What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

দ্বিধাহীন ভালোবাসায় সবুজ হোক শোয়ার ঘর (1 Viewer)

vJ1y18g.jpg


ঘুম ভেঙেই যদি অনুভব করা যায় প্রকৃতির ঘনিষ্ঠতা। চোখ খুলেই যদি হৃদয়ে লাগে সবুজের ছোঁয়া। সতেজ মানসিকতায় দিন শুরু করতে শোয়ার ঘরে গাছ রাখার বিকল্প নেই। কিন্তু শোয়ার ঘরে গাছ। নানা প্রশ্নের দোলাচল। রাতের বেলায় গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড ছাড়লে ক্ষতির আশঙ্কা আছে না? রাতের বেলায় অক্সিজেন ছাড়ে—শোয়ার ঘরের জন্য এমন গাছ কেনা উচিত। কার্বন ডাই-অক্সাইড বা পোকামাকড়—শোয়ার ঘরে গাছ রাখা ক্ষতিকর না? নির্বিঘ্ন ঘুমের নিশ্চয়তায় কোন গাছ কেনা ভালো? এমন হাজারো প্রশ্ন আর দ্বিধাদ্বন্দ্বে শোয়ার ঘরটি রয়ে যায় গাছশূন্য। তবে একটু জেনে নিলেই বিভ্রান্তি এড়িয়ে সত্যি করা সম্ভব সবুজ শোয়ার ঘরের স্বপ্নটা।

গবেষক ও বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, সাধারণ কোনো দিনে সাধারণ কোনো স্থানে ৪০০ থেকে ৫০০ পিপিএম কার্বন ডাই-অক্সাইড থাকে। পিপিএম হলো পরিমাপ সূচক, পার্টস পার মিলিয়ন। অর্থাৎ যদি কোনো ঘরের বাতাসে মিলিয়ন পার্টস থাকে, সেখানে গাছ থেকে নির্গত হয় ৪০০ বা ৫০০ পার্টস কার্বন ডাই-অক্সাইড। আর মানুষের ক্ষেত্রে এই পরিমাপটা কেমন? বিস্ময়কর হলেও সত্যি, এক রাতে মানুষ প্রায় ৪০ হাজার পিপিএম কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত করে। ভাগ্য ভালো, এই কার্বন ডাই-অক্সাইড সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে বিলীন হয়, নইলে বেঁচে থাকা তো সম্ভব হতো না। এজন্যে প্রকৃতির কাছে আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

4Ur3e4G.jpg


এবার আসি শোয়ার ঘরে রাখা গাছের প্রসঙ্গে। নগরজীবনে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বা ঘুম ভেঙে সবুজ দেখার সতেজতার পাশাপাশি গৃহসজ্জার মান, গরমে প্রশান্তি, এমনকি ভালো ঘুমের নিশ্চয়তাও দেয় শোয়ার ঘরে রাখা গাছ। শোয়ার ঘরে অনবদ্য উপস্থাপন—চলুন জেনে নিই এমন কিছু গাছ সম্পর্কে।

অ্যালোভেরা

XyQOY7B.jpg


বহু যুগ ধরেই চিকিৎসা, ওষুধ তৈরি এবং রূপচর্চায় অ্যালোভেরার ব্যবহার হয়ে আসছে। নাসার গবেষণা অনুযায়ী, বায়ু পরিশোধক হিসেবেও সেরা গাছ অ্যালোভেরা। এই গাছ বাতাস বেনজেন ও ফর্মালডিহাইডের মতো ক্ষতিকর কেমিক্যালের দূষণ কমায়। সারা রাত অক্সিজেন সরবরাহ করে দ্রুত মানসিক চাপ ও উৎকণ্ঠা কমিয়ে ঘুম নিশ্চিত করে অ্যালোভেরা। তাই শোয়ার ঘরের জন্য এ গাছ আদর্শ, সবুজের সৌন্দর্য তো রয়েছেই।

স্নেক প্ল্যান্ট

N4WJRyc.jpg


এ গাছের পাতার আকৃতি অনেকটা সাপের মতো প্যাঁচানো। তবে স্নেক প্ল্যান্টের আরেক নাম কেন মাদার ইন ল'স টাং বা শাশুড়ির জিহ্বা, তা পুত্রবধূরা হয়তো বলতে পারেন। শোয়ার ঘরে এ গাছ রাখার একটি বিশেষত্ব আছে আর তা হলো এটি রাতে অক্সিজেন ছাড়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা একটি সমীক্ষা করে দেখেছেন, ঘরের ভেতর এই গাছ রাখলে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও ফরমালডিহাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসকে শোষণ করে ঘরকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ঘরের পরিবেশ বিশুদ্ধ করে রাতের ঘুমটাও ভালো হওয়ার পেছনে হাত আছে এ গাছের। মাথাধরা, চোখে ব্যথার মতো একাধিক শারীরিক অস্বস্তি কমিয়ে আরামে ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে স্নেক প্ল্যান্ট।

