What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভালোবাসা আসলে কী (1 Viewer)

4SmmItE.jpg


আমার বান্ধবীর বাবা ভাবতেন, ওনার বাচ্চারা বড় হবে, তারপর সবাই একদিন মরে যাবে।

আমার বাবা ভাবতেন, বাচ্চারা বড় হবে, তারপর উনি গ্রামে ফিরে যাবেন।
দাদাকে দেখেছি তার বেড়ে ওঠা নানার বাড়ি যাবার ইচ্ছে পোষণ করতে; আনফরচুনেটলি সেটা হয়নি। যদিও দূরত্ব মাত্র ২০ মাইল বা তার কমই ছিল।
ভালোবাসা দেখেছি আমি তার, আমার দাদির জন্য। প্রকাশ নেই তবে মমতা পুরোপুরি। সঙ্গে থেকে সাহস দিয়ে যাওয়া, মনে পড়ে না কোনো দিন দাদির সঙ্গে জোরে কথা বলতে দেখেছি, বরং দাদিকে রাগ হতে দেখেছি। দাদি অসুস্থ হলে তার হাত ধরে সান্ত্বনা দিতে শিখেছি।

নানা, নানির সম্পর্ক কিছুটা ভিন্ন ছিল, তবে তাতেও নির্ভরতা ছিল।
আমার দাদি দাদার দ্বিতীয় বউ। বড় দাদি মারা যাবার পর আমার দাদিকে বিয়ে করেছিলেন। বড় দাদির প্রতি ভালোবাসা কেমন ছিল, তা জেনেছি অন্যের মুখে। পাগল ছিলেন তাঁর জন্য দাদা। তবে তাঁর জন্য দাদির অধিকার কখনো খর্ব হয়নি।

আমার বাবা–মায়ের মাঝে কো–ডিপেনডেন্সি দেখি। আমার শ্বশুর তাঁর স্ত্রীকে ভীষণ ভালোবাসতেন, রেসপেক্ট করতেন, যদিও তাঁদের সম্পর্ক ছিল অম্লমধুর!
আমার কাছে ভালোবাসা?
Butterfly feeling in the stomach and body! Makes me happy. I shine and glow mentally and physically.
অনুভূতি!?
- কারও ভাবনায় ভাবায় বা চোখের দেখায় মন শান্ত হয়, মুখে নিজের অজান্তেই সুখী হাসি চলে আসে। শারীরিক টেনশন কমে যায়, মন শীতল হয়।
তার ছোট ছোট কথাতেও চোখ ছলছল, মুখ অন্ধকার আর বাঁকা হয়ে যায়—মনটা খারাপ হয় ভীষণ, অনেক সময় রাগে রক্ত টগবগ করে ফোটে। খুন করে ফেলতে দুবার ভাবার মতো সময় হয় না। অথচ হেসে কথা বললেই তার সাতখুন মাফ (করা উচিত নয় যদিও।)

ডিপেনডেন্সি—মানসিক, শারীরিক। শারীরিক মনে শারীরিক সম্পর্ক নয়। মোর অব প্লেটোনিক!
শারীরিকভাবে তাকে সেখানে উপস্থিত থাকতেই হবে, তা নয়। তবে মানসিক সাপোর্ট না হলে কোনো সম্পর্কই সম্পর্ক নয়। মানসিক বন্ধন—ভালোবাসার প্রথম ব্যাপার।
তবে একতরফাও অনেকে ভালোবাসে, সেটা ইনফ্যাচুয়েশন, তবে মনের এন্ডোরফিন তাতেও বাড়ে।

আমি যাকে ভালোবাসব, তার কাছে অবশ্যই তার প্রতিদান আশা করব—একতরফা ভালোবাসা? না, চলে না।

