What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

একজন সার্জিও রামোসের ডিফেন্সিভ মিস্টেক by নির্জন আহমেদ (1 Viewer)

Ochena_Manush

Master Member
Elite Leader
Joined
Aug 12, 2022
Threads
314
Messages
21,184
Credits
443,802
LittleRed Car
Automobile
Strawberry
Audio speakers
একজন সার্জিও রামোসের ডিফেন্সিভ মিস্টেক

[আমার গল্পগুলোর প্রধান চরিত্রের নাম নির্জনই রাখছি প্রতিটা গল্প-উপন্যাসে। কারণটা সহজ। গল্পগুলো নানা সাইটে ঘুরে বেড়ায়। অনেক সাইটের এডমিন লেখকের নামটা পর্যন্ত দেয় না। লেখক, হোক সে যতো নিম্নমানেরই, লিখুক যে যতো "হিডিয়াস" বিষয় নিয়েই, সর্বদা চায় তার লেখা লোকে পড়ুক, সাথেসাথে জানুক তার নামটাও। সেটাই যেহেতু হচ্ছে না, তাই বাধ্য হয়ে এই কাজ করছি। ডিটেকটিভ (বা মিস্ট্রি) জনরার উপন্যাসটার কিংবা অন্য যে উপন্যাস বা গল্পগুলো লিখছি বা লিখেছি বা লিখবো, সেগুলোর প্রধান চরিত্রের সাথে এ গল্পের প্রধান চরিত্রের কোন মিল নেই। তারা অন্য মানুষ, তাদের গল্প আলাদা পৃথিবীর। গুলিয়ে ফেলবেন না যেন!

বাস্তবতা কল্পনার চেয়েও বিস্ময়কর, এমন একটা কথা প্রচলিত আছে। শুনেছি, কথাটা বলেছিলেন মার্ক টোয়েন। সত্যাসত্য জানি না। মার্ক টোয়েন বলুন বা না বলুন, কথাটা যে শতভাগ সত্য তাতে অন্তত আমার সন্দেহ নেই। সত্য না হলে, ফাতেমা রেজিনার সাথে আমার পরিচয় হবেই বা কী করে?


ধান ভাবছি না। ধান ভানাও একটা কাজের মতো কাজ। করছি তার চেয়েও জঘন্য কিছু। তাই শিবের গীত গাইতে বাঁধা নেই, শুরু করছি বিশাল গৌরচন্দ্রিকা দিয়েই।

কিছুদিন আগে সেবা প্রকাশনীর একটা বই আমাকে পড়তে হয়েছিলো। যদিও এসব বই প্রায় কেজি দরে পাওয়া যায় নীলক্ষেতে, আমার কেনার ইচ্ছে হয়নি কোনদিন। রানা সিরিজের বেশ কিছু বই পড়েছি বাধ্য হয়ে। ভালো লাগেনি। সবার পছন্দের, আমার ভালোই লাগছে না, সমস্যাটা হয়তো আমারই- এই হীনমন্যতা থেকে আরও কয়েকটা কিনেছি ও পড়েছি। সেসব বরং আরও বিমুখ করেছে রানা সিরিজের প্রতি। কারণ মোটামুটি বেশ কয়েকটা।

১) বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশ। দরিদ্র, জনবহুল, দুর্নীতিপীড়িত। অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হয়েছে কিছুদিন হলো। বলতে লজ্জা নেই, কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের মানুষ ভাত পেত না পেট ভরে খাওয়ার জন্য। (দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, এখনও প্রায় ২৫% লোক খাদ্য- নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে)। প্রতিবেশী দেশদুটির সাথে গলায় গলায় সম্পর্ক না হলেও অন্তত টক্সিক রিলেশনশিপ টাইপের একটা সম্পর্ক তো আছেই। এই দেশের যে একটা কাউন্টার ইনটেলিজেন্স থাকতে পারে, সেটা বিশ্বাস করতেই মন চায় না। তার উপর সে দেশের এক স্পাই গোটা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, আমেরিকা ইউরোপকে সাহায্য করছে, শয়ে শয়ে নারী পটিয়ে জেমস বন্ড স্টাইলে লাগাচ্ছে- এসব বিশ্বাস করার চেয়ে সুপারহিরোতে কিংবা ঈশ্বরে বিশ্বাস করা সহজ!

