পর্ব নয় – অভিনেত্রীর সঙ্গ (#8-67)
ঠান্ডা বেশ জমিয়েই পড়েছে মহানগরের বুকে। সবাই নিজেদের সোয়েটার জ্যাকেট ইত্যাদি বের করে গায়ে চড়িয়ে নিয়েছে। সকাল বেলা গাড়ি নিয়ে বের হলে রাস্তায় কুয়াশার দেখা পাওয়া যায়, রাতের বেলা ঘরে ফেরার সময়ে কোন কোনোদিন ঘন কুয়াশা দেখা পাওয়া যায়।
গাড়ির ড্রাইভার, বাড়ির চাকর বাকর, বাগানের মালী, গার্ড এদেরকে বড় লোকেরা মানুষ বলেই গন্য করেনা। ওরা মনে করে ড্রাইভার যেন এই গাড়ির একটা অঙ্গ, চালকের স্থানে বসে স্টিয়ারিং হুইল ধরে বসে থাকা একটা যন্ত্র। তাই পেছনের সিটে বসে মনের আনন্দে অনেক গোপন কথা সারে, কারুর সাথে একটু কখনো একটু ভালোবাসার খেলা, কখনো কারুর সাথে কথা বলা। যেই কথা সর্ব সমক্ষে হতে পারে না সেইগুলো গাড়ির পেছনের সিটে করে ফেলে।
দানার কানে মাঝে মাঝেই এই উড়ো চিঠি ভেসে আসে, নয়নার অনেক অজানা বিষয় ধীরে ধীরে দানা জেনে ফেলে। নয়নার সত্যিকারের বন্ধু আর বান্ধবী বলতে ওই সেক্রেটারি সুমিতা আর ম্যানেজার সমুদ্র। এই দুইজন ছাড়া দানা আর কারুর সাথে নয়নাকে খোলা মনে মিশতে দেখেনি এতদিন। সুমিতা আর সমুদ্রের সাথে ওর সম্পর্ক বেশ গভীর সেটা ওদের কথাবার্তা মেলামেশা থেকেই বুঝে যায়। তিনজন যেন একটা সুতোয় বাঁধা। ওদের মাঝে শুধুমাত্র অভিনেত্রী, সেক্রেটারি অথবা ম্যানেজারের সম্পর্ক নয় এটা বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারে। একজনের ব্যাথা লাগলে অন্যজনে দৌড়ে এসে হাত বাড়িয়ে দেয়।
বেশ কিছুদিন থেকে নয়নার মন ভালো নেই। গত ছবির কাজের পুরো টাকা হাতে আসেনি, সামনে কোন ছবির কাজ হাতে নেই। বেশ কয়েকটা বিজ্ঞাপনের মডেলিঙের কাজ আছে তবে তাতে বিশেষ কিছু টাকা হাতে আসেনা। দানা গাড়ির চালকের আসনে বসে বটে কিন্তু পেছনে বসা নয়না, সমুদ্রের আর সুমিতার কথাবার্তায় ওদের আর্থিক দুরাবস্থা আঁচ করতে অসুবিধে হয়না। এই ঝকমকে সিনেমা, টিভির জগতে সবাই সবাইকে লাথি মেরে উপরে ওঠার প্রচেষ্টায় থাকে। সিনেমা জগতে নয়নার প্রচুর বন্ধু বান্ধব, মাঝে মাঝেই এর তার পার্টিতে যায়। দানা জানে এই পার্টিগুলোতে কি হয়, শুধু মদ খাওয়া আর উচ্চ সুরের গানের তালে উদ্দাম নৃত্য করা। এর আগেও বহুবার নয়না এই সব পার্টিতে গেছে আর মদে চুর হয়ে রাতে ঘরে ফিরেছে। কোন কোনোদিন সুমিতা কোনোদিন সমুদ্র হয়তো সাথে থাকে, কোন দিন থাকে না। যেদিন সুমিতা অথবা সমুদ্র সাথে থাকে সেদিন ওরাই নয়নাকে ফ্লাটে পৌঁছে দেয় আর যেদিন থাকেনা সেদিন নিতা আর কমলাকে নিচে ডেকে নেয় নয়নাকে ধরে ফ্লাটে নিয়ে যেতে। দানা কোনোদিন নয়নাকে তুলে ধরে ফ্লাটে নিয়ে যেতো না, পাছে যদি কিছু ভেবে বসে। তবে মদের নেশায় চুর নয়নাকে পেছনের সিটে অবিন্যাস্ত পোশাকে অনেকবার দেখে দানার বুকের রক্ত ফুটে উঠতো। কোনোদিন ওর ছোট পার্টি পোশাক অথবা ওর স্কারট অনেক উপরে উঠে যেত যার ফলে নয়নার ঊরুসন্ধি উন্মুক্ত হয়ে যেত। যেদিন শাড়ি পরে বের হত সেদিন নয়নাকে আরো লাস্যময়ী দেখতে লাগত। নরম ফর্সা গোল পেটের মাঝে সুগভীর নাভি, পেটের মাংস একটু ফোলা ফোলা, সাধারণত সব বাঙালিদের একটুখানি মেদ থাকে যেটা ওদের মাদকতাময় রূপ আরও বেশি বাড়িয়ে তোলে। নাভির অনেক নিচে শাড়ির গিঁট, মনে হয় একটু হলে কোমর থেকে খসে পড়ে যাবে। ব্লাউজ খানা এত ছোট, কোনোরকমে নিটোল ফর্সা স্তন যুগল ঢেকে রাখতে সক্ষম হত। শাড়ির আঁচল বুক থেকে খসে পড়ে নিটোল স্তনের মাঝের গভীর বক্ষ বিভাজন উন্মুক্ত হয়ে যায়। কোনরকমে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে পেছনের সিটে এলিয়ে শুয়ে থাকে নয়না, যতক্ষণ না গাড়ির ফ্লাটের নিচের পারকিংয়ে ঢোকে।
মাঝে মাঝেই নয়নার বাড়িতে লোক জন আসে, দানার কানে ভেসে আসে টুকরো টুকরো বার্তালাপ। কেউ আসে ছোটোখাটো কোন স্ক্রিপ্ট নিয়ে, কেউ আসে কোন বিজ্ঞাপন নিয়ে, অনেকে আবার টাকার তাগিদা দিতে আসে। বড় লোকেদের বড় বড় ব্যাপার ওর মধ্যে নাক না গলানোই ভালো, তাই দানা ওই ছোট ঘরে বসে টিভি দেখে।
