What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঝর্ণা The untold story( সম্পূর্ণ উপন্যাস) (1 Viewer)

[HIDE]


দুপুরে খাবার টেবিলে বসতেই বাবা আমাকে বললেন " শোন যে সাজেসন গুলো পাবি সেগুলো যেন কাউকে দিস না ! আর যা সাজেসন পেপারে থাকবে সেগুলো তোর কোর্সের মধ্যেই থাকবে ! যদি হায়র সেকেন্ডারী তে ভালো ফল করতে পারিস তাহলেই জানবি জয়েন্ট এন্ট্রান্স এ বসতে পারবি !!" আমি কোনো কথা না বলে মুখ বুঁজে খেতে থাকলাম ! মা আমার পাতে মাছ দিতে দিতে বললেন " তোকে আগে তোর পিসির বাড়ি যেতে হবে ! সেখান থেকে মঞ্জু কে নিয়ে তারপর তৃপ্তি দির বাড়ি যাবি !!" এবার আমি বিরক্ত হবার ভান করে বললাম " আমি কি মঞ্জুর বডি গার্ড নাকি ? ও যেখানে যাবে সেখানেই ওর বডি গার্ড হয়ে আমাকেই যেতে হবে !!"
- আরে বাবা মন্জুও তো যাবে কিন্তু একলা মেয়ে রাতের বেলায় একা একা ফিরবে সেটা কি ভালো দেখায় নাকি?? তুই যদি যাস তো তোর পিশেমষায়ের স্কুটার নিয়ে আর মঞ্জু কে নিয়ে আরামে চলে যেতে পারবি আর ফিরতেও পারবি !!" মা আমাকে একটু ধমকের সুরে বলে উঠলেন ! তুই তিনটে তিরিশের ট্রেন ধরে চলে যা !
এখন বাজে দেড়টা ! তারমানে আমাকে আড়াই টের মধ্যে বেরুতে হবে ! আমি মাকে বলে উঠলাম " ট্রেনে না গিয়ে যদি আমি মটর সাইকেল নিয়ে যাই তাহলে ভালো হয় !"
- না না এত খানি রাস্তা মটর সাইকেলে গিয়ে কাজ নেই !! মা বললেন !
- ঠিক আছে মটর সাইকেল নিয়েই যাক ! কিন্তু খুব সাবধানে যাবি ! বাবা আমাকে অনুমতি দিলেন ! " কিন্তু হেলমেট নিয়ে যেতে ভুলো না !" বাবার এ হেন অনুমতি তে মা নিজের মুখ টাকে একটু গোমরা করে বসে পড়লেন !!

আমি নিজের কিট ব্যাগেতে একটা বারমুডা, টি সার্ট, ব্রাস জাঙ্গিয়া সব ভরে নিলাম ! প্যান্ট জামা পড়ার আগে একবার মটর সাইকেল টাকে পরিস্কার করে স্টার্ট করে দেখে নিতে হবে ! পেট্রল কতটা আছে সেটাও দেখতে হবে ! ভেবে বাইরে এলাম ! মটর সাইকেল টাকে বের করে একটা কাপড় দিয়ে টাকে একটু ঝার পোঁচ করে অয়েল , পেট্রল সব চেক করে নিলাম ! খুব বেশি দূর মটর সাইকেলে করে কখনো যাওয়া হয়নি ! সুধু একবার সব বন্ধুরা মিলে প্রত্যেকে নিজের নিজের মটর সাইকেল করে পান্ডুয়া গেছিলাম ফিস্ট করতে ! আর তারপর আজ আবার প্রায় ৪০ কিলোমিটার দুরে পিসির বাড়ি যাচ্ছি ! মনটা বেশ উত্তেজিত ! জীবনে প্রথম একা একা মটর সাইকেল চেপে জি টি রোড ধরে যাব !! তারাতারি ঘরে ঢুকে হাত মুখ ধুয়ে জামা প্যান্ট পরে নিলাম ! পিঠে কিট ব্যাগ টা বেঁধে ড্রইং রুমের সোফায় বসে জুতোর ফিতে বাঁধতে বাঁধতেই মা কে বললাম " আমাকে ৩০০ টা টাকা দাও ! গাড়িতে পেট্রল ভরতে হবে আর কিছু আমার হাতেও থাকবে !!" যদিও আমার পকেটে এখনো প্রায় ১৫০০ টাকা মত বেঁচে আছে কিন্তু সেটা আর মাকে বলিনি ! কারণ মা ভেবেই নিয়েছে যে সম্পূর্ণ টাকাটাই দার্জিলিঙে খরচ হয়ে গেছে ! মা চুপচাপ নিজের ঘরে চলে গেল টাকা আনতে ! আমি ঝরনা কে বললাম " আমার হেলমেট এনে দে !" ঝরনাও হেলমেট আনতে চলে গেল ! কয়েক মিনিটের মধ্যেই মা হাতে করে ৫ টা ১০০ টাকার নোট আমার হাতে দিয়ে বললেন " একদম রাস্তার ধার দিয়ে গাড়ি চালাবি ! স্পিডে একদম চালাবি না ! কাউকে যেন ওভার টেক করবি না ! " এই রকম হেন তেন প্রায় ১০০ টা উপদেশ দিলেন ! আমিও বাধ্য ছেলের মত সবেতেই ঘর নেড়ে সায় দিয়ে গেলাম ! ঝরনা হেলমেট হাতে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল ওর হাত থেকে হেলমেট টা নিয়ে মাথায় গলিয়ে নিলাম ! মা আবার বলে উঠলেন " ওখানে পৌঁছেই কিন্তু ফোন করে দিবি ! নাহলে চিন্তায় স্থির থাকতে পারব না ! "
- ওহ মা ! এত চিন্তা করনা ! আমি তো মটর সাইকেল চালিয়ে এখানেও জি টি রোডে ঘুরে বেড়াই নাকি?? আমি ঠিক ভাবেই পৌঁছে তোমাকে ফোন করে দেব ! ৪০ কিলোমিটার রাস্তা মোটে ! এক ঘন্টা তেই পৌঁছে যাব ! বলেই আমি মটর সাইকেল স্টার্ট করে বেরিয়ে এলাম !

মটর সাইকেলের চালনোর সাথে সাথেই ফুর ফুরে হওয়া গায়ে লাগতে শুরু করলো ! আমার মনটাও ফুর ফুরে ছিল ! ফুর ফুরে হওয়ার সাথে আমার মন ফুর ফুর করে আমার মঞ্জুর দিকে এগিয়ে চলল ! ভাবতে ভাবতে যাচ্ছি মঞ্জু আমাকে দেখে কি করবে ! কিম্বা আজ রাতের বেলায় আমরা এক ঘরে শুতে পাব কি না ! মটর সাইকেলের এক্সেলিটারে চাপ পরতেই স্পিড বেড়ে গেল ! স্পিডমিটারের কাঁটাতে দেখি ৮০ তে চলছে ! না রেস একটু ছেড়ে দিলাম ! কাঁটা তা ৫০ এ নেমে এলো ! রাস্তায় সে রকম কোনো ভির নেই ! এক ঘন্টার মধ্যেই আমি পৌঁছে গেলাম পিসির বাড়ি ! মটর সাইকেলটাকে স্ট্যান্ডের উপর দাঁড় করিয়ে দরজার সাথে লাগানো কলিং বেল তা টিপলাম ! কর্কশ শব্দে কলিং বেল তা দুপুরের নিস্তব্ধ কে খান খান করলো ! একটু পরেই দরজা খুলে দাড়ালেন আমার প্রাণেশ্বরী ! মঞ্জু ! আমাকে দেখে প্রথমে বুঝতে পারে নি কারণ আমার মুখ তা পুরোই হেলমেটে ঢাকা ছিল ! হেলমেট মাথায় রেখেই একবার দরজা দিয়ে উঁকি মেরে ভিতর তা দেখেই মঞ্জু কে জড়িয়ে ধরলাম !!
_ এই কে আপনি ? কি চান? আমাকে ধরছেন কেন ? বলেই মঞ্জু বেশ জোরেই চেঁচিয়ে উঠলো !! তারাতারি আমি হেলমেট তা খুলে ফেললাম ! আমাকে দেখে মঞ্জুর ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া মুখ তা ঝলমল করে উঠলো !! "তুমি !!" বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরে চক চক করে আমার গালে বেশ কয়েকটা চুমু খেয়ে নিল !! ভিতর থেকে পিসির গলা ভেসে এলো !" কে রে মঞ্জু?" আমি তারাতারি মঞ্জু কে ছাড়িয়ে সরে গেলাম ! এমনিতেই রাস্তায় এক আধজন লোক রয়েছে তার উপর বাড়ির দরজাও খোলা ! কেউ যদি দেখে ফেলে !!
ত্রস্ত স্বরে মঞ্জু উত্তর দিল " দাদাভাই এসে গেছে !!" দেখলাম পিসি পিসির ঘর থেকে বেরিয়ে আসছেন বলতে বলতে " এত তারাতারি !! নিশ্চই খুব জোরে মটর সাইকেল চালিয়ে এসেছিস??" এক ঘন্টাতেই তুই চলে এলি !! হ্যা রে তর কি ভয় দর বলে কিছুই নেই ! তুই এত জোরে গাড়ি চালাস ! যদি কিছু একটা হে যায় তখন কি হবে !!" পিসি বেশ রাগী হয়েই বললেন !
- না গো পিসি ! আমি জোরে চালায়নি !! রাস্তা ফাঁকা ছিল ! তাই তারাতারি পৌঁছে গেছি !!
- না এত তারাতারি পৌঁছনোর কথাই নয় ! জোরে না চালালে এত তারাতারি আসা যায় না !

[/HIDE]
 
[HIDE]

এত মহা ঝামেলা ! দেরী হলেও তোমাদের চিন্তা আবার তারাতারি হলেও তোমাদের চিন্তা !! আমি কি করব সেটা বলে দেবে কি?? আমার কথা শেষ হয় নি ঠিক তখনি পিসির বাড়ির ফোন বেজে উঠলো ! পিসি তারাতারি গিয়ে ফোন তুললেন ! "হ্যালো !! হ্যা হ্যা ! এই পৌঁছলো !! না না দেরী কোথায় ! ও তো বরণ তারাতারি পৌঁছে গেছে ! আমি তো জোরে গাড়ি চালিয়েছে বলে বকতে যাচ্ছিলাম ! আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে নাও কথা বল !" বলেই পিসি আমাকে ফোন তা ধরিয়ে দিলেন ! " হ্যা মা বল !! .. আচ্ছা মা আমি কি এখনো ছোট্ট ছেলে আছি ?? না না ! একদম তোমাদের চিন্তার কিছুই নেই ! একদম জোরে চালায়নি ! খুব ভালো ভাবেই পৌঁছে গেছি ! এখন একটু রেস্ট করব ! সন্ধ্যে বেলায় তৃপ্তি দির বাড়ি যাব !! ঠিক আছে?? আচ্ছা রাখছি !!"
- তুই কি এখন চা খাবি ?? পিসি আমাকে জিজ্ঞাস্সা করলেন !!
- না এখন তো মাত্র সাড়ে তিনটে বাজছে ! একটু ঘুমিয়ে নিই ওই পাঁচটা নাগাদ আমাকে তুলে দিও !!
- ঠিক আছে আমিও একটু ঘুমিয়ে নিই ! বলেই পিসি নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লেন ! আমি আর মঞ্জু একবার উঁকি মেরে দেখলাম ! এমনিতেই পিসি একটু ঘুম কাতুরে ! তার উপর অনার যদি দুপুরের ঘুম না হয় তাহলে নাকি শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে !!
মঞ্জু এক ঝটকায় আমাকে টেনে নিজের ঘরে ঢুকিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে পাগলের মত চুমু খেতে শুরু করে দিল !!
আমি মঞ্জুর মুখটাকে দু হাতে ধরে ওর কপালে একটা ছোট্ট চুমু এঁকে দিলাম ! তার পর ধীরে ধীরে ওর ঠোঁটের উপর আমার ঠোঁট দুটোকে বসিয়ে দিলাম ! আমাদের চুম্বন পর্ব বেশ কিছুক্ষণ চলল !! হটাত খেয়াল হলো ঘরের দরজায় খিল লাগানো নেই ! তারাতারি আমি মঞ্জু কে ছেড়ে দিয়ে দরজার দিকে ইশারা করলাম !!" চিন্তার কিছুই নেই ! মা সারে চারটের আগে কিছুতেই উঠবে না !! " মঞ্জু বলে উঠলো ! তবুও.............. ও গিয়ে খুব সন্তর্পনে দরজার ছিটকানি লাগিয়ে দিল ! আবার এসে আমাকে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দিয়ে আমার বুকে উপর শুয়ে পরে আমার সমস্ত শরীর কে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকলো !! এক সময় চুমুর পর্ব শেষ হলে আমাকে একটা কিল মেরে ঠোঁট ফুলিয়ে বলে উঠলো " বাড়ি গিয়ে একেবারে আমাকে ভুলে গেছ !"
- তোমাকে কি ভুলে থাকতে পারি?? তুমিই যে আমার সব ! তুমি যেন না ! এখানে আসার জন্য আমাকে কি কি নাটক করতে হয়েছে ! বেশ কিছুক্ষণ আমরা একে ওপর কে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকলাম ! হটাত আবার কলিং বেলের কর্কশ শব্দ ! মঞ্জু তারাতারি উঠে দরজা খুলে বেরিয়ে গেল !
কলিং বেলের শব্দে পিসির ঘুম ভেঙ্গে গেছিল !! " কে রে মঞ্জু??"
- কেউ না মা ! পিওন এসেছে ! বাবার চিঠি আছে !!
- ও এই পিওন গুলোও আসার সময় পায় না ! দুপুর বেলায় যখন সবাই ঘুমাবে তখনি ওদের আসা চাই !! গজ গজ করতে করতে পিসি ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন !!
ঘরে ঢুকে মঞ্জু আমাকে বলল " এই চলো না একটু ঘুরে আসি তোমার মটর সাইকেলে করে ! আমি তো এক পায়ে রাজি ! অনেক দিন ধরে সপ্ন দেখেছি যে মঞ্জু কে আমার মটর সাইকেলের পিছনে বসিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি ! মঞ্জু আমার পিঠে অর মাই গুলোকে চেপে ধরে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে ! অর একটা হাত আমার বাঁড়ার উপর ! আর আজ যখন মঞ্জু নিজে থেকে আমার মটর সাইকেলে চেপে ঘোরার কথা বলল আমার হৃতপিন্ড ছলাক ছলাক করে লাফিয়ে লাফিয়ে রক্তের চাপ বাড়িয়ে দিয়ে আমার শরীরে উন্মদনার সৃষ্টি করতে শুরু করে দিল !!
- তারাতারি তৈরী হয়ে নাও !! আমি মাকে বলে আসছি !! বলেই মঞ্জু ঘর থেকে বেরিয়ে গেল !! আমার আবার তৈরির কি আছে?? জামা প্যান্ট তো আমি পরেই আছি ! শুধু জুতোটা গলানো বাকি !! আমিও মঞ্জুর পিছু পিছু পিসির ঘরে ঢুকে পিসি কে বললাম " পিসি এক কাপ চা দাও না ! প্লিস !"
- বোস ! এখুনি বানাচ্ছি ! তুই তো এখুনি আবার মঞ্জুর সাথে ওর বন্ধু চৈতালির বাড়ি যাবি ! খুব সাবধানে যাস বাবা !
- চৈতালির বাড়ি?? আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম !
- হ্যা মঞ্জু বলল যে ও একটু চৈতালির বাড়ি যাবে তোকে নিয়ে আর সেখান থেকেই তোরা তৃপ্তি ম্যাডামের বাড়ি যাবি !
- তা ওর বন্ধু চৈতালির বাড়ি কত দূর? যে এখনি বেরুতে হবে !! নাটক করে আমি পিসি কে প্রশ্ন করলাম !
- বেশি দুরে নয় ! তবে যখন বেরুতেই হবে তখন আবার ফিরে না এসে সোজা তৃপ্তি ম্যাডামের বাড়ি হয়ে আসাই ভালো ! তাতে সময়ও বাঁচবে আর তোদের খাটনিও বাঁচবে ! বলে পিসি রান্না ঘরে চলে গেলেন ! আমি ফিরে এলাম মঞ্জুর ঘরে ! দেখি তারাতারিতে মঞ্জু একটা শাড়ি পরে সেটাকে ঠিক করার চেষ্টা করছে ! একদম আগুন রঙের শাড়িতে (যদিও অর্ধেকই পরা হয়েছিল !) মঞ্জুকেও আগুন লাগছে !! আমাকে দেখেই মঞ্জু বলে উঠলো " এই একটু কুঁচি ধরে দাও তো ! "

