।” বলেই দুষ্টু মিষ্টি হাসি দেয়।

মহুয়াকে জড়িয়ে ধরে দানা বিছানার ওপরে গড়িয়ে যায়। ওকে চিত করে শুইয়ে দিয়ে নিজের শরীরে নিচে প্রেমিকার শরীর চেপে ধরে। কামা ক্ষুধার্ত দানার পেশীবহুল ভারী দেহের নিচে উদ্ভিন্ন যৌবনা মহুয়া পিষে যায়। ভেজা নরম ঠোঁটের ওপরে ঠোঁট মিশিয়ে গভীর চুম্বন এঁকে দেয়।

চোখের ওপরে চোখ রেখে মহুয়াকে বলে, “এবারে আমি তোমার ওপরে একটু পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাই সোনা?”

মহুয়া ওর গলা জড়িয়ে দুষ্টু মিষ্টি হেসে বলে, “আমিও কিন্তু তাহলে ছেড়ে দেব না জিত।”

ভীষণ কামনা জড়ানো এই যুদ্ধে কার হার হবে ঠিক নেই তবে দুইজনেই একসাথে পরস্পরকে জিতে নেবে তাতে দ্বিমত নেই। দুই জনেই প্রতিটি মুহূর্ত প্রতিটি ক্ষণ পরস্পরকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে তৎপর। মহুয়ার ঘাড়ের নিচে হাত দিয়ে ওর ঊর্ধ্বাঙ্গ উঁচু করে ধরে, ডান হাতব নেমে যায় নরম পেটের ওপরে। ঘনঘন শ্বাসের ফলে বুক ওঠানামা করে, পেট ঢুকে যায় কঠিন তপ্ত আঙ্গুলের ছোঁয়ায়। নাভির চারপাশে আঙ্গুল বুলিয়ে হাত নামিয়ে নিয়ে যায় তলপেটের ওপরে। ভিজে প্যান্টির ওপর দিয়েই যোনি বেদি আলতো করে চেপে ধরে। হাতের তালু ভিজে যায় নারীর কাম নির্যাসে। মহুয়া দুই ঊরু মেলে ওর কামুকী কপোতীর ন্যায় ওর হাতের ওপরে ঊরুসন্ধি ঠেলে দেয়। দানার লিঙ্গ মুঠি করে ধরে ফেলে। জ্বলন্ত কঠিন লিঙ্গ ওর নরম হাত পুড়িয়ে দেয়। আঙ্গুল পেঁচিয়ে চেপে ধরতেই দানা ছটফট করে ওঠে, লিঙ্গ ফুঁসে ওঠে মহুয়ার কোমল কঠিন মুঠির মধ্যে।

মহুয়া ওর দিকে তাকিয়ে মিহি কামঘন কণ্ঠে বলে, “তোমরা ওইটা কি গরম গো, এতো কঠিন হয়ে গেছে যেন লোহা গো, এই সুখের পরশে আমি মরে যাবো।”

নরম আঙ্গুলের চাপ উপভোগ করতে করতে, প্যান্টির ওপর দিয়েই যোনি চেরা বরাবর আঙ্গুল ডলে দেয়। মহুয়া কেঁপে ওঠে। মহুয়ার যোনি কেশ নিয়ে দানাকে খুব খেলতে ভালোবাসে তাই ওর যোনি কেশ কামানো নয়। প্যান্টি সরিয়ে দুই আঙ্গুল দিয়ে যোনি চেরা ডলে দেয় দানা। নরম ফোলা যোনি চেরার মাঝ দিয়ে শিক্ত কোমল যোনি পাপড়ি বেরিয়ে আসে। ভিজে যোনি পাপড়ি জোড়া দানার আঙ্গুল রাগ রসে ভিজিয়ে দেয়। দানা ওর শিক্ত কোমল যোনি নিয়ে কাম আদরে মেতে ওঠে আর মহুয়া ওর লিঙ্গ হাতের মুঠিতে নিয়ে নাড়াতে শুরু করে দেয়। মধ্যমা ঢুকিয়ে দেয় শিক্ত পিচ্ছিল যোনি গুহার মধ্যে। মহুয়া কঁকিয়ে উঠে দানার লিঙ্গের ওপরে চাপ বাড়িয়ে দেয়। আঁটো পিচ্ছিল যোনি ওর মধ্যমা গিলে ফেলতে উদ্যত।
 
পর্ব বারো – গোধূলি লগ্ন (#8-89)

মধ্যমার সাথে অনামিকা ঢুকিয়ে দিতেই মহুয়া তৃষ্ণার্ত কপোতীর মতন ডাক ছাড়ে, “আহহহহহ... জিইইইইত পাগল হয়ে গেলাম... উম্মম্ম উম্মম ইসসস জিত কি ভালো লাগছে গো সোনা... করো সোনা নাড়াও... উফফফ না পারছি না জিত... উফফ ইসসস নাআআআআআ... ”

পিচ্ছিল যোনির মধ্যে দুই আঙ্গুল নাড়াতে নাড়াতে, বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ভগাঙ্কুর ডলে পিষে দেয়। অব্যাক্ত সব সুখের শীৎকারে ঘর ভরে ওঠে। মহুয়ার স্তনের ওপরে ঝুঁকে ওর একটা স্তন মুখের মধ্যে পুরে নেয় দানা। একটুখানি স্তন চুষে, বোঁটা দাঁতের মাঝে নিয়ে টেনে দেয়। স্তন বৃন্তের চারপাশে জিবের ডগা বুলিয়ে কামোত্তেজিত প্রেমিকাকে কামনার চরম শিখরে তুলে ধরে। স্তনের ওপরে গরম শ্বাস আর ভিজে জিবের পরশে মহুয়া শরীর বেঁকে যায়। ওর শরীর নিজে থেকেই কাজ করে, একবার স্তন ঠেলে দেয় দানার মুখের মধ্যে, একবার ঊরুসন্ধি ঠেলে দেয় দানার হাতের দিকে। দানার লিঙ্গ ছেড়ে, ওর মাথা আঁকড়ে ধরে নিজের স্তনের ওপরে চেপে ধরে মহুয়া। সারা শরীরে কামনার ঘাম ছুটে যায়, তীব্র কামুকী কাঁপুনি দিয়ে বারেবারে ধমনী শিহরিত হয়। একের পর এক স্তন মুখে নিয়ে চুষে পিষে খেয়ে ফেলে দানা।

মহুয়া চোখ বুজে তীব্র কামার্ত শীৎকার করতে থাকে, “হ্যাঁ সোনা আমার বুক খেয়ে ফেলো। চুষে চুষে রক্ত বার করে দাও সোনা। উসসসস ইসসস কি ভালো লাগছে গো তোমার পরশে, নাআআও সোনা আমাকে খাও আরও খাও, তোমার ছোঁয়ায় মধু আছে সোনা...।”

ছটফট করতে করতে মহুয়ার শরীর বেঁকে যায়, শরীরের সব ধমনী কুঁকড়ে যায়। দানার আঙ্গুল জোড়া মহুয়ার যোনি পেশি কামড়ে ধরে। দুই পায়ের পাতা টানটান হয়ে সোজা হয়ে যায়। ছটফট করতে করতে হটাত নিথর হয়ে যায় মহুয়া।

তীব্র কামঘন ডাক ছাড়ে লাস্যময়ী কামুকী অপ্সরা, “জিত, আমাকে ধরো, জিত নাআআআআ... আমাকে চেপে ধরো জিত... উফফফ মাগো কি হচ্ছে আমার জিত... সোনা... পারছি... না”

তীব্র কামনার চরমে পৌঁছে যায় মহুয়া। যোনির ভেতরে দুই আঙ্গুল চেপে, মহুয়ার কোমল নধর দেহ বিছানার সাথে পিষে ধরে দানা। বারকয়েক তীব্র ঝাঁকুনি, মহুয়ার শরীর কুঁকড়ে যায়। দানার দুই আঙ্গুল ভিজে ওঠে নারীর ঘন রাগনির্যাসে। ধীরে ধীরে আঙ্গুল টেনে বের করে চুষে নেয় দানা, প্রেমিকার ঘন নির্যাসের মিষ্টতা জিবে লেগে এক অনাবিল স্বাদ পায়। নাকে ভেসে আসে ঝাঁঝালো ঘ্রাণ, সেই গন্ধে দানা কাম পাগল হয়ে ওঠে। দানার বুকের মধ্যে কুঁকড়ে ওর গলা জড়িয়ে পরে থাকে নিথর হয়ে। ওর শরীর শুকিয়ে গেছে বলে মনে হয়।

সদ্য আঙ্গুল মন্থিত যোনির ওপরে আলতো চাঁটি মেরে মহুয়াকে কামঘন কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কেমন লাগলো সোনা?”

ভারী চোখের পাতা কোনোরকমে মেলে ধরে বলে, “তুমি একটা শয়তান ছেলে, এতক্ষণ কেউ করে নাকি গো? আমার শরীর শুকিয়ে গেছে, গায়ে একটুও শক্তি নেই সোনা...”

দানা ওর গোলাপি নরম ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নামিয়ে বলে, “এই তো শুরু করলাম সোনা। এখনো যে আসল খেলা বাকি আছে।”

মহুয়া জানে ওই ভিমকায় কঠিন লিঙ্গ ওর যোনি মধ্যে ঢুকে কি চরম ঝঞ্ঝার সৃষ্টি করবে। কিন্তু আজকের রাতের এই কামঘন ঝঞ্ঝা যেন এক নতুন রূপ ধারন করেছে। মহুয়ার পায়ের কাছে চলে গিয়ে পরনের প্যান্টি খুলে দেয়। কোমর উঁচু করে দানাকে শিক্ত ক্ষুদ্র প্যান্টি খুলতে সাহায্য করে মহুয়া। এতক্ষণ চোখের তারায় অসংখ্য লাল নীল হলদে আলোকছটা দেখেছিল সেটা কেটে গিয়ে প্রেমিকের মুখখানি দেখতে পায় মহুয়া। আঠালো রাগরসে ভিজে প্যান্টি নাকের কাছে এনে আঘ্রান শুঁকে নেয় দানা। ওর ওই কান্ডকারখানা দেখে মিষ্টি কামুকী এক হাসি দেয় মহুয়া।

মিহি কণ্ঠে দানাকে বলে, “এই ছিঃ তোমার ঘেন্না করে না?”

দানা মিচকি হেসে বলে, “ইসসস ওইখানে যখন মুখ দিয়ে চাটি তখন তো গলগল করে রস ঝরিয়ে আমাকে ভিজিয়ে দাও। তার বেলায়?”

কামোত্তেজিত মহুয়ার কান গাল লাল হয়ে যায় সেই শুনে, “তুমি না একটা...”

ক্ষুধার্ত কামনার আগুনে দগ্ধ চোখে উলঙ্গ লাস্যময়ী প্রেমিকার দিকে তাকায় দানা। দুই পেলব পুরুষ্টু পা দানার ছাতির ওপরে চেপে ধরা। মসৃণ পায়ের গুলিতে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় দানা। দুই পাছার খাঁজ দিয়ে পটল চেরা যোনি ফুটে ওঠে। হাঁটু গেড়ে বসার ফলে, নরম পাছার খাঁজে ঢুকে দানার গরম উত্থিত লিঙ্গ সোজা ওর যোনি মুখে ধাক্কা মারে। তলপেটের ওপরে হাত দিয়ে চেপে ধরে কঠিন লিঙ্গ যোনি মুখে ছুঁইয়ে দেয়। একটু খানি চাপ দিয়ে শিক্ত পিচ্ছিল যোনি চেরা বরাবর ভিমকায় কঠিন লিঙ্গ চেপে ধরে। মহুয়ার শরীর কুঁকড়ে যায় ওই কামাতুর পরশে, যোনি পাপড়ি দানার গরম লিঙ্গ চুমু খেয়ে ভিজিয়ে দেয়। নিজের স্তন জোড়া হাতের মধ্যে নিয়ে চেপে ধরে চরম কামোত্তেজিত মহুয়া।

আধা বোজা চোখে অস্ফুট গলায় শীৎকার করে ওঠে, “উফফফফ ইসসসস... আআহহহহহহ জিত... কি গরম তোমার ওইটা... ওহহহহহহ সোনা কিছু করো আমাকে কিছু করো সোনা...”

মহুয়ার পায়ের পাতায়, পায়ের গুলি চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দেয়, শিক্ত কোমল যোনি চেরা মাঝে গরম লিঙ্গ ডলে অতিষ্ঠ করে তোলে কামিনীকে। ওর পা ছেড়ে দিতেই, শরীরের দুইপাশে ঊরু মেলে ধরে মহুয়া। নরম তলপেটের ওপরে ঝুঁকে পড়ে দানা। নাভির নিচে চুমু খায় আর হাতের থাবা মেলে দুই সুউন্নত স্তন জোড়া পিষে ধরে। শক্ত হাতের চটকানি খেয়ে মহুয়ার শরীর, ধনুকের মতন বেঁকে যায়। মাথা বালিশ ঠেলে পেছনের দিকে বেঁকে যায়, স্তন জোড়া উঁচিয়ে ওঠে, কোমল স্তন জোড়া দানার কঠিন থাবার পেষণে মাখামাখি হয়ে যায়। মেলে ধরা প্রেমিকার ঊরুসন্ধির মাঝে ঝুঁকে পড়ে দানা। জিব দিয়ে হাঁটু থেকে ঊরুসন্ধির পর্যন্ত কোমল ত্বকে লালার দাগ কেটে দেয়। এহেন তীব্র কামুক আদরে মহুয়া কামার্ত অব্যাক্ত শীৎকার করে। চোখের সামনে মহুয়ার যোনি হাঁ করে, শিক্ত চকচকে যোনি পাপড়ি গুহা থেকে মাথা বের করে দেয়। গোলাপি মধুর সেই সুখের যোনি থেকে ঝাঁঝালো নারীর কামনার গন্ধ দানার মাথায় ঢুকে চর্কিবাজীর মতন চক্কর খায়। ফোলা নরম যোনির চারপাশে জিবের ডগা বুলিয়ে মহুয়াকে পাগল করে দেয় দানা। রেশমি কালো যোনি কেশে নাকের ডগা দিয়ে ঘষে, জিবের ডগা দিয়ে ঘষে মহুয়াকে পাগল করে তোলে। ফর্সা যোনির চারপাশে একটু খানি কালোকেশ থাকলে যোনির সৌন্দর্য ওর চোখে অনেক বেড়ে যায়। মহুয়ার আর ইচ্ছে নেই সেইসাথে দানার ইচ্ছে নেই ওই কেশ গুচ্ছ সম্পূর্ণ কামিয়ে দেওয়ার। কোমর উঁচিয়ে ঊরুসন্ধি দানার মুখের সাথে চেপে ধরতে চেষ্টা করে কিন্তু দানা সোজা যোনি মুখে ঠোঁট না লাগিয়ে চারপাশে জিবের ডগা বুলিয়ে মহুয়াকে প্রচন্ড কামোত্তেজিত করে তোলে।

তীব্র বাসনার আগুনে জ্বলে পুড়ে খাক হওয়া মহুয়া চাপা শীৎকার করে ওঠে, “আহহহহহ জিত, উম্মম্ম আর আর না জিত... উম্মম্ম ইসসসস এতো দুষ্টুমি করছো কেন সোনা, (হাঁপিয়ে ওঠে) এই প্লিস এইবারে ঢুকিয়ে দাও না... ইসসসস আর না সোনা... সোনা আমি মরে যাবো... প্লিস এইবারে একেবারে ঢুকিয়ে আমাকে শেষ করে দাও...”

দানা বুঝতে পারে আর বেশি উত্যক্ত করলে ওর কপোতী ক্ষেপে যাবে। মহুয়া দানার মাথা চেপে ধরে ঊরুসন্ধির ওপরে মাথা টেনে নামিয়ে দেয়। ঠোঁট গোল করে শিক্ত যোনি মুখে চেপে ধরতেই, আঠালো রসে ঠোঁট ভিজে যায়। শিক্ত পিচ্ছিল যোনি গুহায় ঠোঁট পড়তেই মহুয়ার শরীরে কাঁপুনি ধরে যায়। গরম জিব যোনির ভেতরে ঢুকিয়ে দেয় দানা আর তৎক্ষণাৎ কাটা মাছের মতন লাফিয়ে ওঠে মহুয়া। দুই হাতের থাবা দিয়ে জোরে জোরে পিষে দেয় মহুয়া কোমল নিটোল স্তন জোড়া। মাথায় গালে হাত বুলিয়ে দানার ঠোঁটের পরশ আর জিবের চরম কামুক ক্রিয়া নিজের যোনির অভ্যন্তরে উপভোগ করে। মাঝে মাঝে দুই পাপড়ি ঠোঁটের মাঝে নিয়ে চুষে দেয়, জিব দিয়ে যোনির ভেতর চেটে দেয় আর মাঝে মাঝে যোনির উপরিভাগে স্থিত ভগাঙ্কুর জিবের ডগা দিয়ে ডলে মহুয়াকে ভীষণ ভাবে কাম পাগল করে তোলে।

প্রচন্ড কাম কাতর মহুয়া ঘর ভরিয়ে কামার্ত শীৎকার করে ওঠে, “আহহহহহহ জিত সোনা, চাটো সোনা, উফফফ মা গো... একি হল... উম্মম্মম একটু ওপরে চাটো নাআআ পারছি না...”

তৃষ্ণার্ত পথিকের মতন জিব বের করে প্রেমিকার যোনি সুধা আকণ্ঠ চুষে চেটে পান করে দানা। বাম হাত পায়ের নীচ দিয়ে গলিয়ে, যোনি চেরা ফাঁক করে ধরে, ভগাঙ্কুর ডলে উত্যক্ত করে তোলে। ডান হাতের থাবায়, কোমল তুলতুলে স্তন পিষে নিঙড়ে ধরে বারেবারে। দুই আঙ্গুলের মাঝে স্তনের বোঁটা চেপে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ডলে দেয়। চরম কামোত্তেজিত মহুয়া বারেবারে ঊরুসন্ধি দানার মুখের ওপরে ঠেলে দেয়। কামোত্তেজনার চরম শিখরে আবার পৌঁছে যায় মহুয়া, দানার মাথার চুল আঁকড়ে থরথর করে কেঁপে ওঠে। শরীরে সব ধমনী শুকিয়ে নিঙড়ে সব নারী নির্যাস প্রেমিকের মুখের মধ্যে গল গল করে ঝরিয়ে দেয়। শ্রান্ত ক্লান্ত মহুয়া, রাগ রস স্খলন করে চোখ বুজে এলিয়ে পড়ে বিছানায়। ওর শরীরে বিন্দু মাত্র শক্তি বেঁচে নেই, চোখ খুলে যে একবার প্রেমিকের মুখ দর্শন করবে সেটা পর্যন্ত যো নেই।

মহুয়ার ক্লেদাক্ত কমনীয় দেহ পল্লব, দুই বলিষ্ঠ বাহু মাঝে জড়িয়ে ধরে ওর পাশে শুয়ে পড়ে দানা। হাতে পায়ে দুইজনা দুইজনকে পেঁচিয়ে ধরে শুয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ ওই ভাবে শুয়ে শুয়ে পরস্পরের দেহের উত্তাপ নিজেদের শরীরে মাখিয়ে নেয়। মহুয়া ওর গলা জড়িয়ে, বুকের মাঝে মাথা গুঁজে নিথর হয়ে পড়ে থাকে। দানার বুকের ধুকপুক শব্দ না শুনলে ওর ঘুম আসে না, নিরাপত্তার ছায়া খুঁজে পায় না। চক্ষু মুদে সেই ধুকপক শব্দে নিজেকে হারিয়ে দেয় মহুয়া। এইভাবে মরে গেলেও অনেক শান্তি। মহুয়ার কাম রসে ভেজা দানার ঠোঁট ওর নরম গোলাপি ঠোঁট খুঁজে চেপে ধরে। নিজের নারী নির্যাসের স্বাদ পেয়ে শরীর কেমন যেন এক অনাবিল সুখের সাগরে ভেসে যায় মহুয়ার।

খুব ধীরে চোখ খুলে মিহি কণ্ঠে বলে, “সুদ্দু আমাকে পাগল করে দাও।”

মহুয়ার নরম ঠোঁটে আলতো চুমু খেয়ে বলে, “তুমি এতো মিষ্টি, আমাকে সবসময়ে মাতাল করে রাখো।”

দানার নাকের ওপরে নাক ঘষে বলে, “ইসসস আজকে মনে হয় সকাল হয়ে যাবে সোনা।”

মহুয়ার পিঠের ওপরে হাত বুলিয়ে বলে, “হোক না ক্ষতি কি, এখন সকাল হয়নি পাপড়ি, এখন আমার ঝরা বাকি আছে, তোমার ভেতরে ঢুকিয়ে তোমাকে তুঙ্গে তোলা বাকি আছে।”

মহুয়া দানার শরীরের ওপরে পা তুলে দেয়। দানার হাত নেমে আসে মহুয়া কোমল পাছার ওপরে। নিজের ঊরুসন্ধি আবার মহুয়া নরম ঊরুসন্ধির ওপরে চেপে যায়। যোনি মুখে দানার কঠিন উত্তপ্ত লিঙ্গের পরশ পেয়ে মহুয়া বুঝতে পারে এইবারে দানা ওকে শেষ করে দেবে। কাজল কালো চোখ পাকিয়ে দানাকে বলে, “ইসসস আর কত করবে জিত? এইবারে মরে যাবো যে।”

দানা নাক কুঁচকে হেসে ফেলে, “তোমাকে সারা রাত ধরে আজকে চটকাবো, পিষে আদর করব আর ভাসিয়ে দেব।” বলেই পাছা চটকে ধরে লিঙ্গ দিয়ে যোনি মুখ চেপে ধরে।

মহুয়া কঁকিয়ে ওঠে, “উফফফ এইবারে একটু আমাকে শান্তি দাও সোনা।”

দানা জিজ্ঞেস করে, “কি চাও?”

মহুয়া ওর গালে চুমু খেয়ে বলে, “তোমার ওপরে...”
 
