What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মুহাম্মদ ﷺ এর বহু বিবাহ (1 Viewer)

billionbd2024

Member
Joined
Jan 8, 2024
Threads
19
Messages
177
Credits
7,784
সাধারণ কিছু মুসলিমের মনে একটা প্রশ্ন প্রায়ই ঘুরপাক খায়, তা হলো – রাসূলুল্লাহ ﷺ এতগুলো বিয়ে করতে গিয়েছিলেন কেন? সাধারণ মুসলিম পুরুষ না ৪টার বেশী বিয়ে করতে পারে না? উনি তাহলে ১১/১৩ টা বিয়ে করলেন কেন? অনেক ইসলাম বিদ্ধেষীরা মুহাম্মদ ﷺ-কে নারী লোভী বলে অপবাদ দিয়ে থাকে নাউযুবিল্লাহ। ইসলামবিদ্ধেষীনা এমন অনেক ভিন্ন ধর্মী ভাই বোনেরাও আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর বহু বিবাহ নিয়ে প্রশ্ন তুলে থাকেন তাই তাদেরকে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাহআল্লাহ।

নবী করিম ﷺ ২৮ বা ৪০ বছর বয়সের একজন নারীকে বিয়ে করলেন যখন তিনি ২৫ বছরের ছিলেন। এছাড়াও খাদিজা (রা) এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মহানবী ﷺ বিয়ে করেনি বরং তিনি তার পুরো যৌবন খাদিজা (রা) এর সাথে কাটিয়েছিলেন। বাকি বিয়ে গুলো করেন ৫০ বছর বয়সের পরে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ৫০ বছর বয়সে সাইন্টিফিকেলি পুরুষের নারী প্রতি আকর্ষন কম থাকে আর যদি থাকতই তাহলে যৌবনে কি হইছিল উনার? অথচ উনাকে আল্লাহ যত ইচ্ছা তত বিয়ের অনুমতি প্রদান করেছিলেন। তিনি চাইলেই তার সদব্যবহার করতে পারতেন যদি নারী লোভী হতেন। খাদীজার ইন্তেকালের পর রাসূল ﷺ জীবিত ছিলেন মাত্র তের বছর। এই তের বছরে রাসূল ﷺ বাকী ১০ জন/১২ জন স্ত্রী গ্রহণ করেছেন। প্রবৃত্তির কারণেই যদি হতো তাহলে যৌবনের সেই সোনালী দিনগুলোতেই একাধিক বিবাহ করতেন। একজন বৃদ্ধ নারীর সাথে যৌবন পার করতেন না, অতঃপর বয়স্কা বৃদ্ধা স্ত্রী খাদীজার মৃত্যু হ'লে তিনি নিজের ৫০ বছর বয়সে দ্বিতীয় বিয়ে করলেন আর এক ৫০ বছর বয়সী কয়েকটি সন্তানের মা একজন বিধবা মহিলা সাওদাকে নিতান্তই সাংসারিক প্রয়োজনে। মহানবী হযরত মোহাম্মদ সা. নিজের ইচ্ছায় কিছু করেননি। তিনি ছিলেন মহান রব আল্লাহর সবচেয়ে অনুগত বান্দা। তিনি দৃঢ়তার সাথে আল্লাহ তায়ালার আদেশ বাস্তবায়ন করেছেন, খাদিজা (রা) এর পরে প্রতিটা বিবাহের পেছনে প্রথমে আল্লাহর আদেশ ছিল তারপর সামাজিক প্রেক্ষাপট। রাসূল ﷺ এর বহু বিবাহের মাহাত্ম্য ও উদ্দেশ্যসমূহের মধ্যে অন্যতম ছিলো: নারী-পুরুষ সকলের জন্য শিক্ষা কার্যক্রমকে উন্মুক্ত করা ও বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া, শান্তি প্রতিষ্ঠা, ধর্মীয় বিধান স্পষ্ট করা, ধনী-গরীবের মধ্যে সাম্য প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক কৌশল ইত্যাদি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ বহু বিবাহের পিছনে অনেক কারন ছিল তার মধ্যে কিছু উল্লেখ করলাম।

বিবাহের কারণ সমূহ
১) সামাজিক ২) রাজনৈতিক ৩) সমাজের কোন কুপ্রথা নির্মূল ৪) শিক্ষামূলক

মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রায় সমস্ত বিবাহ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে শক্তিশালী করার রাজনৈতিক দিক ছিল এবং এটি আরব রীতিও ছিল, কিছু বিবাহের উদ্দেশ্য ছিল বিধবাদের জীবিকা নির্বাহ করা, সমাজে বিধবাদের জন্য পুনর্বিবাহ কঠিন ছিল তাই বিধবাদেরকে বিবাহ করার উৎসাহ বৃদ্ধিকরাও একটা কারন ছিল, রাজনৈতিক, কিছু সহানুভূতিশীল এবং ভালোবাসার কিছু বিষয় ছিল ও বিবাহর মাধ্যমে বিভিন্ন গোত্রকে এক করা। (বলেছেন - লরা ভেকিয়া ভ্যাগ্লিয়ারি, টমাস কার্লাইল, উইলিয়াম মন্টগোমারি ওয়াট, জন এসপসিতো, ফ্রান্সিস এডওয়ার্ড পিটার্স, উইলিয়াম এডওয়ার্ড ফিপস সূত্র উইকিপিডিয়া, এছাড়া প্রায় স্কলারই এই কথাগুলার সাথে একমত)

বিবাহের প্রেক্ষাপট সমূহঃ
১/ হযরত খাদিজা (রা) মৃত্যুর পরে। রাসুল ﷺ হযরত সওদা (রা) কে বিয়ে করেন রাসুলের চার কন্যা সন্তানকে দেখাশোনা করার জন্য।

২/ বনু মুস্তালিক গোত্রের নেতা হারেসার কন্যা জুহাইরিয়া (রা) কে রাসুল ﷺ বিয়ে করেন । হারেসা হয়ে গেল রাসুলের শ্বশুর, ফলে বনু মুছত্বালিক্ব গোত্রের যুদ্ধবন্দী একশত জন ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে মুসলমান হয়ে যান এবং চরম বিরুদ্ধবাদী এই গোত্রটি মিত্রশক্তিতে পরিণত হয়। জুওয়াইরিয়া (রা) তার কওমের জন্য বড় 'বরকত মন্ডিত মহিলা' (كَانَتْ أَعْظَمَ بَرَكَةً) হিসাবে বরিত হন এবং তাঁর গোত্র রাসূল ﷺ-এর শ্বশুর গোত্র (أَصْهَارُ رَسُولِ اللهِ) হিসাবে সম্মানজনক পরিচিতি লাভ করে'

৩/ যুদ্ধে ইহুদীদের সর্দারের কন্যা ও একই সাথে অপর সর্দারের স্ত্রী সুফিয়া রা. বিধবা হওয়ার পর মহানবী ﷺ তাকে বিয়ে করার ফলে যুদ্ধ তৎপরতা বন্ধ হয়ে যায়। রাসুলের সাথে সন্ধি করে ইহুদীরা খায়বারে বসবাস করতে থাকে।

৪/ নিজের কাছের সাহাবীদের সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত, আরও শক্তিশালী করার জন্য তিনি তাঁদের সাথে সম্পর্ক করেছেন। হযরত উমর (রা) এর কন্যা হাফসা (রা) কে এবং আবু বকর (রা) এর কন্যা আয়েশা (রা) কেও রাসুল ﷺ বিয়ে করেন। শুদু কি তাই? নবীজি নিজের কন্যা ফাতিমাকে (রা) কে আলীর (রা) সাথে এবং কুলসুম এবং রুকাইয়া (রা) কে বিয়ে দেন উসমান (রা) এর সাথে । ইসলামের ইতিহাস দেখুন। নবী মুহাম্মদ ﷺ এর ওফাতের পরে এই চারজনকেই ধারাবাহিক ভাবে খলিফা তথা মুসলিমদের আমীর নির্বাচিত করা হয় এতে বুঝা যায় রাসুল ﷺ এর কৌশলটি কত সুদূর প্রসারিত ছিল।

