দেবায়ন ওর গালে হাত দিয়ে আদর করে বলে, “কিছু না রে।”
চোখ টিপে মিচকি হেসে ওকে প্রশ্ন করে, “নিবেদিতার সাথেও কিছু হয়েছে নাকি রে তোর? একটু ঝেড়ে কাস বাছাধন। না হলে কিন্তু আর আমাকে ছুঁতে দেবো না।”
দেবায়ন হেসে ফেলে, “কি যে বলিস না। নিবেদিতা ভালো মেয়ে, খুব ভালো মেয়ে।” গলা নামিয়ে ওকে উত্যক্ত করে ফিসফিস করে বলে, “যা ফিগার মাইরি আর যা সুন্দরী ভেবেছিলাম লাগাবো কিন্তু না...”
সঙ্গে সঙ্গে অনুপমা ওর বুকের ওপরে এক চাঁটি বসিয়ে দিয়ে চাপা অভিমানী কণ্ঠে বলে, “ফুটো থাকলেই হলো তাই না শয়তান।”
ওকে আলতো জড়িয়ে ধরে দেবায়ন উত্তর দেয়, “বর্তমানে একটাতেই খুশি আছি।”
ইসসস স্থান কাল একদম দেখে না পুচ্চু। সামনে অঙ্কুশ বসে, ওইপাশে নিবেদিতা হয়তো রান্নাঘর থেকে ওদের দেখে ফেলেছে। এইভাবে সর্ব সমক্ষে ওকে যে কোনোদিন জড়িয়ে ধরেনি সেটা নয় তবে সেই সব ভিন্ন পরিস্থিতি ছিল। হয়তো কোন মলে অথবা পার্কে অথবা বন্ধু বান্ধবীদের মাঝে কিন্তু একজনের বাড়িতে এসে এইভাবে জড়িয়ে ধরবে। লজ্জা বড় লজ্জা।
আলতো করে ওর হাত ছাড়িয়ে বলে, “ওইদিকে তোর জন্য ক্যাভিয়ার আর ক্রাব আনা হয়েছে।”
দেবায়নের চোখ কপালে উঠে যায়, “সত্যি বলছি এর বিষয়ে আমার অজানা। আর সত্যি বলছি এই উপহারের বিষয়ে আমার অজানা ছিল।”
অনুপমা ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, “তার মানে আগে থেকে এই লাঞ্চের ইনভিটেশান ছিল। তুই আমাকে বলিসনি কেন তাহলে? দেখ একদম খালি হাতে এসে গেছি। বাড়িতে একটা ছোট ছেলে তার জন্যেও কিছুই আনা হয়নি।”
দেবায়ন মাথা চুলকে উত্তর দেয়, “আসলে কি জানিস একটু ধন্ধে ছিলাম। হয়তো আগে তোকে বললে তুই মানা করে দিতিস। আমি চাইছিলাম তোকে এই পরিবারের সাথে মিশাতে।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “কারন কি জানতে পারি কি?”
ততক্ষণে রান্না ঘর থেকে নিবেদিতা ওকে ডাক দেয়, “অনুপমা একটু এদিকে আসবে?”
