গ্রীষ্মে শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হওয়াই স্বাভাবিক। সেই সাথে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। ফলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে নানা সমস্যা দেখা দেয়। বাইরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে, শরীরের তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পায়। এর সাথে মাথা ঘোরা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, দুর্বলতা ইত্যাদি শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও দেখা যায়। যার চরম পর্যায় হিটস্ট্রোক। হিটস্ট্রোক এর ভয়াবহতা সম্পর্কে অনেকই সচেতন নয়। খুব অল্প সময়েই ঘটে যেতে পারে মারত্বক শারীরিক বিপর্যয়। দ্রুত সঠিক চিকিৎসা এবং প্রতিকার প্রয়োজন।
গরমে শরীরের অপটিমাম ফ্লুইড ইনটেকের মাত্রা সঠিক থাকতে হবে
শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হলেও সবারই সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজনীয়। এমনকি নেয়া যেতে পারে পূর্ব প্রস্তুতিও। যেমন গ্রীষ্মের শুরুতেই খাবার তালিকা সাজিয়ে নিতে পারেন নতুন ভাবে। কারণ গরমের সময় শরীরের অপটিমাম ফ্লুইড ইনটেকের মাত্রা সঠিক থাকলে। এবং ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে যাওয়া ইলেকট্রোলাইটের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পারলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।
হিটস্ট্রোক এড়াতে করণীয়
দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পান করা
* ২৪ ঘন্টায় অন্তত তিন লিটার পানি পান করুন। অথবা হিসেব করতে পারেন গ্লাসে, এক্ষেত্রে দিনে ১০–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে। শরীরে পর্যাপ্ত পানি মজুত থাকলে ঘাম হলেও ডিহাইড্রেশন হবে না। সাধারণ পানি খেতে না চাইলে কম চিনির শরবত, খাবার স্যালাইনও কাজে আসবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে পানির পরিবর্তে কোল্ড ড্রিঙ্ক বা বোতলজাত জুস খেলে চলবে না। এই ধরনের পানীয় শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে না।
* গ্রীষ্মের রসালো সবজি বা ফল রাখেত পারেন খাদ্য তালিকায়। যেমন লেটুস, শসা, তরমুজ, আনারস, কমলালেবু, আখ, জামরুল এবং পুদিনা গরমের জন্য আদর্শ। এতে ক্যালরির পাশাপাশি সোডিয়ামের পরিমাণও কম থাকে। আবার পর্যাপ্ত পরিমানে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, এ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে; যা তৃষ্ণা মেটাতেও সাহায্য করে। এবং শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদানেরও জোগান দেয়।
তাজা ফলের রস উপকারি
* সকালে এক গ্লাস হুইট গ্রাস জুস পান করতে পারেন। আবার অনেকে নানা ধরনের সবজির রসও খেয়ে থাকেন। স্বাদ বাড়াতে এতে সামান্য বিট লবন মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে।
* গরমে স্বস্তি পেতে অনেকেই বাইরে বেরুলই নানা ধরনের সুস্বাদু কোল্ড ডিঙ্কস ঢক ঢক করে পান কের নেই। যা একেবারেই উজিত নয়। এর পরিবর্তে ডাবের পানি পান করা যেতে পারে। অথবা তাজা ফলের রসও উপাদেয় এবং উপকারি।
* রিফাইন্ড খাবারের পরিমান কমিয়ে দিতে হেব। কারন এধরনের খাবার রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যাতে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনাও বাড়ে। এর বদলে ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট রাখুন। যেমন ব্রাউন রাইস, কাঁচা সবজি রান্না বা স্যালাড রাখতে পারেন।
* তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের অভাব যেন না হয় তাও খেয়াল রাখতে হবে। খাবার তালিকায় রাখুন ডিমের সাদা অংশ, টকদই, ডাল, অলিভ অয়েল এবং বাদাম।
পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট প্রয়োজন
* পেঁয়াজ শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তবে রান্না করার পরিবর্তে কাঁচা পেঁয়াজ বেশি উপকারী। তাই স্যলাডে রাখতে পারেন কাচা পেঁয়াজ। এটিও হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে কার্যকারী।
* খাবার তালিকা তৈরিতে কিছু জিনিসকে অবশ্যই প্রাধান্য দেন। যতটা সম্ভব হালকা, পুষ্টিকর, কম তেল এবং মশলাযুক্ত থাবার গ্রহন করুন। তৈলাক্ত খাবার, রেড মিট, কফি, অ্যালকোহল, সিগারেটের অভ্যাস ত্যাগ করুন। রাতের খাবার যতটা সম্ভব তারতারি সেরে ফেলুন।