ইংলিশ আইভি

QyGBuaU.jpg


অক্সিজেন উৎপাদনের পাশাপাশি লতানো গাছ ইংলিশ আইভি বাতাসে ছাঁকনির কাজ করে। বাতাসে ভেসে থাকা দূষিত যৌগ, যেমন: বেনজেন, ফরমালডিহাইড ও ট্রাইক্লোরোইথিলিন শুষে নেয়। ওই যৌগগুলো স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর, এমনকি মানবদেহে ঢুকে ক্যানসার তৈরি করে। শুধু বাগানের জন্য নয়, শোয়ার ঘরের জন্যও সেরা ইংলিশ আইভি। আমেরিকান কলেজ অব অ্যালার্জি, অ্যাজমা এবং ইমিউনোলজির গবেষকেরা জানিয়েছেন, ইংলিশ আইভিগাছ ৭৪ শতাংশ বায়ুদূষণ মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে দূর করে। দেখতে সুন্দর, কম আলো-বাতাসেও বেড়ে ওঠে এবং পানির চাহিদা খুব বেশি নয়, তাই শোয়ার ঘরে রাখার জন্য এর চেয়ে উপকারী গাছ আর হয় না।

এরিকা পাম

AETBrn0.jpg


এরিকা এক প্রজাতির পামজাতীয় গাছ। এদিক থেকে এই গাছকে নারকেল, তাল ও খেজুরগাছের আত্মীয় বলা যায়। গাছটি বিষাক্ত বাতাস পরিশোধন করে এবং বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড দূর করে। এ গাছ সঠিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে। যাঁরা ঠান্ডা বা সাইনাসের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের শোয়ার ঘরে এ গাছের উপস্থিতি খুবই উপকারী, কারণ এটি বাতাসের অতিরিক্ত আর্দ্রতা কমায়। তাই সহজে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার উপযোগী পরিবেশ বজায় রাখে এরিকা পাম।

স্পাইডার প্ল্যান্ট

LoziL5F.jpg


ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক খনিজ বাতাস থেকে পরিষ্কার করে স্পাইডার প্ল্যান্ট। ঘরোয়া এ গাছ খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে। সাধারণ মাপের ঘরের বাতাস থেকে ৯০ শতাংশ টক্সিন মাত্র দুদিনের মধ্যে দূর করতে পারে। যাঁদের ধূলিকণায় অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য এ গাছ শোয়ার ঘরে রাখা খুবই উপকারী। শুধু তা-ই নয়, ভালো ঘুমে সাহায্য করে দৃষ্টি আকর্ষক এ গাছ।

তুলসী

53MNFT2.jpg


তুলসী একটি ঔষধি গাছ। তুলসীগাছের পাতা, বীজ, বাকল বা শিকড়—কোনো কিছুই ফেলনা নয়। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে তুলসীর ভূমিকা নিয়ে লিখতে গেলে কম কথায় সম্ভব নয়। প্রাচীনকাল থেকেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের অপরিহার্য অংশ তুলসী। জ্বর, কাশি, সর্দি, মাথাব্যথা, অবসাদ প্রভৃতি দূর করে ভালো ঘুমের নিশ্চয়তা দেয় শোয়ার ঘরে রাখা তুলসীগাছ।

পিস লিলি

U22whJH.jpg


বাস্তুমতে, লিলি ফুল ঘরে রাখা অত্যন্ত শুভ। সাদা রং ঘর থেকে নেগেটিভ এনার্জিকে দূর করে ঘরের পরিবেশকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। সুন্দর এ গাছ বাতাস শুদ্ধ করতে পারে। এক দিনে সাধারণ কক্ষের প্রায় ৬০ শতাংশ দূষণ কমায়। এ গাছের পাতা বিভিন্ন ধরনের মোল্ড স্পোর বা ছত্রাক শোষণ করে নিয়ে সেগুলোকে খাদ্য হিসেবে শিকড়ে ব্যবহার করে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পিস লিলি বাতাসের বেনজিন ও ফরমালডিহাইড দূর করে বাতাস পরিশুদ্ধ করে। আর তাই ঘুমটাও ভালো হয়।

জেসমিন বা জুঁই

REzfWuJ.jpg


যদিও সূর্যালোকে ভালো হয়, তবুও শোয়ার ঘরে যেখানে অল্প হলেও রোদ্দুর আসে, সেখানে রাখলেও হবে জেসমিন বা সবার পছন্দের ফুল জুঁই। এর সুগন্ধ মন ভালো রাখে, মানসিক চাপ কমায় এবং গভীর নিদ্রায় সাহায্য করে। এর সুগন্ধ ঘরের বাতাসকেও সমৃদ্ধ করে। শোয়ার ঘরে সুগন্ধি জুঁই ফুলের গাছ রাখতে পারলে তা গভীর ঘুমের পক্ষে খুবই সহায়ক হতে পারে। শুধু ভালো ঘুমই নয়, মন-মেজাজ ভালো রাখতেও জুঁই ফুলের সুন্দর গন্ধের জুড়ি মেলা ভার!

ল্যাভেন্ডার

vV9Ui07.jpg


ল্যাভেন্ডার সুগন্ধি হিসেবে অতি জনপ্রিয়। কিন্তু এর ঔষধিগুণও যথেষ্ট। এর সুগন্ধ অনিদ্রার মহৌষধ। ল্যাভেন্ডারের গন্ধ মানসিক অস্থিরতা, মানসিক চাপ ও উৎকণ্ঠা কমিয়ে সহজে ঘুমোতে সাহায্য করে। তাই শোয়ার ঘরে ল্যাভেন্ডারগাছ লাগাতে না পারলেও ল্যাভেন্ডারের গন্ধযুক্ত সুগন্ধি বা এয়ার ফ্রেশনার ছড়িয়ে দিলেও ভালো কাজ করে।

* দীপান্বিতা ইতি
 

Users who are viewing this thread

Back
Top