লেখকের কথা
( "এভরিথিং ইজ ফেয়ার হোয়েন লাভ মেকিং ইজ দেয়ার" গল্পটা শেষ করার পরে আপনাদের অনেক ফিডব্যাক পেয়েছি। অসংখ্য মেইল পেয়ে আমি আপ্লুত। নতুন গল্পের আবদারও কম নয়, তার ভিতরে অনেকেই আবার গোয়েন্দা তমালকে দেখতে চায়। তাই আবার ফিরে এলো গোয়েন্দা তমাল এই গল্পের হাত ধরে। আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে, এবং আপনাদের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবো না।)
প্রিয়,
তমালদা, কেমন আছো তুমি? আশাকরি দীর্ঘ অদর্শনে ভুলে যাওনি আমাকে। জার্মানি থেকে গত মাসে দেশে ফিরেছি। বিদেশ আমার ভালো লাগেনি তাই পাকাপাকিভাবে থাকার সুযোগ পেয়েও দেশে ফিরে এলাম। ওখানে যে গরলমুরি নেই। ওখানে যে তমালদা নেই। ওখানে যে নেই সেই সুবজ গাছে ঘেরা জোৎস্না ভেজা একটুকরো বাসরঘর।
দিল্লির একটা সংস্থায় চাকরির অফার পেয়ে তাই আর দেরি করলাম না সেই বাতাসে ফিরে আসতে যেখানে তুমিও নিঃশ্বাস নাও। আগামী মাসে জয়েন করতে হবে কাজে। তার আগে কিছুদিন গরলমুরিতে এসেছি। তোমার কি কয়েকদিন সময় হবে এখানে আসার? খুব ব্যস্ত কি? যদি সম্ভব হয় প্লিজ একবার এসো। কতোদিন তোমাকে দেখিনা! তোমার স্পর্শ, তোমার শরীরের গন্ধ, তোমার পাগল করা আদরের অনুভূতি আমাকে এই ক'বছর শয়নে স্বপনে পরম মমতায় জড়িয়ে ছিলো। কিন্তু গরলমুরিতে এসে আর তোমার স্মৃতিতে মন ভরছে না, তোমাকে কাছে পেতে ভীষন ইচ্ছা করছে তমালদা। হবে কি আমার মনস্কামনা পূর্ণ?
তমালদা, আমি জানি তোমাকে এভাবে বলার অধিকার আমার নেই। তুমি আমার কাছে ঈশ্বর প্রেরিত দূত! তোমাকে হয়তো দূর থেকে প্রণাম জানানোই আমার জন্য উচিৎ কাজ, কিন্তু তুমি তোমার উদারতা দিয়ে আমাকে কাছে টেনে নিয়েছো। কোনো দূরত্ব রাখোনি দুজনের মাঝে। আমার এই ছোট্ট জীবনের শ্রেষ্ঠ কয়েকটা দিন তুমিই উপহার দিয়েছো। কিন্তু মানুষের মন যে বড় অবুঝ! সুখের দিনগুলোর স্মৃতি তাকে সারা জীবন তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। বার বার ফিরে পেতে চায় সেই পরশপাথরের ছোঁয়া।
এতো কাছে ফিরে না এলে তোমাকে বিরক্ত করতাম না। কিন্তু গরলমুরিতে এসে নিজের বাড়িকে বড় অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছে নিজের কাছে। কিসের যেন অভাব, অথচ তোমার দয়ায় আজ আমার কোনো অভাব থাকার কথা নয়, তবুও নিজেকে বড় নিঃসঙ্গ লাগে। তোমার স্বপ্নে বিভোর হয়ে কাটিয়েছি এই ক'টা বছর। আমার প্রতিটা রাত রঙিন হয়ে উঠেছে তোমার সুখস্বপ্ন কল্পনায়। জার্মানিতে কয়েকজন ছেলে আমার কাছাকাছি এসেছে। তারা যে খুব খারাপ তা কিন্তু নয়, কিন্তু কোথায় যেন তারা এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় হেরে গেছে তোমার কাছে। তাদের সবল আলিঙ্গন সুখের চাইতে তোমার কল্পনায় আত্মরতির সুখ আমার কাছে অনেক মধুর মনে হয়েছে। এই তমালদা, জানো পরশু কি হয়েছে....!