হাতে বিশেষ কাজ না থাকার ফলে বাপ্পা নস্করের সাথে নয়নার দেখা করা ইন্দানিং একটু বেড়ে গেছে। মাঝে মাঝেই দানা, নয়নাকে নিয়ে শহর এক নির্জনে একটা বাড়িতে যায়, সেখানে দুইজনে অনেকক্ষণ সময় কাটায়। সেখানে অবশ্য ফারহানের সাথে দেখা হয়ে যায়। মাঝে মাঝে কোথাও ফিতে কাটার, কোন জলসায় যাওয়ার, কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার ডাক পড়ে। সমুদ্র সব ব্যবস্থা করে দেয়, সেই সাথে সেইখানের নিরাপত্তার ব্যবস্থার দিকেও নজর রাখে। তবে দানা কখনো নয়নার পাশ ছাড়ে না, নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে, নয়নার পাশে ছায়ার মতন লেগে থাকে। ওকে আগলে রাখতে গিয়ে মাঝে মাঝেই যে ওর সাথে ধাক্কাধাক্কি হয় না সেটা নয়। তবে সেই সময়ে নয়নাকে একটু জড়িয়ে ধরার মানসিকতা যে একদম জাগে না সেটাও নয়। এহেন তীব্র লাস্যময়ী অভিনেত্রীর একটু ছোঁয়া পাওয়ার জন্য অনেক মানুষ উঁচিয়ে থাকে। বারেবারে পকেটে রাখা পিস্তলটা ছুঁয়ে দেখে নেয় আর এদিক ওদিকে চোখ রেখে আগলে রাখে নয়নাকে।
এছাড়াও কোন কোন বিকেলে নয়না নিজের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, কোথায় যায় কেউ জানে না। এই খবরটা একদিন দানা বাপ্পা নস্করকে জানায়। খবরটা জানতে পেরে বাপ্পা নস্কর কিছুক্ষণ ভেবে চিন্তে ওকে নয়নাকে অনুসরন করতে নির্দেশ দেয়। বাপ্পা নস্কর জানতে চায় নয়না কোথায় যায়, কার সাথে মেলা মেশা করছে। নয়নার গাড়ি চালায় বটে কিন্তু আসলে দানা বাপ্পা নস্করের এক গুপ্তচর, বাপ্পা নস্কর ওকে সেই জন্যে ভালো টাকা দেয়। দানা মাঝে মাঝেই নয়নাকে বলে, কোথায় যাচ্ছে কেন যাচ্ছে ইত্যাদি যেন দানাকে একটু জানিয়ে যায়, তাহলে অসময়ে রক্ষা করতে সুবিধা হবে। নয়না হেসে ওর কথা উড়িয়ে দেয়, বলে ওর মতন বড় নায়িকার ক্ষতি কেউ করতে চাইবে না।
সেদিন সকাল থেকে নয়না একটা বিজ্ঞাপনের জন্য খুব ব্যস্ত ছিল। বিকেলের দিকে বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষে বাড়ি ফিরে দানাকে জানায় রাতে ওকে একটা বিদেশী পরিচালকের সাথে দেখা করার কথা। সেইদিন খুব ক্লান্ত দেখায় নয়নাকে, তাও ওই বিদেশী পরিচালকের সাথে দেখা করা খুব জরুরি।
সেদিন নয়না একটা ফিনফিনে কালো জালের শাড়ি পরে আর একটা গাড় লাল রঙের ক্ষুদ্র ব্লাউজ পরে পার্টিতে যাওয়ার জন্য তৈরি। শাড়িটা না পরার মতন, ওর নিচে কি আছে কি নেই সব দেখা যায়। কাঁচুলিটা পুরোপুরি ব্লাউজ না বলে ব্রা বললে ভালো হয়। হাতা বিহীন কাঁচুলি, ঘাড়ের কাছে একটা গিঁট আর পিঠের দিকে একটা গিঁট। বুকের নীচ থেকে সম্পূর্ণ পেট অনাবৃত, আঁচলটা দুই উন্নত স্তন মাঝে একটা সরু দড়ির মতন পেঁচিয়ে। অসম্ভব যৌন আবেদনে মাখামাখি লাস্যময়ী দেখাচ্ছিল সেদিন। চোখের তারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট কিন্তু মেকআপের দৌলতে সারা ক্লান্তি ঢেকে দানাকে একটা ঠিকানা দিয়ে গাড়ি চালাতে নির্দেশ দেয়। দানা মাঝে মাঝেই আয়নায় নয়নার আপাদমস্তক দেখে আর ভাবে ইসস, এই রকম লাস্যময়ী কোন নারীকে একরাতের জন্য বিছানায় পেলে কত মজা হবে।
অন্যদিনের চেয়ে সেদিন বেশ রাতে করেই বের হয়। সাধারণত পার্টি অথবা কারুর সাথে দেখা করার থাকলে, নয়না রাত নটা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয় যাতে রাত দশটা নাগাদ গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু সেদিন রাত এগারোটা নাগাদ ফ্লাট থেকেই বেরিয়েছিল আর যে ঠিকানা দানাকে দিয়েছিল সেখানে পৌঁছাতে প্রায় আরো আধা ঘণ্টা লেগে যাবে। দানা খানিক ধন্ধে পড়ে যায়, কেমন লোকের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে? ঠিকানাটা বেশ বড়লোকের এলাকায়। বেশি মাথা ঘামানো ভালো নয় তাই চুপচাপ কোন প্রশ্ন না করেই গাড়ি চালায়, কিন্তু জানা একটু দরকার না হলে বাপ্পা নস্করকে কি উত্তর দেবে।
নয়না গুনগুন গান ধরে, একটা সিগারেট জ্বালিয়ে দানাকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নেই?”
