What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Videos লালসালু কথন (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
5kIKd8d.jpg


সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্'র লেখা উপন্যাস 'লালসালু' বাংলা সাহিত্যের এক ধ্রুপদি সৃষ্টি। এর পটভূমি ৪০ কিংবা ৫০-এর দশকের বাংলাদেশের গ্রাম্যসমাজ হলেও, এর প্রভাব বা বিস্তার যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। উপন্যাসটিতে গ্রামের সাধারণ মানুষের সরলতা এবং তাদের অন্তরের খোদাভীতিকে পুজি করে ব্যবসা করার এক নোংরা চিত্র খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। উপন্যাসটি প্রকাশের পর বিখ্যাত কবি আহসান হাবীব 'লালসালু'কে তৎকালীন সময়ে 'বাঙালি মুসলিমদের লেখা সেরা উপন্যাস' হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বাংলা ভাষায় লেখা উপন্যাসটি পরবর্তীতে তিন ভাষায় অনুবাদ করা হয় (ইংরেজী, উর্দু ও ফ্রেঞ্চ)।

নব্বই দশকে প্রশংসিত দুই চলচ্চিত্র 'নদীর নাম মধুমতী' (১৯৯৪) এবং 'চিত্রা নদীর পাড়ে' (১৯৯৯) নির্মাণের পর ২০০১ সালে খ্যাতনামা পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল নির্মাণ করেন লালসালু উপন্যাস অবলম্বনে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, 'লালসালু – A Tree Without Roots'। তিনি এ ছবির চিত্রনাট্য সাজান এবং সংলাপ রচনা করেন, চলচ্চিত্রটি তার প্রডাকশন হাউজ কিনো-আই ফিল্মস থেকে প্রযোজনা করা হয়। মূল চরিত্র 'মজিদ' এর জন্য নির্বাচন করা হয় খ্যাতিমান অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ কে। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন মুনিরা ইউসুফ মিমি, মেহবুবা মাহনূর চাঁদনী, রওশন জামিল, আলী যাকের, তৌকীর আহমেদ, চিত্রলেখা গুহ সহ আরো অনেকে।

ছবির গল্পে দেখা যায়, নদীবিস্তৃত একটি গ্রামে 'মজিদ' নামে লম্বাচওড়া দেখতে এক হুজুরের আগমন হয়৷ সে গ্রামে এসে একটি পরিত্যক্ত কবরস্থান পরিষ্কার করে তার ওপর লালসালু বিছিয়ে দেয় এবং উক্ত কবরকে মোমবাতি দিয়ে সাজিয়ে 'মোদাচ্ছের পীরের মাজার' বলে আখ্যায়িত করে। ওদিকে গ্রামের মানুষ কখনো জানতোই না এখানে এতোদিন এক পীর অযত্নে অবহেলায় শুয়ে ছিল। অন্তরে খোদাভীতি থাকায় তারা মজিদের কথা বিশ্বাস করে এবং মাজারে দান-খয়রাত করতে থাকে। মজিদ পবিত্র কুরআন মাজীদ সহীহ শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করতে পারতো। তিনি উক্ত মাজারের পাশে বসে সুমধুর কণ্ঠে নিয়মিত কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতেন, এতে করে গ্রামের মানুষেরা উক্ত মাজারের প্রতি আকৃষ্ট হতেন এবং টাকাকড়ি সহ বিভিন্ন খাবার-দাবার মাজারে দান করতেন। উক্ত অর্থকড়ি এবং খাবার দিয়ে মজিদ খুব সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে থাকে, সেইসাথে গ্রামের মানুষদের ওপর তিনি এক ধরনের মনঃস্তাত্ত্বিক প্রভাব বিস্তার করা শুরু করেন। এই প্রভাব এতোটাই ভয়ানক ছিল, একসময় সাধারণ যুবক থেকে শুরু করে গ্রামের মাতব্বর অব্দি তার কথায় প্রভাবান্বিত হতে শুরু করে। পরদেশী মানুষ থেকে হয়ে উঠেন গ্রামের গণ্যমান্য মুরুব্বি!

az6BPnw.png


এভাবেই তিনি একসময় গ্রামের মানুষদের যাবতীয় মৌলিক চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন। একসময় মজিদ নিজের মিথ্যে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে গ্রামের বিভিন্ন উন্নতিতে বাধা দিতে থাকেন৷ যার মধ্যে অন্যতম হলো আক্কাস নামে এক এক তরুণের উদ্যোগে গ্রামে বিদ্যালয় গড়ে তোলায় বাধা দেওয়া। কারণ গ্রামের ছেলেরা শিক্ষিত হলে তাদের মস্তিষ্ক বিকশিত হবে, বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে জানতে পারবে। তখন আর তারা মাজারপ্রথায় বিশ্বাস করবে না। গ্রামে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মজিদ বিবাহ করেন। তার স্ত্রী অত্যন্ত সৎ, পরিশ্রমী ও কর্মঠ হওয়া সত্ত্বেও নিজেরই ছড়ানো মোহে অন্ধ হয়ে এবং সুন্দর স্ত্রী-সন্তানের আশায় পরবর্তীতে মজিদ তাকে বাড়ী থেকে বিতাড়িত করেন, বয়সে অনেক ছোট এক তরুণীকে বিয়ে করেন। একসময় এভাবেই একের পর এক ফন্দি আটতে গিয়ে মজিদ বুঝতে পারেন তিনি এই মিথ্যে জালে আটকা পড়েছেন, তার জীবনে সুখ নেই। কিন্তু এতোদিনে তিনি যে মিথ্যার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, এখান থেকে বের হয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই।