পর্ব বারো – গোধূলি লগ্ন (#9-90)

মহুয়া, দানাকে ঠেলে বিছানার ওপরে চিত করে শুইয়ে দিয়ে ওর দেহের ওপরে উঠে পড়ে। দানার ভিমকায় উত্তপ্ত লিঙ্গ, মহুয়ার শিক্ত কোমল যোনির নিচে পিষে যায়। ওর মুখখানি দুই হাতে আঁজলা করে ধরে ওর পুরু কালো ঠোঁটে গভীর এক চুম্বন এঁকে দেয়। কুসুম কোমল রসালো ঠোঁটের চুম্বনে দানার চিত্ত এক অনাবিল আনন্দে ভেসে যায়। বুকের ওপরে হাতের পাতা মেলে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে মহুয়া। দানা ওর কোমল নিটোল পাছা জোড়া কঠিন থাবার মধ্যে পিষে ধরে। কঠিন আঙ্গুলের পেষণে দুই পাছা ফেটে পড়ার যোগাড়। নরম তুলতুলে পাছার ওপরে বেশ কয়েকটা চাঁটি মেরে মহুয়াকে কামোত্তেজিত করে তোলে। কাম বেদনায় মহুয়া ছটফট করে ওঠে।

কামকাতর মহুয়া কঁকিয়ে ওঠে, “আউউউউ জিত, হ্যাঁ সোনা পেষ আমাকে, উফফফ।”

ঊরুসন্ধির সাথে ঊরুসন্ধি মিশে যাওয়ার ফলে ওদের যৌনাঙ্গের কেশের বাগান একে অপরের সাথে মিশে যায়। দানার পুরু কালো ঘন যৌন কেশ, মহুয়ার রেশমি যৌন কেশের সাথে জড়িয়ে খেলা করে চলে। দানার অর্ধ নিমীলিত চোখের দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে দুই শরীরের মাঝে হাত নিয়ে যায় মহুয়া। গরম কঠিন লিঙ্গ নরম মুঠিতে ধরে নিজের যোনি গুহার মুখে একটু ঘষে দেয়। বড় গোল গরম লিঙ্গের ডগা, ভগাঙ্কুরে ডলে নিজেকে উত্তেজিত করে তোলে। মহুয়ার কোমরের দুইপাশে হাত রেখে শক্ত করে ধরে, কোমর উপরের দিকে উঠিয়ে দেয় দানা। শিক্ত পিচ্ছিল যোনির দেয়াল ফুঁড়ে গরম লিঙ্গ একপ্রকার চরম অভিযান চালায় প্রেমিকার গভীরে। প্রচন্ড গরম শলাকা প্রবেশ করতেই মহুয়ার চোখের মণি ঘুরে যায়। “উফফফ উফফফ আহহহহ আউউউ” করতে করতে নিজেকে নামিয়ে আনে ওর লিঙ্গের ওপরে। ঊরুসন্ধি চেপে দানার ভিমকায় কঠিন লিঙ্গ, পিচ্ছিল যোনির মধ্যে গ্রাস করে নেয় । দানার কোমরের দুইপাশে হাঁটু ভাঁজ দানার বুকে হাত পেতে সামনে ঝুঁকে বসে পড়ে মহুয়া।

দানার লিঙ্গে যোনির কামড় পড়তেই দাঁত পিষে বলে, “উফফফ সোনা কি ভিজে তুমি, কত মিষ্টি গো তোমার সব কিছু...”

চোখ নাক মুখ কুঁচকে মহুয়া মিহি কাম কাতর শীৎকার করে ওঠে, “উফফফ উফফফ ফেটে গেলাম গো সোনা, কি গরম তুমি... ইসসস এতো বড় কেন গো তুমি? একটু কেটে ছোট করতে পারো না... না না সোনা... উফফফ”

দানা হাসবে না কাঁদবে ভেবে পায়না, “একটু সোজা হয়ে বসো, দেখবে একদম ভেতরে ঢুকে যাবে।”

মহুয়া কঁকিয়ে ওঠে, “আর কিছু বাকি নেই... এরপরে আমি মরে যাবো...”

দুই হাতে মহুয়ার কোমর পেঁচিয়ে ধরে দানা নিচের থেকে চরম চাপ দেয়। মহুয়ার মুখ ফুলে ওঠে, আমূল লিঙ্গ গেঁথে যায় কোমল শিক্ত যোনি অভ্যন্তরে। কিছুক্ষণ ওইভাবে বসে লিঙ্গের উত্তাপ কঠিনতা নিজের যোনির মধ্যে উপভোগ করে মহুয়া। এইভাবে বসে থাকতে বড় সুখ, দুই শরীর সবসময়ের জন্য একত্র হয়ে থাকতে পারবে, কেউ কাউকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবে না। ইসসস সত্যি যদি এমন কিছু একটা হতে পারতো তাহলে কত ভালো হতো। মহুয়ার মন নেচে ওঠে। সেই সাথে দানার প্রশস্ত ছাতি খিমচে ধরে ধীরে ধীরে কোমর ঘুরিয়ে তীব্র কামুক ভাবে লিঙ্গ মন্থনে রত হয়। ঊরুসন্ধি চেপে মাঝে মাঝে আগুপিছু করে, মাঝে মাঝে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কোমর নাচায়। দানা ওর কোমর পেঁচিয়ে ধরে, মহুয়ার কামুক মন্থনের সাথে তাল মিলিয়ে নিচের থেকে লিঙ্গ চেপে ধরে।

ঐকান্তিক ভাবে যোনি মন্থন করতে করতে দানা ওকে বলে, “তোমাকে আজকে ভীষণ ভাবে আদর করবো সোনা।”

মহুয়া ঠোঁট গোল করে, উষ্ণ শ্বাস বইয়ে বলে, “হ্যাঁ সোনা করো করো করো... উফফ সোনা পাগল হয়ে যাচ্ছি... লোহার রডের মতন গরম আর শক্ত হয়ে গেছো তুমি সোনা... আমাকে পিষে দাও সোনা...”

দানার আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুল পেঁচিয়ে ধরে মহুয়া। শরীরে নাচন তীব্র গতি নেয়। কোমর উঠিয়ে নামিয়ে প্রচন্ড জোরে নিজের যোনি গুহা মথিত করে দেয়। নিচের ঠোঁট দাঁতে চেপে ধরে, নাকের পাটা ফুলে যায়, চোখ মুখ লাল হয়ে যায়, সারা চেহারায় এক অনাবিল সুখের আলোক ছটা। কামোত্তেজনার জোয়ারে ভাসে দুই কামার্ত শরীর। বেশিক্ষণ এইভাবে করতে পারে না মহুয়া। ওর শরীর কিছু পরেই ছেড়ে দেয়। দানার দেহের ওপরে লুটিয়ে যোনির মধ্যে লিঙ্গ চেপে থেমে যায়। মহুয়ার দুই পাছা খামচে ধরে, এইবারে দানা নিচের থেকে কোমর উঁচিয়ে ওর শিক্ত পিচ্ছিল যোনি প্রচন্ড বেগে মন্থন করে চলে। ভীষণ সুন্দরী লাস্যময়ী অপ্সরা, এক কামুকী অসুরের হাতে বাঁধা পড়ে কাম সুখের জোয়ারে নিজেকে ভাসিয়ে দেয়। বারেবারে মহুয়ার আঁটো যোনির পেশি দানার ভিমকায় গরম লিঙ্গ কামড়ে ধরে। প্রচন্ড জোরে মন্থনের ফলে, দানার লিঙ্গের ডগা সোজা যোনির শেষ প্রান্তে ধাক্কা মারে।

মহুয়া দাঁতে দাঁত পিষে বলে, “উফফ উফফফ আউচ্চচ সোনা একটু ধীরে করো সোনা... না না জোরে... জোরে... উফফ মা গো... আর না সোনা একটু দাঁড়াও...”

দানা ওর আর্জি নিবেদন উপেক্ষা করে চরম গতিতে মথিত করে দেয় শিক্ত নারী গহ্বর। মহুয়া ওর দেহের ওপরে শুয়ে নিজেকে চেপে ধরে। দানার বুকের ওপরে শুয়ে থাকতে এক অন্য আনন্দ, ওই প্রশস্ত ছাতির মাঝে লুকিয়ে থাকার সুখ আলাদা। নরম স্তন জোড়া সমতল হয়ে গলে মিশে যায় দানার গরম ছাতির পেশির সাথে।

মহুয়া ফিসফিস করে প্রেমিকের কানে বলে, “জিত আমার আর শক্তি নেই সোনা... একটু শুইয়ে দাও প্লিস।”

মন্থন থামিয়ে ওর ঘর্মাক্ত পিঠে আর পাছায় আদর করে হাত বুলিয়ে বলে, “মহারানীর আজ্ঞা না পালন করে শান্তি আছে কি সোনা?”

মহুয়াকে আস্টেপিস্টে দুই হাতে বেঁধে বিছানার ওপরে উঠে বসে দানা। দানার গলা জড়িয়ে, ঊরুসন্ধির সাথে ঊরুসন্ধি মিশিয়ে কোলে বসে থাকে মহুয়া। চোখে চোখে কথা বলে দুইজনে। “কি করছো?” “একটু অপেক্ষা করো না সোনা।” “ইসসস গেঁথে গেল এইবারে” “আর পারি না মেয়ের দুষ্টুমি দেখে” হেসে ফেলে দুইজনেই।

বিছানার শেষ প্রান্তে পা ঝুলিয়ে বসে দানা, কোলে মহুয়া, আমূল লিঙ্গ, শিক্ত পিচ্ছিল যোনি মধ্যে গাঁথা। হাঁটুর নীচ থেকে হাত গলিয়ে মহুয়ার নরম পাছা জোড়া হাতের থাবার মধ্যে পিষে ধরে দানা। কামার্ত মহুয়া চোখের ভাষায় দানার ক্রিয়াকলাপ উপভোগ করতে করতে প্রশ্ন করে চলে। নতুন ভঙ্গিমায় কামক্রীড়া করতে চলেছে বুঝতে পেরে শরীরের সব ধমনী শিউরে ওঠে। দানার কর্কশ দাড়ি ভরা গালে নিজের কোমল গাল ঘষে দেয়, সারা চেহারায় রেশমি চুলের আবরনে ঢেকে দানার মুখ লুকিয়ে ফেলে। দানার ওর গভীর কাজল কালো চোখের মণি মাঝে তাকিয়ে নিজের ছবি দেখে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আগুনের স্ফুলিঙ্গ নির্গত হয়। কামঘামে ভিজে ত্বকের সাথে ত্বক লেপটে যায়।

মহুয়া কামার্ত সুরে জিজ্ঞেস করে, “আর কতো পাগল করবে তুমি গো? তোমার ক্লান্তি নেই নাকি সোনা?”

দানা ওর মিষ্টি রসালো ঠোঁটে আলতো চুমু খেয়ে বলে, “বিকেলে থেকে ওইভাবে চোখের সামনে পাছা নাচালে কি আর ক্লান্তি থাকে সোনা? ওই পাছা ওই বুক দেখলে ক্লেদ ক্লান্তি সব কিছু ভুলে যাই আমি। সেই দুপুর থেকে মুখিয়ে আছি কখন একটু আদর করতে পারব।”

ওই কথা শুনে মহুয়া আরো বেশি জোরে নিজের যোনি দানার ভিমকায় লিঙ্গের সাথে ঘষে দেয়। ঘর ভরে ওঠে ওদের শিক্ত দেহের মিলিত শব্দে। কামার্ত মহুয়া কঁকিয়ে ওঠে, “উফফ সোনা ভীষণ ভালো লাগছে গো... উফফফ উফফ”

এতক্ষন ঊরুসন্ধির সাথে ঊরুসন্ধি মিশিয়ে দুইজনে মুখোমুখি বসে ছিলো। দুই পা দিয়েদানার কোমর পেঁচিয়ে ধরে মহুয়া। মহুয়ার পাছা খামচে কোল থেকে উঠিয়ে দেয় দানা, যার ফলে উত্তপ্ত কঠিন লিঙ্গ পিচ্ছিল আঁটো যোনি থেকে বেরিয়ে যায়, শুধু মাত্র ডগা যোনি পাপড়ি ছুঁয়ে থাকে। শুরু হয় দানার আর মহুয়ার, স্তনের সাথে ছাতি মিলিয়ে, ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিশিয়ে, ঊরুসন্ধির সাথে ঊরুসন্ধি ঘষে সঙ্গম। বেশ কিছুক্ষণ বসার ভঙ্গিমায় সঙ্গম সুখ উপভোগ করে মহুয়াকে কোলে তুলে দাঁড়িয়ে পড়ে দানা। মাধবী লতার মতন দানার গলা কোমল পেলব বাহু দিয়ে জড়িয়ে, দেহের সাথে লেপটে যায় মহুয়া।

শক্ত করে গলা জড়িয়ে হাঁসফাঁস করে ওঠে কামার্ত ললনা, “উফফফ সোনা একি পাগল তুমি গো আমি... নাআআ”

দানা ঘামিয়ে যায়, “উফ উফ হাঁফ উয়াফ” করতে করতে দাঁড়ানো অবস্থায় দুই পাছা খামচে ধরে ভিমকায় লিঙ্গের ওপরে মহুয়ার যোনি নাচিয়ে দেয়। প্রচন্ড কামসুখে পাগল হয়ে চেতনা শুন্য হয়ে যাবার শেষ প্রান্তে পৌঁছে যায় মহুয়া। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মহুয়ার শরীর কোলে তুলে সঙ্গমের পরে দানাও ক্লান্তি বোধ করে। যোনি আর লিঙ্গ মিলিত অবস্থায় মহুয়াকে বিছানায় শুইয়ে ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে পড়ে থাকে কিছুক্ষণ। মহুয়ার শরীর বিছানার শেষ সীমানায়, দানা ওর মেলে ধরা ঊরুর মাঝে দাঁড়িয়ে, ঊরুসন্ধির সাথে ঊরুসন্ধি মেশানো, ভিমকায় লিঙ্গ কামড়ে ধরে থাকে শিক্ত পিচ্ছিল যোনি। পরস্পরকে প্রগাড় বাহুপাশে বেঁধে দুইজনে কিছুক্ষণ নিথর হয়ে শুয়ে শরীরের শক্তি চঞ্চয় করে। এইভাবে ভিন্ন ভিন্ন ভঙ্গিমায় এতদিন কারুর সাথে সঙ্গমে মেতে ওঠেনি দানা, তবে প্রেমিকার সাথে ভালোবাসার সঙ্গম এক নতুন দিগন্তে নিয়ে যায়। এই মিলন কেউ শেষ করতে চায় না, এই মিলন যেন অনন্ত কালের জন্য চলে।

মহুয়ার পাছা ছেড়ে, পিঠের তলা দিয়ে হাত গলিয়ে ওর মাথা উঁচু করে ধরে দানা। ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে গভীর চুম্বন এঁকে দেয় প্রেমিকার কোমল সরস অধরে। মহুয়া ওর চুলের মুঠি ধরে চুম্বন গভীর করে নেয়, অন্য হাতের নখ দিয়ে দানার পিঠ খামচে ধরে। কোমরের দুইপাশে পেলব জঙ্ঘা পেঁচিয়ে কাছে টেনে ধরে। লিঙ্গ সঞ্চালন শুরু করতেই, মহুয়ার চোখ বুজে যায়, নখ বসে যায় দানার পিঠে। ধীর লয়ে দানা কঠিন গরম লিঙ্গ দিয়ে যোনি মন্থনে মেতে ওঠে। প্রত্যকে মন্থনের তালে তালে দানার ভারী শরীরের নিচে মহুয়ার কোমল কমনীয় নধর দেহ পল্লব দোল খেতে শুরু করে দেয়। প্রশস্ত ছাতির তলায়, নরম তুলতুলে স্তন যুগল সমতল হয়ে গলে যায়। দানার কপালের ঘাম নাক বেয়ে চুঁইয়ে মহুয়ার নাকের ওপর দিয়ে মুখের মধ্যে চলে যায়। প্রেমিকের নোনতা ঘামের স্বাদ মহুয়াকে চরম উত্তেজিত করে তোলে। মহুয়াকে চুমু খেতে খেতে লিঙ্গ সঞ্চালনের গতি বাড়িয়ে দেয় দানা। মহুয়ার দেহ বিছানার ওপরের দিকে চলে যায় সেই সাথে দানাও বিছানায় উঠে চরম বেগে সঙ্গমে মেতে ওঠে। মহুয়ার শরীর শেষ বারের মতন কেঁপে ওঠে, ধমনী শুকিয়ে যায়, চরম কামসুখে চিন্তা শক্তি লোপ পায়। বালিশ খানা খামচে ধরে মুখের মধ্যে চেপে ধরে একবার, একবার বিছানার চাদর খামচে ধরে। কাম সুখে পাগল হয়ে কি করবে ভেবে পায় না মহুয়া। ওর শরীরে আর কিছু নেই, ওর শরীর আর ওর নেই শুধু দানার জন্য জন্ম নিয়েছিল মহুয়া।

মহুয়া “আ আ আ” করে ওঠে, কামার্ত শীৎকার করে, “আআআ আর পারছি না সোনা এইবারে প্লিস ছেড়ে দাও... উফফফ না জোরে জোরে করো সোনা আমাকে চেপে ধরো গো...”

দানার অণ্ডকোষে বীর্যের ঝঞ্ঝা দেখা দেয়। ক্ষিপ্ত বেগে মন্থনে রত হয় দানা। ওর শরীরে পাশবিক শক্তি ভর করে আসে, তলপেট কুঁকড়ে যায়, ধমনী খুঁচ দিয়ে আসে। উত্তেজনার চরম শিখরে পৌঁছে যায় দুইজনে।

হাঁপাতে হাঁপাতে মহুয়াকে বলে, “সোনা সোনা সোনা... উফফফ কিছু হচ্ছে আমার...”

যোনির ভেতরে লিঙ্গের কাঁপুনি অনুভব করে মহুয়া বুঝতে পারে দানার বীর্য স্খলন আসন্ন। দুই হাতে ওকে জড়িয়ে ধরে মহুয়া, পায়ের সাথে পা পেঁচিয়ে নিজের শরীরের সাথে দানবীয় শরীরটা চেপে ধরে।

প্রগাড় দীর্ঘ এক ডাক ছাড়ে মহুয়া, “ভাসিয়ে দাও আমাকে সোনা... আআআ আআআআ”

মহুয়ার শিক্ত পিচ্ছিল যোনি কামড়ে ধরে দানার কঠিন গরম লিঙ্গ। চরম উত্তেজনার শেষ প্রান্তে এসে ক্ষণিকের জন্য দুইজনের শ্বাস রুদ্ধ হয়ে যায়। লিঙ্গ কাঁপিয়ে দানার বীর্য মহুয়ার যোনি গহ্বর ভাসিয়ে দেয়। দানার চুলের মুঠি ধরে, পিঠের ওপরে নখ বসিয়ে দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে মহুয়া। চরম সুখে প্রচন্ড জোরে কামড় বসিয়ে দেয় দানার ঠোঁটে। প্রাণপণ শক্তি ধরে প্রেমিকার কোমল দেহ পল্লব বিছানার সাথে মিশিয়ে দেয়। পরস্পরের হৃদস্পন্দন বুকের ওপরে অনুভব করতে পারে ওরা। অনেকক্ষণ ওই ভাবে এঁকে ওপরকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকার পরে, দানা মহুয়ার শরীর থেকে নেমে পাশে শুয়ে পড়ে। মহুয়া গুটিয়ে যায় দানার বাহু মাঝে। বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে নিথর হয়ে পড়ে থাকে। দীর্ঘ ভালোবাসার খেলা খেলে কারুর শরীরে কিছু আর বেঁচে নেই।

বেশ কিছুপরে পদ্ম পাপড়ির মতন চোখের পাতা মেলে প্রেম শিক্ত চোখে দানার দিকে তাকিয়ে বলে, “শুতে যাবে না?”

দানার চোখ খোলার মতন শক্তি বেঁচে নেই, কিন্তু ওই ঘরে রুহি একা ঘুমিয়ে। মৃদু হেসে মহুয়াকে বলে, “হ্যাঁ সোনা চলো।”

উলঙ্গ অবস্থায় মহুয়াকে কোলে তুলে শোয়ার ঘরে আসে দানা। কচি রুহি লেপ মুড়ি দিয়ে অঘোর নিদ্রায় আচ্ছন্ন। মহুয়াকে রুহির পাছে শুইয়ে দেয় দানা আর ওর পাশে ওকে জড়িয়ে নিজদের ঘর্মাক্ত দেহের ওপরে লেপ টেনে নেয়। রুহির গায়ে লেপ ঠিক করে, মাথায় হাত বুলিয়ে দানার দিকে ফিরে শোয়।

বুকের ওপরে মাথা রেখে চরম কামনা আর ভালোবাসা মাখানো খেলা শেষে দুজনে পরস্পরের সান্নিধ্য উপভোগ করে। মহুয়ার রেশমি চুলে আঙ্গুল ডুবিয়ে বিলি কেটে আদর করে দেয় দানা। মহুয়া ওর প্রশস্ত ছাতির ওপরে আঙ্গুল বুলিয়ে আদর করে। দানার বুকের ওপরে মাথা রেখে, ঘাড়ের কাছে আলতো করে নরম আঙ্গুল বুলিয়ে আদর করে দেয়। আগামী কাল আর কাক ভোরে উঠে দানার পালানো নেই, অনেকক্ষণ এই ভাবে ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে শুয়ে থাকতে পারবে। দানা ওর পিঠের ওপরে আদর করে নিজের সাথে চেপে ধরে থাকে। কাল সকালে প্রেমিকাকে ছেড়ে কোথাও যাওয়ার নেই, অনেকদিন পরে একটু ভালো ভাবে শান্তি করে ঘুমাতে পারবে দানা। সকালে উঠে কাজের মেয়ে চা বানিয়ে দেবে, মহুয়ার সাথে এই বিছানায় শুয়ে শুয়ে চা খাবে। ভোরের আলো বিশাল কাঁচের জানালা দিয়ে ওদের ঘরে এসে পড়বে। এই ভেবেই ওর দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। মহুয়া বেশ কিছু পরে মাথা তুলে দানার ঝাপসা চোখের দিকে ঝাপসা নয়নে তাকায়।

চোখের ইশারায় মহুয়াকে জিজ্ঞেস করে দানা, “কি দেখছো ওই ভাবে?”

নাকের ডগা লাল হয়ে ওঠে মহুয়ার, “তোমাকে দেখছি।”

দানার চোখের কোল উপচে আসে তাও হাসি টেনে ইয়ার্কি মেরে বলে, “আমি জন্তু নাকি যে ওইভাবে দেখছো?”

মিষ্টি হেসে ওকে বলে, “কিছু না সোনা, এইযে তুমি আমাকে গভীর ভাবে জড়িয়ে শুয়ে আছো সেটা খুব ভালো লাগছে।” প্রতিবারের সঙ্গম শেষে দুইজনে এইভাবে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকে বটে তবে বুকের মধ্যে সময়ের কাঁটা ঘুরতো সেই সময়ে। এইবারে সেই বাধা আর নেই, পালিয়ে যাওয়া নেই।

মহুয়াকে নিবিড় আলিঙ্গনে বেঁধে বলে, “এই্তো আমি আছি।”

দুইজনেই নির্বাক হয়ে পরস্পরের শরীরের উত্তাপ গায়ে মাখিয়ে নেয়। ক্লান্তিতে চোখ জুড়িয়ে এসেছিলো অনেক আগে কিন্তু এইভাবে নিবিড় আলিঙ্গন পাশে বাঁধা পড়তেই চোখের ঘুম চলে যায়।

অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকার পরে মহুয়াকে জিজ্ঞেস করে, “কি গো শুয়ে পড়লে নাকি?”

মহুয়া মিহি কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “না। কি হয়েছে গো?”

মহুয়াকে একটু উত্যক্ত করার মনোবৃত্তি জাগে দানার মনে, “কেমন লাগলো ওই নতুন ভঙ্গিমা?”

কিঞ্চিত শিউরে ওঠে মহুয়ার কোমল শরীর, “ইসসস কি সব শুরু করেছে। তোমার ওইটা আবার জেগে গেছে মনে হচ্ছে? একটু আগে আমাকে ফুঁড়ে দিয়েছিলে একেবারে। বাপরে বাপ কি প্রচন্ড জোরে গো...” বলতে গিয়েই লজ্জায় কুঁকড়ে যায় মহুয়া।

দানা কম যায় না, প্রেমিকার লাজুক হাসি শুনে খেপিয়ে তোলে, “উফফফ তুমি যে নিচের থেকে কোমর উঁচিয়ে উঁচিয়ে খাবি খাচ্ছিলে, তার বেলায় কিছু না তাই না।”

দানার তলপেটে একটু মেরে বলে, “আগে ওইটা শান্ত করো। একটু হলে আমাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছিলে।”

মহুয়াকে কষে জড়িয়ে ধরে আদর করে বলে, “রোজ দিন কি নতুন পাও নাকি যে আজকে এফোঁড় ওফোঁড় কথা বলছো?”

