What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঈদ উৎসবে দাঁতের সমস্যায় (1 Viewer)

eow03je.jpg


ঈদুল আজহার মাত্র কয়েক দিন বাকি। চলমান করোনা মহামারির মধ্যে ঈদ স্বাভাবিক সময়ের মতো উৎসবমুখর না হলেও দিনটি ঘরোয়াভাবেই উদ্‌যাপন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে। কোরবানির বিষয় আছে বলেই এই ঈদের খাবারদাবারের অন্যতম অনুষঙ্গ মাংসের বিভিন্ন পদ। প্রতিবছর এই ঈদের পর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ মাড়ির সমস্যা বা দাঁত ভাঙার মতো সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। কারণ ঈদ ও পরবর্তী কয়েক দিন দাঁত–মুখের ওপর 'অত্যাচার'।

এখানে ঈদ–পরবর্তী পরিচিত কিছু দাঁতের সমস্যা নিয়ে কথা থাকছে।

দাঁতের ফাঁকে খাবার জমা

বয়স বাড়ার সঙ্গে বা অন্য কোনো কারণে দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্বাভাবিক দূরত্ব বা ফাঁক বেড়ে যায় আর সেই ফাঁকে খাবার জমতে পারে। ঈদের সময় অতিরিক্ত মাংসজাতীয় খাবার গ্রহণের কারণে মাংসের আঁশ সহজেই এখানে ঢুকে পড়ে। প্রাথমিক পর্যায়ে অস্বস্তি বা মৃদু ব্যথা কমাতে টুথপিক, কাঠি বা হাতের কাছে যা থাকে, সেটা দিয়েই পরিষ্কারের চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু এর ফলে মাড়িতে প্রদাহ ও সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে, দুই দাঁতের মধ্যবর্তী ফাঁকা বেড়ে যায়, ফিলিং বা ক্যাপ খুলে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়, দাঁতের ধারক কলা বা পেরিওডন্টাল রোগের সৃষ্টি করে, একপর্যায়ে মাড়ি ফুলে যাওয়া, রক্ত পড়া, ব্যথা, দুর্গন্ধ, দাঁত শিরশির, কামড়ে ব্যথা, নড়ে যাওয়াসহ নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, মুখের যত্নে অবহেলা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকা, ধূমপান প্রভৃতি কারণে টুথপিক বা কাঠি ব্যবহারে জটিলতা তীব্র হয়।

কেউ আবার টুথব্রাশ দিয়ে জোরে জোরে ব্রাশ করে খাবার বের করার চেষ্টা করেন, যা থেকে দাঁত ও মাড়ি উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সাধারণ টুথব্রাশের ব্রিসল দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থান পরিষ্কার করতে পারে না, টুথব্রাশ কেবল দাঁতের ৭০ শতাংশের মতো পরিষ্কার করতে পারে।

করণীয়

দাঁতের ফাঁক পরিষ্কারের সঠিক মাধ্যম হলো ডেন্টাল ফ্লস নামের বিশেষ সুতা বা ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ। খাবার জমার প্রবণতা থাকলে ঈদের আগেই এটা জোগাড় করে নিতে হবে, ব্যবহারবিধি না জানলে মনগড়া পদ্ধতিতে না গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জীবাণুনাশক মাউথওয়াশ যেমন ১ শতাংশ পোভিডন আয়োডিন, ক্লোরহেক্সিডিন বা উষ্ণ পানিতে লবণ মিশিয়ে খাবারের পর কুলকুচি করলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।

আক্কেলদাঁতের জটিলতাও বাড়তে পারে এই সময়। এই দাঁত সম্পূর্ণ না উঠলে বা বাঁকা হয়ে উঠলে দাঁতের চারপাশের মাড়ির মধ্যে গৃহীত খাদ্য বিশেষ করে মাংস ঢুকে কষ্টদায়ক প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। নরম ছোট ব্রাশ দিয়ে মাংস খাওয়ার পর স্থানটি পরিষ্কার করতে হবে।

তবে আগে থেকেই যাঁরা মাড়ির রোগে ভুগছেন তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি, অন্য দিকে দুই দাঁতের সংযোগ স্থানে গর্ত বা অস্বাভাবিক ফাঁকা থাকলে সেখানেও চিকিৎসা প্রয়োজন।

দাঁত ভাঙা বা ব্যথা

দাঁতে গর্ত, বড় ফিলিং বা দুই দাঁতের সংযোগপৃষ্ঠে ফিলিং, রুট ক্যানেল শেষে ক্যাপ না করা, গঠনগত দুর্বল দাঁত, নকল দাঁত ইত্যাদিতে শক্ত হাড়ের কামড় পড়লে ভেঙে যেতে পারে। এর ফলে সৃষ্ট অমসৃণ অংশে ঘষা লেগে জিহ্বা বা চোয়ালে ক্ষত হতে পারে। অন্যদিকে ভেতরকার মজ্জা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যথাসহ নানা সমস্যার তৈরি হয়।

করণীয়

বড় গর্ত থাকলে অবস্থা বুঝে ফিলিং বা রুট ক্যানেল করিয়ে নিতে হবে। মাড়ির দাঁতে রুট ক্যানেল চিকিৎসা শেষে ক্যাপ বা কৃত্রিম মুকুট লাগিয়ে নেওয়া জরুরি। বড় ফিলিং বিশেষ করে সংযোগ স্থানে ফিলিং থাকলে সে দাঁত দিয়ে হাড় না খাওয়া ভালো। মাংসের হাড় যাঁদের প্রিয়, চিকিৎসকের পরামর্শে দাঁত ও মাড়ির অবস্থা জেনে নেওয়া তাঁদের জন্য নিরাপদ। ঈদের সময়কার চিনির তৈরি বাহারি খাবারও দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। দাঁত ভেঙে গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মনে রাখবেন

আধা সেদ্ধ শক্ত মাংস বা হাড় চিবোতে হলে আপনার দাঁত ও মুখের সুস্বাস্থ্য থাকাটা জরুরি। নয়তো ঈদ–পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে কষ্ট পেতে পারেন। তাই দরকার হলে ঈদের আগেই দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। ঈদে অতিরিক্ত মিষ্টি, অতিরিক্ত শক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকাই ভালো। মাংস খান কিন্তু পরিমিত পরিমাণ। মাংসের সঙ্গে সালাদ, সবজি ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারও খেতে ভুলবেন না।

* মো. আসাফুজ্জোহা | সদস্যসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ডেন্টাল সায়েন্স (বিএফডিএস)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top