দানা মিচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে জানায়, “না ম্যাডাম, কেউ নেই।” বলতে লজ্জা পায় নিজের কথা। ঠিক কার কথা বলবে, ইন্দ্রাণী না মহুয়া। এতদিনে মহুয়ার প্রগাড় ভালোবাসার টানে ইন্দ্রাণী যদিও আবছা হয়ে গেছে তাও মাঝে মাঝেই মনে কোনে উদয় হয়।
দানার জানতে ইচ্ছে করে নয়না কি সত্যি কাউকে ভালোবাসে। কারন নয়না বহু পুরুষের অঙ্কশায়িনী হলেও কোন এক পুরুষের সাথে বেশি রাত কাটায়নি। বাড়িতে পুরুষের আসা যাওয়া বলতে একমাত্র সমুদ্র ছাড়া আর কেউ নয়। তবে নয়নার মতন উঁচু দরের এক অভিনেত্রী কি সামান্য এক ম্যানেজারের সাথে প্রেম করবে? সেটা হতে পারে না কারন সমুদ্র ওর টাকাতেই বাঁচে আর নয়না উচ্চভিলাষী নারী।
সাতপাঁচ ভেবে দানা নয়নাকে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা ম্যাডাম একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি, যদিও একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন।”
এতদিনে নয়না আর দানা যদিও বিশেষ খোলামেলা হয়ে কথাবার্তা বলেনি তাও নয়না উৎসুক হয়ে জানতে চায়, “কি জিজ্ঞেস করতে চাও?”
দানা মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করে, “আপনি কবে বিয়ে করবেন, ম্যাডাম?”
নয়না প্রশ্ন শুনে কিঞ্চিত অবাক হয়ে হেসে ফেলে, “কাউকে পেলে তবে না বিয়ে করবো। এখন মাথার মধ্যে শুধু কাজ ঘোরাফেরা করে, বুঝলে। আগে নিজের ভবিষ্যৎ ঠিক করে নেই তারপরে বিয়ের কথা ভাববো।”
এর চেয়ে একজন ড্রাইভারের বিশেষ কিছু জিজ্ঞেস না করাই ভালো তাই দানা আবার চুপ করে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়নার দেওয়া ঠিকানায় গাড়ি পৌঁছে যায়। শীতকালে রাস্তা এমনিতেই ফাঁকা হয়ে গেছে, তারপরে বিত্তশালী এলাকা, রাস্তা ঘাট জনমানব শুন্য। দানা একটা উঁচু পাঁচিল দেওয়া বাড়ির সামনে এসে গাড়ি দাঁড় করায়। নয়না একবার বন্ধ গেটের দিকে দেখে, দানাকে হর্ন মারতে বলে। দানা হর্ন মারতেই একজন কাজের লোক এসে বিশাল লোহার গেট খুলে দেয় আর দানা গাড়ি নিয়ে ভেতরে ঢুকে যায়। চারপাশে ফুলের বাগানে ঘেরা একতলা বাড়ি তবে বেশি বড় নয়। বাড়ির সামনে আরো একটা কালো রঙের গাড়ি দাঁড় করানো। ওই গাড়ি নিশ্চয় ওই বিদেশী পরিচালকের। নয়না গাড়ি থেকে নেমে এদিক ওদিকে দেখে, চেহারায় আশঙ্কা ফুটে ওঠে। কিছু ভেবে ক্লাচ ব্যাগ থেকে ফোন বের করে কাউকে একটা ফোন করে। সঙ্গে সঙ্গে একজন সুট পরা দেশী ভদ্রলোক সদর দরজা থেকে বেরিয়ে এসে অমায়িক হাসি হেসে নয়নাকে অভ্যর্থনা জানায়। অমায়িক হাসি দিয়ে ভদ্রলোক নয়নার খোলা পিঠের নিচে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে বাড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। এতরাতে কি আর সিনেমার স্ক্রিপ্ট পড়া হবে, হয়ত ওই বিদেশী পরিচালক নয়নার স্ক্রিপ্ট পড়বে, কোন অঙ্গে কত মধু, কোন অঙ্গে কত উঁচু নিচু ঢেউ এই সব।
দানা গাড়ি পার্ক করে একটা সিগারেট জ্বালায়। শীতের আকাশে মেঘের লেশ মাত্র নেই, গায়ের জ্যাকেটটা বেশি করে গায়ের সাথে জড়িয়ে ধরে। যে লোকটা লোহার গেট খুলে দিয়েছিল সে একবার ওর কাছে এসে চায়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে যায়। দানা মানা করে দিয়ে লোকটাকে বাড়ির মালিকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে। লোকটার মুখে জানতে পারে, বাড়ির মালিক এক বিদেশী বাঙ্গালী পরিচালক, অমলেন্দু বিশ্বাস। জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো জানতে পারে যে বাড়িতে অমলেন্দু ছাড়া আরো দুইজন বিদেশী মানুষ আছেন। দানা মনে মনে হেসে ফেলে, তাহলে নয়নাকে আজ রাতে তিনজনে মিলে কাম সম্ভোগ করবে। ইসস, নয়নার মতন একজন সুন্দরী চূড়ান্ত লাস্যময়ী অভিনেত্রী, তিন ধনী পুরুষের সামনে উলঙ্গ হয়ে নাচছে। একজনের লিঙ্গ ওর যোনির মধ্যে, দ্বিতীয় জনের মুখের মধ্যে আর তৃতীয় জনের লিঙ্গ হয়ত পাছার ফুটোতে। মনে মনে নয়নার উলঙ্গ তীব্র যৌনতায় মাখামাখি দেহ এঁকে আর চরম যৌন সহবাসের ছবি এঁকেই দানা কামোত্তেজিত হয়ে ওঠে।
বাড়ির জানালা গুলো সব বন্ধ আর ভারী পর্দায় ঢাকা। বাড়ির ভেতর থেকে কোন আওয়াজ শোনা যায় না। দানা একবার ভাবে একটু এদিক ওদিক ঘুরে দেখবে, হয়ত কোন এক জানালার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেতেও পারে নয়নার উলঙ্গ লাস্যময়ী দেহ পল্লব। ভাইকে দুধ খাওয়ানোর সময়ে ফর্সা নিটোল সুউন্নত স্তন যুগলের দেখা পেয়েছিল, ফর্সা সুগোল ঊরুর দেখা একবার একটা মডেলিঙের ফটোশুটে দেখেছিল। কিন্তু সম্পূর্ণ উলঙ্গ নয়নাকে কোনোদিন দেখার সুযোগ হয়নি। কেমন হবে নয়নার ঊরুসন্ধি, নিশ্চয় কোমল ফর্সা রোমহীন। মনের মধ্যে চাপা কামোত্তেজনার সাথে সাথে ভীষণ এক কামক্ষুধা চাগিয়ে ওঠে।
এমন সময়ে দানার মোবাইল বেজে ওঠে। পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে নয়নার ফোন। নয়না বাড়িতে ঢুকেছে বেশিক্ষণ হয়নি, সবে মাত্র আধা ঘণ্টা, তাহলে ওকে ফোন করার কি মানে?
