অন্দরে ফুটে উঠুক দেশীয় উপকরণের সাজ।
অন্দরের সাজে দেশীয় উপকরণের ব্যবহার নান্দনিকভাবে করা যেতে পারে। খুব সহজেই পাওয়া যাবে কিংবা ঘরেই রয়েছে এমন উপকরণ দিয়ে দেশি আমেজ আনা যায়। নিত্যদিনের ঘরকে ভালোবেসে নতুন করে খুব সহজেই সাজিয়ে নিতে পারি নিজেদের প্রফুল্ল রাখতে—বললেন ডিজাইনার শৈবাল সাহা। ঘর সাজবে সবার পছন্দ, রুচিবোধ অনুযায়ী ছিমছাম পরিপাটিভাবে। চোখ রাখলেই যেন মন ভালো হয়ে যায় সবার।
বসার ঘরে বাঁশ-বেতের ঝুড়িতে ফুল সাজানোর ফুল না মিললেও আম, কাঁঠালগাছের কিছু পাতাই এক পাশ করে বা গোল বৃত্তের মতো করে সাজিয়ে রাখলে দারুণ দেখাবে। বসার ঘর বা শোবার ঘরে মনমতো জায়গা বেছে নিন। বড় পাত্রে জল ঢেলে তাতে ছড়িয়ে দেওয়া যায় ফুলের পাপড়ি আর ছোট ছোট ভাসমান মোমবাতি। আলমারিতে তুলে রাখা শখের বিছানায় পেতে দেওয়া যেতে পারে সুচিকাজের নকশি কভার।
ঝুড়িতে রাখা গাছ
দরজার পাশে ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে তাজা নিমপাতাসহ একটা ডাল। যেন এক টুকরা সবুজ দুলছে ঘরের মধ্যমণি হয়ে। এই দুর্দিনে নিমপাতার গুণাগুণ যুক্ত হবে অন্দরসজ্জায়। খাবার টেবিল সাজতে পারে পুরোনো কাঁসা-পিতলের কিংবা মাটির বাসনকোসনে। কলাপাতায় পরিবেশন করা যেতে পারে খাবার। টেবিলের মধ্যখানে মাটির পাত্রে কলাপাতা বিছিয়ে তাতে লাল টুকটুকে জবা, সঙ্গে কয়েকটা সাদা রঙের তাজা ফুল ছড়িয়ে রাখলে স্নিগ্ধতায় ভরবে ঘরখানি।
অ্যাস্থেটিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনের স্বত্বাধিকারী সাবিহা কুমু শৈবাল সাহার সঙ্গে যেন একমত। বললেন, বদলে নিতে হবে দেখার দৃষ্টি। রোজকার দেখা ঘর-বারান্দা ও জানালায় আনতে হবে একটু পরিবর্তন। এই একটুখানি পরিবর্তনই ঘরকে করবে নান্দনিক আর মনকে করবে উৎসবমুখর।
খাবার টেবিলের সজ্জা
ঘরেই হয়তো আছে নকশিকাঁথা, টেরাকোটা, মাটির পুতুল, হাতি, ঘোড়া, মাদুর। বারান্দায় হয়তো কিছু গাছ। এগুলো একটু অদলবদল করে নিতে পারেন। জায়গা বদলেও ঘর হয়ে উঠবে নান্দনিক। ছোট টবের গাছগুলো বারান্দা ছেড়ে মাঝেমধ্যে ঘরে চলে আসতে পারে। রান্নাঘরের সৌন্দর্য বেশ জরুরি। একটা গাছসহ পট বা পটারি ঘরের সুবিধামতো জায়গায় রাখলে বদলে যাবে চিরচেনা রান্নাঘরের দৃশ্যপট। বাথরুমই–বা বাদ যাবে কেন? আয়নার সামনে বা দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া মানিপ্ল্যান্ট বা লতানো কোনো গাছ আবহই বদলে দেবে। মনের ভেতরে ছড়িয়ে পড়বে ফুরফুরে ভাব।
মাথার ওপরে বাঁশের ঝুলন্ত আলোকসজ্জা
পড়ার টেবিলে বইগুলোর এক পাশে তাজা ফুল আর তার পাশে মাটির ছোট–বড় দু–একটি পুতুল, পাশের দেয়ালে টেরাকোটার মুখোশ বা পছন্দের কোনো চিত্রকর্ম। বারান্দার এক কোণে শতরঞ্জি বিছিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে রেখে দিন কয়েকটি ছোট–বড় কুশন। কুশনের গায়ে পরিয়ে দিন নকশা করা রঙিন কভার। পুরোনো শাড়ির নকশি পাড়েই তৈরি করে ফেলুন কুশন কভার, খাবার টেবিলের রানার, জানালার পর্দা। খাবার টেবিলে রানার হিসেবে সরাসরি চলে যেতে পারে গামছা। এমনভাবেই দেশি আমেজে ঘর হয়ে উঠতে পারে নান্দনিক।
বারান্দার গাছ চলে আসুক ঘরে