আমি কুঁচি ধরতে জানিনা !!তুমি নিজেই নিজের কুঁচি ঠিক করে নাও !!" আসলে আমি মঞ্জুর অর্ধ নগ্ন কমর তাকে উপভোগ করতে চাইছিলাম !! পিসি আওয়াজ দিলেন " এই সুনন্দ চা নিয়ে যা !!" আমি তারাতারি মঞ্জুর ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম ! পিসির হাত থেকে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চুমুক দিলাম ! তার মাঝেই পিসি আমাকে জিজ্ঞাস্সা করলো "মঞ্জু কি করছে?"
- বোধ হয় তৈরী হচ্ছে ! দ্যাখো গিয়ে কত মেক আপ করছে !
পিসি সোজা মঞ্জুর ঘরে ঢুকে পড়লেন ! পিছনে পিছনে আমিও গেলাম মজা দেখার জন্য !! পিসিকে দেখেই মঞ্জু রেগে মেগে বলে উঠলো " কি করে তোমরা শাড়ি পর বলত??" একটা শাড়ি পরতেই আমার বারোটা বাজিয়ে দিল !! " সত্যিই মঞ্জু একটা শাড়ি পড়তে গিয়ে একেবারে নাজেহাল হয়ে গেছে ! রাগে মুখের রং লাল হয়ে গেছে ! সারা মুখেতে হালকা ঘাম আর তার উপর লেপ্টে আছে মঞ্জুর অবিন্যস্ত চুলের গোছা ! মঞ্জুর হালত দেখে পিসি হেসে উঠলেন আর সাথে আমিও !
আমাদের হাসিতে মঞ্জু আরও রেগে গিয়ে পুরো সারিতায় খুলে ফেলে দিল ! "ধুর পড়বই না শাড়ি !!" এখন মঞ্জু শুধু একটা সাদা সায়া আর একটা সাদা ব্লাউজ পরে দাঁড়িয়ে আছে ! পিসি হাসতে হাসতেই বললেন " আরে বাবা না পড়লে কি করে শিখবি কি করে শাড়ি পড়তে হয় ! আয় আমি তোকে শাড়ি পরিয়ে দিই ! " এই ছেলে তুই হাঁ করে কি দেখছিস?? যা পালা এখান থেকে !!" আমিও হাসতে হাসতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এলাম !!
বেশ কিছুক্ষণ পরে যখন মঞ্জু তৈরী হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো আমি হাঁ করে মঞ্জু কে দেখতে থাকলাম ! এ আমি কাকে দেখছি ! কে এটা ! এটা কি আমারই প্রেয়সী ? এই রূপ দিয়ে কাকে ভোলানোর চেষ্টা করছে মঞ্জু? নিজের মনের অজান্তেই আমার ঠোঁট দুটো বির বির করে উঠলো :-


" তোমার চোখের নিল সাগরে
ডুবিয়ে নিও আমায় !
তোমার বুকের অসীম আকাশে
মিলিয়ে দিও তারায় !
ওই রূপ সাগরে ডুব না দিলে
সাঁতার শেখা না যায় !
রূপের আলোর আকাশে না উড়িলে
ডানা কি করে ছড়ায় !
তোমার মাঝে দেখেছি আমি
আমার সর্বনাশ
তুমিই প্রেম তুমিই সাধনা
আমার সকল আশ !!
ওই রুপেতে মজেছে সবাই
আমিও মরেছি হায় !
ওই রূপের আগুনে পুরতে
আমার মন বড় যে চায় !!"



[/HIDE]
 
[HIDE]


আমাকে ঠেলা দিয়ে মঞ্জু বলে উঠলো কি হ্যাংলার মত দেখছ ! মা দেখতে পেলে আর রক্ষে থাকবে না ! লজ্জায় তারাতারি মুখ নামিয়ে নিলাম ! পিছন থেকে পিসি জিজ্ঞাস্সা করলো "ফিরতে কত রাত হবে তোদের??"
- হয়ত আজই ফিরে পরতাম ! কিন্তু মঞ্জু কে দেখার পর তৃপ্তি দি বা কমলদা হয়ত রাতে ফিরতে দেবেন না ! মঞ্জু যা মান্জা দিয়েছে !! হাসতে হাসতে পিসিকে বললাম !
- না বাবা যত রাতই হোক বাড়ি ফিরে আসবি !
আমি মটর সাইকেল স্টার্ট করতেই মঞ্জু আমার পিছনে উঠে বসে পড়ল আমাদের দুজনের মাঝ খানে অনেক খানি ব্যবধান ! বুঝতেই পারলাম পিছন থেকে পিসি আমাদের দুজন কে দেখছেন ! আর তা ছাড়া এটা মঞ্জুর পাড়া, এখানে মঞ্জু যদি ভদ্র ভাবে মটর সাইকেলে না বসে তাহলে কেলেঙ্কারী হয়ে যাবে !
পাড়া ছাড়তেই সোজা জিটি রোডে মটর সাইকেল এসে পরতেই মঞ্জু পিছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরল ! ঠিক যেমন আমি কল্পনাতে মঞ্জু কে দেখতাম ! কানের কাছে মুখ এনে বলল " এবার সোজা চল বিরলা মন্দিরে !!" ওর বলার দেরী ! আমার মটর সাইকেল ছুঁটে চলল মন্দিরের দিকে !! হটাত রাস্তায় বেশ ভীর দেখে গাড়ির গতি স্লো করলাম ! মন্জুও তারাতারি আবার ভদ্র হয়ে বসলো ! বেশ ভালই একটা ভীর ! বেশ কিছু লোক জটলা করে দাঁড়িয়ে আছে ! পুরো রাস্তা জ্যাম ! ভিড়ের মাঝেই পুলিশের ধমকানি ! " এই রাস্তা খালি করে দিন ! গাড়ি যেতে দিন !!" বলতে বলতেই আমার সামনে এসে দাঁড়ালো সমানত বাবু ! মানে যে লোক টি দার্জিলিং যাবার দিনে আমাদের মন্দিরের বাইরে রেস্টুরেন্টে ধরে ছিল !! আমাকে দেখেই এক গাল হেসে প্রশ্ন করলো "আরে ভাইপো তুমি এখানে??"
- না মানে এই বোনকে নিয়ে একটু মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলাম ! একটু জোর দিয়েই মন্দিরের কথা বললাম ! বোঝার চেষ্টা করলাম সামন্ত বাবুর কি প্রতিক্রিয়া হয় ! প্রতিক্রিয়া তো দুরের কথা এক গাল হেসে বললেন " যাচ্ছ যাও ! কিন্তু সন্ধ্যের মধ্যেই ফিরে এস ! জায়গা টা ভালো নয় !! আর তোমার হেলমেট কোথায়??"
সত্যিই তো মঞ্জুর রূপ দেখতে দেখতে হেলমেট আনতে একদম ভুলে গেছি !! কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে বলে উঠলাম !" এই তো শুধু মন্দিরে যাব ! ওখানে হেলমেট রাখার জায়গা নেই বলেই নিয়ে আসিনি !!"
- না না একদম ভালো কথা নয় ! যদি পুলিশে ধরে তখন কি করবে ! আর তাছাড়া হেলমেট হলো সেফটির জন্য ! হেলমেট না পরে মটর সাইকেল চালানো একদম উচিত নয় ! শোনো কেউ যদি কিছু বলে তাহলে সোজা তোমার বাবার নাম করবে !! কিন্তু ভবিস্যত্তে যেন হেলমেট ছাড়া গাড়ি চালিও না !!

- কি হয়েছে এখানে? এত ভীর কেন??
- আর বল না ! একটা লরি একটা সাইকেলওলাকে উড়িয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে ! এখন তার লাশ নিয়ে লোকেরা ঘটালা করতে শুরু করছে ! তুমি যাও ! সাবধানে যাবে ! বলেই সামন্ত বাবু ভীর পাতলা করতে চেষ্টা করতে শুরু করে দিলেন ! আমিও কোনো রকমে ভীর কাটিয়ে বেরিয়ে এলাম !
গাড়ি সোজা থামালাম মন্দিরের সামনে ! লক করে দুজনে হাথ ধরা ধরি করে গিয়ে ঢুকলাম সোজা মন্দিরের লাগোয়া পার্কের ভিতর ! কোথায় কোনো বসার জায়গা নেই ! প্রতি জায়গায় কপত কপতি অশালীন অবস্থায় বসে আছে ! ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সেই পুরনো জায়গাতে চলে গেলাম ! কিন্তু সেখানেও খালি নেই ! কি আর করা পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম গঙ্গার ঘাটের দিকে ! ঘাটের সিড়িতেও ভীর ! একদম নিচের দিকে একটা সিরি খালি পরে আছে ! তারাতারি কাল বিলম্ব না করে সেটাতেই দুজনে বসে পরলাম ! যেহেতু ঘাটের সিরিটা একেবারে ওপেন এরিয়া তাই সেখানে কিছুই করা যাবে না ! আমি মঞ্জুর হাত নিজের হাতের মধ্যে চেপে ধরে চুমু খেলাম ! মন্জুও আমার হাতে চুমু খেয়ে রেসপন্স করলো ! " ধুর এখানে ভালো লাগছে না ! কোথাও যে একটু নিরিবিলিতে বসবো তার কোনো উপায় নেই !!" মঞ্জু বলে উঠলো !
- কি আর করা যাবে ! কিছুই তো করার নেই ! তার থেকে চল বাড়ি ফিরে যাই ! সেখানে তবুও তো তোমার ঘরে গিয়ে কিছুটা একান্ত সময় কাটানো যাবে !!