ফোন তুলে দানা জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ, বলুন ম্যাডাম কি হয়েছে?”
ফোনে পুরুষের হাসির আওয়াজ ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই। কয়জনে হাসছে, বাইরের লোকটা তিনজন বলেছিল। নয়নার কম্পিত কণ্ঠস্বর শোনা যায়, “আপনি বলেছিলেন বাড়িতে আপনি একা থাকবেন। এর অর্থ কি মিস্টার বিশ্বাস? আমি কখনো একজনের বেশি কারুর সাথে রাত কাটাই না।”
দানা বুঝতে পারে যে নয়নাকে ঠকানো হয়েছে, একজন বলে তিনজনে ওকে ছেঁকে ধরেছে। ওকে ফোন করার অর্থ, নয়না বিপদে পড়েছে তাই সাহায্য চায়। কানে ফোন চেপে ইতর কামুক হাসির কলরবের সাথে একজনের কণ্ঠস্বর শুনতে পায়, “আরে নয়না এত ছটফট করছো কেন? একজন হোক আর তিনজন। তোমার তিনটে ফুটো, আমাদের তিনটে বাঁড়া। একটা মুখে, একটা পোঁদে একটা গুদে। সত্যি বলছি মেয়েদের সবকটা ছিদ্র পূরণ না করলে কি আর সেক্সের চূড়ান্ত আনন্দ আসে? একা একসাথে সেটা সম্ভব নয় তাই ওই দুইজন সাথে।” বলেই হিহিহি করে হেসে দেয়। নয়না আর্ত চিৎকার করে ওঠে, “না না...” সেই সাথে ঠাস করে চড়ের শব্দ আর নয়নার ফোঁপানোর আওয়াজ।
নয়নার আসন্ন বিপদে বুঝতে পেরে দানার রক্ত গরম হয়ে যায়। নয়নার অসহায় ছবি চোখের সামনে ফুটে উঠতেই এই ঠাণ্ডায় দানা ঘেমে যায়। একটু আগে যাকে উলঙ্গ করে সম্ভোগ করার জন্য মন চঞ্চল হয়ে উঠেছিল তাকে বাঁচাতে দানার শরীরে দানবের শক্তি ভর করে আসে। পকেট থেকে পিস্তল বের করে সদর দরজায় জোরে একটা লাথি মারে। সেই শব্দ শুনে কাজের লোকটা দৌড়ে আসে। দানার হাতে পিস্তল দেখে লোকটা ঘাবড়ে যায়। দানা গুরু গম্ভির কণ্ঠে ওই লোকটাকে দরজা খুলতে নির্দেশ দেয় কিন্তু দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে পিস্তলের ডগায় সাইলেন্সার লাগিয়ে নেয়, গুলি চালাতে হলে যেন আশেপাশের বাড়িতে শব্দ না যায়।
দানা লোকটার কলার ধরে চেঁচিয়ে ওঠে, “আর কোন দরজা আছে কি?”
লোকটা মাথা নাড়িয়ে বলে হ্যাঁ পেছনে রান্না ঘরের লাগোয়া একটা দরজা আছে, যেটা খোলা। লোকটাকে ঠেলে দিয়ে বাড়ির পেছনের দিকে দৌড়ে যায়। একটা ছোট দরজা খোলা দেখতে পেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে। রান্না ঘর পেরিয়েই বসার ঘরে পা রাখে দানা। বেশ বড় সুসজ্জিত বসার ঘর, মাথার ওপরে ঝাড় বাতি কিন্তু সেটা নেভানো। মৃদু লাল নীল আলোয় বিশাল বসার ঘর আলোকিত। ঘরের মাঝখানে অর্ধ উলঙ্গ নয়না দাঁড়িয়ে, পরনে শুধুমাত্র শায়া ছাড়া আর কিছুই নেই। তিন পুরুষের ঠোঁটে ইতর হাসি, কারুর পরনে জামা নেই। একজন বিদেশী নয়নার পিছুমোড় করে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে, দ্বিতীয় বিদেশী ওর শাড়ি খানা মুখের কাছে চেপে ইতর এক হাসি দেয় নয়নার উলঙ্গ অসহায় রূপ দেখে। শায়াটা কোনরকমে কোমরে ঝুলছে, একটু হলেই পড়ে যাবে। সুউন্নত স্তন যুগল সামনের দিকে উঁচিয়ে। চুল অবিন্যস্ত, গাল বেয়ে চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে। অমলেন্দু নামে লোকটা অসহায় নয়নার একটা স্তন হাতের মধ্যে নিয়ে টিপছে আর ইতর হাসি দিয়ে কানেকানে কিছু বলছে। নয়না ছটফট করে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু তিনখানা পুরুষের সাথে এক নারীর কিছুতেই পেরে ওঠা সম্ভব নয়।
দানা ওদের দিকে পিস্তল তাগ করে গর্জে ওঠে, “ম্যাডামকে ছেড়ে দে, না হলে মাথার খুলি উড়িয়ে দেব।”
ঠান্ডা বেশ জমিয়েই পড়েছে মহানগরের বুকে। সবাই নিজেদের সোয়েটার জ্যাকেট ইত্যাদি বের করে গায়ে চড়িয়ে নিয়েছে। সকাল বেলা গাড়ি নিয়ে বের হলে রাস্তায় কুয়াশার দেখা পাওয়া যায়, রাতের বেলা ঘরে ফেরার সময়ে কোন কোনোদিন ঘন কুয়াশা দেখা পাওয়া যায়।