৫/ মহানবীর পালক পুত্র জায়েদ (রা) থেকে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী হযরত জয়নাব (রা) কে বিয়ে করেন সমাজের মিথ্যা কুসংস্কার দূর করার জন্য। ৪র্থ হিজরীতে উম্মে সালামাহকে বিবাহ করার পর তাঁর গোত্র বনু মাখযূমের স্বনামধন্য বীর খালেদ বিন অলীদের যে দুর্ধর্ষ ভূমিকা ওহোদ যুদ্ধে দেখা গিয়েছিল, তা পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং ৭ম হিজরীর শুরুতে তিনি মদীনায় এসে ইসলাম কবুল করেন।

৬/ মহানবী ﷺ কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানের কন্যা উম্মে হাবীবা রা.কে বিয়ে করলেন। এই বিয়ের পরে আবু সুফিয়ান একেবারে চুপসে গেলো। মদীনার মুসলমানদের ওপর হামলা করতে আর কখনো অগ্রসর হয়নি সে। কয়েকদিনের মধ্যেই তার মাঝে আমূল পরিবর্তন ঘটতে শুরু করলো। অবশেষে ঈমানের দীপ্তিতে উদ্ভাসিত হলো তার অন্তরাত্মা। মক্কা বিজয়ের পরে মহানবী ﷺ এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে ঈমানের সুশীতল বৃক্ষের ছায়াতলে আশ্রয় নিলো সেই আবু সুফিয়ান।

৭/ ৭ম হিজরীর যুলক্বা'দাহ মাসে সর্বশেষ মায়মূনা বিনতুল হারেছকে বিবাহ করার ফলে নাজদবাসীদের অব্যাহত শত্রুতা ও ষড়যন্ত্র থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায়। কেননা মায়মূনার এক বোন ছিলেন নাজদের সর্দারের স্ত্রী। এরপর থেকে উক্ত এলাকায় ইসলামের প্রচার ও প্রসার বাধাহীনভাবে চলতে থাকে। অথচ ইতিপূর্বে এরাই ৪র্থ হিজরীতে ৭০ জন ছাহাবীকে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। যা 'বি'রে মা'ঊনার ঘটনা' নামে প্রসিদ্ধ।

৮/ এছাড়া আরও কারন আছে । পুরুষরা সরাসরি রাসুল ﷺ থেকে যেকোন মাসালা মাসায়েল বিনা সংকোচে জেনে নিত। কিন্তু মহিলাদের অধিকাংশই নবী করীম ﷺ কে সরাসরি তাদের আভ্যন্তরীণ শরয়ী বিষয়সমূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করতে লজ্জা ও সংকোচবোধ করতেন। তাছাড়া তিনি মহিলাদের তরফ থেকে উত্থাপিত সকল প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দিতে সক্ষম হতেন না। তখন রাসুল ﷺ নিজের স্ত্রীদের মাসালা মাসায়েল বলে দিতেন এবং তারা তা জেনে অন্য মহিলাদের জানিয়ে দিতেন।

আরো ভালো ভাবে এখানে পেয়ে যাবেন - মà§à¦¹à¦¾à¦®à§à¦®à¦¦ (ï·º) à¦à§à¦¨à§ বহà§à¦¬à¦¿à¦¬à¦¾à¦¹ à¦à¦°à¦²à§à¦¨?

➡️ এদের সকলেই ছিল হয় বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত শুধু আয়িশা (রা) ও মারিয়া কিবতি (রা) বাদে। নবী ﷺ এর প্রায় সব স্ত্রী হয় বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা ছিলেন। যদি নারী লোভী হতেন নবী ﷺ চাইলে সেই সময় আরবের সেরা কুমারী সুন্দরী মেয়েদের বিয়ে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তাছাড়া ধর্মীয় প্রচার-প্রসারের উদ্দেশ্যাবলী, রাজনৈতিক কৌশল, কুসংস্কার উচ্ছেদ, দুস্থ মহিলাদের প্রতি মহানুভবতা ইত্যাদি তাঁর বহুবিবাহের পক্ষের যুক্তি। তিনি এসব ভোগবাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে করেননি। মানুষ হিসাবে তিনি কখনই ভোগবাদী ছিলেন না, এমন কোন প্রমান পাওয়া যায়না যে তিনি ভোগবাদী ছিলে।

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, "আমি বিয়ে করলে রাসুল ﷺ আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ? আমি বললাম বিধবা রমণীকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন কুমারী মেয়ে এবং তাঁদের কৌতুকের প্রতি তোমার আগ্রহ নেই? তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যাতে তুমি তাঁর সাথে এবং সে তোমার সাথে ক্রিয়া কৌতুক করতে পারত?" এ হাদিস থেকে বুঝলাম, নবী ﷺ জানতেন কুমারী নারী বিয়ে করলে শারীরিক তৃপ্তি বেশি পাওয়া যায় এবং তিনি যেহেতু শিক্ষক ছিলেন তাই তাঁর সাহাবীদের রুচি রাসুল ﷺ বুঝতেন তাই ঐ সাহাবীর অবস্থা উপলব্ধি করেই এই কথা রাসুল ﷺ বলেন । খেয়াল করেন রাসুল ﷺ নিজেই তাঁর সাহাবীকে বলছেন তুমি কেন কুমারী মেয়ে বিয়ে করলে না অথচ নবী মুহাম্মদ ﷺ নিজে যাদের বিয়ে করেছিলেন তাঁদের মাক্সিমাম ছিল মধ্য বয়স্কা । যদি তিনি নারী লোভী হতেন তাহলে তো তিনি বেছে বেছে কুমারী মেয়েদেরই বিয়ে করতেন তাই না? (সহিহ বুখারি হাদিস ৪৭০৯)

চৌদ্দ থেকে চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত কাফেররাই মুহাম্মদ ﷺ কে আল আমীন বা বিশ্বাসী হিসাবে ডাকতেন। এই সময়ই তো মানুষের জৈবিক তাড়না বেশি থাকে। তখন তাঁর সমবয়সী অনেক নারী তাঁর সাথে বেড়ে উঠেছে। তখন তো পর্দা প্রথাও নাজিল হয়নি। কিন্তু ঐ বয়সেও কোনো মেয়ের দিকে তিনি চোখ তুলে তাকিয়েছেন এমন কোনো সত্য দলিল পাওয়া যায় না। বরং আরবের সর্বশ্রেষ্ঠ বংশের, তখনকার সময়ের সবচেয়ে ধনী মহিলা হজরত খাদিজা (রা) মুহাম্মদ ﷺ এর সততা ও আদর্শে মুগ্ধ হয়েই তাঁকে বিয়ে করেছিলেন।

কুরআনের সূরা আহযাবের ৫০-৫২ আয়াত অনুযায়ী মুহাম্মাদ ﷺ চারটির অধিক বিয়ের অনুমতিপ্রাপ্ত ছিলেন। সূরা আহযাবের ৫২ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ পরবর্তী বিবাহ ও তালাক প্রদান নিষিদ্ধ করে দেন কারণ মুহাম্মদ ﷺ তার জীবনে যে সকল মহিলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মুসলমানগণ তাদেরকে উম্মাহাতুল মুমিনীন অর্থাৎ মুসলমানদের মাতা হিসেবে অভিহিত করেন। কুরআনেও সেটি উল্লেখিত হয়েছে, কুরআন (৩৩:৬)। মহানবী ﷺ আসার পূর্বে মানুষ স্ত্রীর পাশাপাশি একাধিক রক্ষিতা ও দাসী রাখত কিন্তু মহানবী ﷺ বিবাহের মাধ্যমে উম্মতকে দেখিয়েছেন বিয়ের গুরূত্ব ও স্ত্রীর অধিকার রক্ষায় কিকি বিধান পালন করতে হবে।