রান্না ঘরে ঢুকে দেখে এক এলাহি ব্যাপার সাজিয়ে বসে নিবেদিতা। একেবারে বিদেশী কুজিন সাজানো। বেশ বড় লাল অস্ট্রেলিয়ান ক্রাব, রেড ওয়াইন আর বিভিন্ন হার্বস দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখা। গ্রিলে ঢুকিয়ে দিল, তৈরি হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। নিবেদিতা ওকে বলে শুধু দাঁড়িয়ে থাকতে। নিজের বাড়িতে রান্না ঘরে কোনোদিন ঢোকেনি, তবে মামনির কাছে গেলেই রান্নাঘরে ঢুকে পড়ে। মামনির ওপরে ওর সব জোর খাটে। কচি মেয়ে হয়ে যায় মামনিকে পেলে। রান্নাঘরের স্লাবে বসে ছোট্ট মেয়ের মতন পা দোলাতে দোলাতে গল্পে মেতে ওঠে বৌমা আর শ্বাশুরি। ওর জন্য আপেল, পেয়ারা কলা ইত্যদি কেটে কেটে দেয় আর খেতে খেতে পা দুলিয়ে গল্পে মাতে। অফিসে কি কি হলো, কার সাথে কি হলো। মাঝে মাঝেই দেবায়নের নামে নালিশ ইত্যাদি।
ওইদিকে বাইরে ঝড় শুরু হতেই অনুপমা একটু চিন্তায় পড়ে যায়। পায়েলের জন্য গাড়িটা অফিসেই ছেড়ে এসেছে। ঝড় বৃষ্টি হবে সেটা যে একদম বুঝতে পারেনি তা নয়। তবে অনেকদিন পরে পুচ্চুর সাথে খোলা বাইকে বসে কোলকাতার বৃষ্টিতে ভেজার মজাই আলাদা। আজকাল মাসের মধ্যে কুড়ি পঁচিশ দিন বাইরে কাটায়, কাছে আর থাকে কতক্ষণ। ওর চিন্তামগ্ন চেহারা দেখে নিবেদিতা অভয় দিয়ে বলে, বেশি ঝড় হলে ওর গাড়ি ওকে ছেড়ে আসবে। হেসে মাথা নাড়ায় অনুপমা। আসার পর থেকে যে পরিমান আন্তরিকতা দেখিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই হয়তো শেষ পর্যন্ত বললেই ফেলল, এতো ঝড় বৃষ্টি নিয়ে আর বাড়ি ফিরে কাজ নেই রাতে ওর বাড়িতেই থেকে যেতে।
রাত ন'টার আগে কোনোদিন খায় না অনুপমা তবে দশটার মধ্যে ওদের খাওয়াদাওয়া শেষ হয়ে যায়। সকাল সকাল সবাইকে উঠতে হয়। যখন কলেজ ছিল তখন না হয় দেরি করে ঘুম থেকে উঠতো কিন্তু এখন অফিস থাকে।
সন্ধ্যের পরেই নিবেদিতা ওদের খেতে দিয়ে দেয়। খাওয়ার সময়ে বসে নিবেদিতা আর অনুপমা কোথায় কোথায় ঘুরতে গেছে সেই নিয়ে গল্পে মেতে ওঠে। এই কর্মসুত্রে দেবায়ন এদিকে ওদিকে একটু আধটু বেড়িয়েছে, কিন্তু অনুপমা আর নিবেদিতার মতন বিদেশ ভ্রমন করেনি। পিসা, লিওন থেকে নরওয়ে সুইডেনের গল্প, অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ থেকে গিজের পিরামিডের গল্প।
সেই সাথে অঙ্কুশ যোগদান করে ওদের বলে, “জানো, ইজিপ্টে গিয়ে উঠের পিঠে চেপে মাম্মার কি ভয় করেছিল। আমি কিন্তু একটুও ভয় পাইনি।”
ঠিক একদম অঙ্কনের মতন, জন্তু জানোয়ারদের একটুও ভয় পায়না। ছোটবেলায় মায়ের কাছে আবদার করেছিল কুকুর পুষবে কিন্তু অনুপমার একদম ইচ্ছে ছিল না বাড়িতে কোন জন্তু জানোয়ার আসুক। এমা, কুকুর বেড়াল ওর পায়ের কাছে ঘোরাফেরা করবে, আবার আদিখ্যেতা দেখিয়ে ওর বিছানায়, ছিছি।
খাওয়া দাওয়া পর্বের মাঝে ওর কাছে পায়েলের ফোন আসে। ফোন তুলেই আশঙ্কাজনক কণ্ঠে ওকে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে তুই আর দেবায়ন কোথায় আছিস?”
অনুপমা ওর আতঙ্কে ভরা কণ্ঠ শুনে প্রশ্ন করে, “কি হয়েছে এমন কাঁপছিস কেন?”
পায়েল ওকে বলে, “তাড়াতাড়ি বেলভিউতে চলে আয়। রুপকের অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে।”
সঙ্গে সঙ্গে শরীরের সব স্নায়ু সতর্ক হয়ে যায়। খাওয়া থামিয়ে দেবায়নের দিকে ছলছল আশঙ্কাজনক চেহারা নিয়ে বলে, “রুপকের এক্সিডেন্ট হয়েছে।”
দেবায়ন আঁতকে ওঠে, “কি করে কখন হলো?”
