What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review পরিবেশ বদলে কি রক্তের ধারা বদলায়? (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
zHah17S.jpg


ভালো পরিবেশ ও ভালো সমাজে বড় হলে একজন ডাকাতের সন্তান ভালো মানুষ হবে আর খারাপ পরিবেশ ও খারাপ পরিবারে থাকলে একজন সৎ বিচারকের সন্তান খারাপ মানুষ হবে- তা কি ঠিক?

"সমাজ ও পরিবেশ বদল হলেই কি রক্তের ধারা বদলায়"? …এমনই এক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আপনাকে দেখতে হবে বাংলা চলচ্চিত্রের চিরস্মরণীয় পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের যোগ্য উত্তরসুরি "মাস্টার মেকার" এ জে মিন্টুর "প্রতিহিংসা"।

পরিবারের সাথে সিলেটের লালকুঠি সিনেমা হলে উপভোগ করার সৌভাগ্য হয়েছিলো আমার। রেডিওর বিজ্ঞাপন তরঙ্গ আর টেলিভিশনে প্রচারিত ট্রেলার দেখেই দর্শকদের কাছে সাড়া ফেলেছিলো সিনেমাটি। হলের সামনে আন্ডা বাচ্চাসহ সপরিবারে আসা দর্শকদের ভিড় আর ভিড়। যতদূর এই বালকের চোখের দৃষ্টি গিয়েছিলো ততদুরই মানুষের মাথা ছাড়া কিছুই দেখতে পারিনি । চারপাশে ব্ল্যাকারদের উচ্চমুল্য টিকেট বিক্রির হাঁকডাক "এই লাগবো ? ডিসি ৩০, বক্স ৫০"!!!!

ছবির গল্পে – অপরাধ জগতের বাসিন্দা জসিমের ছোট ভাইকে ফাঁসির আদেশ দেয় জজ আনোয়ার হোসেন। ফাঁসির আদেশ দেয়ার আগে জসিম আনোয়ার হোসেনকে অনুরোধ করে ছোট ভাইকে ফাঁসির আদেশ না দিয়ে ক্ষমা করে দিতে, জসিম তাঁকে সুপথে ফিরিয়ে আনবে, কিন্তু আনোয়ার হোসেন বলেছিলো "পরিবেশ, সমাজ বদল হলেও রক্তের ধারা বদলায় না" আর এই কথাটিকেই মিথ্যা প্রমাণ করার জন্যই জসিম জজের সন্তানসম্ভাবা স্ত্রী রোজিকে অপহরণ করে জজের শিশু সন্তানকে চুরি করে নিজের সন্তানের জায়গায় ঘুমন্ত আনয়ারার পাশে রেখে আসে। জসিমের ছেলে সোহেল রানা জজের পরিচয়ে হয় শিক্ষিত এক পুলিশ অফিসার আর জজের ছেলে প্রবির মিত্র কে জসিম বানায় অপরাধী খুনি। একটা সময় সেই জজ আনোয়ার হোসেন আর ডাকাত জসিম মুখোমুখি হয়। মুখোমুখি হয় তাদের দুজনার সন্তান হিসেবে পরিচয় পাওয়া দুই সন্তান সোহেল রানা ও প্রবীর মিত্র …. এমনই এক টানটান উত্তেজনায় ভরা ছিলো "প্রতিহিংসা"। পুরো সিনেমা দেখার সময় ঠিক কতবার কতগুলো দৃশ্য দর্শক হাততালি দিতে দিতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো তা গুনতে পারিনি। শুধু এইটুকু বুঝতে পেরেছিলাম যে সময় যত যাচ্ছিল দর্শক যেন সিনেমার পর্দায় নিজেদের ফিরে পাচ্ছিল আর গল্পের ভেতরে প্রবেশ করে হারিয়ে গিয়েছিলো।

05zYwyd.jpg


সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্দায় খলনায়ক ছিলেন জসিম কিন্তু দর্শকদের কাছে এই সিনেমার নায়ক জসিম। এককথায় দুর্দান্ত অভিনয় করে পুরো সিনেমায় বারবার মোড় ঘুরিয়েছিলেন জসিম। খলনায়ক জসিম তাঁর সময়কার সব খলানায়কদের মধ্য ছিলো অনবদ্য। পর্দায় যতবার জসিম আসে ততবারই কোন কথা নেই আগে সবাই একটি জোরসে করতালি দিতেই হবে এই যেন নিয়ম হয়ে গিয়েছিলো। পুরো সিনেমার গল্পটাকে জসিম নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন বা মাস্টার মেকার মিন্টু করিয়ে নিয়েছিলেন। এই জসিমই পরবর্তিতে সুপারহিট নায়ক হয়েছিলো তা ভেবে এখনও বিস্মিত হই।

সহনায়ক হিসেবে প্রবীর মিত্র দারুণ ছিলেন। জসিমের কাছে বড় হওয়া অপরাধ জগতে পা বাড়ানোর পরেও রক্তের ধারা মিশে থাকা সততা ও মনুষত্ব্য থাকায় খারাপ ও ভালোর সংমিশ্রনে কঠিন একটি চরিত্রকে সাবলিল ভাবে উপস্থাপন করে গেছেন।

মাস্টার মেকার এ জে মিন্টুর তারকায় ঠাসা এই সিনেমাতেও তিনি সবার কাছ থেকে সেরা অভিনয়টা আদায় করে নিয়েছিলেন যে কারণে প্রতিটি চরিত্র দর্শকদের কাছে মনে হয়েছে বাস্তবের কোন চরিত্র। সাদাকালো গল্পের সিনেমাটায় "আজ থেকে সারাজীবন", "আমার প্রেমের ফুল বাগানে", "ওগো সুন্দরী আধুনিকা মেয়ে" শিরোনামের দারুণ সব গানগুলো ছিলো রঙিন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top