না ! বাড়ি ফিরলে মুস্কিল আছে ! তার থেকে চলো চৈতালির বাড়ি যাই ! ওর বাড়িতে ওর বাবা মা ছাড়া আর কেউ থাকে না ! আর চৈতালির ঘর দুতলায় ! কেউ সেখানে যায়না ! চৈতালি কে ইশারা করে দিলে আমাদের কিছুক্ষণ একা ছেড়ে দেবে !! ও খুব এক্সপার্ট মেয়ে !
- কিন্তু ওর বাবা মা কিছু বলবে না??
- না ওর বাবা মা ওকে কোনো ব্যাপারে বাঁধা দেয় না ! ওরা খুব ভালো ! আর সেই ভালো হওয়ার সুযোগ নিয়ে চৈতালি কত বার ওর বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে ওর রুমে এনজয় করেছে !!
মঞ্জুর কথায় মনে হলো যুক্তি আছে ! আর তা ছাড়া ওদের বাড়িতে তো আমার পরিচয় হবে যে আমি মঞ্জুর দাদা ! তাই কোনো রিস্ক নেই ! " ঠিক আছে তাহলে তাই চলো !! " বলে আমি মঞ্জুর হাত ধরে ওকে টেনে তুলে দাঁড় করলাম ! আমাদের দিকে অনেকেই চেয়ে আছে ! কিন্তু কারুর চাহুনি কে পাত্তা না দিয়ে আমি আর মঞ্জু সোজা বেরিয়ে এলাম মন্দির থেকে ! মটর সাইকেল স্টার্ট করতেই মঞ্জু আবার আমাকে আস্ঠেপিষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আমার পিছনে বসে পড়ল !! পিছন থেকে ও যে ভাবে দায়রেক্সন দিছিল্ল আমি ঠিক সেই ভাবে আমার মটর সাইকেল কে চালাতে থাকলাম ! বেশ কিছুক্ষণ চলার পর একটা তিনতলা বিরাট বাড়ির সামনে মঞ্জু আমাকে থামাতে বলল ! বিরাট বড় বাড়ি ! বাড়িটার গায়ে যে ফলক আছে তাতে লেখা আছে "বিরাজ কুঠির ! স্থাপিত ১৮৯৫ খ্রি:" উরিবাবা !! এত পুরনো বাড়ি ! নিশ্চই কোনো জমিদারের বাড়ি ছিল !! মঞ্জু বলল ঠিক ধরেছ ! চৈতালির দাদুর বাবা এখান কার জমিদার ছিলেন ! আর এই বাড়িটা তিনি তার জীবনের শেষ সময়ে করেছিলেন ! তার স্ত্রীর নামে নাম দিয়ে ছিলেন "বিরাজ কুঠির "!
বিশাল বিশাল দরজা ! মেইন গেটে গিয়ে মঞ্জু কলিং বেলের সুইচ টিপলো ! ভিতর থেকে খুব মিষ্টি একটা মিউজিক বেজে উঠলো !! মিনিট দুইয়ের মধ্যেই বিশাল দরজাটা খুলে গেল ! একটি আয়া শ্রেনীর মহিলা মোটামুটি ৪৫ বছর বয়স হবে ! দরজা খুলে প্রশ্ন সূচক মুখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন ! পিছন থেকে মঞ্জু বলে উঠলো " কেমন আছ সরলা পিসি??"
- কে ? ও মঞ্জু !!! আয় আয় কেমন আছিস !! অনেক দিন পরে এলি !! এটি কে??
- ও আমার মামাতো দাদা ! সুনন্দ ! বলেই মঞ্জু নিচু হয়ে ভদ্র মহিলাকে প্রনাম করলো ! দেখা দেখি আমিও প্রনাম করতে গেলাম ! কিন্তু ভদ্রমহিলা তারাতারি থাক থাক বাবা আর প্রনাম করতে হবে না !! বলেই পিছন দিকে সরে গেলেন ! আমার আর কিছুই করার ছিলনা ! "এস তোমরা ভিতরে এস !" বলেই মহিলাটি ভিতরের দিকে এগুতে থাকলেন ! অনার পিছনে যেতে যেতে আমি অবাক চোখে সুধু দেখছিলাম বাড়ির ভিতরের কারুকার্য ! সত্যি যে ভদ্রলোক এই বাড়িটি বানিয়েছিলেন তার রুচি আর শিল্পবোধ ছিল ! বাড়ির ভিতর টা যেন কোনো শিল্পীর নিখুঁত হাতে আঁকা ! একয বিরাট বড় হলঘরে গিয়ে উঠলাম !! বিরাট বিরাট সোফা দিয়ে সেই হল ঘরটা সাজানো ! একটি বিরাট বড় রঙিন টিভি চলছে ! তখন কার দিনে রঙিন টিভি মানে আমাদের মত মিডিল ক্লাস ফামিলির কাছে আকাশ কুসুম কল্পনা ! তার উপর এত বড় টিভি !! এইখানেই বোঝা যায় যে এদের পরিবার কত খানি ধনী !!সেই রঙিন টিভিতে হিন্দির একটা বিখ্যাত সিরিয়াল "হামলোগ" চলছে !! আর টিভির দিকে মুখ করে বসে আছেন আরও একজন বয়স্ক ভদ্রমহিলা ! আমাদের পায়ের শব্দে পিছন ঘুরে দেখতেই দেখতে পেলেন মঞ্জু কে !! " ও মা ! মঞ্জু !! কতদিন পরে এলি !! আই মা আমার বুকে আয় !" বলেই সোফাতে বসেই নিজের দু হাত বাড়িয়ে দিলেন !



[/HIDE]
 
[HIDE]
মঞ্জু সোজা গিয়ে আগে ভদ্রমহিলাকে জড়িয়ে ধরল ! বেশ কিছুক্ষণ পরে ওনাকে ছেড়ে দিয়ে ওনার পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করলো ! ঠিক তখনি আমি আবিস্কার করলাম যে ভদ্র মহিলাম পা দুটো অতিশয় ক্ষীন এবং সেগুলো সোফার উপরি জড়ো করা অবস্থাতেই আছে !
- থাক মা থাক ! এতদিন পরে আমাদের কথা মনে পড়ল?? আসিস না কেন?? বলতে বলতেই আমার উপর ওনার চোখ পড়ল ! আমাকে দেখেই উনি বলে উঠলেন " এটি কে??"
- ও আমার দাদা ! সুনন্দ ! আজ এসেছে ! তাই তো ওকে বললাম চল অনেক দিন মাসিমার সাথে দেখা হয় নি ! আমাকে নিয়ে চল !! বলেই মঞ্জু আমাকে চোখের ইশারায় প্রনাম করতে বলল !! আমিও বাধ্য ছেলের মত গিয়ে ভদ্রমহিলাম রুগ্ন পায়ে প্রনাম করলাম !
- বেঁচে থাক বাবা ! সুখে থাক !!! বোসো বোসো ! আরে ও সরলা !! ওদের কে একটু মিষ্টি মুখ করা ! আজ প্রথম এই ছেলেটি আমাদের বাড়িতে এলো !!
ভদ্রমহিলার এ হেন মাতৃসুলভ আচরণে আমি অবাক হয়ে গেলাম ! এত ধনী ঘরের বউ হয়েও কত সুন্দর মিষ্টি ব্যবহার ! সত্যি লেখকেরা তাদের গল্পে বা উপস্যাসে যে বনেদী ধনীদের কথা বলেন তাহলে সেগুলো মিথ্যা নয় ! এনারা সত্যিই ধার্মিক, বত্স্ল্যপরায়ন ! এবং খুবই বিনম্র !! ভদ্রমহিলা পঙ্গু হলেও ওনার মধ্যে কোনো বিকার নেই ! কি সুন্দর ভাবে নিজের জীবন টাকে মানিয়ে নিয়েছেন ! আমি সতিই মুঘ্ধ হয়ে গেলাম ! আবেগের তাড়নায় আমি ভদ্রমহিলাকে আবার প্রনাম করে বসলাম !!
- একি বাবা ! একি করছ ! এই তো প্রনাম করলে ! আবার কেন??
কি বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না ! হটাতই মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল "আপনাকে দেখতে ঠিক যেন মা দুর্গার মত ! তাই আপনাকে দূর্গা মা ভেবে আরও একবার প্রনাম করলাম !!"
- বা তুমি তো বেশ সুন্দর কথা বলতে জানো !! কিসে পড়?? মানে কোন ক্লাসে পড়??
- আমি এইবার হায়ার সেকেন্ডারী দেব !
- বা বা ! বেশ ভালো ! তা তোমার সাবজেক কি?? সাইন্স না কমার্স ?
- আমি সাইন্স নিয়ে পরছি ! ইচ্ছা আছে আগে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ার হব !!
- নিশ্চই হবে বাবা ! কিছু হতে গেলে তার জন্য একটা লক্ষ্য ঠিক করতে হয় তবেই সেই লক্ষে পৌঁছনো যায় !! তবে তোমাকে একটা কথা বলব যদি কিছু মনে না করো !
- না না বলুন না ! আপনার কথা শুনতে আমার খুব ভালো লাগছে !
- যদি তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড় তাহলে অতি অবস্যই যেন ইনসট্রুমেসন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পোরো ! কারণ আমাদের দেশে ইনসট্রুমেসন ইঞ্জিনিয়ার খুব কম পাওয়া যায় ! তাই ওই পোড়ার মুখো জার্মান গুলো এখনো আমাদের টেকনোলোজি কে অবজ্ঞা করে !!
ভদ্র মহিলার মুখে টেকনোলোজির কথা শুনে আমি রীতিমত স্তম্ভিত !! আমার অবস্থা বুঝতে পেরে মঞ্জু বলে উঠলো " তুই কি ভেবেছিস দাদা? মাসিমা ভারতের প্রথম ইনসট্রুমেসন ইঞ্জিনিয়ার অফ ১৯৫৩ ফ্রম ইতালি !! বলেই থম মেরে গেল !!
বেশ বুঝতে পারলাম নিশ্চই এর পরে কোনো করুন ইতিহাস আছে যেটা মোটেই সুখকর নয় !!
কথা ঘোরাতে মঞ্জু জিজ্ঞাস্সা করলো ! মাসিমা ! চৈতালি কোথায়??
- আর বলিস না ! কাল অঞ্জলি এসেছে ! ও আর মঞ্জু শোলে দেখতে গেছে মঞ্জুশ্রী তে ! এই বার এসে পরবে !!
মঞ্জুশ্রী ওখানকার একটা বিখ্যাত সিনেমা হল ! ওখানকার বললে ভুল হবে ! সম্পূর্ণ জেলায় একটি মাত্র হল যেটা সম্পূর্ণ এসি ! আর আমি যে সময়ের কথা বলছি সেই সময় এসি হলে বসে সিনেমা দেখা ছিল সবার সপ্ন ! এখন না হয় অনেক মাল্টিপ্লেক্স হয়ে গিয়েছে ! আর এখন বোধ হয় এমন কোনো সিনেমা হল নেই যাতে এসি নেই ! কিন্তু তখনকার দিনে কলকাতার মেট্রো হল ছাড়া আর কোনো সিনেমা হলে এসি ছিল না ! একমাত্র হুগলি জেলার ওই একটি হলি ছিল এসি হল ! আর সেটা নিয়ে সবার অনেক গর্ব ছিল !! যাই হোক আমি এখানে মঞ্জুশ্রী হলের বিবরণ লিখতে বসিনি !
-অঞ্জলি দি এসেছে?? মঞ্জুর প্রশ্নে আমার চটক ভাঙ্গলো !!
- হ্যা ! বেশ কয়েক দিন থাকবে ! তারপর আবার চলে যাবে ! তুই তো জানিস ও একমাত্র মেয়ে সরলার ! ও সরলাকে নিয়ে যেতে চায় কিন্তু সরলা কিছুতেই আমাকে ছেড়ে যাবে না !! তোরা খুব বেশি বোর হচ্ছিস নাতো?? বোর হলে খুকুমনির ঘরে চলে যা ! কমপিউটার খুলে গেম খেলতে পারিস আর না হলে টিভি দেখতে পারিস আর না হলে গল্পের বইও পড়তে পারিস !!
মঞ্জু বলল "সেই ভালো ! আমরা বরণ চৈতালির ঘরে যাই ! ও এলে সোজা ওখানেই পাঠিয়ে দেবেন ! আমাদের আবার তৃপ্তিদির বাড়িতে যেতে হবে !! ওখানে রাতে দিনারের নিমন্ত্রণ রয়েছে !!"
- কি ব্যাপার বলত ?? খুকুমনির বাবারও নেমন্তন্ন ওখানে আর খুকুমনির নেমন্তন্ন সাথে অন্জলিকেও নেমন্তন্ন করা হয়েছে ওখানে !!
- কি করে জানব?? আমার দাদাকেও তো ফোন করে ডেকে এনেছে সেই জন্যই !!

- তৃপ্তির কি আজ জন্মদিন?? যাই হোক ভালই হলো ! তোরাও ওখানে যাবি ! যা তোরা বরণ খুকুমনির ঘরে গিয়ে বোস আমি সরলাকে দিয়ে তোদের জলখাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি !
মঞ্জু আর কোনো কথা না বলে আমাকে ইশারায় ওকে অনুসরণ করতে বলল ! আমিও মঞ্জুর পিছু পিছু চৈতালির ঘরে গিয়ে পৌঁছলাম ! চৈতালির ঘরে ঢুকে আমার তো চক্ষু চরক গাছ !! এটা কোনো মেয়ের ঘর না ফাইভ স্তর হোটেলের রুম?? এত ঐসর্জ এত আরাম এত বিলাসবহুল ঘরের কল্পনাও আমরা করতে পারিনা !! মঞ্জু সোজা গিয়ে চৈতালির বিছানাতে শুয়ে পড়ল ! হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকলো !! আমি মঞ্জুর ডাকে সারা দিতে পারছিলাম না ! কারণ এইরকম পরিবেশে আমি কোনদিন পরিনি ! থাকতে না পেরে আমি মঞ্জু কে জিগাস্সা করলাম "এ তুমি কোথায় নিয়ে এলে?? চৈতালি রা এত বড়লোক?? আর ভদ্রমহিলা একজন ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্তেও কি করে পঙ্গু হলেন? এই অঞ্জলি দিদিটাই বা কে আর সরলা মাশিটাই বা কে?? "
মঞ্জু আমার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে উত্তর দিল " অনেক বড় ইতিহাস !! এই বাড়ির প্রতিটি ইঁট পাথরে অনেক কান্না, অনেক না বলা বেদনা লুকিয়ে আছে !! শুনলে তোমার মন খারাপ হয়ে যাবে !!"
- না তুমি বল ! আমার প্রচন্ড কৌতুহল হচ্ছে !!
- ঐযে দেখলে মাসীমা কে ! উনি একজন অতি বিদুষী মহিলা ছিলেন ! চৈতালির বাবাও ইতালি তে পড়াশোনা করেছেন ! সেখানেই মাসিমার সাথে আলাপ আর সেই থেকেই প্রেম ! বাড়ির অমতে সেখানেই বিয়ে করেন ! কারণ মাসিমার ছিলেন কায়স্থ ! তার উপর এই বংশে কোনো স্বাধীনচেতা মেয়েকে বউ করে নিয়ে আসার প্রথা ছিল না !! কিন্তু বাপের এক ছেলে হওয়াতে কারুর আর কিছুই করার ছিল না বিয়ে না মেনে ! কিন্তু বিয়ের একবছরের মাথায় যখন চৈতালি পেতে হটাত মাসিমা সিরি থেকে পরে যান ! অনেক কাঠ খর পুড়িয়ে ওনাকে বাঁচানো হয় ! চৈতালিও সুস্থ ভাবে জন্ম নেয় ! কিন্তু মাসিমার পা দুটো প্যারালিসিস হয়ে যায় ! সেই থেকেই মাসিমা ...........
- খুব দুক্ষের কথা ! কিন্তু ওই সরলা মাসি?
কথার মাঝখানেই দরজায় টোকার শব্দ !! " আসব??"
- ও মাসি ! তুমিও না !! কতবার তোমাকে বলেছি আমাদের সাথে ফরমালিটিস করবে না !
- তোমরা বললে কি হবে!! যেটা নিয়ম সেটাই করছি ! কারুর কাছে আসার আগে তার পারমিসন নিতে হয় ! বলেই সরলা মাসি ভিতরে ঢুকলেন ! পিছনে একজন চাকর জাতীয় মহিলা ট্রে তে করে প্রচুর স্ন্যাকস আর চা নিয়ে ঢুকলো একেবারে রাজকীয় স্টাইলে !! আমাদের জন্য চায়ের পটে করে চা নিয়ে আসা হয়েছে একদম হোটেলের কায়দায় ! কাপে লিকার চা ঢেলে সরলা পিসি জিজ্ঞাস্সা করলো কত তা দুধ আর কতটা চিনি দেবেন ! আমি বললাম একদম নরমাল ! তিনি চা ঢেলে চামচ দিয়ে গুলিয়ে আমাদের দিকে চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে স্ন্যাক্সের প্লেট টা মাঝখানে রাখলেন !




