পাশ্মীরী ফালুদা
অনুচ্ছেদ ৭৩০ রদ করার পর বেলালুম পাল্টে গেছে ভূস্বর্গ পাশ্মীরের চিত্র। মুসলিম অধ্যুষিত ও মুসলমান কর্তৃক আধাস্বায়ত্বশাসিত এ অণুরাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা বলপূর্বক করে নিয়েছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সনাতনী অভিবাসীরা। অনুপ্রবেশকারী সংখ্যালঘু হিন্দুরা, যারা অধিকাংশই পুরুষ, নিজ ধর্মসম্প্রদায়ের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য নিশানা করেছে প্রতিপক্ষ মুসলমান সম্প্রদায়ের বহুগর্ভা ও উর্বরা মাযহাবী রমণীদের। উজ্জ্বলবর্ণা ও লাস্যময়ী সুন্দরী পাশ্মীরী মুসলমান আওরতরা কিভাবে স্বেচ্ছায় হিন্দুত্ববাদের পদতলে নিজেদের তন-মন উৎসর্গ করে দিচ্ছে তার রোমহর্ষক বিবরণ পড়ুন এক পাশ্মীরী মুসলিম বালকের জবানবন্দীতে। পাশ্মীর কড়চা সিরিজের আরেকটি অনবদ্য কাহিনী!
সালাম আলেকুম, দোস্তোওঁ! আমি জুনেদ মির্যা, পাশ্মীর রাজ্যের রাজধানী ইলাহাপূর নগরের বাসিন্দা।
ওহো! থোড়া গলতি হয়ে গেলো। পাশ্মীরের রাজধানীর নামটা পাল্টে গেছে যে।
দুখের কথা কি আর বলবো? মুখ্যমন্ত্রী সুরেন্দ্র লোদীজীর কট্টর হিন্দুত্ববাদী সরকার আমাদের মুসলমান অধ্যুষিত পাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ ৭৩০ ধারা বাতিল করার পর থেকে এখানে ব্যাপক পরিমাণে হিন্দু অভিবাসীরা, বিশেষ করে আগ্রাসী হিন্দু মরদরা, সদলবলে আগমন করে বসতি স্থাপন করতে শুরু করেছিলো।
বহিরাগত হিন্দুরা বেশিরভাগই চতুর, কুটিল আর ষড়যন্ত্রী, খুব অল্প সময়েই তারা পুরো রাজ্যের সমস্ত ব্যবসা, শাসনক্ষমতা কব্জা করে ফেলে। অবধারিতভাবে আমাদের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যের স্থানীয় সরকারও হিন্দুদের হস্তগত হয়ে যায়। HSS অর্থাৎ “হিন্দু স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ” নামক কট্টর সাম্প্রদায়িক দলের নেতারা ভোটে কারচুপি করে রাজ্যের সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
ক্ষমতা পাকড়াও করে প্রথমেই তারা আমাদের ঐতিহ্যবাহী নগরের নাম ইলাহাপূর পাল্টে নতুন করে “রামনগর” নামকরণ করে।
অতঃপর ব্যাপকহারে চালু হয় পাশ্মীরের সকল মহল্লায় আর গাঁওয়ে মন্দির স্থাপনার মহাযজ্ঞ। মূর্তিপূজারী HSS-এর খতরনক পাণ্ডারা প্রতিটি এলাকায় জবরদস্তীমূলক জমি দখল করে তাদের মূর্তিপূজার জন্য মন্দির স্থাপন করে ফেলে। মুসলিম সমৃদ্ধ পাশ্মীরে উগ্র হিন্দুত্ববাদের জাল বিস্তার করতে অঢেল পরিমাণে টাকা ঢালে লোদীজীর সাম্প্রদায়িক কেন্দ্রীয় সরকার। অদ্যাবধি পাশ্মীরে যদিও হিন্দুরা সংখ্যালঘু, তবুও নয়া পাশ্মীরে মসজিদের চেয়ে এখন মন্দিরের সংখ্যাই বেশি।