দানার পেটের ওপরে আলতো নখের আঁচর কেটে ইয়ার্কি মেরে বলে, “আমি কি জানি বাবা। হয়ত রোজ দিন বড় বড় লাগিয়ে আনো, আমি কি আর দেখতে গেছি না মাপতে গেছি।”

মহুয়ার মাথা বুকে চেপে বলে, “উফফফ, যা কামড় দিচ্ছিলে না সোনা, মনে হচ্ছিল কেটে বেরিয়ে যাবে।”

দানার বুকে আলতো চাঁটি, “উফফফ মা গো... প্রচন্ড আনন্দ পেয়েছি আজকে জানো। মেয়ে পাশে না থাকলে ভেতরেই রেখে দিতাম গো।”

মহুয়াকে আদর করে পিষে ধরে বলে, “পাপড়ি তোমাকে না, বুকের সাথে মিশিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।”

গভীর ভাবে দানাকে জড়িয়ে বলে, “তোমাকে কাছে পেয়ে এক সম্পূর্ণ নারীর মান মর্যাদা আত্মসন্মান সব কিছু পেয়েছি।”

লাস্যময়ী সুন্দরী প্রেমিকাকে বুকে জড়িয়ে দানা কানেকানে জিজ্ঞেস করে, “পাপড়ি একটা কথা বলতে চাই।”

লোমশ বুকের ওপরে নরম গাল ঘষে বলে, “কি বলো না।”

দানার দম বন্ধ হয়ে আসে, ভালো ভাবেই জানে মহুয়ার প্রতিক্রিয়া কি হবে তাও ওই উক্তি আজ পর্যন্ত মুখে আনেনি, শুধু চোখে চোখেই মুক ভাষা হয়ে থেকে গেছে এতদিন।

শেষ পর্যন্ত মহুয়াকে হৃদয়ের ভাষা জানিয়ে দেয় দানা, “আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই পাপড়ি।”

তার উত্তরে মহুয়া ওর মাথা টেনে ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দেয়। মিষ্টি মধুর চুম্বনে কামনার আগুন নেই, শুধু আছে অনন্ত ভালোবাসার শীতল ছোঁয়া। মহুয়ার চোখের কোল বেয়ে একফোঁটা আনন্দশ্রু দানার মুখমণ্ডল সিঞ্চন করে দেয়।

********** পর্ব বারো সমাপ্ত **********
 
পর্ব তেরো – চৌষট্টি ছক (#1-91)

ঘুম থেকে উঠতে সেদিন বেশ দেরি হয়ে যায়। অনেকদিন পরে নরম বিছানা আর প্রেমিকার ছোঁয়ায় দানার চোখ সকালে আর খুলতেই চায় না। গালের ওপরে নরম একটা চুম্বনের পরশে ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখ খুলে দেখে রুহি কচি কচি দুই হাতে ওর গলা জড়িয়ে কর্কশ গালে নরম ঠোঁটের চুমু এঁকে দিয়েছে।

রুহি আদো আদো কণ্ঠে আবদার করে, “ডাডা অত না, কেল্বে না?”

দানা ওকে জড়িয়ে ধরে কাতুকুতু দিয়ে বলে, “হ্যাঁ মা, খেলবো। একটু চা খাই তারপরে।”

খাবার টেবিলে বসে সকালের চা জল খাবারের সময়ে মহুয়ার সাথে আগামী দিনের আলোচনা পরামর্শ করে দানা।

মহুয়া ওকে জিজ্ঞেস করে, “আজকের প্লান প্রোগ্রাম (পরিকল্পনা) কি?”

দানা একটু ভেবে বলে, “ভাবছি একবার মহেন্দ্র বাবুর কাছে যাবো। ওনার চেনাজানা একজন প্রমোটার আছেন তাঁর সাথে দেখা করবো আর পরামর্শ নেবো। তারপরে দেখি একবার বাপ্পা নস্করের কাছে যাবো। তুমি কি করছো আজকে?”

মহুয়া খেতে খেতে বলে, “কেনাকাটা করা। একটু পরেই রুহিকে নিয়ে বেরিয়ে যাবো। ওই লুঙ্গি টুঙ্গি পরা ছাড়ো, আর দেখি এইবারে তোমার স্টাডিটা সাজাতে হবে।”

দানা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “স্টাডি নিয়ে আমি কি করবো?”

মহুয়া হেসে বলে, “সুযোগ ছিলো না বলে দশ বারো ক্লাস পর্যন্ত পড়াশুনা করেছি, কিন্তু পড়াশুনা করার ইচ্ছে ছিলো তাই না?” দানা মাথা দোলায়, “হ্যাঁ” মহুয়া বলে, “তাহলে, স্টাডি তোমার অফিস হবে।”

দানা ওর কাঁধে আলতো ধাক্কা মেরে বলে, “পারলে একটা ছোট বার বানিয়ে দিও।”

মহুয়া চোখ পাকিয়ে দানার দিকে তাকায়, “বাড়িতে মদ একদম চলবে না। রুহি দেখতে পেলে কি হবে বলতো? আজকে তুমি ওকে ভুলিয়ে বলবে কোল্ড ড্রিঙ্কস খাচ্ছো। একটু বড় হলে বলবে, ডাডা কোল্ড ড্রিঙ্কস খায় আমিও খাব। তখন কি হবে?”

দানা মাথা চুলকিয়ে ক্ষমা ভিক্ষে করে, “না না একদম নয়, অন্তত ওর সামনে একদম খাবো না।”

মহুয়া ওকে প্রশ্ন করে, “বারমুডা না পায়জামা, কি কিনবো তোমার জন্য?”

দানা ওর কানেকানে হেসে বলে, “আরে সোনা, লুঙ্গিতে বেশ হাওয়া খেলে। তোমাকে দেখলেই পেন্ডুলাম নড়তে শুরু করে, লুঙ্গি পরলে খুলতে সুবিধা, হাওয়ায় ঠাণ্ডা হতেও সুবিধা।”

মহুয়া রেগে যায়, “সকাল সকাল উলটোপাল্টা কথাবার্তা শুরু কোরোনা তো। সবসময়ে শুনতে ভালো লাগে না বুঝলে। আর আমি যা বলবো তুমি তাই করবে।”

দানা মাথা নোয়ায়, “যে আজ্ঞে। আচ্ছা আমি কেষ্টকে বলে দিচ্ছি, ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসবে।”

মহুয়া ওকে মানা করে দেয়, “না না, কেষ্টকে নয়। ওর গাড়িতে চাপলে আবার ভাড়া নিতে চাইবে না।”

দানা হেসে ফেলে, “আচ্ছা বাবা, তবে মনা আর পিন্টুকে সঙ্গে নিয়ে যেও।”

মহুয়া জানায়, মনা আর পিন্টুকে সাথে নিয়েই কেনাকাটা করতে যাবে। দানার জন্য অনেক কিছু কেনার আছে। একবার ব্যাঙ্কে যেতে হবে, টাকা তুলতে তারপরে মধ্যমহানগরে অথবা দক্ষিণ মহানগরে চলে যাবে।

এইবারে ওদের প্রস্তুতির শুরু, খুব সন্তর্পণে পা ফেলে এগোতে হবে, মেপে মেপে চাল খেলতে হবে। চারপাশে মাকড়শার জাল, কে কার সাথে জড়িত সেটা একটু একটু পরিস্কার হয়েছে। কাকে কার বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে হবে তার জন্য সুচতুর পরিকল্পনা করতে হবে। যতটা পারা যায় এদের দুর্বল নাড়ি জানতে হবে। কুয়াশাচ্ছন্ন হয়েই একের পর এক আঘাত করতে হবে দানাকে। সবাই যে এক সুতোয় বাঁধা, শুধুমাত্র নয়নাকে পরাস্ত করলে চলবে না। মনা আর পিন্টুকে ভালো করে বুঝিয়ে বলে ওর বাড়ির দিকে নজর রাখার জন্য। মনা বাড়ির মধ্যে বসে থাকে আর পিন্টু নিচে, আসতে যেতে সবার ওপরে কড়া নজর। একটু কিছু সন্দেহ হলেই সেই লোকের পিছু নেয়, পারলে গায়ে পড়ে গল্প করে জিজ্ঞাসাবাদ সারে।

সকালেই দানা, বিল্ডার প্রমোটারি ব্যাবসা সংক্রান্ত আলোচনা আর পরামর্শ নেওয়ার জন্য মহেন্দ্র বাবুর কাছে চলে যায়। মহেন্দ্র বাবু দানার পরিকল্পনা শুনে বিস্মিতের সাথে খুশি হন। এতো টাকা একসাথে নিয়ে ব্যাবসায় নামতে মানা করেন। কিন্তু দানার লক্ষ্য বাপ্পা নস্করের সুনজরে আসার আর সেই সাথে নয়নাকে ব্যাবহার করে বিমান চন্দের কাছে যাওয়ার। বিমান চন্দ মৈনাকের খুনি হতেও পারে, সঙ্গীতার চোখের জলের প্রতিশোধ চাই।

সব শুনে মহেন্দ্র বাবু ওকে বলেন, “খুব মেপে চলিস। শঙ্কর আর রামিজ সব সময়ে তোর সাথে থাকবে। বাড়ির কি খবর, মহুয়া কি বলছে?” গত রাতেই শঙ্করের মুখে মহুয়া আর রুহির সম্বন্ধে শুনে মহেন্দ্র বাবু খুব খুশি। দানা একটু লজ্জায় পড়ে যায়। মহেন্দ্র বাবু ওর পিঠ থপথপিয়ে বলেন, “শেষ পর্যন্ত একটা কাজের কাজ করেছিস তুই। এতে লজ্জার কি আছে রে? ভালো কাজ করেছিস বুক ফুলিয়ে চল। এক নর পিশাচের হাত থেকে এক অবলা নারীকে মুক্তি দিয়েছিস। এক পিতৃ হারা কচি শিশু, পিতার স্নেহ পাবে। তোর নাম আজকে সত্যি সার্থক, বিশ্ব জয়ে বেরিয়ে পড়।”

শঙ্কর আর রামিজ দুইজনেই দানার চেয়ে অনেক বড়, তাই ওদের সঙ্গে নিতে একটু দ্বিধা বোধ করে দানা। দানা জানিয়ে দেয়, দরকার পড়লে ডেকে নেবে, এমনিতে দুটো পিস্তল সবসময়ে কোমরে থাকে। জামা গুঁজে পরে না দানা, কেননা পিস্তল দুটো কোমরে গোঁজা।

সঙ্গীতার সাথে দেখা হয়। একটু সুস্থ হয়ে উঠেছে তবে এখন পর্যন্ত ঠিক ভাবে হাঁটতে পারছে না। ওর বাবা ওকে ফ্রান্সে পাঠানোর ব্যাবস্থা শুরু করে দিয়েছেন। সঙ্গীতা জানায়, ওর মাসতুতো বোন, অপরাজিতা, সে আর্কিটেকচার নিয়ে পড়াশুনা করছে। এইখানে থাকলে ওদের সাহায্য করতে পারতো। তবে একবার অপরাজিতাকে বলে দেখবে, যদি ওর চেনাজানা কেউ এইখানে থাকে তাহলে দানার কাজে সাহায্য করতে পারবে।

সেখান থেকে দানাকে নিয়ে মহেন্দ্র বাবু তাঁর পরিচিত প্রমোটার, মহেশ সরকারের কাছে নিয়ে যান। সেখানে অনেকক্ষণ এই ব্যাবসা সংক্রান্ত আলোচনা চলে। মহেশ বাবু দানাকে সব থেকে আগে একটা কোম্পানির নাম ঠিক করতে বলেন, তারপরে সেই কোম্পানির রেজিস্ট্রেসান, ট্যাক্স জমা, লেজার বুক ইত্যাদি তৈরি করার পরামর্শ দেন। মহেশ বাবু সবরকমের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয় দানাকে।

তারপরে দানা, বাপ্পা নস্করের কাছে গিয়ে জানায় ও প্রমোটারি ব্যাবসায় নামতে চায়। বাপ্পা নস্কর প্রথমে অবাক হয়ে যায়, কিন্তু দানা যখন ওর সামনে পঞ্চাশ লাখ টাকা ভর্তি ব্যাগ রাখে তখন বাপ্পা নস্কর আশ্চর্য চকিত হয়ে যায়, জানতে চায় কোথা থেকে এতো টাকা পেয়েছে। বাপ্পা নস্কর জানতে চায়, হটাত এই ব্যাবসায় কেন নামতে চায়। সুচতুর দানা, উত্তরে বলে এই এলাকায় প্রচুর অর্ধ নির্মিত ফ্লাট আবাসন রয়েছে। যাদের কাছ থেকে বাপ্পা নস্কর চাঁদা আদায় করতে পারছে না। বিরোধী দলের নেতা, বিমান চন্দের প্রিয় বন্ধু মোহন খৈতানের বেশ কিছু বড় প্রকল্প ওর দৌরাত্মের ফলে অর্ধ সমাপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। দানার ইচ্ছে সেই সব অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প গুলো কম দামে কিনে কাজ শুরু করতে। মোহন খৈতানের হাত থেকে কাজ নিতে পারলে বিমান চন্দ দমে যাবে, ওর হাতে আসন্ন নির্বাচনের জন্য টাকা আসবে না। দানার হাতে টাকা এলে বাপ্পা নস্করকে খুশি করে দেবে। আগাম পঞ্চাশ লাখ টাকা পেয়ে বাপ্পা নস্কর যারপরনাই আনন্দিত। দানার বুদ্ধি তারিফ করে বাপ্পা নস্কর, আসলে দানার পরিকল্পনা এর চাইতেও অনেক গভীর। নিজের পকেট থেকে টাকা দিতে দানার গায়ে খুব লাগে কিন্তু নিরুপায়। তবে এই পঞ্চাশ লাখ টাকা সুদে আসলে বাপ্পা নস্করের কাছ থেকে আদায় করবে একদিন। বাপ্পা নস্কর সঙ্গে সঙ্গে ইন্দ্রনীলকে আদেশ দেয় ওই অর্ধ নির্মিত ফ্লাট আবাসনের মালিকদের সাথে দানার সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে।

মহুয়া ওইদিকে বসে নেই, রুহিকে কোলে নিয়েই কাজে নেমে পড়ে। সব থেকে আগে একটা গাড়ি কিনতে হবে। দানা আর মহুয়া একটা কালো বি এম ডাবলু কেনে, দামী বিদেশী গাড়ি শক্তির সাথে সাথে বিত্তের পরিচয়। সামনের মানুষ দানার পোশাক পরিচ্ছদ, দানার গাড়ি দেখেই সর্ব প্রথম যাচাই করবে। এতদিন এম্বাসেডর ট্যাক্সি চালক দানা কোনোদিন স্বপ্নে ভাবেনি নিজের একটা কালো বি এম ডাবলু গাড়ি হবে। হাতে চাবি পেয়ে, মহুয়াকে জড়িয়ে ধরে প্রায় কেঁদে ফেলে।

গাড়ির পরে সব থেকে জরুরি টাকা। মহুয়ার নামে যে একশো কোটি টাকার শেয়ার আর বন্ড ছিলো সেইগুলো বিক্রি করে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা হাতে আসে। অত টাকা পাবে সেটা আশাতীত তাই দুইজনে অবাক হয়ে যায়। নতুন কোম্পানির নাম, মেয়ের নামেই রাখা হয়, “রুহি বিল্ডারস প্রাইভেট লিমিটেড।” মহেশ বাবুর তদারকিতে কয়েকদিনের মধ্যে অফিসে লোকজন নিযুক্ত করা হয়। ছোট অফিস, দশ জনের মতন ছেলে মেয়ে নিয়ে কাজ শুরু করা হয়। মহুয়ার কাজ অফিসে গিয়ে বসা, কিছু না হোক মালিক চোখের সামনে থাকলে কাজ সবাই করে না হলে কেউ কাজ করে না। মহুয়া চায় না অফিসের অবস্থা “চাষা গেলো ঘর লাঙ্গল তুলে ধর” এর মতন হোক। রুহি ছোট ছোট পায়ে সারা অফিস ঘুরে সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

নিজের গাড়ি নিজেই চালায় দানা। আগে হলুদ রঙের ভাড়ার ট্যাক্সির স্টিয়ারিং হাতে থাকতো এখন নিজের কালো বি এম ডাবলুর স্টিয়ারিং। পোশাকে তেমন কিছু ফের বদল হয়নি, যদিও মহুয়ার ইচ্ছে দানা সুট পরুক কিন্তু সেটা দানার একদম ইচ্ছে নয়। একটা সামান্য ট্যাক্সি চালক কি আর সুট পরে? মহুয়া যত ওকে বুঝাতে চায় যে দানা আর সেই ট্যাক্সি চালক নয়। জেদি মহুয়া ওর জন্যে বেশ কয়েকটা সুট বানাতে দেয়।

সকালে রুহি আর মহুয়াকে অফিসে ছেড়ে দিয়ে মহেশ বাবুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে দানা। মহেশ বাবু ওকে নিয়ে নিজের প্রোজেক্ট গুলো দেখান, কেমন ভাবে কাজ হয়, কার সাথে কি ভাবে কথা বলতে হয়। ভিতে বেশি সময় লাগে, একবার ভিত গড়ে উঠলে বাকি বিল্ডিং তাড়াতাড়ি নির্মাণ করা যায়। দানা মন দিয়ে মহেশ বাবুর কাছ থেকে এই ব্যাবসা সংক্রান্ত সব কিছু শিখে নেওয়ার চেষ্টা করে।

এখন এলাকার কোন বিল্ডারদের সাথে দেখা করা হয়নি দানার। বাপ্পা নস্করের সেক্রেটারি, ইন্দ্রনীল ওদের সাথে কথাবার্তা বলেছে কিন্তু কেউই ওদের জমি ওদের অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প দানাকে বেচতে নারাজ। একদিন দানা নিজেই মহেশ বাবু আর ইন্দ্রনীলকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার এক নামকরা বিল্ডার, সুব্রতর অফিসে যায়। অফিসের সামনে কালো বি এম ডাবলু দাঁড়াতেই সুব্রত অফিস থেকে বেরিয়ে আসে। দানাকে আগে এই এলাকার উন্নয়নের জন্য দেখেছে তবে বিল্ডার হিসাবে পরিচয় তখন ছিলো না। দানার সঙ্গে ইন্দ্রনীলকে সঙ্গে দেখে বুঝতে বাকি থাকে না যে দানা বাপ্পা নস্করের খাস লোক।

দানা অফিসে ঢুকে এদিক ওদিক তাকিয়ে সুব্রতকে জিজ্ঞেস করে, “আপনার আজকাল কাজ কেমন চলছে?”

সুব্রত দানাকে বসতে বলে, “দেখুন আমি জানি আপনি কেন এখানে এসেছেন।”

দানা সোজাসুজি সুব্রতকে প্রশ্ন করে, “কয় মাস হয়ে গেল আপনার কাজ বন্ধ, এক বছর হয়ে গেছে তাই না?” অগত্যা সুব্রত মাথা দোলায়, “হ্যাঁ।”

দানা জিজ্ঞেস করে, “কত টাকা লোকসান হয়েছে আপনার?”

সুব্রত বাঁকা হেসে বলে, “তাতে আপনার কি দরকার?”

ইন্দ্রনীল ওকে বলে, “দেখুন মিস্টার সুব্রত, আমরা এইবারে চাঁদা অথবা প্রকল্পের অংশীদার হতে আসিনি। আপনার যত টাকা খরচ হয়েছে ঠিক সেই দামে দানা আপনার ওই অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প কিনতে চায়।”

সুব্রত একটু ভেবে বলে, “এই এক বছরে অনেক টাকা লোকসান হয়ে গেছে। জিনিস পত্রের দাম বেড়ে গেছে। দেখুন আমি ব্যাবসায় নেমেছি কিন্তু বাপ্পা নস্কর যদি কুড়ি পঁচিশ শতাংশ চায় তাহলে কি করে কাজ করি বলুন?”

ইন্দ্রনীল কিছু বলতে গেলে দানা ওকে থামিয়ে নিজে উত্তর দেয়, “মিস্টার সুব্রত, আমি জানি আপনি ব্যাবসা করতে এসেছেন। আপনার সামনে কয়েকটা বিকল্প রাখতে পারি। প্রথম বিকল্প, আমি আর আপনি মিলে মিশে কাজ করি। আপনার চল্লিশ শতাংশ থাকুক আমার ষাট তাহলে আপনিও টাকা কামাবেন। দ্বিতীয় বিকল্প, গায়ের জোরে আমি আপনার কাছ থেকে কম দামে প্রকল্প কিনে নেব আর তৃতীয়, আপনি এইভাবে বসে থাকুন আর পাঁচ বছরের জন্য। কেননা এর পরের নির্বাচনে আবার বাপ্পা নস্কর এই আসনে জিতবে এবং আমি জেতাব।”

পরের নির্বাচনে দানা বাপ্পা নস্করকে সমর্থন করবে জেনে ইন্দ্রনীল সন্তুষ্ট। গায়ের জোরে কিনে নিতে পারে দানা সেটা ইন্দ্রনীলকে সাথে দেখেই বুঝে গেছিল সুব্রত। সুব্রতর কপালে চিন্তার রেখা দেখা দেয়। অনেকক্ষণ ভাবনাচিন্তা করে সুব্রত দানাকে বলে, “জমি কিনতে এক কোটি টাকা লেগেছে আর এখন পর্যন্ত আরো এক কোটি জলে গেছে।”

এইবারে মহেশ বাবু মুখ খোলেন, সুব্রতকে বলেন, “আগে সাইট দেখব তারপরে কাগজ পত্র দেখব। আপনি যেমন একটা দাম বলেছেন তেমনি আমরাও হিসাব নিরীক্ষা করে তারপরে মুল্য ধার্য করব।”

সুব্রত শেষ পর্যন্ত বলেন, “না মানে কয়েকদিন একটু সময় চাই। তবে আপনার প্রথম বিকল্প আমার বেশ লেগেছে।”

দানাও সেটা চায়, যদিও হাতে টাকা আছে তাও ওই অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্পগুলো অংশীদারি হিসাবে কাজ করতে চায়। তাতে মাথা ব্যাথা বেশ কম, আগের মালিকের জানাশোনা লোকের দ্বারা কাজ করানো যাবে। নতুন লোক খোঁজার বালাই নেই। হাতে টাকা থাকলে বেশি প্রকল্পে কাজ করতে পারবে তাড়াতাড়ি টাকা আয় হবে।

কয়েকদিন পরে সুব্রতর সাথে সাথে আরও অনেকজন বিল্ডার প্রমোটার ওর সাথে দেখা করে। সবাইকে এক কথা বলে দানা, সবাই ওর কথায় সম্মতি জানায়। সেদিন ইন্দ্রনীল ছাড়াই দানা আর মহেশ বাবু ওদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করেন।

সেদিন দানা ওদের জিজ্ঞেস করে, “আপনাদের কি কারনে বাপ্পা নস্কর বাধা দিয়েছিল বলতে পারেন?” সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করে, দানা বাপ্পা নস্করের লোক ওর সামনে বাপ্পা নস্করের বিরুদ্ধে বলা উচিত হবে কি হবে না সেই নিয়ে ধন্দে পড়ে যায়। দানা ওদের অভয় দিয়ে বলে, “বলুন না, সমস্যাটা কি হয়েছিল।”

সবার হয়ে সুব্রত উত্তর দেয়, “আমরা বেশির ভাগ আগে বিমান চন্দের রাজনৈতিক দল করতাম। গত বারে বাপ্পা নস্কর জেতার পরে ওকেও আমরা টাকা দেব বলেছিলাম। কিন্তু বাপ্পা নস্কর আমাদের কাছ থেকে কুড়ি থেকে পঁচিশ শতাংশ চেয়ে বসে। আমরা ছোট ছোট প্রকল্পে হাত দেই, কুড়ি পঁচিশ শতাংশ যদি একা ওকেই দেই তাহলে বাকিদের দিয়ে আমাদের কি বাঁচবে বলুন?”

