What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected আমার প্রিয় কবিতাগুলো............ (1 Viewer)

শুনুন কমরেডস- অমিতাভ দাশগুপ্ত
সব সময় বিপ্লবের কথা না ব’লে
যদি মাঝে মাঝে প্রেমের কথা বলি—
. আমাকে ক্ষমা করবেন, কমরেডস।
সব সময় ইস্তেহার না লিখে
যদি মাঝে মাঝে কবিতা লিখতে চাই—
. আমাকে ক্ষমা করবেন, কমরেডস।
সব সময় দলের কথা না ভেবে
যদি মাঝে মাঝে দেশের কথা ভেবে ফেলি—
. আমাকে ক্ষমা করবেন, কমরেডস।
পাঁচ আর সাত নম্বর ওয়ার্ডে আমাদের ভোট কম ব’লে
সেখানকার মানুষ রাস্তা পাবে কি পাবে না— জানতে চেয়েছিলাম।
আমার জিভ কেটে নেবেন না।
পার্টির ছেলে নয় ব’লে
ইকনমিক্স-এ ফার্স্ট ক্লাস চন্দন
কাজটা পাবে কি পাবে না— বলতে চেয়েছিলাম।
আমার নাক ঘষে দেবেন না।
দাগি বদমায়েশ
আমাদের হয়ে উর্দি বদল করলেই
রেহাই পাবে কি পাবে না— বলতে চেয়েছিলাম।
আমায় জুতোয় মাড়িয়ে যাবেন না।

বিশ্বাস করুন কমরেডস
আমি দলছুট নই বিক্ষুব্ধও নই ;
বিশ তিরিশ চল্লিশের গনগনে দিনগুলিতে
কমরেড লেনিন থেকে প্রিয় হো চি মিন
আমাদের যেসব কথা বলেছিলেন,
এই শতকের অন্তিম দশকে দাঁড়িয়ে
আমি স্রেফ সেই কথাগুলো
সেই সব আহত, রক্তিম অথচ একান্ত জরুরি কথাগুলো
আপনাদের সামনে
সরাসরি তুলে ধরতে চাই।
জানতে চাই
অবিশ্বাস আর ঘৃণার
ছোট ছোট জরজা জানালা ভেঙে
আমরা কি একবারের জন্যেও
সেই বিস্তীর্ণ মাঠের ওপর গিয়ে দাঁড়াতে পারি না
যেখানে
সূর্যের আলো
সব জায়গায় সমানভাবে এসে পড়ে ?
 
এ মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না- নবারুন ভট্টাচার্য
যে পিতা সন্তানের লাশ সনাক্ত করতে ভয় পায়
আমি তাকে ঘৃণা করি-
যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে
আমি তাকে ঘৃণা করি-
যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরাণী
প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না
আমি তাকে ঘৃণা করি-
আটজন মৃতদেহ
চেতনার পথ জুড়ে শুয়ে আছে
আমি অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাচ্ছি
আট জোড়া খোলা চোখ আমাকে ঘুমের মধ্যে দেখে
আমি চীৎকার করে উঠি
আমাকে তারা ডাকছে অবেলায় উদ্যানে সকল সময়
আমি উন্মাদ হয়ে যাব
আত্মহ্ত্যা করব
যা ইচ্ছা চায় তাই করব।

কবিতা এখনই লেখার সময়
ইস্তেহারে দেয়ালে স্টেনসিলে
নিজের রক্ত অশ্রু হাড় দিয়ে কোলাজ পদ্ধতিতে
এখনই কবিতা লেখা যায়
তীব্রতম যন্ত্রনায় ছিন্নভিন্ন মুখে
সন্ত্রাসের মুখোমুখি-ভ্যানের হেডলাইটের ঝলসানো আলোয়
স্থির দৃষ্টি রেখে
এখনই কবিতা ছুঁড়ে দেওয়া যায়
’৩৮ ও আরো যা যা আছে হত্যাকারীর কাছে
সব অস্বীকার করে এখনই কবিতা পড়া যায়