গাড়ির ড্রাইভার, বাড়ির চাকর বাকর, বাগানের মালী, গার্ড এদেরকে বড় লোকেরা মানুষ বলেই গন্য করেনা। ওরা মনে করে ড্রাইভার যেন এই গাড়ির একটা অঙ্গ, চালকের স্থানে বসে স্টিয়ারিং হুইল ধরে বসে থাকা একটা যন্ত্র। তাই পেছনের সিটে বসে মনের আনন্দে অনেক গোপন কথা সারে, কারুর সাথে একটু কখনো একটু ভালোবাসার খেলা, কখনো কারুর সাথে কথা বলা। যেই কথা সর্ব সমক্ষে হতে পারে না সেইগুলো গাড়ির পেছনের সিটে করে ফেলে।
দানার কানে মাঝে মাঝেই এই উড়ো চিঠি ভেসে আসে, নয়নার অনেক অজানা বিষয় ধীরে ধীরে দানা জেনে ফেলে। নয়নার সত্যিকারের বন্ধু আর বান্ধবী বলতে ওই সেক্রেটারি সুমিতা আর ম্যানেজার সমুদ্র। এই দুইজন ছাড়া দানা আর কারুর সাথে নয়নাকে খোলা মনে মিশতে দেখেনি এতদিন। সুমিতা আর সমুদ্রের সাথে ওর সম্পর্ক বেশ গভীর সেটা ওদের কথাবার্তা মেলামেশা থেকেই বুঝে যায়। তিনজন যেন একটা সুতোয় বাঁধা। ওদের মাঝে শুধুমাত্র অভিনেত্রী, সেক্রেটারি অথবা ম্যানেজারের সম্পর্ক নয় এটা বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারে। একজনের ব্যাথা লাগলে অন্যজনে দৌড়ে এসে হাত বাড়িয়ে দেয়।
বেশ কিছুদিন থেকে নয়নার মন ভালো নেই। গত ছবির কাজের পুরো টাকা হাতে আসেনি, সামনে কোন ছবির কাজ হাতে নেই। বেশ কয়েকটা বিজ্ঞাপনের মডেলিঙের কাজ আছে তবে তাতে বিশেষ কিছু টাকা হাতে আসেনা। দানা গাড়ির চালকের আসনে বসে বটে কিন্তু পেছনে বসা নয়না, সমুদ্রের আর সুমিতার কথাবার্তায় ওদের আর্থিক দুরাবস্থা আঁচ করতে অসুবিধে হয়না। এই ঝকমকে সিনেমা, টিভির জগতে সবাই সবাইকে লাথি মেরে উপরে ওঠার প্রচেষ্টায় থাকে। সিনেমা জগতে নয়নার প্রচুর বন্ধু বান্ধব, মাঝে মাঝেই এর তার পার্টিতে যায়। দানা জানে এই পার্টিগুলোতে কি হয়, শুধু মদ খাওয়া আর উচ্চ সুরের গানের তালে উদ্দাম নৃত্য করা। এর আগেও বহুবার নয়না এই সব পার্টিতে গেছে আর মদে চুর হয়ে রাতে ঘরে ফিরেছে। কোন কোনোদিন সুমিতা কোনোদিন সমুদ্র হয়তো সাথে থাকে, কোন দিন থাকে না। যেদিন সুমিতা অথবা সমুদ্র সাথে থাকে সেদিন ওরাই নয়নাকে ফ্লাটে পৌঁছে দেয় আর যেদিন থাকেনা সেদিন নিতা আর কমলাকে নিচে ডেকে নেয় নয়নাকে ধরে ফ্লাটে নিয়ে যেতে। দানা কোনোদিন নয়নাকে তুলে ধরে ফ্লাটে নিয়ে যেতো না, পাছে যদি কিছু ভেবে বসে। তবে মদের নেশায় চুর নয়নাকে পেছনের সিটে অবিন্যাস্ত পোশাকে অনেকবার দেখে দানার বুকের রক্ত ফুটে উঠতো। কোনোদিন ওর ছোট পার্টি পোশাক অথবা ওর স্কারট অনেক উপরে উঠে যেত যার ফলে নয়নার ঊরুসন্ধি উন্মুক্ত হয়ে যেত। যেদিন শাড়ি পরে বের হত সেদিন নয়নাকে আরো লাস্যময়ী দেখতে লাগত। নরম ফর্সা গোল পেটের মাঝে সুগভীর নাভি, পেটের মাংস একটু ফোলা ফোলা, সাধারণত সব বাঙালিদের একটুখানি মেদ থাকে যেটা ওদের মাদকতাময় রূপ আরও বেশি বাড়িয়ে তোলে। নাভির অনেক নিচে শাড়ির গিঁট, মনে হয় একটু হলে কোমর থেকে খসে পড়ে যাবে। ব্লাউজ খানা এত ছোট, কোনোরকমে নিটোল ফর্সা স্তন যুগল ঢেকে রাখতে সক্ষম হত। শাড়ির আঁচল বুক থেকে খসে পড়ে নিটোল স্তনের মাঝের গভীর বক্ষ বিভাজন উন্মুক্ত হয়ে যায়। কোনরকমে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে পেছনের সিটে এলিয়ে শুয়ে থাকে নয়না, যতক্ষণ না গাড়ির ফ্লাটের নিচের পারকিংয়ে ঢোকে।
মাঝে মাঝেই নয়নার বাড়িতে লোক জন আসে, দানার কানে ভেসে আসে টুকরো টুকরো বার্তালাপ। কেউ আসে ছোটোখাটো কোন স্ক্রিপ্ট নিয়ে, কেউ আসে কোন বিজ্ঞাপন নিয়ে, অনেকে আবার টাকার তাগিদা দিতে আসে। বড় লোকেদের বড় বড় ব্যাপার ওর মধ্যে নাক না গলানোই ভালো, তাই দানা ওই ছোট ঘরে বসে টিভি দেখে।