কমিটমেন্ট?
-অবশ্যই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মন পাল্টায়—খোলামেলা আলোচনা করে নিজেদের রাস্তা যে কেউ মাপতেই পারে। ভালোবাসা নদীর ঢেউয়ের মতো—ক্ষণস্থায়ী। ঢেউ গেলে পরবর্তী ঢেউ আসতেই পারে। তবে যতক্ষণ ঢেউ আছে, ততক্ষণ কমিটমেন্টে বিশ্বাসী আমি। ভালোবেসে কাউকে সাফোকেটেড করায় বিশ্বাসী নই আমি, বরং তাদের মঙ্গলে যা করার করতে হলে দূর থেকেও করা যায়, তাতে বিশ্বাসী। তবে ভালোবেসে একসঙ্গে থাকার পরিকল্পনাই সবাই করে। অনেক সময় পরিবেশ, পরিস্থিতি, সামাজিক, পারিবারিক চাপে হয়তো সেটার বাস্তবায়ন না–ও হতে পারে। ভালোবাসা কমে যায়? আমার মনে হয় না। তাদের জন্য শুভকামনার ঘাটতি পড়ে কি?
নাকি ক্রূরতা মনে আসে? যে দেখব কেমনে ভালো থাকে? আমার হলো না, যার হলো তাকেসহ তাদের জীবন বিষিয়ে দেব? যত রাজ্যের গালি আর তিক্ততায় মন বিষিয়ে থাকে? হুম্‌! আমার হয় না। আপনাদের হয়?
যদি হয়, তবে মনে হয় আপনারা তাদের ভালোবাসেননি, ভেবেছেন তারা আপনাদের সম্পত্তি, যদিও তার মূল্য পরিশোধের সামর্থ্য আপনাদের নেই।

কেমনে ভাই তারা আপনাদের সম্পত্তি? নিজেরই ঠিক নেই, তো আরেকজনের মন আর শরীরের ওপর মাতব্বরি। এটা শুধু কনট্রোলিং বিহেভিয়ার। এ কনট্রোলটা নিজের ওপর আসা ভালো। যেকোনো সময়ে নিজের ব্রেক টানতে পারা ভীষণ দরকারি গুণ—আমাদের ছেলেরা তা শেখে না। সব কনট্রোল যেন মেয়েদেরই থাকা উচিত!
তাই সম্পর্ক ভাঙলে একটা মেয়ের যত চরিত্র হনন করা হয়, সহজে তা কিন্তু একটি ছেলের করা হয় না। চরিত্র বলতে আসলেই বাঙালির যে কী কনসেপ্ট! ছেলেদের চরিত্র কিছুতেই নষ্ট হয় না, যদিও তারা হয়তো একই সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল বা থাকে! ভিকটিম ব্লেম আর শেমের ব্যাপারে আমরা মেয়েদের প্রতি খড়্গহস্ত!
বুঝতে শিখুন, মানতে শিখুন আর সম্মান করতে শিখুন, যখন কোনো মেয়ে আপনাকে 'না' বলছে, সে যার জন্যই হোক। সেই না–টা, সেই সময়ের 'না', মেনে নিয়ে নিজেদের সংযত করুন। মুভ অন।

'না' মানে এই নয় যে তারা হ্যাঁ বলতে পারছে না। বা চুপচাপ বা মৌনতা সম্মতির লক্ষণ বলে কারও ওপর চাপ প্রয়োগ বা ঝাঁপিয়ে পড়া থেকে সংযত থাকুন।
আমার কাছে ভালোবাসা, 'শুধু একদিন ভালোবাসা। মরণ যে তারপর। তবে তাই হোক। চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।'

তার মানে এই নয় যে ভালোবাসা না পেলে সুইসাইড খেতে হবে। জীবনটা অনেক বড়! জীবন বহতা নদীর মতোই, বয়ে যাবে আপন গতিতে। সেই একদিনের ভালোবাসা রয়ে যাবে আপনার, যা আপনাকে সাহস জোগাবে এই কঠিন জীবনের প্রতিটি তীক্ষ্ণ ধার মোকাবিলা করতে। সেই অনুভূতি ফিকে হয় না।

ভালোবেসে পেতেই হবে?
-নাহ্! তার কোনো প্রয়োজন নেই। পেলে ভালো, না পেলেও সেই ভালোবাসার যে অনুভূতি, তা আপনাকে স্ট্রং রাখে আজীবন। সেটাই ভালোবাসা। আপনি জানেন, কেউ না কেউ কোথাও না কোথাও আপনাকে সারা জীবন ভালোবাসবে, মিস করবে, আমার মনে হয়, সেটাই ভালোবাসা।

