What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ইসরায়েল-আমিরাত চুক্তি: মুসলিম বিশ্বে ভাঙ্গনের শুরু? (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,654
Messages
117,056
Credits
1,241,720
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
m2DlJJj.jpg


ইসরায়েলের সঙ্গে এর আগে কেবল মাত্র দুটি আরব রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক হয়েছে। প্রথমটি মিশরের সাথে ১৯৭৯ সালে। এবং পরবর্তীতে জর্ডানের সঙ্গে, ১৯৯৪ সালে। ইসরায়েল-মিশর চুক্তির ফলাফল হিসেবে প্রাণ দিতে দিয়েছিল মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে।

নিউইয়র্ক টাইমসের বিখ্যাত কলামিস্ট টমাস এল ফ্রিডম্যান ইসরায়েল এবং আরব আমিরাতের চুক্তিকে দেখছেন ভূরাজনৈতিক ভূমিকম্প হিসেবে। তার মতে, ১৯৭৯ সালে আনোয়ার সাদাতের জেরুসালেমে যাওয়ার মতো কোন ঘটনা যেমন এটি না, তেমনি হোয়াইট হাউসের লনে সারাবিশ্বের মিডিয়ার সামনে ইতজাক রাবিনের সঙ্গে ইয়াসির আরাফাতের করমর্দনের সঙ্গেও এর তুলনা চলে না।

চুক্তির আলোকে সামনের দিনগুলিতে ইসরায়েল এবং আরব আমিরাতের প্রতিনিধিদল নিয়মিত মিলিত হবেন নানা বিষয়ে। আর সেই সাথে বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সুযোগ তো থাকছেই। এর মধ্যে শিল্প বিনিয়োগ, পর্যটন, প্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, পরিবেশ, দুদেশে পরস্পরের দূতাবাস স্থাপন থেকে কিছুই বাদ থাকছে না। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দিক হতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং দুই দেশের সরাসরি বিমান যোগাযোগ সুবিধা। এই তিনটি খাতে যৌথভাবে এবং সুস্পষ্টভাবে বলতে গেলে আরব বিশ্বের সহায়তা ইসরায়েলকে অনেক বেশি সুবিধা দিবে। আর একইসাথে অনেক বেশি পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবে ফিলিস্তিন। এই চুক্তির মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত বেশি অগ্রাধিকার পাবে ইসরায়েল। আমিরাতের তরফ থেকে এই চুক্তির মুখ্য উদ্দেশ্য কেবলই আধিপত্য বিস্তার।

চুক্তির পরপরই মুখ খুলেছেন ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মাহমুদ আব্বাস। ইসরাইলের সঙ্গে বিতর্কিত চুক্তি করে আমিরাত বোকামির পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, সম্প্রতি যা ঘটেছে, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। কারণ বহুদিন ধরেই এমনটা চলে আসছে। তবে বলতে চাই, এটা আমিরাত এবং ইসরাইলের মধ্যকার কোনো স্বাভাবিক চুক্তি না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের কারণেই আবুধাবি এ চুক্তি করেছে।

মাহমুদ আব্বাসের এই কথা একেবারেই অমূলক নয়। বরং প্রতিষ্ঠিত এক সত্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তিকে তার পররাষ্ট্রনীতির এক বিরাট বিজয় হিসেবে দেখাতে চাইবেন। নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তার ভাবমূর্তিকে চাঙ্গা করতে এই চুক্তিকে কাজে লাগাবেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, দুইজনেই অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই সমঝোতা চুক্তি থেকে কিছু ফায়দা তুলতে পারেন। করোনাকালীন সময়ে নেতিনিয়াহু এবং ট্রাম্প দুজনের জনপ্রিয়তাই ব্যাপক আকারে হ্রাস পেয়েছে। কূটনৈতিক বিবেচনায় এই চুক্তিতে তাই দুই পক্ষই ব্যাপক লাভবান হয়েছে। এমনকি চুক্তির বিষয়ে আরব আমিরাত কিংবা ইসরায়েল নয় বরং প্রথম মুখ খুলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "বরফ যেহেতু গলেছে এখন আমি আশা করবো আরও অনেক আরব এবং মুসলিম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অনুসরণ করবে।" প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ঘোষণা দেয়ার পরপরই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হিব্রুতে একে ঐতিহাসিক দিন উল্লেখ করে টুইট করেন।