বাপ্পা নস্করের দৌরাত্মের বিষয়ে দানা অবগত। দানা মাথা দোলায়, “সত্যি কথা।” একটু থেমে জিজ্ঞেস করে, “তাহলে আপনারা আমার প্রথম বিকল্প পথেই যেতে চান।” সবাই সম্মতি দেয়। দানা ওদের সাথে হাত মিলিয়ে জানিয়ে দেয় কাগজ পত্র তৈরি করতে। একবার কাগজ পত্র হাতে চলে এলে কাজ শুরু করতে পারে সবাই আর সেই সাথে দানাও ওদের সেই মতন টাকা দেবে।
 
পর্ব তেরো – চৌষট্টি ছক (#2-92)

সঙ্গীতাকে ফ্রান্সে পাঠিয়ে দিয়েছে ওর বাবা মা। ইন্দ্রাণী শহর ছেড়ে নতুন জায়গায় চলে গেছে। যাওয়ার আগে ইন্দ্রাণী ওদের সাথে দেখা করে যায়নি, সেই নিয়ে দানা একটু মনঃক্ষুণ্ণ হলেও মহুয়া বুঝতে পারে কি কারনে ইন্দ্রাণী আর ওদের সাথে দেখা করেনি। ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়, মহুয়ার মনের অবস্থা ঠিক সেই রকম ছিলো। কাজের চাপে কয়েকদিনের মধ্যেই ইন্দ্রাণীর কথা ভুলে যায় দানা আর মহুয়া স্বস্তির শ্বাস নেয়।

সঙ্গীতা ফ্রান্সে পৌঁছে দানার কাছে তথ্য প্রমান রেকর্ড করা চিপ পাঠিয়ে দেয়। সেই চিপ থেকে দানা, বাপ্পা নস্করের বিরুদ্ধে প্রচুর কারচুপির প্রমান পায়। সঙ্গীতা বেশ ভালো তদন্ত করেছিল, কবে কোন আমলাকে কত টাকা দিয়েছিল, কোন বিল্ডারকে খুন করেছিল, কোন কোন সরকারী কাগজে হেরফের করেছিল সবার নাম ধাম, তারিখ ইত্যাদি সব কিছু ওই চিপ থেকে উদ্ধার করে।

নাসির আর আক্রাম খবর দেয় যে নয়না আবার কাজে যাওয়া শুরু করে দিয়েছে। নয়নার পেছনে ছায়ার মতন লেগে থাকতে নির্দেশ দেয় দানা। ওর নতুন ছবির কাজ পুরো দমে চলছে। কোনদিন খুব ভোরে শুটিঙে যায়, কোনোদিন সারাদিন স্টুডিওতে, তবে সমুদ্র আর সুমিতা ওর পাশ ছাড়ে না আর। নতুন ড্রাইভার রেখেছে তবে সে শুধু ওর গাড়ি চালায় ব্যাস। একজন আলাদা করে দেহ রক্ষীও নিযুক্ত করা হয়েছে। ভীষণ ধূর্ত নয়না হয়তো টের পেয়ে গেছে যে দানা ওর ওপরে নজর রেখে চলেছে তাই বিমানের সাথে দেখা সাক্ষাৎ আর বাপ্পা নস্করের সাথে দেখা সাক্ষাৎ কমিয়ে দিয়েছে।

নিজের কাজে নেমে দানা বেশ ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। বিকেলে অফিস থেকে মহুয়াকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আবার কোথায় যেন নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। কোনোদিন জিজ্ঞেস করলে সদুত্তর পায় মহুয়া কোনোদিন পায় না। যেদিন পায়না সেদিন রাতে ফিরলে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ লাগে বাড়িতে। ঠিক সময়ে ফিরলে মহুয়া দরজা খোলে আর অসময়ে ফিরলে কাজের মেয়ে এসে দরজা খুলে দেয়।

বসন্ত প্রায় শেষ, গ্রীষ্মের মুখে এসে পড়েছে মহানগর। সামনের বাগানে কোকিলের কুহু ধ্বনি রোজ সকালে শোনা যায়। আম বকুলের গন্ধে বাড়ি মম মম করে। বাগানটা একটা রাস্তা পেরিয়েই, মাঝে মাঝে মনে হয় একটু মাতাল হলে ভালো হতো। রোজ রাতে মহুয়ার নেশায় বুঁদ হয় তবে রক্তে একটু সুরা চড়লে আরো ভালো হতো। বাড়িতে মেয়ের সামনে মদ খাওয়া যায় না। সেদিন মদনার দোকানে বেশ আড্ডা মেরে সময় কাটিয়ে অনেক রাত হয়ে যায়।

মদনা আর কেষ্ট বারেবারে ওকে বলে, “বাড়ি যা, না হলে ম্যাডাম এই বারে ঝ্যাঁটা পেটা করবে।”

অনেকদিন পরে গলায় চোলাই পড়েছে তাই আর সেইসবে কান দেয় না দানা, “ধুর বাল একটু দাঁড়া এই যাচ্ছি।”

তাও এই যাচ্ছি এই যাচ্ছি করতে করতে রাত দশটা বেজে যায়। গাড়িতে উঠে মোবাইল খুলে দেখে প্রায় এক ডজন মিসকল, বুঝে যায় প্রিয়তমা খাপ্পা হয়ে আছে। এই রাতে মধ্য মহানগরে কি আর সেই ফুলের দোকান খোলা থাকবে? দেখা যাক কি হয়। মেয়ের জন্য একটা বড় চকোলেট কেনে। ওই নেশা গ্রস্থ অবস্থায় মধ্য মহানগরের ওই ফুলের দোকানে যায় দানা। বরাবরের মতন হলুদ ফুলের স্তবক চাই ওর। এতদিনে দোকানি ওকে চিনে গেছে। ওকে দোকানে ঢুকতে দেখেই হলুদ ফুলের স্তবক ধরিয়ে দেয়।

দোকান থেকে বের হতে যাবে দানা, দেখে সামনে সমুদ্র দাঁড়িয়ে। সমুদ্র ওকে দেখে ভুত দেখার মতন চমকে ওঠে। সেই সাথে দানার নেশার ঘোর কেটে যায়। রাত সাড়ে দশটা কিন্তু মধ্য মহানগর এলাকায় তখন লোকে লোকারণ্য। রাত যত ঘন হয় তত এই শহর জেগে ওঠে আর দশটা এগারোটা মানে মানুষের বিকেল। দানাকে অবশ্য একবার সমুদ্র আগেও ফোন করে ডেকেছিল কিন্তু দানা জানিয়ে দিয়েছিল যে আর ওই মুখো হবে না। ফোনে গলার স্বর শুনে এইটুকু ধারনা হয়েছিল হয়ত ওরা ওর ওপরে অতটা ক্ষেপে নেই। হয়ত নিজেরাই বুঝতে পেরেছে যা কিছু হয়েছে সেই রাতে সব নয়নার প্ররোচনায় আর চূড়ান্ত নেশার ফলে হয়েছে। তবে নয়নার মনোভাব এখন বোঝা যায়নি। নয়না অতি ধুরন্ধর মহিলা ওর মনের কথা জানার জো কারুর নেই।

সমুদ্র দানাকে কাষ্ঠ হেসে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার এতো রাতে ফুল কিনতে বেরিয়েছিস? এখন কাকে পাল দিচ্ছিস?”

সমুদ্রের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ভারী গলায় পাল্টা প্রশ্ন করে দানা, “নয়না, কেমন আছে?”

সমুদ্র চোরা হাসি দিয়ে বলে, “তুই শালা সেদিন ওই ভাবে নয়নার সাথে সেক্সে মেতে উঠলি, মেয়েটা এক সপ্তাহ বিছানা ছেড়ে উঠতে পারলো না।”

দানার মস্তিকের সকল শিরা উপশিরা সতর্ক হয়ে ওঠে। নয়না কি সত্যি ওকে ক্ষমা করে দিয়েছে না এটা একটা চাল। তবে ওকে এই মেকি হাসির আড়ালে থেকেই আঘাত শুরু করতে হবে। বাঁকা হেসে সমুদ্রকে বলে, “এই শোন আমার হয়ে একটু নয়নার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিস। সেদিন না মদের ঝোঁকে একটু বেশি করে ফেলেছিলাম।”

সমুদ্র হাসি থামিয়ে গম্ভির কণ্ঠে ওকে বলে, “নয়না একবার তোর সাথে দেখা করতে চায়।”

প্রমাদ গোনে দানা কিন্তু ভয় পেলে চলবে না। সাহস নিয়ে সমুদ্রের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে, “কেন রে, নয়নার গুদে আবার চুলকানি উঠেছে নাকি?”

ওই কথা শুনে ভুরু কুঁচকে দানাকে চোরা হাসি দিয়ে বলে, “তুই শালা সত্যি হারামির বাচ্চা। সেই যে গেলি আর দেখা পর্যন্ত করলি না বাঁড়া।”

হেসে ফেলে দানা, বুঝতে পারে যে ওর এই প্রমোটারির বিষয়ে নয়না অবগত নয় আর সেটা লুকাতেও চায় না, তাই সমুদ্রকে বলে, “আমি বিল্ডার প্রমোটারির ব্যাবসা শুরু করেছি, বুঝলি। কাজে খুব ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি রে।”

সেই শুনে সমুদ্র অবাক হয়ে যায়, “তাই নাকি, কোথায় করছিস? তোর এলাকায়, বাপ্পা নস্কর জানে?”

দানা মাথা দোলায়, “হ্যাঁ রে ভাই, বাপ্পা নস্কর জানে এবং ভালো ভাবেই জানে।”

সমুদ্র খানিকক্ষণ ভেবে ওকে বলে, “যাই হোক নয়না একবার তোর সাথে দেখা করতে চায়। কবে তোর সময় হবে?”

দানা পাল্টা প্রশ্ন করে, “কেন দেখা করতে চায় নয়না?”

সমুদ্র চোরা হেসে ঠোঁট উল্টে উত্তর দেয়, “ওই জানে কেন দেখা করতে চায়।”

দানা হেসে ফেলে, “শালা আমাকে গরু পেয়েছিস নাকি? তুই জানিস না এটা হতেই পারে না রে।”

সমুদ্র মিচকি হেসে বলে, “আরে না না সেই সব কিছু নয়, তোর মাইনে বাকি পড়ে আছে সেটাই হয়ত দেবে। যাই হোক একদিন বাড়িতে আসিস।”

দানার ধারনা এখন নয়না, মহুয়া আর রুহির বিষয়ে জানে না। তাও নয়নার বাড়িতে গিয়ে দেখা করা ঠিক মনে হয় না। হয়তো দানাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খুন করতে পারে, কিম্বা অন্যদিক থেকে আঘাত হানতে পারে। দানা সমুদ্রকে জানিয়ে দেয়, “ব্যাস্ত রে খুব তবে বাড়িতে নয় অন্য কোথাও দেখা করতে চাইলে করতে পারি।”

দানা আর দাঁড়ায় না, হলুদ ফুলের স্তবক নিয়ে সোজা নিজের গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। নিজের গাড়িতে ওঠার আগে একবার সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে। দানাকে একটা বিশাল কালো বি এম ডাবলুতে উঠতে দেখে, সমুদ্র বিস্ফোরিত চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। দানা ওর দিকে একটা বাঁকা হাসি ছুঁড়ে গাড়ি নিয়ে বাড়ির দিকে যাত্রা শুরু করে।

আজ কপালে দুঃখ আছে। মদনার দোকান থেকেই বের হতে রাত দশটা বেজে গিয়েছিল তার ওপরে আবার এইখানে সমুদ্রের সাথে দেখা হয়ে আরো দেরি হয়ে গেল। ফোন করলে ঝেড়ে কাপড় খুলে দেবে “পাপড়ি”। নেশা কেটে মাথার মধ্যে টানটান উত্তেজনা, নয়না কি কারনে দেখা করতে চায়। যদি রুহি আর মহুয়ার কিছু হয় তাহলে এই মহানগর জ্বালিয়ে দেবে। গাড়ি চালাতে চালাতেই আরও একবার মহুয়াকে ফোন করার চেষ্টা করে। কিন্তু অভিমানী মহুয়া ওর ফোন উঠায় না।

কলিং বেল বাজানোর আগে শ্বাস চেপে উত্তেজনা প্রশমিত করে নেয়। দেরি করলে ফিরলে যা হয়। যথারীতি কাজের মেয়ে এসে দরজা খুলে দেয়।

দানা এদিক ওদিক তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “তোর ম্যাডাম কোথায়?”

কাজের মেয়ে, মণি ওকে বলে, “দিদিমনি আর রুহি শোয়ার ঘরে।”

মহুয়ার গম্ভির কণ্ঠের আওয়াজ শুনতে পায় দানা, “মদনের দোকান থেকেতো দশটা নাগাদ বেরিয়েছিলে তাই না। এখন বারোটা বাজে আবার কার কাছে গিয়েছিলে?”

হিমশীতল কণ্ঠে বাঘিনী প্রশ্ন করেছে, দানার বুঝতে বাকি থাকে না যে ওকে এইবারে বেশ আয়েশ করে কেটে কুটে, তেলে ঝালে নুন লঙ্কা দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে খাবে ওর বাঘিনী। দানা ফুলের স্তবক নিয়ে শোয়ার ঘরে ঢুকে দেখে, বিছানায় আধা শোয়া মহুয়া, চশমার ওপর দিয়ে এক ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছে প্রেয়সী। রুহি অনেক আগেই ঘুমিয়ে কাদা। দানার হাতে হলুদ ফুলের স্তবক দেখে আরো রেগে যায়। ভেবে পায়না এতরাতে কোথা থেকে ওই সুন্দর ফুলের স্তবক যোগাড় করে এনেছে।

অপরাধীর মতন কাঁচুমাচু মুখ করে মহুয়ার দিকে ফুলের স্তবক এগিয়ে দিয়ে বলে, “সরি পাপড়ি, দেরি হয়ে গেল।”

বুকের ওপরে হাতজোড়া ভাঁজ করে গম্ভির কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “রাস্তায় কার সাথে দেখা হয়েছিল আবার? নয়না না ময়না?”

দানা চুকচুক করে হেসে ওঠে, “আরে শোন এক কান্ড।” তারপরে ওর পাশে এসে বসে বলে, “ফুলের দোকান থেকে বেরিয়েই সমুদ্রের সাথে দেখা হয়েছিল।”

সেই শুনে ক্রোধ ভুলে আঁতকে ওঠে মহুয়া, “হটাত কি ব্যাপার? ওরা কি আমাদের অনুসরন করছে।”

দানার চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, তাও মহুয়াকে প্রবোধ দিয়ে বলে, “জানিনা পাপড়ি।”

ঘুমন্ত রুহিরা গায়ে লেপটা আরও টেনে দিয়ে মহুয়া জিজ্ঞেস করে, “কি কথা হলো ওর সাথে?”

দানা সব কিছু খুলে বলার পরে, দুইজনের কপালে চিন্তার রেখা দেখা দেয়। নয়নার সাথে কি দেখা করা উচিত না অনুচিত, এই নিয়ে কিছুক্ষণ শলা পরামর্শ চলে। যদিও সমুদ্রের ব্যাবহার বলছে নয়না ওর বিরুদ্ধাচরণ করবে না, তবুও সাবধানের মার নেই। মহুয়া ওকে পরামর্শ দেয় একবার দেখা করার জন্য, কি বলতে চায় নয়না। সেই সাথে এটাও বলে, যদি নয়না ওদের বিষয়ে জেনে গিয়ে থাকে তাহলে দানা যেন মাথা গরম না করে। চুপচাপ যেন নয়নার কথা মেনে নেয়। পরে বিষদে আলোচনা করা যাবে কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। মহুয়ার উপদেশ দানার মনে ধরে যায়। বড় বুদ্ধিমতী, মহুয়া পাশে না থাকলে দানার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হয়ে উঠতো না।

বুদ্ধিমতী মহুয়া ওর কান টেনে বলে, “মাঝে মাঝে একটু বৌদের কথা শুনতে হয় বুঝলে।”

দানা ওকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে, “শোব কোথায়?”

মহুয়া, মেয়ের অন্যপাশে দেখিয়ে দেয়। দেরি করার শাস্তি। এমনিতে মহুয়া মাঝখানে শোয়, তবে যেদিন রাগারাগি হয় সেদিন শোয়ার জায়গা বদলে যায়। সেদিন রুহিকে ঢাল করে দানাকে অন্যপাশে ঠেলে দেওয়া হয়।

পরের দিন সকালে দানা সমুদ্রকে ফোন করে জানিয়ে দেয় দেখা করার কথা। সেই শুনে সমুদ্র বলে, নয়না ওর সাথে বিমানের দেওয়া ফাঁকা বাড়িতে দেখা করতে চায়। দানা নারাজ, একাকী কোন জায়গায় দেখা করতে চায় না দানা। সমুদ্র একটু অবাক হয়ে যায়। সুচতুর দানা বলে ওই বাড়িতে ওদের একসাথে কেউ দেখে ফেললে দুইজনেই সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে পারে। সমুদ্রকে বলে গাড়ি নিয়ে সোজা মোহনার দিকের বড় রাস্তা যেন ধরে। রাস্তার মাঝে কোথাও একটা জায়গায় ওরা দেখা করবে। মহুয়ার চোখে চাপা উত্তেজনা, বুকে চরম উৎকণ্ঠা, কি হবে কি হবে। দুই খানা পিস্তল কোমরে গুঁজে গাড়ি নিয়ে আর নাসির আক্রামের সাথে বেড়িয়ে পরে দানা।

বড় রাস্তায় পড়তেই বেশ কিছু দুর গিয়ে সামনে নয়নার গাড়ি দেখতে পায়। সমুদ্র ওর গাড়ি গতরাতেই দেখেছে সুতরাং চিনতে ভুল হয় না পেছনের কালো গাড়িটাকে। ফোন করে জানতে চায় কোথায় দেখা করতে চায় দানা, উত্তরে ওকে গাড়ি চালাতে নির্দেশ দেয়। সবে মাত্র শহর ছাড়িয়েছে, আশেপাশে এখন জন বসতি। একদম নির্জনে দেখা করতে চায়। বেশ কিছুদুর যাওয়ার পরে দুই পাশে ফাঁকা মাঠ দেখে দানা ওদের গাড়ি থামাতে নির্দেশ দেয়। দুইজনে গাড়ি ওই ফাঁকা মাঠের মধ্যে নামিয়ে দেয়। দুটো গাড়ি মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। দুটো পিস্তলের স্লাইড টেনে চেম্বারে গুলি ভরে নেয়। পেছনের সিটে বসে আক্রাম আর নাসির আগে গাড়ি থেকে নামে। উলটো দিকের গাড়ি থেকে, সমুদ্র, গাড়ির ড্রাইভার আর ওর দেহরক্ষী নেমে পড়ে।

বুক ভরে শ্বাস নেয় দানা, সমুদ্র ফোন করে দানাকে, “কি রে কতক্ষণ আর গাড়িতে বসে থাকবি?”

দানা গাড়ি থেকে নেমে বাঁকা হেসে বলে, “আমি নেমে গেছি কিন্তু যে দেখা করবে সে কোথায়?”

ওইদিকে শুধু মাত্র ওর দেহরক্ষীর হাতেই একটা বন্দুক, এদিকে তিনজনের হাতেই পিস্তল কিন্তু লুক্কায়িত। চোখের ইশারায় আক্রাম আর নাসিরকে তৈরি থাকতে বলে। দানা এগিয়ে যায় নয়নার গাড়ির দিকে। ওকে এগিয়ে আসতে দেখে, পেছনের দরজা খুলে নয়না বেরিয়ে আসে। হাসিহাসি চেহারা, চোখে ছলনার লুকোচুরি। জ্যাকেট খানা গায়ের সাথে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে একটা সিগারেট ধরায় নয়না। দানাও একটা সিগারেট ধরিয়ে নয়নার চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে থাকে। নয়নার ঠোঁটে মিচকি ধূর্ত হাসি যেন ওকে জিজ্ঞেস করছে, “কি দেখছো এতো?” দানা উত্তরে চোখ পাকায়, “পেছনে লেগো না তাহলে খুলি উড়িয়ে দেব।” সমুদ্রের কানেকানে কিছু একটা বলে দানার দিকে একপা একপা করে এগিয়ে আসে নয়না। দানা চোয়াল শক্ত করে সিগারেটে একটা লম্বা টান দেয়। তীক্ষ্ণ চোখে নয়নার পদক্ষেপ জরিপ করে বুঝতে চেষ্টা করে কি চায়।

নয়না ওর দিকে এগিয়ে এসে মৃদু হেসে হাত বাড়িয়ে বলে, “কেমন আছো?”

দানাও মৃদু হেসে ওর সাথে হাত মিলিয়ে উত্তর দেয়, “ভালো আছি। তোমার শরীর ঠিক আছে?”

নয়না হেসে মাথা দোলায়, “হ্যাঁ, তুমি যা অবস্থা করে গেছিলে তাতে সাতদিন আর উঠতে পারিনি।”

মাথা চুলকিয়ে হেসে ফেলে দানা, “ওই স্যাডোমেচোসিজেম নিজেই চেয়েছিলে তাই না।”

বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে নয়নার লাল ঠোঁটে, “তাই বলে ওইখানে একদম পিস্তল গুঁজে দেবে কে জানতো, বলো?”

দুইজনেই হেসে ফেলে। দানার বুকে টানটান উত্তেজনা, এতো ভালো করে কথা বলছে নয়না এই শান্তশিষ্ট ব্যাবহার কোন ঝড়ের পূর্বাভাস। কিছুতেই ধরতে পারছে না দানা। আসলে নয়না ওর কাছ থেকে কি চায়। নিজের প্রতি ধর্ষণের প্রতিশোধ না অন্য কিছু। কিন্তু যার ভেতরে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে থাকবে সে কেন এতো মিষ্টি করে ওর সাথে কথাবার্তা বলতে আসবে। তবে নয়না প্রচণ্ড ধূর্ত মহিলা, হাসিহাসি মুখেই খুনের পরিকল্পনা করতে পারে। দানা সজাগ হয়ে যায়।

সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে মৃদু হেসে নয়না ওকে বলে, “তুমি ডুবে ডুবে অনেক জল খাও তাই না?” পেছন ঘুরে কালো বি এম ডাবলু দেখে বলে, “কি বলে ডাকা যায় বলতো তোমাকে? নোনাঝিলের মিস্টার বিশ্বজিৎ মন্ডল না কালী পাড়ার দানা। এক লাফে অনেক ওপরে উঠে গেছো। লটারি পেয়েছো? তোমার সঠিক পরিচয় কি মিস্টার বিশ্বজিৎ মণ্ডল?”