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছিলেন যারা তাদের মধ্যে একজন কাজী সাহেব হলে, অবাক হবো না। পাকিস্তান ছিলো,এখনও তাই, পুরোপুরি মিলিটারি রাষ্ট্র। সাইজে বিশাল। ভারত চীনের মাঝে অবস্থান। ধর্মীয় কারণে কিংবা কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত পাকিস্তান টেনশনের জন্য পাকিস্তানের স্পাই পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, অন্তত ভারতে যদি অবস্থান করে কিংবা কোন অপারেশন চালায়, তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই। পাকিস্তান আমলে তাই মাসুদ রানার অস্তিত্ব কল্পনা করতে অসুবিধা হতো না পাঠকের। পাকিস্তানে বা ভারতে যদি স্পাই থ্রিলার লেখা হয় কিংবা সিনেমা নির্মিত হয় স্পাই নিয়ে, পাঠকের বা দর্শকের তাতে প্রশ্ন করার থাকবে না। কিন্তু পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হলো, তার সবচেয়ে বড় মিত্রে পরিণত হলো ভারত। সেখানে স্পাইয়ের দরকার কী? কী স্বার্থ? কী স্বার্থে বাংলাদেশ স্পাই লাগিয়ে রাখবে ইউরোপে, আমেরিকায়, রাশিয়ায় যারা কিনা দেশটির সবচেয়ে বড় সাহায্য প্রদানকারী?

কোন পাঠক যদি এসব প্রশ্ন না করেই সন্তুষ্ট থাকে, তবেই সে মাসুদ রানা কিংবা অন্যান্য স্পাই সিরিজ উপভোগ করতে পারবে। আমি পারি না। আমি মস্তিষ্ক সৌভাগ্যক্রমে অক্রিয় নয়।

বাংলাদেশে একটা কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স আছে। এদের কাজ মোটাদাগে অভ্যন্তরীণ জঙ্গিবাদ দমন করা এবং সে কাজে তারা যথেষ্ট পারদর্শীও। দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, মাসুদ রানাকে জঙ্গিবাদের বিপক্ষে লড়তে কোনদিন দেখা যায়নি! অথচ দেশের ভেতরে জংগিবাদের উত্থান মাসুদ রানার জন্য শাপে বর হয়ে উঠতে পারতো। ওঠেনি। মাসুদ রানার গোস্ট রাইটারেরা বিদেশী উপন্যাস মেরে দিতেই ব্যস্ত, তারা এসব ভাববে কখন? এদেশের প্রেক্ষাপটে উপন্যাস লেখার জন্য যে মাথা দরকার, সেটা মাসুদ রানার অনামা লেখকদের ছিলো না, কাজী সাহেব হয়ে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ।

২) মাসুদ রানা সিরিজের প্রথম দুইটা ব্যাতীত বাকিসব কোন না কোন বিদেশী থ্রিলার থেকে ঝেড়ে দেয়া। স্রেফ অনুবাদ না করে, মূল চরিত্রকে বাঙালি রেখে সিরিজ আকারে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। আর কাজটা কাজী সাহেব নিজে কিছুটা করলেও, বাকিটা করিয়ে নিয়েছেন গোস্ট রাইটারদের দিয়ে। শেখ আব্দল হাকিম নামের এক যথেষ্ট সুলেখক তো দাবি করেছেন তিনি প্রায় দুশোর মতো (একজ্যাক্ট নাম্বার মনে নেই) মাসুদ রানার বই লিখেছেন। অথচ তার নামটা পর্যন্ত কোথাও নেই। দেয়া হয়নি প্রাপ্য মর্যাদা, যে পরিমাণ পয়সা পাওয়ার কথা, তার সিকি ভাগও পাননি।

এই কুম্ভীলক কাজী সাহেবকে নিয়ে পাঠকের আদিখ্যেতা আমি তাই নিতে পারি না। যে লেখক আরেক লেখকের প্রাপ্য মর্যাদাটুকু না দিয়ে তাকে উলটো অর্থনৈতিক ভাবে পিষে মারে, সে আর যা'ই হোক আমার সম্মানের যোগ্য নয়।

