কাঁচা কাঁঠাল খাওয়া শেষ। পাকা কাঁঠাল এখনো বাজারে আছে। পাকা কাঁঠাল খাওয়ার পর বিচি কিন্তু ফেলনা না। অনেকে হয়তো বিচি ফেলেই দেন। কেউ কেউ আবার তরকারি হিসেবে রান্না করে খান। তবে কাঁঠাল বিচির গুণের কথা শুনলে হয়তো আর ফেলবেন না। কাঁঠাল বিচির পুষ্টিগুণও আপনাকে খেতে উৎসাহিত করবে। এবার পুষ্টিগুণে ভরা কাঁঠালের বিচির স্বাস্থ্যগত উপকারিতা জেনে নিন।
- কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে ভিটামিন বি-১। ভিটামিন বি-১২ এর ভালো উৎস কাঁঠাল বিচি। এ ছাড়া আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, থায়ামিন, নায়াসিন, লিগন্যান, আইসোফ্ল্যাভোন এবং স্যাপোনিনের মতো ফাইটো কেমিক্যাল আছে বিচিতে, যা মানবদেহের জন্য উপকারী।
- কাঁঠালের বিচিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ক্যানসার প্রতিরোধী এবং বার্ধক্যের প্রভাব সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।
- কাঁঠাল বিচির প্রোটিন অত্যন্ত উপকারী। মাছ, মাংস যাদের কম খাওয়া হয়, তারা শরীরের প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদা মেটাতে কাঁঠাল বিচি খেতে পারেন।
- কাঁঠাল বিচির জীবাণুনাশক গুণও রয়েছে। এতে থাকা বিশেষ উপাদান এইডস রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা উন্নয়নে সফল বলে প্রমাণিত কিছু গবেষণায়।
- কাঁঠাল বিচিতে থাকা পটাশিয়াম ব্ল্যাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
কাঁঠাল খাওয়ার নানা উপায়
কাঁঠাল পুষ্টিকর খাবার
পাকা কাঁঠাল ফল হিসেবে তো জনপ্রিয়। কাঁঠালের বিচিও নানাভাবে খাবারের তালিকায় রাখা যায়। এবার তেমনই কিছু উপায় জেনে নিন
- পাকা কাঁঠাল ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি কাঁঠালের জুস বা স্মুদি করে খাওয়া যায়। আবার বিভিন্ন ডেজার্ট তৈরি করা যায় কাঁঠাল দিয়ে। দুধ, ডিম আর কাঁঠাল দিয়ে পুডিং বানানো যায়। কাঁঠালের রস আলাদা করে সেটা দিয়ে হালুয়া, সন্দেশ, পিঠা বা জেলো মিশিয়ে পুডিং বানানো সম্ভব, যেগুলো দেখতে লোভনীয়, খেতেও চমৎকার। অনেকেই পাকা কাঁঠাল পছন্দ করেন না, তারা সঠিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে পাকা কাঁঠালের বিভিন্ন পদ করে খেতে পারেন।
- কাঁচালের বিচি খুবই মুখরোচক খাবার। কাঠ খোলায় বা বালু দিয়ে বাদামের মতো করে ভেজে খাওয়া যায় কাঁঠালের বিচি। ভর্তা বানিয়ে খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। আবার মুরগি বা গরুর মাংসের সঙ্গে আলুর বিকল্প হিসেবে অনেকেই কাঁঠালের বিচি দিয়ে রান্না করেন। কাঁঠালের বিচি সেদ্ধ করে সেটা দিয়ে হালুয়া বা সন্দেশ বানালে অনেকটা মুখরোচক খাবার হয়ে ওঠে।
- কাঁঠালের বিচি খাওয়া যায় ভর্তা করেও। খোসা ছাড়িয়ে সেদ্ধ বিচির সঙ্গে মরিচ, লবণ আর অল্প পেঁয়াজকুচি মিশিয়ে চটকে নিলেই হবে। এর সঙ্গে মেশাতে পারেন শর্ষের তেল। গরম ভাতের সঙ্গে মুখে দিয়ে দারুণ এক স্বাদ পাবেন।
- কাঁচা কাঁঠাল বুটের ডাল বা বিভিন্ন ডালের সঙ্গে মিশিয়ে তরকারি হিসেবে রান্না করা যায়। অনেক অঞ্চলে গরুর মাংসের সঙ্গে কাঁচা কাঁঠালের তরকারি খুব জনপ্রিয় খাবার। আবার অন্যান্য সবজির সঙ্গে মিশিয়ে পাঁচ মেশালি সবজিও রান্না করা যায়। খাওয়া যায় এঁচোড় রান্না হিসেবেও।
* নাহিদা আহমেদ, পুষ্টিবিদ