What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other প্রযোজনা–পরবর্তী কাজ বিদেশে, আছে পাল্টাপাল্টি যুক্তি (1 Viewer)

ooDXiWF.png


দেশের বেশির ভাগ নির্মাতাই সিনেমার প্রযোজনা-পরবর্তী কাজে ছুটছেন বিদেশে। এই মুহূর্তে একাধিক সিনেমার কাজ চলছে ভারতে। বেশ কিছু পরিচালক দেশের বাইরে যাওয়ার অপেক্ষায়। সিনেমার কারিগরি কাজে দিনদিন বিদেশ-নির্ভরতা বাড়ছে। অনেক নির্মাতার দাবি, সিনেমার প্রযোজনা-পরবর্তী কাজের জন্য মানসম্পন্ন কারিগরি ব্যবস্থাপনা নেই দেশে। নেই এ বিষয়ে দক্ষ কর্মীও। দেশে দায়সারাভাবে কাজ হয়। অন্যদিকে এই খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সিনেমার প্রযোজনা-পরবর্তী কাজে কারিগরি কলাকুশলীদের সঙ্গে নির্মাতারা পেশাদার আচরণ করেন না।

waroDBS.jpg


ঈদে মুক্তির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে 'অন্তরাত্মা' সিনেমাটি, ছবি: সংগৃহীত

অন্তত ১০ জন নির্মাতার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে প্রথম আলোর। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাউন্ড ডিজাইন, সম্পাদনা, কালারিস্ট, আবহ সংগীতসহ প্রযোজনা-পরবর্তী কাজগুলো সম্পন্ন করতে দেশে এখনো পেশাদারি পরিবেশ তৈরি হয়নি। নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্র এবং দক্ষ কর্মী। তাঁদের ভাষ্য, অনেকে টাকা নিয়ে দায়সারা কাজ করেন। তবে দিন শেষে কাজ নিয়ে অসন্তোষ থেকেই যায়। ঈদে মুক্তির জন্য তৈরি হচ্ছে 'অন্তরাত্মা' সিনেমাটি। ছবিটির প্রযোজনা-পরবর্তী কাজ চলছে ভারতে। ছবিটির নির্মাতা ওয়াজেদ আলী জানান, তাঁরা পুরো কাজ ভারতে শেষ করে ঈদের জন্য ছবিটি প্রস্তুত করবেন।

Do8FLCm.jpg


কলকাতায় 'অপারেশন সুন্দরবন' সিনেমার কাজ চলছে, ছবি: সংগৃহীত

নির্মাতা দীপংকর দীপন এই মুহূর্তে কলকাতায় 'অপারেশন সুন্দরবন' সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তিনি সেখানে ভিএফএক্স, কালার গ্রেডিং, সাউন্ড ডিজাইন, সম্পাদনাসহ আরও বেশ কিছু কাজ করাচ্ছেন। কলকাতা থেকে তিনি বলেন, 'দেশে ভিএফএক্সের কাজের জন্য অবকাঠামো ও টিম সেভাবে গড়ে ওঠেনি। অনেকেই আছেন, ভালো ভিএফএক্সের কাজ করেন। কিন্তু তাঁরা বিজ্ঞাপনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তা ছাড়া উন্নত প্রযুক্তির সাউন্ড টেকনোলজিও দেশে নেই। বাধ্য হয়ে বাইরে কাজ করতে হচ্ছে।'

2viPZFP.jpg


লকডাউন শেষ হলেই প্রযোজনা-পরবর্তী কাজে দেশের বাইরে যাবেন কিছু নির্মাতা, ছবি: সংগৃহীত

লকডাউন শেষ হলেই 'হাওয়া', 'কানামাছি', 'দামাল', 'নন্দিনীসহ একাধিক ছবির নির্মাতা প্রযোজনা-পরবর্তী কিছু কাজে দেশের বাইরে যাবেন। 'হাওয়া' সিনেমার নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন জানান, এখানে যে স্টুডিওগুলো আছে, তা বিজ্ঞাপনের জন্য দারুণ। তিনি বলেন, 'সিনেমার জন্য ডেডিকেটেড সার্ভিসগুলো এফডিসিতে আছে। তবে সেখানে পেশাদারিভাবে কাজ হয় না। সিনেমা একসঙ্গে আর্ট ও বাণিজ্যের বিষয় হিসেবে দাঁড়ালেই অবকাঠামো দাঁড়িয়ে যাবে। তখন আমরা কম খরচে দেশেই সব কাজ করতে পারব।'

