What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other ক্রান্তিকালের আরিফিন শুভ (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
F0dvQag.jpg


আরিফিন শুভ-র জার্নি একটা সময় থেকে আর একটা সময়ের উত্তরণ পর্যন্ত সাফল্যের পরিণত গল্প। এ গল্পটিতে আসতে পর্যায় আছে বিভিন্ন।

অনেকে ভাবে একজন নায়ক সরাসরি চলচ্চিত্রে তার সাফল্য আনতে পারে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই। সেরকম খুব কম ঘটে। যারা সরাসরি চলচ্চিত্রে আসে তাদেরও পাড়া-মফস্বলে কোনো না কোনো অভিনয়ের মঞ্চ বা ক্ষেত্র থাকে যেখানে হাতেখড়ি হয়। তাও যদি না হয় তবে গড গিফটেড ছাড়া আর কিছু বলা যায় না তাকে। কিছু তারকার উত্থানে ব্যাকগ্রাউন্ড থাকে অন্য মাধ্যমের। সেখানে তার ভিত্তিটা তৈরি হয়। অভিজ্ঞতার জন্য দরকার হয়। চলচ্চিত্র অন্য সব মাধ্যম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা তাই এখানে নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করতে হয়। আরিফিন শুভ-র চলচ্চিত্রে আগমনের গল্পে পূর্বের রেশটা বড় ফ্যাক্টর।

কিছু লোক একটা বিষয় বড় ভুল ব্যাখ্যা করে। তারা বলে থাকে, 'যারা নাটক করে তাদেরকে চলচ্চিত্রে মানায় না। কিংবা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি নাটক করলে তাকে ছোট ভাবা হয় অথচ নাটক বড় শিল্পের অংশ। নাটকের অ্যাটিচিউডটা চলচ্চিত্রে রাখলে তখন সমালোচনাটা চলতেই পারে। কিন্তু অভিনয়ের ভিত্তিটা আনতে নাটকের ভূমিকাও অনেক হতে পারে। আরিফিন শুভ-র ভিত্তিটা নাটক থেকেই। র‌্যাম্পে হাঁটার সময়টাও স্ট্রাগলড পিরিয়ড ছিল। আজকের ব্যস্ত প্রতিষ্ঠিত মীম-ও নাটক করত। মডেলিং করত দুজনেই। এগুলো তাদের ভিত্তি ছিল।

শুভ-র নাটকের সংখ্যা ভালোই।বলতে গেলে 'ঝগড়া, সিরিয়াস একটা কথা আছে, মাই ভ্যালেন্টাইন, বুলেট খান, শেষের কবিতার পরের কবিতা, অপেক্ষা, ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই, আমি শুধু মেয়েটাকে চিঠি দিতে চেয়েছিলাম, প্রশ্নবোধক, আমি হয়তো মানুষ নই' এসব নাটক/টেলিফিল্মে তাকে লাইমলাইটে এনেছে। অভিনয়ের জায়গাটা পোক্ত হয়েছিল এগুলোতে। ববি-র সাথে হৃদয় খানের গাওয়া 'ভেবে ভেবে' মিউজিক ভিডিওতে নায়কোচিত বৈশিষ্ট্য ছিল। উল্লেখ করা ভালো 'বুলেট খান' নাটকটির বিশেষ গুরুত্ব আছে। এ নাটকে স্টারডমকে বাজেভাবে যারা ব্যবহার করে পরিবার ও দর্শককে ছোট করে দেখে তাদের জন্য মেসেজ আছে। শুভর একটা সংলাপ ছিল ঐ নাটকে-'আমি বুলেট খান একটাই। আর হবে না এদেশে।' এই আত্ম-অহংকার স্টারডমের জন্য ক্ষতিকর কারণ অহংকার পতনের মূল। পরে বুলেট খান নিজের দরকারেই পরিবর্তন হয় কারণ আপনজনের সাথে দূরত্ব তৈরি করে বাঁচা যায় না। এরকম প্লট থেকে ছবি হওয়া সম্ভব। এমনকি 'ভালোবাসি তাই' টেলিফিল্মে বিন্দুর বিপরীতে কর্পোরেট অফিসের শুভর গেটআপ এত অসাধারণ ছিল যে তা প্রশংসনীয়। নাটকটিতে সিনেমাটিক বৈশিষ্ট্য ছিল। পরের পার্ট 'ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই'-তে সানজিদা প্রীতির বিপরীতে শুভর চরিত্রটি স্মরণীয়। মোটর সাইকেলে শুভ, প্রীতির সিকোয়েন্সে ব্রেক ফেলের পরে শুভ প্রীতিকে তার হেলমেট পরতে দেয় ভালোবাসার মানুষকে বাঁচানোর জন্য। যারা দেখেছে কেউই ভুলবে না। আরিফিন শুভ তখন পর্যন্ত চলচ্চিত্রে না আসলেও সে বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে ছিল। তারপর তার জীবনে চলচ্চিত্র-ই শেষ ঠিকানা হলো।