[/HIDE]
 
[HIDE]

তোমরা বসে বসে চা খাও আর ১৫ মিনিটের মধ্যেই ওরা এসে যাবে ! বলেই তিনি দরজা টা টেনে ভেজিয়ে দিয়ে কাজের মহিলাটিকে নিয়ে চলে গেলেন !! আমি মঞ্জুর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলাম "কি হলো বললে নাতো?"
- কি বলব?
-ওই যে সরলা মাসির কথা আর অঞ্জলি দিদির কথা??
- সরলা মাসি মাসিমা মানে চৈতালির মায়ের গ্রামের মেয়ে ! চত বেলা থেকেই ওদের বন্ধুত্ব ! কিন্তু পরে পসনার জন্য মাসিমা কে বিদেশে চলে যেতে হয় ! যখন নিজে বিয়ে করে ফিরে আসেন তখন সরলা মাসিরও বিয়ে হয়ে গেছে ! কিন্তু বিয়ের মাত্র আট বছরের মাথায় ওনার স্বামী হটাত খুন হয়ে যান ! তখন অঞ্জলি দিদি ৭ বছরের ! ওনাদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছিল ! সরলা মাসির ভায়েরাও ওনাদের আশ্রয় দেন নি ! কোনো রকমে লোকের বাড়ি কাজ করে সরলা মাসি কে জীবন কাটাতে হচ্ছিল ! সেই সময় মাসীমা নিজের গ্রামে ঘুরতে গেলে সব জানতে পেরে সরলা মাসি কে এখানে নিয়ে আসেন অঞ্জলি দিদিকে পরা লেখা শেখান ! পরে অঞ্জলি দিদিও মাসিমার অমতে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ! কিন্তু এক বছরের মাথাতেই ধরা পরে ওনার স্বামীর ক্যান্সার ! বেশি দিন বাঁচে নি ! তারপর থেকে অঞ্জলি দিদি বম্বে তে একটা কোম্পানি তে চাকরি করে !!
- ধুর আমি সেটা বলছি না ! সরলা মাসি কে দেখে কিন্তু কাজের লোক বলে মনে হয় না ! অন্য কিছু সম্পর্ক নিশ্চই আছে !!
- মঞ্জু একটা চোখ ছোট করে ঠোঁটের কোনে একটা বেঁকা হাসি নিয়ে বলল " বা বা ! দেখেই রহস্সের গন্ধ পাচ্ছ?"
- না মার যেন মনে হলো ওনার ব্যবহারে একটা কর্তিত্বের আভাস রয়েছে !!
- অনেক দিন এখানে আছে বলে হয়ত....... মঞ্জু বলে উঠলো !!
আমাদের কথা শেষ হয় নি ! ঠিক তখনি চৈতালি ধরম করে দরজা খুলে ঢুকে মঞ্জু কে জড়িয়ে ধরল আর ওর গালে চকাস চকাস করে কয়েকটা চুমু খেয়ে নিল !! আমাকে দেখেই একটু চমকে গিয়ে বলে উঠলো ! " আরে সুনন্দ দা? তুমিও এসেছ??
আমি চৈতালি কে চিনতে পারলাম ! চৈতালিও আমাদের সাথে দাজিলিং গেছিল ! আর চৈতালির গার্জেন হয়ে গেছিলেন আমাদের লাহিড়ি দা ! তার মানে লাহিড়ি দা হচ্ছে চৈতালির বাবা !! সত্যিই আমি একটা বুদ্ধু !!
- তুমি কিন্তু এই ক দিনে আরও হ্যান্ডসাম হয়ে গেছ ! তোমাকে দেখেই লাইন মারতে ইচ্ছা করছে ! কি রে মঞ্জু লাইন মারব নাকি তোর দাদার সাথে !! চৈতালি বলে উঠলো !
-চেষ্টা করে দেখতে পারিস ! তার আগে জেনে নে ও আবার অন্য কোথাও লাইন দিয়ে বসে নেই তো ! বলেই মঞ্জু আমাকে চোখ মারলো ! আমিও মঞ্জু কে চোখ মেরে বললাম "চেষ্টা করে দেখতে পারো !! ফ্রি তে যা পাওয়া যায় আমি তাই নিয়ে নি !!"
-

- আমি কিন্তু ফ্রি তে কাউকে কিছু দিই না ! কিছু দিলে কিছু নিয়ে নিই ! সেটা যেন ভুলে যেওনা !! চুটল হেসে চৈতালি বলে উঠলো !!
আমাদের মধ্যে এক প্রস্থ হাসির ফওয়ারা ছুটল ! হটাত তার মাঝেই মঞ্জু জিজ্ঞাস্সা করলো " কি রে তৃপ্তিদির বাড়ি যাবি না?"
- হ্যা যাব তো ! বাবা এখুনি এসে পড়বে তারপর আমরা যাব ! আমাদের সাথে আজ অঞ্জলি দিও যাবে !! অঞ্জলি দি কি করে তৃপ্তি দিকে চিনলো? আমি মনে মনে ভাবতে থাকলাম ! প্রর্ক্ষনেই মনে পরে গেল যে অঞ্জলি দিও ওই একই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছে ! আর পড়াশোনাতে অঞ্জলি দি নাকি স্কুলের টপার ছিল ! এটা পরে আমি মঞ্জুর মুখ থেকে শুনেছিলাম ! বেশ কিছুক্ষণ গল্পে গল্পে আমাদের সময় কেটে গেল ! এসেছিলাম কিছু করতে আর হয়ে গেল অন্য কিছু ! তবুও বেশ ভালই লাগছিল ! আবার চৈতালির ঘরের দরজায় টোকা ! সেই কাজের মহিলাটি গলা বাড়িয়ে বলে উঠলো " দিদিমনি ! বাবু নিচে ডাকছেন ! " বলেই বেরিয়ে গেল !!
- চল নিচে চল ! বাবা এসে গেছেন ! এবার আমরা বেরুব !!
সিরি দিয়ে নিচে নামতেই লাহিড়ি দা আমাকে দেখে ফেললেন ! অতি উত্সাহে চেঁচিয়ে উঠলেন " আরে সুনন্দ বাবু যে !! তুমি যে বলে ছিলে আসবে না ! এলে তাহলে ! আজকের পার্টি খুব জমবে !" বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরলেন !! চৈতালির বাবার এমন ব্যবহারে ড্রইংরুমে উপস্থিত সবাই চমকে গেল ! যে লোকটার ভয়ে পুরো বাড়িটা ঠথস্ত থাকে সেই লোকটা প্রাণ খুলে উচ্চস্বরে হেসে উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরাতে সবাই খুব অবাক ! চ্জ্পিতালির মায়ের দিকে তাকিয়ে লাহিড়ি দা বলে উঠলেন " তুমি জানো এই সুনন্দ কি সুন্দর আবৃতি করতে পারে??" ওর গলাতে একটা আবৃতি শুনেই আমি ঘায়েল হয়ে আছি ! যদি সুযোগ আসে তাহলে তোমাদের নিশ্চই শোনাব !! " বলেই আমার পিঠে একটা ধপাস করে থাপ্পর জমিয়ে দিলেন !

- চল এবার যাওয়া যাক ! সবাই গিয়ে আমার গাড়িতে বস ! আমি আসছি !!
- আমি তো মটর সাইকেল নিয়ে এসেছি !
- বা তাহলে বেশ ভালই হলো !!এই তোরা সবাই আমার গাড়িতে আয় ! আমি সুনন্দর সাথে মটর সাইকেলে যাচ্ছি !! দরজার মুখেই আধো আলো আঁধারে একজন প্রায় 70 বছর বয়স্ক লোক দাঁড়িয়ে ! লাহিড়ি দাকে দেখেই এক গাল হেসে বললেন ! " ও তুমি কোথাও যাচ্ছ নাকি?? আমি এসেছিলাম তোমার কাছে একটু দরকারে !!"
- কি দরকার কাকু?? তোমার তো এখন ঘর থেকে বেরুনোর কথা নয়?? তুমি এখানে কি করছ?? যাও ঘরে যাও !! পরে তোমার কথা শুনব !!
- না আগে আমার কথা শুনে যাও ! আমার খুব দরকার ! দেরী করলে বিপদে পরে যাব !!
- ওহ ! এত মহা ঝামেলা !! আচ্ছা বলে ফেল কি দরকারী কথা !!
ভদ্রলোক আমার দিকে একটু সন্দিগ্ধ দৃষ্টি নিয়ে বললেন " এর সামনেই বলব? না মানে খুব গোপনীয় কথা তো তাই......
- চিন্তার কিছুই নেই ! তুমি নিশ্চিন্তে তারাতারি বলে ফেল ! আমাকে বেরুতে হবে !!
হটাত ভদ্রলোক লাহিরিদার হাত দুটো ধরে খুব করুন স্বরে মিনতি করে উঠলো " তোমরা কি কেউ কিডনি কিনবে?? আমার খুব টাকার দরকার !শ্যামলকে বাঁচাতে অনেক টাকা লাগবে ! ওরা বলেছে টাকা দিলেই শ্যামল কে ছেড়ে দেবে !! কেনোনা আমার কিডনি ! আমার কাছে আর কিছুই নেই যে আমি বিক্রি করে টাকাটা ওদের দেব ! কেনো না দয়া করে বলেই ভদ্রলোক কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন !
লাহিড়ি দা ভদ্রলোক কে স্বান্তনা দিতে দিতে বললেন " আচ্ছা আচ্ছা চল আমি তোমার কিডনি কিনব ! কাল সকালে ! এখন ঘরে চল ! কাল সকালে তোমার কিডনি কিনে তোমাকে টাকা দিয়ে দেব ! " একরকম জোর করেই ভদ্রলোক কে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলেন !! বেশ কিছুক্ষণ পরে বেরিয়ে এলেন !!

[/HIDE]
 
[HIDE]

- কিছু মনে করিস না সুনন্দ ! উনি আমার ছোট কাকা ! ছেলের শোকে পাগল হয়ে গেছেন ! মাঝে মাঝে ভালো থাকেন আবার মাঝে মাঝে পাগলামো করেন !! বয়স হয়েছে ! বেশি ডোজের ওসুধ দিতে পারি না ! যে কদিন বেঁচে আছেন আমাদের চেষ্টা সেই কত দিন যেন ভালো ভাবেই থাকেন কিন্তু.........
- উনি হটাত কিডনি বিক্রি করার কথা বলছেন কেনো??
- সে এক লম্বা ইতিহাস ! উনি বিহারের ভাগলপুরে ব্যবসা করতেন ! সেখানেই থাকতেন পুরো পরিবার নিয়ে ! একদিন ওনার বাড়িতে ডাকাতি হয়ে যায় ! ডাকাতরা ওনার যথা সর্বস্স লুটে নিয়ে চলে যায় ! যেতে যেতে ওনার স্ত্রী আর ১২ বছরের ছেলেকেও তুলে নিয়ে যায় ! ওদের মুক্তি পন হিসাবে দাবি করে ২০ লক্ষ্য টাকা ! কিন্তু কাকার কাছে কিছুই আর ছিল না ! অনেক বন্ধু বান্ধবের কাছে তিনি টাকার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছেন ! কিন্তু কোথাও পাননি ! তৃতীয় দিনে আমার কাকীর ক্ষতবিক্ষত লাস পাওয়া গেছিল ! নেকড়ের মত তার শরীর কে খোবলানো হয়েছিল ! আর তার সাথে একটা চিঠি ! ২০ লক্ষ্য টাকা আগামী দু দিনের মধ্যে না দিলে ওনার একমাত্র ছেলে শ্যামল কেও মেরে ফেলে দেওয়া হবে ! যখন আমাদের কাছে খবর পৌঁছল তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে ! আমার বাবা আর আমি টাকা নিয়ে পৌঁছলাম ! কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ ! ওরা শ্যামল কেও মেরে রাস্তার ধরে ফেলে দিয়ে গেছিল ! সেই থেকেই কাকা পাগল হয়ে যান ! অনেক চিকিত্সা করিয়েছি ! উনি এখনো ভাবেন টাকাটা দিয়ে দিলে ওনার ছেলেকে ফিরে পাবেন !! একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো লাহিড়ি দার মুখ থেকে ! ওনার কথা শুনে আমার হাত পা কি রকম যেন ঠান্ডা হয়ে গেছিল ! নিজের অজান্তেই চোখের কোনায় জল চলে এসেছিল ! ঠিক তখনি মঞ্জু , চৈতালি আর অঞ্জলি দিদি হই হই করতে করতে বেরিয়ে এলো ! আমাদের দেখেই চৈতালি অবাক হয়ে বলে উঠলো " তোমরা এখনো যাওনি??"
লাহিড়ি দা শুধু একটাই কথা বললেন " কাকা"
- কি হয়েছে ছোট দাদুর??
- আজ আবার পাগলামো তা বেড়েছে ! রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিল ! অনেক কষ্টে ঘরে ঢুকিয়ে ইনজেকসন দিয়ে ঘুম পরিয়ে এলাম ! কাল থেকে একজন আয়া দরকার চব্বিশ ঘন্টার জন্য !
-আজ সকালেই দাদু কে পিয়ানো বাজাতে দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম আজ কিছু একটা হবে !! চৈতালি বলে উঠলো !
- থাক তোর মাকে যেন কিছু বলতে যাস না ! তাহলে আবার কান্না কাটি জুড়ে দেবে !! যা তরা গাড়িতে করে চলে যা ! আমি আর সুনন্দ আসছি


