What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শিশু কেন স্বাস্থ্যবান হয় না (1 Viewer)

1xJtIZF.jpg


আমাদের অনেকেরই অভিযোগ থাকে, শিশুকে সব ধরনের খাবার খাওয়ানোর পরও তার ওজন ও উচ্চতা কোনোটাই বাড়ে না। কেন এমনটা হচ্ছে? আপনাকে মনে রাখতে হবে, জেনেটিকস বলে একটি বিষয় আছে। আমি এটাও বলছি না যে শুধু জেনেটিকসের ওপরেই সবকিছু নির্ভর করে। আরও অনেক বিষয় আছে শিশুর ওজন ও উচ্চতা বাড়ার ক্ষেত্রে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, মা এবং মায়ের যত্ন। যেটা আমরা অনেকেই একেবারে ভুলে যাই।

আপনার সন্তান পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে তার যত্ন করছেন। কখনো কখনো অতিরিক্ত যত্নই রাখছেন। খুব ভালো কথা। কিন্তু আপনি কি জানেন, আপনার সন্তানের যত্ন শুরু হওয়া উচিত ছিল সে তার মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায়। আমরা কি কখনো সেটা ভেবে দেখেছি? আমরা যেটা করি, সেটা হলো শিশুর বয়স ছয় মাস হয়ে গেলে বুকের দুধের পাশাপাশি তাকে সব খাবার একেবারে খাইয়ে মোটাতাজা করতে চাই। শিশুর সব চাহিদা অনুযায়ী খাবার আমরা কিনে থাকি, মাঝেমধ্যে চাহিদার অতিরিক্তও কিনি। কিন্তু মায়ের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যেন সবাই বেশ উদাসীন।

gfc9nXQ.jpg


শিশুর যত্নের শুরু হওয়া উচিত মায়ের গর্ভধারণের সময়ে

অথচ শিশুর যত্নের শুরু হওয়া উচিত ছিল মায়ের গর্ভধারণের সময়ে। অথবা তারও অনেক আগে। গর্ভকালেরও আগে শিশুর যত্ন নিতে হবে, এটা শুনে নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন, তা–ই না? অবাক হওয়ার কিছু নেই, আপনি ঠিকই শুনেছেন। মায়ের স্বাস্থ্য যদি ভালো না হয়, তাহলে শিশু সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে কীভাবে? মা যদি সুস্থ ও স্বাভাবিক না থাকেন, তাহলে কিন্তু শিশুও সুস্থ–স্বাভাবিক হবে না। একজন সুস্থ–স্বাভাবিক মা–ই পারেন একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুর জন্ম দিতে। তাই আগে মায়ের যত্ন নিন। গর্ভধারণ করার আগে দেখুন মায়ের ম্যালনারিশড বা ওভারনারিশড আছে কি না।

এরপর মা যখন গর্ভধারণ করবেন, তখনো মায়ের যত্ন নিন। মায়ের খাবারের দিকে নজর দিন। মায়ের এই প্রত্যক্ষ যত্নই সন্তানের পরোক্ষ যত্ন হিসেবে বিবেচিত হবে। শুধু খাবার নয়, মায়ের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিন। এ সময়ে মায়ের মানসিক স্থিতি খুব জরুরি। এ সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য খুব বেশি নড়বড়ে হতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের স্থিতির জন্য পরিবারের সহযোগিতা খুব বেশি জরুরি। শারীরিক সমস্যাও কিছু দেখা যেতে পারে। তবে সবকিছুই নিরাময়যোগ্য। মনে রাখবেন, মা যদি সুস্থ ও সবল থাকেন, তাহলেই আপনি একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক সন্তানের আশা করতে পারেন। তাই শিশুর স্বাস্থ্যের আগে মায়ের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করুন।

CuhYTx0.jpg


মায়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা না থাকলে সন্তান কখনোই স্বাস্থ্যবান হবে না

দু-একটা উদাহরণ দিই। ধরুন, গর্ভকালে মায়ের হিমোগ্লোবিন লেভেল স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম আছে। আপনি যদি দ্রুত মায়ের রক্তের হিমোগ্লোবিন লেভেল বাড়াতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে আপনার অনাগত সন্তানের শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেবে। ফলে গর্ভের শিশুর কোনো অঙ্গ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অকেজো হতে পারে অথবা আপনার শিশু 'স্পেশাল' হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনি স্বাস্থ্যবান সন্তান আশা করতে পারেন না।

সন্তানের আগে মায়ের যত্ন নিন। মায়ের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হোন। গর্ভকালে মা যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন, তাহলে অবশ্যই সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুর জন্ম হবে। মায়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা না থাকলে আপনার সন্তান কখনোই স্বাস্থ্যবান হবে না।

গর্ভকালে মায়ের যদি হাইপারথাইরয়েডিজম বা হাইপোথাইরয়েডিজম দেখা দেয়, আর আপনি যদি সেটার সঠিক চিকিৎসা না করেন, তাহলেও একই সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও আপনি সুস্থ ও স্বাভাবিক সন্তান আশা করতে পারেন না।

মা যদি সুস্থ না থাকেন, তাহলে কিন্তু সন্তানের জন্মের পর সে মায়ের বুকের দুধও ঠিকমতো পাবে না বা একেবারেই পাবে না। যেটি আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠার জন্য অপরিহার্য।

তাই সন্তানের আগে মায়ের যত্ন নিন। মায়ের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হোন। গর্ভকালে মা যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন, তাহলে অবশ্যই সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুর জন্ম হবে। মায়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা না থাকলে আপনার সন্তান কখনোই স্বাস্থ্যবান হবে না। সেটা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজনে অবশ্যই আপনার পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

* লেখক: মো. ইকবাল হোসেন | পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
 

Users who are viewing this thread

Back
Top