এর মানে এ–ও নয় যে আপনি একাকী বলে যাকে সামনে পাবেন, তার প্রেমেই পড়তে হবে, একাকিত্ব কাটাতে। হ্যাঁ, সঙ্গী প্রয়োজন। সংসার প্রয়োজন, তাই মানুষ সংসার করে, অন্যের সঙ্গে সংসার করে তাদের প্রতিও ভালোবাসা হয়, দায়িত্ব–কর্তব্য পালন করতে করতে, নির্ভরতা, বিশ্বাস, ভালোবাসা তৈরি হয়; তবু কোথাও মনের কোণে তা অধরাই রয়ে যায়। সে তারের খোঁজ শুধু আপনিই জানেন। মানে, মন একই সঙ্গে অনেককে ভালোবাসে, কিন্তু ভালোবাসার ধরন ভিন্ন। সেখানে কিন্তু তীব্র চাহিদা থাকে না। পাবার কোনো উদ্দেশ্যই থাকে না—যে মনে থাকে, সেখানেই তার কবর। সে জানেও না।

REHnApJ.jpg


মানব মন রহস্যপূর্ণ! হেঁয়ালিপূর্ণ তো অবশ্যই।
এই যে আজকে যাকে দেখে মনে হয়, একে ছাড়া বাঁচবেন না। কাল তার দিকে হয়তো ভালো করে তাকিয়েও দেখবেন না। তার সামনেই আপনি অন্য কারও হাত শক্ত করে ধরে এগিয়ে যান; সংসার, সুখের স্বপ্নে বিভোর হয়ে। আবার পরশু সে স্বপ্ন হাজারো টুকরা হয়ে যায়। দেখা যায়, আপনি সম্পূর্ণ ভিন্ন কারও হাতে হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছেন। অন্য কারও বুকে শান্তি খুঁজে পাচ্ছেন। কোনটা ভালোবাসা?
- আসলে সব কটিই। বা কোনোটিই নয়। কে জানে?
ভালোবাসার সঙ্গে ইমোশন, প্রয়োজনও জড়িত। সব কটির যুগলবন্দী হয়ে, লাকি হলে হয়তো প্রয়োজনের সঙ্গে সংসার হয়, নয়তো নয়। তাতে কি ভালোবাসা মিথ্যে হয়ে যায়?
আবার এই যে ভালোবাসা? বিনা কারণে হয়? যদি বলেন, হ্যাঁ, কারণ ছাড়াই। তবে আপনি মূর্খের জগতে বসবাস করছেন।

সিরিয়াসলি!
বুঝিয়ে বলি।

কাউকে দেখে আপনার ভালো লাগে। অবচেতনে আপনার ব্রেইন ক্যালকুলেশন করে, আপনার চাহিদার সঙ্গে তার যোগ্যতা ম্যাচ করছে? না করলে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করলে তাতে লাভ/লস, ফ্যামিলি, এডুকেশন, অর্থনৈতিক অবস্থা সব ক্যালকুলেশনে যায়। আপনার ব্রেইন জানে আপনার চাহিদা। অনেকটা অবচেতনেই হিসাব–নিকাশ হয়ে যায় প্রেমে পড়বার আগেই। তারপর মেনে নেওয়া, মানিয়ে নেওয়া বা প্রেম না হওয়া! জটিল হিসাব!
আবার ভালোবাসা বয়সের ম্যাচিউরিটির ওপর নির্ভর করে। বাচ্চারা মা–বাবাকে ভালোবাসে, খেলার সাথিকে ভালোবাসে! জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে ফেলে—ওইটুকুই তাদের ভালোবাসা।
একটু বড় হলে অপজিট সেক্স থেকে দূরে থাকে।

তারপর পিউবার্টি—হরমোনাল ভালোবাসা
টিনে মোহ আর আশা আকাঙ্ক্ষা
যুবক বয়সে—মোহ আকাঙ্ক্ষার জায়গায় প্রয়োজনে ভালোবাসা। ম্যাচিউরিটি লেভেল, এক্সপেরিয়েন্সের সঙ্গে সঙ্গে ভালোবাসার রং বদলায়! রূপ আর কারণও বদলায়।
ভালোবাসার তীব্র হিংসাও দেখা দেয়, ভীষণ সন্দেহবাতিক হয়ে পড়ে অনেকেই—এটা আসলে একধরনের মানসিক রোগ—বলে লাভ অ্যাডিকশন। সুস্থ মানুষদের এ সমস্যা হয় না।
এবার আমার কথা বলি।