ভরাক্রান্ত মন নিয়ে মটর সাইকেল স্টার্ট করলাম ! লাহিড়ি দা আমার পিছনে বসেই বললেন চল আগে একটু মার্কেট হয়ে যাই ! আমিও কোনো কথা না বলে সোজা মার্কেটের দিকে গাড়ি চালাতে শুরু করলাম ! মার্কেটে গিয়ে সোজা "করিমের কাবাব"এর সামনে আমাকে দাঁড়াতে বললেন ! যতক্ষণে লাহিড়ি দা কাবাব প্যাক করাতে সময় নিলেন সেই সময়ের মধ্যে আমি একটা সিগারেটের প্যাকেট কিনে নিয়ে তার থেকে একটা সিগারেট ধরিয়ে ফুঁকতে শুরু করে দিলাম ! আর ভাবতে থাকলাম লাহিরিদার কাকার কথা ! সত্যি একটা পরিবার কেমন করে শেষ হয়ে গেল ! তবুও লাহিরিদা জীবন কে কি ভাবে হাসি মুখে এগিয়ে নিয়ে চলেছে !! কোথাও যেন পরে ছিলাম "চুল, নোখ,গোঁফ, দাঁড়ি, পার্টি আর দুঃক্ষ যখনিই বড় হয়ে যায় তখন ছেঁটে ফেলা উচিত ! সত্যিই লাহিড়ি দা বোধহয় সেই লেখা টা পরেছিলেন তাই দুক্ষটাকে নিজের জীবন থেকে ছেঁটে ফেলেছেন ! সিগারেট শেষ হওয়ার সাথে সাথেই লাহিরিদা কাবাবের প্যাকেট নিয়ে ফিরে এলেন ! প্যাকেটটার চেহেরা দেখে মনে হলো যেন গোটা দোকানের সব কাবাবি লাহিরিদা কিনে নিয়েছেন ! প্যাকেটটাকে ঠিক মত সামলে নিয়ে লাহিড়ি দা আমার পিছনে আবার বসে পড়লেন ! আমার গাড়ি ছুঁতে চলল কমলদার বাড়ির দিকে ! মিনিট পনেরো পরে আমরা কমলদার বাড়িতে উপস্থিত হলাম ! সবাই আমাকে দেখে হই হই করে উঠলো ! কিছু না হলেও কম করে পনেরো বিশ জন লোকের সমাগম ! প্রায় সবাইকেই আমার চেনা ! দু একটি নতুন মুখ ! তার মধ্যে অঞ্জলি দিদিও আছে আর আছেন কমলদার অফিসের দুএক জন কলিগ ! সবার সাথে পরিচয়ের পর্ব শেষ হলো ! হটাত তৃপ্তি দি বলে উঠলেন " এই মঞ্জু ! এই সুনন্দ একটু আমার সাথে আয়তো ! কাজ আছে ! " কেউ কিছুই মনে করলেন না ! সবাই ভাবলো পানের আসর বসবার ব্যবস্থা করতেই হয়ত আমাদের ডাকা হয়েছে ! আমাদের নিয়ে সোজা রান্নাঘরে নিয়ে গেলেন ! হটাত আমার মুখ টাকে দু হাতে চেপে ধরে আমার কপালে স্নেহ চুম্বন এঁকে দিলেন তৃপ্তি দি ! আচমকা ওনার এই ব্যবহারে আমি আর মঞ্জু হতচকিত হয়ে গেলাম !! মঞ্জুর দিকে তাকিয়ে তৃপ্তি দি প্রশ্ন করলেন " কি ভাবছিস ? হটাত কেন সুনন্দর কপালে চুমু খেলাম? " মঞ্জু নিরবে ঘার নেড়ে বোঝাতে চাইল "হ্যা "!

এবার তৃপ্তি দি মঞ্জু কে বুকে জড়িয়ে ধরে অর গালে চুমু খেয়ে খুব আস্তে আস্তে বললেন " আমি মা হতে চলেছি !! তাই তোদের ধন্যবাদ দিলাম !! তোরা ছিলিস বলেই আজ আমার জীবনের সমস্ত সপ্ন পূরণ হলো !!!

- কিন্তু কমলদা .............. আমি পুরো বাক্যটা পূরণ করতে পারলাম না ! তার আগেই তৃপ্তি দি বলে উঠলেন " সব জানেন ! আর ও যে কতটা খুশি সেটা তোদের বলে বোঝাতে পারব না ! যেদিন মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে এলাম সেদিন থেকে তোর কমলদা আমাকে একটুও নড়তে দিচ্ছে না ! এমন সমস্ত কাজ কারবার করছে যেন মনে হচ্ছে বাচ্ছাটা অর পেটেই এসেছে ! " বলেই তৃপ্তি দি হেসে উঠলেন !! তৃপ্তি দির হাসি মুখের দিকে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমি দেখতে পেলাম তৃপ্তি দির চোখের কোনে চিক চিক করছে জল !! অবশ্যই সেটা আনন্দের ! আমি তৃপ্তি দিকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম !! আমার চোখেও জল এসে গেছিল ! তৃপ্তি দি আবার আমার মুখ টাকে দুই হাতে ধরে আমার কপালে চুমু খেয়ে বললেন "ধন্যবাদ দিয়ে তোকে ছোট করব না ! তোর দিদিকে তুই যে উপহার দিলি তার জন্য তোর দিদি চিরদিন তোদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে !!" দুই হাথে আমাকে আর মঞ্জু কে বুকে জড়িয়ে ধরলেন !!

ভিতর থেকে কমলদা চিত্কার করে উঠলেন ! "কি গো ! কোথায় গেলে !! ব্যবস্থা কতদূর এগুলো !!" কমলদার গলাতে খুশির উচ্ছাস !!

আমি ট্রে তে করে গ্লাস সাজিয়ে সোজা আড্ডার মাঝে পৌঁছলাম !! "এই তো আমাদের হিরো এসে গেছে ! বলেই ঘোষ দা আমার পিঠে একটা বিরাশি সিক্কার থাপ্পর বসিয়ে দিলেন ! আওয়াজ হলো "ধুম" কিন্তু আমার একটুও লাগলো না ! হাতের তেলো কে ফুলিয়ে থাপ্পর মারাটাই বড়দের আদর করার একটা রীতি ! ঘোষ দা সেই রীতিতেই আমাকে থাপ্পর মারলেন ! কমলদা উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলেন " আপনারা হয়ত কেউই জানেন না এই ছেলেটিই আমাদের জীবনে সুখ শান্তি এনে দিয়েছে !!" আমি সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলাম ! কমলদা কি বলতে চাইছে !! সবার সামনে কি আমাকে আর তৃপ্তি দিকে অপমান করবে?? ভয়ে লজ্জায় আমার অবস্থা একেবারে ল্যাজেগোবরে !

[/HIDE]
 
[HIDE]

কমলদার অফিসের একজন কলিগ যার নাম তুষার মন্ডল বললেন " কি রকম কিরকম ! একটু শুনি!!"

- আরে তোমরা তো যেন অফিসের কাজে আমাকে অনেক ট্যুর করতে হয় ! কিন্তু সেগুলোতে না থেকে কোনো আনন্দ না থাকে কোনো জীবন !! তোমাদের বৌদিকে নিয়েও অনেক ট্যুর করেছি কিন্তু সেখানে কোনো জীবন খুঁজে পাইনি ! আর এই ছেলেটি আমাদের দার্জিলিং ট্যুরে জীবনের মানে বুঝিয়ে দিল ! আমরা যা আনন্দ করেছি সেটা একদম ভোলার নয় !! কি বল লাহিড়ি বাবু?? ঘোষ বাবু??

ঘাম দিয়ে আমার শরীর থেকে জ্বর ছাড়ল !!

লাহিড়ি দা আর ঘোষ দা এক বাক্যে বলে উঠলো "একদম সত্যি !! এই ছেলেটির মধ্যে যে প্রাণচাঞ্চল্য আছে সেটা আজকালকার কোনো ছেলের মধ্যেই দেখা যায় না !! যেমন প্রানচঞ্চল আর তেমনই উত্সাহী !! লাহিড়ি দা বলে উঠলেন !!
হটাত কমলদা বলে উঠলেন "আপনারা হয়ত আপনারা জানেন না আজকের পার্টি আমি কেন দিয়েছি !!"
সবাই একসাথে বলে উঠলেন " কেন কেন ??"
- না এখন হয় ! সেটা সবার শেষে বলব !! আসুন আগে আমরা আজকের এই সুন্দর সন্ধ্যা টাকে উপভোগ করি !! মেয়েরা যারা মহিলা মহলে যেতে চান তারা চলে যান অন্দর মহলে ! আর ছেলেদের মধ্যে যদি কেউ থাকেন মহিলা মহলে থাকতে চান তারাও চলে যান অন্দরমহলে !!
ঘোষ দা উঠে দাঁড়ালেন ! লাহিড়ি দা বলে উঠলেন " একি তুহ্লে যে বড় ??"
- কি আর করব দেখি যদি আজ নারী মহলে আমার জন্য যদি কিছু জোটে !! না হলে সারা জীবন ব্যাচেলার হয়ে থাকতে হবে !!
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো ! এর মাঝেই সমস্ত মেয়েরা চলে গেছে ভিতরের ঘরে আর আমরা বসে আছি বাইরের ঘরে ! আমাদের মধে আমিই একমাত্র খুব ছোট ! নাকি রা সবাই আমার থেকে অনেক বড় ! কেউ কেউ আবার আমার বাবার থেকেও বয়েসে বড় ! কিন্তু সবাই প্রাণউচ্ছল ! ছোট বড়র ভেদাভেদ কারুর মধ্যেই নেই !! কমলদা একটা হুইস্কির বোতল নিয়ে এসে টেবিলের উপর রাখলেন ! বলে উঠলেন "আজ এই বোতলটার উদঘাটন সমারোহর জন্য আমি আমাদের বিশেষ অথিতি "শ্রীল শ্রীযুক্ত বাবু সুনন্দ কে অনুরোধ করছি ! উনি যেন এই বোতলটা খুলে আজকের এই অনুষ্ঠানের শুভো সূচনা করেন !! " সবাই হই হই করে সম্মতি জানালো !! কি আর করা যায় !! আমি বোতলের সিল খুলে এক পেগ মতো মদ মেঝেতে ফেলে দিলাম !!
ঘোষ দা রে রে করে তেরে এলেন !! " কি করছিস?? এত দামী মদ তুই মাটিতে ফেলে দিলি !!?"
- ঘোষ তুমি মাল খেতেই শিখেছ ! কিন্তু মাল খাওয়ার নিয়ম কানুন শেখনি !! লাহিড়ি দা বললেন !
- মানে?? মাল কেউ এইরকম ভাবে মাটিতে ফেলে?? ঘোষ দা প্রশ্ন করলেন !
- তুমি ব্রাম্ভন নও ! তাই তুমি জানো না !! মাটি মানে ধরিত্রী ! আমাদের মা !! মা কে উত্সর্গ না করে কোনো জিনিস খাওয়া উচিত নয় !!
সেটা যদি বিষও আমাদের ধরিত্রী মা সেই বিষ নিজে নিয়ে আমাদের মুখে অমৃত তুলে দেন !! বেশ ভাবুক আর গম্ভীর স্বরে লাহিড়ি দা বলে উঠলেন !!
সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টি তে তাকিয়ে রইলেন !! বয়েসে আমি এত ছোট কিন্তু এই সমস্ত রিচুয়াল্স এখনো মানি দেখে সবার চোখেমুখে একটা শ্রধ্যার ভাব ফুটে উঠলো !! কিন্তু আমি আমার রিচুয়াল্স মানি ! ব্রাম্ভন বলে নয় ! আমাদের সংস্কৃতির একটা একটা অঙ্গ বলে !! আমাদের সংস্কৃতি সম্পূর্ণ পৃথিবী কে শিখিয়েছে সংস্কার !! আর আমাদের সংস্কার সমস্ত দুনিয়া মেনে নিয়েছে ! আমি সেই সংস্কৃতির একটা অবিচ্ছিন্ন অঙ্গ বলে নিজেকে খুব গর্বিত অনুভব করি !! সে যাই হোক ! আমি এখানে রিচুয়াল্স সম্বন্ধ্যে লিখতে আসিনি ! তাই আসল কোথায় চলে যাই ! সবার গ্লাসে এক পেগ করে মাল ঢালতেই পুরো বোতলটা খালি হয়ে গেল !! আমি বোতলটা নিচে নামিয়ে রেখে জলের বোতলে হাত দিতেই কমলদা বলে উঠলেন !" আরে আরে কি করছিস?? যে বিষ দেয় সে অমৃত দেয় না !! জল ঢাললেই এই বিষ অমৃত হয়ে যাবে !!"