সূরা আহযাবের ৫০ নং আয়াত নাযিলের পর মদিনার শত শত পরিবার তাদের মেয়েদের এমনকি নারীরা নিজেরাও বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে আসেন। রাসূল চাইলেই অনায়াশে মদিনার শত শত যুবতী নারীকে বিবাহ করতে পারতেন কিন্তু এই আয়াতের তাফসীর পড়লে জানা যায় তিনি ওই মজলিসে সবগুলো বিবাহ ফিরিয়ে দেন এমনকি একজন মহিলা তার মেয়ের সৌন্দর্য খুটিয়ে খুটিয়ে বর্ননা করছিল কিন্তু তিনি নাকোচ করে দেন এবং বলেন 'আমার জন্য মহিলার কোন প্রয়োজন নেই' (বুখারী হা/৫০২৯)। যা ছিল স্বাভাবিক শাসকের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ থেকে ব্যতিক্রম। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ততক্ষণ আমি কোনো নারীকে বিবাহ করিনি এবং আমার মেয়েদেরকে অন্য কারো কাছে বিবাহ দেইনি যতক্ষণ না আমার প্রভুর পক্ষ থেকে জিবরাঈল (আ) বিবাহের আদেশ সম্বলিত বার্তা না এনেছেন। [উয়ুনুল আছার – ২/৩০০, শরহে মাওয়াহিব – ৩/২১৯]

অতীতে বহুবিবাহ কোন ব্যাপার ছিল না, তখন বহুবিবাহ স্বাভাবিক বিষয় ছিল। যেমন দাউদ (আ) -এর স্ত্রী ছিলো নিরানব্বইজন, ইবরাহীম (আ) -এর তিনজন, ইয়াকুব এবং মূসা আ. এর চারজন করে। [পয়দায়েশ – ২৯/৩০]

সোলায়মান (আ)-এর স্ত্রীদের সংখ্যার ব্যাপারে ছহীহ হাদীস সমূহে ৬০, ৭০, ৯০, ১০০ জন বলে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে (বুখারী হা/২৮১৯, ৩৪২৪, ৫২৪২, ৬৬৩৯, ৭৪৬৯; মুসলিম হা/১৬৫৪), অন্যদিকে সোলায়মান (আ)-এর স্ত্রীর সংখ্যার ব্যাপারে ইস্রাঈলীরা একহাজার জন বলে উল্লেখ করেছে (ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ২/১৫,২৯; ফাৎহুল বারী হা/৩৪৪২-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য), বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে, "সোলায়মান আ.-এর সাতশো স্ত্রী ছিলো, যারা ছিলো রাজপরিবারের মেয়ে; এছাড়া তার তিনশো উপস্ত্রী তথা দাসী ছিলো।" [বাদশাহনামা-১১/৪]

ইহুদী ধর্মের ধর্মগ্রন্থ তওরাতে উল্লেখ আছে, "কোন ব্যক্তির দুটি (একাধিক) স্ত্রী থাকতে পারে" । (দ্বিতীয় বিবরণ, অধ্যায় ২১, শ্লোক : ১৫) আর বনী ইসরাঈল নবীদেরও একাধিক স্ত্রী ছিল। তেমনিভাবে শ্রীকৃষ্ণের প্রথমে ৮ জন ও পরবর্তিতে ১৬ হাজার স্ত্রী ছিল বলে বর্ণনা পাওয়া যায়। ( শ্রীকৃষ্ণ, পৃষ্ঠা: ৯৭, ৯৮, মহাভারত অনুসাশন পর্ব)

নবী ﷺ যে নারীলোভী ছিলেন না তার আরো প্রমান
নারীলোভীদের আচরনের সাথে মুহাম্মদ ﷺ এর আচরনের কোন মিল নেই। চাইলেই আপনি নারীলোভী পুরুষদের চরিত্র, আচার, আচরন, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি অনলাইন থেকে খুপে রাসূল ﷺ এর চরিত্র, আচার, আচরন, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন।

মুহাম্মদ ﷺ এর চরিত্র সম্পর্কে সয়ং আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন: - "নিশ্চয়ই আপনি এক মহান চরিত্রের অধিকারী।" (সূরা ক্বালাম-৪), "হে মুহাম্মদ! আমি তোমাকে সমগ্র জগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি।" (আম্বিয়া-১০৭), "আমি তো তোমাকে সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সর্তককারীরূপে প্রেরণ করেছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা উপলব্ধি করে না।" (সূরা সাবা-২৮), 'তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।' (সূরা আল-আহজাব, আয়াত: ২১)

ইবনে আবি শাইবা, দুরূসুস সিরাত, সিরাতে মুগলতাই এছাড়া আরো কিছু সিরাতের কিতাবে উল্লেখ আছে যে মুশরিকদের পক্ষ থেকে উতবাহ ইবনে রাবিআ, নবী মুহাম্মদ ﷺ কে সম্পদ দেওয়ার, নেতা বানানোর এবং সুন্দরি নারীর প্রলোভন দেয় যাতে তিনি ইসলামের দাওয়াত দেয়া বন্ধ করে দেয় কিন্তু নবী মুহাম্মদ ﷺ তা গ্রহন করতে অস্বীকার করেন। আরেক যায়গায় তিনি পরিষ্কার শব্দে বলেন, আমার এক হাতে সূর্য ও অন্য হাতে চাঁদ এনে দিলেও আমি এ সত্য প্রচার থেকে বিরত হব না। (ইবনে হিশাম ১ম খণ্ড ২৬৫-২৬৬পৃঃ)

সাহল ইবন সা'দ ও আবূ উসায়দ (রা) বর্ণনা করেন, তাঁরা বলেন যে, নবী ﷺ উমাইমা বিনতু শারাহীলকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তাঁর কাছে আনা হলে তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি ﷺ বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ।। তাই নবী ﷺ আবূ উসাইদকে তার জিনিসপত্র গুটিয়ে এবং দুখানা কাতান বস্ত্র প্রদান করে তার পরিবারের নিকট পৌঁছে দেবার নির্দেশ দিলেন। (সহিহ বুখারি হাদিস ৫২৫৫-৫২৫৭; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪৮৭-৮৮ পৃষ্ঠা)

আয়েশা (রা) বলেন, "নবী ﷺ এর হাত কখনো কোন ভিন্ন মেয়ের শরীরে লাগেনি। তিনি মেয়েদের থেকে শুধুমাত্র মৌখিক শপথ নিতেন এবং শপথ নেয়া শেষ হলে বলতেন, যাও তোমাদের বাই'আত হয়ে গেছে।" (বুখারীঃ ৫২৮৮, মুসলিম ১৮৬৬)

তিনি স্ত্রীদের মধ্যে তাদের সম্মতিক্রমে সমভাবে পালা নির্ধারণ করতেন। (হাকেম হা/২৭৬০; আবুদাঊদ হা/২১৩৪-৩৫; বুখারী হা/৫২১২; মুসলিম হা/১৪৬৩ (৪৭); তিরমিযী তুহফাসহ হা/১১৪০), তিনি বলতেন, কার নিকট দু'জন স্ত্রী থাকলে যদি তাদের মধ্যে সে ন্যায় বিচার না করে, তাহলে ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি এক অঙ্গ পতিত অবস্থায় আগমন করবে'। (তিরমিযী হা/১১৪১; ইবনু মাজাহ হা/১৯৬৯; মিশকাত হা/৩২৩৬), সফরকালে লটারি করণ (القرعة عند السفر) : কোন অভিযানে বা সফরে যাওয়ার সময় লটারীর মাধ্যমে স্ত্রী বাছাই করে একজনকে সাথে নিতেন। (বুখারী হা/২৫৯৩; মুসলিম হা/২৭৭০; মিশকাত হা/৩২৩২)

খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান সহ যাবতীয় আচার-আচরণে আল্লাহর রাসূল ﷺ তাঁর সকল স্ত্রীর সঙ্গে সমান ব্যবহার করতেন। সাধারণতঃ আছর ছালাতের পর তিনি প্রত্যেক স্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ জেনে নিতেন। (বুখারী হা/৫২১৬; মুসলিম হা/১৪৭৪)

উম্মুল মুমিনীন হযরত যয়নব বিনতে খুযায়মা (রা) তো 'উম্মুল মাসাকীন' (মিসকীনদের মা) হিসাবে অভিহিত ছিলেন (মাজমা'উয যাওয়ায়েদ হা/১৫৩৫৭) । খায়বর বিজয়ের পর বিপুল গণীমত হস্তগত হয়। তখন রাসূল ﷺ-এর প্রাপ্য অংশ হতে প্রত্যেক স্ত্রীর জন্য বছরে ৮০ অসাক্ব খেজুর এবং ২০ অসাক্ব যব বরাদ্দ করা হয়। (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৪৪৬৯; মুসলিম হা/১৫৫১) সেই সাথে একটি করে দুগ্ধবতী উষ্ট্রী প্রদান করা হয়। কিন্তু দেখা গেল যে, পবিত্রা স্ত্রীগণ যতটুকু না হলে নয়, ততটুকু রেখে বাকী সব দান করে দিয়েছেন। (রহমাতুল্লিল 'আলামীন ২/১৪২)

