What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

R5VuzUe.jpg


সবচেয়ে প্রিয় অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি তাঁর বর্ণিল চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অনেক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে খলনায়ক হিসেবে কিছু ছবিতে পর্দা কাঁপিয়েছেন ভয়ঙ্কর রূপে। সেরকম কিছু নির্বাচিত ছবি নিয়েই এ আয়োজন..

বিশ্বপ্রেমিক : 'বিশ্বপ্রেমিক' হুমায়ুন ফরীদির যে কোনো ছবির তুলনায় অনেক জনপ্রিয়। এ ছবিতে তিনি সাইকোপ্যাথ কিলার চরিত্রে ছিলেন। মেয়েদের তিল দেখলেই তিলটা কেটে নিত। মেয়েরা ভয় পেলেও শোনার পাত্র ছিল না। একেবারে হামলে পড়ত তিলটা কেটে নেয়ার জন্য এবং সেগুলো জমা করত। তিল কাটার মুহূর্তে তাঁকে ভয়ঙ্কর দেখাত। কী অদ্ভুত যে সে অভিনয় জাস্ট চোখের শান্তি।

mt2onyb.jpg


বাংলার কমান্ডো : এ ছবিতে হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন ভয়ঙ্কর এক ডাকাত সর্দার। তার সাথে পুলিশ ইন্সপেক্টর আলীরাজের দ্বন্দ্ব বাঁধে। দ্বন্দ্বের পর আলীরাজের পুরো পরিবারকে শেষ করে দেয় ফরীদি ও তাঁর বাহিনী। আলীরাজ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ঘোড়া চালিয়ে যায় ফরীদিকে ধরতে। কথায় কথায় তাঁকে আক্রমণ করতে গেলে আলীরাজকে আটকে ফেলে ফরীদির সাগরেদ জাম্বু ও কাবিলা। তখন আলীরাজ ফরীদিকে আইনের শাস্তির কথা বলে এবং ফরীদি ক্ষেপে যায় এবং বলে-'এখনো আইনের কথা কস! আইনের জিব্বা! ঐ জিব্বা আমার ভালো লাইগা গ্যাছে।' তারপর তাঁর নির্দেশমতো জাম্বু ও কাবিলা আলীরাজের মুখ চেপে জিব্বা বাইরে নিয়ে আসে এবং ফরীদি চাকু দিয়ে জিব্বা কেটে নেয় আলীরাজের। ভয়ঙ্কর সে দৃশ্য! ঐ সময় ফরীদির ভয়ঙ্কর রূপ ছিল।

ঘাতক : এ ছবিতে ফরীদির পপুলার ডায়লগ ছিল-'টু দ্য পয়েন্টে'। লম্বা দাড়ি সহ স্বাধীনতা বিরোধীর এক ভয়ঙ্কর চরিত্র যাকে বাইরে থেকে সাদাসিধে মনে হয় কিন্তু ভেতরে ভেতরে খুবই ভয়ঙ্কর এবং বিশেষ সময়ে সে রূপ ধরা পড়ে। ছবির শেষের দিকে যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ভুল ছিল বলে প্রচার করতে বাধ্য করে খলিলকে সেই সময় ফরীদির ভয়ঙ্কর রূপ ছিল। এক একটা সংলাপ আর অভিনয় যেন আগুনের ফুলকি।

সতর্ক শয়তান : এ ছবিতে ফরীদির এন্ট্রিটাই ছিল ভয়ঙ্কর। খলিল তাঁকে পুষে রাখে। যখন প্রয়োজন পড়ে তখন ব্যবহার করে। একটা করে খুনের প্রয়োজন যখন পড়ে ঠিক তখনই ফরীদিকে স্মরণ করে খলিল। বিনিময়ে পায় নেশার পুরিয়া আর ফরীদির জন্য ওটাই ছিল অমৃত। খলিলের ভাষায় ফরীদি ছিল 'ঘুমন্ত অজগর'। ফরীদি পুরিয়া পেত আর সোজা যেত খুন করতে। টার্গেট শেষ না করে ফিরত না। কিন্তু খলিলই যখন ফরীদিকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে উল্টো দর্শককে অবাক করে দিয়ে জানিয়ে দেয় নেশার পুরিয়াগুলো একটাও খেত না এবং খলিলই শেষ হয় ফরীদির হাতে। এ ছবিতে প্রথমদিকে ফরীদির লুকটা ছিল ভয়ঙ্কর।