কমলদার হেঁয়ালি পূর্ণ কথাতে আমি রীতিমত আশঙ্কিত !! কি বোঝাতে চাইছেন কমলদা?? উনি কি মেনে নিতে পারছেন না তৃপ্তি দির মা হওয়াটা? আমি সম্পূর্ণ বিভ্রান্ত !!! আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে কমলদা বলে উঠলেন !" যে গরল দেয় সে যদি গরলের পরে জল দেয় তাহলে সেই গরল আর গরল থাকে না সেটা অমৃত হয়ে যায় ! তুই যখন গরল দিয়েছিস তখন দেখা যাক না কার কত পুন্যের জোর যে জল ঢেলে গরল কে অমৃত করে !!"
এই ভাবে হেঁয়ালিতে লাহিড়ি দা থেকে শুরু করে ঘোষ দাও বিভ্রান্ত ! আমি তো সম্পূর্ণ বিভ্রান্ত হয়ে পরেছি !! কমলদা আজ কি করতে চাইছেন !!
সবাইকে অবাক করে দিয়ে কমলদা মন্ডল ডাকে বললেন " আজ আমাদের গরলকে অমৃত করে দেওয়ার জন্য তোমাকে অনুরোধ করছি !! এস তুষার ! আজ আমাদের গরলকে তুমিই অমৃত করে দাও !!!"
তুষার মন্ডল ! মানে যে কমলদার অফিসের কলিগ ! সে উঠে দাঁড়ালো ! বলে ফেলল !" কমলদা ! আমি আজও তোমাকে চিনতে পারিনি !! আজ আমাদের প্রধান মন্ত্রী ভি পি সিং মন্ডল কমিসন নিয়ে রাজনীতি করছেন ! ওদিকে কাশীরাম নিজেকে দলিত বলে রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে ! আর বি জে পি নিজেদের * বলে দাবি করে রাজনীতি করছে ! আর তুমি আমাকে মানে একজন দলিত কে বলছ অমৃত দিতে??"
- হ্যা বলছি ! কারণ আমাদের ধর্ম বা সংস্কৃতি কোনো জাত পাতে বিচার রাখে না ! তাই ছোঁয়া ছুইর বাইরে আমরা নিজেদের মধ্যে বাঁচতে চাই !! এস আমরা সবাই আনন্দ করি !!
তুষার মন্ডল সবার গ্লাসে জল ঢেলে গ্লাস উঁচু করে বলে উঠলো " এস আমরা আনন্দ করি মানুষ হিসাবে !!" সবাই একসাথে বলে উঠলো চিয়ার্স !! সবার চোখের কোনে জল থাকলেও আমরা সবাই এক হয়ে সেই আনন্দ অশ্রু কে আনন্দতে পরিনত করার প্রতিশ্রুতি করলাম !!
আর আমি কমলদার প্রতি আরও শ্রধ্যায় নিজেকে ঝুঁকিয়ে দিলাম !! এর মাঝেই তৃপ্তি দি আর মঞ্জু বারে বারে এসে আমাদের কাবাব আর চানাচুর দিয়ে গেছে ! যখন আমাদের পাঁচ বোতল শেষ হয়ে গেছে তখন তৃপ্তি দি এসে ঘোসনা করলেন ! "ব্যাস !! আজ আর এর থেকে বেশি কিছু নয় ! আপনাদের মালের আসর এখানেই শেষ !! জে খুশির খবর দেবার জন্য আজকের এই আয়োজন সেটি এখন ঘোষণা করা দরকার !! তাই আমি আমার পতিদেব কে অনুরোধ করব তিনি যেন আজকের এই পার্টির মুখ্য কারণ ঘোষণা করেন !!"
কমলদা উঠে দাঁড়ালেন !! দেখে মনে হলো অনার বুকের ছাতি ৪২ ইঞ্চি হয়ে গেছে !! বলে উঠলেন " আজ আমাদের এই পার্টির মুখ্য কারণ হলো ....... আমি বাবা হতে চলেছি !! আর সেটা হয়েছে এক মাত্র সুনন্দর জন্য !!
আমার মাথায় আবার বাজ !! কি বলছেন কমলদা??? কিংকর্তব্যবিমুর হয়ে বসে থাকলাম !! সবাই হটাত আমার দিকে সন্দেহের চোখে তাকাতে থাকলো ! আমি মাথা নিচু করে বসে রইলাম ! কমলদা খানিক থমকে সবাইকার প্রতিক্রিয়া দেখতে থাকলো ! আমার তখন মনে হচ্ছিল ! "হে ভগবান ! এ তুমি আমায় কোন পাপের শাস্তি দিলে !!এখন এই মুখ আমি দেখাবো কোথায় !!" আমার কাঁধে হালকা একটা হাতের চাপ অনুভব করলাম ! ঘার ঘুরিয়ে দেখি মঞ্জু আমার কাঁধে হাত রেখে চাপছে ! ওর চোখ মুখও থমথমে ! ও হয়ত দুজনকেই দোষী ভাবছে ! সবাই হয়ত ভাবতে শুরু করে দিয়েছে যে তৃপ্তি দির সাথে আমার অবৈধ সম্পর্ক আছে আর সেই অবৈধ সম্পর্কের জন্যই তৃপ্তি দি মা হতে চলেছে !সবার দৃষ্টিতে একটা ঘৃণার ভাব ফুটে উঠছিল ! আর অন্জলিদির ঠোঁটের কনে একটা ব্যাঁকা হাসি !! " হে ধরিত্রী তুমি দু ভাগ হও ! আমি সীতার মতো পাতাল প্রবেশ করি !" মনে মনে ধরিত্রী মাকে ডাকতে থাকলাম !তৃপ্তিদী আঁচল দিয়ে নিজের মুখ চাপার চেষ্টা করলেন ! হটাত কমলদা অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেন !! " কি ব্যাপার তোমরা সবাই ওর দিকে এই রকম ভাবে চেয়ে আছ কেন?? আমি তো সত্যিই বলছি ! সুনন্দ আমাদের জীবনে ফিরিয়ে এনেছে খুশি, আনন্দ !! আমরা কোনদিনই ভাবতে পারিনি আমাদের জীবনেও এই শুভ দিনটি আসবে !! অনেক অনেক ধন্যবাদ সুনন্দ !!" কমলদার ব্যবহারে এইরকম ইউ টার্ন দেখে সবার চোখ মুখের অবস্থা একেবারে কাহিল ! না পারছে তাদের ঘৃনাকে দমন করতে আর না পারছে আমার দিকে ভালো করে তাকাতে !! আর আমি নিজেও নিজের মনকে ঠিক বোঝাতে পারছি না ঠিক কি হতে চলেছে !!


[/HIDE]
 
[HIDE]

তোমরা হয়ত জানোনা ! আমাদের বিয়ে হয়েছে অনেক দিন হয়ে গেল ! কিন্তু আমাদের সংসারে অশান্তির আগুন জলছিল অনেক দিন থেকেই ! তার কারণ আমাদের কোনো বাচ্ছা নেই ! আমার বউ মানে তৃপ্তি গুমরে গুমরে কাঁদত !! কিন্তু আমাকে কোনদিন বুঝতে দেয়নি ! ও হয়ত ভেবেছিল যে আমি ওর দুঃক্ষটা জানিনা !! ও নিজেকে ওর স্কুলের বাচ্ছাদের মধ্যেই বিলিয়ে দিয়েছিল ! কিন্তু সেটা কতক্ষণ?? স্কুল শেষ হলেই বাড়িতে এসে আবার ও গুমরে গুমরে ঢুকে পরত ওর দূক্ষের জগতে ! স্বামী হিসাবে আমার কিছুই করার ছিল না ! আমার দুঃক্ষ আমি কোনদিন তৃপ্তি কে বুঝতে দিই নি ! নিজের দুঃক্ষ ঢাকতে মদের নেশায় চুর হতে থাকলাম !! কিন্তু আমাদের সমস্ত জীবনটাকে উলট পালট করে দিল সুনন্দ !! সত্যি বলছি ! আমি তৃপ্তির সাথে দার্জিলিং গিয়েছিলাম যদি কিছুটা মনের পরিবর্তন হয় সেটা ভেবেই ! তখন কি জানতাম সুনন্দ এই ভাবে আমাদের জীবন কে পাল্টে দেবে ?
অনেক কখন এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে কমল দা সবার দিকে একটা গভীর নজর বুলিয়ে নিলেন ! বিশেষ করে তৃপ্তিদি, মঞ্জু আর আমার উপরে !! ঘরে এত লোক থাকা সত্তেও একেবারে রাতের নিস্তব্ধতা ! কেউ কোনো কথা বলছে না ! সবার দৃষ্টি একবার কমলদা দিকে আর একবার আমার দিকে !! আর আমি ? আমি নিজেই বুঝে উঠতে পারছি না কি এমন করলাম যে কমলদার জীবন বদলে গেল ??
- আমাদের মধ্যে পুরনো সেই প্রেম, সেই আবেগ, সেই বিশ্বাস, সেই ভালবাসা কয়েক মুহুর্তেই ফিরিয়ে দিল সুনন্দ ওর ভালবাসা দিয়ে !!আমিও ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম ! কিন্তু সুনন্দ বিয়ে না করেই ভালবাসার মানে ভালবাস দিয়েই আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছিল ! আজ আমার তৃপ্তি আবার আমার হয়েছে ! আমাদের ভালবাসা যেটা পথ হারিয়েছিল সেটা আবার পথে ফিরে এসেছে !! ভালবাসার গভীরতা দিয়েই আজ আমরা একে অপরকে উপলব্ধি করেছি ! তাই আমাদের ভালবাসা আজ নতুন রূপে জন্ম নিতে চলেছে !!! বলতে বলতে কমলদা আবেগে কেঁদে ফেললেন !! তৃপ্তিদী নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না ! মুখ থেকে আঁচল সরিয়ে ছুটে এসে কমলদাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলেন !! বেশ কিছুক্ষণ সবাই স্তব্ধ হয়ে দুজনের ভালবাসায় হারিয়ে গেছিল ! আমার দিকে তাকানোর কথা কারুর মনে ছিল না ! সেই সুযোগে আমি ধীর পায়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা কমলদা দের ছাদে চলে গেলাম ! আমার পিছনে পিছনে মঞ্জু ! ছাদে পৌঁছেই মঞ্জু আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমার পিঠে মুখ রেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল ! আমার পিঠের দিকের জামা মঞ্জুর চোখের জলে ভিজতে থাকলো আর সামনের দিক ভিজতে থাকলো আমার চোখের জলে !!
হটাত আমি আরও একজনের বাহু বেষ্টনীতে আবদ্ধ হলাম ! কেউ আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে ! ফলে তার আর আমার মাঝে মঞ্জু চিপ্টে আমার বুকের সাথে লেগে রয়েছে ! যে হাত দুটো দিয়ে আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরা হয়েছিল সেই হাতে হাত বুলিয়ে অনুভব করলাম যে হাত দুটি একটি নারীর ! নিজেকে তারাতারি সামলে নিয়ে পুইছন ঘুরতে চেষ্টা করলাম ! সাথে সাথেই হাতের বাঁধন আলগা হয়ে গেল ! দেখতে পেলাম চৈতালি মুচকে মুচকে হাসছে ! " তুমি তো খুব গুনি !! সবাইকার জীবনে আনন্দ আর সুখ ফিরিয়ে দাও !! তোমাকে তো সবাই ভগবানের আসনে বসাতে চাইছে !!" চৈতালি বলে উঠলো !!
- কে আবার আমার দাদাকে ভগবানের আসনে বসাতে চাইছে?? মঞ্জু প্রশ্ন করলো !
- থাক আর দাদা দাদা করিস না ! তোরা আমার চোখে ধরা পরে গেছিস !!
-মা-মানে কি বলতে চাইছিস তুই ??
- যতই তোরা দাদা বনের নাটক করিস না কেন আমার চোখে তোরা ধরা পরে গেছিস ! তাই আমার কাছে লুকিয়ে কোনো লাভ নেই !! চৈতালি বলে উঠলো !!
- কি যা তা বলছ তুমি চৈতালি?? আমি আর থাকতে না পেরে একটু ধমকের স্বরে বলে উঠলাম !!
- আমি মোটেই যা তা বলছি না ! আমাকে তৃপ্তি দি সব খুলে বলেছে ! ইউ বোথ আর ইন লাভ ! শুধু তোমাদের দুজনের পারিবারিক সম্পর্কটা তোমাদের সম্পর্ককে সফল হতে দিছে না !!
আমি আর মঞ্জু একেবারে হতবম্ভো হয়ে গেলাম ! " ও তাহলে তোমাকে তৃপ্তি দি আর কি বলেছে??"