সজাগ দানা নয়নার চাল বুঝতে চেষ্টা করে। ঠোঁটে বাঁকা হাসি টেনে বলে, “কি বলতে চাও নয়না।”

নয়না ওকে বলে, “দেখো দানা, তুমি যেমন আমার দুর্বলতা জানো ঠিক তেমনি আমি তোমার দুর্বলতা জানি।”

উৎসুক দানার মাথা ঝনঝন করে ওঠে, “আমার বিষয়ে তুমি কি জানো?” বুকের মধ্যে গরম রক্ত এলোপাথাড়ি ছুটে বেড়ায়। টানটান উত্তেজনায় শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসে।

নয়না বুক ভরে শ্বাস নিয়ে একটু থেমে থেমে বলে, “দেখো দানা, আমাকেও একটু গা বাঁচিয়ে চলতে হয়। তুমি আমার আর বিমানের সম্বন্ধে জানো ঠিক তেমনি আমিও জানি তোমার একটা সুন্দরী স্ত্রী আর একটা নিষ্পাপ কন্যে আছে।”
 
পর্ব তেরো – চৌষট্টি ছক (#3-93)

দানার চোয়াল কঠিন হয়ে যায়, হাত মুঠি করে নিজের চরম ক্রোধ গিলে নেয়। চোখের সামনে রুহি আর মহুয়ার ছবি ভেসে ওঠে, এটাই ভয় পেয়েছিল দানা। যেমন নয়নার ওপরে নজর রেখেছিল ঠিক তেমনি নয়না ওর ওপরে নজর রেখেছে। দানা চিবিয়ে চিবিয়ে বলে, “আমার পেছনে চর লাগিয়েছো তাহলে।”

নয়না ওর চোখের ওপরে চোখ রেখে বলে, “কি করবো বলো তুমি আমার অনেক কিছু জেনে ফেলেছো। নিজেকে বাঁচানোর জন্য ঢাল খুঁজতে আমাকে হতোই তাই না? দেখো দানা, তোমাকে এখন খুব বিশ্বাস করি। এখন পর্যন্ত তুমি বাপ্পা নস্করকে আমার গোপন সম্পর্কের ব্যাপারে লাগিয়ে দাওনি। বিশ্বাস করো আমি তোমাকে আঘাত করতে চাই না।” লাল ঠোঁটে কামুকী হাসি দিয়ে, “কারন তুমি আমাকে সেইরাতে প্রচন্ড সুখের যন্ত্রণা দিয়েছিলে। উম্মম্ম এত সুখ পেয়েছিলাম যে শেষ পর্যন্ত অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম।”

দানা স্বস্তির শ্বাস নেয়, ধর্ষকামে নয়না আনন্দ পেয়েছে, সত্যি না মিথ্যে। তবে ওর চেহারা কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে নয়না ওর ওপরে ক্ষেপে নেই ওকে এখনো আগের মতন বিশ্বাস করে। তবুও সাবধান থাকতে হবে এই ধূর্ত চটুল নারীর থেকে। নয়না যেমন ওকে ব্যাবহার করতে চায় ঠিক তেমনি দানাও ওকে ব্যাবহার করতে চায়। দানা জানে, নয়না বাপ্পা নস্করকে খুন করতে চায়। কিন্তু বাপ্পা নস্করকে এখুনি সরাতে চায় না দানা।

বাপ্পা নস্কর ওর কোন ক্ষতি করেনি তাই নয়নাকে জিজ্ঞেস করে, “কি চাও তুমি?”

নয়না এদিক ওদিক তাকিয়ে গলা নামিয়ে বলে, “আমি কি চাই সেটা তুমি ভালো ভাবে জানো। তুমি এখন পর্যন্ত কিছু একটা ভেবেই বাপ্পা নস্করের কাছে মুখ খোলোনি। তাই না? এইবারে তুমি কি চাও সেটা আমি জানতে চাই।”

দানার মাথায় বুদ্ধি খেলে যায়, মোহন খৈতানের বিশাল বাজেটের অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প গুলো হাতে পেলে বাপ্পা নস্কর খুশি হয়ে যাবে। সেই সাথে বিমানের কাছে আসা যাবে। যতদূর ওর ধারনা, মৈনাককে নয়না খুন করেনি। হয়তো বিমান চন্দ নয় রমলা বিশ্বাস খুন করিয়েছে। সঙ্গীতার ভাঙ্গা হৃদয়ের প্রতিশোধ নিতে চায় দানা। কিন্তু খুব মেপে চাল চালতে হবে দানাকে। কারন বিরোধী পক্ষ সবাই ধূর্ত কুটিল মানুষ।

তাও দানা একবার জানতে চায়, “তুমি কি সঙ্গীতার প্রেমিককে খুন করেছো?”

বিস্ফোরিত চোখে নয়না আঁতকে ওঠে, “কি বলছো? না না, আমি কাউকে খুন করাইনি দানা। তুমি ওকে ধর্ষণ করে ছেড়ে দিলে তারপরে আমি আর কোন খবর পাইনি। সঙ্গীতা কোথায় আছে আমি জানি না। বিশ্বাস করো দানা, আমি বুবাইয়ের নামে শপথ করে বলছি। সঙ্গীতাকে আমি একবার শুধু আঘাত করেছি আর করিনি কারন ও কারুর কাছে মুখ খোলেনি।”

দানা পাল্টা প্রশ্ন করে, “তুমি সঙ্গীতার ব্যাপারে আর কাকে জানিয়েছো? সত্যি বলো নয়না।”

বেশ কিছুক্ষণ ভেবে নয়না বলে, “ও হ্যাঁ, একবার কথায় কথায় বিমানকে বলেছিলাম ব্যাস আর কাউকে জানাইনি। বিশ্বাস করো দানা।”

মৈনাকের খুন দুইজনে করতে পারে, এক বিমান চন্দ দ্বিতীয় রমলা বিশ্বাস। বেশ কিছুক্ষণ ভাবনা চিন্তা করে দানা বলে, “আমি ব্যাবসা করতে নেমেছি নয়না। মোহন খৈতানের বড় বাজেটের বেশ কয়েকটা অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প এলাকায় পড়ে রয়েছে। সেই গুলো চাই আমার।”

নয়না আকাশ থেকে পড়ে, “কি বলছো তুমি? আরে বাবা, আমি কি করে মোহন খৈতানের ওই প্রকল্পগুলো তোমাকে দেব? তুমি টাকা চাও আমি দিতে পারি। এক কোটি দুই কোটি পাঁচ কোটি বলো আমি যোগাড় করে দেব। কিন্তু...”

দানা হেসে ফেলে, “নয়না, এক কোটি টাকা পকেটে নিয়ে আমি ঘুরে বেড়াই। তুমি যদি বাপ্পা নস্করকে সরাতে চাও তাহলে মোহন খৈতানের ওই প্রকল্প গুলো আমার চাই।”

নয়না মাথা নাড়ায়, “সম্ভব নয় দানা, কিছুতেই সম্ভব নয়। আমি মোহন খৈতানকে ঠিক তেমন ভাবে চিনি না।”

দানা মিচকি হাসে, “মিথ্যে কথা কেন বলছো। মোহন খৈতান, বিমান চন্দের বাল্যবন্ধু সেটা আশা করি ভালো ভাবে জানো।” নয়না মাথা দোলায় “হ্যাঁ সেটা আমি জানি, কিন্তু...”

দানা নিজের পরিকল্পনা নয়নাকে জানায়, “তাহলে আমার কথা মন দিয়ে শোন। আমি এখন এই এলাকার বেশির ভাগ অর্ধ সমাপ্ত প্রোজেক্ট গুলো কিনে কাজ শুরু করেছি। তুমি বিমান চন্দকে বলো, যদি মোহন খৈতান আমার নামে ওই অর্ধ সমাপ্ত প্রোজেক্ট গুলো করে দেয় তাহলে আবার কাজ শুরু করতে পারা যাবে। আমি আর মোহন খৈতান একসাথে মিলে কাজ করবো। এতদিনে মোহন খৈতানের অনেক টাকা লোকসান হয়ে গেছে, এরপরের নির্বাচনে যদি বাপ্পা নস্কর আবার চলে আসে তাহলে বুঝতেই পারছো আশা করি। তুমি একবার বিমানের কানে এই কথা উঠাও দেখো ও কি বলে। আমি হলফ করে বলছি, পরের দিন আমার সাথে দেখা করতে চাইবে।”

নয়না অবাক হয়ে যায় দানার পরিকল্পনা শুনে। ওর আসল উদ্দেশ্য ঠিক ধরতে পারে না তবে এইটুকু বুঝে যায় দানা গভীর জলের মাছ। এর গায়ে হাত দেওয়া যে সে কাজ নয়।

নয়না মিচকি হেসে দানাকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার মেয়ে ভারী মিষ্টি, কি নাম?”

দানা স্মিত হেসে উত্তর দেয়, “রুহি।”

নয়না ওর সাথে হাত মিলিয়ে বলে, “এখুনি কথা দিতে পারছি না তবে আমাকে কয়েকদিন সময় দাও। আমি বিমান চন্দের সাথে আলোচনা করে তোমাকে জানাচ্ছি।”

গাড়িতে উঠেই দানা কপালে করাঘাত করে। দানা যেমন নয়নার ওপরে নজর রেখেছিল ঠিক তেমনি নয়না খুঁজে খুঁজে ওর দুর্বলতা জেনে ফেলেছে। রুহি আর মহুয়াকে আঘাত করলে দানা পাগল হয়ে যাবে। কিন্তু মহুয়াকে কি করে বুঝানো যায় এই কথা? দানার লাল চোখ দেখে আক্রাম আর নাসির কিছু জিজ্ঞেস করতে ভয় পায়। তীর বেগে গাড়ি চালিয়ে সোজা বাড়িতে পৌঁছায় দানা। ঘরে ঢুকে আগে রুহিকে কোলে নিয়ে অনেকক্ষণ চুপচাপ থম মেরে বসে থাকে। মহুয়া যত জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে দানা নিরুত্তর। ওর ছলছল রক্তমাখা চোখের চাহনি দেখে মহুয়ার বুঝতে দেরি হয় না যে নয়না ওদের বিষয়ে জেনে গেছে।

দানা ওকে বলে, “প্লিস পাপড়ি আমার কথা শোন, তুমি মেয়েকে নিয়ে আজমের চলে যাও।”

দানার পাশ থেকে চলে যেতে হবে শুনেই মহুয়ার বুক কেঁপে ওঠে। জোরে জোরে মাথা নাড়িয়ে বলে, “না না, আমি কোথাও যাবো না।” ওর কোল থেকে রুহিকে নিয়ে আঁকড়ে ধরে বলে, “তুমি ছাড়া আমাদের দেখার কেউ নেই। তুমি না থাকলে আমরা বেঁচে কি করবো, জিত।”

দানা চুপচাপ অনেকক্ষণ বসে থাকে। মহুয়া ওকে নয়নার সাথে কি আলোচনা হয়েছে সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দানা ওকে সব কিছু বিস্তারে জানিয়ে দেয়। মহুয়া ওকে বলে, “ঠিক আছে জিত। তুমি এইবারে চাল দিয়ে এসেছো দেখা যাক নয়না কি করে। তবে মনে রেখো ওই নয়না হচ্ছে আমাদের তুরুপের তাস।” ওর হাতখানি চেপে ধরে বলে, “শেষ দেখা দেখেই যাবো জিত।”

দানা দুইজনকে বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে। ছোট্ট রুহি কিছুই বুঝতে পারে না, কেন মায়ের চোখে ডাডার চোখে জল। তাই কচি হাত দিয়ে ওদের জড়িয়ে ধরে চুমু খায়।

ছোট অফিস কিন্তু এই কয়দিনে মহুয়া বেশ সুন্দর ভাবে সাজিয়ে নিয়েছে। একটা বড় কাঁচের দরজা দেওয়া কেবিনে মহুয়ার আর দানার বসার ব্যাবস্থা, যদিও বেশির ভাগ দিন মহুয়াকে একাই ওই কেবিনে কাটাতে হয়। কাজের মেয়ে মণিকে নিয়েই মহুয়া আফিসে আসে কেননা রুহি সাথে থাকে। এখন রুহিকে স্কুলে ভর্তি করা হয়নি। তবে সকালে একটা প্লে স্কুলে যায়, যেদিন ইচ্ছে হয় যায় যেদিন ইচ্ছে হয় যায় না। মহেশ বাবু ওদের অনেক সাহায্য করেছেন এই অফিসের ব্যাপারে, দানার সাথে ঘুরে ঘুরে অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প গুলোতে গিয়ে দেখাশুনা করার বিষয়ে আর কেনা বেচার বিষয়ে। মহেশ বাবুকে দানা নিজের কোম্পানিতে অংশীদার হতে অনুরোধ করেছিল কিন্তু মহেশ বাবু বেশি কতক ব্যবসায় আর মাথা গলাতে চান না।

বেশ অনেক গুলো অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প হাতে চলে আসে দানার। সবকটা প্রকল্পে অংশীদার হিসাবে কাজ শুরু করে দেয়। বাপ্পা নস্করকে জানিয়ে দেয় যে একবার এই প্রকল্প গুলো সম্পূর্ণ হলে, ওর নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য বেশ কয়েক কোটি টাকা দেবে। ইতিমধ্যে ইন্দ্রনীলের কাছ থেকে বাপ্পা নস্কর সব শুনেছে তাই দানার কথায় বিশ্বাস করে নেয়।

মহানগরের বুকে ঠাণ্ডা কমে এসেছে। কয়েক সপ্তাহ পরে রুহির জন্মদিন। মহেন্দ্র বাবুকে আমন্ত্রন জানিয়েছে সেই সাথে সবাইকে। কেষ্টর ছেলে হয়েছে, দানা দেখা করতে গিয়েছিল। মহুয়ার খুব যাওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু সেই কালী পাড়ার বস্তি বলে দানা আর নিয়ে যায়নি। ওর গুমটিতে এখন তালা মারা, সেখানে আর যাওয়া হয়ে ওঠে না। বস্তির আর এলাকার খবরা খবর ঠিক পেয়ে যায় মদনা না হয় বলাইয়ের কাছ থেকে। ইন্দ্রাণী চলে যাওয়ার পরে শক্তি আর বলাইকে নিজের ব্যাবসায় লাগিয়ে দেয়।

সেদিন বিকেলে মহুয়া আর রুহিকে নিয়ে একটা বড় রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিল দানা। মহুয়া আর রুহিকে নিয়ে এই রেস্টুরেন্টে আগেও বেশ কয়েকবার এসেছে। বড় লোকেদের রেস্টুরেন্ট, উর্দি পরা দারোয়ান, উর্দি পরা বেয়ারা। খাওয়া দাওয়া শেষে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই নয়নার সাথে মুখোমুখি। রুহি কোলে দানার পাশে মহুয়াকে দেখে মুচকি হেসে এগিয়ে আসে নয়না। নয়নাকে এগিয়ে আসতে দেখেই মহুয়ার চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। প্রমাদ গোনে মহুয়া, এই মহিলা আবার কি চাল চালবে? বুকের মধ্যে টানটান উত্তেজনা নিয়ে সেটা বোঝার অপেক্ষায় মহুয়া। তপ্ত শ্বাসে দানার বাজু আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে চশমার পেছন থেকে আপাদমস্তক জরিপ করে নয়নাকে। নয়নার বেশ পেছনে সুমিতা আর সমুদ্র দাঁড়িয়ে পড়ে।

নয়না মৃদু হেসে হাত বাড়িয়ে দেয় মহুয়ার দিকে, “কেমন আছেন মিসেস মন্ডল?”

চোয়াল চেপে ঠোঁটে মেকি হাসি টেনে আলতো হাত মিলিয়ে মহুয়া উত্তর দেয়, “ভালো আছি।”

নয়না ওদের দিকে দেখে দানাকে বলে, “তোমার সাথে একটু কথা ছিল। হাতে কি সময় আছে?”

ওর সামনে দাঁড়াতে একটুকু ইচ্ছে নেই তাই দানা উত্তর দেয়, “এখুনি ডিনার সেরে উঠেছি, ফোনে কথা হবে কেমন?”

মহুয়ার তীক্ষ্ণ চোখ নয়নাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। নয়না ওই আগুনে চাহনি দেখে বেশ বিবৃত বোধ করে। কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারে না দানার স্ত্রী ওকে এমন তীক্ষ্ণ চোখে কেন জরিপ করে চলেছে। নয়নাকে হাতের সামনে পেয়ে একটু নাচিয়ে নেওয়ার ইচ্ছেটা দমাতে পারল না দুষ্টু মিষ্টি মহুয়া।

নয়নার বিব্রত বোধ কাটিয়ে আর দানাকে অবাক করে মহুয়া বলে, “তবে ডেসার্ট আরো একবার খেতে আপত্তি নেই।”

এতক্ষণ একটা চাপা শ্বাস বুকের মধ্যে আটকে রেখেছিল নয়না। মহুয়ার নিমন্ত্রনে সেই শ্বাস ছেড়ে বলে, “খুব ভালো কথা, মিসেস মন্ডল। এইখানে আইস্ক্রিম খুব ভালো পাওয়া যায়।”

রেস্টুরেন্টে ঢুকতে ঢুকতে নয়নাকে মহুয়া জিজ্ঞেস করে, “আপনি কি বিমানের বিষয়ে আলোচনা করতে এসেছেন?”

নয়না অবাক হয়ে যায়, এত তাড়াতাড়ি মহুয়া ওকে প্রশ্ন করবে সেটা ভাবতে পারেনি। নয়না একবার দানার দিকে তাকায় একবার মহুয়ার দিকে তাকায়। তারপরে মৃদু মাথা দুলিয়ে বলে, “হ্যাঁ, কিন্তু মানে আপনি...”

মহুয়া মৃদু হেসে বলে, “আগে একটা আইস্ক্রিম খাই তারপরে শুনবো আপনার কথা।”

মহুয়ার মিষ্টি অথচ তীক্ষ্ণ কথাবার্তা দানাকে অবাক করে দেয়। এ নারী যেন মিছরির ছুরি। মহুয়া চোরা হাসি দিয়ে দানাকে চুপ করে থাকতে অনুরোধ করে। টেবিলে বসে রুহি আইস্ক্রিম খাওয়ার চেয়ে মাখতে ব্যাস্ত হয়ে যায়। সেই দেখে ওদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ হাসাহাসি চলে। ওদের অদুরে একটা টেবিলে সমুদ্র আর সুমিতা বসে অপেক্ষা করে।

নয়না ওদের বলে, “আমি বিমান চন্দের সাথে আলোচনা করেছি। বিমান একবার দানার সাথে দেখা করতে চায়।”

নয়নাকে জানতে দেওয়া যাবে না যে মহুয়া ওর সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানে তাই চোরা হেসে জিজ্ঞেস করে, “বিশ্বজিতের বিষয়ে কি বলেছেন আপনি বিমানকে? সবকিছু পরিস্কার না হলে বিশ্বজিৎ ফাঁদে পা দেবে না।” “ফাঁদ” কথাটা একটু জোর দিয়েই বলে মহুয়া।

নয়না অবাক, কে এই নারী? খেলা যেন সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি। ঠোঁটে মেকি হাসি টেনে বলে, “না না, বিশ্বাস করুন মিসেস মন্ডল। এইখানে কোন ফাঁদ নেই।”

মহুয়া মৃদু হেসে নয়নার চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে, “বিমান চন্দ আশা করি ভালো ভাবেই জানে, বিশ্বজিৎ বাপ্পা নস্করের বিশ্বাসভাজন লোক। তাহলে এত সহজে কেন ওর সাথে দেখা করতে চাইবে? কিছু একটা আপনি বলেছেন। সেটা কি?”

ওই তীক্ষ্ণ চাহনি দেখে নয়না একটু দমে যায় কিন্তু পাল্টা হেসে জবাব দেয়, “আপনি সত্যি অনেক কিছু জানেন তাহলে।” মহুয়া মাথা দোলায় “হ্যাঁ।” নয়না বুঝে যায় এই মহিলার সামনে মিথ্যে বলে বেশিক্ষণ লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। তাই বলতে শুরু করে, “দেখুন মিসেস মন্ডল, আমি বিমানকে বলেছি যে দানা বাপ্পা নস্করের লোক হলেও আমার খুব বিশ্বাসী।” মহুয়া ঠোঁট টিপে হাসে ওই কথা শুনে। নয়না ওকে বলে, “আমি ওকে বুঝিয়ে বলেছি দানা আমাদের কথা মতন কাজ করবে। কারন জানতে চাইল ওকে বললাম মোহন খৈতানের প্রকল্পের বিষয়ে। মোহনের সাথে বিষদে আলোচনা করেছে বিমান। বাপ্পা নস্করের দৌরাত্মের ফলে ওর প্রকল্প গুলো অনেকদিন থেকেই বন্ধ পরে আছে।” দানা সেই সম্পর্কে অবগত। নয়না আরো বলে, “বিমানের কথা মোহন ফেলবে না, তবে আগে দানার সাথে দেখা করতে চায় বিমান তারপরে মোহনের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করিয়ে দেবে।”

সবকিছু শোনার পরে মহুয়া মেকি কাতর কণ্ঠে ওকে অনুরোধ করে, “মিস বোস, আপনি আমার একটা কাজ করবেন, প্লিস।” নয়না ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, “কি?” মহুয়া চাপা হেসে বলে, “আমি ওদের আলোচনার রেকর্ডিং চাই আর সেটা আপনার পক্ষেই সম্ভবপর।”

নয়না বিস্ফোরিত নয়নে মহুয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে, মহিলা বলে কি? একেবারে জালে জড়িয়ে ফেলতে চায় নাকি? তাও মহুয়ার চোখে চোখ রেখে মৃদু হেসে নয়না বলে, “আপনি আমাকে বিশ্বাস করছেন না তাই তো। ঠিক আছে দেখি কি করতে পারি আমি।”

অতি সুচতুর চাল দিয়েছে মহুয়া, এক বারের জন্য নয়নাকে সন্দেহ করতে দেয়নি যে ওরা ওর বিরুদ্ধে জাল ফাঁদছে। নয়নার সাথে হাত মিলিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, “আইস্ক্রিমের জন্য অনেক ধন্যবাদ, মিস বোস।” রুহিকে কোলে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে দানাকে বলে, “চল জিত, অনেক রাত হয়ে গেছে।”
 
পর্ব তেরো – চৌষট্টি ছক (#4-94)

এতক্ষণ যেন একটা শীতল যুদ্ধ চলছিল ওই রেস্টুরেন্টের টেবিলে। আশেপাশের অনেক লোকের দৃষ্টি ছিল ওদের টেবিলের ওপরে। বিশেষ করে অভিনেত্রী নয়নার জন্য। ওরা উঠে যেতেই অনেকেই নয়নাকে ছেঁকে ধরে। মহুয়া আর দানা আর পেছনে তাকায়নি। বুকের মধ্যে একটা ভালো লাগার মৃদু মলয় নিয়ে দানা আর মহুয়া বেরিয়ে পড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে।

গাড়িতে উঠেই মহুয়া খিলখিল করে হেসে ফেলে, “কেমন দিলাম বলো।”

দানা অবাক হয়ে মহুয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত মাছি মারতে ভয় পেত মহুয়া আর এই কয়দিনে এত পরিবর্তন? সত্যি ভালোবাসা মানুষের হৃদয় বদলে দেয়, মনে এক দুরন্ত শক্তির সঞ্চার করতে সক্ষম হয়।

দানা গাড়ি চালাতে চালাতে ওকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি ওইখানে ঠিক কি করতে চাইছিলে বলোতো?”

মহুয়া হেসে ওর হাত ধরে বলে, “পারলে কুটিকুটি করে কেটে ফেলতাম, কিন্তু মেয়েটাকে দিয়ে অনেক কাজ করানোর বাকি, তাই না। তাই ছেড়ে দিলাম। পরে অনেক কাজে আসবে এই মেয়ে। আমার কথা লিখে রাখো।”

দানা জিজ্ঞেস করে, “কি রকম কাজে আসবে?”