'লালসালু' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মধ্যযুগ থেকে গ্রাম্যসমাজে প্রভাব বিস্তার করা ধর্মীয় কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস এবং খোদাভীতিকে পুজি করে ব্যবসা করে আসা অসৎদের কর্মকান্ড সেলুলয়েডের পর্দায় তুলে ধরা হয়েছে। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা রাইসুল ইসলাম আসাদ যেনো মজিদে সম্পূর্ণ মিশে গেছেন! এককথায় বলতে গেলে, মোরশেদুল ইসলামের নির্মিত 'দুখাই' (১৯৯৭) পরবর্তী সময়ে রাইসুল ইসলাম আসাদ তার সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন এই 'লালসালু' চলচ্চিত্রে। একসময় আমরা রাইসুল ইসলাম আসাদকে যেমন 'দুখাই' নামে চিনেছি, ঠিক তেমনি মজিদের চলন-বলন, অভিনয়, কথাবার্তা চিন্তা করলে রাইসুল ইসলাম আসাদের সেই জাদুকরী অভিনয় স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠ। পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সুযোগ পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধভিক্তিক ঘরানার বাইরে গিয়ে ভিন্ন কিছু করে দেখানোর এবং সেক্ষেত্রে তিনি শতভাগ সফল।
'লালসালু' চলচ্চিত্রটি এমন একটি সময়ে মুক্তি পেয়েছিল যখন আমাদের চলচ্চিত্র তার স্বর্ণযুগ পেরিয়ে অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছে। তখন ভালমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ হতো হাতেগোনা কয়েকটি। 'লালসালু' সেই সময়ের চ্যালেঞ্জকে উতরাতে পেরেছে।

চলচ্চিত্রটি মোট আটটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার অর্জন করে। এগুলো হলো-

১. সেরা চলচ্চিত্র (লালসালু)
২. সেরা পরিচালক (তানভীর মোকাম্মেল)
৩. সেরা কাহিনীকার (সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ)
৪. সেরা সংলাপ রচয়িতা (তানভীর মোকাম্মেল)
৫. সেরা অভিনেতা (রাইসুল ইসলাম আসাদ)
৬. সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী (চাঁদনী)
৭. সেরা চিত্রগ্রাহক (আনোয়ার হোসেন)
৮. সেরা শব্দগ্রাহক (রতন পাল)

ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট তাদের বাছাইকৃত সেরা বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের তালিকায় 'লালসালু' কে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বর্তমানে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে লালসালু উপন্যাসটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরকম অনেক শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যায়, যারা পরিক্ষার প্রস্তুতির জন্য উপন্যাসের পাশাপাশি 'লালসালু' চলচ্চিত্রটি এক বা একাধিকবার দেখে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে থাকে। বিশেষকরে দুর্বল শিক্ষার্থীরা তাদের সময় বাঁচাতে এবং কম সময়ে অধিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ১১০ মিনিট দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রটি দেখে থাকে।

চলচ্চিত্রঃ লালসালু (২০০১)

ধরণঃ সোস্যাল সাইকোলজিক্যাল ড্রামা
পরিচালকঃ তানভীর মোকাম্মেল
প্রযোজনাঃ কিনো-আই ফিল্মস
অভিনয়ঃ রাইসুল ইসলাম আসাদ, মুনিরা ইউসুফ মিমি, মেহবুবা মাহনূর চাঁদনী, আলী যাকের, রওশন জামিল, আমিরুল হক চৌধুরী, তৌকীর আহমেদ, চিত্রলেখা গুহ, তামান্ন ইয়াসমিন তিথী, সাইদুর রহমান বয়াতী, আহসানুল হক মিনু, এমদাদুর রহমান, মাসুদ আলী খান প্রমুখ।
চিত্রগ্রাহকঃ আনোয়ার হোসেন
শব্দগ্রাহকঃ রতন পাল
রূপসজ্জাঃ দীপক কুমার সুর
সম্পাদনাঃ মহাদেব সাই
সংগীত পরিচালনাঃ সৈয়দ শাবাব আলী আরজু
দৈর্ঘ্য: ১১০ মিনিট
ফরমেটঃ ৩৫মিমি. (রঙিন)
মুক্তিঃ ২০০১
দেশঃ বাংলাদেশ
ভাষাঃ বাংলা

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top