"অন্য জঙ্গলে বাঘ দেখা মানে সাইটিং
আর সুন্দরবনে বাঘ দেখা মানে ফিল্"
(আমার কাছে)
চারদিনের ফটোগ্ৰাফি ট্রিপ এ প্রথম দুদিন অতিক্রান্ত। সাত্যকি সঙ্গে গোলক ও টিম আমাদের ছয় জন কে নিয়ে দুদিন ধরে দোবাঁকি ক্যাম্প-ধনার খাল- নবাঁকি- গাজি খালি খাল- পাঁচ এর পাড়-ছয় এর পাড় এবং আরও নানান জায়গায় ম্যানগ্ৰোভ অরন্যের অলিতে-গলিতে টহল দিচ্ছে। গতকালের আর সকালের টাটকা পায়ের ছাপ বিশ্লেষণ করে ওদের অফুরান অভিজ্ঞতা দিয়ে সম্ভাব্য গতিপথ নির্নয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাঁকে দর্শন পেতে গেলে তাঁর মন পড়তে হয় যে ! দুদিনের সাফারি শেষে ওরা বাদে আমাদের ছ জনেরই মনের মধ্যে কু-উঁকি দিতে শুরু করেছে। বাঘ দেখা না গেলেও এই ম্যানগ্ৰোভ বাদাবনের সৌন্দর্য্য ও বন্যপ্রান-পক্ষিকূল সম্ভার যে কত উৎকৃষ্ট তাই নিয়ে পরস্পর পরস্পরকে সান্ত্বনা দিতে শুরু করেছি। অবিশ্যি তা একেবারেই সত্যি । সুন্দরবন এক রূপকথার নাম! কিন্তু পরিশেষে দক্ষিণরায় কে অন্তত একঝলক দেখে পরিতৃপ্ত হওয়ার ইচ্ছেটাকে কোনভাবেই অবদমন করা যাচ্ছে না। অবশেষে তৃতীয় দিন সকালে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সকাল ৯:৫৮ । বোট নিয়ে আমরা তখন পিরখালির জঙ্গলের দিকে। একটা মাছ ধরার নৌকো দূরে কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করলো। প্রথম ডাক এলো সাত্যকির থেকে। চেঁচিয়ে বললো দাদা ক্যামেরা..বাঘ সাঁতার কেটে নদী পার হচ্ছে! ছবি তুলবো কি ! উত্তেজনাতেই তো হাত পা ঠাণ্ডা ! মহাদেব দা বোট সর্বোচ্চ গতিতে লাগালো। কিন্তু তাঁর তুলনা তো তিনিই। আমরা দূরত্ব কমাচ্ছি দেখেই ততোধিক গতিতে সাঁতার কেটে একলাফে ডাঙায় উঠেই অদৃশ্য ! সব্বাই খুশি। অন্তত দর্শন তো হল ! এ যাত্রায় ছবি যা হলো তা সবই দূর থেকে। ক্যামেরার ছবি দেখে বোঝা গেল এটা বড়মা। এবার আমরা সবাই উশখুশ করছি কাছ থেকে বড়মার একটু ঠিকঠাক ছবি তুলবো। কিন্তু বড়মা জঙ্গলের গভীরে আবার বেপাত্তা। পরবর্তী দুঘন্টা তন্নতন্ন করে খুঁজেও আর স্পট্ করা যাচ্ছে না। কিন্তু হলে কি হবে! মা বনবিবির কৃপাদৃষ্টি আবার আমাদের ওপর বর্ষালো । ঘড়িতে সময় বেলা ১২:০৪ । পিরখালিতে দুই দ্বীপের মধ্যে মাঝ-নদীতে তখন ভাসছি। সাত্যকি-গোলক আবার চেঁচিয়ে উঠলো। বাঘ ! বাঘ! বাঘ!
ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখ রেখে সেই বহু-প্রতীক্ষিত মূহুর্তের সাক্ষী হলাম। গড়ান গাছের ঠাসবুনোট জঙ্গলের আগায় আলো-আঁধারিতে রাজকীয় ভঙ্গিতে বসে আছে বড়মা !
প্রথম সুন্দরবন সফরেই বাঘ দেখার অলীক স্বপ্ন সত্যি হলো!
জয় মা বনবিবি
ভালো থেকো দক্ষিণরায়..