কবার রাসূল ﷺ-এর একমাত্র ইহূদীজাত স্ত্রী ছাফিয়াকে কুরায়শী স্ত্রী যয়নব বিনতে জাহ্শ 'ইহূদী' বলে সম্বোধন করেন, যার মধ্যে তাচ্ছিল্যের ভাব ছিল। এতে আল্লাহর রাসূল ﷺ এতই ক্ষুব্ধ হন যে, যয়নব তওবা করে অনুতপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তার গৃহে পা রাখেননি। (আবুদাঊদ হা/৪৬০২; মিশকাত হা/৫০৪৯; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/২৮৩৫), আরেকদিন রাসূল ﷺ ঘরে এসে দেখেন যে, ছাফিয়া কাঁদছেন। কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন যে, হাফছা আমাকে 'ইহূদীর মেয়ে' বলেছেন। একথা শুনে রাসূল ﷺ ছাফিয়াকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, বরং তুমি নিশ্চয়ই নবী (ইসহাকের) কন্যা। তোমার চাচা (ইসমাঈল) একজন নবী এবং তুমি একজন নবীর স্ত্রী। তাহলে কিসে তোমার উপরে সে গর্ব করছে? অতঃপর তিনি হাফছাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আল্লাহকে ভয় কর হে হাফছা'! (তিরমিযী হা/৩৮৯৪; নাসাঈ হা/৩২৫২; মিশকাত হা/৬১৮৩)

জাহেলি যুগে বিয়ে ছিল চার প্রকার। প্রথমটি ছিল আমাদের নবীর শিখানো বিয়ের ব্যবস্থা আর বাকি ৩টি ছিল ভ্যবিচার মিশ্রিত (সহিহ বুখারি, কিতাবুন নিকাহ, খণ্ড ২, পৃ. ৭৬৯), জাহেলি যুগে একাধিক স্ত্রী রাখা কোনো দোষের ব্যাপার ছিল না। সহোদর দুই বোনকেও অনেকে একই সময়ে স্ত্রী হিসেবে ঘরে রাখত। পিতার তালাক দেওয়া স্ত্রী অথবা পিতার মৃত্যুর পর সন্তান তার সত্মায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতো। তালাকের অধিকার ছিল শুধু পুরুষের এখতিয়ার। তালাকের কোনো সংখ্যা নির্দিষ্ট ছিল না। (আবু দাউদ, তাফসির গ্রন্থাবলি, আত তালাক মাররাতান দ্রষ্টব্য)

তখন ব্যভিচার সমাজের সর্বস্তরে প্রচলিত ছিল। কোনো শ্রেণির নারী-পুরুষই ব্যভিচারের কদর্যতা, পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত ছিল না। অবশ্য কিছুসংখ্যক নারী-পুরুষ এমন ছিল, যারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহমিকার কারণে এবং অন্যান্য কারনে এ নোংরামি থেকে বিরত থাকত যাদের মধ্যে একজন ছিলেন আমাদের নবী মুহাম্মদ ﷺ যিনি নবুয়তের পরেত দুরের কথা নবুয়তের আগেও কোনদিন এই ধরনের কাজে লিপ্ত হননি। হযরত মুহাম্মদ ﷺ নারীদেরকে তালাক দেওয়ার এখতিয়ারও দিয়েছিলেন (সুনান আবূ দাউদ ২২০৩, বুখারী, মুসলিম)

মানুষ নারীলোভী হবে তখনইত যখন সে দুনিয়ার প্রতি তার লোভ থাকবে কিন্তু যুহদ ও রাসূল ﷺ এর জীবন ছিল দুনিয়াত্যাগী জীবন। এর প্রমান -- ছহীহাহ হা/১৬১৫, বুখারী হা/৬৪৬০, বুখারী হা/৪১০১, বুখারী হা/৪৯১৩, তিরমিযী হা/২৩৭৭, তিরমিযী হা/২৩৫২; বায়হাক্বী-শু'আবুল ঈমান হা/১৪৫৩; মিশকাত হা/৫২৪৪; ছহীহাহ হা/৩০৮, বুখারী হা/৫৪২১; মিশকাত হা/৪১৭০ 'খাদ্য সমূহ' অধ্যায়, বুখারী হা/৫৪১৬ 'খাদ্য সমূহ' অধ্যায়-৭০ অনুচ্ছেদ-২৩; মুসলিম হা/২৯৭০, বুখারী হা/৬৪৫৯ 'রিক্বাক্ব' অধ্যায় 'রাসূল ও ছাহাবীদের জীবন যাপন কেমন ছিল' অনুচ্ছেদ-১৭, মুসলিম হা/১০৫৪; মিশকাত হা/৫১৬৫, বুখারী হা/৫৪১৪; মিশকাত হা/৫২৩৮, বুখারী হা/২০৬৯; মিশকাত হা/৫২৩৯, বুখারী হা/২৯১৬; মিশকাত হা/২৮৮৫ 'বন্ধক' অনুচ্ছেদ, ত্বাবারাণী কাবীর হা/৫৯৯০; ছহীহ আত-তারগীব হা/৯২৭, মাজমা' উয যাওয়ায়েদ হা/১৫৩৫৭, রহমাতুল্লিল 'আলামীন ২/১৪২ ইত্যাদি।

৫ম হিজরীতে খন্দক যুদ্ধের পর বনু কুরায়যার বিজয় এবং গণীমতের বিপুল মালামাল প্রাপ্তির ফলে মুসলমানদের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে আসে। এ প্রেক্ষিতে পবিত্রা স্ত্রীগণ রাসূল ﷺ-এর নিকটে তাদের ভরণ-পোষণের পরিমাণ বৃদ্ধির আবেদন জানান। এতে আল্লাহর রাসূল ﷺ মর্মাহত হন এবং তাদেরকে তালাক গ্রহণের এখতিয়ার প্রদান করেন। উক্ত মর্মে আয়াতে 'তাখয়ীর' (آية التخيير) নাযিল হয় (আহযাব ৩৩/২৮-২৯)

উক্ত আয়াত নাযিলের পর রাসূলুল্লাহ ﷺ আয়েশাকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে পরামর্শ করতে বললে তিনি বলে ওঠেন, 'এজন্য পিতা-মাতার সাথে পরামর্শের কি আছে? আমি তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং আখেরাতকে কবুল করে নিয়েছি। তিনি বলেন, অতঃপর অন্যান্য স্ত্রীগণ সকলেই আমার পথ অনুসরণ করলেন'। (বুখারী হা/৪৭৮৫-৮৬; মুসলিম হা/১৪৭৫; মিশকাত হা/৩২৪৯; আহযাব ৩৩/২৮-২৯)

আপনারা অনেকগুলা মেয়ের বা ছেলের সাথে বিয়ে ছাড়া রাত কাটালে সমস্যা হয় না কিন্তু বিশ্বনবী বহু বিবাহ করায় আপনাদের সমস্যা তাই না? আপনারা একটা মেয়েকে প্রেগনেন্ট করে পরে সেটা অস্বীকার করে সেই মেয়ের জীবন নষ্ট করলে সমস্যা হয় না কিন্তু আমাদের নবী বিবাহ করে সেই নারীগুলাকে সম্মান, মর্যাদা, অধিকার সব কিছু দেওয়ায় আপনাদের সমস্যা তাই না? আপনারা যেখানে পারেন যার সাাথে পারেন তার মাধ্যমে নিজেদে কামনা মিটান তাতে সমস্যা হয় না কিন্তু আমাদের নবী বিবাহ করে সেই নারীদেরকে স্ত্রীয়ের মর্যাদা দেওয়ায় সমস্যা হয়ে গেছে তাই না? আপনারা অবৈধ ভাবে অবৈদ কাজ করলে সমস্যা হয় না কিন্তু মহানবী বৈধভাবে বিবাহ করায় সমস্যা? এগুলা ডাবলস্টেন্ডার্ড।
 
