[HIDE]
ফোনটা রেখে দিয়ে আমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিলাম। প্রায় দৌড়ে স্টেশানে এসে পৌছুলাম। ঊনি যাতে আমার আগে এসে অপেক্ষা না করে সেই উদ্দেশ্যে। তুলিকে ওর মার হাত থেকে বাচাতেই হবে।
আমি আর তুলির বাবা প্ল্যাটফর্মের একটা সিমেন্ট বাঁধানো বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। এই সময় একটু ভিড়ই আছে। চেনাশোনা অনেকেই আমাকে দেখতে দেখতে যাচ্ছে। তবুও ভিড়ের মধ্যে থাকলেই লোকে লক্ষ করেনা এটা আমার পুরোনো অভিজ্ঞতা। আমি আর তুলির বাবা একটা করে চা নিলাম।
আমি বিনা দ্বিধায় শুরু করলাম ‘কাকু, তুলিকে নিয়ে কি ভাবছেন?’
‘কি ভাববো আর, তোমরা নিজেরাই ঠিক করে নিয়েছো, তো গ্র্যাজুয়েশানটা করুক তারপর না হয় তোমার বাড়িতে যাবো...।’
‘আমি বোঝাতে পারলাম না কাকু আপনাকে?’
তুলির বাবা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে যে উনি কি ভুল বুঝেছেন।
আমি মরিয়া হয়ে উনাকে বললাম ‘তুলিকে তো একটু সংযত হতে হবে, পরিনত হতে হবে, ভালো মন্দ বুঝতে হবে, পড়াশুনাটা ভাল করে করতে হবে, কিন্তু ও তো সেরকম গাইডেন্স পাচ্ছেনা কাকু?’
‘হ্যাঁ, সেতো ঠিকই, তুমি ঠিকই বলেছো।’
আমি বুকে বল পেলাম যে সেমসাইড হয়নি। ‘কাকু কালিপুজোর রাতে ও একা একা রাত জেগে ফাংশান দেখতে গেছিলো আপনি যানেন?’
মাথা নিচু করে উনি জবাব দিলেন ‘আমাকে কেউ কিছু বলে নাকি? ওরা ওদের মর্জি মত চলে একসময় অনেক বালেছি, তারপর দেখি এদের বলে লাভ নেই। তুমি একটু কড়া হাতে ওকে ধরো।’
‘আমার কি সেই অধিকার আছে, আপনার মিসেস তো আমাকে সেই অধিকার দেবে না।’
‘কেন দেবেনা?’
‘আপনি যানেন, আমি তুলিকে সেদিন রাতে ফাংশান থেকে উদ্ধার করি। আমি গিয়ে দেখছি একগাদা ছেলের সাথে ও একা মেয়ে নেচে চলেছে, তারপর রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভোররাতেও দুটো ছেলের সাথে দেখি গল্প করছে। আমি ওকে ভীষণ যা তা বলেছি। সেদিন যে আপনি বললেন তুলির শরীর খারাপ, তাই আমি মাকে বললাম খোঁজ নিতে যে ও কেমন আছে? আর তুলির মা, মার সাথে ভীষণ দুর্ব্যাবহার করে, মা সেই জের সামলাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পরে। আজকে আমি ফোন করেছি আমার সাথেও খুব বাজে ব্যাবহার করলো। এরপর আমি তুলির সাথে কথা বললাম মনে হোলো যে তুলি ওর মাকেই সমর্থন করছে। এবার বলুন আমি কি ভাবে তুলিকে শাসন করবো?’
‘তুমি ভুল বুঝোনা এরা সরল, কিন্তু প্রচণ্ড জেদি আর মাথা গরম। তাই জানেনা কোথায় কি ভাবে কথা বলতে হয়। আর মা মেয়ের মধ্যে গোপন কিছু থাকেনা তাই হয়তো অভিমানে তোমার কথাগুলো বলে দিয়েছে। ওর মা কিছু অন্যায় করলে আমি তোমার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’
-‘এইখানেই আমার প্রশ্ন আর আমার আপনাকে ডাকা’
তুলির বাবা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।
আমি আবার বলতে শুরু করলাম ‘আপনি যানেন আপনার মিসেস কোথায় যায়? কাদের সাথে মেলামেশা করেন?’