লক-আপের পাথর হিম কক্ষে
ময়না তদন্তের হ্যাজাক আলোক কাঁপিয়ে দিয়ে
হত্যাকারীর পরিচালিত বিচারালয়ে
মিথ্যা অশিক্ষার বিদ্যায়তনে
শোষণ ও ত্রাসের রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে
সামরিক-অসামরিক কর্তৃপক্ষের বুকে
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক
বাংলাদেশের কবিরাও
লোরকার মতো প্রস্তুত থাকুক
হত্যার শ্বাসরোধের লাশ নিখোঁজ হওয়ার স্টেনগানের গুলিতে সেলাই হয়ে
যাবার জন্য প্রস্তত থাকুক
তবু কবিতার গ্রামাঞ্চল দিয়ে
কবিতার শহরকে ঘিরে ফেলবার একান্ত দরকার।
এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না
এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না
এই বিস্তীর্ণ শ্মশান আমার দেশ না
এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না
আমি আমার দেশকে ফিরে কেড়ে নেব
বুকের মধ্যে টেনে নেব কুয়াশায় ভেজা কাশ বিকেল ও ভাসান
সমস্ত শরীর ঘিরে জোনাকি না পাহাড়ে পাহাড়ে জুম
অগণিত হৃদয় শস্য, রূপকথা ফুল নারী নদী
প্রতিটি শহীদের নামে এক একটি তারকার নাম দেব ইচ্ছে মতো
ডেকে নেব টলমলে হাওয়া রৌদ্রের ছায়ায় মাছের চোখের মত দীঘি
ভালোবাসা-যার থেকে আলোকবর্ষ দুরে জন্মাবধি অচ্ছুৎ হয়ে আছি-
তাকেও ডেকে নেব কাছে বিপ্লবের উৎসবের দিন।

হাজার ওয়াট আলো চোখে ফেলে রাত্রিদিন ইনটারোগেশন
মানি না
নখের মধ্যে সূঁচ বরফের চাঙড়ে শুইয়ে রাখা
মানি না
পা বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা যতক্ষণ রক্ত ঝরে নাক দিয়ে
মানি না
ঠোঁটের ওপরে বুট জ্বলন্ত শলাকায় সারা গায় ক্ষত
মানি না
ধারালো চাবুক দিয়ে খন্ড খন্ড রক্তাক্ত পিঠে সহসা আ্যালকোহল
মানি না
নগ্নদেহে ইলেকট্রিক শক কুৎসিৎ বিক্রত যৌন অত্যাচার
মানি না
পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা খুলির সঙ্গে রিভলবার ঠেঁকিয়ে গুলি
মানি না
কবিতা কোন বাধাকে স্বীকার করে না
কবিতা সশস্ত্র কবিতা স্বাধীন কবিতা নির্ভীক।
চেয়ে দেখো মায়কোভস্কি হিকমেত নেরুদা আরাগঁ এলুয়ার

তোমাদের কবিতাকে আমরা হেরে যেতে দিইনি
বরং সারাটা দেশ জুড়ে নতুন একটা মহাকাব্য লেখবার চেষ্টা চলছে
গেরিলা ছন্দে রচিত হতে চলেছে সকল অলংকার।
গর্জে উঠুক দল মাদল
প্রবাল দ্বীপের মত আদিবাসী গ্রাম
রক্তে লাল নীলক্ষেত
শঙ্খচূড়ের বিষ-ফেনা মুখে আহত তিতাস
বিষাক্ত মৃত্যুসিক্ত তৃষ্ঞায় কুচিলা
টণ্কারের সূর্য অন্ধ উৎক্ষিপ্ত গান্ডীবের ছিলা
তীক্ষ্ম তীর হিংস্রতম ফলা-
ভাল্লা তোমার টাঙ্গি পাশ
ঝলকে ঝলকে বল্লম চর-দখলের সড়কি বর্শা
মাদলের তালে তালে রক্তচক্ষু ট্রাইবাল টোটেম
বন্দুক কুরকি দা ও রাশি রাশি সাহস
এত সাহস যে আর ভয় করে না
আরো আছে ক্রেন, দাঁতালো বুলডজার বনভয়ের মিছিল
চলামান ডাইনামো টারবাইন লেদ ও ইনজিন
ধ্বস-নামা কয়লার মিথেন অন্ধকারে কঠিন হীরার মতো চোখ
আশ্চর্য ইস্পাতের হাতুড়ি
ডক জুটমিল ফার্ণেসের আকাশে উত্তোলিত সহস্র হাত
না ভয় করে না
ভয়ের ফ্যাকাশে মুখ কেমন অচেনা লাগে
যখন জানি মৃত্যু ভালোবাসা ছাড়া কিছু নয়।
আমাকে হ্ত্যা করলে
বাংলার সব কটি মাটির প্রদীপে শিখা হয়ে ছড়িয়ে যাব
আমার বিনাশ নেই-
বছর বছর মাটির মধ্য হতে সবুজ আশ্বাস হয়ে ফিরে আসব
আমার বিনাশ নেই-
সুখে থাকব, দুঃখে থাকব সন্তান-জন্মে সৎকারে
বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন
মানুষ যতদিন থাকবে ততদিন।
 