মহুয়া হেসে বলে, “আরে দেখো না, ঠিক সময়ে তোমার নিজের বুদ্ধি খুলে যাবে। আমার মন বলছে এর সাহায্যে আমরা রমলাকে ধরতে পারবো, আর রমলাকে ধরতে পারলে হয়তো কঙ্কনা আর নাস্রিনের খবর পাওয়া যাবে। আস্তিনে একটা তাস থাকা ভালো। নাও নাও গাড়ি চালাও এইবারে। ওইদিকে পিন্টু আবার মণির পেছনে লাইন মারছে বুঝেছো।”

হেসে ফেলে দানা, ওর কাজের মেয়ের পেছনে যে পিন্টু লাগবে সেটা ভালো ভাবেই জানতো। মেয়েটা কালো হলেও দেখতে শুনতে ভালো, পিন্টু এলেই আগ বাড়িয়ে জল দেয়, ওর চোখের সামনে বেশ ঘোরাঘুরি করে।

ঠিক পরেরদিন দুপুর নাগাদ নয়না দানাকে ফোনে জানায় একবার বিমানের সাথে দেখা করতে। দানা জিজ্ঞেস করলে নয়না জানিয়ে দেয় দুর গ্রামের বাগান বাড়িতে বিমান চন্দ দানার সাথে দেখা করতে চায়। এই মহানগরের বুকে দেখা সাক্ষাৎ করা বিপদজনক, পাছে বাপ্পা নস্করের কানে কথা চলে যায় সেই ভয়ে। বিকেলের দিকে আক্রাম নাসিরকে সাথে নিয়ে দানা বে্রিয়ে পড়ে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে মহুয়া ওকে বারেবারে সাবধান করে দেয়। দেবুকে ফোন করে দানা, জানতে চায় বিমান চন্দ একা না সাথে কেউ আছে। দেবু ওকে জানায় যে বাড়ির মধ্যে বিমান চন্দ, নয়না, সমুদ্র ছাড়া আর কেউ নেই। সেই শুনে দানা স্বস্তির শ্বাস নেয়। ওর শুধু একমাত্র ভয় মহুয়া আর রুহিকে নিয়ে। এই দুইজনে যদি পাশে না থাকতো তাহলে অনেকদিন আগেই খুনোখুনিতে নেমে পড়তো।

গ্রামের ওই নির্জন বাগান বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। বুকের ভেতর টানটান উত্তেজনা, বাড়ির ভেতরে কি শুধু মাত্র তিনজন না আরো কেউ অন্য কোথাও লুকিয়ে আছে? দেবু নিশ্চয় বিমানের খাস লোক। ওকে কতটা বিশ্বাস করা যেতে পারে। সঠিক জানা নেই দানার। বড় বড় গাছের মাঝখান দিয়ে গাড়ি চালিয়ে বাড়ির সামনে এসে পৌঁছায়। বাড়ির সামনে দুটো গাড়ি পাশাপাশি দাঁড় করানো। চিনতে অসুবিধে হয় না, একটা নয়নার অন্যটা বিমান চন্দের। ওর গাড়ির আওয়াজ শুনে সমুদ্র বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। পকেটের পিস্তল দেখে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে দানা, পেছন পেছন আক্রাম আর নাসির।

সমুদ্র এগিয়ে এসে ওদের তিনজনকে দেখে বলে, “শুধু মাত্র তুই ভেতরে ঢুকতে পারবি আর কেউ নয়।”

দানা মৃদু হেসে বলে, “ওরা বাড়িতে ঢুকতে আসেনি রে। চল চল ভেতরে চল।” ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে ফিসফিস করে সমুদ্রকে জিজ্ঞেস করে, “কি রে বিমানের কি মতিগতি রে?”

সমুদ্র বাঁকা হেসে বলে, “শালা কুত্তা, তুই এই কয়দিনে অনেক ঝানু মাল হয়ে গেছিস। যাই হোক বিমানের মতিগতি ভালোই আছে।” চোখ টিপে চোরা হেসে বলে, “বুঝতেই পারছিস পাশে নয়নাকে পেয়েছে।” দুইজনেই হেসে দেয় ওই কথায়।

যদিও এর আগে অনেক বার নয়নাকে নিয়ে এই বাড়িতে এসেছে তবে দানা কোনোদিন ভেতরে ঢোকেনি। ছোট বাড়ি তাই বসার ঘর ছোট। একটা ছোট কাঁচের টেবিলের চারপাশে ছোট ছোট বেশ কয়েকটা সোফা। ওকে দেখেই নয়না অমায়িক হেসে উঠে দাঁড়ায়। বিমানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। বিমান আপাদমস্তক দানাকে জরিপ করে। কিছুদিন আগে এই ছেলেটা নয়নার গাড়ি চালাতো আর আজকে ওকে পাশে বসিয়ে কথা বলতে হবে ভেবেই ওর চোখমুখ কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু নয়না যা বলেছে সেটা যদি দানা করতে পারে তাহলে অনেক লাভবান হবে। দানা অল্প মাথা নুইয়ে বিমানের সামনের একটা সোফায় বসে পড়ে। ওদের মাঝখানের সোফায় নয়না বিরাজমান।

বিমান সোজাসুজি দানাকে প্রশ্ন করে, “দেখো দানা, নয়নার কথা শুনেই তোমাকে ডাকা। আমি কি চাই সেটা আশা করি ভালো ভাবে জানো। আগে সেটা সম্পন্ন হোক তারপরে মোহনের সাথে আমি তোমার দেখা করিয়ে দেব।”

দানা জানে এইখানে ওর বস্তির মানসিকতা নিয়ে থাকলে চলবে না। ওকে এক ধুরন্ধর খেলোয়াড় হতে হবে। চোয়াল চেপে বাঁকা হেসে বিমানকে বলে, “আপনি আগে মোহন খৈতানের অর্ধ সমাপ্ত প্রকল্প গুলো আমার নামে করান তারপরে বাপ্পা নস্করকে সরানোর ব্যাবস্থা আমি করবো।”

বিমান ধূর্ত এক হাসি দিয়ে বলে, “তোমার মতন হাজার হাজার মানুষ চরিয়ে খাই। আগে তুমি তোমার কাজ করো তারপরে আমি করবো।”

দানা হাত মুঠো করে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। বিমান চন্দের দিকে হিমশীতল চাহনি দিয়ে বলে, “বাপ্পা নস্করকে সরানোর ইচ্ছে আমার নেই বিমান বাবু। তার দৌলতে আমার ব্যাবসা ভালোই চলছে। মাঝ পথে বাপ্পা নস্করকে উস্কিয়ে সেই ব্যাবসায় ক্ষতি আমি করতে চাই না।” নয়নার দিকে তাকিয়ে দাঁত পিষে বলে, “বাকিটা আমি কি করতে পারি সেটা নয়না আপনাকে ভালো করে বুঝিয়ে দেবে। আমি আসি কেমন।”

ওই চাহনি দেখে নয়নার বুক এক অজানা শঙ্কায় কেঁপে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে দানার হাত ধরে বলে, “না না যেও না। বিমান করবে।” বিমানের দিকে ঝাঁঝিয়ে ওঠে নয়না, “তুমি কি করছো? এটা কেন বুঝতে পারছো না যে দানা আমার খুব বিশ্বাসী। সেদিন তোমাকে আর আমাকে একসাথে দেখার পরেও কিন্তু বাপ্পার সামনে এখন পর্যন্ত মুখ খোলেনি। বুঝতেই পারছো দানা আমার কথা কতটা মেনে চলে। তুমি মোহনের সাথে কথা বলো। ওকে বুঝাও, ওকে মানাও। এইভাবে প্রকল্প গুলো পড়ে থাকলে তোমার লোকসান মোহনের লোকসান। তার চেয়ে ওই প্রকল্প গুলো দানার নামে করে দিতে পরামর্শ দাও। বাপ্পা নস্কর ভাববে দানা তোমাদের হাতের মুঠোতে করে ফেলেছে। বাপ্পা নস্কর নিশ্চিন্ত হলেই দানা ওর ওপরে চরম আঘাত হানতে পারবে।”

মুখের সামনে হাত মুঠি করে বিমান অনেকক্ষণ চুপচাপ দানার দিকে তাকিয়ে চিন্তা মগ্ন হয়ে যায়। দানাও চুপচাপ বিমান চন্দকে আর নয়নাকে পড়ার চেষ্টা চালায়। ইষ্ট নাম জপ করে দানা, এইবারে ধরা পড়ে যাবে না তো এই দুইজনার কাছে। দুইজনেই একসাথে জালে উঠে গেছে। চোখে মুখে জয়ের ছোঁয়া কিন্তু এই ভাবব্যক্তি কিছুতেই ওদের সামনে দেখানো যাবে না।
বেশ কিছুক্ষন পরে গলা খ্যাঁকরে দানা বিমানকে জিজ্ঞেস করে, “কি ভাবলেন বিমান বাবু? হাত বাড়াবেন না আমি চলে যাবো। বুদ্ধিমতী নয়না কিন্তু সঠিক বুদ্ধি দিয়েছে। মোহন খৈতানের প্রকল্প গুলো আমার হাতে চলে এলে বাপ্পা নস্কর নিশ্চিন্ত হয়ে যাবে আমি ওর লোক আর তখনি ওকে আঘাত করার মোক্ষম সুযোগ চলে আসবে।”

বিমান চন্দ অনেক ভেবেচিন্তে দানার কাছ থেকে দুইদিনের সময় চায়। নয়নাকে বুদ্ধিমতী বলাতে খুব খুশি। মনে প্রানে দানাকে ধন্যবাদ জানায়। গাড়িতে ওঠার আগে দানার পাশ ঘেঁসে দাঁড়িয়ে কানে কানে বলে, “তোমার স্ত্রী সত্যি ভারী সুন্দরী, তাই বলে কি আমাকে ভুলে যাবে?”

দানা মাথা নাড়িয়ে ওর গালে আলতো টোকা দিয়ে বলে, “ইসসস তুমি না সত্যি বড় মিষ্টি। যাই হোক পারলে এই আলোচনার রেকর্ডিংটা দিও।”

নয়না মিচকি হেসে মাথা দোলায়, “সমুদ্র সব রেকর্ড করেছে। তোমার চিন্তা নেই, দিয়ে দেব।” দানার হাত ধরে অনুরোধ করে, “একদিন বিকেলে মিসেস আর মেয়েকে নিয়ে আমার বাড়িতে এসো।”

দানা মাথা দোলায়, সময় করে একদিন আসবে। তবে মনের গভীরে এক শঙ্কা দেখা দেয়। নয়না এই হাসি হাসি চেহারার পেছনে কোন ষড়যন্ত্র লুকিয়ে সেটা কিছুতেই ধরতে পারে না। মনে মনে একটা জয়ের হাসি নিয়ে ওইখান থেকে বেরিয়ে পড়ে দানা।

বাড়িতে এসে মহুয়াকে সব খুলে বলতেই ওকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা চুমু খায়। একে একে ওদের জালে জড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে সবাই, কিন্তু প্রশ্নের উত্তর এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। কঙ্কনা আর নাস্রিনের খবরাখবর নেই, রমলা বিশ্বাস না বিমান চন্দ, কে মৈনাকের আসল খুনি সেটাও জানা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত রমলার পেছনে চর নিযুক্ত করা হয়নি, রমলার দুর্বলতা শুধু মাত্র নয়না জানে কিন্তু ওকে বেশি চেপে ধরলে উলটো ফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

সেইদিন রাতে নয়না ওকে ফোনে জানায় যে বিমান রাজি আছে মোহনের সাথে দেখা করানোর জন্য আর মহুয়ার নির্দেশ অনুযায়ী ওদের আলোচনা সমুদ্র রেকর্ড করে নিয়েছে। পরের বার দেখা হলে সেই টেপ দিয়ে দেবে।
রুহির জন্মদিন, দিন দুয়েক আগে থেকেই আজমের থেকে মহুয়ার বাবা মা এসে গিয়েছিলেন। মহুয়ার বাবা মাকে দেখে দানা বেশ বিব্রত বোধ করে, জানে মহুয়ার বাবা মা রক্ষণশীল রাজস্থানি পরিবার। বিধবা মেয়ে আবার একটা প্রেম করছে আর বিয়ে ছাড়াই ওর সাথে আছে সেটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়। লোকেশের খাঁচা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে আর দানার সাহচর্যে এই কয়দিনে মহুয়া অনেক বদলে গেছে। আজমেরের সেই ঘরের মধ্যে মুখ লুকিয়ে থাকা মেয়ে আর নেই সেই স্থানে দৃঢ় এক নারী দাঁড়িয়ে। মহুয়া পরিস্কার নিজের বাবা মাকে দানার বিষয়ে জানিয়ে দেয়, ওর রুহির “ডাডা” কে যেন এই নিয়ে যেন বিশেষ প্রশ্ন ওদের না করা হয়।

সকাল থেকেই বাড়িতে লোকজন, লোকজন বন্ধুবান্ধব মানে সবাই দানার লোক, কালী পাড়ার মানুষ। মদনা, বলাই, মনা পিন্টু বাজারে ব্যাস্ত। বিকেলে মহেন্দ্র বাবু আসবেন, সাথে শঙ্কর আর রামিজ সপরিবারে আসবে। বাকি ছেলেরা ঘর সাজাতে ব্যাস্ত। পিন্টু আবার কাজের মেয়ে মণির পেছনে লাগতে ব্যাস্ত। কেষ্ট, রজনী আর সদ্যজাত পুত্রকে ওদের বাড়িতে রেখে দিয়ে ট্যাক্সি চালাতে বেরিয়ে যায়। অনেকদিন পরে সবাইকে একসাথে দেখে দানা বেশ খুশি। মহুয়ার কোন বন্ধু বান্ধবী নেই এই শহরে, বিয়ের পর থেকে একরকম গৃহ বন্দী হিসাবেই জীবন যাপন করে গেছে। দানার সঙ্গ পাওয়ার পরেই মুক্তির স্বাদ আস্বাদন করেছে। তাই ওর বন্ধু বান্ধবীরাই মহুয়ার কাছের লোক। ওকে বাঁচানোর সময়ে এরাই দানাকে সাহায্য করেছিল। ছোট ছোট পায়ে সারা ঘর মাতিয়ে রুহি নেচে বেড়ায়। জিজ্ঞেস করলেই উত্তর দেয়, “মাই হ্যাপি বার্ডে, মাই হ্যাপি বার্ডে।” বলে একটু নেচে নেয়।

সন্ধ্যের পরেই ঘর ভর্তি হয়ে যায় লোকজনে। মনা আর পিন্টু বসার ঘর, বেলুন, ফিতে আর ফুল দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে দিয়েছে। মদনা মনে হয় শহরের কেকের দোকানে হত্যে দিয়ে বসে ছিল, চার থাক ওয়ালা একটা বিশাল সাদা ক্রিম কেক নিয়ে ঘরে ঢোকে। কেকের আকার রুহির অর্ধেক, কেক দেখে রুহিকে আর থামানো যায় না, এখুনি কেক খাবে বলে বায়না। বরুন, সুনিতা বৌদি আর ওদের ছেলে মেয়েকে নিয়ে কেষ্ট বিকেল বেলা দানার বাড়ি পৌঁছে যায়। মহেন্দ্র বাবুর জন্য সবাই অপেক্ষা করে। বেশ কিছু পরে শঙ্কর আর রামিজের পরিবারের সাথে মহেন্দ্র বাবু এসে যান।

কেক কেটে খাওয়ার চেয়ে বেশি মাখামাখি হয়, রুহি একটু খানি খেয়ে নিজেই মেখে সাদা পুতুল হয়ে বসে পড়ে। সেই নিয়ে খুব হাসা হাসি। মহেন্দ্র বাবু, দানা আর মহুয়াকে একসাথে দেখে বেশ খুশি।

মহুয়ার মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে একটা দামী সুন্দর সোনার হার উপহার দেন আর বলেন, “এইবারে সোজা বিয়ে খেতে চাই বৌমা পরেরবার যেন ওই সিঁথিতে সিন্দুর দেখি।”

মহুয়া লাজুক হেসে মহেন্দ্রবাবুকে বলে, “আপনার ছেলে দেরি করলে আমি কি করতে পারি বলুন।”

দানা মাথা চুলকায় এইবারে বিয়েটা সেরে ফেলতে হয়। চোখ পাকিয়ে মহুয়ার দিকে তাকিয়ে জানিয়ে দেয় রাতে ওকে আর আস্ত রাখবে না একদম ফুঁড়ে বেরিয়ে যাবে। দুষ্টুমি ভরা চোখের চাহনি দেখে মহুয়ার কান গাল লজ্জায় লাল হয়ে যায়।

শঙ্কর আর রামিজ ওকে একদিকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলে, “হ্যাঁ রে ফারহান কই?”

সত্যি’তো এতক্ষণ ফারহানের কথা মনে ছিল না কারুর। সঙ্গে সঙ্গে দানা, ফারহানকে ফোন করে, “এই বানচোদ, গান্ডুচোদা কোথায় গাঁড় মারাচ্ছিস বে? এখুনি বাড়ি পৌঁছা না হলে তোর গাঁড় ফুটিফাটা করে দেব।”

ফারহান ঠিক দরজায় ছিল পাশে জারিনা। ফোন ছেড়ে চেঁচিয়ে বলে, “কুত্তার বাচ্চা একটু আস্তে চিল্লা শালা।”

জারিনা আসবে এটা সবার আশাতীত, দানার মুখে জারিনার নাম শুনেছে শুধু, এইবারে চাক্ষুষ দেখে মহুয়া বেশ খুশি। যদিও ওদের দৈহিক সম্পর্কের ব্যাপারে সব জানে তবে এটাও জানে সেই সব শুধু কামের বশে দানা লিপ্ত হয়েছিল। ওর সঙ্গে থাকার পরে দানা অন্য কোন নারীর দেহ স্পর্শ করেনি।

জারিনা মহুয়াকে দেখে বলে, “তুমি সত্যি মিষ্টি দেখতে, তাই দানা আর আমার কাছে আসে না।”

দানা ছাড়া অন্য কারুর মুখে এই ধরনের কথাবার্তা শুনতে মহুয়া একদম অভ্যস্ত নয়। সঙ্গমের বার্তালাপ শুধু মাত্র প্রেমিকের মুখেই মানায় তাই জারিনার কথায় বেশ বিব্রত বোধ করে। সঙ্গে সঙ্গে ফারহান অবস্থার সামাল দেয়, “আরে না না, আজকাল দানা খুব ব্যাস্ত তাই দেখা সাক্ষাৎ একটু কমে গেছে।” জারিনার কান টেনে ফিসফিস করে বলে, “কোথায় কি বলতে হয় তাও কি শিখিয়ে দিতে হবে?”

জারিনা বুঝে যায় তাই জিব কাটে। ফারহান সবাইকে জানায় দুই মাস পরে ওদের নিকাহ। রুহির জন্মদিনেই সবাইকে নিমন্ত্রন জানিয়ে যাচ্ছে তবে পরে কার্ড দেবে সবাইকে। হাসি হইচই হট্টগোল মিলিয়ে মেলা বসেছে বাড়িতে। এত খেলনা আর পুতুল পেয়ে রুহি কি করবে ভেবে পায় না। জারিনা আর ফারহান ওর জন্যে একটা জোড়া সোনার বালা উপহার দেয়। দানা মানা করা সত্ত্বেও ফারহান জোর করে রুহিকে ওই বালা পরিয়ে দেয়।

এই হই হট্টগোলের মাঝে আবার শঙ্কর আর রামিজ দানাকে একপাশে ডেকে নিয়ে যায়।

দানা কারন জিজ্ঞেস করলে রামিজ ওকে বলে, “শোন, সঙ্গীতার সম্বন্ধে তোর সাথে জরুরি কথাবার্তা আছে।”

উৎসুক দানা জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার রামিজ ভাই?”

শঙ্কর ওকে বলে, “সঙ্গীতার মুখ থেকে সব কিছু শোনার পরে আমরা রমলা বিশ্বাসের ওপরে নজর রেখেছিলাম। সব কিছু তথ্য প্রমান হাতে আসার পরেই তোকে জানাবো ভেবেছিলাম। রমলা বিশ্বাসের একটা ছেলে আছে।”

দানা প্রশ্ন করে, “তাতে অসুবিধে কোথায়?”

শঙ্কর গলা নামিয়ে ওকে বলে, “ওই ছেলে রমলার অবৈধ পুত্র। বর্তমান রাজনেতা দুলাল মিত্রের ঔরসে ওই ছেলের জন্ম। রমলা যখন কলেজে পড়তো তখন দুলাল মিত্রকে ভালবাসতো, সেই সময়ে ওই ছেলের জন্ম হয়। কিছু পারিবারিক কারনে দুইজনের আর বিয়ে হয় না কিন্তু রমলা ওই সন্তানের জন্ম দেয়। দুলাল মিত্র তখন সবে রাজনীতিতে ঢুকেছে, এই কালিমা ঢাকার জন্য ওরা ওই সদ্যজাত শিশুকে একটা অনাথালয়ে দিয়ে দেয়। দুলাল মিত্র পরে বিয়ে করে ওর বাবার চেনাশোনা একজনের সাথে আর রমলার বিয়ে হয়ে গেল অন্য একজনের সাথে। তবে ওরা দুইজনে ওই ছেলের ওপরে নজর রেখেছিল। বর্তমানে বেলপাহাড়ির এক আবাসিক স্কুলে থেকে সেই ছেলে পড়াশুনা করে। এই ব্যাপার কাক পক্ষীতেও জানে না, না দুলালের স্ত্রী জানে না রমলার স্বামী জানে। ওই ছেলের পড়াশুনার খরচ খরচা সব কিছু দুলাল মিত্র দেয়। মাঝে মাঝে রমলা আর দুলাল ওই স্কুলে গিয়ে ছেলের সাথে দেখা করে আসে তবে ছেলে এখন পর্যন্ত বাবা মায়ের আসল পরিচয় জানে না। যে অনাথালয়ে ছেলেটা বড় হয়েছিল সেইখানের অধ্যাপিকা শুধু এদের আসল পরিচয় জানে।”

দানা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, “তোমরা এত গোপন খবর জানলে কি করে?”