হাতে বিশেষ কাজ না থাকার ফলে বাপ্পা নস্করের সাথে নয়নার দেখা করা ইন্দানিং একটু বেড়ে গেছে। মাঝে মাঝেই দানা, নয়নাকে নিয়ে শহর এক নির্জনে একটা বাড়িতে যায়, সেখানে দুইজনে অনেকক্ষণ সময় কাটায়। সেখানে অবশ্য ফারহানের সাথে দেখা হয়ে যায়। মাঝে মাঝে কোথাও ফিতে কাটার, কোন জলসায় যাওয়ার, কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার ডাক পড়ে। সমুদ্র সব ব্যবস্থা করে দেয়, সেই সাথে সেইখানের নিরাপত্তার ব্যবস্থার দিকেও নজর রাখে। তবে দানা কখনো নয়নার পাশ ছাড়ে না, নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে, নয়নার পাশে ছায়ার মতন লেগে থাকে। ওকে আগলে রাখতে গিয়ে মাঝে মাঝেই যে ওর সাথে ধাক্কাধাক্কি হয় না সেটা নয়। তবে সেই সময়ে নয়নাকে একটু জড়িয়ে ধরার মানসিকতা যে একদম জাগে না সেটাও নয়। এহেন তীব্র লাস্যময়ী অভিনেত্রীর একটু ছোঁয়া পাওয়ার জন্য অনেক মানুষ উঁচিয়ে থাকে। বারেবারে পকেটে রাখা পিস্তলটা ছুঁয়ে দেখে নেয় আর এদিক ওদিকে চোখ রেখে আগলে রাখে নয়নাকে।
এছাড়াও কোন কোন বিকেলে নয়না নিজের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, কোথায় যায় কেউ জানে না। এই খবরটা একদিন দানা বাপ্পা নস্করকে জানায়। খবরটা জানতে পেরে বাপ্পা নস্কর কিছুক্ষণ ভেবে চিন্তে ওকে নয়নাকে অনুসরন করতে নির্দেশ দেয়। বাপ্পা নস্কর জানতে চায় নয়না কোথায় যায়, কার সাথে মেলা মেশা করছে। নয়নার গাড়ি চালায় বটে কিন্তু আসলে দানা বাপ্পা নস্করের এক গুপ্তচর, বাপ্পা নস্কর ওকে সেই জন্যে ভালো টাকা দেয়। দানা মাঝে মাঝেই নয়নাকে বলে, কোথায় যাচ্ছে কেন যাচ্ছে ইত্যাদি যেন দানাকে একটু জানিয়ে যায়, তাহলে অসময়ে রক্ষা করতে সুবিধা হবে। নয়না হেসে ওর কথা উড়িয়ে দেয়, বলে ওর মতন বড় নায়িকার ক্ষতি কেউ করতে চাইবে না।
সেদিন সকাল থেকে নয়না একটা বিজ্ঞাপনের জন্য খুব ব্যস্ত ছিল। বিকেলের দিকে বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষে বাড়ি ফিরে দানাকে জানায় রাতে ওকে একটা বিদেশী পরিচালকের সাথে দেখা করার কথা। সেইদিন খুব ক্লান্ত দেখায় নয়নাকে, তাও ওই বিদেশী পরিচালকের সাথে দেখা করা খুব জরুরি।
সেদিন নয়না একটা ফিনফিনে কালো জালের শাড়ি পরে আর একটা গাড় লাল রঙের ক্ষুদ্র ব্লাউজ পরে পার্টিতে যাওয়ার জন্য তৈরি। শাড়িটা না পরার মতন, ওর নিচে কি আছে কি নেই সব দেখা যায়। কাঁচুলিটা পুরোপুরি ব্লাউজ না বলে ব্রা বললে ভালো হয়। হাতা বিহীন কাঁচুলি, ঘাড়ের কাছে একটা গিঁট আর পিঠের দিকে একটা গিঁট। বুকের নীচ থেকে সম্পূর্ণ পেট অনাবৃত, আঁচলটা দুই উন্নত স্তন মাঝে একটা সরু দড়ির মতন পেঁচিয়ে। অসম্ভব যৌন আবেদনে মাখামাখি লাস্যময়ী দেখাচ্ছিল সেদিন। চোখের তারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট কিন্তু মেকআপের দৌলতে সারা ক্লান্তি ঢেকে দানাকে একটা ঠিকানা দিয়ে গাড়ি চালাতে নির্দেশ দেয়। দানা মাঝে মাঝেই আয়নায় নয়নার আপাদমস্তক দেখে আর ভাবে ইসস, এই রকম লাস্যময়ী কোন নারীকে একরাতের জন্য বিছানায় পেলে কত মজা হবে।
অন্যদিনের চেয়ে সেদিন বেশ রাতে করেই বের হয়। সাধারণত পার্টি অথবা কারুর সাথে দেখা করার থাকলে, নয়না রাত নটা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয় যাতে রাত দশটা নাগাদ গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু সেদিন রাত এগারোটা নাগাদ ফ্লাট থেকেই বেরিয়েছিল আর যে ঠিকানা দানাকে দিয়েছিল সেখানে পৌঁছাতে প্রায় আরো আধা ঘণ্টা লেগে যাবে। দানা খানিক ধন্ধে পড়ে যায়, কেমন লোকের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে? ঠিকানাটা বেশ বড়লোকের এলাকায়। বেশি মাথা ঘামানো ভালো নয় তাই চুপচাপ কোন প্রশ্ন না করেই গাড়ি চালায়, কিন্তু জানা একটু দরকার না হলে বাপ্পা নস্করকে কি উত্তর দেবে।
নয়না গুনগুন গান ধরে, একটা সিগারেট জ্বালিয়ে দানাকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নেই?”
