ইমাম আব্দুল আযীয ছিলেন এক আকর্ষণীয় প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিত্ব। পিতার মত তিনিও ছিলেন দ্বীনদার এবং আলেম হিসাবে সুপ্রসিদ্ধ। এক ক্ষুদ্র গোত্রপতি হিসাবে যার যাত্রা শুরু হয়েছিল, স্বীয় নেতৃত্বগুণে একসময় তিনিই সমগ্র আরবের এক প্রতাপশালী অধিপতিতে পরিণত হন। (আমীন আর-রায়হানী, তারিখু নজদ আল-হাদীছ ওয়া মুলহাকাতুহু (বৈরূত : আল-মাতবা‘আহ আল-ইলমিয়াহ, ১ম প্রকাশ : ১৯২৮), পৃঃ ৫৫।) শুধু তাই নয় দীর্ঘ প্রায় ৩৯ বছরের শাসনামলে তিনি আরবের বুকে এমন এক শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন, যা ছিল পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর উপর সুদৃঢ়ভাবে ভিত্তিশীল। খুলাফায়ে রাশেদার পর এমন ন্যায়বিচারপূর্ণ শাসনব্যবস্থা আর কখনো পরিদৃষ্ট হয়নি। তিনি কেবল আপোষহীন রাষ্ট্রনায়কই ছিলেন না; বরং শায়খ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাবের নিবিড় সাহচর্যে তিনি পরিণত হয়েছিলেন তাওহীদ ও সুন্নাতের একজন প্রজ্ঞাবান দাঈ ইলাল্লাহ। তাই যখনই কোন নতুন অঞ্চল বিজিত হ’ত তাঁর প্রথম কাজ ছিল সেখানে মুবাল্লিগ এবং দাঈ প্রেরণ করা। তাঁর অবিশ্রান্ত প্রচেষ্টার বরকতে শিরক ও বিদ‘আতের আস্তাকুড়ে পরিণত হওয়া সমগ্র আরব আবারও তাওহীদের আলোকচ্ছটায় সমুজ্জ্বল হয়ে উঠে। (ইবনু বিশর, প্রাগুক্ত, ১/২৬৬ পৃঃ; হায়কাল, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭৫।) তাঁর সমসাময়িক ইমাম শাওকানী তাই তাঁর প্রশংসায় লিখেছেন, প্রায় সমগ্র হেজাযের অধিবাসী ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় তাঁর হাতে আনুগত্যের বায়‘আত গ্রহণ করল এবং শরী‘আতের নির্দেশাবলী পালনে অভ্যস্ত হয়ে উঠল। এমন এক সময়ে এটা ঘটেছিল যখন তারা ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানত না কেবল বক্র উচ্চারণে কালেমায়ে শাহাদত পাঠ করা ব্যতীত। এই চরম জাহেলিয়াতের মধ্য থেকেই উঠে এসে তারা সময়মত পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতসহ ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান যথার্থভাবে পালনকারীতে পরিণত হল’। (মাস‘ঊদ আলম নদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১২।)ফালিল্লাহিল হামদ।