রামিজ বলে, “অনেকদিন থেকেই ওকে অনুসরন করছিলাম। একদিন দেখলাম রমলা, পরিবার ছাড়াই গাড়ি নিয়ে শহরের বাইরে ঘুরতে গেল। সন্দেহ হল আর আমরা পিছু নিলাম। মহানগর ছাড়িয়ে অনেকদুরে একটা হোটেলে দেখালাম রমলা বিশ্বাসের সাথে দুলাল মিত্র দেখা করল। গভীর চক্রান্তের গন্ধ পেলাম, আর পেছন ছাড়লাম না। দুইজনে ওই অনাথালয়ে গেল সেই ছেলেটার সাথে দেখা করতে। বেশ বড় ছেলে, একদম মায়ের মতন দেখতে। ওকে দেখেই সবকিছু আমার সামনে পরিষ্কার হয়ে গেল।”

দানা বুক ভরে শ্বাস নেয়, তাহলে এই সেই দুর্বলতা যার কথা নয়না ওকে বলেছিল। এইবারে রমলাকে কোণঠাসা করা সহজ হয়ে যাবে। এইবারে মৈনাকের খুনির ব্যাপারে জানা যাবে, সঙ্গীতার চোখের জলের প্রতিশোধ নেওয়া যাবে।
 
পর্ব তেরো – চৌষট্টি ছক (#5-95)

মহুয়াকে সব কিছু খুলে জানাতে, মহুয়া ওকে সাবধান করে দেয়। রমলা বিশ্বাস আগে সাংবাদিক ছিল, বর্তমানে নয়নার কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নিজের একটা পত্রিকার সম্পাদিকা হয়েছে। মিডিয়া জগতে অনেক চেনাজানা, সেটা ইন্দ্রাণীর সাথে ওই পার্টিতে গিয়ে দানা বুঝেছিল। এর সাথেও বেশ মেপে চলতে হবে দানাকে। সারা রাত ধরে দুইজনে অঙ্ক কষে যায়, কি ভাবে রমলাকে বাগে আনা যায়। এই রমলা, নয়নাকে ইন্দ্রাণী আর দানার সম্পর্কের ব্যাপারে জানিয়েছিল তাই নয়না ওকে হুমকি দেওয়ার সাহস পেয়েছিল। তবে এই অবৈধ পুত্রের সংবাদ খুব গোপন, একবার এই খবর উজাগর হলে দুলাল মিত্রের নামে আর রমলার নামে কলঙ্ক রটে যাবে। এই খবর নিশ্চয় নয়না জানে আর এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই রমলাকে চেপে ধরে সঙ্গীতার খবর পায়। এই জারজ সন্তানকে ঢাল করেই রমলাকে ফাঁদে ফেলতে হবে। একবার এই ছেলেটার সাথে দেখা করা যাক।

ভোরের বেলায় দানা, রামিজকে ফোন করে বাড়িতে ডাকে আর সেই আবাসিক স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যাক্ত করে। মহুয়ার বুক চাপা উত্তেজনায় ভরে ওঠে, এক এক করে চারপাশে ফাঁদ পেতে চলেছে কিন্তু কখন কোনদিক থেকে ওদের ওপরে আঘাত আসবে সেটা এখন বুঝে উঠতে পারছে না। নয়না আঘাত করবেই, বিমানের কাজ শেষ হলেই নিশ্চয় দানাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। এইবারে রমলাকে আঘাত করলে রমলা নিশ্চয় চুপচাপ বসে থাকবে না পাল্টা আঘাত করবেই।

গাড়ি নিয়ে রামিজ আর শঙ্করকে নিয়ে দানা বেরিয়ে পড়ে। মহানগর থেকে ওই পাহাড়ি আবাসিক স্কুল অনেকদুর। রাস্তায় দানা নিজের পরিকল্পনার সম্বন্ধে রামিজ আর শঙ্করের সাথে শলা পরামর্শ করে। রামিজ আর শঙ্কর উঁচিয়ে, হাতে পেলে যে কারুর মাথা ধড় থেকে নামিয়ে দেবে। কিন্তু দানা নিজেদের হাতে রক্ত মাখাতে নারাজ। ওইখানে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে যাবে। পথে যেতে যেতে নয়নাকে ফোন করে রমলার ফোন নাম্বার জেনে নেয় দানা। প্রথমে নয়না কারন জিজ্ঞেস করলে, দানা বলে যেহেতু নয়নাকে ওর আর ইন্দ্রাণীর সম্পর্কে জানিয়েছিল তাই একবার রমলার সাথে কথা বলতে চায়।

সারাটা পথ তিনজনে পালা করে গাড়ি চালিয়ে বিকেল নাগাদ দুর পাহাড়ি স্কুলে পৌঁছে যায়। রাতে আবাসিক স্কুল বন্ধ থাকায় কারুর সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা হয়ে ওঠে না। সকালেই তিনজনে স্কুলে গিয়ে ছেলেটার বিষয়ে জানতে চায়। অধ্যাপিকা কিছুতেই অনুমতি ব্যাতিত ছেলেটার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করাতে নারাজ। দানা ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়, সঙ্গে সঙ্গে রমলাকে ফোন করে। অচেনা নাম্বার থেকে ফোন পেয়ে রমলা আগন্তুকের পরিচয় জিজ্ঞেস করে।

দানা মৃদু হেসে উত্তর দেয়, “আমি বিশ্বজিৎ মন্ডল ওরফে দানা, আশা করি এইবারে চিনতে পারছেন।”

রমলা হেসে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ হ্যাঁ চিনতে পেরেছি। তুমি নয়নার...”

দানা বলে, “হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। আমি এক সময়ে নয়নার গাড়ি চালাতাম।”

রমলা প্রশ্ন করে, “হটাত কি মনে করে ফোন করা হল? ইসস তুমি না, ইন্দ্রাণীর কি খবর?”

দানার চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, বুঝতে বাকি থাকেনা এই মহিলাই নয়নাকে ইন্দ্রাণীর বিষয়ে জানিয়েছে। দানা কঠিন কণ্ঠে প্রশ্ন করে, “তুমি নয়নাকে সঙ্গীতার খবর দিয়েছিলে? সত্যি সত্যি উত্তর দাও।”

সরাসরি প্রশ্ন করাতে রমলা ঘাবড়ে যায়, কিন্তু সেই অনুভুতি লুকিয়ে কঠিন কণ্ঠে উত্তর দেয়, “আমি কাকে কি বলেছি তাতে তোমার কি দরকার। তুমি সামান্য একজন গাড়ির চালক, নিজের চরকায় তেল দাও।”

দানা পাল্টা আক্রমন করে রমলাকে, “দেখো রমলা, তুমি নয়নাকে সঙ্গীতার খবর দিয়েছিলে তাই আজ মৈনাক মারা গেছে। তুমি সঙ্গীতাকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলে ঠিক কি না বলো?”

রমলা দাঁতে দাঁত পিষে বলে, “কি যা তা বলছো তুমি? আমি কেন সঙ্গীতাকে মারার চেষ্টা করবো? আমি মৈনাককে চিনিনা আমি কাউকে মারিনি।”

দানা ক্রুর হাসি দিয়ে বলে, “তুমি সঙ্গীতার সব খবর জানো রমলা, সোজা কথায় মানবে না তাহলে। জানো আমি এখন কোথায়?”

রমলা জিজ্ঞেস করে, “কোথায়?”

দানা জানায়, “আমি বেলপাহাড়ির আবাসিক স্কুলে। তোমার ছেলে বেশ বড় হয়ে গেছে রমলা। শেষ কবে এসেছিলে দেখা করতে? আমি অনেক চকোলেট আর একটা ভিডিও গেম এনেছি ওর জন্যে। বলতো ওর হাতে দেবো না তোমার জন্য অপেক্ষা করবো?”

ওইপাশে রমলার শরীর রক্ত শুন্য হয়ে যায়, তাও দানাকে বলে, “কি যা তা বলছো তুমি, আমার কোন ছেলে নেই আমার শুধু দুই মেয়ে।”

দানা বাঁকা হেসে বলে, “ঠিক আছে তাহলে অধ্যাপিকার সাথে একবার কথা বলে নাও যাতে আমি একটু ছেলের সাথে দেখা করতে পারি।” বলে সামনে বসা অধ্যাপিকার হাতে ফোন ধরিয়ে দিতে যায়।

সঙ্গে সঙ্গে রমলা ওইদিক থেকে আঁতকে ওঠে, “না দানা প্লিস, আমি সব বলছি কিন্তু প্লিস ছেলের সামনে আমাকে ছোট করে দিও না দানা, আমি তোমার পায়ে পড়ি।”

দানা চিবিয়ে চিবিয়ে বলে, “আমি আগামী কাল বিকেল পর্যন্ত এইখানে থাকব, এর মধ্যে যদি এইখানে এসে দেখা করে যাও তাহলে ভালো না হয় যাওয়ার আগে তোমার ছেলের আসল পরিচয় বিশ্বের কাছে উজাগর করে দেব। একজন বড় সম্পাদিকার নামে কলঙ্ক। সামনে নির্বাচন সেই সাথে রাজনৈতিক দল নেতা দুলাল মিত্রের নামে কলঙ্ক।”

রমলা চাপা কণ্ঠে বলে, “তুমি ওইখানে অপেক্ষা করো দানা, আমি এখুনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছি। রাতের মধ্যে আমি পৌঁছে যাবো প্লিস আমার ছেলেকে এর মধ্যে জড়িও না দানা আমি তোমার পায়ে পড়ি।”

দানা বাঁকা হেসে বলে, “ঠিক আছে চলে এসো আমি অপেক্ষা করে থাকব।”

আঘাতটা একদম ঠিক জায়গায় লেগেছে। মৈনাকের খুনিকে হাতের সামনে পাওয়া যাবে। দানা এটাও জানে এতক্ষণে দুলাল মিত্রকে রমলা সব ঘটনা খুলে বলে দেবে আর নয়নাকে এই সব জানাবে। রমলার সব ক্রোধ নিশ্চয় নয়নার ওপরে পড়বে কারন এই দুর্বলতার ফলে রমলা ওকে সঙ্গীতার খবর দিতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু নয়নাকে বেশি চাপ দিলেই ফেটে পড়তে পারে তাই রমলাকে সাবধান করে দেয়, “আর একটা কথা, নয়নাকে এই বিষয়ে কিছু জানাবে না, কারন নয়না আমাকে কিছুই বলেনি। আমি জানি তুমি নয়নার ওপরে সন্দেহ করেছো কিন্তু নয়না আমাকে তোমার ছেলের ব্যাপারে কোন খবর দেয়নি।”

রমলা কাঁপা কণ্ঠে উত্তর দেয়, “না না আমি কাউকে কিছু জানাবো না। তুমি ওইখানে অপেক্ষা করো আমি আসছি। তোমার সাথে আরও অনেক কথা আছে দানা। আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো এই শহর ছেড়ে চলে গেছো কিন্তু সেদিন নয়নার পার্টিতে তোমাকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলাম।”

ঠিক কি বলতে চায় রমলা? ওর সাথে আর কি কথা থাকতে পারে প্রাক্তন সাংবাদিক, বর্তমান সম্পাদিকা রমলা বিশ্বাসের? রমলা কি মৈনাকের খুনের বিষয়ে কিছু আলোকপাত করতে সক্ষম হবে? হতে পারে, সাংবাদিক মানুষ অনেক খবরা খবর রাখে রমলা। তবে নয়না কম যায় না, গুপ্তচর লাগিয়ে অনেক খবর বের করতে ওস্তাদ।

সন্ধ্যে নাগাদ রমলা বেলপাহাড়ি পৌঁছে যায়। রমলা একাই এসেছে, দানা নিজের হোটেলের ঠিকানা জানিয়ে দেয়। রমলা সেই হোটেলে একটা ঘর নেয় রাতের জন্য। রাতের খাওয়ার পরে দানা রমলাকে নিজের কামরায় ডাকে কথাবার্তা বলার জন্য। দানা চুপচাপ রমলার অপেক্ষায়, ওর কাছ থেকে অনেক কিছু জানার আছে, মৈনাকের খুনির সঠিক খবর এর কাছ থেকেই পাওয়া যাবে। রামিজ আর শঙ্করকে ওদের দেখা সাক্ষাৎ সবকিছু ক্যামেরা বন্দী করতে পরামর্শ দেয়। সেই মতন ঘরের এক কোনায় একটা ছোট ক্যামেরা লুকিয়ে রাখা হয়।

এই একদিনেই রমলা অনেক শুকিয়ে গেছে, ধীর পায়ে ঘরে ঢুকে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে। একদিকে রামিজ বসে অন্যপাশে শঙ্কর বসে মাঝখানে দানা। দানা একটা সোফায় রমলাকে বসতে অনুরোধ করে।

রমলা এপাশ ওপাশ তাকিয়ে দানাকে জিজ্ঞেস করে, “কি চাও তুমি?”

কঠিন গম্ভির কণ্ঠে দানা প্রশ্ন করে, “প্রশ্ন আমি করবো তুমি উত্তর দেবে। প্রথমে এটা বলো, কেন তুমি সঙ্গীতার সম্বন্ধে নয়নাকে জানিয়েছিলে? জানো তারপরে সঙ্গীতার সাথে কি হয়েছে? নয়নার বাড়িতে সঙ্গীতাকে বেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে। ওর প্রেমিক মৈনাকের খুন হয়েছে। এইসব শুধু তোমার জন্য হয়েছে রমলা।”

রমলা আক্ষেপ করে মাথা দোলায়, “সত্যি বলছি দানা, সঙ্গীতার জন্য আমার সত্যি দুঃখ হচ্ছে। আমি আমার ছেলের নামে শপথ করে বলছি ওর ক্ষতি হোক সেটা কোনোদিন চাইনি আমি।” কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে, “আমি জানি না তুমি আমার ছেলের সম্বন্ধে কার কাছ থেকে শুনেছো, কিন্তু নয়নাও এই গোপন খবর জানে।”

দানা চিবিয়ে চিবিয়ে রমলাকে বলে, “নয়নাকে এইসব থেকে দূরে রাখো রমলা। নয়না আমাকে কিছুই বলেনি, বিশ্বাস না করলে এখুনি ওকে ফোন করে জিজ্ঞেস করতে পারো।”

ওই হিমশীতল কণ্ঠস্বর শুনে রমলা কেঁপে ওঠে, “নয়না আমাকে কলঙ্কের হুমকি দিয়ে সঙ্গীতার খবর জানতে চায়। আমার কিছু করার ছিলোনা দানা, আমি ওকে দিতে বাধ্য হই। আমি সত্যি জানতাম না যে নয়না ওকে ধর্ষণ করাবে। জানলে কোনদিন সঙ্গীতার খবর ওকে দিতাম না। বিশ্বাস করো দানা, অনেকদিন পর্যন্ত ওকে আমি ওকে লুকিয়ে রেখেছিলাম। আমি সঙ্গীতার খারাপ কোনোদিন চাইনি।” ওর পার্টির কথা দানার মনে পড়ে যায়, রমলা মুখ খোলেনি নয়নার কাছে। তবে কে খুন করতে পারে মৈনাককে? ওকে অবাক করে রমলা বলে, “তবে আমি মনে হয় জানি মৈনাককে কে খুন করতে পারে।”

সঙ্গে সঙ্গে দানা রামিজ আর শঙ্করের দিকে তাকায়। দানা উৎসুক হয়ে ওঠে, “কে খুন করতে পারে। কি জানো তুমি?”

রমলা ওকে বলে, “সত্যি বলতে কি জানো। আমি কিছু গোপন খবর পেয়েছিলাম আর তার থেকেই অনেক কিছু জেনেছি।” চাপা উত্তেজনায় দানার শ্বাস আটকে যায়। রমলা কণ্ঠস্বর নিচু করে বলে, “মিসেস কঙ্কনা দেবনাথ নামে ইন্দ্রাণীর এক বান্ধবী আমাকে একটা সিডি দিয়েছিল।” কঙ্কনার নাম শুনতেই দানার শরীরের সকল ধমনী চাপা উত্তেজনায় টানটান হয়ে যায়। কঙ্কনা কিভাবে রমলাকে চেনে? রমলা ওকে বলে, “কঙ্কনা আমাকে যে সিডি দিয়েছিল তাতে প্রচুর গোপন কথোপকথন ছিল। কি ভাবে কঙ্কনা ওই সব কথাবার্তা রেকর্ড করেছিল সেটা আমার জানা নেই। তবে ওই সিডিতে আমি সিমোনের কথাবার্তা শুনেছি। কোন একজনকে ফোনে সঙ্গীতাকে খোঁজার আর তারপরে ওকে মেরে ফেলার পরামর্শ দিয়েছিল। আমি বুক ঠুকে বলতে পারি ফোনের ওইপাশের মানুষ বিমান চন্দ ছাড়া আর কেউ নয়। কারন সিমোনে, অত প্রান খুলে একমাত্র ওর স্বামীর বন্ধু বিমান চন্দের সাথেই কথা বলে আর কারুর সাথে নয়।”

দানার মাথায় বিজলীর ঝিলিক খেলে যায়। মনে পড়ে যায়, ওর সাথে যেদিন সিমোনের প্রথম দেখা হয় সেদিন ফোনে কোন একজনকে ওই সাংবাদিককে খোঁজার আর মেরে ফেলার পরামর্শ দিয়েছিল। দানা জিজ্ঞেস করে, “ওই সিডিতে আর কার কার কথাবার্তা ছিল একটু বলতে পারো?”

রমলা ওর হাতে একটা সিডি ধরিয়ে বলে, “অনেক বিত্তশালী ক্ষমতাশালী মহিলাদের কথাবার্তা এতে রেকর্ড করা আছে। সিমোনে খৈতান, রাগিণী ভৌমিক, নীলাঞ্জনা সেন, সুমিত্রা মল্লিক, কেতকী দাসগুপ্ত এমন অনেকের কথোপকথন আছে ওই সিডিতে।”

দানা বুঝতে পেরে যায় ওকে খুনের কারন কি হতে পারে, এটাও বুঝতে পারে কঙ্কনা ওকে জানায়নি কি ভাবে এই সব তথ্য যোগাড় করেছিল না হলে দানাকে হয়তো উল্টে চেপে ধরতো রমলা। যে যে মহিলাদের নাম নিয়েছে রমলা, একসময়ে সবার সাথে সহবাস করেছে দানা। কঙ্কনা আর নাস্রিন ওকে ব্যাবহার করে ওই বিত্তশালী ক্ষমতাশালী নারীদের অন্দর মহলে ঢুকে গেছিল। সাধারনত এই বড় লোকেরা, ড্রাইভার মালী চাকর পুরুষ বেশ্যা এদের মানুষ বলে গন্য করে না। এদের সামনেই অনেক সময়ে অনেক গোপন আলোচনা করে ফেলে, ভাবে এরা কাকে কি বলবে। সেই সুযোগ নিয়ে দানাকে ওই দুই নারী ব্যাবহার করে।

দানা চিবিয়ে চিবিয়ে রমলাকে প্রশ্ন করে, “তুমি এই কথোপকথন নিয়ে কি করলে?”

রমলা উত্তরে বলে, “আমি খবর বেচা কেনা করি দানা। এই রেকর্ড করা কথোপকথন খবর যোগাড় করতে আমার খুব কাজে আসে। মানে আমি কাউকে সরাসরি ব্লাকমেল করিনি তবে মাঝে মাঝে ভেতরের খবর হাসিল করার জন্য এই সব লাগে।”

এতক্ষণ এতসব জটিলতা শুনে দানার মাথা ভোঁ ভোঁ করতে শুরু করে দেয়। শঙ্কর আর রামিজ সিগারেট খাওয়ার নাম করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। ওদের মাথায় এই সব কথাবার্তার কিছুই ঢোকেনা। তবে দানার সামনে সব অঙ্ক মিলে যায়। কি কারনে কঙ্কনা আর নাস্রিন ওকে খুন করতে চেয়েছিল। কি কারনে বিমান চন্দ, সঙ্গীতাকে খুন করতে চেয়েছিল। সঙ্গীতা মারা যায়নি তবে ওর প্রেমিক মৈনাক ওই দুর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছে।

দানা পিস্তল বের করে গর্জে ওঠে, “তোমার জন্য মৈনাক আজকে এই পৃথিবীতে নেই।”

ওর গর্জন শুনে শঙ্কর আর রামিজ খোলা পিস্তল হাতে দৌড়ে ঘরে ঢুকে দেখে যে রমলা আতঙ্কে থরথর করে কাঁপছে আর দানা খোলা পিস্তল হাতে ওর দিকে উঁচিয়ে।

রমলা কাঁপা ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে, “দেখো আমি যা যা জানি সব তোমাকে বলেছি প্লিস আমাকে প্রানে মেরো না। দেখ দানা, আমার কিছু হলে দুলাল মিত্র কিন্তু তোমাকে ছেড়ে দেবে না।”

দানা চোয়াল চেপে চেঁচিয়ে ওঠে, “শালী রেন্ডী কুত্তি, সঙ্গীতার চোখের জলের মাশুল কে দেবে? কোনো দুলাল মিত্রকে আমি চিনি না বুঝলে রমলা। আমার গায়ে আঁচড় লাগলে আমি সবকিছু নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে চলে যাবো। এই সংবাদ মাধ্যমের দুনিয়ায় নিশ্চয় তুমি একা নও রমলা। তোমার বিপক্ষে অনেক সাংবাদিক সংস্থা নিশ্চয় মুখিয়ে আছে তোমাকে দমানোর জন্য। তাদেরকে খুঁজে বের করতে আমার সময় লাগবে না, মিসেস রমলা বিশ্বাস।”

রমলা হাত জোর করে প্রার্থনা করে, “তুমি যা বলবে আমি করতে রাজি আছি।”

দানা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে রাগ প্রশমিত করে রমলাকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি কঙ্কনাকে কি ভাবে চেন? কঙ্কনা কোথায় তুমি জানো?”

এতক্ষণ কথা বলার পরে রমলার গলা শুকিয়ে আসে, বোতল থেকে জল খেয়ে আবার বলতে শুরু করে, “আমি আগে থেকে কঙ্কনাকে চিনতাম না। তবে ওই পার্টিতে কঙ্কনা নিজেকে ইন্দ্রাণীর বান্ধবী হিসাবে আমাকে পরিচয় দেয়। আমিও ইন্দ্রাণীর সাথে ওর মেলামেশা দেখে বিশ্বাস করে নিলাম যে ওর বান্ধবী হয়তো ওর সাথেই এসেছে। সেই পার্টির প্রায় আড়াই তিন মাস পরে কঙ্কনা আর নাস্রিন আমার কাছে একটা সিডি নিয়ে আসে। এসে আমাকে বলে যে ওর কাছে অনেক গোপন তথ্য আছে যা আমি খবরের জগতে কাজে লাগাতে পারি। তবে তার জন্য অনেক মোটা অঙ্কের টাকা চায়, পাঁচ কোটি টাকা। সবে নয়নার কাছ থেকে এক কোটি টাকা নিয়ে আমি পত্রিকা শুরু করেছিলাম। আমার হাতে অত টাকা ছিল না তাই অগত্যা ওদের আমার পত্রিকার শেয়ার দিয়ে দিলাম। ওই দুইজন আমার পত্রিকার কুড়ি শতাংশের অংশীদার।”

এইবারে কঙ্কনার ঠিকানা পাওয়া যাবে। এতদিন কঙ্কনা আর নাস্রিনের ঠিকানা ছিল না, ফোনে ফোন করে পায়নি, ওদের ছবি পর্যন্ত দানার কাছে ছিলো না। এই নিয়ে ইন্দ্রাণীর সাথে কোনোদিন কথা হয়নি তাই জানতে পারেনি। ভেবেছিল একদিন কোন ভাবে খুঁজবে তবে সেটা রমলার হাত ধরেই ওর কোলে এসে পড়বে সেটা আশাতীত। ওকে খুন করতে চেয়েছিল ওই দুই ধূর্ত মহিলা, খুনের প্রতিশোধ নেবেই।

রমলাকে কঙ্কনা নাস্রিনের ঠিকানা জিজ্ঞেস করাতে রমলা ওকে জানায়, “কঙ্কনা আর নাস্রিন এই শহর ছেড়ে চলে গেছে।” দানা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে, তাহলে প্রতিশোধ কি ভাবে নেবে? রমলা ওকে বলে, “অন্য শহরের ঠিকানা ফোন নাম্বার সবকিছু আমি জানি। কিন্তু তুমি কঙ্কনাকে কি ভাবে চেন?”

