What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আকুলা : মানবসৃষ্ট এক ভয়ঙ্কর দানব! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
0p3mp36.jpg


আধুনিক নৌ সমরবিদ্যার অন্যতম এক হাতিয়ার হল 'ডুবোজাহাজ' বা 'সাবমেরিন'। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ডুবোজাহাজের বহুল ব্যবহার হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের স্নায়ু-যুদ্ধের সময় সাগরতলের এ ভয়ানক দানবের লড়াই চরমে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় সোভিয়েত নৌবহরে যুক্ত হয় 'আকুলা' নামের তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বড় সাবমেরিন।

আমাদের এই প্রতিবেদনে জানাবো স্নায়ু-যুদ্ধকালীন সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাবমেরিন সম্পর্কে কিছু বিস্ময়কর তথ্য।

পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত জরুরী সমরাস্ত্র হিসেবে আধুনিক ও বিশাল আকারের ডুবোজাহাজ নির্মাণ করতে শুরু করে। সোভিয়েত ও মার্কিন, উভয় দলই শঙ্কায় ছিল যে তাদের প্রতিপক্ষ যেকোনো মুহূর্তে পারমাণবিক আক্রমন করে বসতে পারে। তাই উভয়ের জন্যই পাল্টা হামলা চালানোর অস্ত্র হিসেবে সাবমেরিন ছিল খুবই উপযুক্ত। তৎকালীন সময়ের মার্কিন ডুবোজাহাজ গুলো এগিয়ে থাকলেও, সোভিয়েত জাহাজগুলোর একটি বিরাট সমস্যা ছিল। আর তা হলো, সাবমেরিনগুলো পানির নিচে যাবার সময় প্রচণ্ড শব্দ করতো। ফলে মার্কিন ডুবোজাহাজ গুলো খুব সহজেই সোভিয়েতদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারত।

দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকার কারণে একটি ডুবোজাহাজে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি দরকার হতো। জ্বালানির সমস্যা দূর করতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ডুবোজাহাজে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন করতে সক্ষম হয়। পারমাণবিক চুল্লিতে খুব সামান্য পরিমাণ জ্বালানি ব্যবহার করে অকল্পনীয় শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সত্তরের দশকে যুক্তরাষ্ট্র তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বড়, সাড়ে পাঁচশত ফুট লম্বা 'ওহায়ও ক্লাস সাবমেরিন' সাগরে নামায়। সেই সাবমেরিনগুলো চব্বিশটি পারমানবিক বোমা ধারণ করে প্রায় চার হাজার ছয়শতাধিক মাইল বেগে একপ্রকার নিঃশব্দে সাগরতলে ঘুরে বেড়াতে পারত।

0CJ91GP.jpg


এর পাল্টা জবাব হিসেবে সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান 'লিওনিড ব্রেজনেভ' পরমাণু বোমাবাহী নিউক্লিয়ার ইঞ্জিন সম্পন্ন ডুবোজাহাজ বানানোর ঘোষণা দেন। লিওনিড ব্রেজনেভ -এর ঘোষণা অনুযায়ী হাজার ১৯৮১ সালে অত্যাধুনিক এক ডুবোজাহাজ নিয়ে সাগরে নামে সোভিয়েত বাহিনী। সেই ডুবোজাহাজের নাম দেয়া হয় 'আকুলা'। রুশ ভাষায় যার অর্থ 'হাঙ্গর'। আশি ও নব্বইয়ের দশকে মোট ছয়টি আকুলা নির্মাণ করা হয়। ৫৭৪ ফুট লম্বা ও ৪৮ হাজার টন ভরের আকুলা ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগামী ডুবোজাহাজ। আকুলা ডুবোজাহাজের দেহ কয়েক প্রস্থ আবরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। যাতে বাইরের আবরণটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, গোটা সাবমেরিন অচল হয়ে না পরে। আকুলা -তে বসানো দু'টি পরমাণু চুল্লির প্রত্যেকটি ২২ লক্ষ ৫৫ হাজার হর্সপাওয়ার শক্তি উৎপাদন করত। এই পরিমাণ শক্তি দিয়ে ছোটখাটো একটি শহরের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

প্রায় দেড়শত মানুষের টানা চার মাস বসবাসের ব্যবস্থা ছিল আকুলা ডুবোজাহাজে। এছাড়াও ছিল বিশেষ সুইমিংপুল, জিমনেসিয়াম ও ইনডোর খেলার ব্যবস্থা। এটি ছিল সাগরের তলে এক চলন্ত সামরিক ঘাঁটি।

আকুলা ডুবোজাহাজ দশটি ১০০ কিলো টন পরমাণু বোমা বহন করত। যার প্রত্যেকটি জাপানের হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত 'লিটলবয়' -এর তুলনায় ৬ গুণ বেশি শক্তিশালী। এ সাবমেরিন গুলোতে আরও ছিল 'R-39' মিসাইল। লম্বায় ৫৩ ফুট ও ৮৪ টন ওজনের R-39 মিসাইল ৮৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারত। উত্তর মেরুর যে কোন অঞ্চল থেকে মার্কিন মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম এরকম ২০ টি মিসাইল সবসময় মজুদ থাকতো একেকটি আকুলাতে। এর বাইরেও থাকতো একাধিক টর্পেডো মিসাইল। এবং প্রয়োজনে এতে বিমান বিধ্বংসী মিসাইল বসানোরও ব্যবস্থা ছিল।

দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে প্রতিটি আকুলা ডুবোজাহাজ নির্মাণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, সাগরের নিচ দিয়ে সহজেই পারমাণবিক বোমা বহন করা। কারন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার পর আমেরিকানরা পারমানবিক বোমা আবিষ্কার করে পৃথিবীর যুদ্ধের ইতিহাসকেই বদলে দিয়েছিল।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top