সেগুনবাগিচা প্রকাশনী ওয়েস্টার্নও প্রকাশ করতো। কয়েকটা ভালই লেগেছে পড়তে। কিন্তু কাহিনীর বৈচিত্র নেই বললেই চলে। গান ফাইটিং, ডুয়েল, ঘোরদৌড়, মরুভূমি ও শেরিফের গল্প আর কতো নেয়া যায়? মজার ব্যাপার সেগুনবাগিচার পাঠকেরা এখনও সেই ওয়েস্টার্ন খায়। এখনও কেনে। সেই একই গল্প এখনও নতুন রঙ চড়িয়ে লিখছে কিছু লেখক। কোথায় থামতে হয়, এটা না জানলে নিজের বৃত্তেই ঘুরে মরতে হয় শুধু।

এই ওয়েস্টার্ন পড়তে গিয়েই ফাতেমা রেজিনার সাথের আমার পরিচয়।

আমার এক বন্ধু, সালমান, কিছুদিন আগে হন্তদন্ত হয়ে এসে বলল, "মাল পাইছি মামা একটা। মাস্টারপিস। কাল সারারাত ধরে জাগায় রাখছে!"

তার হাতে একটা বই। সেবার। পেপারব্যাক।

বললাম, "তোর মাস্টারপিসের মাপকাঠি আমার জানা আছে। এইসব বই মাস্টারপিস হইলে পৃথিবীতে এমন কোন লেখক নাই, যে একটা করে মাস্টারপিস লেখে নাই। ঐসব ফাঁকের আলাপ বাদ দিয়া, আসছিস, একটা বিড়ি খ্যায়া চলে যা!"

সালমান নাছোড়বান্দা। আমাকে পড়িয়েই ছাড়বে। পড়লে নাকি সেবার বই সম্পর্কে আমার ধারণাই বদলে যাবে।

বলল, "সবচেয়ে বিস্ময়কর কথা কোনটা জানিস? বইটা মৌলিক! তুই ভাব, একটা লোক-বাঙালি- কোনদিন আমেরিকায় গেলো না, অথচ এমন একটা বই, ওয়াইল্ড ওয়েস্ট সম্পর্কে লিখে ফেলল! ভাবা যায়?"

বললাম, "যায়। বিভূতিভূষণ আফ্রিকা তো দূরে থাক, ভারতবর্ষের বাইরেই পা রাখে নাই কোনদিন। অথচ চাঁদের পাহাড় লিখছে। মরণের ডঙ্কা বাজে লিখছে চীন না গিয়েও!"

"এটাও চাঁদের পাহাড় লেভেলেরই!"

"তাই নাকি?"

"বিশ্বাস না গেলে পড়ে দেখ, বাড়া!"

পড়লাম। "Once Upon a Time in the West" থেকে পুরো ঝেড়ে দেয়া। সিনেমা ৬৮ সালের, উপন্যাসটা রচিত ৮৯ সালে। মৌলিক শুধু এই অর্থে যে লেখক কোন ইংরেজি বইয়ের অনুবাদ করেননি!

বন্ধুকে সেকথা না বলে ফেসবুকে রিভিউ লিখলাম হাজার শব্দ খরচ করে। লাইক পড়লো ৪ টা। তাই দিলাম ওয়েস্টার্ন লাভারদের গ্রুপে। উপরে যে কথাগুলা লিখলাম, সেগুলো সে পোস্টেও ছিলো প্রসঙ্গক্রমে।

পোস্ট করতেই হৈচৈ শুরু হয়ে গেলো। আমি যে আসলে একটা বোকাচোদা, সেটা প্রমাণ করতে ওরা বদ্ধপরিকর। আমি মৌলিক ওয়েস্টার্ন আশা করেছি, এটাই হলো ওদের হাসাহাসির প্রধান বিষয়। কয়েকজন ক্ষেপে গেলো তাদের পেয়ারের কাজীদার জন্য। একজন তো জিজ্ঞেস করেই ফেলল, পড়ার সময় মস্তিষ্কটা কাউকে ধার দিয়েছিলাম কিনা!

ফেসবুকের অচেনা লোকের কমেন্ট গুরুত্ব দেইনি কোনদিন। তবে এই শালারা এত বেশি আজেবাজে মন্তব্য করতে শুরু করেছিলো যে কমেন্ট দেখাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম ত্রিশ মিনিটের মধ্যে।

হঠাত একটা ম্যাসেজ এলো। বন্ধু তালিকায় নেই বলে ম্যাসেজটা এলো রিকুয়েস্টে।

"ভালো লিখছো। তোমার সাথে আমিও একমত। তবে এই গ্রুপে লেখাটা দিয়ে ভালো করো নাই।"

ম্যাসেজটা পাঠিয়েছেন ফাতিমা রেজিনা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top