পলাতক আসামী: ডাবল রোলের ছবি ছিল। হুবহু নিজের মতো দেখতে এক লোককে খুন করে সেই ফরীদির মেয়ের বাবা সেজে তার জন্য উপহার নিয়ে যায়। মেয়েটি ছিল দিতি। ভণ্ডামি করে দিতিকে মেয়ে বানিয়ে সেই ফরীদির বিজনেস ও সম্পদ নিজের করে নেয়। পুরো ছবিতে ফরীদি ছিল অনবদ্য এবং তাঁর অভিনয়ে ভয়ঙ্কর একটা ব্যাপার ছিল।

wZVO7M4.jpg


রাক্ষস : এ ছবিতে ঝাঁকড়া চুলের হুমায়ুন ফরীদি ভিন্ন লুকের ছিল। সুবর্ণা মুস্তাফাকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চাইলে সুবর্ণা গুণ্ডা ফরীদিকে বিয়ে করতে রাজি হয় না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফরীদি সুবর্ণার বাবা, মাকে খুন করে। সুবর্ণা এতিম অবস্থায় যখন আলমগীরের সাথে পরিচয় ও প্রেমের পর বিয়ে করে সেখানেও অশান্তির সৃষ্টি করে ফরীদি। নিজের ভালোবাসা যেমনই হোক তাকে পাবার জন্য যতটা ভয়ঙ্কর হতে হয় তাতেও রাজি এমনই ছিল চরিত্রটি।

স্ত্রী হত্যা : একজন দর্শকের জবানিতে জানা যায় এ ছবিতে হুমায়ুন ফরীদিকে দেখে তিনি অসম্ভব রকমের ভয় পেয়েছিলেন এবং চিৎকার করেছিলেন সিনেমাহলে যেন ফরীদি পর্দা থেকে বাস্তবে তাকেই আক্রমণ করতে আসছে। ছবিতে সাপের বিষ খাওয়ার দৃশ্যে ফরীদি অভিনয় করে এবং তাঁর ডায়লগ ছিল 'বিষে বিষক্ষয়'। সেই দৃশ্যটিতে ফরীদির ভয়ঙ্কর অভিনয় এবং ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও ছিল ভয়ঙ্কর। ছবির নায়ক জসিমের সাথে ফরীদির বাকবিতণ্ডার পর্যায়েও ফরীদির গেটআপ আর অভিনয় ছিল ভয়ঙ্কর।

নরপিশাচ : এ ছবিতে হুমায়ুন ফরীদি বিভিন্ন সময় অপকর্মে লিপ্ত থেকে নিজের খোলস পাল্টায়। ভণ্ড হুজুর হয়েও মানুষকে ঠকিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করে। ধরা পড়ার পর রোজী আফসারীর হাতে কোপ খাওয়ার পর আবারও খোলস পাল্টে হয়ে যায় স্মাগলার। বারবার নিজেকে পরিবর্তন করতে করতে হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর এক খলনায়ক। অনবদ্য অভিনয়ের ছবি তাঁর।

আজকের হিটলার : এ ছবিতে হিটলারি বুদ্ধিতে অপরাধ জগতের একজন হয়ে ওঠে ফরীদি। এতটা নির্দয় হয়ে যায় যে নিজের ছেলেকেও খুন করতে সিদ্ধান্ত নেয় এবং পুত্রবধূ নিশি সেটা দেখে ফেলায় তাকেও খুন করে। সমুদ্র সৈকতে জোড়া খুনের সে দৃশ্যে হুমায়ুন ফরীদি যেন ভয়ঙ্কর হিটলার।

g5da3Q5.jpg


দুনিয়ার বাদশা : লুটের মাল পুলিশের কাছে ভয়ে ফেলে এসেছে ফরীদির দলের একজন। ফরীদি তার ওপর বেজায় রাগান্বিত। ট্রাঙ্কের ভেতর ঢুকিয়ে নিজের দলের লোককে নিজেই ইয়া বড় হাতুড়ির বাড়িতে মেরে ফেলে। ফরীদির ভয়ঙ্কর সে রূপের সাথে সেই সিকোয়েন্সের বিজিএমও ছিল ভয়ঙ্কর।

