উইলিয়াম শেকস্পিয়ারকে চেনেন না সাহিত্যজগতে এমন মানুষ বোধ হয় কমই আছে। বিয়োগান্ত ট্র্যাজেডির জন্য খ্যাতিমান এই ব্রিটিশ নাট্যকারের অমর সৃষ্টি রোমিও–জুলিয়েট। এখানে প্রেম করার ক্ষেত্রে চরিত্রের মুখ দিয়ে তোফা এক নিয়ম বাতলেছেন শেকস্পিয়ার। নিয়মটি হলো, 'এমন কাউকে ভালোবেসো না, যে তোমার ভালোবাসার মূল্য দিতে জানে না।'
দ্য রুলস অব লাভ–এর ব্রিটিশ লেখক রিচার্ড টেম্পলার তাঁর বইয়ে ভালোবাসা নিয়ে কিছু নিয়মের কথা লিখেছেন। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো, 'আপনি অন্যের সঙ্গে তখনই সুখী হতে পারবেন, যখন নিজের সঙ্গে সুখী থাকবেন।'
জীবন, দর্শন ও প্রেম প্রভৃতি বিষয় নিয়ে লিখে সমসাময়িক বিশ্বের জনপ্রিয় লেখকদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন ব্রাজিলের পাওলো কোয়েলহো। দ্য ডেভিল অ্যান্ড মিস প্রাইম উপন্যাসে প্রেমের ব্যাপারে মোক্ষম একটি কথা বলেছেন পাওলো কোয়েলহো, 'ভালোবাসতে হবে কোনো কিছুর আশা করা ছাড়াই। যারা ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা আশা করে, জেনে রাখো, তাদের সময়টাই শুধু নষ্ট হচ্ছে।'
বিশ্বখ্যাত জাপানি ঔপন্যাসিক হারুকি মুরাকামির গল্প-উপন্যাসে উঠে আসে মানুষের ভেতরের চরিত্র এবং প্রেমাকাঙ্ক্ষা। যেমন, ছোটগল্প 'ব্লাইন্ড উইলো, স্লিপিং ওম্যান'–এ তাঁর কথা প্রেমিক যুগলদের হয়তো উৎসাহিতই করবে, 'সংখ্যা আসলে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। মন থেকে যে মানুষটাকে মেনে নেবেন, তিনিই আপনার প্রথম ও শেষ ভালোবাসা হবে।'
কেউ যদি আপনাকে ঘৃণা করে, তাহলে বিচলিত হবেন না। কারণ, অস্ট্রেলিয়ান লেখক মারকুস জুসাক তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস দ্য বুক থিফ–এ বলেছেন, একটা সমস্যাজনক বিষয় হচ্ছে, 'যে মানুষটা আপনাকে বেশি ঘৃণা করে, সে–ই আপনাকে ভালোবাসে।'
নিজে প্রেমিক ছিলেন বলেই হয়তো তাঁর সাহিত্যে, এমনকি সাক্ষাৎকারেও প্রেম বিষয়ে বিস্তর আলাপ পেড়েছেন জনপ্রিয় বাঙালি কথাকার হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর মতে, প্রেমের ক্ষেত্রে একটি শব্দ খুব গুরুত্বপূর্ণ, সেটি হলো 'অপেক্ষা'। তিনি বলেন, 'কেউ যদি ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা করতে না পারে, তাহলে সেটা শুদ্ধতম ভালোবাসা নয়।' শুধু এটুকুই নয়, প্রেম বিষয়ে আরও একটি দারুণ নিয়মের কথা বলেছেন হুমায়ূন, 'পৃথিবীতে প্রায় সবাই তার থেকে বিপরীত স্বভাবের মানুষের প্রেমে পড়ে।'
বইপত্র ও অন্তর্জাল ঘেঁটে গ্রন্থনা: হুমায়ূন শফিক