সাধারণ কিছু মুসলিমের মনে একটা প্রশ্ন প্রায়ই ঘুরপাক খায়, তা হলো – রাসূলুল্লাহ ﷺ এতগুলো বিয়ে করতে গিয়েছিলেন কেন? সাধারণ মুসলিম পুরুষ না ৪টার বেশী বিয়ে করতে পারে না? উনি তাহলে ১১/১৩ টা বিয়ে করলেন কেন? অনেক ইসলাম বিদ্ধেষীরা মুহাম্মদ ﷺ-কে নারী লোভী বলে অপবাদ দিয়ে থাকে নাউযুবিল্লাহ। ইসলামবিদ্ধেষীনা এমন অনেক ভিন্ন ধর্মী ভাই বোনেরাও আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর বহু বিবাহ নিয়ে প্রশ্ন তুলে থাকেন তাই তাদেরকে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাহআল্লাহ।

নবী করিম ﷺ ২৮ বা ৪০ বছর বয়সের একজন নারীকে বিয়ে করলেন যখন তিনি ২৫ বছরের ছিলেন। এছাড়াও খাদিজা (রা) এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মহানবী ﷺ বিয়ে করেনি বরং তিনি তার পুরো যৌবন খাদিজা (রা) এর সাথে কাটিয়েছিলেন। বাকি বিয়ে গুলো করেন ৫০ বছর বয়সের পরে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ৫০ বছর বয়সে সাইন্টিফিকেলি পুরুষের নারী প্রতি আকর্ষন কম থাকে আর যদি থাকতই তাহলে যৌবনে কি হইছিল উনার? অথচ উনাকে আল্লাহ যত ইচ্ছা তত বিয়ের অনুমতি প্রদান করেছিলেন। তিনি চাইলেই তার সদব্যবহার করতে পারতেন যদি নারী লোভী হতেন। খাদীজার ইন্তেকালের পর রাসূল ﷺ জীবিত ছিলেন মাত্র তের বছর। এই তের বছরে রাসূল ﷺ বাকী ১০ জন/১২ জন স্ত্রী গ্রহণ করেছেন। প্রবৃত্তির কারণেই যদি হতো তাহলে যৌবনের সেই সোনালী দিনগুলোতেই একাধিক বিবাহ করতেন। একজন বৃদ্ধ নারীর সাথে যৌবন পার করতেন না, অতঃপর বয়স্কা বৃদ্ধা স্ত্রী খাদীজার মৃত্যু হ'লে তিনি নিজের ৫০ বছর বয়সে দ্বিতীয় বিয়ে করলেন আর এক ৫০ বছর বয়সী কয়েকটি সন্তানের মা একজন বিধবা মহিলা সাওদাকে নিতান্তই সাংসারিক প্রয়োজনে। মহানবী হযরত মোহাম্মদ সা. নিজের ইচ্ছায় কিছু করেননি। তিনি ছিলেন মহান রব আল্লাহর সবচেয়ে অনুগত বান্দা। তিনি দৃঢ়তার সাথে আল্লাহ তায়ালার আদেশ বাস্তবায়ন করেছেন, খাদিজা (রা) এর পরে প্রতিটা বিবাহের পেছনে প্রথমে আল্লাহর আদেশ ছিল তারপর সামাজিক প্রেক্ষাপট। রাসূল ﷺ এর বহু বিবাহের মাহাত্ম্য ও উদ্দেশ্যসমূহের মধ্যে অন্যতম ছিলো: নারী-পুরুষ সকলের জন্য শিক্ষা কার্যক্রমকে উন্মুক্ত করা ও বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া, শান্তি প্রতিষ্ঠা, ধর্মীয় বিধান স্পষ্ট করা, ধনী-গরীবের মধ্যে সাম্য প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক কৌশল ইত্যাদি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ বহু বিবাহের পিছনে অনেক কারন ছিল তার মধ্যে কিছু উল্লেখ করলাম।

বিবাহের কারণ সমূহ
১) সামাজিক ২) রাজনৈতিক ৩) সমাজের কোন কুপ্রথা নির্মূল ৪) শিক্ষামূলক

মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রায় সমস্ত বিবাহ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে শক্তিশালী করার রাজনৈতিক দিক ছিল এবং এটি আরব রীতিও ছিল, কিছু বিবাহের উদ্দেশ্য ছিল বিধবাদের জীবিকা নির্বাহ করা, সমাজে বিধবাদের জন্য পুনর্বিবাহ কঠিন ছিল তাই বিধবাদেরকে বিবাহ করার উৎসাহ বৃদ্ধিকরাও একটা কারন ছিল, রাজনৈতিক, কিছু সহানুভূতিশীল এবং ভালোবাসার কিছু বিষয় ছিল ও বিবাহর মাধ্যমে বিভিন্ন গোত্রকে এক করা। (বলেছেন - লরা ভেকিয়া ভ্যাগ্লিয়ারি, টমাস কার্লাইল, উইলিয়াম মন্টগোমারি ওয়াট, জন এসপসিতো, ফ্রান্সিস এডওয়ার্ড পিটার্স, উইলিয়াম এডওয়ার্ড ফিপস সূত্র উইকিপিডিয়া, এছাড়া প্রায় স্কলারই এই কথাগুলার সাথে একমত)

বিবাহের প্রেক্ষাপট সমূহঃ
১/ হযরত খাদিজা (রা) মৃত্যুর পরে। রাসুল ﷺ হযরত সওদা (রা) কে বিয়ে করেন রাসুলের চার কন্যা সন্তানকে দেখাশোনা করার জন্য।

২/ বনু মুস্তালিক গোত্রের নেতা হারেসার কন্যা জুহাইরিয়া (রা) কে রাসুল ﷺ বিয়ে করেন । হারেসা হয়ে গেল রাসুলের শ্বশুর, ফলে বনু মুছত্বালিক্ব গোত্রের যুদ্ধবন্দী একশত জন ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে মুসলমান হয়ে যান এবং চরম বিরুদ্ধবাদী এই গোত্রটি মিত্রশক্তিতে পরিণত হয়। জুওয়াইরিয়া (রা) তার কওমের জন্য বড় 'বরকত মন্ডিত মহিলা' (كَانَتْ أَعْظَمَ بَرَكَةً) হিসাবে বরিত হন এবং তাঁর গোত্র রাসূল ﷺ-এর শ্বশুর গোত্র (أَصْهَارُ رَسُولِ اللهِ) হিসাবে সম্মানজনক পরিচিতি লাভ করে'

৩/ যুদ্ধে ইহুদীদের সর্দারের কন্যা ও একই সাথে অপর সর্দারের স্ত্রী সুফিয়া রা. বিধবা হওয়ার পর মহানবী ﷺ তাকে বিয়ে করার ফলে যুদ্ধ তৎপরতা বন্ধ হয়ে যায়। রাসুলের সাথে সন্ধি করে ইহুদীরা খায়বারে বসবাস করতে থাকে।

৪/ নিজের কাছের সাহাবীদের সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত, আরও শক্তিশালী করার জন্য তিনি তাঁদের সাথে সম্পর্ক করেছেন। হযরত উমর (রা) এর কন্যা হাফসা (রা) কে এবং আবু বকর (রা) এর কন্যা আয়েশা (রা) কেও রাসুল ﷺ বিয়ে করেন। শুদু কি তাই? নবীজি নিজের কন্যা ফাতিমাকে (রা) কে আলীর (রা) সাথে এবং কুলসুম এবং রুকাইয়া (রা) কে বিয়ে দেন উসমান (রা) এর সাথে । ইসলামের ইতিহাস দেখুন। নবী মুহাম্মদ ﷺ এর ওফাতের পরে এই চারজনকেই ধারাবাহিক ভাবে খলিফা তথা মুসলিমদের আমীর নির্বাচিত করা হয় এতে বুঝা যায় রাসুল ﷺ এর কৌশলটি কত সুদূর প্রসারিত ছিল।

