সারা দিন সুনিয়ন্ত্রিতভাবে খাওয়াদাওয়া করলেও সব মাটি হয়ে যায় স্ন্যাকস বা নাশতা খেতে গিয়ে। আমাদের দেশে নাশতা বলতে বোঝায় নানা রকম তেলে ভাজা খাবার, মিষ্টান্ন বা শীতে পিঠাপুলি।
আমরা যে সময়ে দুপুরের খাবার খাই, তার চেয়ে অনেকটা দেরিতে রাতের খাবার খাই। এ দেশের মানুষ সন্ধ্যায় রাতের খাবারে অভ্যস্ত নয়, তাই অবধারিতভাবে বিকেলে বা সন্ধ্যায় নাশতা লাগে। এই সময়ে খিদে পায়, আর সেই ফাঁকেই অনাহূতের মতো ঢুকে পড়ে কেক-পেস্ট্রি, পায়েস–পুডিং, রোল, নুডলস, পাস্তা, শিঙাড়া–পুরি বা পিঠা। এর কোনোটাই স্বাস্থ্যকর নয়। এই এক নাশতাতেই এত বেশি ক্যালরি খাওয়া হয়ে যায়, যা ওজন বাড়ায়।
তাই বিকেলে বা সন্ধ্যায় নাশতা হিসেবে দরকার এমন কিছু, যা খিদেও মেটাবে, স্বাস্থ্যও ভালো রাখবে। সারা দিনের ক্যালরি হিসাব করলেও সকাল, সন্ধ্যা ও ঘুমানোর আগে নাশতার জন্য ১৫০-২০০ ক্যালরির বেশি গ্রহণ করলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সালাদ: হালকা সেদ্ধ করা বিট বা গাজর কুরে নিয়ে পানি ঝরানো টক দই, চাট মসলা, লবণ-মরিচ মিশিয়ে খেতে বেশ লাগে। আর দইয়ে যদি সামান্য হিং, জিরা, শর্ষে, কারিপাতার ফোড়ন দেন, তাহলে তো কথাই নেই! ডিম সেদ্ধ, শসা, টমেটো, লেটুস, লবণ-মরিচ-লেবুর রস মিশিয়ে বানানো যায় এগ সালাদ। চিনাবাদাম ভাজা বা ছোলা সেদ্ধ মেশালেও চমৎকার লাগবে খেতে। তাজা ফলের কুচি আর চাটমসলা দিয়েও ফ্রুট সালাদ বানানো যায়।
ফল: আপেল বা শসা সুন্দর করে কেটে নিন। সঙ্গে পিনাট বাটার ও দই মিশিয়ে নিন। তা ছাড়া আস্ত ফলও খেতে পারেন।
বাদামের মিশ্রণ: আখরোট, আমন্ড, সূর্যমুখীর বীজ আর ফ্ল্যাক্স সিড শুকনা তাওয়ায় ভেজে নিন। ঠান্ডা করুন। তার মধ্যে শুকনা ক্র্যানবেরি, কালো আঙুর, কিশমিশ মেশান। বিকেলে খিদে পেলে এক মুঠো খেলেই পেট ভরে যাবে।
ভুট্টা সেদ্ধ/ছোলা মাখা: সামান্য লবণ-মরিচ-কাঁচা মরিচ-ধনেপাতা-লেবুর রস দিয়ে যদি ভুট্টা বা ছোলা সেদ্ধ মেখে নিতে পারেন।
সেদ্ধ মুরগি/ডিম: অল্প মুরগি সেদ্ধ করে সামান্য অলিভ অয়েলে একটু রসুন, চিলি ফ্লেক্স দিয়ে সাঁতলে রাখুন। সন্ধ্যাবেলা খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরে থাকবে।
সতর্কীকরণ: বিকেলে, রাতে যা–ই খান না কেন, তাতে যেন অতিরিক্ত লবণ না থাকে।
লেখক: ইসরাত জাহান | পুষ্টিবিদ, সাজেদা হাসপাতাল