Please follow forum rules and posting guidelines for protecting your account!

পথের পাঁচালীর চুনিবালা দেবীকে মনে আছে। (1 Viewer)

  • Thread starter Thread starter BRICK
  • Start date Start date
  • Tagged users Tagged users None

Welcome to Nirjonmela Desi Forum !

Talk about the things that matter to you!! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today!

BRICK

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Dec 12, 2019
Threads
355
Messages
10,072
Visit site
Credits
81,757
Strawberry
Glasses sunglasses
T-Shirt
Calculator
Watermelon
Pistol
সত্যজিত রায়ের " পথের পাঁচালী"- র ইন্দির ঠাকরুন এর ভূমিকায় অভিনেত্রী" চুনীবালা দেবী" -হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্না প্রথম ভারতীয় অভিনেতা / অভিনেত্রী। এ খবর সম্ভবত আমরা খুব কম জনই রাখি! আজ সেই চুনীবালা দেবীকে নিয়ে অনেকের কাছে কিছু অজানা খবর নিয়ে " জানার কোন শেষ নাই " এর দরবারে পেশ করতে এসেছি।
★★

সত্যজিত তখন" পথের পাঁচালী " সিনেমার হরিহর, সর্বজায়া,অপু, দুর্গা সব চরিত্রের অভিনেতা/ অভিনেত্রী পেয়ে গেছেন কিন্ত ইন্দির ঠাকরুন চরিত্রের অভিনেত্রীকে খুঁজে পাচ্ছেন না। মাথায় হাত। ঐ রকম একজন বৃদ্ধা অভিনেত্রী না পেলে যে এ সিনেমা করাই যাবে না! অবশেষে সন্ধান মিলল ঠাকরুনের। পাইকপাড়ায় থাকেন এক বৃদ্ধা। বয়েস আশি। নাম তার চুনীবালা দেবী।

এক সকালে সত্যজিত হাজির হলেন চুনীবালা দেবীর বস্তির বাড়ীতে। সত্যজিত একটা মোড়ায় মুখোমুখি বসলেন চুনীবালার সামনে।বহুদিন আগে একটি সিনেমার ছোট্ট একটি দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন।সত্যজিত রায় একজায়গায় বলেছেন... তখন চুনীবালা দেবীর বয়েস আশি পেরিয়ে গেছে। তোবড়ানো গাল,দেহের চামড়া ঝুলে পড়েছে। ঠিক যেমনটি সত্যজিত ভেবেছিলেন এই চরিত্রটিকে ঠিক তেমনি। কথায় কথায় সত্যজিত জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি পথের পাঁচালী পড়েছেন? বৃদ্ধা চুনীবালা অল্প লেখাপড়া শিখেছিলেন। কিছু বইও পড়েছিলেন।
চুনীবালা বললেন, হ্যাঁ পড়েছি বাবা।
- সিনেমায় ইন্দির ঠাকরুন করতে পারবেন?
চুনীবালা ফোকলা দাঁত বার করে হেসে বললেন, " তা তোমরা একটু শিখিয়ে পড়িয়ে নিলে পারবো বই কি বাবা!"
সত্যজিত বললেন, "বলুন তো একটা ছড়া? শুনি একটু।"
চুনীবালা " ঘুম পাড়ানির মাসিপিসি... " পুরো ছড়াটা গড়গড় করে সুন্দর করে বলে দিলেন। সত্যজিত পরে একজায়গায় বলেছেন, ঐ ছড়াটা আমি চার লাইনের বেশি বলতে পারতাম না। কিন্তু উনি সবটা বলে দিলেন। এই বয়েসে আশ্চর্য স্মৃতি দেখে সত্যজিত স্তম্ভিত হয়ে গেলেন! সত্যজিত বুঝে গেলেন ইন্দির ঠাকরুন পেয়ে গেছেন।
কিন্তু কলকাতা থেকে বড়াল গ্রামে প্রতিদিন শুটিং - এ যাবার ধকল এই বয়েসে নিতে পারবেন কিনা জিজ্ঞাসা করাতে চুনীবালা বললেন", খুব পারবো। তোমরা এত কষ্ট করে বই করছো, ওটুকু কষ্ট আমি ঠিক করতে পারবো। "
ওনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল প্রতিদিন কত টাকা পারিশ্রমিক নেবেন। উনি বলেছিলেন "দিনে দশ টাকা দিও। " সত্যজিত বলেছিলেন, " আপনাকে প্রতিদিন কুড়ি টাকা দেওয়া হবে।"
শুটিং এগিয়ে চলল। প্রতিদিন সকালবেলায় ট্যাক্সি করে চুনীবালাকে শুটিং স্পটে নিয়ে যাওয়া হত। সন্ধ্যেবেলায় আবার ট্যাক্সি করে ফিরিয়ে দেওয়া হত বাড়িতে।
সত্যজিত একদিন চুনীবালাকে জিজ্ঞাসা করলেন," আপনি ধর্মমূলক গান গাইতে পারবেন?" চুনীবালা বললেন, পারবো।"