সুন্দরবন
ডিসেম্বর ২০২৩
(সংগৃহীত)
আর সুন্দরবনে বাঘ দেখা মানে ফিল্"
(আমার কাছে)
চারদিনের ফটোগ্ৰাফি ট্রিপ এ প্রথম দুদিন অতিক্রান্ত। সাত্যকি সঙ্গে গোলক ও টিম আমাদের ছয় জন কে নিয়ে দুদিন ধরে দোবাঁকি ক্যাম্প-ধনার খাল- নবাঁকি- গাজি খালি খাল- পাঁচ এর পাড়-ছয় এর পাড় এবং আরও নানান জায়গায় ম্যানগ্ৰোভ অরন্যের অলিতে-গলিতে টহল দিচ্ছে। গতকালের আর সকালের টাটকা পায়ের ছাপ বিশ্লেষণ করে ওদের অফুরান অভিজ্ঞতা দিয়ে সম্ভাব্য গতিপথ নির্নয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাঁকে দর্শন পেতে গেলে তাঁর মন পড়তে হয় যে ! দুদিনের সাফারি শেষে ওরা বাদে আমাদের ছ জনেরই মনের মধ্যে কু-উঁকি দিতে শুরু করেছে। বাঘ দেখা না গেলেও এই ম্যানগ্ৰোভ বাদাবনের সৌন্দর্য্য ও বন্যপ্রান-পক্ষিকূল সম্ভার যে কত উৎকৃষ্ট তাই নিয়ে পরস্পর পরস্পরকে সান্ত্বনা দিতে শুরু করেছি। অবিশ্যি তা একেবারেই সত্যি । সুন্দরবন এক রূপকথার নাম! কিন্তু পরিশেষে দক্ষিণরায় কে অন্তত একঝলক দেখে পরিতৃপ্ত হওয়ার ইচ্ছেটাকে কোনভাবেই অবদমন করা যাচ্ছে না। অবশেষে তৃতীয় দিন সকালে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সকাল ৯:৫৮ । বোট নিয়ে আমরা তখন পিরখালির জঙ্গলের দিকে। একটা মাছ ধরার নৌকো দূরে কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করলো। প্রথম ডাক এলো সাত্যকির থেকে। চেঁচিয়ে বললো দাদা ক্যামেরা..বাঘ সাঁতার কেটে নদী পার হচ্ছে! ছবি তুলবো কি ! উত্তেজনাতেই তো হাত পা ঠাণ্ডা ! মহাদেব দা বোট সর্বোচ্চ গতিতে লাগালো। কিন্তু তাঁর তুলনা তো তিনিই। আমরা দূরত্ব কমাচ্ছি দেখেই ততোধিক গতিতে সাঁতার কেটে একলাফে ডাঙায় উঠেই অদৃশ্য ! সব্বাই খুশি। অন্তত দর্শন তো হল ! এ যাত্রায় ছবি যা হলো তা সবই দূর থেকে। ক্যামেরার ছবি দেখে বোঝা গেল এটা বড়মা। এবার আমরা সবাই উশখুশ করছি কাছ থেকে বড়মার একটু ঠিকঠাক ছবি তুলবো। কিন্তু বড়মা জঙ্গলের গভীরে আবার বেপাত্তা। পরবর্তী দুঘন্টা তন্নতন্ন করে খুঁজেও আর স্পট্ করা যাচ্ছে না। কিন্তু হলে কি হবে! মা বনবিবির কৃপাদৃষ্টি আবার আমাদের ওপর বর্ষালো । ঘড়িতে সময় বেলা ১২:০৪ । পিরখালিতে দুই দ্বীপের মধ্যে মাঝ-নদীতে তখন ভাসছি। সাত্যকি-গোলক আবার চেঁচিয়ে উঠলো। বাঘ ! বাঘ! বাঘ!
ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখ রেখে সেই বহু-প্রতীক্ষিত মূহুর্তের সাক্ষী হলাম। গড়ান গাছের ঠাসবুনোট জঙ্গলের আগায় আলো-আঁধারিতে রাজকীয় ভঙ্গিতে বসে আছে বড়মা !
প্রথম সুন্দরবন সফরেই বাঘ দেখার অলীক স্বপ্ন সত্যি হলো!
জয় মা বনবিবি
ভালো থেকো দক্ষিণরায়..
সুন্দরবন
ডিসেম্বর ২০২৩
(সংগৃহীত)