৫/ মহানবীর পালক পুত্র জায়েদ (রা) থেকে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী হযরত জয়নাব (রা) কে বিয়ে করেন সমাজের মিথ্যা কুসংস্কার দূর করার জন্য। ৪র্থ হিজরীতে উম্মে সালামাহকে বিবাহ করার পর তাঁর গোত্র বনু মাখযূমের স্বনামধন্য বীর খালেদ বিন অলীদের যে দুর্ধর্ষ ভূমিকা ওহোদ যুদ্ধে দেখা গিয়েছিল, তা পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং ৭ম হিজরীর শুরুতে তিনি মদীনায় এসে ইসলাম কবুল করেন।

৬/ মহানবী ﷺ কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানের কন্যা উম্মে হাবীবা রা.কে বিয়ে করলেন। এই বিয়ের পরে আবু সুফিয়ান একেবারে চুপসে গেলো। মদীনার মুসলমানদের ওপর হামলা করতে আর কখনো অগ্রসর হয়নি সে। কয়েকদিনের মধ্যেই তার মাঝে আমূল পরিবর্তন ঘটতে শুরু করলো। অবশেষে ঈমানের দীপ্তিতে উদ্ভাসিত হলো তার অন্তরাত্মা। মক্কা বিজয়ের পরে মহানবী ﷺ এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে ঈমানের সুশীতল বৃক্ষের ছায়াতলে আশ্রয় নিলো সেই আবু সুফিয়ান।

৭/ ৭ম হিজরীর যুলক্বা'দাহ মাসে সর্বশেষ মায়মূনা বিনতুল হারেছকে বিবাহ করার ফলে নাজদবাসীদের অব্যাহত শত্রুতা ও ষড়যন্ত্র থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায়। কেননা মায়মূনার এক বোন ছিলেন নাজদের সর্দারের স্ত্রী। এরপর থেকে উক্ত এলাকায় ইসলামের প্রচার ও প্রসার বাধাহীনভাবে চলতে থাকে। অথচ ইতিপূর্বে এরাই ৪র্থ হিজরীতে ৭০ জন ছাহাবীকে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। যা 'বি'রে মা'ঊনার ঘটনা' নামে প্রসিদ্ধ।

৮/ এছাড়া আরও কারন আছে । পুরুষরা সরাসরি রাসুল ﷺ থেকে যেকোন মাসালা মাসায়েল বিনা সংকোচে জেনে নিত। কিন্তু মহিলাদের অধিকাংশই নবী করীম ﷺ কে সরাসরি তাদের আভ্যন্তরীণ শরয়ী বিষয়সমূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করতে লজ্জা ও সংকোচবোধ করতেন। তাছাড়া তিনি মহিলাদের তরফ থেকে উত্থাপিত সকল প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দিতে সক্ষম হতেন না। তখন রাসুল ﷺ নিজের স্ত্রীদের মাসালা মাসায়েল বলে দিতেন এবং তারা তা জেনে অন্য মহিলাদের জানিয়ে দিতেন।

আরো ভালো ভাবে এখানে পেয়ে যাবেন - মà§à¦¹à¦¾à¦®à§à¦®à¦¦ (ï·º) à¦à§à¦¨à§ বহà§à¦¬à¦¿à¦¬à¦¾à¦¹ à¦à¦°à¦²à§à¦¨?

➡️ এদের সকলেই ছিল হয় বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত শুধু আয়িশা (রা) ও মারিয়া কিবতি (রা) বাদে। নবী ﷺ এর প্রায় সব স্ত্রী হয় বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা ছিলেন। যদি নারী লোভী হতেন নবী ﷺ চাইলে সেই সময় আরবের সেরা কুমারী সুন্দরী মেয়েদের বিয়ে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তাছাড়া ধর্মীয় প্রচার-প্রসারের উদ্দেশ্যাবলী, রাজনৈতিক কৌশল, কুসংস্কার উচ্ছেদ, দুস্থ মহিলাদের প্রতি মহানুভবতা ইত্যাদি তাঁর বহুবিবাহের পক্ষের যুক্তি। তিনি এসব ভোগবাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে করেননি। মানুষ হিসাবে তিনি কখনই ভোগবাদী ছিলেন না, এমন কোন প্রমান পাওয়া যায়না যে তিনি ভোগবাদী ছিলে।

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, "আমি বিয়ে করলে রাসুল ﷺ আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ? আমি বললাম বিধবা রমণীকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন কুমারী মেয়ে এবং তাঁদের কৌতুকের প্রতি তোমার আগ্রহ নেই? তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যাতে তুমি তাঁর সাথে এবং সে তোমার সাথে ক্রিয়া কৌতুক করতে পারত?" এ হাদিস থেকে বুঝলাম, নবী ﷺ জানতেন কুমারী নারী বিয়ে করলে শারীরিক তৃপ্তি বেশি পাওয়া যায় এবং তিনি যেহেতু শিক্ষক ছিলেন তাই তাঁর সাহাবীদের রুচি রাসুল ﷺ বুঝতেন তাই ঐ সাহাবীর অবস্থা উপলব্ধি করেই এই কথা রাসুল ﷺ বলেন । খেয়াল করেন রাসুল ﷺ নিজেই তাঁর সাহাবীকে বলছেন তুমি কেন কুমারী মেয়ে বিয়ে করলে না অথচ নবী মুহাম্মদ ﷺ নিজে যাদের বিয়ে করেছিলেন তাঁদের মাক্সিমাম ছিল মধ্য বয়স্কা । যদি তিনি নারী লোভী হতেন তাহলে তো তিনি বেছে বেছে কুমারী মেয়েদেরই বিয়ে করতেন তাই না? (সহিহ বুখারি হাদিস ৪৭০৯)

চৌদ্দ থেকে চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত কাফেররাই মুহাম্মদ ﷺ কে আল আমীন বা বিশ্বাসী হিসাবে ডাকতেন। এই সময়ই তো মানুষের জৈবিক তাড়না বেশি থাকে। তখন তাঁর সমবয়সী অনেক নারী তাঁর সাথে বেড়ে উঠেছে। তখন তো পর্দা প্রথাও নাজিল হয়নি। কিন্তু ঐ বয়সেও কোনো মেয়ের দিকে তিনি চোখ তুলে তাকিয়েছেন এমন কোনো সত্য দলিল পাওয়া যায় না। বরং আরবের সর্বশ্রেষ্ঠ বংশের, তখনকার সময়ের সবচেয়ে ধনী মহিলা হজরত খাদিজা (রা) মুহাম্মদ ﷺ এর সততা ও আদর্শে মুগ্ধ হয়েই তাঁকে বিয়ে করেছিলেন।

কুরআনের সূরা আহযাবের ৫০-৫২ আয়াত অনুযায়ী মুহাম্মাদ ﷺ চারটির অধিক বিয়ের অনুমতিপ্রাপ্ত ছিলেন। সূরা আহযাবের ৫২ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ পরবর্তী বিবাহ ও তালাক প্রদান নিষিদ্ধ করে দেন কারণ মুহাম্মদ ﷺ তার জীবনে যে সকল মহিলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মুসলমানগণ তাদেরকে উম্মাহাতুল মুমিনীন অর্থাৎ মুসলমানদের মাতা হিসেবে অভিহিত করেন। কুরআনেও সেটি উল্লেখিত হয়েছে, কুরআন (৩৩:৬)। মহানবী ﷺ আসার পূর্বে মানুষ স্ত্রীর পাশাপাশি একাধিক রক্ষিতা ও দাসী রাখত কিন্তু মহানবী ﷺ বিবাহের মাধ্যমে উম্মতকে দেখিয়েছেন বিয়ের গুরূত্ব ও স্ত্রীর অধিকার রক্ষায় কিকি বিধান পালন করতে হবে।

সূরা আহযাবের ৫০ নং আয়াত নাযিলের পর মদিনার শত শত পরিবার তাদের মেয়েদের এমনকি নারীরা নিজেরাও বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে আসেন। রাসূল চাইলেই অনায়াশে মদিনার শত শত যুবতী নারীকে বিবাহ করতে পারতেন কিন্তু এই আয়াতের তাফসীর পড়লে জানা যায় তিনি ওই মজলিসে সবগুলো বিবাহ ফিরিয়ে দেন এমনকি একজন মহিলা তার মেয়ের সৌন্দর্য খুটিয়ে খুটিয়ে বর্ননা করছিল কিন্তু তিনি নাকোচ করে দেন এবং বলেন 'আমার জন্য মহিলার কোন প্রয়োজন নেই' (বুখারী হা/৫০২৯)। যা ছিল স্বাভাবিক শাসকের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ থেকে ব্যতিক্রম। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ততক্ষণ আমি কোনো নারীকে বিবাহ করিনি এবং আমার মেয়েদেরকে অন্য কারো কাছে বিবাহ দেইনি যতক্ষণ না আমার প্রভুর পক্ষ থেকে জিবরাঈল (আ) বিবাহের আদেশ সম্বলিত বার্তা না এনেছেন। [উয়ুনুল আছার – ২/৩০০, শরহে মাওয়াহিব – ৩/২১৯]