চোখের পানি : এ ছবিতে খলনায়ক ফরীদি প্রত্যেকটি সিকোয়েন্সেই ভয়ঙ্কর ছিল। কথা বলার স্টাইল, ডায়লগ ডেলিভারি, গেটআপ, বডি ল্যাংগুয়েজ সব ভয়ঙ্কর। তাঁর দলের একজন ভয়ে সোহেল রানার কাছে তাঁর ঠিকানা বলে আসাতে তাকে জবাই দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ফরীদি। ঐ সময় ফরীদি জাস্ট অন্য লেভেলের ভয়ঙ্কর।

সন্ত্রাস : ফরীদির খলনায়কী ক্যারিয়ারের অভিষেক ছবি। প্রথম ছবিতেই পর্দা কাঁপিয়ে অপরাধ জগতের ভয়ঙ্কর রাজা হয়ে ওঠে। ছবিতে খুব যে হিংস্রতা ছিল তাও না কিন্তু অভিনয়ের লেভেলটাই ছিল ভয়ঙ্কর।

আত্ম অহংকার : এ ছবি তো ফরীদিরই। একাই একশো। নায়ককে ম্লান করে দেয় খলনায়কই যেন হিরোইজম দেখিয়েছে ছবিতে। গোলাম মোস্তফার অহংকারের জন্য অসুস্থ মাকে হাসপাতালে নিতে পারেনি ফরীদি। মোস্তফা গুলি করেছিল। মাকে হারিয়ে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে ফরীদি তারপর মোস্তফার সর্বনাশ করার জন্য কৌশলে তার বাড়িতে কাজ নেয়। ছবির ফিনিশিং-এ মোস্তফার পিঠে ভর দিয়ে পদ্মাসন খাটিয়ায় ওঠা ফরীদির অভিনয় যেন ছবিতে অন্যরকম প্রাণ এনে দেয়। ভয়ঙ্কর সেই রূপ কিন্তু শৈল্পিকতায় ভরা সে অভিনয়।

ঘৃণা : এ ছবিতে ফরীদির এন্ট্রি সিনই ছিল ভয়ঙ্কর। খলিলের ভাইকে মেরে ফেলে। রুবেলের পুরো পরিবারকে শেষ করে দেয়। রুবেল প্রতিশোধ নিতে ফরীদিকে কৌশলে জব্দ করে। এটিএম শামসুজ্জামান ছিল ফরীদির সবচেয়ে কাছের বুদ্ধিদাতা কোরবান চাচা। তাঁকে খুব বিশ্বাস করে। সেই তাকেই ভাতের সাথে বিষ মাখানোর মিথ্যা অজুহাতে ফরীদির হাতে খুন করায় রুবেল। এটিএমকে খুন করার সময় ফরীদি ছিল ভয়ঙ্কর।

এ ছবিগুলো বাদেও 'চিরশত্রু, সেয়ানা পাগল, অজানা শত্রু, চারিদিকে শত্রু, শত্রু ভয়ঙ্কর' সহ আরো কিছু ছবিতে হুমায়ুন ফরীদির কিছু ভয়ঙ্কর রূপ ছিল। দেশের চলচ্চিত্রের খলনায়কদের মধ্যে অদ্ভুত লেভেলের সব চরিত্রে তিনি অভিনয় করে গেছেন। তাঁর কোনো রিপ্লেসমেন্ট হবে না।

* লিখেছেন: রহমান মতি
 

Users who are viewing this thread

Back
Top