চোখ টিপে মিচকি হেসে ওকে প্রশ্ন করে, “নিবেদিতার সাথেও কিছু হয়েছে নাকি রে তোর? একটু ঝেড়ে কাস বাছাধন। না হলে কিন্তু আর আমাকে ছুঁতে দেবো না।”
দেবায়ন হেসে ফেলে, “কি যে বলিস না। নিবেদিতা ভালো মেয়ে, খুব ভালো মেয়ে।” গলা নামিয়ে ওকে উত্যক্ত করে ফিসফিস করে বলে, “যা ফিগার মাইরি আর যা সুন্দরী ভেবেছিলাম লাগাবো কিন্তু না...”
সঙ্গে সঙ্গে অনুপমা ওর বুকের ওপরে এক চাঁটি বসিয়ে দিয়ে চাপা অভিমানী কণ্ঠে বলে, “ফুটো থাকলেই হলো তাই না শয়তান।”
ওকে আলতো জড়িয়ে ধরে দেবায়ন উত্তর দেয়, “বর্তমানে একটাতেই খুশি আছি।”
ইসসস স্থান কাল একদম দেখে না পুচ্চু। সামনে অঙ্কুশ বসে, ওইপাশে নিবেদিতা হয়তো রান্নাঘর থেকে ওদের দেখে ফেলেছে। এইভাবে সর্ব সমক্ষে ওকে যে কোনোদিন জড়িয়ে ধরেনি সেটা নয় তবে সেই সব ভিন্ন পরিস্থিতি ছিল। হয়তো কোন মলে অথবা পার্কে অথবা বন্ধু বান্ধবীদের মাঝে কিন্তু একজনের বাড়িতে এসে এইভাবে জড়িয়ে ধরবে। লজ্জা বড় লজ্জা।
আলতো করে ওর হাত ছাড়িয়ে বলে, “ওইদিকে তোর জন্য ক্যাভিয়ার আর ক্রাব আনা হয়েছে।”
দেবায়নের চোখ কপালে উঠে যায়, “সত্যি বলছি এর বিষয়ে আমার অজানা। আর সত্যি বলছি এই উপহারের বিষয়ে আমার অজানা ছিল।”
অনুপমা ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, “তার মানে আগে থেকে এই লাঞ্চের ইনভিটেশান ছিল। তুই আমাকে বলিসনি কেন তাহলে? দেখ একদম খালি হাতে এসে গেছি। বাড়িতে একটা ছোট ছেলে তার জন্যেও কিছুই আনা হয়নি।”
দেবায়ন মাথা চুলকে উত্তর দেয়, “আসলে কি জানিস একটু ধন্ধে ছিলাম। হয়তো আগে তোকে বললে তুই মানা করে দিতিস। আমি চাইছিলাম তোকে এই পরিবারের সাথে মিশাতে।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “কারন কি জানতে পারি কি?”
ততক্ষণে রান্না ঘর থেকে নিবেদিতা ওকে ডাক দেয়, “অনুপমা একটু এদিকে আসবে?”