না সেই রকম বিশেষ কিছুই নয় ! শুধু এইটুকুই বলেছে যে তোমরা দুজন দুজনকে ভালোবাস ! কিন্তু যেহেতু তোমরা মামাত আর পিসততো ভাইবোন তাই তোমাদের মধ্যে ভালবাসা থাকলেও সেটাকে সীকৃতি দিতে পারছ না ! ওরা দুজনেই তোমাদের ভালোবাসাকে শ্রধ্যা করেন !! আচ্ছা একটা কথা আমাকে বলো ! আমিও তোমাদের সাথে দার্জিলিং গেছিলাম কিন্তু তোমাদের ব্যবহারে আমি বিন্দুমাত্র কিছুই বুঝতে পারিনি ! কিন্তু তৃপ্তি কি করে বুঝলো??
- তুই কি কোনদিন কাউকে ভালোবেসেছিস?? বাসিসনি ! ভালোবাসলে বুঝতে পারতিস ভালবাসার ভাষা !! তৃপ্তি দি আর কমলদা দুজনে দুজনকে খুব ভালবাসে তাই ওরা ভালবাসার ভাষা বুঝে গেছিল !! আর আমাদের ভালবাসার কথা যেন আবার সবাইকে বলে বেড়িও না ! মঞ্জু একটু রাগত স্বরে চৈতালিকে বলে বসলো !!
- তুই রাগ করছিস কেন?? আমি খুবই আনন্দিত যে তুই তোর ভালবাসার লোক কে খুঁজে পেয়েছিস ! আমি আজও কাউকে খুঁজে পাইনি ! সবাই আমার এই দেহটাকে ভালবাসতে চেয়েছে !! আমিও তাকেই ভালবাসা বলে ভুল করেছি !! কিন্তু তোদের ভালবাসা আরও একটা পরিবারের ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দিয়েছে !!এই ভালবাসার মূল্য অনেক বেশি !! আমি তোদের ভালোবাসাকে সম্মান করি !! আর হ্যা ! তৃপ্তি দি তোদের দুজনের দেখা করার জন্য মানে যাতে করে অন্তত পনের দিনে একবার দেখা করে একটু নিরিবিলিতে কাটাতে পারিস সেই ব্যবস্থা করার জন্য চিন্তিত ছিল ! সেটা আমি সলভ করে দিয়েছি !! হাওড়াতে আমাদের একটা ফলত রয়েছে ! সেটা তালা বন্ধ থাকে ! তোদের আমি একটা চাবি দিয়ে দেব ! অন্তত তোরা সেখানে নিরিবিলিতে সময় কাটাতে পারবি !! কেউ জানতেও পারবে না !! কিন্তু মনে থাকে যেন ভালোবাসাটা যেন বেশি দূর না গড়ায় ! তাহলেই পেট ফুলে তরমুজ হয়ে যাবে ! সেটাকে খেয়াল রেখে যা করার করিস !!
আমি আর মঞ্জু দুজনেই চৈতালিকে ধন্যবাদ জানালাম !! মঞ্জু চৈতালি কে জিজ্ঞাস্সা করলো " হ্যারে ! আমাদের কথা আর কাকে কাকে বলেছে তৃপ্তি দি ?"
- কাউকে নয় ! শুধু আমাকে ! যখন তৃপ্তি দি কাঁদছিল তখন আমি তৃপ্তি দিকে ধোরে অনার ঘরে নিয়ে গেলাম ! কাঁদতে কাঁদতে উনি আমাকে তোদের ভালবাসার কথা বলছিলেন ! হটাত অঞ্জলি দিদি ঘরে ঢুকতেই উনি কথা ঘুরিয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলেন ! আর আমি ওদের দুজনকে ওখানে রেখে তোদের কাছে চলে এলাম !!
হটাত একটা বাজখাই গলার আওয়াজ !! " এই তোরা কি করছিস এখানে??" দেখলাম লাহিড়ি দা সিড়ির মাথায় দাঁড়িয়ে ! নেশা অল্প অল্প হয়েছে ! তাই একটু দুলছেন !!
- না কিছু না ! একটু ঠান্ডা হওয়া খাচ্ছি !! আমি বলে উঠলাম !
চৈতালি আর মঞ্জুর দিকে তাকিয়ে লাহিড়ি দা বলে উঠলেন ! " এই তোরা নিচে গিয়ে খেয়ে নে ! আমি আর সুনন্দ একটু গল্প করি !!"
ওরা কিছুই না বলে নিচে চলে গেল !! ওরা যেতেই লাহিড়ি দা বলে উঠলেন " ধুর বাঁড়া ! আজ কমলদা বাবা হওয়ার খুসিতে আমাদের সমস্ত নেশার মা চুদে ছেড়ে দিল !! আরও এক দু পেগ মাল পেলে ভালো হতো !!"
- বাকি দের কি অবস্থা?? আমি প্রশ্ন করলাম !!
- সবাই খেতে বসেছে ! কিন্তু আমার আরও একটু মাল চাই ! না হলে পুরো মুডের মা চুদে যাবে !! দেখ না যদি একটু ব্যবস্থা করতে পারিস !!
আমার মাল তো অনেক আগেই মাথা থেকে নেমে পায়ে চলে গেছিল ! আমারও ইচ্ছা হচ্ছিল আরও মাল খাওয়ার ! লাহিরিদার কথাতে সেটা আবার প্রবল ভাবে চারা দিল !! আমি বলে উঠলাম ! " একটু দাঁড়াও ! দেখে আসি যদি কিছু ব্যবস্থা করা যায় !!" বলেই আমি নিচে এসে তৃপ্তি দির কাছে গেলাম !! ত্রিপ্তিদির মুখ এখন বেশ হাসি খুসি ! আমাকে দেখেই বলে উঠলেন !"কি রে কিছু বলবি??"

[/HIDE]
 
[HIDE]

সেই রাতে আমরা আরো বেশ কয়েক বার চোদাচুদি করলাম ! আমার বাঁরার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছিল ! বেশি অত্যাচারের ফলে পুরো লাল হয়ে গেছিল ! যদিও জানতাম অ|র|ম দিলেই আমার বাঁড়া আবার ঠিক হয়ে যাবে ! কখন ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল ছিলনা ! ঘুমের ঘরেই টের পেলাম কেউ যেন আমাকে ক্রমাগত ঠেলে যাচ্ছে ! চোখ খুলে দেখি তৃপ্তি দি আমাকে ঠেলা মারছে আর বলছে " কি রে তদের কি কোনো লজ্জা ঘেন্না নেই নাকি? ভালো করে চোখ খুলে দেখি মঞ্জু আর চৈতালি দুজনে সম্পূর্ণ ল্যাংট হয়ে দুই দিক থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোচ্ছে ! চায়তালির একটা হাত আমার এতে বাঁড়া ধরেই ঘুমোচ্ছে ! তৃপ্তি দি আমাদের দিকে রাগী চোখে চেয়ে বলে উঠলেন " এত উশ্রিন্খলা ভালো নয় ! পরে পস্তাতে হবে !
আমি ধরমর করে উঠে বসলাম ! লজ্জায় ত্রিপ্তিদির মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না ! মুখে একটুকর হাসি নিয়ে তৃপ্তি বললেন " জানি তুই একজন সক্ষম পুরুষ তাই বলে জীবন তাকে এইভাবে নষ্ট করিস না ! এখন থেকেই যদি তুই সেক্সের সাথে লেগে থাকিস তাহলে তোর্ ভবিষ্যত টা কিন্তু নষ্ট হয়ে যাবে ! জীবন কে উপভোগ করার অনেক সময় পাবি ! আগে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নে ! মঞ্জুর ভবিষ্যত ও তোর হাতেই ! এই ভাবে নিজেকে আর সময় কে নষ্ট হতে দিসনা ! " বলেই তৃপ্তি দি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল ! আমি ঠেলে ঠেলে মঞ্জু আর চৈতালি কে তুলতে চেষ্টা করলাম ! কিন্তু আমার ঠেলা খাবার আগেই দুজনে উঠে বসলো ! " এখন কি হবে? তৃপ্তি দি আমাকেও এই ভাবে দেখে ফেলল ! " চৈতালি বলে উঠলো ! " ছার না ! কিছুই হবে না ! তৃপ্তি দি কিছুই বলবে না ! কারণ উনি সুনন্দ কে খুব ভালবাসে ! শুনলি না কি সুন্দর ভাবে সুনন্দ কে বুঝিয়ে গেলেন !" মঞ্জু চৈতালি কে হাসি মুখে বলে উঠলো ! " এবার তো চল আমার বাঁড়া তাকে ছাড়ো ! আমাকে বাথরুম যেতে হবে ! তৈরী হতে হবে ! বাড়ি যেতে হবে না নাকি? আমি ওদের একটু ধমক দিয়ে বলে উঠলাম !! চৈতালি আমার বাঁড়া টাকে একটু চেপে বলল " কি করব মন ভরছে না যে ! আর একবার হবে না?
" অত খায় না ! একদিনেই কি সব খেয়ে শেষ করে দিবি নাকি? আমি আমার জিনিসের ভাগ তোকে দিয়েছি বলে যেন এটাকে পার্মানেন্ট ব্বলে ভেবে নিসনা !" মঞ্জু একটু ঝাঁজের সাথেই চৈতালি কে বলে উঠলো !
চৈতালি কোনো কথা না বলে আমাকে ছেড়ে উঠে পড়ল ! আমিও তারাতারি বাথরুমে ঢুকে পরলাম ! বেশ কিছুক্ষণ ধরে পায়খানা করার পর একেবারে স্নান করেই বেরিয়ে পরলাম ! ঘরের মধ্যে কাউকে দেখতে পেলাম না ! তারাতারি জামা প্যান্ট পরে তৈরী হয়ে ড্রয়িং রুমে এসে দেখলাম সবাই তৈরী হয়ে ডাইনিং টেবিলে আমার জন্য অপেখ্যা করছে ! আমাকে দেখেই কমলদা হেসে জিগাস্যা করলেন " কি রাতে ঘুম কেমন হলো ?"
- আর ঘুম ! উনি এখন কলির কেষ্ট হয়ে আছেন ! ওনার কি ঘুমোনোর সময় আছে ? তৃপ্তি দি একটু বাঁকা স্বরে বলে উঠলেন ! আমি লজ্জায় মাথা তুলতে পার্র্ছিলাম না ! মঞ্জু আর চৈতালির ও সেই একই অবস্থা !
- আহা ! ওদের আবার কেন বকছো ! মানছি ভুল করেছে ! তার জন্য তো তুমি সকালে সুনন্দ কে আর এখানে বসে চৈতালি আর মঞ্জু কে তো এত বকলে ! বেশি বকাবকি করলে লেবু তেতো হয়ে যায় সেটা কি জান না? কমলদার গলাতেও শ্লেষের সুর !
কখনো কখনো নিজেই ভেবে পাই না জীবনের মানে টা কি? জীবনের এতগুলো বসন্ত পার হয়ে এসেও জীবনে পেলাম না পরিপূর্ণতা ! কোথায় যে সেই সব দিনগুলো হারিয়ে গেল সেগুলোকে কিছুতেই খুঁজে পেলাম না ! আর যেগুলো পাওয়া গেল সেগুলোর সাথে তখনকার কোনো মিল নেই ! একেবারে সম্পূর্ণ বিপরীত ! আজ আমি একজন পিতা, একজন পতি, একজন ছেলে ! কিন্তু কিছুতেই নিজেকে মেলাতে পারছি না ! আজ যখন ৪৭ বছরে বয়েসে এসে জীবন অঙ্কের হিসাব মেলাতে চেষ্টা করি তখন সুধুই শুন্য পাই ! কেন জানিনা আজকাল কমলদা, ত্রিপ্তিদী, লাহিড়ি দা রোজ আমার স্বপ্নে আসতে শুরু করেছে ! শুধু একটাই প্রশ্ন তাদের মুখে " সুনন্দ তুমি ভালো আছ তো?" তুমি কি জানো সুনন্দ আমরাও মঞ্জু কে খুঁজে পাইনি ! তুমি কি খোঁজার কোনো চেষ্টা করেছিলে?, কেন সুনন্দ কেন তুমি খোঁজো নি তোমার মঞ্জু কে ?" ঘুম ভেঙ্গে যায় ! চোখের সামনে ভেসে আসে মঞ্জুর মুখ ! দু হাত বাড়িয়ে ধরতে যাই ! কিন্তু পাইনা ! হাতের বন্ধনে আসে শুধু শুন্য !! মনে পরে যায় সেদিন সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে কি ভাবে কমলদা আর তৃপ্তি দি আমাদের কে জীবনের মানে বোঝানোর চেষ্টা করে ছিল ! হয়ত কিছুটা বুঝেছিলাম বা বোঝার চেষ্টা করেছিলাম ! কিন্তু কিছুই বুঝতে পারিনি জীবনের মানে টা কি ! সেদিন যদি বুঝতে পারতাম তাহলে আজ আর পিছনের ইতিহাসকে খুঁড়তে হত না !
সেদিন অমরনা তিনজনে মানে আমি , মঞ্জু আর চৈতালি মাথা নিচু করে কমলদা আর তৃপ্তি দির কথা শুনে যাচ্ছিলাম ! কথা শোনা ছাড়া আমাদের কোনো উপায়ও ছিল না ! একটা অপরাধবোধ আমাদের কিছুতেই মাথা তুলতে দিচ্ছিলো না !
অনেক পরে মাথায় কাউর হাতের ছোঁয়া পেতে মাথা তুলে দেখি তৃপ্তি দি আমার দিকে তাকিয়ে আছে ! চোখের কনে জলের চিকচিকানি পরিস্কার দেখা যাচ্ছে! মাথা নামিয়েই আমি বললাম " আমাদের ক্ষমা করে দাও তৃপ্তি দি ! জীবনে এইরকম আর উশৃঙ্খল আর হব না ! এখন থেকে শুধুই নিজেকে তৈরী করব !"
- কথা দিচ্ছিস? দেখ সুনন্দ আমি চাই তুই অনেক বড় হ ! যখন তুই অনেক বড় হয়ে জাবি তখন দেখবি তর আর মঞ্জুর সম্পর্ক নিয়ে কেউ বিশেষ কিছুই বলতে পারবে না ! তুই কি চাসনা যে তুই আর মঞ্জু দুজনে মাথা উঁচু করে বাঁচতে?
একটা নতুন ভালবাসার জীবন গড়তে ?
- কথা দিলাম দিদি ! আর যদি আমি কথা না রাখতে পারি তাহলে কোনদিন আমার এই মুখ তোমাকে দেখাবো না ! আমাকে বড় হতেই হবে ! সুধু মাত্র মঞ্জুর জন্যই ! আমি মঞ্জু কে কোনদিন হারাতে চাই না ! আর ওকে পেতে যদি এখন ওকে আমায় ত্যাগ করতেও হয় তাও করব ! কিন্তু মঞ্জু কে আমি হারাব না !