-‘শুনেছি তো কি যেন ফিল্মের ব্যাপারে রোজ বেরোই। আমার এসব পছন্দ না। ঘরের মেয়ে ঘরে থাকলেই ভালো। কিন্তু দিনকাল কি পরেছে দেখেছো তো। পেপার খুললেই তো রোজই এরকম খবর বেরোয়। জোরজবরদস্তি করতে গেলে কিছু না করে বসে সেই ভয় পাই।’
- ‘এখানেই আমার আপত্তি। উনি তো আপনার পরিবার। উনার ভালো মন্দ তো আপনার ভালো মন্দ তাহলে আপনি তো মিনিমাম খোজ খবর রাখবেন?’
- ‘কি করবো তুমি বল? কেউ যদি কথা না শোনে, তাহলে কি আমি লোক লাগাবো তার পিছনে, সেটা কি সন্মানের ব্যাপার হবে।’
- ‘এই ভাবে হাল ছেড়ে দিলে কিন্তু তুলির ভবিষ্যতও বিপন্ন হবে কাকু। আমি যতদুর জানি, ওর মা কিন্তু ভালো সঙ্গে নেই। যে কোনদিন বিপদে পড়তে পারেন। আপনি আমার বাবার বয়েসি আর বাবার বন্ধুস্থানিয় তবু বলতে বাধ্য হচ্ছি যে দেখবেন কোনোদিন তুলির মা কোথাও পাচার হয়ে যাবে। এর থেকে ভেঙ্গে আমি বলতে পারবোনা।’
-‘আমি সব বুঝি, আমি ওদের অনেকবার বলেছি যে এসব লাইনে যাচ্ছো, একদিন মা আর মেয়েকে বাক্স করে পাচার করে দেবে। কে শোনে কার কথা। এদের ছেড়ে দিতে হয় যেদিন ঠোক্কর খাবে সেদিন ঠিক পথে চলে আসবে।’
-‘সেই অপেক্ষাই থাকলে তো আরো বিপদ, এতো কেউ পাহারে উঠছে না যে উঠতে গিয়ে হাঁপ ধরে গিয়ে নেমে আসবে। কোনদিন দেখবেন রেপ হয়ে যাবে। তখন কি করবেন?’
তুলির বাবা চুপ করে রইলো।
আমি মরিয়া হয়ে উঠেছি তাই বলে চলেছি ‘এই যে রনি নামের ছেলেটা আপনাদের বাড়িতে আসে ওর খোঁজখবর রাখেন?’
আরে ও তো এক বড় চিটিংবাজের ছেলে। ওর বংশপরিচয় তুমি আমার থেকে নাও। ওর বাবা তো বিড়াট ঠগবাজ লোক। আর ব্যাটা গেছে বাপের ওপরে। তোমার বাবাকে জিজ্ঞেস করবে সুকুমার কি জিনিস বলে দেবে। আগে তো আমাদের একই থানা ছিলো। আমরা যারা পুরোনো লোক তারা ওর চরিত্র ভালো মতই জানি। কবার জেল খেটেছে তার ঠিক নেই। ওতো সুকুমারের ছেলে। আমি তো তুলির মাকে বলি ওই ছেলেটার ব্যাপারে আমার কথা বিশ্বাসই করেনা। বলে আমার মাথায় ভিমরতি হয়েছে।’
‘আপনি যানেন এই রনি, তুলিকে নষ্ট করতে চায়?’
তুলির বাবা থমকে আমার দিকে তাকালো তারপর মাথা নেরে নেরে আমাকে বললো ‘আমি জানতাম যে এরকম কিছুই হবে। এই স্বপনকেও তারাতে হবে সাথে সবকটা কে। মাঝে একবার হুমকি দিয়েছিলাম বলে ব্যাটা বাড়িতে আসা বন্ধ করেছে। কিন্তু ফোন করে তুলি তুলির মা দুজনেই কথা বলে। স্বপনের হাত ধরেই এ বাড়িতে ঢুকেছে ও। বিষঝারে কি ফুল ফোঁটে নাকি।’
-‘তো এই হুমকি আপনি আপনার বাড়ির লোককে দিতে পারেন না? আপনার মিসেস তো তুলিকে ঠেলে দিচ্ছে যে রনির কাছে কিসের কাজের ব্যাপারে।’
-‘কই তুলিতো আমাকে বলেনি? ও তো সব কথা আমাকে বলে।’
-‘তুলি হয়তো নিজেও জানে না। আমি বুঝতে পারছি না। নিজের মা হয়ে উনি কি ভাবে এসব করছেন?’