বলতে খুব লজ্জা করছে, জানো, পরশুদিন পুর্নিমা ছিলো। বিদেশে থাকতে থাকতে তো অল্প রাতে ঘুমের অভ্যেস চলে গেছে, তাই একটু বেশি রাতে আমাদের সেই মাঠে ঘুরতে গিয়েছিলাম একা, যেখানে তোমার বুকে মাথা রেখে কুহেলিরর গান শুনেছিলাম। কি যে ভালো লাগছিলো তমালদা, বলে বোঝাতে পারবো না। বাতাসের মৃদু খসখস শব্দ যেন তোমার নিঃশ্বাস হয়ে সারা শরীর আন্দোলিত করে তুলছিলো। গায়ে কাঁটা দিচ্ছিলো, জানো? ভিতরে ভিতরে গরম হয়ে উঠছিলো তোমার জংলী বিল্লি, এই নামই তো তুমি দিয়েছিলে আমাকে! তুমি তো জানোই আমাদের সেই প্রথম মিলনের বনভূমি টুকু আমি কিনে নিয়েছি, আর যেমন ছিলো ঠিক তেমনি রাখতে বলেছিলাম। এখনো ঠিক তেমনি আছে তমালদা। সেই বড় ঝোপ গুলো, সেই তোমার ডাল ভেঙে ঝাড়ু তৈরি করা গাছটা, সেই গালিচার মতো ঘাসগুলো, সব অবিকল একই রকম ভাবে বসে শুধু প্রতিক্ষা করছে তোমার আসার। তুমি এলেই তারা জীবন্ত হয়ে উঠবে। তোমার জন্য তারা বিছানা সাজিয়ে দেবে আর আমি হবো সেই বিছানার গদি!... হি হি হি... খুব দুষ্টু হয়েছি, তাইনা?
শোনোই না কি ভয়ঙ্কর দুষ্টুমি করেছি আমি! মাঠে বসেই গরম হয়ে গেছিলাম, তাই চলে গেলাম সেই বন-শয্যায়। তোমার বুকে শুয়েছি ভেবে গড়াগড়ি করলাম কিছুক্ষণ। কচি লকলকে ঘাস গুলো ঠিক তোমার মতোই দুষ্টু, কানে যেভাবে জিভ দিয়ে তুমি সুড়সুড়ি দাও, সেভাবেই আমার শরীরের সেতারে ঝংকার তুলে আমাকে ভিজিয়ে তুললো। জামা কাপড়গুলো খুব বিরক্তিকর বাধার সৃষ্টি করছিলো, তাই তাদের বিচ্ছিন্ন করে ছুঁড়ে ফেললাম দূরে। সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়েই তোমার কাল্পনিক বুকে সঁপে দিলাম নিজেকে। কিন্তু এর পরে যা দরকার ছিলো, তমালের সেই বিখ্যাত যাদুদন্ড, তা তো পেলাম না, তাই নিজের হাত আর আঙুলের শরণাপন্ন হয়ে সাময়িক ভাবে শান্ত করলাম নিজেকে।
তারপর থেকেই একটা বিষাক্ত সাপ যেন দিনরাত আমাকে দংশন করে চলেছে। হে আমার ওঝা, আমার সংকটমোচন, আমার হৃদয়ের টুকরো, এসো... এসে তোমার এই প্রণয়িনীকে বুকে তুলে নাও, এই দংশনজ্বালা থেকে মুক্তি দাও আমায়! প্রণাম নিও.....
ইতি-
তোমার করুণাপ্রার্থী
গার্গী
( "এভরিথিং ইজ ফেয়ার হোয়েন লাভ মেকিং ইজ দেয়ার" গল্পটা শেষ করার পরে আপনাদের অনেক ফিডব্যাক পেয়েছি। অসংখ্য মেইল পেয়ে আমি আপ্লুত। নতুন গল্পের আবদারও কম নয়, তার ভিতরে অনেকেই আবার গোয়েন্দা তমালকে দেখতে চায়। তাই আবার ফিরে এলো গোয়েন্দা তমাল এই গল্পের হাত ধরে। আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে, এবং আপনাদের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবো না।)
প্রিয়,
তমালদা, কেমন আছো তুমি? আশাকরি দীর্ঘ অদর্শনে ভুলে যাওনি আমাকে। জার্মানি থেকে গত মাসে দেশে ফিরেছি। বিদেশ আমার ভালো লাগেনি তাই পাকাপাকিভাবে থাকার সুযোগ পেয়েও দেশে ফিরে এলাম। ওখানে যে গরলমুরি নেই। ওখানে যে তমালদা নেই। ওখানে যে নেই সেই সুবজ গাছে ঘেরা জোৎস্না ভেজা একটুকরো বাসরঘর।
দিল্লির একটা সংস্থায় চাকরির অফার পেয়ে তাই আর দেরি করলাম না সেই বাতাসে ফিরে আসতে যেখানে তুমিও নিঃশ্বাস নাও। আগামী মাসে জয়েন করতে হবে কাজে। তার আগে কিছুদিন গরলমুরিতে এসেছি। তোমার কি কয়েকদিন সময় হবে এখানে আসার? খুব ব্যস্ত কি? যদি সম্ভব হয় প্লিজ একবার এসো। কতোদিন তোমাকে দেখিনা! তোমার স্পর্শ, তোমার শরীরের গন্ধ, তোমার পাগল করা আদরের অনুভূতি আমাকে এই ক'বছর শয়নে স্বপনে পরম মমতায় জড়িয়ে ছিলো। কিন্তু গরলমুরিতে এসে আর তোমার স্মৃতিতে মন ভরছে না, তোমাকে কাছে পেতে ভীষন ইচ্ছা করছে তমালদা। হবে কি আমার মনস্কামনা পূর্ণ?
তমালদা, আমি জানি তোমাকে এভাবে বলার অধিকার আমার নেই। তুমি আমার কাছে ঈশ্বর প্রেরিত দূত! তোমাকে হয়তো দূর থেকে প্রণাম জানানোই আমার জন্য উচিৎ কাজ, কিন্তু তুমি তোমার উদারতা দিয়ে আমাকে কাছে টেনে নিয়েছো। কোনো দূরত্ব রাখোনি দুজনের মাঝে। আমার এই ছোট্ট জীবনের শ্রেষ্ঠ কয়েকটা দিন তুমিই উপহার দিয়েছো। কিন্তু মানুষের মন যে বড় অবুঝ! সুখের দিনগুলোর স্মৃতি তাকে সারা জীবন তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। বার বার ফিরে পেতে চায় সেই পরশপাথরের ছোঁয়া।
এতো কাছে ফিরে না এলে তোমাকে বিরক্ত করতাম না। কিন্তু গরলমুরিতে এসে নিজের বাড়িকে বড় অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছে নিজের কাছে। কিসের যেন অভাব, অথচ তোমার দয়ায় আজ আমার কোনো অভাব থাকার কথা নয়, তবুও নিজেকে বড় নিঃসঙ্গ লাগে। তোমার স্বপ্নে বিভোর হয়ে কাটিয়েছি এই ক'টা বছর। আমার প্রতিটা রাত রঙিন হয়ে উঠেছে তোমার সুখস্বপ্ন কল্পনায়। জার্মানিতে কয়েকজন ছেলে আমার কাছাকাছি এসেছে। তারা যে খুব খারাপ তা কিন্তু নয়, কিন্তু কোথায় যেন তারা এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় হেরে গেছে তোমার কাছে। তাদের সবল আলিঙ্গন সুখের চাইতে তোমার কল্পনায় আত্মরতির সুখ আমার কাছে অনেক মধুর মনে হয়েছে। এই তমালদা, জানো পরশু কি হয়েছে....!
বলতে খুব লজ্জা করছে, জানো, পরশুদিন পুর্নিমা ছিলো। বিদেশে থাকতে থাকতে তো অল্প রাতে ঘুমের অভ্যেস চলে গেছে, তাই একটু বেশি রাতে আমাদের সেই মাঠে ঘুরতে গিয়েছিলাম একা, যেখানে তোমার বুকে মাথা রেখে কুহেলিরর গান শুনেছিলাম। কি যে ভালো লাগছিলো তমালদা, বলে বোঝাতে পারবো না। বাতাসের মৃদু খসখস শব্দ যেন তোমার নিঃশ্বাস হয়ে সারা শরীর আন্দোলিত করে তুলছিলো। গায়ে কাঁটা দিচ্ছিলো, জানো? ভিতরে ভিতরে গরম হয়ে উঠছিলো তোমার জংলী বিল্লি, এই নামই তো তুমি দিয়েছিলে আমাকে! তুমি তো জানোই আমাদের সেই প্রথম মিলনের বনভূমি টুকু আমি কিনে নিয়েছি, আর যেমন ছিলো ঠিক তেমনি রাখতে বলেছিলাম। এখনো ঠিক তেমনি আছে তমালদা। সেই বড় ঝোপ গুলো, সেই তোমার ডাল ভেঙে ঝাড়ু তৈরি করা গাছটা, সেই গালিচার মতো ঘাসগুলো, সব অবিকল একই রকম ভাবে বসে শুধু প্রতিক্ষা করছে তোমার আসার। তুমি এলেই তারা জীবন্ত হয়ে উঠবে। তোমার জন্য তারা বিছানা সাজিয়ে দেবে আর আমি হবো সেই বিছানার গদি!... হি হি হি... খুব দুষ্টু হয়েছি, তাইনা?
শোনোই না কি ভয়ঙ্কর দুষ্টুমি করেছি আমি! মাঠে বসেই গরম হয়ে গেছিলাম, তাই চলে গেলাম সেই বন-শয্যায়। তোমার বুকে শুয়েছি ভেবে গড়াগড়ি করলাম কিছুক্ষণ। কচি লকলকে ঘাস গুলো ঠিক তোমার মতোই দুষ্টু, কানে যেভাবে জিভ দিয়ে তুমি সুড়সুড়ি দাও, সেভাবেই আমার শরীরের সেতারে ঝংকার তুলে আমাকে ভিজিয়ে তুললো। জামা কাপড়গুলো খুব বিরক্তিকর বাধার সৃষ্টি করছিলো, তাই তাদের বিচ্ছিন্ন করে ছুঁড়ে ফেললাম দূরে। সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়েই তোমার কাল্পনিক বুকে সঁপে দিলাম নিজেকে। কিন্তু এর পরে যা দরকার ছিলো, তমালের সেই বিখ্যাত যাদুদন্ড, তা তো পেলাম না, তাই নিজের হাত আর আঙুলের শরণাপন্ন হয়ে সাময়িক ভাবে শান্ত করলাম নিজেকে।
তারপর থেকেই একটা বিষাক্ত সাপ যেন দিনরাত আমাকে দংশন করে চলেছে। হে আমার ওঝা, আমার সংকটমোচন, আমার হৃদয়ের টুকরো, এসো... এসে তোমার এই প্রণয়িনীকে বুকে তুলে নাও, এই দংশনজ্বালা থেকে মুক্তি দাও আমায়! প্রণাম নিও.....
ইতি-
তোমার করুণাপ্রার্থী
গার্গী