What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made গল্পের নাম: প্রেমের আগে ছ্যাকা (1 Viewer)

Joined
Apr 9, 2022
Threads
100
Messages
100
Credits
7,417
গল্পের নাম: প্রেমের আগে ছ্যাকা

লেখক: মোঃ আব্দুল্লাহ-হিল-মারুফ তামিম

.................................................................................

সকাল ১০টা......

খুলনা আহসানউল্লাহ কলেজের সামনে চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলাম। অবশ্য এখানে আমি পড়াশোনা করি না একটা কাজে এসেছিলাম।

চা পান করার মূহুর্তে দেখি আমার বন্ধু আকাশ,রাকিব ভাই,রাতুল ভাই এবং দীপ্ত এসেছে,হয়ত ওদের এদিকে কোনো কাজ আছে তাই এসেছে কারণ আমি ওদেরকে এখানে আসতে বলি নাই।

যাই হোক তারা আমাকে দেখে ফেলেছে এবং আমার কাছেই আসছে। আমার কাছে এসে আকাশ বলল-

আকাশ: কী রে হাবু (আমাকে এই নামে ডাকে মজা করে) এখানে কী করিস?

আমি: আরে কাবিলা(আমিও ওকে এই নামে ডাকি মজা করে) তুই এখানে তাও আবার পুরো দলবল নিয়ে।

আকাশ: হয় আসছি তোকে মারতে।

আমি: কেন আমি আবার তোদের কী করলাম?

আকাশ: কিছু করিস নাই নে এবার আমাদেরকে চা খাওয়া একা একা খেয়ে যাচ্ছিস।

আমি: আচ্ছা বস এখানে আমি চায়ের অর্ডার দিয়ে দিচ্ছি।

এরপর চায়ের অর্ডার দিয়ে ফিরে এসে ওদের সাথে আড্ডা দেই। তখন রাতুল ভাই আমাকে জিজ্ঞাসা করল-

রাতুল: মারুফ তুই এখানে কেন? তোর কলেজ তো এটা না।

আমি: এখানে এসেছি এক ছোটভাইকে ভর্তি করানোর জন্য।

রাতুল: আচ্ছা তোর কাজ শেষ হয়েছে এখানে?

আমি: হ্যাঁ সব কাজ শেষ তাই এখানে বসে আছি।

রাতুল: তাহলে চল আমাদের সাথে সামনে একটা কাজ আছে।

আমি: দাড়াও একটু পর যাচ্ছি একজন আসবে তার সাথে দেখা করতে হবে।

রাতুল: কে আসবে?

আমি: এলেই দেখতে পারবে।

কথা বলতে বলতে মেয়েটি কলেজ থেকে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তাই আমি উঠে তার কাছে যাই। আসলে আজকে সকালে যখন ছোটভাইকে নিয়ে এখানে আসি ভর্তি করানোর জন্য তখন মেয়েটিকে দেখতে পাই হয়ত সে এই কলেজে পড়ে।

যাই হোক আমি মেয়েটির কাছে গিয়ে দাড়াই এবং জিজ্ঞাসা করি-

আমি: হ্যালো!

মেয়েটি: জ্বী বলুন।

আমি: আচ্ছা আপনার সাথে একটি ছেলেকে দেখলাম আপনাকে বাইকে করে নামিয়ে দিল উনি আপনার কী হয়?

মেয়েটি: কেন বলবেন?

আমি: আসলে উনি আমার পূর্ব পরিচিত কিন্তু এই মূহুর্তে উনার নাম মনে আসছে না আমার,অনেকদিন আগে দেখা হয়েছিল তাই।

মেয়েটি: উনার নাম শোভন আমার বড় ভাই।

আমি: হ্যাঁ আমি এটাই মনে করতে পারছিলাম না,খুব ভালো মানুষ উনি অনেক আগে এক ইভেন্টে আমাদের দেখা হয়েছিল তখন কথা হয়।

মেয়েটি: ওহ আচ্ছা।

আমি: যদি কিছু মনে না করেন উনার ফোন নাম্বারটি পেতে পারি?

মেয়েটি: জ্বী অবশ্যই এই নিন 01760*****8 ।

আমি: ধন্যবাদ।

মিথ্যা ফোন দেওয়ার নাটক করলাম এবং মেয়েটিকে বুঝালাম নাম্বারটি ব্যাস্ত আছে।

আমি: এই দেখুন নাম্বারটি ব্যাস্ত বলছে।

মেয়েটি: আচ্ছা পরে না হয় ফোন দিয়েন এখন হয়ত ভাইয়া অন্য কাজে আছেন।

আমি: হ্যাঁ দিব,আচ্ছা আপনার ভাইয়া দুপুরে বাসায় আসেন?