রামবাবু -সুবোধ সরকার
আগে আপনাকে ভালো লাগত, রামবাবু
এখন আপনি বদলে গেছেন।
কখনও কখনও আপনাকে কংগ্রেস মনে হত
কখনও সি.পি.এম
কখনও সি.পি.আই
মার্কিন সেনেটে আপনার নাম উঠেছিল
কিন্তু ভিয়েতনামের পক্ষে
আপনি বালিদ্বীপ পর্যন্ত ছুটে গেছেন।

বিহারের লছমনপুরে আপনাকে প্রথম দেখি
ততদিনে আপনার স্ত্রী আপনাকে ছেড়ে গেছেন
বিহারের গ্রাম
আপনি তো ভালোই জানেন, খুব সুবিধের জায়গা নয়
ওখানকার লোকেরা বলে
পাতাল প্রবেশ হল স্রেফ ধাপ্পা
আপনি নাকি
উত্তরপ্রদেশের গ্রামে একটা কুয়োর ভেতর
বউকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন।
এখনও সেই কুয়োর ভেতর বসে
মা সীতা কাঁদেন,
তখন গোটা বিহারের মেয়েরা
উত্তরপ্রদেশের মেয়েরা
রান্না করতে করতে কাঁদে
আর চোখ মছে।

আগে আপনাকে ভালো লাগত, রামবাবু
কত রাত্রে আমি না খেয়ে
মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়েছি
শুধু আপনার তীর ধনুকের গল্প শুনতে শুনতে।
ছোটবেলায় আপনার ভাইকেও আমার খুব ভালো লাগত
কী সুন্দর ভাই
এক ডাকে সাড়া দেয়
যে কোনও দরকারে দাদা বললে
ভাই একপায়ে খাড়া।
পরে বড় হয়ে দেখলাম
আপনার ভাই বীর হতে পারে তবে বড্ড মেনিমুখো
দাদার সমস্ত অর্ডার
সাপ্লাই দেওয়াতেই তার সুকৃতি।
আমি যদি আপনার ভাই হতাম
ও.বি.সি-দের মেরে ফেলার আগে বলতাম
দাদা, এ কাজ করিস না,
লঙ্কা পোড়ানোর আগে আমি বলতাম
ঠিক হচ্ছে না, দাদা, ফিরে চল।

আপনি এবং আপনার হনুমান
শুধু ভারতবর্ষে নয়
গোটা উপমহাদেশে হয়ে উঠলেন সোশ্যালিজম
মার্কস এঙ্গেলস এলেন
মাও-সে-তুং হো-চি-মিন এলেন
এল শিল্পায়ন পোখরান
কিন্তু আপনি এবং হনুমান এখনও পর্যন্ত
উত্তম-সুচিত্রার চেয়েও জনপ্রিয় জুটি।
কোভালাম বিচ থেকে বনগাঁর সেলুনে
আপনাদের জোড়া ক্যালেন্ডার।

আগে আপনাকে ভাল লাগত, রামবাবু
ত্রিপুরায় উপজাতিরা ঢুকে পড়ল
আপনি হনুমানকে দিয়ে খাদ্য পাঠালেন
মরিচঝাঁপি তৈরি হল
আপনি পানীয় জলের ব্যবস্থা করলেন
বাংলাদেশ থেকে পিল পিল করে পিপীলিকারা
চলে এল শিয়ালদায়
আপনি আপনার বৈমাত্রেয় বোন
ইন্দিরার পাশে দাঁড়ালেন, জলপাইগুড়িতে দাঁড়ালেন
অন্ধ্রে গিয়ে দাঁড়ালেন।