অতীতে বহুবিবাহ কোন ব্যাপার ছিল না, তখন বহুবিবাহ স্বাভাবিক বিষয় ছিল। যেমন দাউদ (আ) -এর স্ত্রী ছিলো নিরানব্বইজন, ইবরাহীম (আ) -এর তিনজন, ইয়াকুব এবং মূসা আ. এর চারজন করে। [পয়দায়েশ – ২৯/৩০]

সোলায়মান (আ)-এর স্ত্রীদের সংখ্যার ব্যাপারে ছহীহ হাদীস সমূহে ৬০, ৭০, ৯০, ১০০ জন বলে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে (বুখারী হা/২৮১৯, ৩৪২৪, ৫২৪২, ৬৬৩৯, ৭৪৬৯; মুসলিম হা/১৬৫৪), অন্যদিকে সোলায়মান (আ)-এর স্ত্রীর সংখ্যার ব্যাপারে ইস্রাঈলীরা একহাজার জন বলে উল্লেখ করেছে (ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ২/১৫,২৯; ফাৎহুল বারী হা/৩৪৪২-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য), বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে, "সোলায়মান আ.-এর সাতশো স্ত্রী ছিলো, যারা ছিলো রাজপরিবারের মেয়ে; এছাড়া তার তিনশো উপস্ত্রী তথা দাসী ছিলো।" [বাদশাহনামা-১১/৪]

ইহুদী ধর্মের ধর্মগ্রন্থ তওরাতে উল্লেখ আছে, "কোন ব্যক্তির দুটি (একাধিক) স্ত্রী থাকতে পারে" । (দ্বিতীয় বিবরণ, অধ্যায় ২১, শ্লোক : ১৫) আর বনী ইসরাঈল নবীদেরও একাধিক স্ত্রী ছিল। তেমনিভাবে শ্রীকৃষ্ণের প্রথমে ৮ জন ও পরবর্তিতে ১৬ হাজার স্ত্রী ছিল বলে বর্ণনা পাওয়া যায়। ( শ্রীকৃষ্ণ, পৃষ্ঠা: ৯৭, ৯৮, মহাভারত অনুসাশন পর্ব)

নবী ﷺ যে নারীলোভী ছিলেন না তার আরো প্রমান
নারীলোভীদের আচরনের সাথে মুহাম্মদ ﷺ এর আচরনের কোন মিল নেই। চাইলেই আপনি নারীলোভী পুরুষদের চরিত্র, আচার, আচরন, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি অনলাইন থেকে খুপে রাসূল ﷺ এর চরিত্র, আচার, আচরন, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন।

মুহাম্মদ ﷺ এর চরিত্র সম্পর্কে সয়ং আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন: - "নিশ্চয়ই আপনি এক মহান চরিত্রের অধিকারী।" (সূরা ক্বালাম-৪), "হে মুহাম্মদ! আমি তোমাকে সমগ্র জগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি।" (আম্বিয়া-১০৭), "আমি তো তোমাকে সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সর্তককারীরূপে প্রেরণ করেছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা উপলব্ধি করে না।" (সূরা সাবা-২৮), 'তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।' (সূরা আল-আহজাব, আয়াত: ২১)

ইবনে আবি শাইবা, দুরূসুস সিরাত, সিরাতে মুগলতাই এছাড়া আরো কিছু সিরাতের কিতাবে উল্লেখ আছে যে মুশরিকদের পক্ষ থেকে উতবাহ ইবনে রাবিআ, নবী মুহাম্মদ ﷺ কে সম্পদ দেওয়ার, নেতা বানানোর এবং সুন্দরি নারীর প্রলোভন দেয় যাতে তিনি ইসলামের দাওয়াত দেয়া বন্ধ করে দেয় কিন্তু নবী মুহাম্মদ ﷺ তা গ্রহন করতে অস্বীকার করেন। আরেক যায়গায় তিনি পরিষ্কার শব্দে বলেন, আমার এক হাতে সূর্য ও অন্য হাতে চাঁদ এনে দিলেও আমি এ সত্য প্রচার থেকে বিরত হব না। (ইবনে হিশাম ১ম খণ্ড ২৬৫-২৬৬পৃঃ)

সাহল ইবন সা'দ ও আবূ উসায়দ (রা) বর্ণনা করেন, তাঁরা বলেন যে, নবী ﷺ উমাইমা বিনতু শারাহীলকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তাঁর কাছে আনা হলে তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি ﷺ বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ।। তাই নবী ﷺ আবূ উসাইদকে তার জিনিসপত্র গুটিয়ে এবং দুখানা কাতান বস্ত্র প্রদান করে তার পরিবারের নিকট পৌঁছে দেবার নির্দেশ দিলেন। (সহিহ বুখারি হাদিস ৫২৫৫-৫২৫৭; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪৮৭-৮৮ পৃষ্ঠা)

আয়েশা (রা) বলেন, "নবী ﷺ এর হাত কখনো কোন ভিন্ন মেয়ের শরীরে লাগেনি। তিনি মেয়েদের থেকে শুধুমাত্র মৌখিক শপথ নিতেন এবং শপথ নেয়া শেষ হলে বলতেন, যাও তোমাদের বাই'আত হয়ে গেছে।" (বুখারীঃ ৫২৮৮, মুসলিম ১৮৬৬)

তিনি স্ত্রীদের মধ্যে তাদের সম্মতিক্রমে সমভাবে পালা নির্ধারণ করতেন। (হাকেম হা/২৭৬০; আবুদাঊদ হা/২১৩৪-৩৫; বুখারী হা/৫২১২; মুসলিম হা/১৪৬৩ (৪৭); তিরমিযী তুহফাসহ হা/১১৪০), তিনি বলতেন, কার নিকট দু'জন স্ত্রী থাকলে যদি তাদের মধ্যে সে ন্যায় বিচার না করে, তাহলে ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি এক অঙ্গ পতিত অবস্থায় আগমন করবে'। (তিরমিযী হা/১১৪১; ইবনু মাজাহ হা/১৯৬৯; মিশকাত হা/৩২৩৬), সফরকালে লটারি করণ (القرعة عند السفر) : কোন অভিযানে বা সফরে যাওয়ার সময় লটারীর মাধ্যমে স্ত্রী বাছাই করে একজনকে সাথে নিতেন। (বুখারী হা/২৫৯৩; মুসলিম হা/২৭৭০; মিশকাত হা/৩২৩২)

খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান সহ যাবতীয় আচার-আচরণে আল্লাহর রাসূল ﷺ তাঁর সকল স্ত্রীর সঙ্গে সমান ব্যবহার করতেন। সাধারণতঃ আছর ছালাতের পর তিনি প্রত্যেক স্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ জেনে নিতেন। (বুখারী হা/৫২১৬; মুসলিম হা/১৪৭৪)

উম্মুল মুমিনীন হযরত যয়নব বিনতে খুযায়মা (রা) তো 'উম্মুল মাসাকীন' (মিসকীনদের মা) হিসাবে অভিহিত ছিলেন (মাজমা'উয যাওয়ায়েদ হা/১৫৩৫৭) । খায়বর বিজয়ের পর বিপুল গণীমত হস্তগত হয়। তখন রাসূল ﷺ-এর প্রাপ্য অংশ হতে প্রত্যেক স্ত্রীর জন্য বছরে ৮০ অসাক্ব খেজুর এবং ২০ অসাক্ব যব বরাদ্দ করা হয়। (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৪৪৬৯; মুসলিম হা/১৫৫১) সেই সাথে একটি করে দুগ্ধবতী উষ্ট্রী প্রদান করা হয়। কিন্তু দেখা গেল যে, পবিত্রা স্ত্রীগণ যতটুকু না হলে নয়, ততটুকু রেখে বাকী সব দান করে দিয়েছেন। (রহমাতুল্লিল 'আলামীন ২/১৪২)