৫ জন পরিচালক জানালেন, মানসম্পন্ন একটি সিনেমা নির্মাণের প্রয়োজনীয় সব উপকরণ এফডিসিতেই আছে। কিন্তু সেখানে দক্ষ কর্মী নেই। সত্তর, আশি ও নব্বইয়ের দশকে বেশির ভাগ প্রযোজনা-পরবর্তী কাজ এফডিসিতে করা হতো। ২০০০ সালের পর থেকে কিছু নির্মাতা ছুটতে থাকেন দেশের বাইরে। তাঁদের দেখাদেখি অনেকেই ভারতে যাওয়া শুরু করেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন নির্মাতা বলেন, 'বর্তমানে পোস্ট প্রোডাকশন নিয়ে ধারণা নেই, এমন কিছু নির্মাতা অন্য দেশে ছুটছেন। সেখানে গিয়ে ভালো একজন সুপারভাইজার ভাড়া করে কাজ শেষ করছেন। তাঁরা দেশে এসে অন্যদের বাইরে যেতে মোটিভেট করছেন। এসব কারণেও দেশের স্টুডিওগুলো দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে না।'

nP5azt6.jpg


বিনিয়োগ ও দক্ষ কর্মী থাকলে দেশেই সব কাজ করা যাবে, ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র পরিচালক অমিতাভ রেজার 'রিক্সাগার্ল' সিনেমার সাউন্ডের কাজ ঢাকায় করলেও প্রযোজনা-পরবর্তী অন্য কাজ করিয়েছেন মুম্বাইতে। পোস্টের সব কাজ দেশে করা সম্ভব কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কোয়ালিটি অনেক সময় মার খেয়ে যায়। এই পেশায় মানুষও কম। সবাইকে পাওয়া যায় না। তা ছাড়া বাইরে অনেক কম খরচে কাজ করা যায়।' তিনি মনে করেন, বিনিয়োগ ও দক্ষ কর্মী থাকলে দেশেই সব কাজ করা যাবে।

এদিকে এই পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজনের দাবি, দেশেই সিনেমার প্রযোজনা-পরবর্তী সব কাজ করা সম্ভব। কিন্তু নির্মাতারা দেশে কারিগরি কলাকুশলীদের সঙ্গে পেশাদারি আচরণ করেন না। সাউন্ড ডিজাইনে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন রিপন নাথ। তিনি জানান, সাউন্ডের সব কাজ দেশেই করানো সম্ভব। বেশির ভাগ সিনেমার সাউন্ড ডিজাইনের কাজ তিনি করছেন।

PXl9ajp.jpg


'কাঠবিড়ালী' সিনেমার একটি দৃশ্য। সবকাজ দেশে হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

সিনেমার সম্পাদনা ও কালারের জন্য পরিচিত নাম রাশেদুজ্জামান সোহাগ। তিনি 'পিঁপড়াবিদ্যা', 'ছুঁয়ে দিলে মন', 'কাঠবিড়ালী'সহ বেশ কিছু সিনেমার কাজ করেছেন। তিনি বলেন, 'দেশে আমরা সব কাজই করতে পারি। আমাদের কাছে এলেই কিছু নির্মাতারা ঠিকঠাক পারিশ্রমিক দিতে চান না। তাঁদের বাজেট থাকে কম। নানা অনুরোধ ও অজুহাত শুনে কাজ করতে হয়। তখন অনেকেই মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে চান না। তাতে কাজের মান ভালো হয় না। কিছু নির্মাতা ধরেই নেন দেশের কেউ কিছু পারে না। বাইরে কাজ করালে ভালো হবে।'
সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া 'বিশ্বসুন্দরী' সিনেমার সব কাজ হয়েছে দেশেই। শুটিং শেষে 'অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন' সিনেমার প্রযোজনা-পরবর্তী কাজ চলছে দেশেই। সিনেমাটির নির্মাতা রায়হান জুয়েল বলেন, 'বাংলাদেশে অবশ্যই ট্যালেন্ট আছে। তাদেরই খুঁজে সিনেমার কাজে ব্যবহার করছি। কারিগরি লোকবল কিছুটা কম হলেও দেশেই সব কাজ শেষ করতে চাই।'
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যবসায়িকভাবেই প্রযোজনা-পরবর্তী কাজের জন্য বড় বড় ফার্ম গড়ে উঠেছে। তারা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজ করাতে বিনিয়োগ করেছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু বাংলাদেশে বেশির ভাগ ব্যক্তিগত ফার্ম। তাদের বিনিয়োগও কম। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করে এই খাতে অর্থ বিনিয়োগ করলে আর বিদেশে যেতে হবে না নির্মাতাদের। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিও ঘুরে দাঁড়াবে।

piucCuT.jpg


'অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন' সিনেমার প্রযোজনা-পরবর্তী কাজ চলছে দেশেই, ছবি: সংগৃহীত
 

Users who are viewing this thread

Back
Top