‘না না তুমি এরকম ভেবো না। ও অতসত ভাবেনা। আসলে সরল প্রকৃতির তাই সবাই সুযোগ নেয় এদের থেকে।’
-‘কাকু, আমি ছোট হয়ে বলছি। আপনি ভালো করে যাজ করুন। মানুষ ওপরে এক আর ভিতরে আরেক। হয়তো উনি আপনার সরলতার সুযোগ নিচ্ছে। এমনও তো হতে পারে।’
তুলির বাবা অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল তারপর আমাকে হতাশ গলায় বললেন ‘তাহলে তো মারদাঙ্গা করতে হয় এদের আটকাতে।’
-‘কিচ্ছু করতে হবেনা। আমার বয়েস অল্প, কিন্তু অনেক অভিজ্ঞতা। সেখান থেকে আপনাকে বলছি সব ঠিক হয়ে যাবে। শুধু আপাতত আপনি তুলিকে ওর মার সাথে কোথাও যেতে দেবেন না। তুলির এখনো ভালো মন্দের জ্ঞান হয়নি। বাকিটা আমি দেখছি।’
-‘আমি বরঞ্চ তোমাকে বলি, তুমি দেখছো দেখো, কিন্তু তোমার কাকিমার সাথে তুমি খুলে কথা বলো। বোঝালে ও ঠিক বুঝবে, কি হবে তুমি না হয় একটু ছোটই হলে ওর কাছে। তুমিই না হয় ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলে। কিন্তু ও আমার কথা শুনবে না, শোনাতে হলে আমাকে মারদাঙ্গা করতে হবে। এরা এমন জেদি। একবার যেটা করবে বলে সেটা করেই ছারে। এইখানে বোঝানোই একমাত্র রাস্তা। আর নয়তো আমাকে এদের মেরে জেলে যেতে হবে।’
- ‘ঠিক আছে, কিন্তু আগে আপনি তুলিকে বাচান। ও ফুলের মত মেয়ে। নষ্ট না হয়ে যায়...।’
[/HIDE]
ফোনটা রেখে দিয়ে আমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিলাম। প্রায় দৌড়ে স্টেশানে এসে পৌছুলাম। ঊনি যাতে আমার আগে এসে অপেক্ষা না করে সেই উদ্দেশ্যে। তুলিকে ওর মার হাত থেকে বাচাতেই হবে।
আমি আর তুলির বাবা প্ল্যাটফর্মের একটা সিমেন্ট বাঁধানো বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। এই সময় একটু ভিড়ই আছে। চেনাশোনা অনেকেই আমাকে দেখতে দেখতে যাচ্ছে। তবুও ভিড়ের মধ্যে থাকলেই লোকে লক্ষ করেনা এটা আমার পুরোনো অভিজ্ঞতা। আমি আর তুলির বাবা একটা করে চা নিলাম।
আমি বিনা দ্বিধায় শুরু করলাম ‘কাকু, তুলিকে নিয়ে কি ভাবছেন?’
‘কি ভাববো আর, তোমরা নিজেরাই ঠিক করে নিয়েছো, তো গ্র্যাজুয়েশানটা করুক তারপর না হয় তোমার বাড়িতে যাবো...।’
‘আমি বোঝাতে পারলাম না কাকু আপনাকে?’
তুলির বাবা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে যে উনি কি ভুল বুঝেছেন।
আমি মরিয়া হয়ে উনাকে বললাম ‘তুলিকে তো একটু সংযত হতে হবে, পরিনত হতে হবে, ভালো মন্দ বুঝতে হবে, পড়াশুনাটা ভাল করে করতে হবে, কিন্তু ও তো সেরকম গাইডেন্স পাচ্ছেনা কাকু?’
‘হ্যাঁ, সেতো ঠিকই, তুমি ঠিকই বলেছো।’
আমি বুকে বল পেলাম যে সেমসাইড হয়নি। ‘কাকু কালিপুজোর রাতে ও একা একা রাত জেগে ফাংশান দেখতে গেছিলো আপনি যানেন?’