তখনও আপনি দাঁড়াতেন
আপনাকে নিয়ে লেখা
তুলসীদাসের রামচরিতমানস
আপনিও শুনতেন তখন
আপনার চোখেও বাষ্প ঘনিয়ে আসত।

কিন্তু এখন আপনি আর
আপনি নেই, আপনি
আদবানীকে ভুজুং দিচ্ছেন
জয়ললিতাকে ফুচুং।
পাকিস্তান নামে সবচেয়ে বড় বিষফোঁড়াটাকে বলছেন ফুসকুড়ি?
আমি বলব আপনিই নষ্টের গোড়া
বাল্মীকি আপনাকে যতই নরশ্রেষ্ঠ বলুক
নির্মল জলের মত বলুক
আমার সন্দেহ আছে
ওরা যখন অযোধ্যায় গেল
আপনার বাধা দেওয়া উচিৎ ছিল।
বম্বে থেকে বাঙালিকে ধরে ধরে
ফেরত পাঠাল মহারাষ্ট্র
তাহলে উড়িষ্যা থেকে মালয়ালিদের
ফেরত পাঠাক কলিঙ্গরাজ।
কর্ণাটক থেকে তামিলদের
পাঞ্জাব থেকে মারাঠিদের।
সারা দেশ জুড়ে লেগে যাক ফেরত আর ফেরত
এই ফেরত দেওয়ার মারি ও মড়ক
আপনি সামলাতে পারবেন, রামবাবু?

বনে থাকার দিনগুলো ভুলে যাবেন না
আপনার বাবার ভুলের জন্য
মনে মনে আপনি বাবাকে ক্ষমা করেননি কোনও দিন
আমি জানি
জঙ্গলে থাকতে আপনার ভালো লাগত না
সেই খারাপ দিনগুলো আপনি মনে করুন
তারও চেয়ে খারাপ দিন
আমাদের সামনে, আপনার হাত কাঁপছে না, ভয় করছে না
আপনার নামে ভারতবর্ষে
হাজার হাজার বালকের নাম
তারা বড়বাজারে, মেটিয়াবুরুজে, চাঁদনিচকের
দোকানে দোকানে কাজ করে
দিনান্তে বাড়িতে আটা কিনে নিয়ে যায়
ধোঁয়াভর্তি উনুনে বসে
তাদের মা রুটি ভেজে দেয়।

সারা ভারতবর্ষ জুড়ে
সন্ধে সাড়ে আটটায় কেরোসিনের কুপি জ্বালিয়ে
যে বালকেরা এখন
দুটো রুটি নিয়ে বসেছে খাবে বলে
তাদের কে রাম কে রহিম
সেটা আপনার দেখার কথা ছিল না

বাল্মীকির সাথে দেখা হলে বলবেন
রামায়ণের পরবর্তী সংস্করণের আগে
অর্থাৎ প্রেসে পাঠাবার আগে
উনি যেন নতুন করে আর একবার লিখে দেন ।
 
একজন টেররিস্টের চিঠি – সুবোধ সরকার


প্রিয়তমাসু
আমি তিনদিন খাইনি। কেউ কোনও খাবার দিয়ে যায়নি।
কী করে দেবে? গুহার বাইরে প্রচন্ড বরফ পড়ছে।
যে কোনও দিন আমি গুলিতে মারা যাব। যে কোনও দিন
তুমি টিভির পর্দায় আমার মুখ দেখতে পাবে।আমি
গুহার ভেতর সারারাত কম্পিউটরের সামনে বসে। কতদিন
আমি বকুল ফুলের গন্ধ পাইনি। কতদিন আমি গরম রুটি
খাইনি। কতদিন আমি তোমার ঘাসে হাত দিইনি।
কালো ঘাস। আঃ! ভাবলেই চে গুয়েভারা ছুটে বেড়ায়
শরীরে। স্টালিনকে হাতের মুঠোয় ধরে বসে থাকি।
তার মুখ দিয়ে গরম বেরিয়ে আসে। আঃ, গরম।
আমার স্টালিন ভালো আছে। তোমার সাইবেরিয়া?
হা,হা,হা… এখানে কেউ আমার জন্মদিন কবে
জানে না।