পথের পাঁচালীতে চুনীবালা চাঁদনি রাতে দাওয়ায় বসে হাততালি দিয়ে গাইছেন সেই গান " হরি দিন তো গেল সন্ধ্যা হলো, পার করো আমারে... "
এই গানটা চুনীবালা সত্যজিত রায়কে শুনিয়েছিলেন। সেই খালি গলায় গান শুনে সত্যজিত মুগ্ধ!সেই গানই রেকর্ড করা হল। ছবিতে খালি গলায় সেই গানই গাইলেন চুনীবালা। এক অসম্ভব সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করে সেই গান পথের পাঁচালী ছবিকে এক অন্য জগতে পৌঁছে দিলেন চুনীবালা।

পথের পাঁচালী সিনেমা ১৯৫২ সালে এক শরতকালে কাশ ফুল আর রেলগাড়ির দৃশ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল ; শেষ হতে সময় নিয়েছিল তিন বছর। ১৯৫৫ সালে ২৬ অগাস্ট পথের পাঁচালী মুক্তি পেয়েছিল। সেই বছরেই নিউইয়র্কেই এ ছবি প্রথম মুক্তি পেয়েছিল।
সত্যজিত বুঝেছিলেন এ ছবির মুক্তি চুনীবালা দেবী দেখে যেতে পারবেন না। তাই একদিন প্রজেকটার মেশিন নিয়ে সত্যজিত রায় এ সিনেমা চুনীবালাকে তাঁর বাড়িতে দেখিয়ে এসেছিলেন। চুনীবালা পথের পাঁচালি ছবি বাড়িতে বসেই দেখে গেছলেন, মুক্তির আগে মহান হৃদয় সত্যজিত রায়ের উদ্যোগে।
ছবির মুক্তি চুনীবালা দেখে যেতে পারেননি তার আগেই " হরি দিন তো গেল সন্ধ্য হলো পার করো আমারে.. " গাইতে গাইতে চলে গেলেন!

এবার আসল চমক এলো! ম্যানিলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আন্তর্জাতিক সম্মানের পুরস্কারে সম্মানিতা অভিনেত্রীর নাম ঘোষিত হল। চুনীবালা দেবী হলেন, ভারতীয় অভিনেতা ও অভিনেত্রীর মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিতা অভিনেত্রী! এক বিরল সম্মানের অধিকারিনী। অনেকেই সম্ভবত এ খবর জানেন না।
কিন্তু এই পুরস্কার তিনি গ্রহণ করতে ম্যানিলায় যেতে পারেননি কারণ তার আগেই তিনি বিদায় নিয়েছিলেন।
চুনীবালা বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়েস ১৫০ বছর হতো।
দুর্ভাগ্য চুনীবালার! দুভার্গ্য বাঙালির !

ইন্দির ঠাকরুন " চুনীবালা" - র প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা।

(সংগৃহীত)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top