মেয়েটি: জ্বী।

আমি: তাহলেত ভালোই হল এক কাজ করুন আপনার নাম্বারটি আমাকে দিয়ে যান আপনার ভাইয়াকে না পেলে আপনাকে ফোন দিব তখন আপনি ভাইয়ার কাছে দিয়েন।

মেয়েটি: না মানে আসলে বলছিলাম যে।

আমি: হ্যাঁ বলুন 01 এরপর?

মেয়েটি: আচ্ছা ঠিক আছে লিখুন 0171******2 ।

নাম্বার নিয়েই তাকে ফোন করলাম এবং মেয়েটির হাতে থাকা ফোনটি বেজে উঠল তারমানে আসল নাম্বার দিয়েছে।

আমি: ধন্যবাদ , দেখুন শেষে 048 এটাই আমার নাম্বার। যদি আপনার ভাইয়াকে না পাই তাহলে আপনাকে ফোন দিব।

মেয়েটি: আচ্ছা।

আমি: ওহ আপনার নাম এখনও জানা হল না।

মেয়েটি: শোভা।

আমি: বাহ সুন্দর নাম যাই হোক আমি তামিম।

মেয়েটি: আচ্ছা এখন আমি বাসায় যাব অনেক দেরী হয়ে যাচ্ছে।

আমি: আচ্ছা আমি রিক্সা ডেকে দিব?

মেয়েটি: নাহ ঠিক আছে আমি নিজে ডেকে নিতে পারব।

আমি: আরে আপনি কষ্ট করতে যাবেন কেন? আমি লোক দিয়ে ডাকিয়ে দিচ্ছি। (পাশে বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে)

মেয়েটি: নাহ নাহ থাক উনাদের কষ্ট দিতে হবে না আমি পারব।

আমি: ওসব নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না ওরা আমার ছোটভাই ব্রাদার,আমি যা বলব তাই করবে। এই দেখুন এখনই আমি বললে ওরা আপনার জন্য রিক্সার লাইন লাগিয়ে দিবে।

কথা শেষ করে ওদের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে ওরা রাগীভাবে তাকিয়ে আছে মনে হয় আমাকে এখনই এখানে মাটি চাপা দিবে।

বুঝতে পারছি ফাপড় বেশি দেওয়া হয়ে গিয়েছে এর জন্য অনেক জরিমানা দিতে হবে আমাকে।

তারপরেও মনে সাহস নিয়ে ওদেরকে ইশারা করে বলি আমাকে সাহায্য করার জন্য।

যাক আমার কথামতো ওরা রিক্সা ডেকে নিয়ে আসে এবং আমিও মেয়েটিকে খুব ভাব নিয়ে রিক্সায় তুলে দেই।

যতদূর পর্যন্ত তাকে দেখা গিয়েছে ততদূর অব্দি হাত নেড়ে তাকে বিদায় জানাই।

এরপর মনে হল আমার কাধে কেউ হাত দিয়েছে। আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি দীপ্ত দাঁড়িয়ে আছে আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে।

আমি একবার দীপ্ত'র দিকে তাকিয়ে উপর থেকে নীচে পর্যন্ত দেখলাম। ছেলেটা উচ্চতায় আমার থেকে ইঞ্চিখানেক লম্বা তবে শরীর স্বাস্থ্যে আমার থেকে দ্বিগুণ। ও চাইলে আমাকে উচু করে মাটিতে ফেলে দিতে পারে।

দীপ্ত'কে পাশ কাটিয়ে দেখলাম আকাশ,রাকিব ভাই এবং রাতুল ভাই দাঁড়িয়ে জামার হাতা ভাজ করছে।

আমার আর বুঝতে বাকি নেই এবার ঝড় শুরু হবে, তাই আর দেরী না করে দৌড় শুরু করলাম।

আমি সামনে দৌড়াই আর ওরা পিছন পিছন দৌড়াচ্ছে। এভাবে কিছুদূর যাওয়ার পর শরীরে আর শক্তি পাচ্ছি না দৌড়ানোর কিন্তু থেমে গেলে ওরা আমাকে ধরে ফেলবে তাই রাস্তা দিয়ে ইজিবাইক যাচ্ছিল আমি দৌড়ে সেখানে উঠে পালিয়ে বাসায় চলে আসি।

বাসায় আসার পর সারা দুপুর পার করে বিকালে চলে যাই আড্ডা দিতে এবং ওদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেই যেনো পিঠের উপর মার না পড়ে। অবশেষে আমি সফল হই এবং ওদের সাথে বসে আড্ডা দিতে থাকি।

কিছুক্ষণ পর ফোন বের করে আমি শোভাকে ফোন দেই।

বেশ কয়েকবার রিং হবার পর ফোনটি ধরল-

আমি: হ্যালো কে শোভা?