দানা মিচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে জানায়, “না ম্যাডাম, কেউ নেই।” বলতে লজ্জা পায় নিজের কথা। ঠিক কার কথা বলবে, ইন্দ্রাণী না মহুয়া। এতদিনে মহুয়ার প্রগাড় ভালোবাসার টানে ইন্দ্রাণী যদিও আবছা হয়ে গেছে তাও মাঝে মাঝেই মনে কোনে উদয় হয়।
দানার জানতে ইচ্ছে করে নয়না কি সত্যি কাউকে ভালোবাসে। কারন নয়না বহু পুরুষের অঙ্কশায়িনী হলেও কোন এক পুরুষের সাথে বেশি রাত কাটায়নি। বাড়িতে পুরুষের আসা যাওয়া বলতে একমাত্র সমুদ্র ছাড়া আর কেউ নয়। তবে নয়নার মতন উঁচু দরের এক অভিনেত্রী কি সামান্য এক ম্যানেজারের সাথে প্রেম করবে? সেটা হতে পারে না কারন সমুদ্র ওর টাকাতেই বাঁচে আর নয়না উচ্চভিলাষী নারী।
সাতপাঁচ ভেবে দানা নয়নাকে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা ম্যাডাম একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি, যদিও একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন।”
এতদিনে নয়না আর দানা যদিও বিশেষ খোলামেলা হয়ে কথাবার্তা বলেনি তাও নয়না উৎসুক হয়ে জানতে চায়, “কি জিজ্ঞেস করতে চাও?”
দানা মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করে, “আপনি কবে বিয়ে করবেন, ম্যাডাম?”
নয়না প্রশ্ন শুনে কিঞ্চিত অবাক হয়ে হেসে ফেলে, “কাউকে পেলে তবে না বিয়ে করবো। এখন মাথার মধ্যে শুধু কাজ ঘোরাফেরা করে, বুঝলে। আগে নিজের ভবিষ্যৎ ঠিক করে নেই তারপরে বিয়ের কথা ভাববো।”
এর চেয়ে একজন ড্রাইভারের বিশেষ কিছু জিজ্ঞেস না করাই ভালো তাই দানা আবার চুপ করে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়নার দেওয়া ঠিকানায় গাড়ি পৌঁছে যায়। শীতকালে রাস্তা এমনিতেই ফাঁকা হয়ে গেছে, তারপরে বিত্তশালী এলাকা, রাস্তা ঘাট জনমানব শুন্য। দানা একটা উঁচু পাঁচিল দেওয়া বাড়ির সামনে এসে গাড়ি দাঁড় করায়। নয়না একবার বন্ধ গেটের দিকে দেখে, দানাকে হর্ন মারতে বলে। দানা হর্ন মারতেই একজন কাজের লোক এসে বিশাল লোহার গেট খুলে দেয় আর দানা গাড়ি নিয়ে ভেতরে ঢুকে যায়। চারপাশে ফুলের বাগানে ঘেরা একতলা বাড়ি তবে বেশি বড় নয়। বাড়ির সামনে আরো একটা কালো রঙের গাড়ি দাঁড় করানো। ওই গাড়ি নিশ্চয় ওই বিদেশী পরিচালকের। নয়না গাড়ি থেকে নেমে এদিক ওদিকে দেখে, চেহারায় আশঙ্কা ফুটে ওঠে। কিছু ভেবে ক্লাচ ব্যাগ থেকে ফোন বের করে কাউকে একটা ফোন করে। সঙ্গে সঙ্গে একজন সুট পরা দেশী ভদ্রলোক সদর দরজা থেকে বেরিয়ে এসে অমায়িক হাসি হেসে নয়নাকে অভ্যর্থনা জানায়। অমায়িক হাসি দিয়ে ভদ্রলোক নয়নার খোলা পিঠের নিচে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে বাড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। এতরাতে কি আর সিনেমার স্ক্রিপ্ট পড়া হবে, হয়ত ওই বিদেশী পরিচালক নয়নার স্ক্রিপ্ট পড়বে, কোন অঙ্গে কত মধু, কোন অঙ্গে কত উঁচু নিচু ঢেউ এই সব।
দানা গাড়ি পার্ক করে একটা সিগারেট জ্বালায়। শীতের আকাশে মেঘের লেশ মাত্র নেই, গায়ের জ্যাকেটটা বেশি করে গায়ের সাথে জড়িয়ে ধরে। যে লোকটা লোহার গেট খুলে দিয়েছিল সে একবার ওর কাছে এসে চায়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে যায়। দানা মানা করে দিয়ে লোকটাকে বাড়ির মালিকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে। লোকটার মুখে জানতে পারে, বাড়ির মালিক এক বিদেশী বাঙ্গালী পরিচালক, অমলেন্দু বিশ্বাস। জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো জানতে পারে যে বাড়িতে অমলেন্দু ছাড়া আরো দুইজন বিদেশী মানুষ আছেন। দানা মনে মনে হেসে ফেলে, তাহলে নয়নাকে আজ রাতে তিনজনে মিলে কাম সম্ভোগ করবে। ইসস, নয়নার মতন একজন সুন্দরী চূড়ান্ত লাস্যময়ী অভিনেত্রী, তিন ধনী পুরুষের সামনে উলঙ্গ হয়ে নাচছে। একজনের লিঙ্গ ওর যোনির মধ্যে, দ্বিতীয় জনের মুখের মধ্যে আর তৃতীয় জনের লিঙ্গ হয়ত পাছার ফুটোতে। মনে মনে নয়নার উলঙ্গ তীব্র যৌনতায় মাখামাখি দেহ এঁকে আর চরম যৌন সহবাসের ছবি এঁকেই দানা কামোত্তেজিত হয়ে ওঠে।
বাড়ির জানালা গুলো সব বন্ধ আর ভারী পর্দায় ঢাকা। বাড়ির ভেতর থেকে কোন আওয়াজ শোনা যায় না। দানা একবার ভাবে একটু এদিক ওদিক ঘুরে দেখবে, হয়ত কোন এক জানালার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেতেও পারে নয়নার উলঙ্গ লাস্যময়ী দেহ পল্লব। ভাইকে দুধ খাওয়ানোর সময়ে ফর্সা নিটোল সুউন্নত স্তন যুগলের দেখা পেয়েছিল, ফর্সা সুগোল ঊরুর দেখা একবার একটা মডেলিঙের ফটোশুটে দেখেছিল। কিন্তু সম্পূর্ণ উলঙ্গ নয়নাকে কোনোদিন দেখার সুযোগ হয়নি। কেমন হবে নয়নার ঊরুসন্ধি, নিশ্চয় কোমল ফর্সা রোমহীন। মনের মধ্যে চাপা কামোত্তেজনার সাথে সাথে ভীষণ এক কামক্ষুধা চাগিয়ে ওঠে।
এমন সময়ে দানার মোবাইল বেজে ওঠে। পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে নয়নার ফোন। নয়না বাড়িতে ঢুকেছে বেশিক্ষণ হয়নি, সবে মাত্র আধা ঘণ্টা, তাহলে ওকে ফোন করার কি মানে?