প্রথম প্রেমপত্র?
-প্রেম ভালোবাসা বোঝার আগের বয়সে। খুলে দেখিনি। ভীষণ রাগ হয়েছিলাম। পত্রসহ মায়ের হাতে প্রেরককে ধরিয়ে দিয়েছিলাম। আজও জানি না কোনজন পত্র দিয়েছিল।
তারপর প্রেমপত্র কম পাইনি। একসময় মনে হতো, হাতে বানানো পুতুল শেয়ার করাটাই ভালোবাসা।

carYfxt.jpg


পছন্দের বিস্কিট, আইসক্রিম শেয়ার করাটাও—করিনি কখনো। শেয়ারিং আমার আসে না।
যারা বছরের পর বছর স্টকিং করে বেড়াত, তাদের দিকে তাকিয়েও দেখিনি। নাম জিজ্ঞাসা তো দূরের কথা।

যারা জানতাম ভালোবাসে, তাদের থেকে দূরে থাকাটার একটা অলিখিত নিয়ম ছিল। মাঝে মাঝে মনে হয়, এদের দীর্ঘশ্বাসের কারণে মনে হয় কপালে শনি।
পছন্দের কেউ ছিল না?—ছিল তো। ওই ব্যাটে–বলে হয়নি। ক্রাশ আমার অনেক—এখনো অক্ষয়ের দুঃখে কাঁদি। কিয়ানোকে দেখে, সে দুঃখ ভুলে যাই। ডিক্যাপ্রিওর প্রিটি ফেস ভুঁড়ির কারণে আর পছন্দ নয়। I have a new crush now! Atiya Choprar ছোট ভাই! Lol!
কী যে কেঁদেছিলাম প্রসেনজিৎ বিয়ে করল বলে!
বিয়ের প্রস্তাব ছেলেবেলা থেকে ছিল, তাই সাহস কম ছিল। ভয় ছিল বাপ–মা রিকশাওয়ালার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেবে—প্রেম করি জানলে!
- ভুল করেছি! মাগনা রিকশায় চড়া হলো না বলে ইদানীং আফসোস করি!
ফ্লার্টিং পছন্দ নয়!
বিয়ে কীভাবে?—পারিবারিক।
জীবন সুখী?—আলহামদুলিল্লাহ!
ভালোবাসি?
- Of course. বাবা, মা, ভাই, বোন, ছেলে, মেয়ে, বন্ধু, বান্ধবী, কাজের লোক ইভেন আমার ড্রাইভার (পড়ুন স্বামী) আর পেশেন্ট—সবাইকেই ভালোবাসি। ভালোবাসার ভিন্নতায়। কেউ কাউকে ওভারল্যাপ করে না। সবার সুস্থ সহাবস্থান সেখানে।

ভালোবাসার মনের হিসাব চল্লিশ সেরে নয়। ছটাকে নয়, তোলায় নয়। দেওয়ায় নয়, পাওয়ায় নয়—হিসাবটা ভালোবাসায়! শুধু সে মনই জানে সেখানে কার ওজন কত, কার মূল্য কত, কে কতটা স্পেস নিয়ে থাকে। হীরার মূল্য ওজনে, ক্লিয়ারিটি, কাটে, সাইনে, রঙে, কোন ধরনের মেটালে বসছে তাতেও; স্পেস সে দখল করে না। সব হীরার এক দাম নয়। মনের জমিতে মুলার মূল্যও কম নয়। সে–ই জানে সেখানে কাঁটা না গোলাপের বাগান—তার মূল্য তার কাছেই। মন নিজেই তার জহুরি। তার জহর, গরল তার কাছেই। সেই একই ভালোবাসা, যা আপনাকে সুখী করে, সেই একই ভালোবাসার অত্যাচারে পাগল হওয়ার দশাও হয়। তবে...

একটা লাইন ভালো লেগেছে—আপনার ফেরারি পছন্দ, না হোন্ডা? ফেরারির মূল্য এবং যত্ন আর হোন্ডার মূল্য আর যত্ন আলাদা। ফেরারি চাইলে তাকে তেমন যত্ন করতে হবে, তার জন্য সেই রকম প্রস্তুতি লাগবে। হোন্ডা চাইলে হোন্ডার। নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী ভালোবাসতে হয়—ভালোবাসাটাও বাণিজ্য। জীবনের সবচেয়ে দামি আর বড় বাণিজ্য। Be very careful how you handle it. বিয়েটাও জীবনের সবচেয়ে বড় ইনভেস্টমেন্ট! সব হিসাব মিলবে না, যতটা মেলানো যায়—মিলিয়েই করা উচিত।
ভালোবাসাটাও অবচেতন এবং সচেতন মনের হিসাব–নিকাশের ফসল।

* লেখক: শারমীন বানু আনাম, চিকিৎসক (আমেরিকা)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top