মাথা নিচু করে উনি জবাব দিলেন ‘আমাকে কেউ কিছু বলে নাকি? ওরা ওদের মর্জি মত চলে একসময় অনেক বালেছি, তারপর দেখি এদের বলে লাভ নেই। তুমি একটু কড়া হাতে ওকে ধরো।’
‘আমার কি সেই অধিকার আছে, আপনার মিসেস তো আমাকে সেই অধিকার দেবে না।’
‘কেন দেবেনা?’
‘আপনি যানেন, আমি তুলিকে সেদিন রাতে ফাংশান থেকে উদ্ধার করি। আমি গিয়ে দেখছি একগাদা ছেলের সাথে ও একা মেয়ে নেচে চলেছে, তারপর রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভোররাতেও দুটো ছেলের সাথে দেখি গল্প করছে। আমি ওকে ভীষণ যা তা বলেছি। সেদিন যে আপনি বললেন তুলির শরীর খারাপ, তাই আমি মাকে বললাম খোঁজ নিতে যে ও কেমন আছে? আর তুলির মা, মার সাথে ভীষণ দুর্ব্যাবহার করে, মা সেই জের সামলাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পরে। আজকে আমি ফোন করেছি আমার সাথেও খুব বাজে ব্যাবহার করলো। এরপর আমি তুলির সাথে কথা বললাম মনে হোলো যে তুলি ওর মাকেই সমর্থন করছে। এবার বলুন আমি কি ভাবে তুলিকে শাসন করবো?’
‘তুমি ভুল বুঝোনা এরা সরল, কিন্তু প্রচণ্ড জেদি আর মাথা গরম। তাই জানেনা কোথায় কি ভাবে কথা বলতে হয়। আর মা মেয়ের মধ্যে গোপন কিছু থাকেনা তাই হয়তো অভিমানে তোমার কথাগুলো বলে দিয়েছে। ওর মা কিছু অন্যায় করলে আমি তোমার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’
-‘এইখানেই আমার প্রশ্ন আর আমার আপনাকে ডাকা’
তুলির বাবা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।
আমি আবার বলতে শুরু করলাম ‘আপনি যানেন আপনার মিসেস কোথায় যায়? কাদের সাথে মেলামেশা করেন?’
-‘শুনেছি তো কি যেন ফিল্মের ব্যাপারে রোজ বেরোই। আমার এসব পছন্দ না। ঘরের মেয়ে ঘরে থাকলেই ভালো। কিন্তু দিনকাল কি পরেছে দেখেছো তো। পেপার খুললেই তো রোজই এরকম খবর বেরোয়। জোরজবরদস্তি করতে গেলে কিছু না করে বসে সেই ভয় পাই।’
- ‘এখানেই আমার আপত্তি। উনি তো আপনার পরিবার। উনার ভালো মন্দ তো আপনার ভালো মন্দ তাহলে আপনি তো মিনিমাম খোজ খবর রাখবেন?’
- ‘কি করবো তুমি বল? কেউ যদি কথা না শোনে, তাহলে কি আমি লোক লাগাবো তার পিছনে, সেটা কি সন্মানের ব্যাপার হবে।’
- ‘এই ভাবে হাল ছেড়ে দিলে কিন্তু তুলির ভবিষ্যতও বিপন্ন হবে কাকু। আমি যতদুর জানি, ওর মা কিন্তু ভালো সঙ্গে নেই। যে কোনদিন বিপদে পড়তে পারেন। আপনি আমার বাবার বয়েসি আর বাবার বন্ধুস্থানিয় তবু বলতে বাধ্য হচ্ছি যে দেখবেন কোনোদিন তুলির মা কোথাও পাচার হয়ে যাবে। এর থেকে ভেঙ্গে আমি বলতে পারবোনা।’
-‘আমি সব বুঝি, আমি ওদের অনেকবার বলেছি যে এসব লাইনে যাচ্ছো, একদিন মা আর মেয়েকে বাক্স করে পাচার করে দেবে। কে শোনে কার কথা। এদের ছেড়ে দিতে হয় যেদিন ঠোক্কর খাবে সেদিন ঠিক পথে চলে আসবে।’
-‘সেই অপেক্ষাই থাকলে তো আরো বিপদ, এতো কেউ পাহারে উঠছে না যে উঠতে গিয়ে হাঁপ ধরে গিয়ে নেমে আসবে। কোনদিন দেখবেন রেপ হয়ে যাবে। তখন কি করবেন?’