কবার রাসূল ﷺ-এর একমাত্র ইহূদীজাত স্ত্রী ছাফিয়াকে কুরায়শী স্ত্রী যয়নব বিনতে জাহ্শ 'ইহূদী' বলে সম্বোধন করেন, যার মধ্যে তাচ্ছিল্যের ভাব ছিল। এতে আল্লাহর রাসূল ﷺ এতই ক্ষুব্ধ হন যে, যয়নব তওবা করে অনুতপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তার গৃহে পা রাখেননি। (আবুদাঊদ হা/৪৬০২; মিশকাত হা/৫০৪৯; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/২৮৩৫), আরেকদিন রাসূল ﷺ ঘরে এসে দেখেন যে, ছাফিয়া কাঁদছেন। কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন যে, হাফছা আমাকে 'ইহূদীর মেয়ে' বলেছেন। একথা শুনে রাসূল ﷺ ছাফিয়াকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, বরং তুমি নিশ্চয়ই নবী (ইসহাকের) কন্যা। তোমার চাচা (ইসমাঈল) একজন নবী এবং তুমি একজন নবীর স্ত্রী। তাহলে কিসে তোমার উপরে সে গর্ব করছে? অতঃপর তিনি হাফছাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আল্লাহকে ভয় কর হে হাফছা'! (তিরমিযী হা/৩৮৯৪; নাসাঈ হা/৩২৫২; মিশকাত হা/৬১৮৩)

জাহেলি যুগে বিয়ে ছিল চার প্রকার। প্রথমটি ছিল আমাদের নবীর শিখানো বিয়ের ব্যবস্থা আর বাকি ৩টি ছিল ভ্যবিচার মিশ্রিত (সহিহ বুখারি, কিতাবুন নিকাহ, খণ্ড ২, পৃ. ৭৬৯), জাহেলি যুগে একাধিক স্ত্রী রাখা কোনো দোষের ব্যাপার ছিল না। সহোদর দুই বোনকেও অনেকে একই সময়ে স্ত্রী হিসেবে ঘরে রাখত। পিতার তালাক দেওয়া স্ত্রী অথবা পিতার মৃত্যুর পর সন্তান তার সত্মায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতো। তালাকের অধিকার ছিল শুধু পুরুষের এখতিয়ার। তালাকের কোনো সংখ্যা নির্দিষ্ট ছিল না। (আবু দাউদ, তাফসির গ্রন্থাবলি, আত তালাক মাররাতান দ্রষ্টব্য)

তখন ব্যভিচার সমাজের সর্বস্তরে প্রচলিত ছিল। কোনো শ্রেণির নারী-পুরুষই ব্যভিচারের কদর্যতা, পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত ছিল না। অবশ্য কিছুসংখ্যক নারী-পুরুষ এমন ছিল, যারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহমিকার কারণে এবং অন্যান্য কারনে এ নোংরামি থেকে বিরত থাকত যাদের মধ্যে একজন ছিলেন আমাদের নবী মুহাম্মদ ﷺ যিনি নবুয়তের পরেত দুরের কথা নবুয়তের আগেও কোনদিন এই ধরনের কাজে লিপ্ত হননি। হযরত মুহাম্মদ ﷺ নারীদেরকে তালাক দেওয়ার এখতিয়ারও দিয়েছিলেন (সুনান আবূ দাউদ ২২০৩, বুখারী, মুসলিম)

মানুষ নারীলোভী হবে তখনইত যখন সে দুনিয়ার প্রতি তার লোভ থাকবে কিন্তু যুহদ ও রাসূল ﷺ এর জীবন ছিল দুনিয়াত্যাগী জীবন। এর প্রমান -- ছহীহাহ হা/১৬১৫, বুখারী হা/৬৪৬০, বুখারী হা/৪১০১, বুখারী হা/৪৯১৩, তিরমিযী হা/২৩৭৭, তিরমিযী হা/২৩৫২; বায়হাক্বী-শু'আবুল ঈমান হা/১৪৫৩; মিশকাত হা/৫২৪৪; ছহীহাহ হা/৩০৮, বুখারী হা/৫৪২১; মিশকাত হা/৪১৭০ 'খাদ্য সমূহ' অধ্যায়, বুখারী হা/৫৪১৬ 'খাদ্য সমূহ' অধ্যায়-৭০ অনুচ্ছেদ-২৩; মুসলিম হা/২৯৭০, বুখারী হা/৬৪৫৯ 'রিক্বাক্ব' অধ্যায় 'রাসূল ও ছাহাবীদের জীবন যাপন কেমন ছিল' অনুচ্ছেদ-১৭, মুসলিম হা/১০৫৪; মিশকাত হা/৫১৬৫, বুখারী হা/৫৪১৪; মিশকাত হা/৫২৩৮, বুখারী হা/২০৬৯; মিশকাত হা/৫২৩৯, বুখারী হা/২৯১৬; মিশকাত হা/২৮৮৫ 'বন্ধক' অনুচ্ছেদ, ত্বাবারাণী কাবীর হা/৫৯৯০; ছহীহ আত-তারগীব হা/৯২৭, মাজমা' উয যাওয়ায়েদ হা/১৫৩৫৭, রহমাতুল্লিল 'আলামীন ২/১৪২ ইত্যাদি।

৫ম হিজরীতে খন্দক যুদ্ধের পর বনু কুরায়যার বিজয় এবং গণীমতের বিপুল মালামাল প্রাপ্তির ফলে মুসলমানদের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে আসে। এ প্রেক্ষিতে পবিত্রা স্ত্রীগণ রাসূল ﷺ-এর নিকটে তাদের ভরণ-পোষণের পরিমাণ বৃদ্ধির আবেদন জানান। এতে আল্লাহর রাসূল ﷺ মর্মাহত হন এবং তাদেরকে তালাক গ্রহণের এখতিয়ার প্রদান করেন। উক্ত মর্মে আয়াতে 'তাখয়ীর' (آية التخيير) নাযিল হয় (আহযাব ৩৩/২৮-২৯)

উক্ত আয়াত নাযিলের পর রাসূলুল্লাহ ﷺ আয়েশাকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে পরামর্শ করতে বললে তিনি বলে ওঠেন, 'এজন্য পিতা-মাতার সাথে পরামর্শের কি আছে? আমি তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং আখেরাতকে কবুল করে নিয়েছি। তিনি বলেন, অতঃপর অন্যান্য স্ত্রীগণ সকলেই আমার পথ অনুসরণ করলেন'। (বুখারী হা/৪৭৮৫-৮৬; মুসলিম হা/১৪৭৫; মিশকাত হা/৩২৪৯; আহযাব ৩৩/২৮-২৯)

আপনারা অনেকগুলা মেয়ের বা ছেলের সাথে বিয়ে ছাড়া রাত কাটালে সমস্যা হয় না কিন্তু বিশ্বনবী বহু বিবাহ করায় আপনাদের সমস্যা তাই না? আপনারা একটা মেয়েকে প্রেগনেন্ট করে পরে সেটা অস্বীকার করে সেই মেয়ের জীবন নষ্ট করলে সমস্যা হয় না কিন্তু আমাদের নবী বিবাহ করে সেই নারীগুলাকে সম্মান, মর্যাদা, অধিকার সব কিছু দেওয়ায় আপনাদের সমস্যা তাই না? আপনারা যেখানে পারেন যার সাাথে পারেন তার মাধ্যমে নিজেদে কামনা মিটান তাতে সমস্যা হয় না কিন্তু আমাদের নবী বিবাহ করে সেই নারীদেরকে স্ত্রীয়ের মর্যাদা দেওয়ায় সমস্যা হয়ে গেছে তাই না? আপনারা অবৈধ ভাবে অবৈদ কাজ করলে সমস্যা হয় না কিন্তু মহানবী বৈধভাবে বিবাহ করায় সমস্যা? এগুলা ডাবলস্টেন্ডার্ড।
Any insight of his sex slaves?
 

Users who are viewing this thread

Back
Top