শুধু কি উপাসনালয়? একে একে সকল কিছুতেই থাবা বসিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। বিগত কয়েক বছর ধরে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যের সমস্ত ব্যবসা, বাণিজ্য, রাজনীতি ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রেই কট্টর হিন্দুদের দাপট চলে আসছে। নিজের রাজ্যে আমরা মুসলিমরাই এখন দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। অনুচ্ছেদ ৭৩০ রদ হয়ে গেলো, আর আমরা মুসলমানরা হয়ে গেলাম আযাদ পাশ্মীরের গুলাম সম্প্রদায়।
তবে সকলেই না। মূলতঃ মুসলিম পুরুষরাই দুর্ভোগে পতিত হচ্ছে।
পাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ হিন্দুদের করায়ত্ত হবার পর হতে আমাদের সম্প্রদায়ের জেনানারা তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক হালতেই আছে।
জানেনই তো, পাশ্মীরী মুসলমান আওরতদের সৌন্দর্য্যের সুখ্যাতি দুনিয়াজোড়া। আরবী ও পারসীয় বংশোদ্ভূত হবার কারণে পাশ্মীরী নারীদের চেহারা মাশাল্লা অতীব আকর্ষণীয়। আর আমাদের আওরতদের গায়ের রং যেন কাঁচা সফেদ দুধে যাফরান গোলা। তদুপরি, মাংসভোজী হবার কারণে আমাদের রমণীদের দেহবল্লরীও জীভে জলঝরানো।
এসব বৈশিষ্ট্যই বহিরাগত হিন্দুদের বড্ডো রকমের আকৃষ্ট করে। গোরী পাশ্মীরী লণ্ডিয়ার গোরা গতর হিন্দুদের জন্য স্বর্গীয়। গোশতখোর পাশ্মীরী মুসলমান লড়কীদের সুডৌল গতরের ভাঁজ আর বাঁকগুলো শাকাহারী হিন্দুদের হাড়হীন মাংসপেশীতে লোলরসের বাধ ছোটায়।
আর কট্টর হিন্দুদের জন্য সবচেয়ে বেশি উত্তেজক যে বৈশিষ্ট্য সেটি হলো পাশ্মীরী আওরতদের ধর্ম ও গোত্রপরিচয়। শুধুমাত্র মুসলমান মেয়েদের প্রতিই হিন্দুরা তীব্রভাবে কামনা করে। আমাদের মুসলমান অধ্যুষিত রাজ্যে অল্পসংখ্যক হলেও পাশ্মীরী পেয়দায়শী হিন্দু সম্প্রদায় আছে। পাশ্মীরী হিন্দু মহিলারাও কিন্তু রূপে-গুণে মুসলমান আওরতদের চেয়ে কিছু কম নয়। অথচ বহিরাগত হিন্দুরা তাদের স্বীয় সম্প্রদায়ের গোরী, সুন্দরী নারীদের প্রতি খুব একটা নজর ডালেই না, যতটুকু তারা দিওয়ানা আমাদের মুসলিমা লড়কীদের প্রতি। পাশ্মীরী পণ্ডিত হিন্দুদের সাথে বহিরাগত অভিবাসী হিন্দুদের ভাবসখ্য তো অতিঅবশ্য আছেই, আর তাতে সম্মান দেখিয়ে হিন্দু মরদরা পাশ্মীরী হিন্দু নারীদের খুব একটা ঘাঁটায় না। উল্টোদিকে কট্টর সাম্প্রদায়িক হিন্দু অভিবাসীরা রীতিমতো নিশানা করে আমাদের মাযহাবের মুসলমান লণ্ডিয়াদের পিছে পড়ে থাকে।
জানা কথা, কট্টর সংস্কারী হিন্দুরা আমাদের পাশ্মীরী মুসলমানদের নফরত করে। গুজবে শোনা যাচ্ছে, আমাদের সমাজকে শায়েস্তা করবার জন্যই কুচক্রী লোদী সরকার গোপনে ইন্ধন জোগাচ্ছে উগ্র সনাতনীদের। সকল মহল্লায় ঘাঁটি গেঁড়ে বসা HSS-এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্যই একটা - “মুল্লী লুটো”!
অভিবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় নব্বই শতাংশ পুরুষ। কাজেই বহিরাগত সনাতনী মরদদের চোখের মণি আমাদের পাশ্মীরী মুসলিমারা যে তাদের নয়া শাসকদের নেকনজরে থাকবে তাতে অবাক হবার কিছু নেই।
Last edited: