আপনি কতোক্ষণ পরে ঘর থেকে বাইরে আসেন? প্রশ্ন করলো তমাল?
বাইরে একটা আওয়াজ শুনি, তারপর কে কে যেন চিৎকার করে ওঠে। সাথে সাথেই বাইরে আসি আমি, উত্তর দিলেন মধুছন্দা দেবী।
বেশ, এবারে আমার দ্বিতীয় প্রশ্নটার উত্তর দিন প্লিজ। বন্দনাকে আপনি কোথায় পেলেন?
আরও কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মধুছন্দা দেবী বললেন, মিষ্টির কথা আমি প্রথম জানতে পারি ঘনশ্যামের কাছে।
মিষ্টি? আপনি আগেও বন্দনাকে মিষ্টি বলে ডেকেছেন, কেন? আর ঘনশ্যাম কে? হেসে ফেললেন মধুছন্দা দেবী। ওর নাম বন্দনাই। প্রথম যখন ওকে দেখি ভীষণ মিষ্টি একটা ছটফটে মেয়ে মনে হয়েছিলো। তখন থেকেই ওকে আমি মিষ্টি বলে ডাকি। আর ঘনশ্যাম হলো আমার ড্রাইভার। অনেকদিনের পুরানো লোক।
বুঝলাম, তিনি বন্দনাকে কোথায় পেলেন? প্রশ্ন করলো তমাল।
মাঝে কিছুদিন ঘনশ্যাম আমাদের কাজ ছেড়ে দিয়েছিলো। দাদার সাথে মনোমালিন্য হওয়াতে বোধহয়। তখন ও একটা অনাথাশ্রমের গাড়ি চালাতো। সেখানেই ও মিষ্টিকে দেখে। ঘনশ্যাম খুব ভালোবাসতো ওকে। তাই আবার যখন আমি ঘনশ্যামকে কাজে ডেকে নিলাম, তখন সে আবদার জানায় বন্দনাকেও যেন এখানে এনে রাখি। একদিন সাথে করে নিয়ে এলো। দেখেই খুব মিষ্টি লাগলো মেয়েটাকে। বাড়িতেই নিয়ে এলাম দত্তক নিয়ে। তারপর নিজের ব্যবহারে বড্ড আপন হয়ে গেলো মেয়েটা। এখন আমার অন্ধের যষ্টি বলতে পারো ওকে। মিষ্টিই আমার দেখাশুনা করে।
প্রথাগত ভাবে দত্তক নিয়েছেন কি? জিজ্ঞেস করলো তমাল।
না ঠিক সরকারি ভাবে লেখাপড়া করে নেওয়া হয়নি যদিও.... সরকারি হোম তো না, এমনি একটা অনাথালয়, একটা এনজিও চালায়। তবে ওদের রেজিস্টারে সই সাবুদ আছে,... জানালেন মধুছন্দা দেবী।
কোন অনাথালয়? আবার জানতে চাইলো তমাল।
-আমার ঠিক মনে নেই নামটা। আনন্দ আশ্রম না কি যেন নাম। ঘনশ্যাম ভালো বলতে পারবে।
-কোথায় অনাথালয় টা?
-চিত্তরঞ্জনে।
তমাল উঠে পড়ে হাতজোড় করে নমস্কার করলো। বললো, অনেক ধন্যবাদ পিসিমা, আপাতত এই থাক, প্রয়োজন পড়লে আবার আসবো বিরক্ত করতে।
মধুছন্দা দেবী তমালকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলেন। তমাল এগিয়ে তার পাশে দাঁড়ালে মধুছন্দা দেবী তার একটা হাত নিজের হাতে তুলে নিয়ে বললেন, তমাল তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। এই কাজের উপযুক্ত বলেই মনে করি আমি। তুমি এই বাড়িতেই থেকে তদন্ত করো। আমি চাই, অপরাধী যেই হোক, সে যেন কঠিন শাস্তি পায়, তা সে আমার ভাইপো ভাইঝিরা হোক বা অন্য কেউ। আমার টাকার অভাব নেই তমাল, এই কাজের জন্য আমি তোমাকে এক লক্ষ টাকা দেবো।
তমাল বললো, না না, টাকার দরকার নেই। অদিতি আমার বন্ধু, তাই ওর কথা ভেবেই এসেছি এখানে। তাছাড়া আমার পারিশ্রমিক ও এতো বেশি না।
মধুছন্দা দেবী উত্তর দিলেন, হোক, তবু তোমাকে আমি এক লক্ষ টাকাই দেবো। অগ্রীম চেক লিখে দেবো আমি। বয়স হয়েছে, কখন কি হয়ে যায় বলাতো যায়না? তুমি আর না কোরোনা বাবা। পিসিমার এই কথাটা রাখো।
তমাল আর কি করে, একটু হেসে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলো মধুছন্দা দেবীর কাছ থেকে। দরজা খুলে বাইরে আসতেই হুমড়ি খেয়ে পড়লো বন্দনার উপরে। অসাবধানতায় আকস্মিক ভাবে তমালের দুই বাহুর ভিতরে চলে এলো বন্দনা। সে দরজায় কান লাগিয়ে আঁড়ি পাতছিলো। হঠাৎ দরজা খুলে যাওয়াতে টাল সামলাতে পারেনি। খিলখিল করে হেসে এমন ভাবে বন্দনা "ছাড়ুন" বললো, যেন তমাল একা পেয়ে ফাঁকা ঘরে তাকে জড়িয়ে ধরেছে!
তমাল হাত সরিয়ে নিয়ে বললো, আঁড়ি পেতে কথা শুনছিলে কেন? সে বললো, কই না তো! মায়ের ওষুধ খাবার সময় হয়েছে, তাই জানাতে যাচ্ছিলাম। আপনি তো হঠাৎ দরজা খুলে জড়িয়ে ধরলেন।
তমাল অবাক হয়ে বললো, আমি জড়িয়ে ধরলাম?
ভুরু দুটোতে একটা অদ্ভুত ঢেউ তুলে ঠোঁট কামড়ে বললো, হুম, ধরলেনই তো! তারপর তমালকে দ্রুত পাশ কাটিয়ে ঢুকে গেলো মধুছন্দা দেবীর ঘরের ভিতরে।
তমাল হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো যেন। বাপরে! এ মেয়ে তো দিনকে রাত করতে পারে! সামলে চলতে হবে... নিজেকে বোঝাতে বোঝাতে উঠে এলো তিনতলায়, নিজের ঘরের দিকে।
বাইরে একটা আওয়াজ শুনি, তারপর কে কে যেন চিৎকার করে ওঠে। সাথে সাথেই বাইরে আসি আমি, উত্তর দিলেন মধুছন্দা দেবী।
বেশ, এবারে আমার দ্বিতীয় প্রশ্নটার উত্তর দিন প্লিজ। বন্দনাকে আপনি কোথায় পেলেন?
আরও কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মধুছন্দা দেবী বললেন, মিষ্টির কথা আমি প্রথম জানতে পারি ঘনশ্যামের কাছে।
মিষ্টি? আপনি আগেও বন্দনাকে মিষ্টি বলে ডেকেছেন, কেন? আর ঘনশ্যাম কে? হেসে ফেললেন মধুছন্দা দেবী। ওর নাম বন্দনাই। প্রথম যখন ওকে দেখি ভীষণ মিষ্টি একটা ছটফটে মেয়ে মনে হয়েছিলো। তখন থেকেই ওকে আমি মিষ্টি বলে ডাকি। আর ঘনশ্যাম হলো আমার ড্রাইভার। অনেকদিনের পুরানো লোক।
বুঝলাম, তিনি বন্দনাকে কোথায় পেলেন? প্রশ্ন করলো তমাল।
মাঝে কিছুদিন ঘনশ্যাম আমাদের কাজ ছেড়ে দিয়েছিলো। দাদার সাথে মনোমালিন্য হওয়াতে বোধহয়। তখন ও একটা অনাথাশ্রমের গাড়ি চালাতো। সেখানেই ও মিষ্টিকে দেখে। ঘনশ্যাম খুব ভালোবাসতো ওকে। তাই আবার যখন আমি ঘনশ্যামকে কাজে ডেকে নিলাম, তখন সে আবদার জানায় বন্দনাকেও যেন এখানে এনে রাখি। একদিন সাথে করে নিয়ে এলো। দেখেই খুব মিষ্টি লাগলো মেয়েটাকে। বাড়িতেই নিয়ে এলাম দত্তক নিয়ে। তারপর নিজের ব্যবহারে বড্ড আপন হয়ে গেলো মেয়েটা। এখন আমার অন্ধের যষ্টি বলতে পারো ওকে। মিষ্টিই আমার দেখাশুনা করে।
প্রথাগত ভাবে দত্তক নিয়েছেন কি? জিজ্ঞেস করলো তমাল।
না ঠিক সরকারি ভাবে লেখাপড়া করে নেওয়া হয়নি যদিও.... সরকারি হোম তো না, এমনি একটা অনাথালয়, একটা এনজিও চালায়। তবে ওদের রেজিস্টারে সই সাবুদ আছে,... জানালেন মধুছন্দা দেবী।
কোন অনাথালয়? আবার জানতে চাইলো তমাল।
-আমার ঠিক মনে নেই নামটা। আনন্দ আশ্রম না কি যেন নাম। ঘনশ্যাম ভালো বলতে পারবে।
-কোথায় অনাথালয় টা?
-চিত্তরঞ্জনে।
তমাল উঠে পড়ে হাতজোড় করে নমস্কার করলো। বললো, অনেক ধন্যবাদ পিসিমা, আপাতত এই থাক, প্রয়োজন পড়লে আবার আসবো বিরক্ত করতে।
মধুছন্দা দেবী তমালকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলেন। তমাল এগিয়ে তার পাশে দাঁড়ালে মধুছন্দা দেবী তার একটা হাত নিজের হাতে তুলে নিয়ে বললেন, তমাল তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। এই কাজের উপযুক্ত বলেই মনে করি আমি। তুমি এই বাড়িতেই থেকে তদন্ত করো। আমি চাই, অপরাধী যেই হোক, সে যেন কঠিন শাস্তি পায়, তা সে আমার ভাইপো ভাইঝিরা হোক বা অন্য কেউ। আমার টাকার অভাব নেই তমাল, এই কাজের জন্য আমি তোমাকে এক লক্ষ টাকা দেবো।
তমাল বললো, না না, টাকার দরকার নেই। অদিতি আমার বন্ধু, তাই ওর কথা ভেবেই এসেছি এখানে। তাছাড়া আমার পারিশ্রমিক ও এতো বেশি না।
মধুছন্দা দেবী উত্তর দিলেন, হোক, তবু তোমাকে আমি এক লক্ষ টাকাই দেবো। অগ্রীম চেক লিখে দেবো আমি। বয়স হয়েছে, কখন কি হয়ে যায় বলাতো যায়না? তুমি আর না কোরোনা বাবা। পিসিমার এই কথাটা রাখো।
তমাল আর কি করে, একটু হেসে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলো মধুছন্দা দেবীর কাছ থেকে। দরজা খুলে বাইরে আসতেই হুমড়ি খেয়ে পড়লো বন্দনার উপরে। অসাবধানতায় আকস্মিক ভাবে তমালের দুই বাহুর ভিতরে চলে এলো বন্দনা। সে দরজায় কান লাগিয়ে আঁড়ি পাতছিলো। হঠাৎ দরজা খুলে যাওয়াতে টাল সামলাতে পারেনি। খিলখিল করে হেসে এমন ভাবে বন্দনা "ছাড়ুন" বললো, যেন তমাল একা পেয়ে ফাঁকা ঘরে তাকে জড়িয়ে ধরেছে!
তমাল হাত সরিয়ে নিয়ে বললো, আঁড়ি পেতে কথা শুনছিলে কেন? সে বললো, কই না তো! মায়ের ওষুধ খাবার সময় হয়েছে, তাই জানাতে যাচ্ছিলাম। আপনি তো হঠাৎ দরজা খুলে জড়িয়ে ধরলেন।
তমাল অবাক হয়ে বললো, আমি জড়িয়ে ধরলাম?
ভুরু দুটোতে একটা অদ্ভুত ঢেউ তুলে ঠোঁট কামড়ে বললো, হুম, ধরলেনই তো! তারপর তমালকে দ্রুত পাশ কাটিয়ে ঢুকে গেলো মধুছন্দা দেবীর ঘরের ভিতরে।
তমাল হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো যেন। বাপরে! এ মেয়ে তো দিনকে রাত করতে পারে! সামলে চলতে হবে... নিজেকে বোঝাতে বোঝাতে উঠে এলো তিনতলায়, নিজের ঘরের দিকে।