বুরভ বলল, ‘এই অকাট মূর্খ আমলা সুন্দুকভকে দরখাস্ত লিখতে হবে। শালা আস্ত একটা ইডিয়ট!’ ‘সে আর বলতে!’ তার কথায় সায় দিল মাসলভ। ‘ব্যাটা অসৎ ক্যারিয়ারিস্ট…’ ‘এই শালাকে নিয়ে আলোচনা করা মানেই সময়ের অপচয়!’ দীর্ঘশ্বাস ফেলল বুরভ। তারপর সাদা একটা কাগজ নিয়ে দরখাস্ত লিখতে শুরু করল: ‘সর্বজনশ্রদ্ধেয় ত. সুন্দুকভ…’
অপরিচিত এক লেখক এসে ঢুকল সম্পাদকের দপ্তরে, হাত বাড়িয়ে এগিয়ে দিল এক তাড়া কবিতা। সম্পাদক পড়তে শুরু করলেন। তারপর একসময় ছুড়ে ফেলে দিলেন পাণ্ডুলিপি, বললেন: —কী এসব! এই জঞ্জাল কেন এনেছেন? —আপনার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ আজ। খালি হাতে কীভাবে আসি!
পাখিদের দিকে তাকিয়ে ফুটবল ভাবল, ওগুলোও যেহেতু উড়ছে, তার মানে ওদেরও কেউ না কেউ লাথি নিশ্চয়ই মারে। কেউ লাথি না দিলে ওড়া সম্ভব নয় কোনোমতেই (এটা আমি নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিত জানি)। এখন ফুটবল একটি অভিসন্দর্ভ লিখছে। বিষয়: আঘাত—উড্ডয়নের চালিকাশক্তি।
নির্বাচনী পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে নোটিশ বোর্ডে। সব ছাত্র ও অভিভাবকের হুড়োহুড়ি এমন, যেন আগে দেখলে ভালো রেজাল্ট আর পরে দেখলে ফেল! আমাদের ক্লাসের চটপটে ছেলে প্রিন্স দৌড়ে নোটিশ বোর্ডের কাছে গিয়ে রেজাল্ট দেখতে যায়। একজনের পিঠে খাতা রেখে মার্কস তুলছে প্রিন্স। অঙ্কে ৯০, ইংরেজিতে ৯২ আর বাংলায় ৮১। একেকটা বিষয়ে মার্কস দেখছে আর আনন্দে খাতা রাখা পিঠ চাপড়াচ্ছে। পরে খেয়াল করে দেখে, শার্ট পরিহিত মানুষটি কোনো ছেলে নয়, একজন মেয়ে! পোশাক দেখে যা বোঝার কোনো উপায় ছিল না। এতক্ষণে লজ্জায় লাল হয়ে গেছে প্রিন্সের মুখ। অল্প বয়সী ওই মেয়ে বিষয়টি বুঝতে পেরে কিছু না বলে প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে।
আমার ছোট খালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। স্কুলের নাবালক সব বাচ্চাদের পড়ানো যে কতটা ঝামেলার, তা খালার অভিজ্ঞতা শুনে বুঝতে পারি। কত অদ্ভুত কাণ্ড যে ঘটে! একদিন ক্লাস ওয়ানের রোলকলের পর এক মেয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে নালিশ জানাতে এল। কিন্তু কী ঘটেছে তা আর বলে না। মাথা নিচু করে কেবল ফোঁপায়। অগত্যা পেছন থেকে ওর এক সহপাঠী জানাল, তন্ময় ওকে বলেছে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ এবার নীরবতা ভেঙে মেয়েটা বলল, ‘বলেন ম্যাডাম, আমার কি ভালোবাসা করার বয়স হয়েছে?’