আমি পড়াশুনায় ভাল ছিলাম। অধ্যাপক বাবার ছেলে।
কম্পিউটরে আমার চাইতে কেউ ভাল ছিলনা। আজ আমি
গুহায় বসে আছি।কিন্তু কেন? প্রিয়তমাসু,মাই লাভ,তুমি
এর উত্তর পাবে যদি অত্যাচারের ইতিহাস পড়ো। কত হাজার
কোটি ডলার খরচ করে ওরা গরিবকে আরও গরিব
করে চলেছে। ১১ বছরের একটি
বালককে একটি পাউরুটি কিনে দিয়ে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম,
তোর কি হয়েছে রে? সে গোগ্রাসে পাউরুটি কামড়
দিয়ে বলেছিলঃ আমার বাবা-মাকে ওরা পুড়িয়ে
দিয়েছে,জ্যান্ত। ছেলেটা খেতে খেতে কর গুনছিল,
বাবা-মা, দুই ভাই, তিন বোন…এক,দুই,তিন,চার,পাঁচ…
হ্যাঁ, এগারো জন। ছেলেটার নাম বলব না। কে খোঁজো। আজীবন
খুঁজে যাও।

প্রিয়তমা, আমাকে আর বেশি দিন ওরা বাঁচিয়ে রাখবেনা।
তার আগেই আমি ওদের দু’দুটো ঘাঁটি উড়িয়ে দেব।
ওদেরতো পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়া যায়না, ওরা
আবার জন্মায়, আবার গনতন্ত্র বানায়, আবার পার্লামেন্টে
যায়।আবার প্রেস মিট করে। একটা সত্যি কথা লিখি,
ওরা গনতন্ত্র দিয়ে যা করায়, আমরাও AK-47 কে,
দিয়ে তাই তাই করাই। ওদেরটা দোষ নয়, আমাদেরটা দোষ।
আমি মারা যাব। তার আগে একবার, যদি
একবার তোমাকে দেখতে পেতাম। তোমার হাত ধরতে
পারতাম।যদি একবার তোমার ভেতরে ঢুকতে পারতাম, যেভাবে
বরফ ঢোকে গুহায়,যেভাবে শিকড় ঢোকে পাথরে,যেভাবে
ভাইরাস ঢোকে কম্পিউটরে।

আজ আমি একজন টেররিস্ট। হয়তো এটাই আমার শেষ চিঠি।
বলতো,কেন আমার মত ছেলে টেররিস্ট হবে?
কেন আমি ঘর-বাড়ি ছেড়ে,মায়ের হাতের খাবার ছেড়ে,
ভাল চাকরী ছেড়ে;গুহার জীবন,জঙ্গলের জীবন,
বরফের জীবন বেছে নিলাম?

আমি মাতাল হতে পারতাম।লম্পট হতে পারতাম। একজন
মাতালকে মেনে নেয় সমাজ। একজন লম্পটকে মেনে নেয় রাষ্ট্র।
একজন মাফিয়া বিধায়ককে মেনে নেয় এসেম্বলি। কিন্তু
একজন টেররিস্টকে মেনে নেয়া যায়না।
কতদিন তোমার স্নান করা চুলের গন্ধ পাইনি।
চোখ ভরে আসে জলে। পাউরুটি খাওয়া শেষ করে
১১ বছরের ছেলেটি বলেছিল,আর আছে? আমি আর
একটা পাউরুটি কিনে দিয়ে বলেছিলাম; শোন্ তুই বড় হয়ে
কী করবি? সে বলেছিলঃ বদলা নেব।
ছেলেটার মুখ ভেসে ওঠে যেই মনে হয় আমার সামনে
অনেক অনেক কাজ। অনেকগুলো খারাপ কাজ। ভুল
বললাম,অনেক,অনেক,ভালো কাজ।

আমাকে ক্ষমা করো। মা’কে একবার দেখে এসো। বোকা মেয়েটা
আমার মা হয়ে কোনও অন্যায় করেনি।

ইতি-
কোন নাম নেই

পুনশ্চঃ আমি মরে গেলে, আমাকে তুমি ‘আকাশ’ বলে ডেকো।
 
যমুনাবতী -শঙ্খ ঘোষ
One more unfortunate
Weary of breath
Rashly importunate
Gone to her death. – Thomas Hood