প্রশ্ন আসতে পারে আরব আমিরাত কেন মুসলিম বিশ্বের জন্য স্পর্শকাতর এমন চুক্তি করতে গেল। মূলত আরব আমিরাত আগ্রাসী কূটনৈতিক ও সামরিক কৌশলের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। আর এজন্য তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও ইসরায়েলের সঙ্গ দরকার ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক মেরুকরণ যতই তীব্র হয়ে উঠছে, একটি নির্দিষ্ট শক্তির উত্থানও ততই প্রয়োজন হিসেবে দেখা দিচ্ছে। আর এই সুযোগটার অপেক্ষাতেই ছিল আরব আমিরাত। আমিরাতের কাছে ফিলিস্তিনের স্বার্থ কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।

ফিলিস্তিনের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আহমেদ মাজদালানি বলেন, 'এই চুক্তির বিষয়ে আগে থেকে আমরা খুব একটা জানতাম না। দ্রুততার সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানো এবং চুক্তি ঘোষণার সময় বিবেচনায় আমরা সত্যি বিস্মিত'।

আরব বিশ্বের মধ্যে আমিরাতের সামরিক সক্ষমতা এবং সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা অন্য যে কারো চেয়ে অনেক অনেক বেশি। ইয়েমেনের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ, তিউনিসিয়া, তুরস্ক এবং কাতারের প্রতি তার অস্থিতিশীল নীতি এবং সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ ও মিশরের আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির মতো আঞ্চলিক স্বৈরশাসকের পক্ষে সমর্থন প্রমাণ করে আরব আমিরাতই মধ্যপ্রাচ্যের পরবর্তী বড় শক্তি হতে চাইছে।

তবে আশার কথা হলো এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের সমর্থন পাচ্ছে ফিলিস্তিন। ২০১২ সালে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে আরব পিস ইনিশিয়েটিভের প্রস্তাব দেয়। ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি এবং ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখলকৃত ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব পুরোপুরি প্রত্যাহারের বিনিময়ে দেশটির সঙ্গে আরব বিশ্বের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রস্তাব দেয় মুসলিম বিশ্বের অভিভাবকতুল্য দেশটি। উল্লেখ্য, সৌদি আরব ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। একই সঙ্গে ইসরায়েলের বিমানসংস্থাগুলোর জন্য সৌদি আরবের আকাশ বন্ধ রয়েছে।

সৌদি বাদশাহ সালমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রশক্তি হলেও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের লঙ্ঘন এবং জেরুজালেমের মর্যাদা পাল্টে দেয়ার মতো কোন পরিকল্পনায় সায় দেবেন না বলে দীর্ঘদিন ধরেই মত দিয়ে আসছেন। ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাদশাহ সালমানের সঙ্গে সৌদির ডি ফ্যাক্টো নেতা ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মতের কোনও অমিল নেই বলে দাবি করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি ইসরাইলের গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক প্রকাশ্য ও আনুষ্ঠনিক করার বিষয়ে পরবর্তী আরব দেশ হতে যাচ্ছে বাহরাইন। এই তালিকায় আরো আছে ওমানের নাম। গোয়েন্দা বাহিনী প্রধান (মোসাদ) ইয়াসি কোহেন গত সপ্তাহের শেষে বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী খলিফা বিন সালমান আল খলিফার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক সাক্ষাৎ করেছেন।

ইসরায়েলের গোয়েন্দা মন্ত্রী এলি কোহেন দেশটির আর্মি রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমিরাতের সঙ্গে এই চুক্তির ধারাবাহিকতায় আরব উপসাগরীয় দেশ এবং আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে আরও চুক্তি হবে।' তার বক্তব্য সত্য হলে, বাহরাইন ও ওমান এখন নির্দিষ্টভাবে আলোচনায়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top