What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ফুলের বাগানে জোড়া কুকুরের সমাধি (1 Viewer)

cBKhdad.jpg


সিম্বা ও বিড্ডি নামের কুকুর দুটির সামধিফলক

পাখির চোখে দেখলে অতিথি ভবনটি দেখতে বাংলা চারের মতো। দৃষ্টিনন্দন কারুকাজে তৈরি চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানির অতিথি ভবনের ফুলের বাগানে বিশেষ নকশায় ইট দিয়ে ঘেরা পাশাপাশি দুটি সমাধি। সমাধির ওপরে এপিটাফের আদলে তৈরি কংক্রিটের দুটি ফলক।

আসলে এই দুটি হচ্ছে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট রাসেল কেরুর পোষা এক জোড়া কুকুরের সমাধি। সমাধির একটি ফলকে ইংরেজিতে লেখা ডিয়ারেস্ট বিড্ডি, ১৯৫১-১৯৬৪ এবং অন্যটিতে ডিয়ারেস্ট সিম্বা, ১৯৫৬-১৯৬৬।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে পর্যটকেরা কুকুরের এই সংরক্ষিত সমাধি দেখতে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরুর অতিথি ভবনে আসেন। অন্য রকম মুগ্ধতা নিয়ে ফিরে যান।

AtXKW4x.jpg


প্রাচীনকাল থেকেই প্রভুভক্ত প্রাণী হিসেবে কুকুর মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু। বিজ্ঞানীদের মতে, কুকুরের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক প্রায় ১৫ হাজার বছরের। মানুষের ভাষা বোঝার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে কুকুরের। নানা অঙ্গভঙ্গি দেখেই বুঝে নেয়, প্রভু কী চাচ্ছে। দিনে–রাতে প্রহরী হয়ে বিশ্বস্ততার সঙ্গে সে কাজ করে থাকে। কুকুরের প্রভুভক্তির এসব কথা কে না জানে। তবে রবার্ট রাসেল কেরুর পোষা কুকুরের প্রতি মায়া ও হত্যার ঘটনা কিছুটা হৃদয়বিদারক বটে ।

ব্রিটিশ নাগরিক রবার্ট রাসেল কেরু নিজ নামে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই চিনি ছাড়া সেখানে ওষুধ ও অ্যালকোহল উৎপাদন করা হতো। সেই থেকে কোম্পানির কাঁচামাল হিসেবে নিজস্ব খামারে আখ উৎপাদন শুরু হয়। এই কোম্পানির আওতাভুক্ত ৩ হাজার ৫৫৬ একর জমি তদারকির জন্য দর্শনায় তৈরি করা হয় ডাকবাংলো। রবার্ট রাসেল কেরু সপরিবার ওই ডাকবাংলোয় বসবাস করতেন। রাতে ডাকবাংলো পাহারা এবং দিনের বেলার নিরাপত্তাসঙ্গী হিসেবে তিনি পঞ্চাশের দশকে ইংল্যান্ড থেকে দুটি কুকুর নিয়ে আসেন—একটির নাম বিড্ডি, অন্যটি সিম্বা।

TA66Rgq.jpg


কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শেখ মো. শাহাব উদ্দীন জানান, ১৯৬৪ সালে বিড্ডি স্বাভাবিকভাবেই মারা যায়। প্রিয় বিড্ডির মরদেহ অতিথি ভবন চত্বরের ফুলের বাগানে সমাহিত করেন রবার্ট রাসেল কেরু। বিড্ডির সমাধিতে এপিটাফের আদলে স্মৃতিফলক তৈরি করা হয়। রবার্ট রাসেল কেরু ১৯৬৬ সালে কোম্পানির মালিকানা হস্তান্তর করে নিজ দেশে ফিরে যান। ফিরে যাওয়ার আগে সিম্বা নামের কুকুরটিকে নিজ হাতে গুলি করে মেরে ফেলেন এবং বিড্ডির পাশেই সমাহিত করেন। বিড্ডির মতো সিম্বার সমাধিতে লিখে দেন ডিয়ারেস্ট সিম্বা, ১৯৫৬-১৯৬৬।

শাহাব উদ্দীন বলেন, 'রবার্ট রাসেল কেরু সিম্বাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পারেননি। তা ছাড়া তিনি বিশ্বাস করতেন, ইংল্যান্ডে চলে গেলে সিম্বাকে অন্য কেউ তাঁর মতো করে ভালোবাসবে না। সে জন্য গুলি করে মেরে ফেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।'

রাসেল কেরু ১৯৬৬ সালে এ দেশ ছেড়ে চলে গেলে এবং কোম্পানির মালিকানা বদল হলেও স্মৃতি রক্ষার্থে কুকুরের সমাধি দুটোকে অক্ষত রাখা হয়েছে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top