পিছন ফিরে আর তাকাই নি ! সোজা কমলদার বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে মোটর সাইকেল স্টার্ট করলাম ! মঞ্জু আর চৈতালি আমার পিছনে বসে পড়ল ! আমি জিজ্ঞাস্য করলাম কোথায় যাব আগে? আগে ওর বাড়িতে ছাড়ব নাকি মঞ্জু কে বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে তারপর চৈতালি কে ছেড়ে আমি বাড়ি চলে যাব !
চৈতালি বলল না এখন আমার বাড়ি যেতে ইচ্ছা করছে না ! আমি এখন মঞ্জুর সাথেই যেতে চাই ! কোনো কথা না বলে আমি গাড়ি আগে বাড়িয়ে দিলাম পিসির বাড়ির উদ্যেশ্যে !
পিসির বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই পিসির বাড়ির ফোন বেজে উঠলো ! মঞ্জু তারাতারি গিয়ে ফোন তুলে হ্যালো বলেই বেজার মুখে বলে উঠলো " এইত বাড়ি এলাম, স্নান করে খেয়ে দেয়ে দুপুর বেলায় দাদা চৈতালি কে তোমাদের ওখানে ছেড়ে তোমাকে নিয়ে যাবে ! না না বেশি দেরী হবে না ! তোমাদের ওখানে ওরা দুটো আড়াইটের ভিতরেই পৌঁছে যাবে ! হ্যা হ্যা ! তুমি তৈরী থেকো !" বলেই ফোনের রিসিভার নামিয়ে রাখল ! চৈতালি এবং আমি দুজনেই উত্সুক হয়ে মঞ্জুর দিকে তাকালাম ! " কার আবার ? অন্জলিদির ফোন ছিল ! ঢং দেখনা ! ওর যেন আর তর সইছে না ঝরনা কে দেখার !" মুখ ঝামটা দিয়ে মঞ্জু বলে উঠলো !
- এই শোনো ! ওকে কিন্তু ঝরনার সাথে একলা ছেড়ে দিও না ! ও চলে যাবার পর যদি ঝরনা কিছু বেগর বাই করে তখন কি হবে? চৈতালি আমাকে একটু সাবধান করে দিতে চাইল !


[/HIDE]
 
[HIDE]

কি রে তোরা কি চান করবি না করে এসেছিস? বলতে বলতে পিসি ঘরে ঢুকলেন ! আমরা কেউই চান করে আসিনি ! তাই প্রায় সাথেই বলে উঠলাম " না এখনো চান করা হয়নি !"
- যা তাহলে সবাই স্নান করে আয় ! তারপর খেতে দেব !
-এত তারাতারি ? এখনো তো সাড়ে এগারটাই বাজে নি ! এখন থেকে খেয়ে কি করব? মঞ্জু বলে উঠলো !
সুনন্দকে কি বাড়ি ফিরতে হবে না ? এদিকে যত লেট করবে ওর বাড়ি পৌঁছতে ততই দেরী হবে ! পিসি একটু ধমকে বলে উঠলো !
আমি বললাম " নাগো পিসি অত ভাববার কিছহুই নেই ! আমি এখান থেকে দুটো আড়াইটের ভিতর বেরিয়ে পড়ব ! সন্ধ্যে হবার আগেই বাড়ি পৌঁছে যাব !
- যা ভালো বুঝিস কর ! বলে পিসি ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ! যাবার আগে চৈতালি কে বলল তুই একবার এদিকে আসিস তো চৈতি ! কিছু কথা আছে ! চৈতালি ও পিসির পিছু পিছু বেরিয়ে গেল ! ওরা বেরিয়ে যেতেই মঞ্জু এক ঝাঁপে আমার বুকে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে চকাত চকাত করে দু তিনটে হামি খেয়ে নিল !! " এই কি করছ কি? দর্রোজা খোলা ! এখুনি যদি পিসি দেখে ফেলে তাহলে কেলেঙ্কারির একসা হয়ে যাবে !
মঞ্জু আমাকে ছেড়ে দিয়ে করুন নয়নে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ! অর করুন চোখ দুটো দেখে আমি আর থাকতে পারলাম না ! এক হাত দিয়ে একখানা হেঁচকা টানে ওকে আমার বুকে জড়িয়ে ধরলাম ! " তুমি তো জানো যে এখন আমরা এমন কিছু করব না যাতে করে সবার চোখে খারাপ হয়ে যাই ! এখন তো আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে সোনা !" বলে আমি মঞ্জু কে একটা গভীর চুমু দিলাম !
- যাও তুমি খুব খারাপ ! আমাকে একটুও আদর করনা বলে মিথ্যা অভিমানে গাল ফুলিয়ে আমার মঞ্জু বাথরুমে ঢুকে গেল !
ওর এই অভিমানী রূপ আমি চিনি ! তাই মনে মনে একটু হেসে পিসির ঘরের দিকে চললাম !
পিসি আর চৈতালি গল্প করছিল !
আমাকে দেখেই পিসি বলে উঠলেন ! " এই শোন্ ! অন্জলিকে যেন ঝরনার সাথে একা ছাড়িস না ! তোর্ মাকেও আমি ফোন করে বলে দিয়েচ্ছি ! ওই মেয়েটা একদম ভালো মেয়ে না ! চৈতালির জীবন খারাপ করেছে এবার হয়ত ঝরনার জীবন তাও খারাপ করবে ! কে তোকে বলেছিল ওকে হ্যা বলতে? "
- আমি কি করে জানব ও চৈতালির সাথে কি করেছে আর কেন খারাপ? (যদিও চৈতালি আমাকে সব বলেছিল ত্তবুও পিসি কে জানাতে চাইলাম না !)
- না মানে এমনি অন্য কিছুই নয় ! আসলে মেয়েটা খুব হিংসুটে আর স্বার্থপর ! নিজের ছাড়া আর কিছুই বোঝে না !! পিসি কথা ঘোরাতে চাইল ! আর খুব সাবধানে যাবি! কাল সকাল হলেই কিন্তু ওকে স্টেসনে ছেড়ে দিবি! বাড়িতে যেন ঘাঁটি গাড়তে দিও না ! ঠিক বলেচ্ছি কি না চৈতালি ?
চৈতালি ঘার নেড়ে সম্মতি দিল !
আমার রান্না বান্না দব করা রয়েছে ! তোরা চান করে খেয়েদেয়ে একটু বিশ্রাম করে নে ! আমি দুটোর মধ্যেই ফিরব ! একটু ব্যাঙ্কে যেতে হবে ! আর আমি আসার পর তুই যাবি বুঝলি?
পিসির ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা মঞ্জুর ঘরে চলে গেলাম আমি আর চৈতালি ! ততক্ষণে মঞ্জুর অভিমান অনেকটা কমেছে কিন্তু আমার দিকে ঠোঁট মুখ ফুলিয়েই তাকিয়ে থাকলো ! ওর মুখ দেখে আমি হেসে ফেললাম ! আমায় হাসতে দেখে সোজা এসে আমার চুলের মুঠি ধরে আমাকে দুমাদ্দুম আমাকে গোটা কয়েক কিল মেরে দিল ! যদিও সেই কিলে কোনো জোর ছিলনা ! সেই কিল ছিল ভালবাসার ! মঞ্জুর কান্ড দেখে চৈতালিও হেসে ফেলল ! হটাত পিসি আমদের ঘরে ঢুকে দেখে ফেলল যে মঞ্জু আমার চুলের মুঠি ধরে আমায় মারছে আর আমি হাসছি ! "হ্যারে ! তোরা কি কোনদিন বড় হবিনা? পিসির প্রছন্ন এবং প্রসন্ন গলার আওয়াজ পেয়ে মঞ্জু আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল " দেখো না মা ! এখনো আমার পিছনে লেগে আছে সেই দার্জিলিং এ যাবার আগের ঝগড়া নিয়ে !" বুঝতে পারলাম মনের দিক থেকে মঞ্জু অনেক পরিপক্ক হয়ে গেছে ! আর আমাদের সন্দেহ করার মত কোনো কারণও পিসির কাছে ছিলনা ! কার্রণ সেই ঘরে চৈতালিও বিরাজমান ছিল ! হালকা গলায় পিসি বললেন "অনেক হয়েছে ! এবার যা গিয়ে চান করে নে ! আর দরজা টা বন্ধ করে দিয়ে যা ! পিসির পিছু পিছু মঞ্জু বেরিয়ে গেল সদর দরজা বন্ধ করতে ! চৈতালি বলে উঠলো "এইভাবে যদি তোমরা চলতে থাক কোনো না কোনো দিন বিপদে পরবে "

কিসের বিপদ রে? মঞ্জু তেরে মেরে চৈতালি কে প্রশ্ন করলো !
- না বলছিলাম তুই যেভাবে সুনন্দ দার চুলের মুঠি ধরে মারছিলিস তাতে কেউ না কেউ তদের সন্দেহের চোখে দেখতে পারে ! আর যদি একবার তোরা সন্দেহের তালিকায় চলে যাস তাহলে কিন্তু জীবনে কোনদিনই মাথা তুলে দাঁড়াতেও পারবি না আর কিছুই করতে পারবি না ! সুধু মনে রাখিস ত্রিপ্তিদী আর কমলদার কথা গুলো !
চৈতালির কথা শুনে মঞ্জু একেবারে চুপ মেরে গেল ! বেশ বুঝতে পারলাম মনে মনে মঞ্জু মুষড়ে পড়েছে ! অগ্যত্যা আমিই বললাম - " আর এ ছারোনা এসব কথা ! আমরা যেমন আছি তেমনি থাকব ! কেউ আমাদদের আলাদা করতে পারবে না !" বলেই চৈতালির মোন্জু কে জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে দিলাম !
- এই এটা কি হচ্ছে ? আমার সামনে দাড়িয়ে তুমিই আমার বান্ধবী কে আদর করছ ! আমাকে করবে না ?
- এই একদম ফালতু কথা বলবি না ! কাল সারারাত তুই অনেক আদর খেয়েছিস ! তোকে অনেকটা ভাগ দিয়েছি ! আর একদম এদিকে হাত বারবি না ! সুনন্দ শুধু আমার ! আমি তোকে আনন্দ দেবার জন্য ওকে শেয়ার করতে পারি কিন্তু অর ভালবাসা আদর আমি শেয়ার করতে পারিনা!
মঞ্জুর কথা শুনে চৈতালির মুখটা পাংশু হয়ে গেল ! আমার খারাপ লাগলেও কিছুই করার ছিলনা ! কারণ আমি মঞ্জু কে ভালোবাসি ! চৈতালি কে নয় ! তাই এখানে কিছু বলাটা আমার পক্ষে শোভন হবে না ! চুপচাপ গামছা নিয়ে বাথরুমে চলে গেলাম !
বেশ কিছুক্ষণ পরে চান করে ভিজে গামছা পরে বেরিয়ে এলাম ! দেখি দুজনেই আমার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে ! আমি কোনো কথা না বলে ব্যাগ থেকে জাঙ্গিয়া বের করতে গেলাম ! হটাত একটা হেঁচকা টানে কে যেন আমারর গামছা খুলে আমাকে ল্যাংট করে দিল ! হতচকিত হয়ে দেখি ! চৈতালির হাতে আমার গামছা ! মঞ্জু মিটি মিটি হাসছে ! যদিও ওদের সামনে অনেক বার ল্যাংট হতে হয়েছে ! তাই আমার মধ্যে কোনো সংশয় বা লজ্জা কিছুই কাজ করছিল না ! কিন্তু ওদের এ হেন ব্যবহারে আমি কিছুটা হলেও বিরক্ত হয়ে বললাম "এটা কি হচ্ছে ? সবসময় কি এসব ভালো লাগে? প্র্রতিটি জিনিসের একটা লিমিট আছে ! সেই লিমিট ক্রস করা ভালো নয় !" একটু রেগেই হয়ত বলে ফেলেছিলাম ! হয়ত কেন বলছি ! সত্যিই আমি রেগে গেছিলাম!কিন্তু কেন জানিনা মঞ্জুর মুখের দিকে তাকিয়ে আমার সমস্ত রক্ত জল হয়ে গেল ! মঞ্জুর দুচোখের কনে জল চিকচিক করছে ! মঞ্জুর চোখে জল দেখে নিজের গালে নিজেরই চর মারতে ইচ্ছা করছিল ! কিন্তু কি করব ! তাই সবকিছু ভুলে তারাতারি মঞ্জুর মুখ টাকে দুহাতের আঁজলায় তুলে চোখের উপর দুটো ছোট্ট ছোট্ট চুমু দিয়ে বললাম "সকালের কথা ভুলে গেলে? তৃপ্তি দি আর কমলদা কে আমরা কথা দিয়ে এসেছি সেটাও ভুলে গেলে? "
অভিমানী গলায় আমার মঞ্জু বলে উঠলো " ওরা তো ওদের জীবন টাকে ভালোভাবেই উপভোগ করেছে ! আমাদের বেলাতেই যত বিধিনিষেধ ?"
- দেখো ওনারা আমাদদের গুরুজন ! আর ওনারাও আমাদের মতই একই নৌকতেই ছিলেন ! তাই ওনারা ভালো করেই জানেন এই ভালবাসার কি পরিনতি হটতে পারে ! ওনারা তো আমাদের খারাপের জন্য কিছুই বলেন নি !
- না সে তুমি ঠিকই বলেছ ! কিন্তু ওনারা কি আমাদের মত বয়সে যখন ছিলেন তখন নিজেদের কন্ট্রোল করতে পেরেছিলেন? চৈতালি মাঝখান থেকে ফোড়ন কেটে উঠলো !


[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top