তুলির বাবা চুপ করে রইলো।
আমি মরিয়া হয়ে উঠেছি তাই বলে চলেছি ‘এই যে রনি নামের ছেলেটা আপনাদের বাড়িতে আসে ওর খোঁজখবর রাখেন?’
আরে ও তো এক বড় চিটিংবাজের ছেলে। ওর বংশপরিচয় তুমি আমার থেকে নাও। ওর বাবা তো বিড়াট ঠগবাজ লোক। আর ব্যাটা গেছে বাপের ওপরে। তোমার বাবাকে জিজ্ঞেস করবে সুকুমার কি জিনিস বলে দেবে। আগে তো আমাদের একই থানা ছিলো। আমরা যারা পুরোনো লোক তারা ওর চরিত্র ভালো মতই জানি। কবার জেল খেটেছে তার ঠিক নেই। ওতো সুকুমারের ছেলে। আমি তো তুলির মাকে বলি ওই ছেলেটার ব্যাপারে আমার কথা বিশ্বাসই করেনা। বলে আমার মাথায় ভিমরতি হয়েছে।’
‘আপনি যানেন এই রনি, তুলিকে নষ্ট করতে চায়?’
তুলির বাবা থমকে আমার দিকে তাকালো তারপর মাথা নেরে নেরে আমাকে বললো ‘আমি জানতাম যে এরকম কিছুই হবে। এই স্বপনকেও তারাতে হবে সাথে সবকটা কে। মাঝে একবার হুমকি দিয়েছিলাম বলে ব্যাটা বাড়িতে আসা বন্ধ করেছে। কিন্তু ফোন করে তুলি তুলির মা দুজনেই কথা বলে। স্বপনের হাত ধরেই এ বাড়িতে ঢুকেছে ও। বিষঝারে কি ফুল ফোঁটে নাকি।’
-‘তো এই হুমকি আপনি আপনার বাড়ির লোককে দিতে পারেন না? আপনার মিসেস তো তুলিকে ঠেলে দিচ্ছে যে রনির কাছে কিসের কাজের ব্যাপারে।’
-‘কই তুলিতো আমাকে বলেনি? ও তো সব কথা আমাকে বলে।’
-‘তুলি হয়তো নিজেও জানে না। আমি বুঝতে পারছি না। নিজের মা হয়ে উনি কি ভাবে এসব করছেন?’
‘না না তুমি এরকম ভেবো না। ও অতসত ভাবেনা। আসলে সরল প্রকৃতির তাই সবাই সুযোগ নেয় এদের থেকে।’
-‘কাকু, আমি ছোট হয়ে বলছি। আপনি ভালো করে যাজ করুন। মানুষ ওপরে এক আর ভিতরে আরেক। হয়তো উনি আপনার সরলতার সুযোগ নিচ্ছে। এমনও তো হতে পারে।’
তুলির বাবা অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল তারপর আমাকে হতাশ গলায় বললেন ‘তাহলে তো মারদাঙ্গা করতে হয় এদের আটকাতে।’
-‘কিচ্ছু করতে হবেনা। আমার বয়েস অল্প, কিন্তু অনেক অভিজ্ঞতা। সেখান থেকে আপনাকে বলছি সব ঠিক হয়ে যাবে। শুধু আপাতত আপনি তুলিকে ওর মার সাথে কোথাও যেতে দেবেন না। তুলির এখনো ভালো মন্দের জ্ঞান হয়নি। বাকিটা আমি দেখছি।’
-‘আমি বরঞ্চ তোমাকে বলি, তুমি দেখছো দেখো, কিন্তু তোমার কাকিমার সাথে তুমি খুলে কথা বলো। বোঝালে ও ঠিক বুঝবে, কি হবে তুমি না হয় একটু ছোটই হলে ওর কাছে। তুমিই না হয় ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলে। কিন্তু ও আমার কথা শুনবে না, শোনাতে হলে আমাকে মারদাঙ্গা করতে হবে। এরা এমন জেদি। একবার যেটা করবে বলে সেটা করেই ছারে। এইখানে বোঝানোই একমাত্র রাস্তা। আর নয়তো আমাকে এদের মেরে জেলে যেতে হবে।’
- ‘ঠিক আছে, কিন্তু আগে আপনি তুলিকে বাচান। ও ফুলের মত মেয়ে। নষ্ট না হয়ে যায়...।’
[/HIDE]