শোভা: জ্বী আমি শোভা।

আমি: আমাকে চিনতে পারছেন? আজকে সকালে আপনার থেকে ফোন নাম্বার নিয়েছিলাম।

শোভা: জ্বী চিনতে পেরেছি তাছাড়া আপনার নাম্বার আমি ফোনে সেইভ করে রেখেছিলাম।

আমি: আপনার ভাইয়া কী বাসায় আছেন?

শোভা: নাহ ভাইয়া কিছুক্ষণ আগে বেরিয়ে গিয়েছেন।

আমি: জানি সে এখন থাকবে না তাই তোমাকে ফোন দিয়েছি (মনে মনে)

শোভা: কী হল কিছু বলছেন না যে?

আমি: নাহ আপনার ভাইয়াকে আমি ফোন দিয়েছিলাম অনেকবার কিন্তু সেই একই কথা বলছে নাম্বারটি এখন ব্যাস্ত আছে,তাই আপনাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করলাম কিছু মনে করবেন না।

শোভা: নাহ নাহ ঠিক আছে।

আমি: কী করছেন এখন?

শোভা: এই বারান্দায় দাঁড়িয়ে আপনার সাথে কথা বলছি। আপনি কী করছেন?

আমি: ফুল মার্কেটে এসেছি একটা কাজে।

শোভা: কারও জন্য ফুল কিনতে এসেছেন?

আমি: নাহ আমার ফুল দেওয়ার মতো এমন কেউ নেই।

শোভা: ওহ তাহলে কী করছেন?

আমি: ফুল মার্কেটের ঐখানে পাখির দোকান থেকে এক জোড়া লাভ বার্ড কিনব তাই এসেছি।

শোভা: বাহ আপনি পাখি পছন্দ করেন?

আমি: জ্বী আমার বাসায় অনেক পাখি আছে বলতে পারেন ছোটখাটো একটি খামার।

শোভা: তাই নাকী আমাকে একটু দেখাবেন আপনার পাখিগুলো?

আমি: আপনার ফেসবুক আইডিতে আমাকে এ্যাড করে নিন আমি আপনাকে সব পাখির ছবি দিব।

শোভা: আচ্ছা "শোভা জাহান" নাম দিয়ে সার্চ করুন পেয়ে যাবেন, আমার ছবি দেওয়া আছে প্রফাইলে।

আমি: আচ্ছা এক মিনিট ধরুন আমি এখনই খুজে বের করছি।

খুজে বের করে তাকে রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে দেই এবং সে সাথে সাথে এক্সেপ্ট করে নেয়।

আমি: আপনার প্রফাইলে দেওয়া ছবিটি খুব সুন্দর হয়েছে।

শোভা: ধন্যবাদ।

আমি: নীল শাড়ীতে আপনাকে একেবারে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের লেখা উপন্যাস "হিমু" এর নায়িকা রুপা'র মতো লাগছে।

শোভা: আপনি উপন্যাস,গল্প,কবিতা এসব পড়েন?

আমি: শুধু পড়ি না মাঝে মাঝে লেখার চেষ্টাও করি।

শোভা: আচ্ছা তাই নাকী আমাকে একটি কবিতা শুনাবেন?

আমি: আপনি শুনবেন?

শোভা: জ্বী।

আমি: আচ্ছা শুনুন তাহলে-

"যেতে যেতে পথে

পূর্ণিমা রাতে

চাঁদ উঠেছিল

গগণে,

দেখা হয়েছিল

তোমাতে আমাতে

কী জানি কী মহালগণে

শালা

চাঁদ উঠেছিল

গগণে,

বা* চাঁদ উঠেছিল

গগণে,

বা***দ

চাঁদ উঠেছিল

গগণে।"

আমি: কেমন লাগল আমার কবিতা।

শোভা: টুট...টুট...টুট...

ফোন কেটে দিয়েছে যাক সমস্যা নেই ফেসবুকে মেসেজ দেই,কিন্তু একি আমাকে দেখি এখান থেকেও ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। তাহলে আমার কবিতা শুনে আমাকে ব্লক করে দিল। নাহ প্রেম করার আগেই ছ্যাকা খেয়ে গেলাম এ কেমন বিচার?

পাশে তাকিয়ে দেখি রাকিব ভাই,রাতুল ভাই,আকাশ এবং দীপ্ত আমাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছে। মনে পড়ল সকালে আমার ভূলের বিচার ওরা এখন করবে।

ভাবনা শেষ হবার আগেই আমার উপরে সবাই বিচার শুরু করে দিল তাই উপায় না পেয়ে ওদের এই অত্যাচার আমাকে মুখ বন্ধ করে সহ্য করতে হচ্ছে…..

<<<সমাপ্ত>>>

#রম্যগল্প

(ভূলত্রুটি ক্ষমা করবেন। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।)

Copyright: December 06,2019 at 02:10 AM.

Maruf Tamim (Author).
 

Users who are viewing this thread

Back
Top