What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review নিয়তি : গল্প যেখানে সিনেমার হিরো (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
FDGnYcs.jpg


নিয়তি
পরিচালক : জাকির হোসেন রাজু
ব্যানার : জাজ মাল্টিমিডিয়া
অভিনয় : আরিফিন শুভ, জলি, সুপ্রিয় দত্ত, ঈশানী, মৌসুমী সাহা, আরমান পারভেজ, নাদের চৌধুরী।

গল্প : এই ছবিটির হিরো আসলে ছবির গল্প। 'নোটবুক' আর 'হান্ড্রেড ডেজ উইথ মিস্টার এরোগেন্ট'র প্লট অনুসরণ করেছে।তবে সিন টু সিন নকলের দেশীয় ফর্মূলার বৃত্তের অনেক বাইরে হেঁটে সম্পূর্ণই দেশীয় ধাঁচে গল্পটি বলেছেন পরিচালক।গল্পপ্রধান ছবি দেখতে যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য মাস্ট ওয়াচ ফিল্ম।

অভিনয় :

আরিফিন শুভ : বলিউডের সাথে ঢালিউডকে তুলনা করলে সালমান খানের মতো বক্স অফিস কিং কিংবা শাহরুখ খানের মতো রোমান্টিক নায়কের জায়গায় অনেককেই বসাতে পারি।তবে আমির খানের মতো 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' তথা অতি হিরোইজমের বাইরে গিয়ে নিখাদ অভিনেতা হিসেবে তুলনা দেয়ার মত একজনকে পেয়ে গেছি।এই কম্পেয়ারটা হয়তো একটু বেশিই হয়ে গেল,কারণ অভিজ্ঞতা,অভিনয়ের দিক থেকে শুভ এখনো আমির খানের তুলনায় শিশু।কিন্তু নিজের সেরাটা দেয়ার দিক থেকে শুভ মাস্ট ফুল মার্কস পাবে।মীরাক্কেলে একবার রজতাভ দত্তকে সুঅভিনেতার সংজ্ঞা জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেছিলেন, 'নিজে হয়তো সর্বোচ্চ ভালো অভিনয় পারবে না।কিন্তু যতক্ষণ পর্দায় থাকবে ততক্ষণ নিজের সেই সীমিত ক্ষমতা দিয়েই গল্প আর দর্শকদের এমন রিলেশন ঘটাবে যাতে তার বিকল্প হিসেবে দর্শক আর কাউকে ভাবতে না পারে'।সত্যি বলতে পুরো ছবিতে এক মূহুর্তের জন্যও আপনি শুভর বিকল্প হিসেবে আর কাউকে ভাবতে পারবেন না। 'মুসাফির', 'অস্তিত্ব' আর এখন 'নিয়তি'। অ্যাকশন,সিরিয়াস,ইমোশনাল- ভার্সাটাইল ক্যারেকটারাইজেশনে নিজের সেরাটা দিয়েছেন শুভ।এই ছবিতে শুভ জাস্ট অসাম।ও লম্বা সময় রাজত্ব করার জন্যই এসেছে।

yW2Lauq.jpg


জলি : 'অঙ্গার'র জলির অভিনয়ের অনেক বদনাম শুনেছি।কিন্তু এই ছবিতে ইম্প্রুভমেন্ট চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে 'দোষ তোমার না, দোষ আমার কপালের' এই ডায়ালগের ডেলিভারি ও এক্সপ্রেশন দেখে সত্যিই হাততালি দিতে বাধ্য হয়েছি

মৌসুমী সাহা : মায়ের ক্যারেকটারে বরাবরের মতোই সাবলীল তিনি।

এর বাইরে ঈশানী, সুপ্রিয় দত্ত, আরমান পারভেজ, নাদের চৌধুরী ভালো করেছেন। তবে হতাশ করেছে ছোট চরিত্রে অভিনয় করা শিল্পীরা। অনেকের কাছ থেকেই কোন এক্সপ্রেশন ছাড়া রোবোটিক ডায়ালগ ডেলিভারির চিরাচরিত রোগ থেকে বাংলাদেশী ছবির পরিচালকরা এখনো বের হতে পারেননি। এই চরিত্রগুলোর গুরুত্ব যে ছবিতে আছে সেটা বাংলাদেশী পরিচালকরা কেন যে ভুলে যান তাই বুঝি না। কিন্তু কোরিওগ্রাফারদের এই ব্যাপারে সতর্ক দেখি। যেমন 'বন্ধুরে' গানে সবাই দাঁড়িয়ে রেসির গান না দেখে একটিভ থাকাই এর প্রমাণ।

গান : ছবির ছয়টি গানই সবাই দেখেছেন।এক কথায় স্বীকার করতে বাধ্য স্যাভি অসাধারণ।অনবদ্য ছিলেন রুনা লায়লা ও শান।গান রিমেক করার আইডিয়া যার মাথায় এসেছে তার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।পুরো হলতেই দেখেছি একসাথে 'অনেক সাধনার পরে' গাইতে।এমনকি এর জন্য ছবির আওয়াজই শোনা যাচ্ছিল না।

কোরিওগ্রাফি : কোরিওগ্রাফি ছিল এককথায় অসাধারণ।বাংলা ছবিতে এমন কোরিওগ্রাফি ভাবা যায় না।

ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক : এই জায়গায় ইমন সাহা নতুন কিছুই করতে পারেননি। কোন মন ছুঁয়ে যাওয়ার মত মিউজিকই ছিল না। তবে মূল গানের সুরগুলোকে স্লো করে বা মোডিফাই করে দেয়া মিউজিক ছিল জাস্ট অস্থির। এর ক্রেডিটটা আমি অবশ্যই দিবো স্যভিকে।

bxNMij4.jpg


চিত্রনাট্য ও সংলাপ : চিত্রনাট্য ভালো হলেও প্রথমার্ধের কিছু সংলাপে ছিল চিরাচরিত এফডিসিয় টান। তবে ভাগ্য ভালো যে পরে সেই সমস্যা কেটে গেছে। আমার মনে হয় ডায়ালগে এফডিসির বিখ্যাত রাইটারদের হাত না দিতে দেয়াই ভালো। দেশীয় কোন ভালো রাইটার বা কলকাতার রাইটারদের দিয়ে ডায়ালগ লেখানো দরকার। কারণ কলকাতার রাইটারদের যোগ্যতার প্রমাণ আগেই পেয়েছি। বিশেষ করে উৎসুক জনতার মুখে নায়কের পরিচয় দেয়াটা আমার কাছে লেইম লেগেছে।

আর্ট ডিরেকশন : বাংলা ছবির এমন আর্ট ডিরেকশন ভাবা যায় না। সত্যিই অসাধারণের চেয়েও বেশি কিছু। বিশেষ করে চার বছর পর শুভ্রর বাবার অনুপস্থিতিকে মৃত হিসেবে ছবিতে একবারও উল্লেখ না করে শুধু দেয়ালে ছবি আর ফুল দিয়ে দেখানোর আইডিয়াটা ভাল ছিল। বাংলা ছবিতে মাথা আঘাতের পর সেলাই বা মাথার অপারেশনের পরও মাথাভর্তি চুল দেখা যায়। কিন্তু এ ছবিতে ব্যান্ডেজ দিয়ে জলির পুরো চুল আড়াল করার আইডিয়াটাও ব্রিলিয়ান্ট ছিল। শুভ্রর বাসাভর্তি মিলার রেপ্লিকাগুলোও অনেক রিয়েলিস্টিক ছিল। তবে একেবারে শেষে লোগোবিহীন টিভি চ্যানেলের মাইক্রোফোন দেখানোর বাংলা ছবির সেই পুরনো রোগ রয়ে গেছে।

সিনেমাটোগ্রাফি : ছবির ক্যামেরার কাজ অনেক ভালো ছিল।সাইফুল শাহীন ফুলমার্কস পাবেন।

লোকেশন ও সেট : আশুলিয়ার লোকেশনের অনবদ্য ব্যবহার ছিল ছবিতে।চোখের আরাম বলতে যে শব্দটা আছে তার দারুণ উদাহরণ হতে পারে।তবে হোটেলের মারামারির জন্য এফডিসিতে তৈরি সেটটা ছিল খুবই ফালতু।

এডিটিং : ছবিটির এডিটিংয়ে সোমনাথ দে অবশ্যই ফুলমার্ক্সের দাবিদার।

ফাইটিং : ছবির প্রথম ফাইটিং দৃশ্যটা ছিল সম্পূর্ণই অপ্রয়োজনীয়। তারউপর চিরাচরিত ফালতু কিছু ভিলেন অবশ্যই বিরক্তির উদ্রেক করবে। কিন্তু এর পরের ফাইটিংগুলো ভালই ছিল।

ডিরেকশন : পুরো ছবির ক্যাপ্টেন হলেন ডিরেক্টর।এই পোস্টমর্টেমেরর পর তাকে নিয়ে আলাদা করে আর কিছু বলার নেই।

'নিয়তি' হল বাংলা ছবির দর্শকদের পরিবার নিয়ে হলে ফেরানোর মত একটা ছবি। এন্টারটেইনিং এই ছবিটা এক মুহূর্তের জন্যও কারো বোরিং লাগবে না। পুরো জাজ টিমকে ধন্যবাদ এই ছবির জন্য।

পুনশ্চ ১– দর্শক যখন ইমোশনে ডুবে আছে তখনই টিম নিয়ে হলে ঢুকে জলি। আর ছবি থামিয়ে তাদের কথা শোনানো হয়। কিন্তু কাহিনীর এই গাঢ় আবেগে ডুব দেয়া দর্শকদের কাছে মাঝখানে এই ছেদ পড়াটা বিরক্তিরই মনে হয়েছে।

পুনশ্চ ২– ছবির ট্রেইলার বানানোয় অদক্ষতাটা কোনদিন কাটবে? 'ছুঁয়ে দিলে মন' এবং তারপর 'নিয়তি'র ট্রেলার দেখে সত্যিই ছবিগুলোর প্রতি এক্সপেকটেশন কমে গিয়েছিল।কিন্তু হলে গিয়ে ধারণা পুরোই চেঞ্জড। ট্রেলার বানানো হয় দর্শক বাড়াতে আর এই ছবির ট্রেইলার দর্শক কমাতে যথেষ্ট। তবে একটা ব্যাপার ভালো লেগেছে। 'সুলতান'র ট্রেলার দেখে যেমন প্রেডিক্ট করতে গিয়ে ভুল করেছিলেন ঠিক তেমনি এই ছবির ট্রেলার দেখে ছবির কাহিনী প্রেডিক্ট করাটা হবে ভুল। এই জায়গাতে টিম 'নিয়তি' সফল।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top