দানা বাঁকা হাসি দিয়ে সত্য গোপন করে বলে, “ইন্দ্রাণীর বান্ধবী অনেকদিন দেখা সাক্ষাৎ নেই তাই জিজ্ঞেস করলাম। একসময়ে বেশ জানাশুনা ছিল কঙ্কনা আর নাস্রিনের সাথে। যাই হোক ওর ঠিকানা আর ফোন নাম্বার আমাকে দাও।”

রমলা ওকে কঙ্কনা আর নাস্রিনের ঠিকানা আর ফোন নাম্বার দেয়। দুর পশ্চিমের শহরে চলে গেছে দুইজনেই, হয়তো ওদের স্বামী বদলি হয়ে গেছে তাই এই শহর ছেড়ে চলে গেছে। অতদুরে গিয়ে সরাসরি কঙ্কনা আর নাস্রিনকে খুন করতে হবে ভেবেই দানা একটু চিন্তিত হয়ে যায়।

রমলা ওর চিন্তিত চেহারা দেখে বলে, “কঙ্কনা আর নাস্রিন দুই মাস পরে আমাদের পত্রিকার বার্ষিক সম্মেলনে আসবে। তুমি চাইলে আমি দেখা করিয়ে দিতে পারি। ওই সময়ে ওদের নাকি আরো কিছু কাজ আছে তাই প্রায় এক মাস মহানগরে থাকবে।”

ওই এক মাসেই যা করার করে ফেলতে হবে দানাকে। তবে সরাসরি খুনের দায়ে জেলে যেতে চায় না দানা। ঘরে সুন্দরী প্রেমিকা মহুয়া আর কচি শিশু রুহির কথা মনে পড়ে যায়। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়, বড় কঠিন পরিস্থিতি বড় জটিল সবকিছু, তবে প্রতিশোধ দানা নেবেই। ওর ভালোবাসার খুনের প্রতিশোধ নিতে বদ্ধ পরিকর।
 
পর্ব তেরো – চৌষট্টি ছক (#6-96)

রমলার কাছ থেকে আর কিছু জানার নেই দানার, তবে সাবধান করে দেয়, যদি রমলা মুখ খোলে তাহলে দুলাল মিত্র আর রমলার কেলেঙ্কারির খবর, মহানগরের সব খবরের কাগজের শিরোনাম হয়ে যাবে। রমলাকে এটাও জানিয়ে দেয় ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে। কিন্তু কি ভাবে কাজে লাগাবে সেটা একটু ভাবতে হবে। বেলপাহাড়ির কাজ শেষ, মহুয়ার মিষ্টি হাসি আর রুহির কচি হাসি ওকে ডাক দেয়। আর দেরি করে না দানা সেই রাতেই রামিজ আর শঙ্করকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। আসার পথে দানা গুম মেরে বসে অঙ্ক কষে চলে, কি ভাবে কঙ্কনাকে আর নাস্রিনকে হাতের মুঠিতে করবে। বাকি সবাইকে মোটামুটি জালে টেনে এনেছে দানা। শুধু মাত্র একে ওপরের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া বাকি। বিমান চন্দ যে মৈনাককে খুন করেছে সেটা পরিস্কার হতেই দানার মাথায় রক্ত চড়ে যায়। নয়নার কথা মেনে বাপ্পা নস্করকে খুন করা ভুল পদক্ষেপ তার চেয়ে ভালো উল্টে বিমান চন্দ আর নয়নার মাঝে দ্বন্দ তৈরি করে দেওয়া। এক সাথে দুইজনেই পরস্পরের বিরুদ্ধে মারামারি করে মরবে। অথবা বাপ্পা নস্করের কানে বিমান চন্দের আর নয়নার গোপন সম্পর্কের কথা তুলে দেওয়া তাহলে দুইজনকে বাপ্পা নস্কর খুন করে দেবে। দানার কাজ হাসিল হয়ে যাবে। সঙ্গীতার চোখের জলের প্রতিশোধ আর মৈনাকের খুনের প্রতিশোধ একসাথে নেওয়া হয়ে যাবে। তবে সিমোনে খৈতানকে বাগে আনতে হবে, ওই সিমোনে খৈতান সকল নাট্যের নায়িকা। ওর ধূর্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী বিমান চন্দ লোক লাগিয়ে মৈনাককে খুন করেছে।

এই সব ভাবতে ভাবতে একসময়ে শহরে পৌঁছে যায় দানা। ভোরের আলো অনেকক্ষণ আগেই ফুটে গেছে। সকাল সকাল মহুয়ার ফোন, “কোথায় তুমি?”

দানা জানায়, “আমি একটু পরেই বাড়ি আসছি।”

মহুয়া অবাক হয়ে যায় ওর কথা শুনে, “রাতেই বেরিয়ে পড়েছিলে নাকি গো?”

দানা উত্তর দেয়, “হ্যাঁ পাপড়ি। চোখের সামনে রুহির মুখচ্ছবি ভেসে ওঠার পরে বেল পাহাড়িতে আর থাকা গেল না। ওকে কোলে নেওয়ার জন্য মন ছটফট করছিল।”

ঘরে ঢুকেই আগে শোয়ার ঘরে ঢোকে দানা। ছোট্ট রুহি ঘুমে অচৈতন্য। মহুয়া ওইভাবে ওকে দেখে জিজ্ঞেস করে, “কি হল বলবে তো? এমন ঝোড়ো কাকের মতন কেন দেখাচ্ছে তোমাকে?”

দানা চুপচাপ রুহির পাশে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে। রামিজ আর শঙ্কর মহুয়াকে রাতের বিস্তারিত খবর দেয়। মহুয়া বুঝতে পারে যে দানা বেশ ভয় পেয়ে গেছে, মেয়েকে আর ওকে কেউ আঘাত করলে দানা টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। সেই দৃশ্য দেখে মহুয়ার চোখে জল চলে আসে। কিন্তু দানা যে বদ্ধ পরিকর, প্রতিশোধ না নিয়ে কাউকে ছাড়বে না আর মহুয়া বদ্ধ পরিকর, দানাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না। এহেন উভয়সঙ্কট অবস্থায় কি করা যায়। দিনে দিনে ওদের শত্রু সংখ্যা বেড়েই চলেছে, কম হবার নাম করে না। প্রথমে কঙ্কনা আর নাস্রিন, তারপরে রমলা বিশ্বাস। এরমাঝে নিশ্চয় নয়না, দুলাল মিত্র আর বিমান চন্দ ওর বিপক্ষে হয়ে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে মোহন খৈতান আর সিমোনে খৈতান ওর বিরুদ্ধে হয়ে যাবে। পাশে একমাত্র বাপ্পা নস্কর, তবে কতদিন?

দানার পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে মৃদু কণ্ঠে বলে, “কি হয়েছে জিত আমাকে বলবে না?”

দানা ছলছল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলে, “প্লিস পাপড়ি তুমি এখান থেকে চলে যাও। রুহিকে নিয়ে তুমি আজমের চলে যাও।”

মহুয়া এটাই ভয় করছিল কিন্তু দানাকে একা ফেলে রেখে গেলে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? একা দানা কি করবে? না মহুয়া ওকে কিছুতেই ছেড়ে যাবে না, মরতে হলে সবাই একসাথেই মরবে। পাশে থাকলে ওকে বুকে জড়িয়ে শক্তির জোগান দিতে পারবে।

চুপচাপ দানার মাথা বুকে করে অনেকক্ষণ বসে থাকার পরে মহুয়া ওকে জিজ্ঞেস করে, “আমি চলে গেলে তুমি শক্তি পাবে কোথা থেকে জিত? তুমি ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে ফাঁকা বাড়ি দেখে আরো মুষড়ে পড়বে।”

সেটা অবশ্য দানাও জানে, এই নারী ওর শক্তির উৎস। এতদিনে ওর বুকে কোন বল ছিল না। সেই বাজারে প্রথম মহুয়ার কাজল কালো ভাসা ভাসা চোখ দেখেই দানার বুকে সাহসের সঞ্চার হয়েছিল। আর তাই ওকে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। জানতো না কি হবে, হয়তো সবার মৃত্যু হতে পারতো কিন্তু নির্ভয়ে দানা ওকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আর সেটাই সত্যি।

মহুয়ার বুকের মাঝে মুখ ঘষে দানা মিহি কণ্ঠে বলে, “তুমি না একটা পাগলী মেয়ে বুঝলে।”

ওর অবিন্যাস্ত চুলের মধ্যে বিলি কেটে উত্তর দেয়, “পাগলে পাগল চেনে, আর শুয়োরে চেনে কচু। এইরকম কিছু একটা বাংলায় প্রবাদ আছে তাই না?” বলেই দুইজনে হেসে ফেলে। মহুয়া ওর গালে আলতো গাল ঘষে বলে, “আজকে আর কোথাও যেতে হবে না। সারারাত অনেক ধকল গেছে একটু ঘুমিয়ে নাও। কি খেতে চাও বলো।”

দানা হাসে, “তুমি আর কি খাওয়াবে, সেই রুটি আর ডাল। একটু মাছ মাংস হয়না বাড়িতে।”

মহুয়া ভুরু কুঁচকে ওকে বলে, “আচ্ছা প্রেম করার সময়ে জানতে না যে আমি নিরামিষ।”

দানা ওকে জোরে জড়িয়ে ধরে গালে অজস্র চুমু খেয়ে বলে, “নিরামিষ আর কোথায়, এমন সুন্দরীকে রোজ রাতে চটকে পিষে খাই আর কি নিরামিষ গো তুমি।”

ভালোবাসার রঙ ধরে যায় মহুয়ার চোখে, “ধ্যাত কি শুরু করেছে না দিন দুপুর বেলায়। নাও নাও স্নান সেরে ফেল, আর বিশ্রাম নাও।” তারপরে চোখ টিপে ফিসফিস করে বলে, “বিউটিসিয়ানকে ডাকবো ভাবছি।”

মহুয়ার মসৃণ পুরুষ্টু লালচে ফর্সা ঊরু যুগল আর রোমহীন বগলের ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠতেই দানার ভেতরে কেমন যেন ছ্যাঁত করে ওঠে। মনে হয় এখুনি ওকে জড়িয়ে ধরে এইখানে সঙ্গমে মেতে ওঠে। বাধ সাধে রুহি সোনা, পাশেই ঘুমিয়ে আছে। ঘুম থেকে ওঠার সময় হয়ে গেছে, পাশে ডাডাকে দেখে একটু আদর করবে, চুল ধরে টেনে উঠাতে চাইবে। গতরাতে পাশে দেখেনি তাই অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিল।

মহুয়ার পাতলা নরম কোমর জড়িয়ে, নরম পেটের ওপরে কর্কশ গাল ঘষে উত্তেজিত করে বলে, “রাতে তাহলে জমবে ভালো।” চোখ টিপে উদ্ধত লিঙ্গের দিকে ইশারা করে বলে, “আইস্ক্রিম খাবে নাকি?”

মহুয়া প্রথমে কিছু বুঝতে পারে না তারপরে দানা যখন ওকে চক্ষের ইশারায় লিঙ্গ দেখায় তখন মহুয়ার কান লজ্জায় লাল হয়ে যায় সেই সাথে কিঞ্চিত রেগে যায়, “ছিঃ কি সব বলছো তুমি। না না...” বলতে বলতে লজ্জায় দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে।

ওর রক্তিমাভা মাখানো ডিম্বাকৃতি মুখবয়াব দেখে দানা আর থাকতে পারে না। দুই হাতে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে নিজের ওপরে টেনে নেয়। বলিষ্ঠ বাহুপাশে বদ্ধ হয়ে মহুয়া নিজেকে সমর্পণ করে দেয়। নরম পাছার খাঁজে আটকা পড়ে যায় দানার উদ্ধত কঠিন লিঙ্গ। কঠিন লিঙ্গের পরশে সকাল সকাল মহুয়া, না চাইতেও কামোত্তেজনায় কেঁপে ওঠে।

দুই হাতে মহুয়ার নধর দেহ পল্লব পিষে ধরে গালে চুমু খেয়ে মহুয়াকে বলে, “এই এতো লজ্জা কিসের।”

লজ্জায় মহুয়া ওর দিকে তাকাতে পারে না কিছুতেই, “ছাড়ো না প্লিস, মেয়ে উঠে পড়বে।”

দানা ওর গালে গাল ঘষে বলে, “মেয়ে এত তাড়াতাড়ি উঠবে না।”

মিহি আদুরে কণ্ঠে বলে, “মণি এসে যাবে।”

দানা উত্যক্ত করে বলে, “আসবে না। মণি আসার আগে অন্তত দরজায় কড়া নাড়াবে।”

প্রেমঘন কণ্ঠে বলে, “আর সেই সময়ে যদি মাঝখানে পড়ে যাই তাহলে কি হবে? এ যাঃ সব মাটি।” বলেই খিলখিল করে হেসে ফেলে।

দানার লিঙ্গ কিছুতেই বাগ মানতে নারাজ। প্যান্টের ওপর দিয়েই দানার লিঙ্গ আলতো নাড়িয়ে দিয়ে মহুয়া বলে, “সোনা এখন ওইটা শান্ত করো। রাতে কাবাডি খেলবো, ঠিক আছে।”

মহুয়াকে ছেড়ে দিতেই বেশ কয়েকটা চড় চাপড় মেরে দানাকে ঠেলে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে সারা অঙ্গে মাদকতা ময় ছন্দ তুলে পালিয়ে যায়। গতকাল থেকে অনেক ধকল গেছে এই শরীরের ওপরে আর শরীর সঙ্গ দিচ্ছে না। দানার চোখ জুড়িয়ে আসে, রুহিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।

দুপুরে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া সারে। মনা আর পিন্টু, রুহিকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। দানা একবার আড় চোখে মহুয়াকে শোয়ার ঘর দেখায়। মহুয়া চোখ পাকিয়ে ঠোঁটে দুষ্টু মিষ্টি হাসি মাখিয়ে জানিয়ে দেয়, কবাডি খেলা রাতের আগে হবে না। দানা মাথা চুলকিয়ে অনুনয় বিনয় করে, বুক ধরে কাতর প্রার্থনা জানায়। রক্ত চঞ্চল হয়ে উঠেছে, সকাল বেলায় যেমন ভাবে জড়িয়ে ধরেছিল সেই আবেশ এখন ওর ঊরুসন্ধিতে লেগে আছে। লুঙ্গি পরা বাড়িতে মানা তাই শয়তান লিঙ্গ পায়জামার নিচেই ছটফট করে ওঠে।

মহুয়া ওর গালে আলতো চাঁটি মেরে বলে, “তুমি না...”

দানা ওর হাত ধরে কাছে টেনে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ বলে ফেল, আমি কি।”

মহুয়ার চোখে রঙ লাগে, কঠিন থাবার মাঝে নরম কব্জি বাঁধা পড়ে যায়। হাত ছাড়াতে বৃথা চেষ্টা চালায়, ইচ্ছে করলে ছাড়াতে পার্ট কিন্তু সেই ইচ্ছেটা নেই, একটু দুষ্টুমি একটু ছোঁয়া পাওয়ার প্রবল ইচ্ছে জেগে ওঠে বুকের মধ্যে। ঠিক তখনি দরজায় কলিং বেল বেজে ওঠে।

দানা মিচকি হেসে ওর হাত ছেড়ে দিয়ে বলে, “এই যাত্রায় বেঁচে গেলে।”

কাজের মেয়ে দরজা খুলে মহুয়ার দুই বিউটিসিয়ানকে বাড়ির মধ্যে নিয়ে আসে। মল্লিকা আর সোনালী, মহুয়ার নিজস্ব বিউটিসিয়ান, ডাক দিলেই বাড়ি এসে পরিচর্যা করে যায়। তার জন্য ভালো টাকা দেয় মহুয়া। অবশ্য এর আগে এই দুইজন দানার অবর্তমানে বাড়িতে এসেছিল। সাধারণত দুপুরের পরে আসে আর তখন দানা বাইরে থাকে নিজের কাজে। দানা বুঝে যায় এইবারে ঘন্টা চারেকের জন্য প্রেয়সীর দেখা পাওয়া যাবে না।

অঙ্গে এক ছন্দময় হিল্লোল তুলে দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, “তুমি ওইখানে বসে থাকো আমি আসছি।”

দানা ওকে কাছে ডেকে কানেকানে বলে, “তোমার ওইখানের জঙ্গল পারলে একটু কামিয়ে নিও।”

মহুয়ার কান লাল হয়ে যায়, “ছিঃ আমি ওদের সামনে ওইসব খুলে দেখাই না।”

দানা ওকে আর একটু উত্যক্ত করে বলে, “পরশু দিন কিন্তু আমার মুখের মধ্যে চলে গেছিল।”

মহুয়ার মুখ লজ্জায় লাল, কি শয়তানি শেষ পর্যন্ত শুরু করেছে, “এই যে শোন, যেখানে সেখানে মুখ না দিলেই হয়। আমি কি তোমাকে ওইসব জায়গায় মুখ দিতে বলেছি?”

মহুয়ার নরম হাত জোড়া গালের ওপরে চেপে ধরে বলে, “ইসস তাহলে মধু কি করে চাটবো? রাগ করে না সোনা, রাতে বেশ সুন্দর করে কামিয়ে দেব।”

সেই অনেকদিন আগে একবার যোনি কেশ খুব যত্ন নিয়ে সুন্দর করে কামিয়ে দিয়েছিল তারপরে অবশ্য দানার ইচ্ছেতে কামানো হয়নি। সেই দৃশ্য ভাবতেই মহুয়ার গায়ে কামোত্তেজনার কাঁটা দিয়ে আসে, “যাও শয়তান, তোমার সাথে আর কথা বলব না।”

মহুয়ার গালের রক্তিম আভা দেখে দানার লিঙ্গ ফুঁসে ওঠে। দানা ফিসফিস করে বলে, “চেরার দুইপাশে একদম মসৃণ করে কামিয়ে দেব আর বেদির ওপরে ছোট একটা গুচ্ছ রেখে দেব। বেশ সুন্দর লাগবে।”

উত্তেজিত কথার ফলে মহুয়ার শরীর ছটফট করে ওঠে। নিজেকে কোনোরকমে দানার হাত থেকে বাঁচিয়ে চোখ পাকিয়ে বলে, “রাতে আমার পাশে এসো, এমন লাথি মারবো না ওইখানে... তখন বুঝবে ঠ্যালা।”

দানা হেসে ফেলে আর দুই বিউটিসিয়ানকে সঙ্গে নিয়ে মহুয়া ভেতরের ঘরে ঢুকে যায়। রুহি নেই বাড়িতে একটা সিগারেট ধরাতে পারে, তাই একটা সিগারেট ধরিয়ে টিভি খুলে বসে পড়ে। একবার ফারহানকে ফোন করলে হয়, ওর বিয়ে সামনে, অনেকদিন হয়ে গেল দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। নাফিসা আর জারিনার দেহ পল্লবের ছায়াছবি চোখের সামনে ভেসে উঠতেই রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। পুরুষ মানুষ, পাশে প্রেমিকা থাকলেও নারী মাংসের লোভ শরীরের কোন এক কোনায় লুকিয়ে থাকবেই। বিয়ের পরে কি ফারহান ওর ভাবীজান নাফিসার সাথে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাবে না বন্ধ করে দেবে? এতদিনে নিশ্চয় ফারহানের দাদা দুবাই থেকে এসে গেছে, নাফিসা রোজ রাতে তাবিশের কোলে বসে চরম কাম ক্রীড়া করছে। নগ্ন সুন্দরী নাফিসার দেহ যেন চোখের সামনে দেখতে পায় দানা, সেই সাথে লাস্যময়ী কচি সুন্দরী জারিনা। ভীষণ লাস্যময়ী দুই বোনের শারীরিক গঠন। ফারহান ভাগ্যবান, দুই বোনকে একসাথে এক বিছানায় ফেলে সঙ্গম সম্ভোগ করে। দানার মনে মাঝে মাঝে একটু এদিক ওদিকে নারী যোনির স্বাদ ভোগ করার সুপ্ত বাসনা জাগে বটে কিন্তু প্রেয়সীর মুখচ্ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠতেই বিরত হয়ে যায়।

ঘন্টা দুই এইভাবে বসে বসে কেটে যায়। নিঝুম বাড়ি, রুহিও নেই যে একটু ওর সাথে খেলা করবে। মনা আর পিন্টু কোথায় নিয়ে বেরিয়েছে কে জানে। বিকেলে মনে হয় মহানগরের অর্ধেক খেলনা ওর বাড়িতে এসে স্থান পাবে। আজকাল দানার চেয়ে বেশি মনা আর পিন্টুকে চেনে। আরো একটা সিগারেট জ্বালিয়ে ভেতরের ঘরের দিকে পা বাড়ায়। কি করছে এতক্ষণ মহুয়া, রোমহীন পুরুষ্টু ঊরু যুগল দেখার প্রবল ইচ্ছে দমাতে পারে না। আর যদি সত্যি বস্ত্রহীন হয় তাহলে কথাই নেই, দুই বিউটিসিয়ানকে ঘর থেকে বের করে ঝাঁপিয়ে পড়বে প্রেয়সীর ওপরে।

দরজায় আলতো টোকা মেরে দানা জিজ্ঞেস করে, “আসতে পারি কি?”

উত্তরের অপেক্ষা করে লাভ নেই, ঘরে শুধু মাত্র ওর প্রেয়সী ছাড়া আর কারুর পরিচর্যা হচ্ছে না। দরজা খুলে ঢুকতেই মহুয়াকে দেখে ওর মাথা গুলিয়ে যায়। সাদা নরম বিছানার ওপরে চিত হয়ে শুয়ে মহুয়া, একটা সাদা তোয়ালে দিয়ে বুক থেকে ঊরুসন্ধি পর্যন্ত মোড়া, বাকি অঙ্গ অনাবৃত। চোখের ওপরে আবার শশা কেটে রাখা। একটি মেয়ে মহুয়ার মাথার কাছে বসে ওর হাত দুটি নিয়ে পরিচর্যা করতে ব্যাস্ত। নখের পরিচর্যা, নখ ঘষে রঙ লাগিয়ে দিচ্ছে। অন্য মেয়েটা পায়ের কাছে বসে পায়ের আঙ্গুলের পরিচর্যা করতে ব্যাস্ত। পায়ের আঙ্গুলের মাঝে আবার তুলো গোঁজা। বাপরে ওর সুন্দরী মহুয়াকে কি করেছে এই দুইজনে? মুখের ওপরে কি সব মাটি না কি প্রলেপ লাগিয়ে দিয়েছে, চুলেও কি সব মাখানো। সুন্দরী আর সুন্দরী নেই পেত্নীর মতন দেখতে লাগছে মহুয়াকে।

দানা মিচকি হেসে বলে, “উফফ আর পারি না পাপড়ি। একদম শাকচুন্নির মতন দেখতে লাগছে তোমাকে।”

মহুয়া মুখ নাড়াতে পারে না, কিন্তু হাবভাব দেখে বোঝা যায় যে বেশ রেগে গেছে। চোখের ওপর থেকে শশা উঠিয়ে ওর দিকে কপট রাগত দৃষ্টি হেনে দরজা দেখিয়ে দেয়। দানা একপা একপা করে ওর দিকে এগিয়ে আসে। সুউন্নত স্তন যুগলের মাঝে বাঁধা তোয়ালের গিঁটকে ছাপিয়ে নিটোল স্তন জোড়া উচ্চ শৃঙ্গের মতন দাঁড়িয়ে। দানার হাত নিশপিশ করে ওঠে এখুনি ওই জোড়া নরম শৃঙ্গ হাতের মুঠোয় নিয়ে চটকাতে।

মহুয়ার শরীর কেঁপে ওঠে, এই শয়তানটা, এই মেয়েদের সামনেই না কিছু একটা করে বসে। বিশ্বাস নেই দানাকে, অন্তত এই ভালোবাসার দুষ্টুমিতে একদম বিশ্বাস নেই। যখন তখন শুরু করে দিতে পারে, রান্না ঘরে, বাথরুমে, সকালে চা খেতে খেতে।

অগত্যা মহুয়া চেঁচিয়ে ওঠে, “এক লাত্থি মারব এইবারে কিন্তু। তুমি যাবে এইখান থেকে।”

ঠিক সেই সময়ে কাজের মেয়ে মণি এসে ওর হাতে ফোন ধরিয়ে বলে, “দাদাবাবু ফোন এসেছে।”
 

Users who are viewing this thread

Back
Top