ডেঙ্গু রোধে বাড়ি থেকে তাড়াতে হবে মশা। নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
যা যা করতে পারেন
ঘরের দরজা-জানালা আটকে মশানাশক স্প্রে করতে পারেন। স্প্রে করার ১০-১৫ মিনিট পর ঘরে প্রবেশ করুন। স্প্রে ৬-৮ ঘণ্টা কার্যকর থাকে। দরজা-জানালা খুললে কার্যকারিতা আরও কমে আসতে থাকে, অন্য স্থান থেকে মশা চলে আসতে পারে।
ধূপের ধোঁয়া সাময়িক সমাধান দিতে পারে।
বাসায় থাকলেও হাত–পা ঢাকা পোশাক পরুন। ফুলহাতা জামা, ফুলপ্যান্টই হোক এই মৌসুমের নিত্য পোশাক।
মস্কিউটো রিপেল্যান্ট (মশা দূরে রাখতে) কাজে দেয়। পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। কার্যকারিতা ৫-৬ ঘণ্টা পর্যন্ত, তাই সেই সময়টা পেরিয়ে গেলে আবার ব্যবহার করতে হয়। তবে এই ক্রিম যেন চোখে-মুখে না যায়। আঙুলের ডগায় লাগালে সহজেই চোখে-মুখে যেতে পারে, তাই কাঁধে, গায়ে বা পায়ে দেওয়া ভালো। কাপড়ে ঢেকে থাকা ত্বকে এটি প্রয়োগ করবেন না। ব্যবহারবিধি পড়ে নিতে হবে।
সানস্ক্রিনজাতীয় ক্রিম ব্যবহার করলে প্রথমে সানস্ক্রিন, পরে রিপেল্যান্ট মাখুন।
বাগানে পাখির জন্য পানি রাখা হলে তা পাল্টে দিন প্রতিদিনই।
মশারি
প্রয়োজনে 'রেডি' মশারি (কেবল খুলে দিলেই হলো) নিন। শিশুর স্ট্রলারও ঘিরে নিন মশারির মতো নিরাপত্তার বলয়ে।মশা থেকে বাঁচতে মশারি বেশি নিরাপদ
মশা থেকে বাঁচতে মশারি বেশি নিরাপদ
সানন্দে সবুজে
ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ফাহমিদার মগবাজারের বাড়ির বারান্দা আর ছাদে সবুজের সমারোহ। ছাদে ৫৮টি আর বারান্দায় ২৫টি টব। মশার উপদ্রব এড়াতে কী করেন তিনি? দুই বেলা পরিমিত পরিমাণে পানি দেন গাছে, এক বেলায় বেশি পানি দিলে যে পানি জমার আশঙ্কা থাকে। টবে বৃষ্টির পানি পড়লে সেটিও জমে থাকতে দেন না তিনি। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে মশানাশক স্প্রে করেন বারান্দায়।
এম অ্যান্ড এস ইন্টেরিয়র সলিউশনের অন্দরসজ্জাবিষয়ক পরামর্শক মুমানা ইসলামের বাবার বাড়ি রাজধানীর মিরপুরে। ছাদবাগান সেখানেও। পানি জমা প্রতিরোধের পাশাপাশি গাছের আশপাশে মশানাশক স্প্রে করা হয় সেখানেও। গাছের শুকনা ডালপাতাগুলো মাটির পাত্রে জড় করে আগুন জ্বেলে ধোঁয়াও করা হয়। অনেকেই অন্দরের জন্য এমন গাছ বেছে নেন, যা কেবল পানিতেই বেড়ে উঠতে পারে। যদি কারও বাড়িতে এমন গাছ থাকে, তাহলে অন্তত তিন দিনে একবার পানি বদলে দিতে হবে। এ ছাড়া বারান্দা বা ছাদের টবের পানি চুইয়ে বাসার নিচে বা অন্যত্র যাতে জমা না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন।
স্বাস্থ্যের অন্যান্য দিক
যে কারও জন্যই মশার কয়েল স্বাস্থ্যহানিকর বলেই জানালেন মো. মতলেবুর রহমান। তা সে ধোঁয়া ওড়ানো কয়েলই হোক কিংবা মশানাশক উপকরণ বাষ্পীভূত করার বৈদ্যুতিক কয়েলই হোক। এর মধ্যে দ্বিতীয়টিতে ঝুঁকি একটু কম। আবার ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন, এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে কয়েল কিংবা মশানাশক স্প্রের কারণে সমস্যা হতে পারে। এমন রোগী বাসায় থাকলে মশানাশক অন্যান্য পদ্ধতি অবলম্বন করুন। এলাকায় মশানাশক ছিটানোর সময় ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখা উচিত।
প্রয়োজনীয় টুকিটাকি
ইউনিমার্ট লিমিটেডের ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার দিলরুবা আকতার জানালেন, তাঁদের সংগ্রহে রয়েছে মশানাশক নানা সামগ্রী। রিপেল্যান্ট স্প্রে, ক্রিম বা লোশন পাবেন ৮০ থেকে ৫৯০ টাকাতেই। মশানাশক অ্যারোসল স্প্রের দাম পড়বে ২৭৫ থেকে ৪৫০ টাকা। মশানাশক তরল বাষ্পীভূত করার বৈদ্যুতিক কয়েল পাবেন ১৩০ টাকায়। রিফিল প্যাকও কিনতে পাওয়া যায়।
এ ছাড়া বাজারে নানা ব্র্যান্ডের কয়েল পাওয়া যায় ৩০ থেকে ৭২ টাকায়। সহজে ব্যবহারযোগ্য মশারি পাওয়া যায় ১ হাজার ৬০ থেকে ৩ হাজার ২৫০ টাকায়। প্রয়োজনীয় এসব কেনাকাটা করতে পারেন অনলাইনেই।
লেখক: রাফিয়া আলম, ঢাকা