নিভন্ত এই চুল্লীতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে।
নোটন নোটন পায়রাগুলি
খাঁচাতে বন্দী
দু’এক মুঠো ভাত পেলে তা
ওড়াতে মন দি’।

হায় তোকে ভাত দিই কী করে যে ভাত দিই হায়
হায় তোকে ভাত দেব কী দিয়ে যে ভাত দেব হায়

নিভন্ত এই চুল্লী তবে
একটু আগুন দে –
হাড়ের শিরায় শিখার মাতন
মরার আনন্দে।
দু’পারে দুই রুই কাৎলার
মারণী ফন্দী
বাঁচার আশায় হাত-হাতিয়ার
মৃত্যুতে মন দি’।

বর্গী না টর্গী না, যমকে কে সামলায়!
ধার-চকচকে থাবা দেখছ না হামলায়?
যাস্ নে ও-হামলায়, যাস্ নে।।

কান্না কন্যার মায়ের ধমনীতে আকুল ঢেউ তোলে, জ্বলে না-
মায়ের কান্নায় মেয়ের রক্তের উষ্ণ হাহাকার মরে না-
চলল মেয়ে রণে চলল।
বাজে না ডম্বরু, অস্ত্র ঝন্ ঝন্ করে না, জানল না কেউ তা
চলল মেয়ে রণে চলল।
পেশীর দৃঢ় ব্যথা, মুঠোর দৃঢ় কথা, চোখের দৃঢ় জ্বালা সঙ্গে
চলল মেয়ে রণে চলল।

নেকড়ে-ওজর মৃত্যু এল
মৃত্যুরই গান গা-
মায়ের চোখে বাপের চোখে
দু-তিনটে গঙ্গা।
দূর্বাতে তার রক্ত লেগে
সহস্র সঙ্গী
জাগে ধক্ ধক্, যজ্ঞে ঢালে
সহস্র মণ ঘি।

যমুনাবতী সরস্বতী কাল যমুনার বিয়ে
যমুনা তার বাসর রচে বারুদ বুকে দিয়ে
বিষের টোপর নিয়ে।
যমুনাবতী সরস্বতী গেছে এ পথ দিয়ে
দিয়েছে পথ, গিয়ে।

নিভন্ত এই চুল্লীতে বোন আগুন ফলেছে।
 
অসাধারণ সব কবিতা এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে
ধন্যবাদ

থ্রেড স্টিকি করে দিলাম
এমন অনন্য সংগ্রহ শুরুতেই থাকা উচিত
 
বাহঃ দারুন। খুব সুন্দর অনবদ্য একটা কবিতা। মন ছুয়ে গেল। ধন্যবাদ। সীমাহীন আনন্দ পেলাম।
 
অনন্য অসাধারন সব কবিতা। মন ছুয়ে যায়।
 
জীবনানন্দের একটি কবিতা শেয়ার করছি আপনাদের সাথে।

তুমিই যদি চলে যাবে তবে
হরির নামের চেয়ে ও কেন বড় হয়ে রবে
তোমার জন্যে আমার ভালবাসা?
অনন্ত কাল ধরে বটের গাছে পাতার যাওয়া-আসা
তুমি বুঝি যাবে একটি বারের জন্যে এসে?

যদি এমন চলে যাবে তবে
কোনদিন ও স্থির হয়ে কি রবে
গাছের পাতা, জীবন নদীর জল
তোমায় পেলে পাবে সে শেষ ফল
ঘুমে-অন্ধকারে ঘুমে এসে।

জানি নদী, নীল সাগর ও দু-দণ্ডে শুকায়
চিতায় শরীর ফেলে রেখে মন ও কোথায় যায়।
তোমার আমার ফুরিয়ে যাবার সময় তবু নেই।
জন্মে জন্মে, তবু জন্মে জন্মে ভালোবেসে।
 
নিধুবাবুর একটি কবিতার পংতি শেয়ার করছি।

কি হলো আমার সই, বল কি করি?
নয়নে লাগিলো যাহে কেমনে পাশরি
হেরিলে হরিষচিত, না হেরিলে মরি
তৃষিত চাতকি যেন থাকে আশা করি
ঘন মুখ হেরি সুখ, দুখি বিনে বারি
 

Users who are viewing this thread

Back
Top