রান্না ঘরে ঢুকে দেখে এক এলাহি ব্যাপার সাজিয়ে বসে নিবেদিতা। একেবারে বিদেশী কুজিন সাজানো। বেশ বড় লাল অস্ট্রেলিয়ান ক্রাব, রেড ওয়াইন আর বিভিন্ন হার্বস দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখা। গ্রিলে ঢুকিয়ে দিল, তৈরি হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। নিবেদিতা ওকে বলে শুধু দাঁড়িয়ে থাকতে। নিজের বাড়িতে রান্না ঘরে কোনোদিন ঢোকেনি, তবে মামনির কাছে গেলেই রান্নাঘরে ঢুকে পড়ে। মামনির ওপরে ওর সব জোর খাটে। কচি মেয়ে হয়ে যায় মামনিকে পেলে। রান্নাঘরের স্লাবে বসে ছোট্ট মেয়ের মতন পা দোলাতে দোলাতে গল্পে মেতে ওঠে বৌমা আর শ্বাশুরি। ওর জন্য আপেল, পেয়ারা কলা ইত্যদি কেটে কেটে দেয় আর খেতে খেতে পা দুলিয়ে গল্পে মাতে। অফিসে কি কি হলো, কার সাথে কি হলো। মাঝে মাঝেই দেবায়নের নামে নালিশ ইত্যাদি।
ওইদিকে বাইরে ঝড় শুরু হতেই অনুপমা একটু চিন্তায় পড়ে যায়। পায়েলের জন্য গাড়িটা অফিসেই ছেড়ে এসেছে। ঝড় বৃষ্টি হবে সেটা যে একদম বুঝতে পারেনি তা নয়। তবে অনেকদিন পরে পুচ্চুর সাথে খোলা বাইকে বসে কোলকাতার বৃষ্টিতে ভেজার মজাই আলাদা। আজকাল মাসের মধ্যে কুড়ি পঁচিশ দিন বাইরে কাটায়, কাছে আর থাকে কতক্ষণ। ওর চিন্তামগ্ন চেহারা দেখে নিবেদিতা অভয় দিয়ে বলে, বেশি ঝড় হলে ওর গাড়ি ওকে ছেড়ে আসবে। হেসে মাথা নাড়ায় অনুপমা। আসার পর থেকে যে পরিমান আন্তরিকতা দেখিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই হয়তো শেষ পর্যন্ত বললেই ফেলল, এতো ঝড় বৃষ্টি নিয়ে আর বাড়ি ফিরে কাজ নেই রাতে ওর বাড়িতেই থেকে যেতে।
রাত ন'টার আগে কোনোদিন খায় না অনুপমা তবে দশটার মধ্যে ওদের খাওয়াদাওয়া শেষ হয়ে যায়। সকাল সকাল সবাইকে উঠতে হয়। যখন কলেজ ছিল তখন না হয় দেরি করে ঘুম থেকে উঠতো কিন্তু এখন অফিস থাকে।
সন্ধ্যের পরেই নিবেদিতা ওদের খেতে দিয়ে দেয়। খাওয়ার সময়ে বসে নিবেদিতা আর অনুপমা কোথায় কোথায় ঘুরতে গেছে সেই নিয়ে গল্পে মেতে ওঠে। এই কর্মসুত্রে দেবায়ন এদিকে ওদিকে একটু আধটু বেড়িয়েছে, কিন্তু অনুপমা আর নিবেদিতার মতন বিদেশ ভ্রমন করেনি। পিসা, লিওন থেকে নরওয়ে সুইডেনের গল্প, অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ থেকে গিজের পিরামিডের গল্প।
সেই সাথে অঙ্কুশ যোগদান করে ওদের বলে, “জানো, ইজিপ্টে গিয়ে উঠের পিঠে চেপে মাম্মার কি ভয় করেছিল। আমি কিন্তু একটুও ভয় পাইনি।”
ঠিক একদম অঙ্কনের মতন, জন্তু জানোয়ারদের একটুও ভয় পায়না। ছোটবেলায় মায়ের কাছে আবদার করেছিল কুকুর পুষবে কিন্তু অনুপমার একদম ইচ্ছে ছিল না বাড়িতে কোন জন্তু জানোয়ার আসুক। এমা, কুকুর বেড়াল ওর পায়ের কাছে ঘোরাফেরা করবে, আবার আদিখ্যেতা দেখিয়ে ওর বিছানায়, ছিছি।
খাওয়া দাওয়া পর্বের মাঝে ওর কাছে পায়েলের ফোন আসে। ফোন তুলেই আশঙ্কাজনক কণ্ঠে ওকে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে তুই আর দেবায়ন কোথায় আছিস?”
অনুপমা ওর আতঙ্কে ভরা কণ্ঠ শুনে প্রশ্ন করে, “কি হয়েছে এমন কাঁপছিস কেন?”
পায়েল ওকে বলে, “তাড়াতাড়ি বেলভিউতে চলে আয়। রুপকের অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে।”
সঙ্গে সঙ্গে শরীরের সব স্নায়ু সতর্ক হয়ে যায়। খাওয়া থামিয়ে দেবায়নের দিকে ছলছল আশঙ্কাজনক চেহারা নিয়ে বলে, “রুপকের এক্সিডেন্ট হয়েছে।”
দেবায়ন আঁতকে ওঠে, “কি করে কখন হলো?”