আমাদের মধ্যে অনেকেরই সমালোচনার গণহারে বিরোধিতা করার মুডটা খুব প্রাচীন। তাই অবদান বা ফ্লোর এগুলোর কথা ভুলে যাই। আরিফিন শুভ-র চলচ্চিত্রযাত্রা শুরু হয় যখন তখনকার সময়ে পরিচালককে প্রথম তার কথা বলেছিল শাকিব খান। 'পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী'-তে সেকেন্ড রোলের জন্য শুভকে নেবার প্রস্তাব করে শাকিব। শুভর বেশকিছু সাক্ষাৎকারে এ সত্যটা উঠে এসেছে এবং এ ছবির পরে তাদের ভালো সম্পর্ক হয়েছিল এ নিউজও হয়েছিল। শুভ শাকিবকে সম্মান করে। প্রফেশনালি এখন তারা প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্তু ভক্ত-সমালোচকদের একপেশে কিছু ভাবনাতে তাদেরকে পরস্পরের শত্রু বানানো হয়েছে যা দৃষ্টিকটু। কারো জীবনে কারো অবদান বা ভূমিকা থাকলে সেটা স্বীকার করা ভক্ত-সমালোচকেরও কর্তব্য।

MNoUw9s.jpg


তো সিনেমার প্ল্যাটফর্মে আরিফিন শুভ নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থেকে একটা অবস্থানে আসতে পেরেছে। সেটা তার নিজের গুণ। তার যাত্রাটা হয়েছে এমন সময়ে যখন ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে একজন নায়কের আধিপত্য বা বাস্তবতা ছিল। শুভ 'পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী' দিয়ে 'আমি নিঃস্ব হয়ে যাব' গানটিতে হাইপ তুলতে সক্ষম হয়। তার হাইট, গেটআপ, নায়কোচিত অভিনয় সব মিলিয়ে দর্শকের আগ্রহ তৈরি করে। নায়ক হবার আগেই সে কিন্তু নেগেটিভ ক্যারেক্টারে নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। শুভর এই অর্জনটি তাকে পরবর্তী ফ্লোর দেয় যার ফলাফল ছিল 'ছায়াছবি, অগ্নি, কিস্তিমাত, ওয়ার্নিং, ছুঁয়ে দিলে মন, নিয়তি, অস্তিত্ব, মুসাফির' ছবিগুলো। 'জাগো' দিয়েই প্রশংসা কুড়িয়েছিল। 'ছায়াছবি' যদিও মুক্তি পায়নি তবে গানগুলোতে পূর্ণিমার বিপরীতে নায়কোচিত ছিল গানগুলোতে। 'অগ্নি'-তে নিজের অ্যাকশন পারফেকশন প্রমাণ করেছে যার পরবর্তী উদাহরণ 'কিস্তিমাত, মুসাফির' ও আপকামিং 'মৃত্যুপুরী।' 'নিয়তি, অস্তিত্ব' এ দুটি মানবিক আবেদনে চ্যালেন্জিং চরিত্র ছিল শুভর। 'ছুঁয়ে দিলে মন'-এর হিটের পরে 'ঢাকা অ্যাটাক'-এর মতো সুপারহিট ছবি দিয়ে শুভও প্রমাণ করেছে ঢালিউডে বর্তমানে তার চাহিদাও প্রথম সারির। 'ওয়ার্নিং, তাঁরকাটা, ভালোবাসা জিন্দাবাদ' এগুলো অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছবি। অনেক বড় বড় তারকাদের ক্যারিয়ারেও থাকে দুর্বল ছবি সেটাই চূড়ান্ত কিছু নয়।

একটা সাক্ষাৎকারে আরিফিন শুভ ইউটিউবকে তার শিক্ষক বলেছিল। নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলি বাড়াতে ও সীমাবদ্ধতা কাটাতে অনেককিছুর সাথে জড়িত থাকত সে। শুভ তার পেছনের ফেলে আসা স্ট্রাগল পিরিয়ডকে অকপটে স্বীকার করে। নিজের চিন্তার জায়গায় সে সৎ। পার্সোনালিটি বজায় রেখে চলে। তার কাছে এগুলো শেখার আছে।

আরিফিন শুভ স্টাইল, ফ্যাশন, স্টারডম সব মিলিয়ে সচেতন তারকা ছিল। তার মধ্যে আপ-টু-ডেট দর্শকের সেন্স বোঝার একটা সচেতনতাও ছিল। একটা ক্রান্তিকালের নায়ক আরিফিন শুভ যখন একজন নায়কনির্ভর ঢালিউডে একঘেয়েমি চলছিল তখনই তার আগমন এবং নিজস্বতা দিয়ে দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। কিন্ত মাঝখানে 'ভালো থেকো, একটি সিনেমার গল্প' ছবিগুলো করে লাইমলাইটের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। তবে সামনে মুক্তি প্রতীক্ষিত 'মিশন এক্সট্রিম, সাপলুডু' ছবিগুলো এমনকি ভারতীয় বাংলা ছবি 'আহারে' দিয়ে আবার আগ্রহ তৈরি করেছে দর্শকের মধ্যে।

শাকিব খানের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ধারাবাহিক গ্রহণযোগ্যতার পরে ইন্ডাস্ট্রতে নির্ভরশীল নায়কের অভাবটা পূরণ করেছে আরিফিন শুভ। সে এগিয়ে যাক। তাকে দেখে তার মতো আরো নির্ভরশীল নায়ক আসুক ইন্ডাস্ট্রিকে লিড দেবার জন্য। পাশাপাশি ক্যারিয়ারে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে তাঁকে। ইমোশনের বশবর্তী হয়ে যাতে কোনো দুর্বল গল্পের ছবি সিলেকশন না করে।

'আরিফিন শুভ হারিয়ে গেছে' এই কথাটাই হারিয়ে গিয়ে স্বরূপে ফিরুক সে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top