ফোন তুলে দানা জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ, বলুন ম্যাডাম কি হয়েছে?”
ফোনে পুরুষের হাসির আওয়াজ ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই। কয়জনে হাসছে, বাইরের লোকটা তিনজন বলেছিল। নয়নার কম্পিত কণ্ঠস্বর শোনা যায়, “আপনি বলেছিলেন বাড়িতে আপনি একা থাকবেন। এর অর্থ কি মিস্টার বিশ্বাস? আমি কখনো একজনের বেশি কারুর সাথে রাত কাটাই না।”
দানা বুঝতে পারে যে নয়নাকে ঠকানো হয়েছে, একজন বলে তিনজনে ওকে ছেঁকে ধরেছে। ওকে ফোন করার অর্থ, নয়না বিপদে পড়েছে তাই সাহায্য চায়। কানে ফোন চেপে ইতর কামুক হাসির কলরবের সাথে একজনের কণ্ঠস্বর শুনতে পায়, “আরে নয়না এত ছটফট করছো কেন? একজন হোক আর তিনজন। তোমার তিনটে ফুটো, আমাদের তিনটে বাঁড়া। একটা মুখে, একটা পোঁদে একটা গুদে। সত্যি বলছি মেয়েদের সবকটা ছিদ্র পূরণ না করলে কি আর সেক্সের চূড়ান্ত আনন্দ আসে? একা একসাথে সেটা সম্ভব নয় তাই ওই দুইজন সাথে।” বলেই হিহিহি করে হেসে দেয়। নয়না আর্ত চিৎকার করে ওঠে, “না না...” সেই সাথে ঠাস করে চড়ের শব্দ আর নয়নার ফোঁপানোর আওয়াজ।
নয়নার আসন্ন বিপদে বুঝতে পেরে দানার রক্ত গরম হয়ে যায়। নয়নার অসহায় ছবি চোখের সামনে ফুটে উঠতেই এই ঠাণ্ডায় দানা ঘেমে যায়। একটু আগে যাকে উলঙ্গ করে সম্ভোগ করার জন্য মন চঞ্চল হয়ে উঠেছিল তাকে বাঁচাতে দানার শরীরে দানবের শক্তি ভর করে আসে। পকেট থেকে পিস্তল বের করে সদর দরজায় জোরে একটা লাথি মারে। সেই শব্দ শুনে কাজের লোকটা দৌড়ে আসে। দানার হাতে পিস্তল দেখে লোকটা ঘাবড়ে যায়। দানা গুরু গম্ভির কণ্ঠে ওই লোকটাকে দরজা খুলতে নির্দেশ দেয় কিন্তু দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে পিস্তলের ডগায় সাইলেন্সার লাগিয়ে নেয়, গুলি চালাতে হলে যেন আশেপাশের বাড়িতে শব্দ না যায়।
দানা লোকটার কলার ধরে চেঁচিয়ে ওঠে, “আর কোন দরজা আছে কি?”
লোকটা মাথা নাড়িয়ে বলে হ্যাঁ পেছনে রান্না ঘরের লাগোয়া একটা দরজা আছে, যেটা খোলা। লোকটাকে ঠেলে দিয়ে বাড়ির পেছনের দিকে দৌড়ে যায়। একটা ছোট দরজা খোলা দেখতে পেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে। রান্না ঘর পেরিয়েই বসার ঘরে পা রাখে দানা। বেশ বড় সুসজ্জিত বসার ঘর, মাথার ওপরে ঝাড় বাতি কিন্তু সেটা নেভানো। মৃদু লাল নীল আলোয় বিশাল বসার ঘর আলোকিত। ঘরের মাঝখানে অর্ধ উলঙ্গ নয়না দাঁড়িয়ে, পরনে শুধুমাত্র শায়া ছাড়া আর কিছুই নেই। তিন পুরুষের ঠোঁটে ইতর হাসি, কারুর পরনে জামা নেই। একজন বিদেশী নয়নার পিছুমোড় করে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে, দ্বিতীয় বিদেশী ওর শাড়ি খানা মুখের কাছে চেপে ইতর এক হাসি দেয় নয়নার উলঙ্গ অসহায় রূপ দেখে। শায়াটা কোনরকমে কোমরে ঝুলছে, একটু হলেই পড়ে যাবে। সুউন্নত স্তন যুগল সামনের দিকে উঁচিয়ে। চুল অবিন্যস্ত, গাল বেয়ে চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে। অমলেন্দু নামে লোকটা অসহায় নয়নার একটা স্তন হাতের মধ্যে নিয়ে টিপছে আর ইতর হাসি দিয়ে কানেকানে কিছু বলছে। নয়না ছটফট করে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু তিনখানা পুরুষের সাথে এক নারীর কিছুতেই পেরে ওঠা সম্ভব নয়।
দানা ওদের দিকে পিস্তল তাগ করে গর্জে ওঠে, “ম্যাডামকে ছেড়ে দে, না হলে মাথার খুলি উড়িয়ে দেব।”